ইসাইয়া 1 - 33

1 এটা আমোসের পুত্র যিশাইয়ের দর্শন| যিহূদা এবং জেরুশালেমে কি ঘটবে ঈশ্বর যিশাইয়কে তা দেখিয়েছিলেন| ঊষিয,য়োথম,আহসও হিষ্কিয়যখন যিহূদার রাজা ছিলেন তখন যিশাইয়র এই সব দর্শন হয়েছিল| 2 হে স্বর্গ ও মর্ত্য শোন! প্রভু কথা বলছেন| প্রভু বলেন,“আমি আমার সন্তানদের জন্ম দিয়েছি| তাদের লালনপালন করেছি| কিন্তু আমার সন্তানরাই আমার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে| 3 একটা গরুও তার মনিবকে চেনে| একটা গাধাও জানে তার মালিক তাকে কোথায় খাওয়ায়| কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা আমাকে চেনে না| আমার লোকরা আমাকে বোঝে না|” 4 ওহে পাপিষ্ঠ জাতি, অপরাধে ভারগ্রস্ত লোকরা! তারা দুষ্ট পরিবারের মন্দ সন্তানদের মতো| তারা তাদের প্রভুকে ত্যাগ করেছে| তারা ইস্রায়েলের পবিত্র জনটিকে বাতিল করেছে| তারা তাঁর থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে| 5 ঈশ্বর বলেন, “কেন আমি তোমাদের শাস্তি দিতে যাব? আমি তোমাদের শাস্তি দিয়েছি কিন্তু তোমাদের পরিবর্তন হয় নি| তোমরা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেই চলেছ| এখন তোমাদের প্রত্যেকের মন-প্রাণ অসুস্থ| 6 তোমাদের আপাদমস্তক সারা শরীরময় শুধুই ক্ষত, দগ্দগে ঘা আর আঘাতের চিহ্ন| সেই ক্ষত সারাতে কোনও যত্ন নেওয়া হয় নি| ক্ষতগুলি না পটি দিয়ে বাঁধা হয়েছিল, না তেল দিয়ে কোমল করা হয়েছিল| 7 “তোমাদের দেশ ধ্বংস হয়েছে| তোমাদের শহরগুলি অগ্নিদগ্ধ| তোমাদের শএুরা তোমাদের দেশ দখল করে নিয়েছে| কোন দেশ বিদেশী আক্রমণকারীর সেনাবাহিনীর দ্বারা যে ভাবে ধ্বংস হয় তোমাদের দেশ সে ভাবেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে| 8 যেমন দ্রাক্ষাক্ষেতের একটি কুটিরকে, যেমন একটি শশাক্ষেতের চালাকে, যেমন একটি শহরকে শএু দ্বারা অবরুদ্ধ রাখা হয় তেমনি ভাবে সিয়োন (জেরুশালেম) কন্যাকে ফেলে রাখা হয়েছে|” 9 এটা সত্যি, কিন্তু প্রভু সর্বশক্তিমান গুটিকতক লোককে জীবনযাপনের অনুমতি দিয়েছেন| আমরা সদোম এবং ঘমোরা এই নগর দুটির মত পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাই নি| 10 সদোমের শাসনকর্তারা, তোমরা প্রভুর বার্তা শোন| ঘমোরার অধিবাসীগণ, তোমরা ঈশ্বরের শিক্ষামালা শোন| 11 ঈশ্বর বলেছেন, “তোমরা কেন আমার উদ্দেশ্যে এত বলিদান করে চলেছ? তোমাদের পাঁঠার বলিতে এবং ষাঁড়, মেষ এবং ছাগলের মেদে আমার অরুচি ধরে গিয়েছে| আমি সন্তুষ্ট নই| 12 “লোকরা, তোমরা যখন আমার কাছে প্রার্থনা করতে আস তখন তোমরা আমার উপাসনালয় প্রাঙ্গণের সবকিছুকে পদদলিত কর| তোমাদের এসব কে করতে বলল? 13 “এই অসার নৈবেদ্য আমি চাই না| আমার উদ্দেশ্যে নিবেদিত ধুপধূনোর প্রজ্জ্বলনকে আমি ঘৃণা করি| অমাবস্যার দিনে, বিশ্রামের দিনে তোমাদের বিশেষ ভোজ বা প্রার্থনা সভাকে আমি সহ্য করতে পারি না| তোমাদের পবিত্র সমাবেশের দিনে পাপাচারকে আমি মনেপ্রাণে ঘৃণা করি| 14 আমি তোমাদের মাসিক (অমাবস্যা) অনুষ্ঠানাদি ও উত্সবকে ঘৃণা করি| ওগুলো আমার কাছে ভারী বিরক্তিকর| আমি ওগুলো আর সহ্য করতে পারি না| 15 “তোমরা হাত তুলে আমার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা জানালে আমি তোমাদের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নেব| তোমরা বারে বারে প্রার্থনা করবে কিন্তু আমি তা শুনব না| কেন না তোমাদের হাত রক্তমাখা| 16 “তোমরা নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কর, শুদ্ধ কর এবং মন্দ কাজগুলি করা বন্ধ কর| আমি তোমাদের মন্দ কাজগুলি দেখতে চাই না| 17 ভালো কাজ করতে শেখো| মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার কর, ন্যায়বিচারের অনুশীলন কর, অত্যাচারী, অনিষ্টকারী লোকদের শাস্তি বিধান কর, অনাথ ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়াও, বিধ্বাদের সাহায্য কর|” 18 প্রভু বলেন, “এস, এইসব বিষয়গুলি নিয়ে বিচার বিবেচনা, আলাপ আলোচনা করা যাক| যদিও তোমাদের পাপগুলো উজ্জ্বল লাল রঙের কাপড়ের মত, ওগুলো ধুয়ে ফেলা যায় এবং তোমরা তুষারের মতো সাদা হয়ে যেতে পারো| যদিও তোমাদের পাপ রক্তের মত লাল, তোমরা পশমের মতো শুভ্র হয়ে উঠতে পারো| 19 “আমাকে মেনে চললে, আমার কথা শুনলে তোমরা এই দেশ থেকে অনেক ভালো ভালো জিনিস পাবে| 20 কিন্তু আমার কথা না শুনলে তোমরা আমার বিরুদ্ধাচারী হবে এবং তোমাদের শএুরা তোমাদের ধ্বংস করবে|”প্রভু বয়ং ঐ কথাগুলি বলেছেন| 21 ঈশ্বর বলেন, “জেরুশালেমের দিকে তাকাও| এই শহর এক সময় আমার কথামত চলত, আমাকে অনুসরণ ও বিশ্বাস করত| কিন্তু এই বিশ্বস্ত এবং অনুগত শহরের পতিতার মত অবস্থা হওয়ার কারণ কি? এর একটাই কারণ হল এখানকার অধিবাসীরা এখন আর আমাকে মেনে চলে না| জেরুশালেমের ধার্মিকতায পরিপূর্ণ থাকা উচিত্‌| এখানকার লোকদের ঈশ্বরের আকাঙ্খিত পথেই চলা উচিত্‌| কিন্তু এখন এখানে খুনীরা থাকে| 22 “ধর্ম, সাধুতা, মহানুভবতা এই গুণগুলি রূপোর মতো| কিন্তু তোমাদের রূপো মূল্যহীন হয়ে পড়েছে| তোমাদের দ্রাক্ষারসে (মহানুভবতায) জল মিশে গিয়ে তা দুর্বল হয়ে পড়েছে| 23 তোমাদের শাসনকর্তারা বিদ্রোহী এবং চোরদের বন্ধু হয়ে উঠেছে| তারা ঘুষ নেয, নোংরা কাজের জন্য টাকা নিতে ভালোবাসে| লোককে প্রতারিত করার জন্য তারা উত্‌কোচ নেয| তারা অনাথ ছেলেমেয়েদের সাহায্য করে না, বিধ্বাদের অভাব অভিয়োগে কান দেয় না| তাদের দেখাশোনা করে না|” 24 এই জন্য আমার গুরু, ইস্রায়েলের প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “আমি আমার শএুদের শাস্তি দেব| তারা আর আমাকে বিরক্ত করবে না| 25 রূপোতে যেমন ক্ষার দিয়ে তার খাদ পরিষ্কার করা হয় তেমনি আমিও তোমাদের সব কুকর্ম, পাপ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দেব| তোমাদের কাছ থেকে সব অসার জিনিস আমি দূর করব| 26 তোমাদের জন্য আগের মতোই ন্যায় বিচারকগণ এবং উপদেষ্টাগণ নিয়োগ করা হবে| তখন তোমাদের শহরকে ‘ন্যাযের শহর’, ‘বিশ্বস্ত নগরী’ নামে ডাকা হবে|” 27 ঈশ্বর মহান এবং তিনি সঠিক কাজই করেন| সুতরাং তিনি সিয়োন এবং তার যেসব লোকরা তাঁর কাছে ফিরে আসবে তাদের তিনি উদ্ধার করবেন| 28 কিন্তু সমস্ত পাপী এবং দুষ্কৃতকারীদের ধ্বংস করা হবে| এরা প্রভুকে মেনে চলে না| 29 তোমরা যে এলাবৃক্ষ এবং বিশেষ বাগানকে দেবতাজ্ঞানে পূজো করতে, ভবিষ্যতে তার জন্য নিজেরাই লজ্জিত হবে| 30 কারণ ভবিষ্যতে তোমাদের অবস্থা এলা বৃক্ষের শুষ্ক পাতার মতো নির্জ্জলা, মৃতপ্রায বাগানের মতো হবে| 31 ক্ষমতাবান লোকদের অবস্থা শুকনো কাঠের টুকরোর মতো হবে এবং তাদের কৃতকর্ম আগুনের ফুলকির মতো হবে| উভয়েই এক সঙ্গে জ্বলতে থাকবে আর সেই আগুন কেউ নেভাতে পারবে না|

ইসাইয়া 2

1 আমোসের পুত্র যিশাইয় যিহূদা ও জেরুশালেম সম্পর্কে এইসব বার্তার দর্শন পান| 2 শেষের দিনগুলিতে, প্রভুর মন্দিরের পর্বতকে সকল পর্বতের মধ্যে শীর্ষস্থানীয করা হবে এবং ওটিকে সমস্ত পর্বত থেকে উচ্চতর করা হবে| এবং সমস্ত দেশগুলি থেকে লোকরা সেখানে নিয়মিত ভাবে প্রবাহের মত যাবে| 3 বহু দেশের লোক সেখানে যাবে| তারা বলবে, “চল, আমরা সবাই প্রভুর পর্বতে, যাকোবের ঈশ্বরের উপাসনাগৃহে উঠি| তারপর তিনি আমাদের তাঁর জীবনযাপনের পথ শেখাবেন এবং আমরা জীবনের সেই পথ অনুসরণ করব|”ঈশ্বরের বিধি, প্রভুর বার্তাসমূহ জেরুশালেমের সিয়োন পর্বত থেকে শুরু হবে এবং গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে| 4 তারপর ঈশ্বর সকল জাতির বিচারক হবেন| এবং অনেক লোকের বাদানুবাদের নিষ্পত্তি করবেন| তারা নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের সময় অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করবে| তারা তাদের তরবারি থেকে লাঙলের ফলা তৈরি করবে এবং বর্শার ফলা দিয়ে কাটারি বানাবে| এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে তরবারি ধরবে না| পরস্পরের মধ্যে লড়াই বন্ধ হবে| তারা কখনও যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেবে না| 5 যাকোবের পরিবার, এসো আমরা প্রভুর আলোকিত পথে চলি! 6 আমি তোমাকে একথা বলছি কারণ তুমি তোমার লোকদের ত্যাগ করেছ| তোমার লোকরা পূর্বদিকের লোকদের ধ্যান ধারণায পরিপূর্ণ হয়েছে| তোমার লোকরা পলেষ্টীয়দের মতো ভবিষ্যত্‌ বক্তা হবার চেষ্টা করছে| তোমাদের লোকরা বহিরাগতদের সঙ্গে খুব বেশী জড়িয়ে পড়েছে| 7 তোমাদের দেশ অন্য দেশের সোনা, রূপোয পরিপূর্ণ| সেখানে ধনসম্পত্তির সীমা পরিসীমা নেই| তোমাদের দেশ ঘোড়া এবং অসংখ্য রথে পরিপূর্ণ| 8 তোমাদের দেশ মূর্ত্তিতে পরিপূর্ণ| নিজেদের হাতে গড়া মূর্ত্তিগুলির সামনে লোকেরা নতজানু হয়ে তাদের পূজো করে| 9 লোকরা খুব নীচ এবং হীন হয়ে গেছে| তাই ঈশ্বর, আপনি তাদের নিশ্চই ক্ষমা করবেন না| 10 যাও, পাথরের পেছনে আবর্জনার মধ্যে লুকিয়ে থাকো| প্রভুকে তোমাদের ভয় পাওয়া উচিত্‌ এবং তাঁর মহান পরাক্রম থেকে তোমাদের লুকিয়ে থাকা উচিত্‌| 11 দাম্ভিক লোকরা অহঙ্কার করবে না| এই সব লোকরা লজ্জায মাটিতে মাথা নত করবে| সেই সময় শুধুমাত্র প্রভু একা উন্নত মস্তকে বিরাজ করবেন| 12 প্রভুর একটি বিশেষ দিনের পরিকল্পনা আছে| সেই দিনে প্রভু উদ্ধত ও অহঙ্কারী লোকদের শাস্তি দেবেন| সেই দিনে ঐসব লোকরা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে না| 13 ঐসব অহঙ্কারী লোকরা লিবানোনের উচ্চ ও উন্নত এরস বৃক্ষের মতো| তারা বাশনের বৃহত্‌ এলা বৃক্ষের মতো| কিন্তু ঈশ্বর এই সব লোকদের শাস্তি দেবেন| 14 এই সব অহঙ্কারী লোকরা দীর্ঘ পর্বতমালা ও উচ্চ পাহাড়ের মতো| 15 এই সব লোকরা লম্বা দুর্গ, উচ্চ শক্তিশালী প্রাচীরের মতো| কিন্তু ঈশ্বর এই সব লোকদের শাস্তি দেবেন| 16 এই সব লোকরা তর্শীশের বড় জাহাজের মতো| (জাহাজগুলি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসে পরিপূর্ণ|) কিন্তু ঈশ্বর এই সব অহঙ্কারী লোকদের শাস্তি দেবেন| 17 সেই সময় লোকরা অহঙ্কারী হওয়া বন্ধ করবে| অহঙ্কারী লোকরা মাটিতে মাথা নত করবে| সেই সময় শুধুমাত্র প্রভু উন্নত মস্তকে বিরাজ করবেন| 18 সমস্ত মূর্ত্তিগুলি সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যাবে| 19 লোকরা পাথর এবং মাটির ফাটলে লুকোবে| লোকে প্রভু এবং তাঁর মহান পরাক্রমকে ভয় পাবে| পৃথিবীকে কম্পিত করার জন্য যখন প্রভু উঠে দাঁড়াবেন তখনই এই সব ঘটবে| 20 সেই সময় লোকরা তাদের স্বর্ণ ও রৌপ্যমূর্ত্তি-গুলিকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| (লোকরা এই সব মূর্ত্তিগুলিকে পূজো করার জন্য তৈরী করেছিল|) এই সব মূর্ত্তিগুলিকে লোকরা বাদুড় ও ছুঁচোর গর্তে নিক্ষেপ করবে| 21 তারপর লোকরা প্রভু এবং তাঁর মহান পরাক্রমে ভীত হয়ে পাথরগুলোর ফাটলে লুকোবে| এই সব ঘটবে যখন প্রভু পৃথিবীকে কম্পিত করবেন| 22 নিজেদের রক্ষা করার জন্য লোকদের অন্য কারও ওপর আস্থা রাখা উচিত্‌ নয়| কারণ মানুষ মরণশীল এবং তারা মারা যাবে| তাই তোমাদের এটা ভাবা উচিত্‌ নয় যে তারা ঈশ্বরের মতো ক্ষমতাবান|

ইসাইয়া 3

1 আমি যা বলছি তা অনুধাবন কর| যিহূদা এবং জেরুশালেম যে সমস্ত জিনিসের ওপর নির্ভরশীল, গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান সে সব জিনিসগুলির অবলুপ্তি ঘটাবেন| ঈশ্বর সমস্ত জল ও খাবার সরিয়ে নেবেন| 2 ঈশ্বর সকল বীর ও মহান যোদ্ধা, সকল বিচারক, ভাব্বাদী, 3 যাদুকরগণ, প্রবীণগণ, সামরিক নেতাসমূহ, সরকারি প্রধানগণ, দক্ষ উপদেষ্টাগণ, দক্ষ কারিগর এবং যারা তাবিজ ব্যবহার করতে জানে তাদের সবাইকে সরিয়ে দেবেন| 4 ঈশ্বর বলেন, “আমি বালকগণকে তোমাদের নেতা করব| 5 প্রত্যেক লোক একে অপরের বিরুদ্ধাচরণ করবে| ছোটরা বড়দের শ্রদ্ধা করবে না| গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সাধারণ লোকদের কাছ থেকে সম্মান পাবে না|” 6 সেই সময় কেউ এক জন তারই পরিবারভুক্ত ভাইযের হাত ধরে বলবে, “তোমার কোটবস্ত্র আছে, তাই তুমি আমাদের নেতা হবে| এই সব বিনাশ তোমার আযত্ত্বে থাকবে|” 7 কিন্তু সে চিত্কার করে বলবে, “আমি তোমাদের নেতা হব না| কারণ আমার বাড়িতে যথেষ্ট অন্ন-বস্ত্র নেই| তুমি আমাকে দিয়ে লোকদের নেতৃত্ব দেওয়াবে না|” 8 এই সবই ঘটবে কারণ জেরুশালেম হোঁচট খেয়েছে এবং যিহূদার পতন হয়েছে| তাদের কাজকর্ম ও কথাবার্তা সবই প্রভুর বিরুদ্ধে যদিও তিনি সবই দেখেন| 9 লোকদের মুখই বলে দিচ্ছে যে তারা পাপ কাজের দোষে দুষ্ট| এবং তারা তাদের পাপের জন্য গর্বিত| তারা সদোমের লোকদের মতোই| কে তাদের পাপ দেখছে সেই ব্যাপারে তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নেই| এটা তাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক হবে| তারা নিজেদের ভযানক বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছে| 10 ভালো লোকদের বলে দাও যে তাদের জন্য ভালো কিছু ঘটবে| ভালো কাজের পুরস্কার তারা পাবে| 11 কিন্তু শযতান লোকদের জন্য কঠিন সময় আসছে| তাদের ভীষণ কষ্ট ও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে| সমস্ত কুকর্মের শাস্তি তাদের পেতেই হবে| 12 বালকরা আমার লোকদের হারিযে দেবে| মেয়েরা তাদের শাসন করবে| তাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে| আমার লোকরা, তোমাদের পথ প্রদর্শকরাই তোমাদের ভুল পথে চালিত করছে| তারা তোমাদের সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করছে| 13 প্রভু লোকদের বিচার করবার জন্য উত্থান করবেন| 14 নেতা এবং প্রাচীনদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর মতামত দেবেন|প্রভু বলেন, “হে আমার লোকরা, তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত (যিহূদা) পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছ| তোমরা গরীব মানুষদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কেড়ে নিয়েছ| এবং সেই সব জিনিসপত্র এখনও তোমাদের বাড়িতেই আছে| 15 আমার লোকদের আঘাত করার অধিকার কে তোমাদের দিয়েছে? গরীব, হতদরিদ্র মানুষদের নোংরা-আবর্জনার মধ্যে ঠেলে দেওয়ার অধিকার কে তোমাদের দিয়েছে?” আমার গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন| 16 প্রভু আরও বললেন, “সিয়োনের মেয়েরা খুবই অহঙ্কারী হয়ে উঠেছে| তারা মাথা হেলিযে দুলিযে য়ত্রতত্র এমন ভাবে ঘুরে বেড়ায যেন তারা অন্য লোকদের চেয়ে যথেষ্ট ভাল| এই সব মেয়েরা হাসি-মস্করা, ছেনালিগিরি করে ঘুরে বেড়ায| এবং তারা পায়ে নূপুরের রুনুঝুনু শব্দ করে, নেচে নেচে দিকবিদিক ঘুরে বেড়ায|” 17 আমার গুরু সিয়োনের এই ধরণের মেয়েদের মাথায় দগদগে ক্ষতের সৃষ্টি করবেন| ফলে তাদের মাথায় টাক পড়বে| 18 সেই সময় তিনি তাদের গর্বের সমস্ত সম্পদ নিয়ে নেবেন| তাদের পায়ের নূপুর, তাদের সূর্য় ও চাঁদের আকারের গলার হার, 19 ঝুমকো পাশা, চুড়ি, ঘোমটা, ললাটভূষণ, পায়ের মল, 20 ঘাঘরা, শাল, মসীনা বস্ত্র, 21 বিশেষ আংটি, নথ, 22 চিত্রবস্ত্র, গেঁজে, 23 আযনা, মসীনা বস্ত্র, উষ্ণীষ, লম্বা শালের মতো আবরক বস্ত্ররূপ বেশভূষা খুলে নেবেন| 24 এবং সুগন্ধির পরিবর্তে তাদের কাছে থাকবে দুর্গন্ধ তেল, কোমরবন্ধনীর বদলে থাকবে একটি ছেঁড়া পোশাক, সুবিন্যস্ত কেশ পরিচর্য়্য়ার বদলে থাকবে মাথাজোড়া টাক, কেতাদুরস্ত কোমরবন্ধনীর পরিবর্তে থাকবে চটের তৈরী কোরমবন্ধনী কারণ সুন্দরী হওয়ার পরিবর্তে তারা হবে কুত্‌সিত দর্শন| 25 সেই সময় তোমাদের পুরুষদের তরবারি দিয়ে হত্যা করা হবে| তোমাদের বীর যোদ্ধারা যুদ্ধে মারা যাবে| 26এবং তার নগর দ্বারগুলি কষ্ট পাবে এবং বিলাপ করবে এবং সে বিপর্য়স্ত হয়ে মাটিতে বসে থাকবে| 26

ইসাইয়া 4

1 সেই সময় সাত জন মহিলা এক জন পুরুষের হাত চেপে ধরে বলবে, “আমরা আমাদের রুটি-রুজি, বস্ত্র, বাসস্থান নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা নিজেরাই করব| তুমি শুধু আমাদের বিয়ে কর| তোমার নামে আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠা দাও| আমাদের অব্বিাহিত থাকার যন্ত্রণা, লজ্জা, অপমান দূর কর|” 2 সেই সময়, প্রভুর গাছ (যিহূদা) বড় হবে এবং সুন্দর হয়ে উঠবে| এমনকি তখনও ইস্রায়েলের উদ্বাস্ুরা তাদের দেশে উত্পন্ন শস্য নিয়ে গর্ব অনুভব করবে| 3 এই সময় সিয়োন এবং জেরুশালেমে তখনও বসবাস করা লোকদের পবিত্র মানুষ বলে গণ্য করা হবে| যাদের নাম বিশেষ তালিকায থাকবে তারাই ভাগ্যবান, পবিত্র মানুষ বলে বিবেচিত হবে| এবং এই তালিকাভুক্ত লোকদেরই বাস করে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে| 4 প্রভু সিয়োনের মহিলাদের থেকে নোংরা ধুয়ে মুছে ফেলবেন| তিনি জেরুশালেম থেকে রক্ত ধুয়ে ফেলবেন| প্রভু ন্যাযের নীতিটি ব্যবহার করবেন এবং ন্যায় বিচার করবেন| তিনি প্রজ্জ্বলিত করবার নীতিটি ব্যবহার করে প্রতিটি জিনিষকে শুদ্ধ করে তুলবেন| 5 তারপর প্রভু সিয়োন পর্বতের ভিত্তির ওপর আকাশে এবং তার সমাবেশ স্থানগুলিতে দিনে একটি ধোঁযার মেঘ ও রাত্রেও একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা সৃষ্টি করবেন| সেখানে প্রতিটি সমাবেশের ওপর রক্ষার জন্য একটি আচ্ছাদন থাকবে| 6 সমস্ত মানুষের জন্য এমন এক নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করা হবে যেখানে সূর্য়ের প্রখর তাপ তাদের স্পর্শ করতে পারবে না| সব ধরণের ঝড় ঝঞ্ঝা এবং প্লাবন থেকে তারা রক্ষা পাবে|

ইসাইয়া 5

1 এখন আমি আমার ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গান করব| দ্রাক্ষা ক্ষেতের (ইস্রায়েলের) প্রতি ঈশ্বরের যে ভালোবাসা আছে এই গান সে সম্পর্কেই|আমার ঈশ্বরের একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত ছিল অতি উর্বর মাটিতে| 2 তিনি তার চারদিক খুঁড়ে মাঠটিকে ভালো ভাবে পরিষ্কার করলেন| তারপর সেখানে ভালো জাতের দ্রাক্ষা গাছ লাগালেন| তিনি মাঠের মাঝখানে দেখাশোনার জন্য একটি উঁচু বাড়ি তৈরি করলেন| সেখানে তিনি ভাল দ্রাক্ষা ফলবার আশায় বসে রইলেন| কিন্তু জন্মালো বুনো দ্রাক্ষা| 3 তাই ঈশ্বর বললেন, “যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকরা, তোমরা আমার এবং আমার দ্রাক্ষাক্ষেতের কথা চিন্তা কর| 4 আমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতের জন্য সাধ্যমত সবকিছুই করেছি| আমি তার জন্য আর কিই বা করতে পারতাম? আমি ভালো দ্রাক্ষার আশা করেছিলাম| কিন্তু শুধু বাজে দ্রাক্ষা ফলেছিল| কেন এমনটা ঘটল? 5 আমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতের জন্য কি কি করব এখন আমি তোমাদের সে কথাই শোনাব|দ্রাক্ষা ক্ষেতের সুরক্ষার জন্য চারদিকে যে কাঁটার ঝোপগুলি আছে তা আমি তুলে ফেলে পুড়িয়ে দেব| আমি পাথরের প্রাচীর ভেঙে ফেলব এবং পাথরগুলি ক্ষেতের ওপর ফেলে দেওয়া হবে| 6 আমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতকে খোলা মাঠে পরিণত করব| ঐ ক্ষেতের গাছগুলির কেউ যত্ন নেবে না| কেউ পরিচর্য়া করবে না| সেখানে আগাছা আর কাঁটা জন্মাবে| আমি মেঘকে হুকুম দেব যাতে ক্ষেতে একফোঁটা বৃষ্টি বর্ষিত না হয়|” 7 ইস্রায়েল জাতি হল প্রভু সর্বশক্তিমানের এই দ্রাক্ষা ক্ষেত| আর যিহূদার লোকরা হল তাঁর এক কালের আদরের দ্রাক্ষার চারা|প্রভু আশা করেছিলেন ন্যায়, কিন্তু সেখানে ছিল শুধুই হত্যাকাণ্ড| প্রভু আশা করছিলেন সুন্দর জীবন, কিন্তু সেখানে শোনা যাচ্ছে অত্যাচারীদের এন্দন রোল| 8 তোমরা পাশাপাশি বাস করছ| ঘেঁসাঘেঁসি করে বাড়ি বানিয়েছ| তোমরা ক্ষেতের সঙ্গে ক্ষেতের সংযোগ এমন ভাবে করেছ যে আর এতটুকু জায়গা অবশিষ্ট নেই| কিন্তু প্রভু তোমাদের এমন শাস্তি দেবেন যে তোমাদের একাকী থাকতে হবে| সমস্ত ভূখণ্ডটিতে শুধু তোমরাই বাস করবে| 9 প্রভু সর্বশক্তিমান আমাকে এই কথাগুলি বললেন এবং আমি তাঁর কথা শুনলাম: “এখানে অনেক বাড়ি আছে, কিন্তু আমি অঙ্গীকার করছি যে, সমস্ত ঘর-বাড়ি ধ্বংস করা হবে| এখানে এখন অনেক সুন্দর মনোরম বাড়ি আছে| কিন্তু এই সব বাড়িগুলি খালি হয়ে যাবে| 10 সেই সময় দশ একর মাঠে যে দ্রাক্ষা হবে তা থেকে খুব সামান্য দ্রাক্ষারস তৈরি করা যাবে| বহু বস্তা বীজ থেকে খুবই অল্প শস্য উত্পন্ন হবে|” 11 তোমরা সকালে উঠেই পানীয় হিসাবে দ্রাক্ষারসের খোঁজ কর| তোমরা দ্রাক্ষারস পান করার জন্য গভীর রাত পর্য়ন্ত জেগে থাক| 12 তোমরা দ্রাক্ষারস, বাঁশি, ঢোলক এবং বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে ফূর্তি-আমোদ কর| কিন্তু তোমরা প্রভুর কর্মকাণ্ড দেখতে পাও না| প্রভু নিজ হাতে অনেক জিনিস তৈরি করেছেন| কিন্তু তোমরা ঐসব জিনিস দেখতে পাও না| 13 প্রভু বললেন, “আমার লোকদের বন্দী করে অন্যত্র নির্বাসনে দেওয়া হবে| কিন্তু কেন? কারণ তারা আমাকে প্রকৃতপক্ষে জানে না| ইস্রায়েলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন| তাঁরা তাঁদের অনায়াস জীবনযাপন নিয়ে সন্তুষ্ট| কিন্তু তারা খুবই তৃষ্ণার্ত এবং ক্ষুধার্ত হবে| 14 তারপর তারা মারা যাবে| এবং পাতাল মৃতদেহে ভরে যাবে| পাতালের সীমাহীন খিদে ও চাহিদা মেটাতে নামী, সাধারণ সব মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হবে এবং এই সব মানুষ কবরে যাবে|” 15 ঐসব লোকদের অবদমিত করা হবে| প্রত্যেককে বিনম্র করা হবে এবং তাদের গর্ব কমিযে আনা হবে| 16 প্রভু সর্বশক্তিমান, ন্যায়বিচার করবেন এবং লোকরা জানবে যে তিনি মহান| পবিত্রতম ঈশ্বর যেগুলি সঠিক ও ন্যায্য সেই সব কাজই করবেন এবং লোকরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবে| 17 ঈশ্বর ইস্রায়েলের অধিবাসীদের দেশছাড়া করবেন| দেশ খালি হয়ে যাবে| মেষরা ইচ্ছামতো যেখানে খুশী ঘুরে বেড়াতে পারবে| একদা ধনী লোকের মালিকানাধীন জমি-জায়গাতে মেষ চরে বেড়াবে| 18 ঐ লোকগুলিকে দেখ! অপ্রয়োজনীয় দড়ি নিয়ে লোকরা যেমন ওযাগন টানে তেমনি এই ধরণের লোকরা নিজেদের পাপ, কুকর্ম এবং দোষকে পেছনে টেনে নিয়ে বেড়ায| 19 এই লোকরা বলে, “আমাদের কামনা, ঈশ্বর যা যা করার পরিকল্পনা করেছেন তা তাড়াতাড়ি করবেন| তারপর আমরা জানব কি ঘটবে| আমাদের আশা প্রভুর পরিকল্পনা খুব তাড়াতাড়ি বাস্তবায়িত হবে| তারপরই আমরা জানতে পারব তাঁর পরিকল্পনা কি|” 20 এই ধরণের লোকরা ভালো জিনিসকে খারাপ বলে আর খারাপ জিনিসকে ভালো বলে মনে করে| এরা আলোকে অন্ধকার আর অন্ধকারকে আলো বলে মনে করে| এরা টককে মিষ্টি এবং মিষ্টিকে টক ভাবে| 21 ঐসব লোকরা নিজেদের খুব জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান মনে করে| 22 এই ধরণের লোকরা দ্রাক্ষারস পান করার জন্য বিখ্যাত| এরা দ্রাক্ষারসের মিশ্রণ তৈরীতে একেবারে সিদ্ধহস্ত| 23 তারা ঘুষ নিয়ে অপরাধীদের নিরাপরাধ বলে ঘোষনা করে| কিন্তু তারা ভালো লোককে ন্যায্য বিচার পেতে দেবে না| 24 এই সব লোকের কপালে খুবই দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে| খড়কুটো এবং গাছের পাতাকে আগুন যেমন অনায়াসে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় তেমনি এদের উত্তরপুরুষদেরও পুরোপুরি ধ্বংস করা হবে| মৃত শিকড় যেমন গুঁড়োতে পরিণত হয়, আগুন যেমন ফুলকে পুড়িয়ে তার ছাই বাতাসে উড়িযে দেয়, এদের উত্তরপুরুষরা সে ভাবেই ধ্বংস হবে|ঐসব লোকরা প্রভু সর্বশক্তিমানের শিক্ষামালা মেনে চলেনি| তারা ইস্রায়েলের পবিত্রজনটির (ঈশ্বর) বার্তা ঘৃণা করত| 25 তাই প্রভু তাঁর লোকদের ওপর খুব রুদ্ধ হয়েছেন| প্রভু তাঁর হাত উত্তোলন করবেন এবং তাদের এমন কঠিন ভাবে শাস্তি দেবেন যে পর্বত পর্য়ন্ত ভয়ে কাঁপবে| তাদের মৃতদেহগুলি জঞ্জালের মতো রাস্তায় পড়ে থাকবে| কিন্তু তবুও ঈশ্বরের রোধ পড়বে না| তাঁর হাত তাদের শাস্তি দেবার জন্য উত্তোলিত থেকে যাবে| 26 দেখ! ঈশ্বর দূরবর্তী জাতিগণের প্রতি সঙ্কেত দিচ্ছেন| তিনি তাদের ডাকার জন্য পতাকা তুলছেন এবং শিস দিচ্ছেন| দেখ, শএুরা দূরদেশ থেকে আসছে| তারা অচিরে দেশে ঢুকে পড়বে| তারা খুব দ্রুত আসছে| 27 এই শএুরা কখনও ক্লান্ত হবে না, হোঁচট খাবে না এবং ঘুমিযে পড়বে না| তাদের অস্ত্রের কটিবন্ধন খুলে যাবে না| তাদের জুতোর ফিতে কখনই ছিঁড়ে যাবে না| 28 এই শএুদের তীর ধারালো হবে| তাদের সব ধনুকগুলি তীর ছোঁড়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে| তাদের ঘোড়ার পায়ের পাতা হবে চক্মকি পাথরের মতো শক্ত| তাদের রথের চাকায় ধূলিঝড় উঠবে| 29 শএুরা সিংহের গর্জনের মতো চিত্কার করবে| তারা সিংহ শাবকের মতো গর্জন করবে| শএুরা সরোধ গর্জন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরতদের ধরে ফেলবে| লোকরা লড়াই করে মুক্তি পেতে চেষ্টা করবে| কিন্তু তাদের রক্ষা করার কেউ থাকবে না| 30 তাই “সিংহ” গর্জন হবে সমুদ্রের ঢেউযের গর্জনের মতো| এবং বন্দী অবরুদ্ধ লোকরা মাটির দিকে তাকাবে| কিন্তু দেখবে শুধুই অন্ধকার| ঘন মেঘে সমস্ত আলো অন্ধকারে ঢেকে যাবে|

ইসাইয়া 6

1 যে বছর ঊষিয রাজার মৃত্যু হল আমি প্রভুকে এক উচ্চ ও মনোরম সিংহাসনে বসে থাকতে দেখলাম| তাঁর লম্বা রাজপোশাক মন্দিরকে ভরে দিয়েছিল| 2 প্রভুর বিশেষ দূত সরাফরা তাঁর চারপাশে দাঁড়িয়েছিল| তাদের প্রত্যেকের ছয়টি করে ডানা ছিল| তারা দুটি ডানা দিয়ে মুখ ঢাকে, দুটি ডানা দিয়ে পা ঢাকে এবং বাকি দুটি ডানা তারা ওড়ার কাজে ব্যবহার করে| 3 এই দূতরা একে অপরকে ডেকে বলতে লাগল, “পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র| প্রভু সর্বশক্তিমান খুবই পবিত্র| তাঁর মহিমায পৃথিবী পরিপূর্ণ|” 4 তাদের চিত্কারে দরজার কাঠামো কেঁপে উঠলো| মন্দির ধোঁযায় ভরে যেতে লাগল| 5 তখন আমি হঠাত্‌ই ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম| আমি বললাম, “হায! আমি ধ্বংস হয়ে যাব| ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলার মতো আমি যথেষ্ট শুচি নই| এবং আমি এমন লোকদের মধ্যে বাস করি যারা ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলার মতো যথেষ্ট শুচি নয়|কারণ আমি রাজাকে, প্রভু সর্বশক্তিমানকে দেখেছি|” 6 বেদীতে আগুন জ্বলছিল| সরাফদের এক জন ইউ আকারের একটি চিমটি দিয়ে আগুন থেকে কযলা তুলছিল| এই দূতটি একটি গরম কযলার টুকরো হাতে নিয়ে আমার কাছে উড়ে এল| 7 দূতটি গরম কযলা আমার ঠোঁটে ছোঁযাল| তারপর দূতটি বলল, “যে মূহুর্তে এই গরম কযলা তোমার ঠোঁট স্পর্শ করল, তোমার সমস্ত অপরাধ মুছে গেল | তোমার সব পাপ মুছে গেল|” 8 তারপর আমি আমার প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম| তিনি বললেন, “আমি কাকে পাঠাব? আমাদের পক্ষে কে যাবে?”তখন আমি বললাম, “এই যে, আমি আছি, আমাকে পাঠান!” 9 তখন প্রভু আমাকে বললেন, “যাও এবং এই লোকদের বল: ‘তোমরা মন দিয়ে শোন কিন্তু বোঝো না! কাছ থেকে দেখ কিন্তু কোন কিছু শেখো না!’ 10 লোককে বিভ্রান্ত কর| লোকরা যে সব জিনিস দেখছে ও শুনছে তা তাদের বুঝতে দিও না| যদি তুমি এটা না কর তাহলে হয়তো তারা যে জিনিস কানে শুনবে তা সত্যি সত্যিই বুঝতে পারবে| তারা হয়তো সত্যিই তাদের মনে উপলদ্ধি করতে পারবে| যদি তারা এটা করে তাহলে লোকরা হয়তো আমার কাছে ফিরে আসতে পারে এবং তারা আরোগ্য (ক্ষমা) লাভ করবে|” 11 তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “প্রভু এটা আমি কতদিন করব?”প্রভু বললেন, “যতদিন পর্য়ন্ত সকল নগর ধ্বংস না হয় এবং লোকে চলে না যায়| যতদিন না পর্য়ন্ত একটি মানুষও তাদের বাড়ীতে পড়ে থাকে এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্থানে পরিণত হয় তত দিন এটা কর|” 12 প্রভু লোকদের অনেক দূরে পাঠিয়ে দেবেন| দেশের একটা বিরাট অংশ খালি পড়ে থাকবে| 13 কিন্তু দশ ভাগের এক ভাগ লোককে দেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে| এই লোকগুলি প্রভুর কাছে ফিরে আসবে যদিও তাদের ধ্বংস হয়ে যাবার কথা| তারা একটি ওক গাছের মতো| এই গাছকে কাটার পর গুঁড়ি পড়ে থাকে| এই গুঁড়ি (অবশিষ্ট লোকরা) একটি বিশেষ বীজ| অর্থাত্‌ পবিত্র লোকরাই দেশে থাকবে|

ইসাইয়া 7

1 আহস ছিলেন য়োথমের পুত্র| য়োথম ছিলেন ঊষিযের পুত্র| রত্‌সীন ছিলেন অরামের রাজা|আহসের রাজত্ব কালে সিরিযার রাজা রত্‌সীন এবং ইস্রায়েলের রাজা, রমলিযের পুত্র পেকহ জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এসেছিলেন| কিন্তু তাঁরা এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারেন নি| 2 যিহূদার রাজবাড়ি দাযূদের পরিবারকে জানানো হল যে, “অরাম এবং ইফ্রযিমের (ইস্রায়েলের) সেনাদল জোটবদ্ধ হয়েছে| তারা একসঙ্গে ঘাঁটি গেড়েছে|”এই খবর শুনে রাজা আহস এবং তাঁর প্রজারা খুব ভয় পেয়ে গেলো| বনের গাছপালা যেমন বাতাসে নড়ে তেমনি তারাও ভয়ে কাঁপতে লাগল| 3 তখন প্রভু যিশাইয়কে বললেন, “তুমি এবং তোমার পুত্র শার-যাশূব যাবে এবং আহসের সঙ্গে কথা বলবার জন্য ধোপাদের মাঠের রাস্তার পাশে যেখানে জল উচ্চতর জলাশযের মধ্যে দিয়ে বইছে, সেখানে দেখা করবে| 4 “আহসকে বল, ‘সাবধানে থেকো, কিন্তু শান্ত থেকো! রত্‌সীন ও রমলিযের পুত্রকে ভয় পেযো না, কারণ তারা দুটি পোড়া কাঠির মত| অতীতে তারা খুব গরম ছিল| কিন্তু এখন তারা শুধুই ধোঁযা| রত্‌সীন, অরাম এবং রমলিযের পুক্র রুদ্ধ হয়ে রয়েছে| 5 তারা তোমার বিরুদ্ধে নানা ফন্দি এঁটেছে| তারা বলছে: 6 আমরা যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| আমরা নিজেদের স্বার্থে যিহূদাকে ভাগ করে টাবেলের পুত্রকে যিহূদার নতুন রাজা বানাব|”‘ 7 প্রভু আমার গুরু বললেন, “কিন্তু তাদের পরিকল্পনা সফল হবে না| 8 রত্‌সীন যতদিন দম্মেশকের শাসক থাকবে, ততদিন তাদের অভিসন্ধি খাটবে না| এখন ইফ্রযিম(ইস্রায়েল) একটি দেশ, কিন্তু ভবিষ্যতে আজ থেকে 65 বছর পরে সেটি আর একটি দেশ থাকবে না| 9 যতদিন শমরিয়া ইফ্রযিমের (ইস্রায়েল) রাজধানী থাকবে এবং যতদিন রমলিযের পুত্র শমরিয়ার শাসক থাকবে ততদিন তাদের ফন্দি সফল হবে না| তুমি যদি একথা বিশ্বাস না কর তাহলে লোকরা তোমাকে বিশ্বাস করবে না|” 10 তারপর প্রভু যিহূদার রাজা আহসকে আরও বললেন, 11 “প্রভু, তোমার ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি সংকেত চিহ্ন চেয়ে নাও যাতে তুমি নিজের কাছে প্রমাণ করতে পারো যে এগুলি সব সত্য| তুমি তোমার ইচ্ছেমতো যে কোন সংকেত চিহ্ন চাইতে পারো| চিহ্নটি মৃতের আলযের মতো গভীর থেকে অথবা আকাশের মত উঁচু থেকে আসতে পারে|” 12 কিন্তু আহস বললেন, “আমি প্রমাণ স্বরূপ কোন নিদর্শন চাই না| আমি প্রভুকে পরীক্ষাও করতে চাই না|” 13 যিশাইয় বললেন, “দাযূদের পুত্র, আহস মন দিয়ে শোন| লোকের ধৈর্য়্য়ের পরীক্ষা কি তোমাদের কাছে যথেষ্ট নয়? তোমরা কি আমার ঈশ্বরেরও ধৈর্য়্য়ের পরীক্ষা নিতে চাও? 14 ঈশ্বর আমার প্রভু, তোমাদের একটা চিহ্ন দেখাবেন:ঐ যুবতী মহিলাটি গর্ভবতী হবে এবং দেখ সে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেবে| তার নাম রাখা হবে ইম্মানূযেল| 15 যতদিন না পর্য়ন্ত ইম্মানূযেল খারাপ কাজ প্রত্যাখান করে ভালো কাজ বেছে নিতে শিখবে ততদিন পর্য়ন্ত সে দই ও মধু খাবে| 16 কিন্তু ছেলেটি ভালো কাজ করবার মত এবং মন্দ কাজ প্রত্যাখান করবার মতো বোঝবার বযসে এসে পৌঁছবার আগেই ইফ্রযিম এবং অরাম দেশ জনমানব বর্জিত হয়ে যাবে|“তোমরা এখন ঐ দুজন রাজার ভয়ে ভীত| 17 কিন্তু তোমাদের আসলে প্রভুকে ভয় পাওয়া উচিত্‌| কারণ তিনি তোমাদের জন্য দুঃসময় আনবেন| এই দুঃসময় তোমার কাছে, তোমার লোকদের কাছে এবং তোমার পিতৃকুলেও আসবে| ঈশ্বর কি করবেন? তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তিনি অশূরের রাজাকে আমন্ত্রণ জানাবেন| 18 “সে সময় প্রভু ‘মাছি’ (এখন ‘মাছিটি’ মিশরের নদীর কাছে আছে|) এবং ‘মৌমাছিকে’ (‘মৌমাছিটি’ এখন অশূর দেশে আছে|) ডাক দেবেন| তারা তোমার দেশে এসে পৌঁছবে| 19 তারা মরুভূমির জলস্রোতের পাশে, পাথুরে গভীর খাদে, ঝোপঝাড়ে এবং জলময় গর্তের কাছে চাক বাঁধবে| 20 প্রভু যিহূদাকে শাস্তি দেবার জন্য অশূরকে ব্যবহার করবেন| প্রভু অশূরকে ভাড়া করবেন এবং সেটিকে একটি খুরের মতো ব্যবহার করা হবে| মনে হবে যেন প্রভু যিহূদার পা, মাথা এমনকি দাড়ি থেকেও চুল কামিয়ে নিচ্ছেন| 21 “এই সময় একজন লোক একটি যুবতী গাভী ও দুটি মেষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে| 22 এরা সেই লোকটিকে যে দুধ দেবে তা মাখন খাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট হবে| দেশে যারা রয়ে গেছে তারা দই এবং মধু খাবে| 23 দেশের মাঠে মাঠে যে 1,000 দ্রাক্ষা গাছ আছে তার প্রত্যেকটির মূল্য হবে 1,000 রূপোর টুকরোর সমান| কিন্তু এই দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি আগাছা এবং কাঁটায ভরে যাবে| 24 দেশ বন্য হয়ে উঠবে এবং শিকার ক্ষেত্রে পরিণত হবে| 25 যেখানে এক সময় লোকে পরিশ্রম করে খাদ্য উত্পন্ন করত, সেই পাহাড়গুলি আগাছা এবং কাঁটায ভরে যাবে এবং সেখানে আর কেউ কখনও যাবে না| শুধুমাত্র মেষ এবং ষাঁড় সেখানে অবাধে বিচরণ করতে পারবে|”

ইসাইয়া 8

1 প্রভু আমাকে বললেন, “বড় একটি পাকানো কাগজ নিয়ে এসো এবং তাতে একটি বিশেষ কলম দিয়ে লেখ: ‘এটা মহের-শালল-হাশ-বসেরউদ্দেশ্যে|’ 2 আমি কিছু লোককে একত্রিত করলাম যাদের সাক্ষী হিসেবে বিশ্বাস করা যায়| (এরা হল ঊরিয যাজক ও য়িবেরিখিযের পুত্র সখরিয|) আমি ঐ কথা লেখার সময় এরা লক্ষ্য রাখল| 3 পরে আমি ভাব্বাদিনীর কাজে গেলাম| সে গর্ভবতী হয়ে পুত্র সন্তানের জন্ম দিল| তখন প্রভু আমাকে বললেন, “ওর নাম মহের-শালল-হাশ-বস রাখ| 4 কারণ ছেলেটি ‘বাবা’, ‘মা’ বলতে শেখার আগেই ঈশ্বর দম্মেশক ও শমরিয়ার সব ধনসম্পদ নিয়ে নেবেন এবং তা অশূর রাজার হাতে তুলে দেবেন|” 5 প্রভু আবার আমাকে বললেন, 6 “এই লোকরা শীলোহের মৃদু স্রোতকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে| তারা রত্‌সীন ও রমলিযের পুত্র পেকহকে নিয়ে খুশী হয়েছে| 7 কিন্তু আমি, প্রভু অশূর রাজাকে আনব এবং তার সমস্ত ক্ষমতা তোমাদের বিরুদ্ধে প্রযোগ করব| তারা ফরাত্‌ নদীর শক্তিশালী বন্যার জলের মতো আসবে| জল ফুলে ফেঁপে যেমন নদীর দুকূল ছাপিযে তেড়ে আসে সে ভাবে তারা আসবে| 8 এই জল ঐ নদী উপচে যিহূদা দেশকে প্লাবিত করবে| এই জলে যিহূদা আকণ্ঠ নিমজ্জিত হবে এবং প্রায গোটা দেশ ভেসে যাবে|“হে ইম্মানূযেল তোমার গোটা দেশকে গ্রাস না করা পর্য়ন্ত, এই বন্যা তার তাণ্ডব চালিযে যাবে|” 9 সমস্ত দেশসমূহ, তোমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| তোমরা পরাজিত হবে| সকল দূরবর্তী দেশের লোকরা শোন! তোমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| তোমরাও পরাজিত হবে| 10 তোমরা যুদ্ধের পরিকল্পনা তৈরী কর! তোমাদের পরিকল্পনা পর্য়ুদস্ত হবে| তোমাদের সেনাবাহিনীকে আদেশ দাও! কিন্তু তোমাদের আদেশ নিস্?ল হবে| কেননা ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন| 11 প্রভু শক্ত হাতে আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| প্রভু আমাকে সতর্ক করে দিলেন এই লোকদের পথে না যেতে| প্রভু বললেন, 12 “প্রত্যেক লোকই বলছে যে অন্য লোক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে| তুমি এই সব জিনিস বিশ্বাস কোরো না| এই সব লোকরা যেসব বিষয়কে ভয় পায় তুমি তাতে ভয় পেও না!” 13 এক মাত্র প্রভু সর্বশক্তিমানকেই তোমাদের ভয় পাওয়া উচিত্‌| তাঁকেই তোমাদের সম্মান জানানো উচিত্‌| 14 যদি তোমরা প্রভুকে সম্মান কর, তাঁকে পবিত্র বলে মান্য কর, তাহলেই তিনি তোমাদের পক্ষে এক নিরাপদ আশ্রয় হবেন| কিন্তু তোমরা তাঁকে সম্মান কর না| তাই ঈশ্বর একটা পাথরের মতো হবেন এবং তোমরা সেই পাথরের ওপর আছড়ে পড়বে| ইস্রায়েলের দুটি পরিবার এই পাথরের ওপর হোঁচট খাবে এবং তারা আঘাত পাবে| জেরুশালেমের সমস্ত লোককে আটক করতে প্রভু একটা ফাঁদ স্বরূপ হবেন| 15 অনেক লোক এই পাথরের ওপর হোঁচট খাবে, তারা পড়ে যাবে এবং আহত হবে| অনেকে ফাঁদে পড়ে ধরা পড়বে| 16 যিশাইয় বললেন: “একটা চুক্তি কর এবং তাতে সীলমোহর দিয়ে রাখো| ভবিষ্যতের জন্য আমার শিক্ষামালাকে সঞ্চয় করে রাখো| আমার অনুগামীদের সামনে এই কাজটি কর| 17 চুক্তিটি হল:আমি আমাদের রক্ষা করতে প্রভুর জন্য অপেক্ষা করব| তিনি যাকোবের পরিবারের থেকে মুখ লুকোচ্ছেন| কিন্তু আমি প্রভুর জন্য অপেক্ষা করব| তিনি আমাদের রক্ষা করবেন| 18 “আমি এবং আমার ছেলেমেয়েরা ইস্রায়েলের লোকের চিহ্ন এবং প্রমাণ স্বরূপ| সিয়োন পর্বতনিবাসী প্রভু সর্বশক্তিমান আমাদের পাঠিয়েছেন|” 19 এবং তারা যদি তোমাকে বলে, “মাধ্যমদের, জ্যোতিষীদের, গণত্‌কার এবং বাজীকরদের প্রশ্ন কর, “লোকদের কি তাদের (নিজেদের) ঈশ্বরকে খোঁজা উচিত্‌ নয়? মৃতদের কাছে কি তারা জীবিতদের সম্পর্কে প্রশ্ন করবে? 20 শিক্ষামালা এবং চুক্তি তোমাদের মেনে চলা উচিত্‌| তোমরা এই আদেশগুলো না মানলে তোমাদের হয়তো ভুল আদেশ অনুসরণ করতে হবে| গুণীন এবং গণত্‌কারদের কাছ থেকে যে আদেশ উপদেশ আসে সেগুলো ভুল| এর কোন মূল্য নেই| এই আদেশ মেনে চললে তোমাদের কিছু লাভ হবে না| 21 তোমরা যদি ভুল, মিথ্যা আদেশ মেনে চল তাহলে দেশে বিপদ এবং দুর্ভির্ক্ষ দেখা দেবে| ক্ষুধার্ত লোক রুদ্ধ হয়ে তাদের রাজা ও তাঁর দেবতাদের শাপ দেবে| তারপর তারা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের খোঁজ করবে| 22 দেশের চারদিকে তাকিযে দেখলে তারা দেখতে পাবে শুধুই দুঃখ-দারিদ্র্য়, হতাশাজনক অন্ধকার| তাদের জোর করে অন্ধকারের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হবে|

ইসাইয়া 9

1 কিন্তু যে বিপদে পড়েছিল তার জন্য কোন অন্ধকার থাকবে না| লোকরা অতীতে সবূলূন দেশ ও নপ্তালি দেশকে কোন গুরুত্বই দিত না| কিন্তু পরবর্তী-কালে সমুদ্রের নিকটবর্তী দেশ, য়র্দন নদীর অপর পারের দেশ এবং অ-ইহুদীদের মহকুমাটিকে ঈশ্বর খুব মহান করবেন| 2 এই সব দেশের লোক অন্ধকারে বাস করত| কিন্তু তারা মহা-আলোকটি দেখতে পাবে| ঐসব লোক কবরের মত অন্ধকার জায়গায় বাস করত| কিন্তু “মহা-আলোক” তাদের ওপর কিরণ দেবে| 3 হে ঈশ্বর, আপনিই জাতিটিকে বড় হতে দেবেন| আপনিই সেখানকার লোকদের সুখী করবেন| তারা আপনার উপস্থিতিতে যুদ্ধ জয়ের শেষে লুটের মাল ভাগের সময়কার আনন্দের মতো, ফসল তোলার সময়ের আনন্দের মতো সুখ ভোগ করবে| 4 কেননা আপনি তাদের ভারের বোঝা, তাদের কাঁধের বাঁক, শাস্তি দেওয়ার জন্য তাদের উপর ব্যবহৃত শএুদের দণ্ড সরিয়ে নেবেন| যেমন মিদিযনকে হারানোর পরে আপনি করেছিলেন| 5 যুদ্ধে দুর্বারভাবে এগিয়ে যাওয়া প্রতিটি বুট, যুদ্ধে সজ্জিত ব্যক্তির রক্তে রঞ্জিত সাজ-পোশাক আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হবে| 6 একটি বিশেষ শিশু জন্মগ্রহণ করার পরই এটা ঘটবে| ঈশ্বর আমাদের একটি পুত্র দেবেন| লোকদের নেতৃত্ব দেওয়ার ভার তার ওপর থাকবে| তার নাম হবে “আশ্চর্য়্য় মন্ত্রী, ক্ষমতাবান ঈশ্বর, চিরজীবি পিতা, শান্তির রাজকুমার|” 7 ন্যায়পরায়ণতা ও ধার্মিকতা দিয়ে তার শাসন স্থাপন করে| এখন থেকে এবং চির কালের জন্য দাযূদ পরিবার উদ্ভূত রাজার রাজত্বে শক্তি ও শান্তি বিরাজ করবে| তাঁর লোকদের জন্য প্রভুর প্রবল উদ্দীপনা তাঁকে এই সব কাজ করাবে| 8 আমার প্রভু যাকোবের সমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে এক আদেশ দেবেন| ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে এই আদেশ পালন করা হবে| 9 তখন ইস্রায়েলের লোক এমনকি শমরিয়ার প্রধানরাও জানতে পারবে যে ঈশ্বর তাদের শাস্তি দিয়েছেন|এখন তারা অহঙ্কারী এবং দাম্ভিক| তারা বলে, 10 “এই ইঁটগুলো হয়তো ভেঙে পড়তে পারে, কিন্তু আমরা আবার শক্তিশালী পাথর দিয়ে সেটি গড়ে তুলব| এই সুকমোর গাছগুলি হয়তো কাটা যেতে পারে, কিন্তু আমরা সেখানে নতুন গাছ লাগাব| এবং এই নতুন গাছগুলি হবে বড় এবং শক্তিশালী এরস গাছ|” 11 তাই প্রভু ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য লোকের খোঁজ করবেন| প্রভু তাদের বিরুদ্ধে রত্‌সীনের শএুদের কাজে লাগাবেন| 12 প্রভু পূর্ব থেকে অরাম এবং পশ্চিম থেকে পলেষ্টীয়দের আনবেন| ঐ শএুরা তাদের সৈন্যবাহিনী ব্যবহার করে ইস্রায়েলকে পরাজিত করবেন| কিন্তু তবুও ইস্রায়েলের ওপর থেকে প্রভুর রোধ যাবে না| তবুও প্রভু এখানকার লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন| 13 ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের শাস্তি দিলেও তারা পাপ কাজ করা বন্ধ করবে না| তারা প্রভু সর্বশক্তিমানকে মেনে চলবে না| 14 তাই প্রভু ইস্রায়েলের মাথা এবং লেজকে, বৃন্ত ও ডালপালাকে এক দিনেই কেটে ফেলবেন| 15 (এখানে মাথার মানে হল শহরের সম্মানীয গুরুত্বপূর্ণ নেতা বা প্রধান| লেজ মানে হল মিথ্যা কথা বলে এমন ভাব্বাদী|) 16 যে সব নেতারা লোকদের ভুলপথে নিয়ে যাচ্ছে তাদের ও তাদের অনুসরণকারীদের ধ্বংস করা হবে| 17 এসব লোকগুলো দুষ্ট| প্রভু তরুণদের নিয়ে খুশী নন| তিনি তাদের বিধ্বা পত্নী ও অনাথ ছেলেমেয়েদের ওপর করুণা করবেন না| কারণ লোকরা দুষ্ট এবং এমন কাজ করে যা ঈশ্বর বিরুদ্ধ| তারা মিথ্যা কথা বলে| তাই ঈশ্বর এদের ওপর রুদ্ধ থাকবেন এবং এদের শাস্তি চলতেই থাকবে| 18 দুষ্ট বস্তু হল ছোট্ট আগুনের মতো| প্রথমে এই আগুন আগাছা এবং কাঁটাঝোপকে গ্রাস করে| তারপর সেই আগুন বনের আর বড় ঝোপঝাড়কে ভস্মীভূত করে| অবশেষে এটা প্রকাণ্ড আগুনের আকার ধারণ করে সব কিছুকে গ্রাস করে ফেলে| 19 প্রভু সর্বশক্তিমান খুবই রুদ্ধ হয়েছেন| তাই গোটা দেশ পুড়ে ছারখার হবে| সেই আগুনে সমস্ত লোক দ3 হবে| কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে সমবেদনা জানাবে না, এমন কি নিজের ভাইকেও নয়| 20 খিদের জ্বালায় লোকরা ডান দিক থেকে কিছু খাবার ছিনিয়ে নেবে, কিন্তু তবু তারা ক্ষুধার্ত থেকে যাবে| তারা বাঁদিক থেকে কিছু খাবার ছিনিয়ে নেবে, কিন্তু তবু তাদের পেট ভরবে না| তারপর প্রত্যেকটি লোক তাদের নিজেদের দেহের মাংস খেতে থাকবে| 21 এর অর্থ হল মনঃশি ইফ্রযিমকে ও ইফ্রযিম মনঃশিকে এবং তারপর উভয়ে এক সঙ্গে যিহূদাকে আক্রমণ করবে|তবুও ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে প্রভুর রোধ মিটবে না| তিনি সেখানকার লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তখনও প্রস্তুত থাকবেন|

ইসাইয়া 10

1 বাজে, অসত্‌ বিধি প্রনয়ণকারীদের দেখ| এই বিধি প্রনয়ণকারীরা এমন সব বিধি রচনা করে যা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে| 2 এই বিধি প্রণযনকারীরা গরীব মানুষের প্রতি ন্যায় সঙ্গত নয়| তারা গরীব মানুষের অধিকার কেড়ে নেয| তারা বিধ্বা এবং অনাথ ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে জিনিসপত্র চুরি করে নেওয়া অনুমোদন করে| 3 হে বিধি প্রণযনকারী, তোমরা যে সব কাজ করছ সেসব কাজের কৈফিযত্‌ যখন চাওযা হবে তখন তোমরা কি করবে? তোমাদের দূরের একটা দেশ থেকে ধ্বংস আসছে| তোমরা তখন কোথায় সাহায্যের জন্য ছুটবে? তোমাদের টাকাপয়সা ও ধনসম্পদ তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারবে না| 4 তোমাদের এক জন বন্দীর পিছনে লুকোতে হবে অথবা তোমরা একজন মৃত দেহের নীচে পড়বে| ঈশ্বর তবুও রুদ্ধ থাকবেন| তিনি তোমাদের শাস্তি দেবার জন্য প্রস্তুত হবেন| 5 ঈশ্বর বলেছেন, “আমি অশূরকে একটা লাঠির মতো ব্যবহার করব| এোধর বশে, ইস্রায়েলকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি অশূরকে কাজে লাগাব| 6 যে সব লোকরা অসত্‌ এবং নোংরা কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি অশূরকে পাঠাবো| আমি এই সব লোকের ওপর ভীষণ রুদ্ধ, তাই আমি অশূরকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আদেশ দেব| সে তাদের পরাজিত করে তাদের সব সম্পদ লুঠ করে নেবে| অশূর ইস্রায়েলকে রাস্তায় কাদার মতো মাড়াবে| 7 “কিন্তু অশূর বুঝতে পারবে না যে আমি তাকে কাজে লাগিয়েছি| অশূর ভাবতে পারবে না যে সে আমার অস্ত্র| সে শুধু অন্য লোকদের হত্যা করতে চাইবে| অশূর বহু দেশকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছে| 8 অশূর মনে মনে বলে, ‘আমার সব নেতারা কি রাজাদের মত নয়? 9 কল্নো কি কর্কমীশের মতো নয়? হমাত্‌ কি অর্পদের মতো নয়? শমরিয়া কি দম্মেশকের মতো নয়? 10 আমি ঐ দুষ্ট রাজ্যগুলিকে পরাজিত করেছি এবং এখন আমি ওগুলি নিয়ন্ত্রণ করছি| এই সব দেশের লোকরা যেসব মূর্ত্তির পূজো করে তা জেরুশালেম ও শমরিয়ার থেকে বেশী| 11 আমি শমরিয়া এবং তার মূর্ত্তিগুলির যে দশা করেছি জেরুশালেম ও তার মূর্ত্তিগুলির দশাও তাই করব|”‘ 12 সিয়োন পর্বত ও জেরুশালেমে প্রভু নিজের পরিকল্পনা মতো সমস্ত কাজ শেষ করার পর তিনি অশূরকে শাস্তি দেবেন| অশূরের রাজা খুবই দাম্ভিক হয়ে উঠবেন আর এই অহঙ্কারের ফলে তিনি অনেক অর্থহীন কু-কাজ করবেন| তাই ঈশ্বর তাকে শাস্তি দেবেন| 13 অশূরের রাজা বলেন, “আমি খুবই জ্ঞানী| আমি আমার জ্ঞান ও ক্ষমতা দিয়ে বহু বড় বড় কাজ করেছি| আমি বহু জাতিকে পরাজিত করে তাদের ধনসম্পদ লুঠ করেছি এবং তাদের এীতদাস বানিয়েছি| আমি খুবই প্রতাপশালী লোক| 14 কোন কোন লোক যেমন পাখির বাসা থেকে অনায়াসে তাদের ডিম নিয়ে নেয, তেমনি আমিও নিজ হাতে সব দেশের ধনসম্পদ অনায়াসে লুঠ করেছি| একটা পাখি প্রাযই তার ডিম এবং বাসাকে একলা রেখে পালায়| তাই বাসাকে আগল দেবার জন্য বা কিচির-মিচির করে ডানা, ঠোঁট দিয়ে লড়াই করে ডিমকে রক্ষা করার জন্য কোন পাখি না থাকায় লোকে অনায়াসেই সেই ডিম নিয়ে পালায়| তেমনি গোটা পৃথিবীকে নিজের অধীনে আনার সময় আমাকে নিরস্ত করার মতো সাহস ও শক্তি কারও ছিল না|” 15 যে লোক কুড়ুল চালায কুড়ুল কি তার থেকে নিজেকে বেশী শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে? একটা করাত কি করাত চালকের থেকে নিজেকে শক্তিশালী বলে মনে করে? কিন্তু অশূর মনে করে সে ঈশ্বরের চেয়ে বেশী ক্ষমতাবান ও গুরুত্বপূর্ণ| কোন লোক লাঠি দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়ার পর লাঠি নিজেকে লোকটির চেয়ে বেশী ক্ষমতাবান মনে করলে যেমন হয়, অশূরের ভাবনাও অনেকটা সে রকমই| 16 অশূর নিজেকে মহান মনে করে| তাই তার দম্ভকে খর্ব করার জন্য প্রভু সর্বশক্তিমান অশূরের বিরুদ্ধে ভযানক রোগ পাঠাবেন| এক জন অসুস্থ যেমন করে তার ওজন হারায় ঠিক সেই ভাবে অশূরও তার ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি হারাবেন| তখন অশূরের মহত্ব ধ্বংস হবে| যতক্ষণ না সবকিছু বিনষ্ট হয় ততক্ষণ এটা একটা জ্বলন্ত অঙ্গারের মতো থাকবে| 17 ইস্রায়েলের আলো (ঈশ্বর) হবে আগুনের মতো| পবিত্র এক জনটি হবেন আগুনের শিখার মতো| তিনি ইস্রায়েলের আগাছা ও কাঁটাঝোপকে এক দিনে পুড়িয়ে দেবেন| 18 তারপর আগুন আরও ব্যাপক হয়ে দ্রাক্ষাক্ষেত এবং বড় বড় গাছকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে| অবশেষে লোক জন সমেত সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে| অশূর রাজ্য প্রায ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে| অশূরের অবস্থা হবে পচা মোটা কাঠের টুকরোর মতো| 19 বনের অবশিষ্ট গাছের সংখ্যা এত কমে যাবে যে একটা ছোট্ট শিশুর পক্ষেও তা গুনতে অসুবিধা হবে না| 20 সেই সময় ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশ এবং যাকোব পরিবারের বেঁচে যাওয়া লোকরা তাদের অত্যাচারীদের ওপর আর নির্ভর করবে না| তারা ইস্রায়েলের পবিত্রতম প্রভুর ওপর যথার্থভাবে নির্ভর করতে শিখবে| 21 যাকোব পরিবারের জীবিত লোকরা আবার সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে| 22 হে ইস্রায়েল, তোমার লোকের সংখ্যা বিশাল| অনেকটা সমুদ্রের বালুকণার মতো| কিন্তু তাদের মধ্যে খুব অল্প লোকই বেঁচে থাকবে এবং তারা ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে| কিন্তু প্রথমে, তোমাদের দেশটি ধ্বংস হবে| ঈশ্বর ঘোষণা করেছেন যে তিনি তোমাদের দেশ ধ্বংস করবেন| তারপর ভূখণ্ডটির ওপর প্লাবনের মতো সুবিচার চলে আসবে| 23 আমার গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান নিশ্চিত ভাবেই দেশকে ধ্বংস করবেন| 24 অতএব আমার প্রভু, সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “সিয়োন নিবাসী আমার লোকরা তোমরা অশূরকে ভয় পেও না| অতীতে যেমন মিশর করেছিল তেমনি ভাবে অশূরও তোমাদের প্রহার করবে| এটা ঠিক যেন অশূর তোমাদের লাঠি দিয়ে প্রহার করছে| 25 কিন্তু অল্প সময় পরে আমার রাগ পড়ে যাবে| মনে হবে যে অশূর তোমাদের যথেষ্ট শাস্তি দিয়েছে| তাই আর শাস্তির দরকার নেই|” 26 তারপর প্রভু সর্বশক্তিমান অশূরকে চাবুক দিয়ে মারবেন যেমন প্রভু অতীতে, রাবেন শৈলে মিদিযনকে পরাজিত করেছিলেন| যখন প্রভু অশূরকে আক্রমণ করবেন তখন একই রকম ঘটনা ঘটবে| প্রভু একদা লাঠিকে সমুদ্রের ওপর তুলে ধরে তার লোকদের মিশরের হাত থেকে রক্ষা করে মিশরকে শাস্তি দিয়েছিলেন| এটা সে রকমই হবে যখন প্রভু তার লোকদের অশূরের হাত থেকে রক্ষা করবেন| 27 একটা দীর্ঘ কাঠের দণ্ড কাঁধে বইলে যে কষ্ট হয় অশূর তোমাদের জন্য সে রকম অসুবিধার সৃষ্টি করবেন| কিন্তু সেই কাঠের দণ্ড তোমার কাঁধ থেকে সরে যাবে| ঐ কাঠের দণ্ড তোমার ঈশ্বরের শক্তিতে ভেঙে যাবে| 28 সেনাবাহিনী অযাতের কাছে প্রবেশ করবে| তারা মিগ্রোণ হেঁটে পেরিযে আসবে| মিক্মসে সেনারা রসদ রাখবে| 29 সেনারা (মাবারা) “এসিং” দিয়ে নদী পার হবে| তারা জেরুশালেমের উত্তরের শহর গেবাতে রাত কাটাবে| রামা শহর ভয়ে কাঁপবে| শৌলের গিবিয়াতে লোকরা ভয়ে পালাবে| 30 ওহে ‘বাথগল্লীম’ তুমি চিত্কার কর! লয়িশা শোন| অনাথোত্‌ উত্তর দাও| 31 মদ্মেনার লোকরা পালাচ্ছে| গেবীমের লোকরা লুকোচ্ছে| 32 আজকে, সেনারা নোবেতে থামবে এবং জেরুশালেমের সিয়োন পর্বতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে| 33 দেখ, আমাদের প্রভু, সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান বিরাট বৃক্ষটি (অশূর) আতঙ্ক দিয়ে কেটে ফেলবেন| গুরুত্বপূর্ণ লোক কাটা পড়বে| এবং গর্বিত লোকদের বিনীত করা হবে| 34 প্রভু কুঠার দিয়ে বন কেটে ফেলবেন এবং লিবানোনের বড় বড় বৃক্ষগুলির গুরুত্বপূর্ণ লোকদের পতন হবে|

ইসাইয়া 11

1 একটি ছোট গাছ (শিশু) য়িশযের গোড়া (পরিবার) থেকে বাড়বে| ঐ শাখাটি য়িশযের শিকড়গুলি থেকে বাড়বে| 2 আর প্রভুর আত্মা এই বালকটির ওপরে ভর করবে| এই আত্মা বালকটিকে জ্ঞান, বুদ্ধি, পথনির্দেশ এবং শক্তি দেবে| এই আত্মা বালকটিকে প্রভুকে জানার এবং তাঁকে সম্মান করার শিক্ষা দেবে| 3 প্রভুর প্রতি সমীহ দ্বারা বালকটি অনুপ্রাণিত হবে|সে বাইরের চেহারা দিয়ে কোন কিছু বিচার করবে না| কোন কিছু শোনার ভিত্তিতে সে রায় দেবে না| 4 সে সততা ও ধার্মিকতার সঙ্গে দীন-দরিদ্রদের বিচার করবে| সে ন্যাযের সঙ্গে দেশের দীনহীনদের বিভিন্ন বিষয়ের নিষ্পত্তি করবে| যদি সে কোন লোককে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয তাহলে তার আদেশমতো ঐ লোকটিকে শাস্তি পেতেই হবে| যদি সে লোকদের মৃত্যুর আদেশ দেয় তাহলে তাদের হত্যা করা হবে| সুবিচার, ধার্মিকতাই এই শক্তির অন্যতম উত্স| এই গুণগুলি তাঁর কোমরের বন্ধনীর মতো হবে| 5 6 সে সময় নেকড়ে বাঘ এবং মেষশাবক এক সঙ্গে শান্তিতে বাস করবে| বাঘ এবং ছাগল ছানা এক সঙ্গে শান্তিতে শুয়ে থাকবে| বাছুর, সিংহ এবং ষাঁড় একসঙ্গে শান্তিতে বাস করবে| এবং একটা ছোট্ট শিশু তাদের চালনা করবে| 7 গরু এবং ভাল্লুক একসঙ্গে শান্তিতে বাস করবে| তাদের সমস্ত শাবকরাও একসঙ্গে বাস করবে| কেউ কারো অনিষ্ট করবে না| সিংহ গরুর মতো খড় খাবে| এমনকি সাপও মানুষকে দংশন করবে না| 8 একটা শিশুও নির্ভয়ে কেউটে সাপের গর্তের ওপর খেলা করতে পারবে| বিষাক্ত সাপের গর্তের মধ্যেও সে নির্দ্বিধায হাত দিতে পারবে| 9 এই সব বিষয়গুলি আসলে প্রমাণ করে কেউ কারও কোন ক্ষতি না করে পরস্পর শান্তিতে বাস করবে| লোকরা আমার পবিত্র পর্বতের কোন অংশে হিংসা কিংবা ধ্বংসের আশ্রয় নেবে না| কারণ এই সব লোকরা যথার্থভাবে প্রভুকে চেনে ও জানে| ভরা সমুদ্রের জলের মতো প্রভু বিষয়ক অগাধ জ্ঞানে তারা পরিপূর্ণ থাকবে| 10 সে সময় য়িশযের পরিবারবর্গ থেকে একজন বিশেষ ব্যক্তি থাকবেন| এই ব্যক্তি লোকের পতাকা স্বরূপ হবেন| এই “পতাকা” সকল দেশকে তাঁর চারপাশে আসার জন্য পথ দেখাবে| সব দেশ তাঁর কাছে তাঁদের করণীয কর্তব্য়ের ব্যাপারে জানতে চাইবে| এবং তাঁর বিশ্রামস্থল মহিমান্বিত হবে| 11 সেদিন প্রভু (ঈশ্বর) তাঁর লোকদের অবশিষ্ট অংশকে মুক্ত করে আনতে দ্বিতীয় বারের জন্য হস্তক্ষেপ করবেন| (অর্থাত্‌ তিনি অশূর, মিশর, পথ্রোষ, এলম, বাবিল, হমাত্‌ এবং সমুদ্রের চতুর্দিকের সমস্ত উপত্যকা থেকে অবশিষ্ট লোকদের আনবেন|) 12 আর তিনি সমস্ত লোকদের জন্য “পতাকা” তুলবেন| ইস্রায়েল ও যিহূদা থেকে বিতাড়িত লোক যারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ছিন্নমূলের মতো বাস করছিল তাদের তিনি একত্রিত করবেন| 13 এই সময় ইফ্রযিমের (ইস্রায়েলের) ঈর্ষা দূর হবে| ইফ্রযিম আর যিহূদার ঈর্ষা করবে না| যিহূদার আর কোন শএু থাকবে না| এবং যিহূদা ইফ্রযিমের অসুবিধার কারণ হবে না| 14 কিন্তু ইফ্রযিম এবং যিহূদা একসঙ্গে পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করবে| কোন ছোট্ট প্রাণীর ওপর দুটি পাখি এক সঙ্গে ছোঁ মারলে যেমন হয় তাদের আক্রমণ অনেকটা সে রকম হবে| দুটি দেশ এক সঙ্গে পূর্বের দেশ থেকে ধনসম্পদ লুঠ করবে| ইফ্রযিম এবং যিহূদা ইদোম, মোয়াব এবং অম্মোনের লোকদের নিয়ন্ত্রণ করবে| 15 প্রভু মিশরের উপসাগরকে শুকিয়ে ফেলবেন এবং ধ্বংস করে ফেলবেন| তিনি ফরাত্‌ নদীর ওপর তাঁর হাত আন্দোলিত করবেন এবং ফরাত্‌ সাতটা ছোট ছোট নদীতে বিভক্ত হবে| এই ছোট ছোট নদীগুলি গভীর হবে না| লোকরা অনায়াসেই জুতো পরে নদীগুলির ওপর দিয়ে হেঁটে পার হতে পারবে| 16 আর মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েল বেরিয়ে আসার সময় যেমন তার জন্য পথের সৃষ্টি হয়েছিল তেমনি অশূরে জীবিত থাকা তাঁর লোকদের অশূর ত্যাগের জন্য ঈশ্বর একটি নতুন পথের সৃষ্টি করবেন|

ইসাইয়া 12

1 আর সেদিন তুমি বলবে:“হে প্রভু আমি তোমার প্রশংসা করি! তুমি আমার প্রতি রুদ্ধ ছিলে| কিন্তু এখন আর আমার প্রতি রুষ্ট থেকো না! আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা প্রদর্শন কর|” 2 ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করেন| আমি তাকে বিশ্বাস করি| আমি ভয় পাই না| তিনি আমাকে রক্ষা করেন| প্রভু য়িহোবা আমার শক্তিও বটে|তিনি আমাকে রক্ষা করেন এবং আমি তাঁর প্রশংসার গান গাই| 3 পরিত্রাণের ঝর্ণা থেকে তোমরা জল তুলবে এবং তারপর তোমরা আনন্দিত হবে| 4 তারপর তুমি বলবে, “প্রভুর প্রশংসা কর! তাঁর নাম উপাসনা কর! সমস্ত দেশে তাঁর কর্মের কথা বিদিত করে দাও| ঘোষণা কর যে তাঁর নাম মহান!” 5 প্রভুর প্রশংসার গান গাও! কেন না, তিনি মহান কাজ করেছেন| এই খবর পৃথিবীময় ছড়িয়ে দাও| পৃথিবীর সব মানুষ তা জানুক| 6 হে সিয়োনবাসীগণ উচ্চস্বরে ঈশ্বরের স্তবগান কর| ইস্রায়েলের পবিত্রতম ঈশ্বর অত্যন্ত সএযিভাবে তোমার সঙ্গে আছেন| তাই সকলে খুশী হও|

ইসাইয়া 13

1 আমোসের পুত্র যিশাইয় ঈশ্বরের কাছ থেকে বাবিল বিষয়ক এই দুঃখজনক বার্তা পান| 2 ঈশ্বর বললেন,“তোমরা বৃক্ষশূন্য পর্বতের ওপরে পতাকা তোল| লোকদের হাত নেড়ে চিত্কার করে ডাক| তাদের বল, গুরুত্বপূর্ণ লোকদের জন্য যে প্রবেশপথ সেই পথ দিয়ে প্রবেশ করতে|” 3 ঈশ্বর বললেন,“আমি ঐসব লোকদের অন্যান্যদের থেকে আলাদা করেছি এবং তাদের বিষয়ে আমি নিজে আদেশ দিয়েছি| আমি রুদ্ধ| আমি লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য আমার শক্তিশালী যোদ্ধাদের একত্র করেছি, যারা আমার গর্ব ও আনন্দ| 4 “পর্বতগুলোতে একটা বিরাট শব্দ আছে| সেই শব্দটি শোন! এটা পর্বতমালায় বহু জনসমাগমের শব্দ| অনেক রাজ্যের লোকরা একসঙ্গে জড়ো হয়েছে| প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর সেনাবাহিনীকে ডাকছেন| 5 প্রভু এবং তার সেনাদল আসছে| দূর দেশ থেকে তারা আসছে, দিগন্তের ওপার থেকে| প্রভু তাঁর রোধ প্রদর্শন করতে সেনাদলকে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করবেন, এই সেনাদল গোটা দেশকে ধ্বংস করবে|” 6 হাহাকার কর, নিজেদের জন্য দুঃখ কর| কেননা প্রভুর বিশেষ দিন আগত প্রায| সেই সময়ে আসছে যখন শএুরা তোমার সম্পদ লুঠ করবে| সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বয়ং তা ঘটাবেন| 7 লোকরা তাদের সাহস হারাবে| ভয় মানুষকে দুর্বল করবে| 8 প্রতিটি মানুষই ভয় পাবে| এই ভয় মহিলাদের প্রসব বেদনার মতো তাদের কষ্ট দেবে| তাদের মুখ হবে অগ্নিবর্ণ| লোকে একে অপরের দিকে ভযার্ত চোখে বিস্মযে তাকিযে থাকবে| 9 দেখ, প্রভুর বিশেষ দিন আসছে| এই দিন হবে ভয়ঙ্কর| ঈশ্বর রোধ গোটা দেশকে ধ্বংস করবেন| ঈশ্বর এই দেশের সমস্ত পাপী লোকদের ধ্বংস করবেন| 10 সেই দিন আকাশে অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে| সূর্য়, চাঁদ এবং তারারা কিরণ দেবে না| 11 ঈশ্বর বললেন, “আমি পৃথিবীতে বিপর্য়য ঘটাব| আমি দুষ্ট লোকদের তাদের পাপের জন্য শাস্তি দেব| আমি অহঙ্কারী লোকদের তাদের দর্প হারিযে দেব| আমি নিষ্ঠুর লোকদের গর্ব চূর্ণ করে দেব| 12 শুধুমাত্র অল্প কয়েকজন লোক বেঁচে থাকবে| এদের সংখ্যা এত নগন্য হবে যে তা সোনা খোঁজার মতোই কঠিন| এবং এইসব লোকেরা খাঁটি সোনার থেকেও অনেক বেশী দামী| 13 রোধ আমি আকাশমণ্ডলকে কম্পিত করব| এর ফলে পৃথিবী টলে গিয়ে স্থান ভ্রষ্ট হবে|”যেদিন প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর রোধর বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন সেদিন এসব ঘটনা ঘটবে| 14 তখন বাবিল থেকে লোকরা আহত হরিণের মতো, মেষপালকবিহীন মেষের মতো নিজ নিজ দেশের দিকে ছুটে পালাবে| 15 কিন্তু শএুরা বাবিলের লোকদের তাড়া করবে এবং যে ধরা পড়বে তাকেই তারা তরবারি দিয়ে হত্যা করবে| 16 তাদের বাড়িগুলি লুণ্ঠিত হবে| তাদের স্ত্রীরা ধর্ষিত হবে| আর তাদের চোখের সামনেই তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পিটিযে পিটিযে হত্যা করা হবে| 17 ঈশ্বর বললেন, “দেখ আমি মাদীয়দের সেনা দ্বারা বাবিলকে আক্রমণ করাব| রূপো ও সোনা দেওয়া হলেও মাদীয়র সেনারা লড়াই থামাবে না| 18 তীরন্দাজরা যুবকদের হত্যা করবে| শিশুদের তারা ক্ষমা করবে না| তারা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের প্রতিও করুণা করবে না| 19 “ঈশ্বর বাবিলকে ধ্বংস করবেন ঠিক যে ভাবে তিনি সদোম ও ঘমোরাকে ধ্বংস করেছিলেন| যদিও বাবিল হচ্ছে সব চেয়ে সুন্দর রাজ্য এবং সেখানকার নাগরিকদের গর্বস্বরূপ| 20 কিন্তু বাবিল আর সুন্দর থাকবে না| ভবিষ্যতে লোক সেখানে বাস করবে না| আরবীও সে স্থানে তাঁবু ফেলবে না| মেষপালকরা সেখানে মেষ চরাবে না| 21 শুধুমাত্র মরুভূমির হিংস্র বন্য জন্তু জানোযাররাই সেখানে বাস করবে| বাবিলের বাড়িতে কোন লোক বাস করবে না| সেখানে বন্য জন্তুরা শুয়ে থাকবে| বন্য ছাগলরা খেলা করবে| পেঁচা এবং বড় বড় পাখিতে বাড়িগুলি ভর্তি হয়ে যাবে| 22 বাবিলের সুন্দর প্রাসাদোপম মনোরম বাড়িগুলিতে বন্য কুকুর এবং নেকড়েরা চিত্কার করতে থাকবে| বাবিলকে ধ্বংস করা হবে| বাবিলের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে| বাবিলের দিন আর বাড়ানো হবে না|”

ইসাইয়া 14

1 ভবিষ্যতে প্রভু যাকোবকে পুনরায় করুণা করবেন| প্রভু আবার একবার ইস্রায়েলের লোকদের বেছে নেবেন এবং তাদের দেশ তাদের ফিরিয়ে দেবেন| তখন বিদেশী লোকরা যাকোবের পরিবারবর্গের সঙ্গে সংযুক্ত হবে| এবং তারা একই পরিবারের লোক যাকোবের বংশোদ্ভূত বলে পরিগণিত হবে| 2 ঐ জাতির লোকরা ইস্রায়েলীয়দের ইস্রায়েলে ফিরিয়ে আনবে| ঐ জাতির লোকরা ইস্রায়েলের দাসে পরিণত হবে| তখন ইস্রায়েলকে যারা দখল করেছিল, ইস্রায়েল তাদের দখল করবে এবং যারা তাদের অত্যাচার করেছিল তাদের শাসন করবে| 3 প্রভু তোমাদের কঠোর পরিশ্রম দূর করে তোমাদের আরামের ব্যবস্থা করবেন| অতীতে তোমরা দাস ছিলে| লোকরা তোমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করেছিল| কিন্তু প্রভু তোমাদের কঠোর পরিশ্রমের অবসান ঘটাবেন| 4 সেদিন তোমরা বাবিলের রাজা সম্পর্কে এই গানটি গাইতে শুরু করবে| গানটি হল:রাজা তাঁর শাসনকালে অত্যন্ত জঘন্য ব্যক্তি ছিলেন| কিন্তু তাঁর শাসনকাল এখন শেষ হয়ে গেল| 5 প্রভু দুষ্ট শাসকদের রাজদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন| প্রভু তাদের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছেন| 6 বাবিলের রাজা রোধ তাঁর প্রজাদের মারধর করতেন| তিনি কখনোই তাঁর প্রজাদের মারধর থেকে রেহাই দেননি| তিনি এোধ প্রজাদের শাসন করেছেন| তিনি প্রজাদের আঘাত না করে ক্ষান্ত থাকেন নি| 7 কিন্তু এখন গোটা দেশ শান্ত ও সুস্থির হয়েছে| সকলে আনন্দ করতে শুরু করেছে| 8 তুমি এক জন শযতান রাজা ছিলে| কিন্তু তোমার শাসন শেষ হয়েছে| এমন কি দেবদারু ও লিবানোনের এরস বৃক্ষরাও তোমার পতনে খুশী| এই গাছরা বলে: “রাজা আমাদের কেটে ফেলত| কিন্তু রাজার পতন হয়েছে| সে আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারবে না|” 9 পাতাল তোমার আগমনে বিচলিত হচ্ছে| পাতাল পৃথিবীর সমস্ত প্রধানদের প্রেতাত্মাদের তোমার জন্য জাগিয়ে তুলছে| পাতাল রাজাদের তাদের সিংহাসন থেকে দাঁড় করাচ্ছে| তারা তোমার আগমনের জন্য প্রস্তুত| 10 এই সব নেতারা তোমার সঙ্গে মজা করবে| তারা বলবে: “তুমি এখন আমাদের মতোই একটি মৃতদেহ| তুমি ঠিক আমাদের মতোই|” 11 তোমার দম্ভ, তোমার অহঙ্কার পাতালে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে| তোমার বীণার সুর তোমার সেই গর্বিত আত্মার আগমন ঘোষণা করছে| পোকামাকড় তোমার দেহকে কুরে কুরে খাবে| তুমি তাদের ওপর বিছানার মতো শুয়ে থাকবে| কৃমিরা তোমার দেহকে কম্বলের মতো ঢেকে রাখবে| 12 তুমি সকালের তারার মতো ছিলে| কিন্তু এখন তোমার আকাশ থেকে পতন হয়েছে| একদা পৃথিবীর সমস্ত জাতি তোমার সামনে মাথা নত করেছে| কিন্তু এখন তোমাকে কেটে ফেলা হয়েছে| 13 তুমি সর্বদা নিজেকে বলতে: “আমি হব পরাত্‌পরের মতো| আমি স্বর্গারোহণ করব| ঈশ্বরের নক্ষত্রমণ্ডলীর উর্দ্ধে আমার সিংহাসন উন্নীত করব| আমি পবিত্র দেবতাদের সমাগম পর্বতে অধিষ্ঠান করব| ঐ পর্বতের ওপর দেবতাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাত হবে| 14 আমি মেঘের বেদীতে উঠব| আমি পরাত্‌পরের তুল্য হব|” 15 কিন্তু সেটা ঘটেনি| তুমি ঈশ্বরের সঙ্গে স্বর্গে যেতে পারো নি| তোমাকে সমাধিস্থলের গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করা হয়েছে| 16 লোকরা তোমাকে দেখে তোমার কথা ভাববে| দেখবে তুমি শুধুই একটা মৃতদেহ| তারা দেখবে যে তুমি একটি শবদেহের চেয়ে বেশী কিছু নও এবং বলবে: “এ-ই কি সেই একই ব্যক্তি যে পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের প্রচণ্ড ভয়ের কারণ ছিল? 17 এ কি সেই ব্যক্তি যে নগরের পর নগর ধ্বংস করে তাকে মরুভূমিতে পরিণত করত? এ কি সেই ব্যক্তি যে যুদ্ধবন্দী লোকদের বাড়ি ফিরতে দিত না?” 18 পৃথিবীর সব রাজা সসম্মানে মারা গেছেন| প্রত্যেক রাজারই নিজস্ব সমাধি রয়েছে| 19 কিন্তু তোমার মতো অত্যাচারী রাজাকে কবরও প্রত্যাখ্যান করেছে| তোমার অবস্থা এখন গাছের কাটা ডালের মতো| গাছের ডালকে কেটে যেমন ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় তেমনি তুমিও নিজ কবরস্থান থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত হয়েছ| তুমি যুদ্ধে নিহত সেইসব ব্যক্তির শরীর দিয়ে ঢাকা যারা গর্তের মধ্যে পাথরের মত গড়িযে যায়| তুমি সেই মৃতদেহের মত যাকে মাড়িয়ে যাওয়া হয়| 20 অনেক রাজা মারা গিয়েছে এবং তাদের নিজস্ব কবর রয়েছে| কিন্তু তুমি তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারো না| কারণ তুমি তোমার নিজের দেশকেই ধ্বংস করেছ| তুমি তোমার প্রজাদের হত্যা করেছ| তোমার ছেলেমেয়েরা তোমার মতো ধ্বংসকার্য়্য় চালিযে যাবে না| তাদের বিরত করা হবে| 21 তোমরা তার ছেলেমেয়েদের হত্যার জন্য নিজেদের প্রস্তুত কর| তাদের হত্যা কর কারণ তাদের পিতা দোষী| তার ছেলেমেয়েরা আর কখনোই দেশের শাসন কর্তৃত্ব হাতে নিতে না পারে| তার ছেলেমেয়েরা আবার কখনও পৃথিবীটাকে তাদের নিজেদের শহরে ভরিয়ে ফেলতে পারবেনা| 22 প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, “আমি বিখ্যাত শহর বাবিলের খ্যাতিকে শেষ করব| আমি এখানকার লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| আমি বাবিলের সমস্ত লোককে ধ্বংস করব| আমি তাদের ছেলেমেয়েদের, তাদের পৌত্র-পৌত্রীদের এবং তাদের প্রপৌত্র-পৌত্রিদের ধ্বংস করব|” প্রভু নিজে একথাগুলি বলেছেন| 23 প্রভু বললেন, “আমি বাবিলকে পশুদের (অবাধ) বিচরণ ভূমিতে পরিণত করব| এই দেশ (শহর) জলাভূমিতে পরিণত হবে| আমি ‘ধ্বংসের ঝাঁটা’ দিয়ে বাবিলকে বিদায করব|” প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন| 24 প্রভু সর্বশক্তিমান প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, “আমি শপথ করছি যে এই সব ঘটনাগুলি আমার ভাবনা, পরিকল্পনা এবং সঙ্কল্প মতো ঘটবেই| 25 আমি আমার দেশে অশূর রাজকে ধ্বংস করব| আমি আমার পর্বতগুলোর ওপরে ঐ রাজার ওপর দিয়ে হেঁটে যাব| এই রাজাটি আমার লোকদের দাসে পরিণত করেছিল| সে তাদের দিয়ে ভারী বোঝা বহন করিযেছে| এই ভার সরিয়ে ফেলা হবে| 26 পৃথিবীব্যাপী আমার সমস্ত লোকদের আমি এগুলি করার পরিকল্পনা করেছি| সমস্ত দেশকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি আমার ক্ষমতাকে কাজে লাগাব|” 27 প্রভু যখন কোন পরিকল্পনা করেন তখন কারও পক্ষেই তা ব্যর্থ করা সম্ভব নয়| যখন প্রভু লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তাঁর হাত তোলেন তখন কারও পক্ষেই তাঁকে থামানো সম্ভব নয়| 28 যে বছর আহস রাজার মৃত্যু হয় সে বছর এই বার্তা প্রদান করা হয়েছিল| 29 হে পলেষ্টীয়, যে রাজা তোমাদের ওপর অত্যাচার করত সে মারা যাওয়ায় তোমরা খুবই খুশী হয়েছ| কিন্তু তোমরা সত্যি সত্যিই আনন্দিত হযো না| এটা সত্যি যে তার শাসনের অবসান ঘটেছে| কিন্তু এরপর রাজার পুত্র শাসন করবে| এবং এটা কোন সাপের আরও বিষাক্ত সাপের জন্ম দেওয়ার মতো ব্যাপার| এই নতুন রাজা তোমাদের কাছে একটি অতি বেগবান এবং ভয়ঙ্কর সাপের মতো হবে| 30 তবে আমার দীনহীন লোকরা নিরাপদে খেতে পারবে, ঘুমাতে পারবে এবং নিজেদের নিরাপদ মনে করবে| তাদের ছেলেমেয়েরা নিরাপদে থাকবে| আমার দরিদ্র লোকরা শুতে পারবে এবং নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারবে| কিন্তু আমি দুর্ভিক্ষ দ্বারা তোমার পরিবারকে হত্যা করব এবং তোমার অবশিষ্ট সমস্ত লোক মারা যাবে| 31 হে পুরদ্বারবাসী তোমরা কাঁদ| হে পুরবাসী তোমরা বিলাপ কর| হে পলেষ্টীয়বাসী তোমরা ভয় পাবে| তোমাদের সাহস গরম মোমের মতো গলে যাবে| দেখ, ধোঁযা উত্তরের দিক থেকে আসছে| অশূর থেকে শক্তিশালী সেনাবাহিনী আসছে| 32 এই সেনারা তাদের দেশে বার্তাবাহক পাঠাবে| এই বার্তাবাহকরা তাদের লোকদের কি বলবে? তারা ঘোষণা করবে: পলেষ্টীয় পরাজিত হয়েছে| কিন্তু প্রভু সিয়োনকে শক্তিশালী করেছেন এবং তার দীন দরিদ্র লোকরা নিরাপদে সেখানে আশ্রয় নেবে|

ইসাইয়া 15

1 এটা মোয়াব সম্পর্কে একটি বার্তা: এক দিন রাতে মোয়াবের আর নগর থেকে সেনারা সমস্ত ধনসম্পদ লুঠ করল| ঐ রাতেই নগরটিকে ধ্বংস করা হল| এক দিন রাতে সেনারা মোয়াবের কীর নগর লুঠ করল| ঐদিন রাতেই নগরটিকে ধ্বংস করা হল| 2 রাজার পরিবার এবং দীবন শহরের লোকরা কান্নাকাটি করার জন্য উচ্চ স্থানে যাচ্ছে| মোয়াবের লোকরা নবো ও মেদবা শহরের জন্য কাঁদছে| সকলে তাদের শোকপ্রকাশের জন্য তাদের মাথা ও দাড়ি কামিয়ে ফেলেছে| 3 বাড়ির ছাদ থেকে রাস্তাঘাট পর্য়ন্ত সর্বত্রই মোয়াবের লোকরা শোকের পোশাক পরে কান্নাকাটি করছে| 4 হিশ্বোন ও ইলিয়ালী শহরের লোকরা এত জোরে কান্নাকাটি করছে যে, সুদূর য়হস পর্য়ন্ত তার শব্দ শোনা যাচ্ছে| এমনকি সেনারাও আকস্মিক ভয় পেয়ে গিয়েছে| তারা ভয়ে কাঁপছে| 5 মোয়াবের দুঃখে আমার হৃদয় ব্যথিত| লোকরা নিরাপত্তার জন্য ছুটছে| তারা সোযর, ইগ্লত্‌-শলিশীযায় পর্য়ন্ত যাচ্ছে| তারা লূহীতের পার্বত্যময় পথ ধরে ওঠার সময় বিশ্রীভাবে চিত্কার করে কাঁদছে| হোরোণযিমের পথে হাঁটার সময় লোকরা চিত্কার করে কাঁদছে| 6 কিন্তু নিম্রীমের ক্ষুদ্র নদী মরুভূমির মতো শুকিয়ে গিয়েছে| সমস্ত ছোট গাছপালা শুকিয়ে গিয়েছে| কোন কিছুই আর সবুজ নেই| 7 তাই, মোয়াব ত্যাগ করার আগে লোকরা তাদের নিজ নিজ জিনিসপত্র সংগ্রহ করে জড় করছে এবং উইলো একি এর ওপারে নিয়ে যাচ্ছে| 8 মোয়াবের সর্বত্রই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে| ইগ্লযিম এবং বের্-এলীম শহরের লোকরা কাঁদছে| 9 দীমোনের জল রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে| এবং আমি দীমোনের জন্য আরো দুঃখ আনব| মোয়াবের খুব অল্পসংখ্যক লোক শএুদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গিয়েছে| কিন্তু এই সব লোকদের ভক্ষণ করার জন্য আমি অনেক সিংহ পাঠাব|

ইসাইয়া 16

1 হে লোকরা, দেশের শাসকের জন্য তোমরা একটি উপহার পাঠাও| সেলা থেকে একটি মেষশাবক মরুভূমির মধ্যে দিয়ে সিয়োন কন্যা পর্বতের কাছে পাঠিয়ে দাও| 2 মোয়াবের মেয়েরা অর্ণোন নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছে| তারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সাহায্যের জন্য ছুটছে| তাদের অবস্থা যেন নীড় ভেঙে হারিযে যাওয়া ছোট্ট পাখির মতো| 3 তারা বলছে, “আমাদের সাহায্য কর, বলে দাও আমরা এখন কি করব! যেমন করে ছায়া মধ্যাহ্নের গনগনে সূর্য় থেকে আমাদের রক্ষা করে, তেমনি প্রভু শএুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা কর| আমরা শএুদের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচ্ছেি| আমাদের আড়াল কর| আমাদের শএুদের হাতে তুলে দিও না|” 4 মোয়াবের লোকদের জোর করে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে| তাই তাদের তোমাদের দেশে বাস করতে দাও| শএুদের চোখ থেকে তাদের লুকিয়ে রাখো| লুঠতরাজ বন্ধ হবে| শএুরা পরাস্ত হবে| অত্যাচারী লোকরা দেশ ছেড়ে চলে যাবে| 5 তারপর দাযূদের পরিবার থেকে এক জন নতুন রাজা আসবেন| তিনি বিশ্বস্ত হবেন| তিনি দয়ালু এবং প্রেমিক হবেন| এই রাজা ন্যায্য বিচার করবেন| যা কিছু ভাল এবং সঠিক সে সব কাজ তিনি তাড়াতাড়ি করবেন| 6 আমরা মোয়াব্বাসীদের অহঙ্কার এবং দাম্ভিকতার কথা শুনেছি| তারা অহঙ্কারী এবং হিংস্র| তারা দম্ভ করে, কিন্তু তাদের দম্ভগুলি শুধুই কতগুলি ফাঁকা বুলি| 7 এই অহঙ্কারের জন্য গোটা মোয়াব দেশ ভুগবে| মোয়াবের সমস্ত লোক হাহাকার করবে| তারা দুঃখিত হবে এবং অতীতে তাদের যা যা ছিল তারা তা ফিরে পেতে চাইবে| 8 হিশ্বোনের ক্ষেত ও সিব্মার দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে| বিদেশী শাসকরা তাদের সব দ্রাক্ষাগাছ কেটে ফেলেছে| সুদূর যাসের শহর পর্য়ন্ত এমনকি মরুভূমির ভেতর পর্য়ন্ত তাদের দ্রাক্ষা বাগান ছড়িয়ে থাকত| তাদের শাখাগুলি একেবারে সমুদ্রের ওপার পর্য়ন্ত ছড়িয়ে পড়ত| 9 “আমি যাসের এবং সিব্মার লোকদের সঙ্গে কাঁদব কারণ দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি ধ্বংস করা হয়েছে| আমি হিশ্বোন এবং ইলিয়ালীর লোকদের সঙ্গে কাঁদব কারণ কোন শস্য সংগ্রহ হবে না| কোন গ্রীষ্মকালীন ফসল উঠবে না| তাই কোন আনন্দ উল্লাস হবে না| 10 কারমেলে কোন আনন্দ গান হবে না| শস্য সংগ্রহের সময়কার আনন্দের আমি পরিসমাপ্তি ঘটাব| দ্রাক্ষারস তৈরীর জন্য যে সমস্ত দ্রাক্ষা তৈরি হয়ে আছে তা সব নষ্ট হয়ে যাবে| 11 তাই আমি মোয়াব এবং কীর্-হেরস এই দুটি শহরের জন্য খুবই দুঃখিত| 12 মোয়াবের লোকরা তাদের উপাসনালযে যাবে| লোকরা প্রার্থনা জানানোর চেষ্টা করবে| কিন্তু তারা তাদের পরিণাম কি হবে তা দেখতে পেয়ে এত দুর্বল হয়ে পড়বে যে আর প্রার্থনা করতে পারবে না|” 13 প্রভু মোয়াব সম্পর্কে এই ঘটনাগুলির কথা বহুবার বলেছেন| 14 এবং প্রভু এখন বলেন, “তিন বছরের মধ্যে এই বিপুল জনসংখ্যা এবং অন্যান্য জিনিষ, যার জন্য মোয়াব গর্বিত, তার বিশেষ কিছুরই অস্তিত্ব থাকবে না (ঠিক যেমন ভাড়া করা সহকারীরা সময় গোনে)| শুধুমাত্র ক্ষীণবল গুটিকতক লোক পড়ে থাকবে|”

ইসাইয়া 17

1 এটা দম্মেশকের জন্য দুঃখের বার্তা| প্রভু বললেন এই ঘটনাগুলি দম্মেশকে ঘটবে:“দম্মেশক এখন একটি শহর| কিন্তু এই শহর ধ্বংস হয়ে যাবে| শহরে ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না| 2 লোকরা অরোয়ের শহরগুলি ত্যাগ করে পালাবে| এই সব খালি শহরে মেষের পাল যেখানে সেখানে অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারবে| তাদের বিরক্ত করা বা ভয় দেখানোর কেউ থাকবে না| 3 ইফ্রযিমের দুর্গ নগরীগুলি (ইস্রায়েল) ধ্বংস হয়ে যাবে| দম্মেশকের সরকার শেষ হয়ে যাবে| ইস্রায়েলে যে ঘটনা ঘটেছে অরামে তাই ঘটবে| সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ লোকদের অপসারণ করা হবে|”প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন এই ঘটনাগুলি ঘটবে| 4 যাকোবের সমস্ত মহিমা অবদমিত হবে| তার সমৃদ্ধি ক্ষয়লাভ করবে| 5 ঐ সময়টা রফাযীম উপত্যকায় ফসল তোলার সময়ের মতো হবে| শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে ফসল তুলে তা এক জায়গায় জড়ো করে, তারপর তারা চারা গাছগুলি থেকে শস্যের মাথা কেটে নেয এবং শস্য সংগ্রহ করে| 6 সে সময়টা জলপাই (অলিভ) সংগ্রহের কালের মতো হবে| লোকরা জলপাই গাছ থেকে জলপাই তোলে| কিন্তু কয়েকটা জলপাই সাধারণত গাছের মাথায় থেকে যায়| কিছু কিছু গাছের ডালের মাথায় চার-পাঁচটা করে জলপাই পড়ে থাকে| এখানকার শহরগুলির অবস্থাও সেরকম হবে| প্রভু সর্বশক্তিমান এই ঘটনাগুলোর কথা বললেন| 7 সে সময়ে লোকরা তাদের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের খোঁজ করবেন| তাদের চোখ ইস্রায়েলের পবিত্রতমের দিকে চেয়ে থাকবে| 8 লোকরা তাদের তৈরী বেদীগুলোর দিকে যাবে না| তারা তাদের আশেরার খুঁটির কাছে এবং নিজেদের হাতে তৈরী সূর্য়দেবতার মূর্ত্তির কাছে বেদীতে যাবে না| 9 সে সময় সমস্ত দুর্গ শহর পরিত্যক্ত হবে| ঐ শহরগুলির অবস্থা ইস্রায়েলের লোকরা আসার আগে দেশের পর্বত ও জঙ্গলের পরিত্যক্ত ভূমির মতো হবে| অতীতে ইস্রায়েলের লোকদের আগমনের সময় অন্য সমস্ত লোকরা পালিয়ে গিয়েছিল| ভবিষ্যতে এই দেশ আবার পরিত্যক্ত হবে| 10 কারণ তোমরা তোমাদের রক্ষাকর্তা ঈশ্বরকে ভুলে গিয়েছ| ঈশ্বর যে তোমাদের নিরাপদ জায়গা তা তোমরা স্মরণ করছ না|তোমরা অনেক দূরদূরান্ত থেকে খুব ভালো জাতের দ্রাক্ষা এনেছ| কিন্তু এগুলোকে রোপণ করলে গাছগুলো জন্মাবে না| 11 এক দিন তোমরা তোমাদের দ্রাক্ষা গাছগুলোকে রোপণ করবে| এবং তাদের বড় করার চেষ্টা করবে| পরের দিন গাছগুলো বড় হতে আরম্ভ করবে| কিন্তু ফসল তোলার সময়ে তোমরা যখন দ্রাক্ষা তুলতে যাবে, দেখবে যে সব গাছগুলো মরে গেছে| কোন রোগ সব গাছকে মেরে ফেলবে| 12 অনেক লোকের কান্নার রোল শোন| তারা সমুদ্রের ঢেউযের মতো, সমুদ্র জলোচ্ছাসের শব্দের মতো গর্জন করছে| 13 লোকরা এই ঢেউযের মতো গর্জন করবে| কিন্তু ঈশ্বর তাদের ধমক দেবেন| তাই তারা দূরে পালাবে| তারা ঝড়ের সামনে ভূষির মতো কিংবা ঝড়ের মুখে ছোট শিকড়ওযালা গাছের মতো উড়ে যাবে| 14 ঐ দিন রাতে লোকরা ভয় পাবে| সকাল হওয়ার আগেই সবাই পালিয়ে যাবে| কোন কিছুই পড়ে থাকবে না| তাই শএুরা কিছুই পাবে না| তারা আমাদের দেশে আসবে| কিন্তু দেশে তখন কিছুই থাকবে না|

ইসাইয়া 18

1 কূশীয় নদীগুলির দৈর্য়্ঘ বরাবর দেশটির দিকে দেখ| দেশটি পতঙ্গে ভরে গিয়েছে| তুমি তাদের ডানার ভন ভন শব্দ শুনতে পাচ্ছ| 2 ঐ দেশটি ভেলায করে সমুদ্রের ওপারে বার্তাবাহক পাঠাচ্ছে| হে দ্রুতগামী বার্তাবাহকগণ, দীর্ঘকায ও মসৃণত্বকের লোকদের কাছে যাও| সমস্ত জায়গার লোকরা এই দীর্ঘকায এবং মসৃণত্বকের লোকদের ভয় পায়, তারা একটি শক্তিশালী জাতি যারা অন্য জাতিদের পরাজিত করে| তারা একটি দেশে বাস করে যেটি নদীসমূহ দ্বারা বিভক্ত| 3 ঐসব লোকদের সাবধান করে দাও যে তাদের কোন না কোন বিপদ ঘটবে| এই দেশের লোকদের যে বিপদ ঘটবে সারা পৃথিবীর লোক তা দেখতে পাবে| এই সব লম্বা লোকদের কপালে যা ঘটবে তা পৃথিবীর সবাই পর্বতের ওপরে পতাকা ওড়ার দৃশ্যের মতো পরিষ্কার দেখতে পাবে| যুদ্ধের আগে শিঙা ফোঁকার শব্দের মতো পৃথিবীর সবাই পরিষ্কার ভাবে তা শুনতে পাবে| 4 প্রভু বললেন, “যে জায়গা আমার জন্য তৈরী হয়েছে আমি সেখানে থাকব|কিন্তু 5আমি শান্তভাবে এইসব ঘটনা পর্য়বেক্ষণ করব| গ্রীষ্মের এক মনোরম দুপুরে (যে সময়ে এক ফোঁটা বৃষ্টি হয় না অথচ ভোরে শিশির পড়ে|) একটা ভয়ঙ্কর কিছু ঘটবে| এটি ঘটবে ফসল কাটার সময়ের আগে যখন ফুলগুলি ফুটে যাবে এবং নতুন দ্রাক্ষাগুলি মঞ্জরীত হবে এবং বাড়তে থাকবে; কিন্তু তখন শএুরা এসে গাছগুলি কেটে ফেলবে ও দ্রাক্ষা লতাগুলি ছিঁড়ে ফেলবে এবং সেগুলি ছুঁড়ে ফেলে দেবে| 5 6 দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি পর্বতের পাখি এবং বন্য জন্তুদের খাবার জন্য পড়ে থাকবে| গ্রীষ্মকালে পাখিরা দ্রাক্ষা-লতায বাসা বাঁধবে এবং শীতকালে বন্য জন্তুরা দ্রাক্ষা-লতা খাবে|” 7 তখন দীর্ঘকায ও মসৃণত্বকের লোকরা প্রভু সর্বশক্তিমানের জন্য একটি বিশেষ নৈবেদ্য নিয়ে আসবে| সমস্ত জায়গার লোকরা এই দীর্ঘকায, মসৃণত্বকের লোকদের ভয় পায়| একটি ক্ষমতাবান জাতি যারা অন্য দেশসমূহকে পরাস্ত করে, তারা একটি দেশে বাস করে যেটি নদীসমূহ দ্বারা বিভক্ত| এই নৈবেদ্য সিয়োন পর্বতে, প্রভু যেখানে অধিষ্ঠান করেন, সেখানে আনা হবে|

ইসাইয়া 19

1 মিশর সম্পর্কে বার্তা: দেখো! প্রভু একটা দ্রুত ধাবমান মেঘে চড়ে আসছেন| তিনি মিশরে যাবেন এবং তাঁর এই আগমনে সেখানকার মূর্ত্তিরা ভয়ে কাঁপবে| সাধারণতঃ মিশরবাসীরা সাহসী কিন্তু প্রভুর আগমনে তাদের সাহস গরম মোমের মতো গলে যাবে| 2 ঈশ্বর বলেন: “আমি মিশরের লোকদের নিজেদের মধ্যে মারামারি করাব| ভাই লড়বে ভাইযের বিরুদ্ধে| প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে প্রতিবেশী| এক শহর অন্য শহরের বিরুদ্ধে| এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে| 3 লোকরা বিভ্রান্ত হবে| লোকরা তাদের ভ্রান্ত দেবতা ও জ্ঞানী লোকদের দরবারে হাজির হয়ে জানতে চাইবে তাদের কি করা উচিত্‌| লোকরা যাদুকরের কাছেও জিজ্ঞাসা করবে| কিন্তু কারোর উপদেশই কার্য়করী হবে না|” 4 গুরু, সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “মিশরকে আমি এক কঠোর প্রভুর হাতে দেব| এক শক্তিশালী রাজা লোকদের শাসন করবে| 5 নীলনদ এমশঃ শুকিয়ে আসবে| সমুদ্র থেকে জল চলে যাবে| 6 সমস্ত নদীর জল দুর্গন্ধে ভরে যাবে| মিশরের খালগুলি এমশঃ শুকিয়ে যাবে এবং জলহীন হয়ে পড়বে| সমস্ত জলজ উদ্ভিদগুলিতে পচন ধরবে| 7 নীলনদের তীর ধরে যেসব ছোট গাছপালা আছে সেগুলো মরে যাবে এবং উড়ে যাবে| এমন কি নীলনদ যেখানে সবচেয়ে বেশী বিস্তৃত, সেখানকার গাছপালাও মরে যাবে| 8 “নীলনদ থেকে যে সমস্ত জেলেরা মাছ ধরত তারা এমশঃ বিষণ্ন হবে এবং কাঁদবে| যারা নীলনদের ওপর জাল বিছিযে জীবিকা নির্বাহ করত তারা দুর্বল হয়ে যাবে| 9 যে সমস্ত মানুষ কাপড় তৈরী করে তারাও ভীষণ বিষণ্ন| কারণ কাপড় তৈরীর প্রয়োজনীয় ফ্লা) (এক রকমের গাছ) আর নদীর পাড়ে জন্মাচ্ছে না| 10 নদীর জল ধরে রাখার জন্য যারা বাঁধ তৈরী করতো, তারাও কাজ হারিযে বিষণ্ন হবে| 11 “সোযন শহরের নেতারা বোকা| ফরৌণের ‘বিজ্ঞ পণ্ডিতরা’ ভুল উপদেশ দিয়েছে| ঐ নেতারা বলেছেন যে তাঁরা জ্ঞানী ও রাজারই বংশধর| কিন্তু যতটা বিজ্ঞ বলে তাঁরা নিজেদের ভাবছেন ততটা তাঁরা নন|” 12 মিশর, তোমার জ্ঞানী মানুষরা কোথায়? ঐ জ্ঞানী বিজ্ঞ ব্যক্তিদের জানতে হবে যে সর্বশক্তিমান প্রভু মিশরের জন্য কি পরিকল্পনা করেছেন| কি ঘটবে তা জেনে নিয়ে তা তাদের অন্যদের জানানো উচিত্‌| 13 সোযন শহরের নেতাদের বোকা বানানো হয়েছে| নোফের নেতাদের ভ্রান্ত জিনিষ বিশ্বাস করিযে ঠকানো হয়েছে| তাই তারা মিশরকে ভুল পথে নিয়ে যায়| 14 প্রভু, নেতাদের বিভ্রান্ত করেছেন| তারা রাস্তা ভুলেছে এবং মিশরকে ভুল পথে চালিত করেছে| নেতাদের সব কাজই ভুলে ভরা| তারা, মাটিতে তাদের বমির ওপর মাতালের মত টল্মল করে হেঁটে বেড়ায| 15 নেতারা মিশরের জন্য কিছুই করতে পারবে না| এই নেতারা হচ্ছে “মাথা এবং লেজ|” তারা হচ্ছে “গাছের মাথা এবং বৃন্তসমূহ|” 16 মিশরীয়রা সেই সময় ভীত-সন্ত্রস্ত মেয়েদের মতো হয়ে পড়বে| প্রভু সর্বশক্তিমানের আগমনে তারা ভয় পাবে| প্রভু লোকদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তার বাহু প্রসারিত করবেন এবং তারা ভীত হবে| 17 যিহূদা হবে এমন এক জায়গা যা মিশরের সব মানুষের কাছেই আতঙ্ক স্বরূপ| মিশরের কোন মানুষ যিহূদার নাম শুনলেই সে হঠাত্‌ই আতঙ্কিত হয়ে পড়বে| প্রভু সর্বশক্তিমান এই ভাবেই মিশরীয়দের শাস্তি দেবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন| 18 ঐ সময়, মিশরের পাঁচটি শহরের লোকরা কনান ভাষায় (ইহুদীদের ভাষা) কথা বলবে| ঐ পাঁচটি শহরের একটি হবে “ধ্বংসের শহর|”শহরের লোকরা প্রভু সর্বশক্তিমানকে মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করবে| 19 ঐ সময় মিশরের মাঝখানে প্রভুর এক বেদী থাকবে| প্রভুকে সন্মান দেখানোর জন্য মিশরের সীমানায একটি স্মৃতি স্তম্ভ থাকবে| 20 এগুলি থাকার অর্থ সর্বশক্তিমান প্রভু কত ক্ষমতাধর তা দেখানো| প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়লেই সাহায্য মিলবে| প্রভু লোকদের কাছে একজন ত্রাণকর্ত্তা পাঠাবেন যে তাদের প্রতিরক্ষা করবে এবং তাদের পীড়নকারী লোকদের হাত থেকে উদ্ধার করবে| 21 মিশরের লোকরা সে সময় সত্যি সত্যিই প্রভুকে জানবে| তারা ঈশ্বরকে ভালোবাসবে| লোকরা ঈশ্বরের সেবা করবে এবং অনেক পশুবলি দেবে| তারা প্রভুর কাছে প্রতিশ্রুতি করবে এবং সেই প্রতিশ্রুতি পালন করবে| 22 প্রভু মিশরের লোকদের শাস্তি দেবেন এবং তারপর তাদের ক্ষমা করবেন| পরে ঐ লোকরা প্রভুর কাছে ফিরে আসবে| প্রভু প্রত্যেকের প্রার্থনা শুনবেন এবং তাদের ক্ষমা করবেন| 23 সেই সময়, মিশর থেকে অশূর পর্য়ন্ত একটা রাজপথ থাকবে| তখন অশূরের লোকরা ঐ পথেই মিশরে যাবে এবং মিশরের লোকরা ঐ রাজপথ ধরেই অশূরে আসবে| মিশর ও অশূরের লোকেরা মিলে মিশে কাজ করবে| 24 সে সময় ইস্রায়েল, মিশর ও অশূর মিলিত হবে এবং দেশকে নিয়ন্ত্রণ করবে| এটা দেশের পক্ষে কল্যাণকর হবে| 25 প্রভু সর্বশক্তিমান ঐ সম্মিলিত দেশগুলিকে আশীর্বাদ করবেন| তিনি বলবেন, “মিশর তুমি আমার লোক| অশূর আমি তোমাকে সৃষ্টি করেছি| ইস্রায়েল, তুমি আমার| তোমরা প্রত্যেকেই আমার আশীর্বাদপুষ্ট!”

ইসাইয়া 20

1 সর্গোন ছিলেন অশূরের রাজা| সর্গোন তাঁর সেনাপতি তর্ত্তনকে অস্দোদ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠান| তর্ত্তন সেখানে গিয়ে শহরটি দখল করে নেন| 2 সেই সময় প্রভু আমোসের পুত্র যিশাইয়ের মাধ্যমে কথাবার্তা বলেছিলেন| প্রভু বলেন, “যাও, তোমার কোমর থেকে দুঃখের কাপড় সরাও| পা থেকে জুতো খুলে ফেল|” যিশাইয় প্রভুর আদেশ পালন করল| খালি পায়ে, খালি গায়ে যিশাইয় চারদিকে ঘুরে বেড়াল| 3 তারপর প্রভু বললেন, “যিশাইয় তিন বছর ধরে খালি পায়ে খালি গায়ে ঘুরে বেড়িযেছে| এটা মিশর এবং কূশ দেশের কাছে একটা নিদর্শন| 4 অশূরের রাজা মিশর ও কূশদেশকে পরাজিত করবে| অশূররা বন্দীদের তাদের দেশ থেকে ধরে নিয়ে যাবে| বৃদ্ধ এবং য়ুবা বন্দীদের খালি পায়ে এবং পোশাক-আশাক না পরিযে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে| তারা সম্পূর্ণ উলঙ্গ থাকবে| মিশরের লোকরা লজ্জিত হবে| 5 তারা ভীত এবং হতাশ হবে কারণ তারা কূশ দেশের কাছে সাহায্য আশা করেছিল এবং মিশর দেশের মহিমায তাদের আস্থা ছিল|” 6 সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী লোকরা বলবে, “আমরা ঐ দেশগুলির কাছ থেকে সাহায্য পাবার ভরসা করেছিলাম| আমরা ওদের কাছে ছুটে গিয়েছিলাম যাতে অশূরের রাজার হাত থেকে তারা আমাদের রক্ষা করে| কিন্তু ওদের দিকে তাকাও| ওরাও বন্দী| ওদের দেশ দখল হয়ে গেছে| তাহলে আমরা কি ভাবে মুক্তি পাব?”

ইসাইয়া 21

1 সমুদ্রের তীরবর্তী মরুভূমিসম্পর্কে দুঃখ বার্তা: মরুভূমি থেকে কিছু বিপদ আসছে| যিহূদার দক্ষিণে মরু অঞ্চল নেগেভ থেকে একটি বাতাসের ঝটকার মতো এটা আসছে| এটা ভয়ঙ্কর একটা দেশ থেকে আসছে| 2 আমি দেখছি খুব ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটবে| আমি দেখছি বিশ্বাসঘাতকরা তোমার বিরুদ্ধে| আমি দেখছি লোকরা তোমার সম্পদ লুঠ করে নিচ্ছে| এলম যাও এবং ঐ লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করো| মাদিযা শহরের চারদিকে তোমার সৈন্যদের মোতাযেন কর এবং ওদের হারাও| আমি শহরের সমস্ত খারাপ জিনিসকে ধ্বংস করব| 3 আমি ঐসব ভয়ঙ্কর জিনিস দেখেছি| এখন আমি ভীত-সন্ত্রস্ত| ভয়ের কারণে পাকস্থলীতে ব্যথা পাচ্ছি| ঐ ব্যথা প্রসব যন্ত্রণার মতো| যা কিছু শুনছি তাই আমাকে ভয় পাইযে দিচ্ছে| যা কিছু দেখছি তাতে আমি ভয়ে কাঁপছি| 4 আমি উদ্বিগ্ন, আমি ভয়ে কাঁপছি| এখন আমার মনোরম সন্ধ্যা ভয়ের রাতে পর্য়বসিত| 5 লোকরা ভাবছে সব কিছুই ভাল| তারা বলছে, “খাবার ও পান করার জন্য টেবিল প্রস্তুত কর!” ঠিক ঐ সময় সৈন্যরা বলছে, “রক্ষীদের নিয়োগ কর| আধিকারিকগণ উঠে পড় এবং তোমাদের বর্মকে পালিশ কর! 6 আমার প্রভু আমায় বললেন, “শহরে নজরদারি চালানোর জন্য একজন মানুষ খুঁজে আনো| ঐ লোকটি যা যা দেখেছে তা অবশ্যই আমাকে জানাবে| 7 যদি ঐ রক্ষী অশ্বারোহী সৈন্যদের, গাধা ও উটের সারিকে এগিয়ে আসতে দেখে তাহলে খুব সন্তর্পনে ওদের কথাবার্তা শুনতে চেষ্টা করবে|” 8 তারপর একদিন, সে সতর্ক বাণী দেবে: “সিংহ!” “প্রভু, প্রতিদিন আমি পর্য়বেক্ষণ কেন্দ্র থেকে লক্ষ্য রাখি| প্রতি রাতে আমি আমার পাহারা দেবার জায়গায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিই|” 9 কিন্তু ওরা আসছে| আমি অশ্বারোহী সৈন্য এবং লোকদের সারি দেখছি|তখন এক বার্তাবাহক বলল, “বাবিলের পতন হয়েছে| বাবিল মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে| তার সমস্ত ভ্রান্ত দেবতার মূর্ত্তিগুলি মাটিতে আছড়ে টুকরো টুকরো করে ভাঙা হয়েছে|” 10 যিশাইয় বললেন, “হে আমার লোকরা, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে আমি যা যা শুনেছিলাম তা সবই তোমাদের জানিয়েছি| খামারে শস্য মাড়াই করার মতো তোমাদেরও মাড়ানো হবে| 11 দূমা সম্পর্কে বার্তা:সেযীর (এদম) থেকে কেউ আমায় ডাকল| সে বলল, “প্রহরী রাতের আর কতটুকু বাকি? আর কতক্ষণ এই অন্ধকার থাকবে?” 12 প্রহরী উত্তর দিল, “সকাল আসছে| কিন্তু তারপর আবার রাত আসবে| এরপরও যদি তোমার কিছু জিজ্ঞাস্য থাকে, তাহলে ফিরে এসো| (তখন আবার জিজ্ঞাসা) করবে|” 13 আরব সম্বন্ধে দুঃখের বার্তা:দদান থেকে এক দল ব্যবসাযী তাদের ব্যবসার জিনিসপত্র পশুর টানা গাড়িতে (ক্য়ারাভান) চাপিয়ে নিয়ে আসছে| আরবের মরুভূমিতে কিছু গাছের কাছে তারা রাত কাটাল| 14 তারা কিছু তৃষ্ণার্ত ভ্রমণকারীদের জল পান করালো| টেমার লোকরা ঐ ভ্রমণকারীদের খাদ্যও দিল| 15 ঐসব লোক তরবারির নাগাল এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে| তীরের আওতা থেকে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে| বিধ্বংসী যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে তারা পালিয়ে যাচ্ছিল| 16 সদাপ্রভু আমায় বলেছিলেন যে এই সব ঘটবে| প্রভু বলেছিলেন, “এক বছরের মধ্যেই, যে ভাবে একজন ভাড়াটে সহকারী সময় গোনে, কেদরের সমস্ত গৌরব অদৃশ্য হয়ে যাবে| 17 সে সময় শুধু কয়েকজন তীরন্দাজ, কেদরের মহান সৈন্যরা বেঁচে থাকবে|” কারণ প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন!

ইসাইয়া 22

1 দর্শন উপত্যকাসম্বন্ধে দুঃখের বার্তা:হে লোকরা, তোমাদের কি হয়েছে? তোমার লোকরা কেন ছাদে লুকিয়ে থাকছে? 2 অতীতে এই শহরটা খুব ব্যস্ত শহর ছিল| এই শহর ছিল শব্দমুখর এবং সুখী| কিন্তু এখন সব কিছুর পরিবর্তন হয়েছে| তোমার লোকরা তরবারির আঘাত ছাড়াই নিহত হচ্ছে| যুদ্ধ না করেও মারা পড়েছে| 3 তোমাদের সব নেতারা এক সঙ্গে পালিয়ে গেল| কিন্তু সকলেই আবার বন্দী হয়েছে| নেতারা বন্দী হয়েছে ধনুক ছাড়াই| 4 তাই আমি বলছি, “আমার দিকে তাকিও না| আমাকে কাঁদতে দাও| জেরুশালেম ধ্বংসের কারণে আমার এই কান্না| আমাকে সান্ত্বনা দিতে তোমাদের ছুটে আসতে হবে না|” 5 প্রভু একটা দিন বেছে রেখেছেন| ঐ দিনে জাতিদাঙ্গা হবে এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়বে| লোকেরা দর্শন উপত্যকায় একে অপরকে পদদলিত করবে| শহরের দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলা হবে| উপত্যকার লোকরা পার্বত্য শহরে থাকা লোকদের উদ্দেশ্যে সাহায্যের জন্য চিত্কার করবে| 6 এলমের অশ্বারোহী সৈন্যরা তাদের তীরের ব্যাগ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যাবে| কীরের লোকরা তাদের বর্ম প্রস্তুত রাখবে| 7 সৈন্যরা তোমার বিশেষ উপত্যকায় জমায়েত হবে| উপত্যকাটি রথ দিয়ে ভরে যাবে| শহরের প্রবেশপথে অশ্বারোহী সৈন্যরা নিজেদের মোতাযেন রাখবে| 8 ঐ সময়ে যিহূদার লোকরা অরণ্যের প্রাসাদে মজুত য়ুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করতে চাইবে|সৈন্যরা যিহূদার প্রাচীর ভেঙে ফেলবে| 9 দাযূদের শহরের প্রাচীরে ফাটল ধরবে এবং তুমি ঐ ফাটলগুলি দেখতে পাবে| তাই তুমি বাড়িঘরগুলি গুনবে এবং ঐ বাড়িগুলির পাথর ব্যবহার করে প্রাচীরের ফাটলে লাগাবে| তুমি জল ধরে রাখার জন্য দুটি প্রাচীরের মাঝখানে একটা জায়গা তৈরি করবে এবং তুমি জল ধরে রাখতে পারবে|তোমরা ঐসব নিজেদের রক্ষা করার জন্য করবে| কিন্তু যে ঈশ্বর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তোমরা সেই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে না| অনেক দিন আগে যিনি আমাদের জন্য এই সব কিছু করেছেন সেই এক জনকে (ঈশ্বর) তোমরা দেখবে না| 10 11 12 তাই, আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান, লোকদের তাদের মৃত বন্ধুদের জন্য কাঁদতে এবং শোকপ্রকাশ করতে বলবেন| লোকরা তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলবে এবং দুঃখের পোশাক পরবে| 13 কিন্তু দেখ, লোকরা এখন সুখী| তারা আনন্দ করছে| বলছে:গবাদি পশু ও মেষদের মার| আমরা উত্সব করব| তোমরা খাদ্য খাও ও দ্রাক্ষারস পান কর| খাও এবং পান কর কারণ আমরা তো আগামী কাল মরব| 14 প্রভু সর্বশক্তিমান এগুলি আমাকে বললেন এবং আমি তা নিজের কানে শুনলাম: “তোমরা খারাপ কাজ করেছ তাই দোষী সাব্যস্ত হয়েছ এবং আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এই পাপ ক্ষমা করার আগেই তোমরা মারা যাবে|” আমার সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন| 15 আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান আমাকে এই কথাগুলি বলেছিলেন, “শিব্নে নামক এই ভৃত্যের কাছে যাও| ঐ ভৃত্য হল রাজপ্রাসাদের অধ্যক্ষ| 16 ভৃত্যটিকে জিজ্ঞাসা কর ‘এখানে কি করছ? তোমার পরিবারের কেউ কি এখানে সমাহিত হয়েছে? কেন তুমি এখানে কবর খুঁড়ছো?”‘যিশাইয় বললেন, “এই লোকটার দিকে দেখ| সে একটি উঁচু জায়গায় কবর খুঁড়ছে| এই লোকটি পাথর কেটে কেটে নিজের কবর তৈরি করছে| 17 “হে মানুষ, প্রভু তোমায় পিষে মারবেন| প্রভু তোমাকে একটা ছোট গোলায পরিণত করবেন এবং দূরের একটি বিশাল দেশে তোমাকে ছুঁড়ে ফেলবেন এবং সেখানে তুমি মারা যাবে|”প্রভু বললেন, “তুমি তোমার যুদ্ধরথের জন্য খুবই গর্বিত| কিন্তু ঐ দূরবর্তী দেশে নতুন শাসকের কাছে তোমার থেকেও ভাল যুদ্ধরথ থাকবে| তাই তোমার রথ ঐ রাজপ্রাসাদে তেমন গুরুত্ব পাবে না| 18 19 এখানে আমি তোমার গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাধার সৃষ্টি করব| তোমার নতুন মনিব এতে বিরক্ত হয়ে তোমায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে সরিয়ে দেবেন| 20 ঐ সময়, আমি আমার দাস, ইলীয়াকীমকে ডাকব| ইলীয়াকীম হচ্ছে হিল্কিয়ের পুত্র| 21 আর আমি তোমার আলখাল্লাটা নেব এবং ঐ দাসকে তা পরতে দেব| তোমার শাসনদণ্ডটি আমি তার হাতে তুলে দেব এবং সে জেরুশালেম ও যিহূদায় বসবাসকারী লোকদের পিতার মত হবে| 22 “আমি দাযূদের বাড়ির চাবি ঐ মানুষটার গলায় ঝুলিয়ে দেব| যদি সে একটা দরজা খোলে, তাহলে সে দরজা খোলাই থাকবে| কেউই তা বন্ধ করতে সক্ষম হবে না| যদি সে একটা দরজা বন্ধ করে তাহলে ঐ দরজা বন্ধই থাকবে| কেউই তা খুলতে পারবে না| 23 আমি দাসটিকে পেরেকের মতো শক্ত করে গড়ব যাতে শক্ত কাঠের বোর্ডে হাতুড়ির আঘাতে সে অনায়াসে ঢুকতে পারে| ঐ ভৃত্যটি তার পিতার বাড়িতে একটি সম্মানের আসন পাবে| 24 তার পৈতৃক বাড়িতে যত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক বস্তু আছে তার গায়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে| বড়রা এবং ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তার ওপর নির্ভর করবে| ঐসব লোক ছোট্ট থালা এবং বড় জলের বোতলের মত তার গায়ে ঝুলে থাকবে| 25 “সেই সময়, পেরেকটি (শিব্নে) যেটা এখন একটা খুব শক্ত বোর্ডের ওপর হাতুড়ি দিয়ে ঢোকানো হয়েছে, তা দুর্বল হয়ে যাবে এবং পড়ে যাবে| ঐ পেরেকটি মাটিতে পড়বে এবং ওর সঙ্গে ঝোলানো সমস্ত বস্তু আছড়ে পড়ে ধ্বংস হবে| এই হল তার (জেরুশালেম) সম্বন্ধে বার্তা, কারণ প্রভু এ কথা বলেছেন|

ইসাইয়া 23

1 সোর সম্বন্ধে দুঃখের বার্তা: তর্শীশের জাহাজসমূহ, দুঃখ কর এবং কাঁদো! কেননা তোমাদের বন্দরটি ধ্বংস হয়েছে| (কিত্তীম দেশ থেকে আসার পথে জাহাজটির লোকদের এই খবর জানানো হয়েছিল|) 2 সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী লোকদের বিরত হওয়া ও বিষণ্ন হওয়া উচিত্‌| সোর ছিল সমুদ্র উপকুলবর্তী “সীদোনের বণিক|” সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ার দরুণ এই শহরটি তার ব্যবসাযীদের জলপথে ব্যবসা করতে পাঠায় এবং ধনসম্পদ দিয়ে দেশটিকে ভরে দিয়েছিল| 3 শস্যের সন্ধানে এখানকার লোকরা জলপথে ভ্রমণ করে| নীলনদের ধারে জন্মানো শস্য সোরের লোকরা কিনে এনে অন্য জাতির কাছে তা বিক্রি করে| 4 সীদোন, তোমার ভীষণ বিষণ্ন হওয়া উচিত্‌, কারণ সমুদ্র ও সমুদ্রের দুর্গ বলছে:আমার কোন সন্তান নেই| গর্ভ যন্ত্রণা কি তা আমি বুঝিনি| আমি কোন শিশুর জন্ম দিই নি| আমি তরুণ তরুণীদের গড়ে তুলতেও সাহায্য করিনি| 5 মিশর, সোর সম্বন্ধে এমন সংবাদ পাবে| এই খবর মিশরকে দারুণ শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ফেলবে| 6 মালবাহী জাহাজগুলিকে তর্শীশে ফিরে আসতেই হবে| সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী লোকদের বিলাপ করতে হবে| 7 অতীতে সোর শহর আনন্দ, উত্সবে মেতেছে| প্রথম থেকেই শহরটি বড় হয়ে চলেছে| বসতি স্থাপনের জন্য শহরটির নাগরিকরা দূর দূরান্তে ভ্রমণ করেছে| ঐ শহরে বাস করতে দূর দূরান্ত থেকে লোকরা এসেছে| 8 সোর শহরে অনেক নেতা তৈরী হয়েছে| শহরের বণিকরা যেন রাজপুত্র| এখানকার যে সব লোকরা নানা জিনিসপত্র কেনাবেচা করে তারা সব জায়গায় সম্মান পেয়েছে| সুতরাং সোরের বিরুদ্ধে কে পরিকল্পনা করেছিল? 9 প্রভু সর্বশক্তিমানই এই পরিকল্পনার নেপথ্য কারিগর| তিনি তাদের গুরুত্বহীন করার সিদ্ধান্ত নেন| 10 তর্শীশ থেকে আসা মালবাহী জাহাজগুলি স্বদেশে ফিরে যাও| সমুদ্রটাকে ছোট নদী মনে করে পেরিযে যাও| কোন ব্যক্তিই এখন তোমায় থামাবে না| 11 সমুদ্রের ওপরেও প্রভু তাঁর বাহু প্রসারিত করেছেন| সোরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অন্যান্য রাজ্যগুলিকে তিনি একত্রিত করছেন| প্রভু কনানকে তার নিরাপদ জায়গা সোরকে ধ্বংস করার আদেশ দিয়েছেন| 12 প্রভু বলেন, “হে সীদোনের কুমারী কন্যা, তুমি ধ্বংস হবে! তোমার আনন্দ করবার আর কোন সুযোগ থাকবে না|” কিন্তু সোরের লোকরা বলছে, “সাইপ্রাস আমাদের সাহায্য করবে|” কিন্তু যদি তুমি সমুদ্র পেরিযে সাইপ্রাসে যাও, তাহলে বিশ্রাম করার কোন জায়গা তুমি খুঁজে পাবে না| 13 তাই সোরের লোকরা বলছে, “বাবিলের লোকরা আমাদের সাহায্য করবে|” কিন্তু কল্দীযদের দেশের দিকে তাকাও| বাবিল এখন আর দেশ নয়| অশূররা বাবিলে আক্রমণ চালিযে শহরের চারিদিকে দুর্গ তৈরী করেছে| সৈন্যরা সুন্দর সুন্দর বাড়িঘর থেকে সব জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়েছে| অশূররা বাবিলকে একেবারে বন্যপ্রাণীদের থাকার জায়গায় পরিণত করেছে| তারা বাবিলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে| 14 সুতরাং তর্শীশ থেকে আসা মালবাহী জাহাজগুলি দুঃখিত হও| তোমার নিরাপদ জায়গা (সোর) ধ্বংস হবে| 15 লোকরা প্রায 70 বছর পর্য়ন্ত সোরকে ভুলে থাকবে| (এটা কোন রাজার রাজত্ব কালের সীমা|)70 বছর পর সোরের অবস্থা ঠিক এই গানের মধ্যে বেশ্যার মত হবে: 16 ওহে বেশ্যা, পুরুষরা তোমায় ভুলে গেছে| তুমি বীণা নিয়ে শহর পরিক্রমায় যাও| মধুর তালে বাজাও| সুন্দর করে গান গাও| তোমার গান মাঝে মাঝে গাও| তাহলে লোকরা হয়তো তোমাকে আবার চিনতে পারবে| 17 সত্তর বছর পর, প্রভু সোরকে স্মরণ করবেন এবং তাকে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন| সোর আবার আগের মতো ব্যবসা শুরু করবে| সোর পৃথিবীর সমস্ত জাতির সঙ্গে বেশ্যাবৃত্তিতে প্রশ্রয দেওয়া একটি বেশ্যার মত হবে| 18 কিন্তু সে উপার্জনের টাকাপয়সা ধরে রাখতে পারবে না| ব্যবসার লাভের টাকা প্রভুর জন্য সঞ্চিত হবে| যারা প্রভুর সেবা করবে তারাই লভ্য়াংশের টাকা পাবে| সুতরাং প্রভুর দাসরা সুন্দর জামাকাপড় পরবে এবং আশ মিটিযে খাওয়াদাওযা করবে|

ইসাইয়া 24

1 দেখো! প্রভু এই দেশকে ধ্বংস করবেন এবং এই দেশ থেকে তিনি সব কিছু ধুয়ে মুছে দেশটিকে পরিষ্কার করবেন| তিনি দেশের লোকদের সুদূরে তাড়িয়ে দেবেন| 2 সেই সময়, সাধারণ লোকরা এবং যাজকগণ সমতুল্য হবে| এীতদাস ও মনিব, দাসী ও কর্ত্রী, এতো ও বিক্রিতো, 3 ঋণগ্রাহক ও ঋণদাতা সকলে সমান হবে| সমস্ত লোককে দেশের বাইরে যেতে বাধ্য করা হবে| সমস্ত সম্পদ নিয়ে নেওয়া হবে| কারণ প্রভুর আদেশেই ঐসব ঘটনা ঘটবে| 4 দেশটি শূন্য ও দুর্বল হয়ে পড়বে| এই দেশের মহান নেতারা ক্ষমতাহীন হবেন| 5 এই দেশের লোকরাই দেশের মাটিকে নোংরা করে তুলেছে| কি করে এটা ঘটল? ঈশ্বরের শিক্ষার বিরুদ্ধে লোকরা ভুল কাজ করেছিল| লোকরা ঈশ্বরের বিধি মানেনি| অনেক দিন আগে লোকরা ঈশ্বরের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল| কিন্তু সেই সব লোকরাই ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছিল| 6 এই দেশের লোকরা তাদের ভুল কাজের জন্য দোষী ছিল| তাই এই দেশকে ধ্বংস করার জন্য ঈশ্বর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ| লোকদের শাস্তি দেওয়া হবে| শুধুমাত্র কিছু লোক বেঁচে থাকবে| 7 দ্রাক্ষা ক্ষেত মৃতপ্রায| নতুন দ্রাক্ষারস অপেয| অতীতে মানুষ সুখী ছিল| কিন্তু তারা এখন দুঃখী| 8 লোকরা তাদের আনন্দ প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে| সমস্ত সুন্দর শব্দ থেমে গিয়েছে| খঞ্জর এবং বীণা থেকে নির্গত মধুর সঙ্গীত থেমে গিয়েছে| দ্রাক্ষারস পানের সময় লোকরা আর আনন্দের গান গায না| অনুগ্র সুরার স্বাদ এখন লোকদের তেতো লাগে| 9 10 এই শহর চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে| প্রতিটি বাড়ী বন্ধ, তাই কেউ তার নিজের বাড়ীতে ঢুকতে পারছে না| 11 এখন লোকরা হাটে বাজারে দ্রাক্ষারসের খোঁজ করছে| কিন্তু সমস্ত সুখ উবে গেছে| আনন্দ চলে গেছে সহস্র য়োজন দূরে| 12 শহরটি ধ্বংস হয়ে পড়ে রয়েছে| এমনকি ফটকগুলিও চূর্ণ-বিচূর্ণ| 13 শস্য সংগ্রহের পরে জলপাই গাছে যেমন গুটিকতক জলপাই পড়ে থাকে ঠিক তেমনি অনেকগুলি জাতির মধ্যে এই দেশও একাকি পড়ে থাকবে| 14 বেঁচে যাওয়া লোকরা চিত্কার করতে শুরু করবে| তাদের এই চিত্কার সমুদ্রের গর্জনের থেকেও বেশী হবে| প্রভুর মহানুভবতায তারা সুখী হবে| 15 সেই সব লোকরা বলবে, “প্রাচ্য়ের মানুষরা প্রভুর প্রশংসা কর! দূর দেশের মানুষরা প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে প্রশংসা কর|” 16 পৃথিবীর সমস্ত প্রান্ত থেকে আমরা প্রশংসা গীত শুনব| লোকরা গাইবে: “ধার্ম্মিকজনটি, মহিমান্বিত হউন|” কিন্তু আমি বলি, “আমি মারা যাচ্ছি| আমার পক্ষে সব কিছু ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে| বিশ্বাসঘাতকরা মানুষের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করছে| 17 এই দেশের অধিবাসীদের বিপদ আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি| তাদের জন্য পেতে রাখা ফাঁদ, গর্ত এবং ভয় আমি দেখতে পাচ্ছি| 18 লোকরা তাদের বিপদের কথা শুনে ভীত হবে| কিছু লোক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে কিন্তু তারা গর্তে পড়ে গিয়ে ফাঁদে বন্দী হবে| তাদের মধ্যে কয়েক জন গর্ত থেকে উঠে আসবে কিন্তু তারা অন্য ফাঁদে ধরা পড়বে|” আকাশে বাঁধের দরজা খুলে যাবে এবং প্লাবন হবে| পৃথিবীর ভিতগুলো নড়ে উঠবে| 19 ভূমিকম্প হবে| পৃথিবী ফেটে চৌচির হয়ে যাবে| 20 এই পৃথিবী পাপে ভারাএান্ত| তাই তা ভারের তলায় চাপা পড়বে| জীর্ণ বাড়ির মতো তা কেঁপে উঠবে, মত্ত মানুষের মতো পড়ে যাবে| পৃথিবী পড়ে গেছে এবং আর কখনও উঠে দাঁড়াবে না| 21 সেই সময়ই প্রভু তাঁর বিচার শুরু করবেন| তিনি স্বর্গের স্বর্গীয সেনাদেরএবং পৃথিবীর পার্থিব রাজাদের বিচার করবেন| 22 তখন বহু মানুষ একত্রিত হবে| তাদের মধ্যে কেউ আছে ভূগর্ভস্থ কয়েদে বদ্ধ| কেউ আছে কারাগারে| কিন্তু অবশেষে, অনেক দিন পরে তাদের সকলের বিচার হবে| 23 জেরুশালেমের সিয়োন পর্বতে প্রভু রাজার মত শাসন করবেন| গণ্যমান্য লোকদের উপস্থিতিতে তাঁর উজ্জ্বল মহিমা প্রকাশিত হবে| তাঁর মহিমা এত উজ্জল হবে যে তা দেখে চাঁদ বিহবল হবে এবং সূর্য় লজ্জা পাবে|

ইসাইয়া 25

1 প্রভু, আপনিই আমার ঈশ্বর| আপনাকে আমি সম্মান করি এবং আপনার নামের প্রশংসা করি| আপনি বিস্ময সৃষ্টি করেছেন| বহুদিন আগে আপনি যা যা বলেছিলেন তা বর্ণে বর্ণে সত্যে পরিণত হয়েছে| আপনি যা যা ঘটার কথা বলেছিলেন ঠিক তাই তাই ঘটেছে| 2 আপনি শহর ধ্বংস করেছেন| যে শহর ছিল শক্তিশালী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা তা এখন ধ্বংসস্তূপ মাত্র| বিদেশী প্রাসাদ সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| তা আর কোন দিনও নির্মাণ করা যাবে না| 3 শক্তিমান দেশগুলি আপনাকে শ্রদ্ধা করবে, সম্মান জানাবে| শক্তিশালী শহরের ক্ষমতাবান লোকরা আপনাকে ভয় পাবে এবং সম্মান করবে| 4 প্রভু আপনিই দরিদ্রদের কাছে এক নিরাপদ আশ্রয়| এদের পরাজিত করতে প্রভুত সমস্যা শুরু হবে| কিন্তু আপনি তাদের রক্ষা করবেন| প্রভু, আপনি লোকদের কাছে বন্যা ও দাবদাহ থেকে রক্ষা পাবার মতো সুরক্ষিত গৃহ| ভয়ঙ্কর ঝড় বৃষ্টির মতো সংকটসমূহ আসবে এবং দেওয়ালে ধাক্কা মারবে, কিন্তু গৃহের ভেতরের লোকরা আঘাত পাবে না| 5 শএুরা এসে চিত্কার চেঁচামেচি গোলমাল শুরু করবে| ভয়ঙ্কর শএুরা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে আহবান জানাবে| কিন্তু ঈশ্বর আপনিই তাদের থামিয়ে দেবেন| যদিও গ্রীষ্মে মরুভূমিতে কয়েকটি উদ্ভিদ জন্মায়, পরিশেষে তারা শুকিয়ে যাবে এবং ভূমিতে পতিত হবে| একই ভাবে, আপনিও আপনার শএুদের পরাজিত করবেন এবং তাদের হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করবেন| ঘন মেঘ যেমন গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপকে আটকে দেয় ঠিক সেই ভাবে আপনিও শএুদের ভয়ঙ্কর চিত্কার থামিয়ে দেবেন| 6 সেই সময়, প্রভু সর্বশক্তিমান এই পর্বতের সমস্ত জাতিকে এক ভুরিভোজে আপ্য়াযিত করবেন| সেই ভোজে সেরা খাদ্য ও পানীয় থাকবে| মাংস হবে নরম ও সুস্বাদু| 7 কিন্তু এখন, সমস্ত জাতি ও লোকদের একটি ঘোমটা আচ্ছাদিত করছে| তিনি এই ঘোমটা নষ্ট করে দেবেন| 8 কিন্তু মৃত্যু চিরতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে| আমার সদাপ্রভু প্রত্যেকটি মুখ থেকে প্রতিটি অশ্রুকণা মুছিযে দেবেন| অতীতে তাঁর সমস্ত অনুরাগী ভক্তরা ছিল বিষণ্ন| কিন্তু ঈশ্বর পৃথিবী থেকে মুছে দেবেন বিষণ্নতা| এ সমস্তই ঘটবে কারণ প্রভু এসব ঘটনার কথাই বলেছেন| 9 সে সময় লোকরা বলবে, “এই তো আমাদের ঈশ্বর| তিনিই সেই যার জন্য আমরা প্রতীক্ষারত| তিনি আমাদের রক্ষা করতে এসেছেন| আমরা আমাদের প্রভুর প্রতীক্ষায আছি| তাই তিনি আমাদের রক্ষা করার সময় আমরা সুখী এবং আনন্দিত হব|” 10 এই পর্বতে প্রভুর শক্তি বিরাজমান| তাই মোয়াব পরাজিত হবে| আবর্জনার স্তূপে খড়ের ওপর দিয়ে হেঁটে যাবার মতো প্রভু শএুদের পদদলিত করবেন| 11 সাঁতার কাটা মানুষের মতো প্রভু তাঁর বাহু প্রসারিত করে লোকে যেসব জিনিস নিয়ে গর্ব করে সেসব জিনিসকে একত্রিত করবেন| তিনি মানুষের তৈরী সুন্দর সুন্দর জিনিসগুলোকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন| 12 প্রভু মানুষের লম্বা প্রাচীর ও নিরাপদ জায়গাগুলিকে ধ্বংস করে মাটির ধূলোয় মিশিয়ে দেবেন|

ইসাইয়া 26

1 সে সময়ে যিহূদার লোকরা এই গান গাইবে:প্রভু আমাদের পরিত্রাণ দিন| আমাদের একটি শক্তিশালী দুর্ভেদ্য নগর আছে| 2 ফটকগুলি খোলো| এক ন্যায়পরায়ণ জাতি প্রবেশ করবে| এরা ঈশ্বরের সুশিক্ষা মেনে চলে| 3 প্রভু, যেসব লোকরা আপনার ওপর নির্ভর করে এবং আপনার ওপর আস্থা রাখে তাদের প্রকৃত শান্তি দিন| 4 সদা সর্বদা প্রভুকে বিশ্বাস কর| তিনি তোমাদের চিরকালের নিরাপদ আশ্রয়| 5 কিন্তু প্রভু দাম্ভিক শহরকে ধ্বংস করবেন এবং তার অধিবাসীদের শাস্তি দেবেন| দাম্ভিক শহরকে তিনি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলবেন| সেই শহর ধূলোয় মুখ থুবড়ে পড়বে| 6 তখন দীনহীন এবং বিনযী মানুষরা সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর দিয়ে হেঁটে যাবে| 7 সততাই ভাল লোকের বেঁচে থাকার পথ| যা কিছু সরল ও সত্য ভাল লোকরা তাকেই অনুসরণ করে| ঈশ্বর আপনি সেই পথকে মসৃণ করুন যাতে সহজে তাকে মেনে চলা যায়| 8 কিন্তু প্রভু আমরা আপনার বিচারের দিকে তাকিযে রয়েছি| আমাদের আত্মাগুলি আপনাকে এবং আপনার নামকে স্মরণ করতে চাইছে| 9 আমার আত্মা আপনার সাথে রাত্রিবাস করতে চায়| আমার আত্মা প্রতিটি নতুন দিনের ভোরে আপনার সঙ্গে থাকতে চায়| পৃথিবীতে আপনার বিচার যখন নেমে আসবে তখন মানুষ বেঁচে থাকার সঠিক পথ শিখবে| 10 দুষ্ট লোকদের প্রতি যদি আপনি শুধু দয়া দেখান তাহলে তারা কোন কিছু ভাল করতে শিখবে না| এমনকি দুষ্ট লোকরা ভালো পৃথিবীতে বাস করলেও তারা খারাপ কাজ করবে| তারা কখনও প্রভুর মহত্ব দেখতে পায় না| 11 কিন্তু প্রভু সেই সব লোকদের শাস্তি দেবার জন্য প্রস্তুত হোন| নিশ্চিত ভাবেই তারা এটা দেখতে পাবে| তারা কি এটা দেখতে পাবে না? প্রভু, দুষ্টরা দেখুক যে আপনার লোকদের জন্য আপনার যে ভালবাসা তা খুব দৃঢ়| নিশ্চিত ভাবে তারা লজ্জিত হবে| আপনার শএুদের জন্য যে আগুন রাখা আছে তা ওদের পুড়িয়ে শেষ করে ফেলুক| 12 প্রভু, আমরা যে সব কাজ করার চেষ্টা করেছিলাম সে সব কাজে আপনি সফল হয়েছেন| তাই আমাদের শান্তি দিন|ঈশ্বর তাঁর লোকদের নতুন জীবন দেবেন 13 প্রভু আপনিই আমাদের ঈশ্বর| কিন্তু অতীতে আমরা অন্য দেবতাদের মেনে চলতাম| আমরা ছিলাম অন্য মনিবদের| কিন্তু এখন আমরা লোকদের শুধু আপনার নামই স্মরণ করাতে চাই| 14 সেই সব মৃত দেবতারা বেঁচে ওঠে না| সেই সব প্রেতগণ মৃত্যু থেকে আর জেগে ওঠে না| আপনি তাদের ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন| এবং তাদের সম্বন্ধে আমাদের ভাবনা উদ্রেক করবার যা কিছু তা সবই আপনি ধ্বংস করেছেন| 15 হে প্রভু, এই জাতিতে আরো যোগ কর| এতে যোগ কর এবং সম্মানিত হও| দেশটির সর্বদিকের সীমা বৃদ্ধি কর| 16 প্রভু, লোকে যখন বিপদে পড়ে, তখন আপনাকে স্মরণ করে| আপনি যখন তাদের শাস্তি দেন, তখন তারা আপনার কাছে নীরব প্রার্থনা করে| 17 ঠিক যেমন একটি গর্ভবতী মহিলা জন্ম দিতে যাচ্ছে এবং প্রসব যন্ত্রনায় চিত্কার করে কাঁদে, তেমনি, হে প্রভু, আমরা আপনার সামনে এসেছি| 18 একই ভাবে, আমাদের যন্ত্রণা আছে এবং আমরা জন্ম দিই, কিন্তু শুধুই বাতাস| আমরা পৃথিবীর জন্য নতুন মানুষ তৈরী করতে পারি না| আমরা দেশের জন্য মুক্তি আনতে পারি না| 19 কিন্তু প্রভু বলেন, “তোমাদের লোকরা মারা গিয়েছে, তবে তারা আবার বেঁচে উঠবে| আমার মানুষদের মৃতদেহগুলি মৃত্যু থেকে জেগে উঠবে| মৃত মানুষরা মাটিতে উঠে দাঁড়াবে এবং সুখী হবে| তোমাদের আচ্ছাদিত শিশিরসমূহ নতুন দিনের আলোর মতো ঝলমল করবে| এর অর্থ এই- নতুন সময় আসছে যখন পৃথিবী মৃত মানুষদের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটাবে|” 20 আমার লোকরা, তোমরা তোমাদের ঘরের ভেতরে যাও| দরজা বন্ধ কর| ক্ষণিকের জন্য লুকিয়ে ঘরে থাক| ততক্ষণ পর্য়ন্ত লুকাও যতক্ষণ না ঈশ্বরের রোধ শেষ হয়| 21 পৃথিবীর লোকদের কুকর্মের বিচার করতে প্রভু জেরুশালেমের মন্দির ছেড়ে চলে যাবেন| পৃথিবী নিহত লোকদের রক্ত প্রকাশিত করবে| পৃথিবী আর মৃত মানুষদের আচ্ছাদিত করবে না|

ইসাইয়া 27

1 সেই সময় প্রভু তাঁর শএুদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করবেন| তিনি লিবিযাথন, বাঁকা সাপটিকে শাস্তি দেবেন| ঐ প্য়াঁচানো সাপটিকে তাঁর বিরাট এবং শক্তিশালী তরবারি দিয়ে শাস্তি দেবেন| এবং তিনি ঐ সামুদ্রিক দৈত্যকে হত্যা করবেন| 2 সে সময়, একটি মনোরম দ্রাক্ষাক্ষেত থাকবে| সেখানকার জমি তৈরীর কাজ শুরু কর| 3 “আমি, প্রভু, সেই বাগানে ঠিক সময়ে জল দেব| দিন রাত্রি পাহারা দেব, তার যত্ন নেব| কেউ সেই বাগানের ক্ষতি করতে পারবে না| 4 আমি রুদ্ধ নই, কিন্তু যুদ্ধ করবার জন্য কেউ একটি কাঁটাঝোপের বেড়া তৈরী করবার চেষ্টা করুক, আমি তার ওপরে মাড়িয়ে এগিয়ে যাব এবং তাকে পুড়িয়ে ফেলব| 5 তবে কেউ যদি নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য আমার কাছে আসে, তবে তাকে আসতে দাও| এবং আমার শান্তি তাকে পেতে দাও| 6 লোকরা আমার কাছে আসবে| সেই সব লোকরা যাকোবকে দৃঢ়মূল বৃক্ষের মতো শক্তিশালী হতে সাহায্য করবে| তারা উদ্ভিদের ফুটে ওঠার মতো ইস্রায়েলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে| তখন দেশটি গাছের ফলের মতো ইস্রায়েলের শিশুতে ভরে যাবে|” 7 প্রভু কি ভাবে তার লোকদের শাস্তি দেবেন? অতীতে শএুরা লোকদের আঘাত করেছিল| প্রভু কি একই উপায়ে তাদের আঘাত করবেন? অতীতে অনেক লোককে হত্যা করা হয়েছিল| প্রভু কি একই ভাবে অনেক লোককে হত্যা করবেন? 8 ইস্রায়েলকে দূরে সরিয়ে দিয়ে ঈশ্বর তার বিরুদ্ধে মামলা দাযের করবেন| তিনি তাকে তাঁর ঝোড়ো বাতাস দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক সেই দিনের মত যখন পূবের বাতাস বয| 9 যাকোবের দোষকে কি ভাবে ক্ষমা করা হবে? তার পাপ দূরীভূত হওয়ার জন্য কি ঘটবে? এইগুলি ঘটবে: বেদীর পাথরগুলি চূর্ণ হয়ে ধূলোয পরিণত হবে| মূর্ত্তিগুলি ও বেদীগুলি ধ্বংস করা হবে| 10 সেই সময় বিশাল শহরটি হবে পরিত্যক্ত| এটার অবস্থা হবে মরুভূমির মতো| সমস্ত মানুষ ছুটে পালাবে| শহরটি হবে চারণভূমির মত মুক্ত| সেখানে গবাদি পশুরা ঘাস খাবে| তারা দ্রাক্ষা গাছ থেকে পাতা ছিঁড়ে খাবে| 11 দ্রাক্ষা ক্ষেত শুষ্ক হয়ে যাবে| তার শাখাগুলি ভেঙে পড়বে| মহিলারা সেগুলিকে আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করবে|লোকে বুঝতে চাইবে না, তাই প্রভু, তাদের সৃষ্টিকর্তা তাদের স্বস্তি দেবেন না, তাদের প্রতি দয়ালুও হবেন না| 12 সেই সময় প্রভু তার লোকদের অন্যদের থেকে আলাদা করতে শুরু করবেন| ফরাত্‌ নদীর কিনারা থেকে তিনি শুরু করবেন|তিনি তাঁর লোকদের এই নদী থেকে মিশরের নদী পর্য়ন্ত একত্রিত করবেন| 13 ইস্রায়েলের লোকরা এক এক করে সংঘবদ্ধ হবে| অশূরের হাতে আমার অনেক লোক হারিযে গেছে| আমার কিছু লোক মিশরে পালিয়ে গেছে| কিন্তু সেই সময়ে বেজে উঠবে এক দারুন তূর্য়ধ্বনি| এবং সেই সব লোকরা জেরুশালেমে ফিরে আসবে| তারা সেই পবিত্র পর্বতের ওপর প্রভুর সামনে নতজানু হবে|

ইসাইয়া 28

1 শমরিয়ার দিকে তাকাও! ইফ্রযিমের মাতাল মানুষ সেই শহরের জন্য গর্বিত, যে শহর উর্বর উপত্যকা বেষ্টিত পাহাড়ের ওপর অবস্থিত| শমরিয়ার লোকরা মনে করে তাদের শহর ফুলের সুন্দর মুকুটের মত| কিন্তু তারা দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হয়ে রয়েছে| এবং এই “সুন্দর মুকুট” আসলে একটি মৃতপ্রায গাছের মতো| 2 দেখ, আমার প্রভুর একটি লোক আছে যে শক্তিশালী ও সাহসী| সেই লোকটি শিলাবৃষ্টির ঝড়ের মত দেশের ভেতরে আসবে| তিনি ঝড়ের মতো এদেশে আসবেন| তিনি হবেন বানভাসি দেশে জলে ভরা খরস্রোতা নদীর মতো| তিনি সেই মুকুটকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন| 3 ইফ্রযিমের মাতাল মানুষরা তাদের “সুন্দর মুকুটের” জন্য গর্বিত| কিন্তু তাদের শহর পদদলিত হবে| 4 সেই শহর উর্বর উপত্যকা বেষ্টিত পাহাড়ের ওপর অবস্থিত| এবং সেই “ফুলের সুন্দর মুকুট” হবে ঠিক মৃতপ্রায গাছের মতো| সেই শহর হবে গরমের প্রথম ডুমুর ফলের মতো, যাকে লোকে একপলক দেখেই দ্রুত তুলে নিয়ে খেয়ে নেয| 5 সেই সময় সর্বশক্তিমান প্রভু ই হবেন “সুন্দর মুকুট|” তাঁর অবশিষ্ট লোকদের জন্য, তিনি হবেন “ফুলের আশ্চর্য় মুকুট|” 6 তখন প্রভু তাঁর লোকদের বিচারকগণকে প্রজ্ঞা দান করবেন| নগরদ্বারে তিনি শক্তি য়োগাবেন| 7 কিন্তু এখন সেই সব নেতারা পান করে ভুল করেন| যাজক ও ভাব্বাদীরাও ভুলভ্রান্তি করেন কারণ তাঁরা অনুগ্র সুরা ও দ্রাক্ষারস পান করেন| তাঁরা হোঁচট খেতে খেতে পড়ে যাচ্ছেন| এমনকি দর্শনের সময়েও ভাব্বাদীদের ভুলভ্রান্তি হয়| বিচারকরাও ভুল করেন কারণ তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় পান করেন| 8 প্রতিটি টেবিল বমিতে আচ্ছন্ন| কোথাও এতটুকু পরিষ্কার স্থান নেই| 9 প্রভু লোকদের একটি শিক্ষা দেবার চেষ্টা করছেন| প্রভু লোকদের তাঁর শিক্ষামালা বোঝানোর চেষ্টা করছেন| লোকেরা যেন ছোট্ট শিশুর মত, সবেমাত্র মায়ের দুধপান করা ছেড়েছে| 10 তাই প্রভু তাদের সঙ্গে এমন ভাবে কথা বলেন যেন তারা শিশু:জাব্ লজাব্, জাব্ লজাব্,কাব্ লকাব্, কাব্ লকাব্,জি’ এর শাম্, জি’ এর শাম্| 11 প্রভু আশ্চর্য়্য় এই ভাষা ব্যবহার করবেন এবং এই সব লোকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তিনি অন্যান্য ভাষাও ব্যবহার করবেন| 12 অতীতে ঈশ্বর সেই সব লোকদের বলেছিলেন, “এখানে একটি বিশ্রামস্থল আছে| এটা শান্তিপূর্ণ জায়গা| ক্লান্ত মানুষদের এসে বিশ্রাম নিতে দাও| এটি একটি শান্তির নিকেতন|”কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের কথায় কর্ণপাত করেনি| 13 তাই ঈশ্বর তাদের সঙ্গে এমন ভাবে কথা বলেন যেন তারা শিশু:জাব্ লজাব্, জাব্ লজাব্,কাব্ লকাব্, কাব্ লকাব্,জি’ এর শাম্, জি’ এর শাম্|”যাতে তারা চারপাশে হেঁটে বেড়ায এবং হোঁচট খেয়ে আঘাত পাবে এবং তারা ফাঁদে পড়ে বন্দী হবে| 14 জেরুশালেমের নেতারা, তোমাদের প্রভুর বার্তা শোনা উচিত্‌| কিন্তু এখন তোমরা তাঁর কথায় কান দিচ্ছ না| 15 তোমরা বলছ, “মৃত্যুর সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে| পাতালের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে| সুতরাং আমরা শাস্তি পাব না| শাস্তি আমাদের আঘাত না করেই চলে যাবে| আমরা আমাদের কৌশল ও মিথ্যার পেছনে লুকিয়ে থাকব|” 16 এই সব কারণেই প্রভু, আমার মনিব বলেন, “সিয়োনের মাটিতে আমি একটি পাথর, একটি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করব| এটি একটি মূল্যবান পাথর| সেই গুরুত্বপূর্ণ পাথরের ওপর সমস্ত কিছু গড়ে উঠবে| সেই পাথরটির কাছে এসে বিশ্বস্ত লোকরা কখনো ভয় পাবে না|” 17 “দেওয়াল সরল কিনা তা জানার জন্য মানুষ এক ওলন দড়ি ব্যবহার করে| ঠিক একই ভাবে কোনটা ঠিক তা দেখানোর জন্য আমি বিচার এবং ধার্ম্মিকতাকে ব্যবহার করব|“তোমরা শযতান মানুষরা যারা মিথ্যা এবং কৌশলের পিছনে লুকোতে চাও তারা শাস্তি পাবে| কোন ঝড় অথবা বন্যা আসছে তোমাদের লুকিয়ে থাকার স্থান ধ্বংস করতে| 18 মৃত্যুর সঙ্গে তোমাদের চুক্তি মুছে যাবে| মৃত্যুর স্থানের সঙ্গে তোমাদের চুক্তি কোন কাজেই আসবে না|“যখন সেই ভয়ঙ্কর শাস্তি আসবে তখন তোমরা তার দ্বারা পদদলিত হবে| 19 যত বার তোমাদের শাস্তি আসবে, তত বারই সে তোমাদের নিয়ে যাবে| তোমাদের শাস্তি হবে ভয়ঙ্কর| তোমাদের শাস্তি খুব ভোরবেলা আসবে এবং চলতে থাকবে গভীর রাত পর্য়ন্ত| বার্তাটি শুধুমাত্র বোঝার পরই তা তোমাকে ভয়ে কাঁপিয়ে তুলবে| 20 “তখন তোমরা এই গল্পটি বুঝবে: একটি মানুষ তার পক্ষে খুবই ছোট একটি বিছানায ঘুমোবার চেষ্টা করেছিল| এবং তার একটি কম্বল ছিল যা তাকে আচ্ছাদিত করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল না| বিছানা এবং কম্বল দুটিই ছিল ব্যবহারের অয়োগ্য| তোমাদের চুক্তিগুলিও ঠিক সেরকম|” 21 পরাসীম পর্বতে প্রভু যেমন যুদ্ধ করেছিলেন ঠিক তেমন ভাবেই যুদ্ধ করবেন| গিবিয়োনের উপত্যকায় প্রভু যেমন রুদ্ধ হয়েছিলেন ঠিক তেমনি তিনি রুদ্ধ হবেন| প্রভুর যা কিছু করবার আছে তা তিনি করবেন| তিনি কিছু আশ্চর্য়্য় কাজ করবেন| তবে তিনি তাঁর কাজ শেষ করবেন| তাঁর কাজ হবে একজন অপরিচিতের কাজ| 22 এখন তোমরা সেই সব জিনিসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে না| যদি তোমরা লড়াই কর তাহলে তোমাদের ঘিরে রাখা দড়িগুলির বাঁধন আরো শক্ত হয়ে উঠবে|যা আমি শুনেছি তা থাকবে অপরিবর্তিত| যে সব কথা আমি শুনেছি তা প্রভু সর্বশক্তিমান, পৃথিবীর শাসনকর্তার মুখ নিঃসৃত| তাই সে সব কথার কোন পরিবর্তন হবে না| তাঁর কথিত সমস্ত ব্যাপারই ঘটবে| 23 যে বাণী আমি তোমাদের শোনাচ্ছি তা মন দিয়ে শোন| 24 এক জন কৃষক কি সব সময় তার ক্ষেতে লাঙ্গল চালায? না| সে কি সব সময় মাটি তৈরী করে? না| 25 কৃষক মাটি তৈরী করে| তারপর বীজ বপন করে| বিভিন্ন পদ্ধতিতে সে বিভিন্ন বীজ বপন করে| কৃষক শুলফার বীজ ছড়ায, তারপর সে জীরের বীজ মাটিতে ছড়ায| সে গমের বীজ বোনে সারিবদ্ধ ভাবে| এক জন কৃষক বার্লিগাছ বিশেষ স্থানে বপন করে| এক বিশেষ ধরণের বীজ সে রোপণ করে শস্য ক্ষেতের ধারে| 26 আমাদের ঈশ্বর তোমাদের শিক্ষা দেবার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন| এই উদাহরণ দেখায় যে মানুষকে শাস্তি দেবার সময় ঈশ্বর সঠিক উপায়েই শাস্তি দেবেন| 27 শুলফার বীজ মাড়বার জন্য কৃষক কি ধারালো দাঁতওযালা পাটাতন ব্যবহার করে? না! জীরা বীজ মাড়বার জন্য কি কৃষক কোন চতুশ্চএ শকট ব্যবহার করে? না! এই শস্যগুলির বীজ থেকে খোসা ছাড়ানোর জন্য এক জন কৃষক একটি ছোট লাঠি ব্যবহার করে| 28 যখন কেউ রুটি তৈরী করবার জন্য শস্যকে তৈরী করে সে তখন গমকে আটায চূর্ণ করে| কিন্তু সে এটা চির কাল ধরে করে না| সে হয়তো এর ওপর দিয়ে তার ঘোড়া এবং মালবাহী গাড়ি চালিযে নিয়ে যেতে পারে কিন্তু এটা সম্পূর্ণ চূর্ণ হবে না| প্রভু তাঁর লোকদের একই ভাবে শাস্তি দিয়ে থাকেন| 29 প্রভু সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে এই শিক্ষা আসে| প্রভু আশ্চর্য়্য় সব উপদেশ দেন| ঈশ্বর সত্যই প্রজ্ঞাবান|

ইসাইয়া 29

1 ঈশ্বর বললেন, “অরীযেলের দিকে তাকাও! অরীযেল, সেই শহর যেখানে দাযূদ তাঁবু ফেলেছিলেন| বছরের পর বছর তার ছুটি অব্যাহত ছিল| 2 আমি অরীযেলকে শাস্তি দিয়েছি| দুঃখ আর কান্নায শহরটা ভরে গিয়েছে| কিন্তু সে আমার চির কালের অরীযেল| 3 “অরীযেল আমি তোমার চারিদিকে সৈন্য মোতাযেন করেছি| আমি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের দুর্গসমূহ তৈরী করেছি| 4 তুমি পরাজিত হলে এবং মাটিতে মিশে গেলে| এখন আমি মাটিতে ভূতের মতো তোমার কণ্ঠস্বর শুনতে পাই| তোমার কথাগুলো গোঙানির মত ধূলোর মধ্যে থেকে আসে|” 5 তোমার শএুরা সংখ্যায় ক্ষুদ্র ধূলিকণার মতো প্রচুর| যারা তোমার প্রতি নিষ্ঠুর তাদের সংখ্যা বাতাসে ভেসে যাওয়া ভূসির মত| 6 হঠাত্‌ এরকম ঘটবে: সর্বশক্তিমান প্রভু ভূমিকম্প, বজ্রপাত, হৈ-হল্লা দিয়ে তোমাকে শাস্তি দেবেন| ঝড়, তীব্র বাতাস আর আগুন সব কিছু পুড়িয়ে দেবে আর ধ্বংস করবে| 7 অনেক দেশ অরীযেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে| ওটা হবে রাতের এক দুঃস্বপ্নেরই মত| সৈন্যরা অরীযেলকে শাস্তি দেবে| 8 কিন্তু ঐ সৈন্যদের কাছেও সেটা স্বপ্ন হবে| তারা যা চায় তা পাবে না| যেন এক ক্ষুধার্ত মানুষের আহারের স্বপ্ন দেখা| যখন মানুষটা জেগে ওঠে তখনও সে ক্ষুধার্ত| যেন এক তৃষ্ণার্ত মানুষের জলের স্বপ্ন দেখা| যখন মানুষটা জেগে ওঠে তখনও সে তৃষ্ণার্ত থাকে|সিয়োনের বিরুদ্ধে লড়া সমস্ত দেশের ক্ষেত্রে এসব ঘটনা সত্যি হবে| এই সমস্ত দেশ যা চায় তারা তা কিছুতেই পাবে না| 9 চমত্‌কৃত ও বিহবল হও| তুমি মদ্যপ হয়ে উঠবে কিন্তু দ্রাক্ষারস থেকে নয়| দেখ এবং বিহবল হও| তুমি হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে কিন্তু সুরাপানে নয়| 10 প্রভু তোমাকে ঘুম কাতুরে বানাবেন| বন্ধ করে দেবেন তোমার দুচোখ| (ভাব্বাদীরা হবে তোমার দুচোখ|) প্রভু তোমাদের মাথা ঢেকে দেবেন| (ভাব্বাদীরা হবে তোমার মাথা|) 11 আমি তোমাকে বলছি যে এসব ঘটনাগুলি ঘটবে| কিন্তু তোমরা আমাকে বুঝবে না| আমার কথাগুলো তোমার কাছে বন্ধ ও সীলমোহর করা বই-এর মধ্যের কথাগুলোর মত মনে হবে| তুমি বইটি এমন কাউকে দিতে পার যে পড়তে পারে| কিন্তু তাকে যদি পড়তে বল সে বলবে, “আমি পড়তে পারব না| কারণ বইটি বন্ধ এবং তা আমি খুলতে পারব না|” 12 অথবা তুমি কাউকে বইটি দিতে পার, যে পড়তে পারে না| সেই লোকটিকে পড়তে বললে সে বলবে, “আমি এই বই পড়তে পারব না| কারণ কি ভাবে বইটি পড়তে হয় তা আমার জানা নেই|” 13 আমার প্রভু বলেন, “ঐ মানুষরা আমার প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছে| তাদের মুখ নিঃসৃত শব্দ আমার প্রতি সম্মান জানায| কিন্তু তাদের হৃদয় আমার থেকে অনেক দূরে| আমাকে যে সম্মান তারা জানায তা তাদের মুখস্থ করা মানবিক বিধিসমূহ ছাড়া আর কিছুই নয়| 14 সুতরাং আমি আমার শক্তিশালী ও আশ্চর্য়্য়জনক এযিাকলাপ দিয়ে লোকেদের বিস্ময বিহবল করা অব্যাহত রাখব| ওদের জ্ঞানী লোকরা তাদের জ্ঞান হারিযে ফেলবে| ওদের জ্ঞানী লোকরা উপলদ্ধি করবার ক্ষমতাও হারিযে ফেলবে|” 15 সেই সব মানুষ প্রভুর কাছ থেকে অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে| তারা মনে করে যে প্রভু কিছুতেই বুঝতে পারবেন না| তারা অন্ধকারের মধ্যে পাপ কাজ করে| তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, “আমাদের কেউ দেখতে পায় না, কেউ জানতেও পারবে না আমরা আসলে কে?” 16 তোমরা আসলে বিভ্রান্ত| তোমরা মনে কর যে মাটি আর কুমোর সমান| তোমরা ভাবো যে তৈরী জিনিষটি, যে তাকে তৈরী করেছে তাকে বলতে পারে, “তুমি আমাকে তৈরী করনি!” এটা আসলে একটা পাত্রের মত যে তার সৃষ্টিকর্তাকে বলছে, “তুমি বোঝ না|” 17 সত্যটি হল: কিছু সময় পরেই লিবানোন উত্তর ইস্রায়েলের সু-আবাদি কর্মিল পর্বতের মতো উর্বর চাষের জমি পেয়ে যাবে এবং কর্মিল পর্বত ঘণ অরণ্যের মতো হবে| 18 বধির শুনতে পাবে, বই থেকে পড়ে শোনানো কথাগুলি; অন্ধ কুযাশা ও অন্ধকারের মধ্যেও দেখতে পাবে| 19 প্রভু গরীব মানুষদের সুখী করবেন| ইস্রায়েলে গরীব লোকরা ইস্রায়েলের সেই পবিত্র এক জনের নামে আনন্দ করবে| 20 যখন নিষ্ঠুর ও উদ্ধত লোকরা আর থাকবে না তখন এটা ঘটবে| যারা মন্দ কাজ করার জন্য সুযোগ খুঁজে বেড়ায সেই সব লোকদের পতনের পর এটা ঘটবে| 21 সেই সব লোক লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্য়ে অভিযোগ নিয়ে আসে| আদালতে তারা বিচারকদের জন্য ফাঁদ পাতার চেষ্টা করে| তারা আইন মেনে চলা লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্য়ে বিচার আনার জন্য তাদের আইনি তর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে| 22 সুতরাং, প্রভু যাকোবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন| (এই সেই প্রভু যিনি অব্রাহামকে উদ্ধার করেছিলেন|) প্রভু বলেন, “এখন যাকোব (ইস্রায়েলের লোক) বিব্রত ও লজ্জিত হবে না| 23 তিনি তাঁর সকল শিশুদের দেখবেন এবং বলবেন যে আমার নাম পবিত্র, আমি এই সব শিশুদের নিজের হাতে তৈরী করেছি এবং তারা বলবে যে যাকোবের সেই পবিত্র জনটি (ঈশ্বর) হলেন খুব বিশিষ্ট| এই সকল শিশুরাই ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করবে| 24 যাদের আত্মা বিপথে গিয়েছিল তারা বুঝতে পারবে এবং যারা নালিশ করেছিল তারা উচিত্‌ শিক্ষা পাবে|”

ইসাইয়া 30

1 প্রভু বললেন, “এই বিদ্রোহী শিশুদের দিকে দেখ| তারা আমাকে মান্য করে না| তারা পরিকল্পনা করে| কিন্তু তারা আমাকে সাহায্য করতে বলে না| তারা অন্য দেশের সঙ্গে চুক্তি করে| কিন্তু আমার আত্মা ঐ ধরণের চুক্তি চায় না| এই সব লোকরা তাদের পাপের সঙ্গে আরো অনেক পাপ যোগ করছে| 2 এই সব শিশুরা সাহায্যের জন্য মিশরে যাচ্ছে| কিন্তু তারা কখনো আমাকে জিজ্ঞাসা করেনি, এটা তারা ঠিক কাজ করছে কি না| তাদের আশা মিশরের রাজা ফরৌণ তাদের সাহায্যে করবে| তারা চায় মিশর তাদের রক্ষা করুক| 3 “কিন্তু আমি বলব মিশরে লুকিয়ে থাকা তোমাদের পক্ষে সহায়ক হবে না| মিশর তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না| 4 তোমাদের নেতারা মিশরীয় শহর সোযনে গিয়েছে| এবং তোমাদের রাষ্ট্রদূতরা মিশরীয় শহর হানেষে গিয়েছে| 5 কিন্তু তারা আশাহত হবে| তারা এমন একটা জাতির উপর নির্ভরশীল যারা সাহায্য করতে অপারগ| মিশর হচ্ছে অকর্মণ্য| প্রয়োজনীয় সাহায্য ওরা দিতে পারবে না| মিশর তাদের কাছে শুধুমাত্র লজ্জা এবং বিহবলতা আনবে|” 6 যিহূদার দক্ষিণে মরু অঞ্চল নেগেভের প্রাণীর জন্য বার্তা|নেগেভ হল একটি বিপজ্জনক স্থান| এই জায়গাটি সিংহ এবং দ্রুতগামী বিষাক্ত সাপে ভর্তি| কিন্তু কিছু লোক নেগেভের মধ্যে দিয়ে মিশরে যাতায়াত করে| এই সব লোক তাদের জিনিসপত্র গাধার পিঠে চাপিয়ে নিয়ে যায়| উটের পিঠের ওপর তাদের ধনসম্পত্তি বয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সেই দেশে যার ওপর লোকে নির্ভর করে আছে, যে দেশ তাদের সাহায্য করতে অপারগ| 7 এই অকর্মণ্য দেশটি হল মিশর| মিশরের সাহায্য কোন কাজেই লাগবে না| সুতরাং আমি মিশরের নাম দিয়েছি, “অকর্মণ্য দানব|” 8 এখন এটাকে কোন চিহ্নের ওপর লেখ যাতে সমস্ত মানুষ এটাকে দেখতে পায় এবং এটা লিখে রাখ একটা বইয়ের মধ্যে| শেষের দিনের জন্য এগুলি লেখ যাতে এগুলি সুদূর ভবিষ্যতে সাক্ষ্যস্বরূপ চিরকাল থাকে| 9 এই সব লোক শিশুদের মতো| তারা তাদের পিতামাতাকে মান্য করতে চায় না| তারা মিথ্যা কথা বলে এবং ঈশ্বরের বিধি শুনতে অস্বীকার করে| 10 তারা ভাব্বাদীদের বলে, “ভবিষ্যদ্বাণী করো না! যা যা আমাদের করা উচিত্‌ সে বিষয়ে স্বপ্ন দেখো না! আমাদের সত্যি কথা বলো না| সুন্দর জিনিসের কথা আমাদের বল এবং আমাদের মধ্যে ভাল অনুভূতির সঞ্চার কর! আমাদের শুধু ভাল ভাল জিনিস দেখাও! 11 সেই সব জিনিস দেখাবে যা যা ঘটবে! সেগুলিকে আমাদের থেকে বরং দূরে সরিয়ে রাখ! ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কথা আমাদের বোল না|” 12 ইস্রায়েলের পবিত্র জনটি বলেন, “তোমরা প্রভুর কাছ থেকে আসা এই বার্তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছ| তোমরা পীড়ন ও মিথ্যার ওপর নির্ভর করতে চাও| 13 এসব কাজের জন্য তোমরা অপরাধী| তোমরা আসলে ফাটল ধরা উঁচু প্রাচীরের মতোই| সেই প্রাচীরের পতন হবে এবং তা ছোট ছোট টুকরোয পরিণত হবে| 14 তোমরা চীনামাটির বাসনের মতো ভেঙ্গে ছোট ছোট টুকরোয পরিণত হবে| এই টুকরোগুলি কোন কাজেই লাগবে না| তোমরা সেই টুকরোগুলোকে গরম কযলার টুকরো তোলার কাজে অথবা জলাশয থেকে জল আনার কাজে ব্যবহার করতে পারবে না|” 15 প্রভু, আমার গুরু, ইস্রায়েলের পবিত্র জনটি বলেন, “তোমরা যদি আমার কাছে ফিরে আসো তবে সুরক্ষিত হবে| তোমরা যদি আমার ওপর আস্থা রাখ তবেই পাবে আসল শক্তি| কিন্তু তোমাদের শান্ত হতে হবে|”কিন্তু তোমরা তা করতে চাও না! 16 তোমরা বলবে, “না, আমাদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোড়া চাই|” নিশ্চয়ই তোমরা ঘোড়ায় চেপে পালিয়ে যাবে| কিন্তু শএুরা তোমাদের পেছনে তাড়া করবে| এবং শএুরা তোমাদের ঘোড়ার থেকেও দ্রুতগামী হবে| 17 এক জন শএু তোমাদের ভয় দেখাবে এবং তোমাদের এক হাজার লোক পালিয়ে যাবে| যখন পাঁচজন শএু তোমাদের ভয় দেখাবে তখন তোমরা সবাই ওদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে| তোমাদের সেনাদের যে জিনিসটা শুধুমাত্র পড়ে থাকবে তা হল পাহাড়ের ওপর একটি পতাকার দণ্ড| 18 প্রভু তোমাদের প্রতি তাঁর করুণা দেখাতে চান| তিনি অপেক্ষা করছেন| তিনি উঠে দাঁড়াতে চান এবং তোমাদের আরাম দিতে চান| প্রভু ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ এবং যারা প্রভুর কৃপার অপেক্ষায আছেন তারা সুখী হবে| 19 প্রভুর লোকরা সিয়োন পর্বতের ওপর জেরুশালেমে বাস করবে| তোমরা এন্দনরত থাকবে না| প্রভু তোমাদের কান্না শুনবেন এবং তিনি তোমাদের আরাম দেবেন| প্রভু তোমাদের কথা শুনবেন এবং তিনি তোমাদের কৃপা করবেন| 20 অতীতে আমার প্রভু (ঈশ্বর) তোমাদের দুঃখ ও দুর্দশা দিয়েছিলেন- সেটা ছিল তোমাদের দৈনন্দিনের রুটি ও জলের মতো| কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের শিক্ষাদাতা এবং তিনি তোমাদের কাছ থেকে চিরকাল লুকিয়ে থাকবেন না| তোমরা নিজেদের চোখেই নিজেদের শিক্ষককে দেখতে পাবে| 21 তোমরা যদি জীবনের ভুলপথে চল, (ডানদিকে অথবা বাঁদিকে) পিছন থেকে এই কথাগুলো শুনতে পাবে: “এটাই সঠিক পথ| তোমাদের এই পথেই চলতে হবে|” 22 তোমাদের সোনা এবং রূপোয আচ্ছাদিত মূর্ত্তি আছে| সেইসব মূর্ত্তিসমূহ তোমাদের পাপী করে তুলেছে| কিন্তু তোমরা সেই মূর্ত্তিদের সেবা করা থেকে বিরত হবে| তোমরা এইসব মূর্ত্তিদের নোংরা আবর্জনার মত ফেলে দেবে| 23 সেই সময় প্রভু তোমাদের জন্য বৃষ্টি পাঠাবেন| তোমরা জমিতে বীজ বপন করবে| এবং সেই জমি ভরে উঠবে তোমাদের খাদ্যদ্রব্য়ে| তোমাদের শস্য সংগ্রহ খুব ভালো হবে| তোমাদের গবাদি পশুসমূহ বৃহত্‌ পশুচারণ ভূমিগুলোতে চারণ করবে| তোমাদের চাহিদামত প্রচুর ফসল হবে| 24 তোমাদের গাধা ও গবাদিপশু সমূহ (যেগুলিকে তোমরা জমি কর্ষণের জন্য ব্যবহার কর) প্রচুর পরিমাণে উত্কৃষ্টতম জাব খাবে যেগুলো কাঁটাযুক্ত দণ্ড ও কুড়ুল দিয়ে ছড়ানো| 25 প্রতিটি পাহাড় আর টিলায জলপূর্ণ ছোট ছোট নদী থাকবে| বহু মানুষের হত্যা ও বহু স্তম্ভ ধ্বংসের পর এই সব ঘটবে| 26 সেই সময় চাঁদের আলো হবে সূর্য়ের চেয়েও উজ্জ্বল| সূর্য়ের আলো হবে এখনকার চেয়ে সাতগুণ বেশী উজ্জ্বলতর| সূর্য়ের একদিনের আলোই হবে গোটা সপ্তাহের সমান| এসব ঘটবে তখনই যখন প্রভু তাঁর আহত মানুষদের পট্টি বাঁধবেন এবং মারধোরের ফলে তাদের যে ক্ষত হয়েছে তা সারাবেন| 27 দেখো! প্রভুর নাম বহুদূর থেকে আসছে| তাঁর রোধ ঘন মেঘের ধোঁযাসহ একটি আগুনের মত| ঈশ্বরের মুখ রোধ পরিপূর্ণ এবং তাঁর জিহবা একটি জ্বলন্ত অগ্নির মত| 28 প্রভুর আত্মা একটি বড় নদীর মত বেড়েই চলেছে যতক্ষণ না তিনি আকণ্ঠ ডুবে যান| প্রভু দেশগুলির বিরুদ্ধে মামলা চালাবেন| ওটা ঠিক যেন তিনি তাদের ‘ধ্বংসের ছাঁকনির’ ভেতর ঝাঁকাচ্ছেন| সেটা হবে যেন জাতিগুলিকে বিপথে নিয়ে যাবার জন্য তার মুখে লাগাম দেওয়া আছে যা দিয়ে পশুদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়| 29 সেই সময়, তোমরা সুখের সঙ্গীত গেযে উঠবে| সেই সময়টা হবে একটি ছুটির শুরুর রাতের মত| তোমরা প্রভুর পর্বতে হাঁটার সময় খুবই খুশী হবে| তোমরা যখন প্রভু, ইস্রায়েলের শিলার কাছে উপাসনা করতে যাবে তখন তোমরা যাত্রা পথে মধুর গান শুনে খুশী হবে| 30 প্রভু তাঁর মহান স্বর সকল মানুষকে শোনাবেন| প্রভু সকল মানুষকে তাঁর রোধ নেমে আসা শক্তিশালী হাত দেখতে বাধ্য করবেন| সেই বাহু হবে মহান অগ্নির মতো, যা কিনা সব কিছুকেই পুড়িয়ে ফেলতে পারে| প্রভুর ক্ষমতা হবে ঝড় ও শিলাবৃষ্টির মত| 31 অশূর যখন প্রভুর রব শুনতে পাবে তখন সে ভীত হবে| একটি লাঠি দিয়ে প্রভু অশূরকে আঘাত করবেন| 32 প্রভু অশূরকে আঘাত করবেন এবং তার সঙ্গে ঢাক ও বীণা বাজানো হবে| প্রভু তাঁর মহান শক্তিশালী বাহুবলে অশূরকে পরাস্ত করবেন| 33 তোফত্‌কেবহু দিন থেকে তৈরী করে রাখা হয়েছে| এটি রাজার জন্য তৈরী হয়েছে| এটাকে খুবই গভীর এবং বিস্তৃত ভাবে তৈরী করা হয়েছে| সেখানে প্রচুর কাঠ ও আগুন রয়েছে| গন্ধকের জ্বলন্ত স্রোতের মতো প্রভুর আত্মা সেখানে পৌঁছোবে এবং তাকে পুড়িয়ে দেবে|

ইসাইয়া 31

1 সাহায্যের জন্য মিশর অভিমুখে যাওয়া লোকদের দিকে তাকাও| তারা ঘোড়া চায় এই মনে করে যে ঘোড়ারা তাদের রক্ষা করবে| তারা মনে করে যে মিশরের অনেকগুলি রথ ও অশ্বারোহী সৈন্য তাদের রক্ষা করবে| তারা মনে করে তারা খুবই নিরাপদে আছে| কারণ তাদের সেনাবাহিনী খুবই বিশাল| লোকদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রতি আস্থা নেই| তারা প্রভুর কাছে সাহায্যও চায় না| 2 কিন্তু প্রভু জ্ঞানী এবং তিনি তাদের সমস্যায় ফেলবেন| তারা প্রভুর আদেশের পরিবর্তন ঘটাতে পারে না| প্রভু দুষ্ট লোকদের (যিহূদা) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন| এবং প্রভু দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করবেন যারা তাদের সাহায্য করেছিল| 3 মিশরের লোকরা নিছকই মানুষ, ঈশ্বর নয়| মিশরের ঘোড়াগুলি পশুমাত্র, আত্মা নয়| প্রভু তাঁর বাহুকে কাজে লাগাবেন এবং সাহায্যকারী দেশ মিশরকে পরাস্ত করবেন| এবং (যিহূদার) যে সমস্ত লোকরা সাহায্য চেয়েছিল তাদের পরাজয় হবে| তারা সবাই এক সঙ্গে ধ্বংস হবে| 4 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “একটা সিংহ অথবা সিংহশাবক যখন কোন পশুকে খাবার জন্য ধরে সে তখন তার শিকারের ওপর দাঁড়ায ও গর্জন করে| তখন কোন কিছুই সিংহটিকে ভয় দেখাতে পারে না| যদি মানুষ আসে এবং চেষ্টাও করে সিংহটি ভীত হয় না| মানুষ যথেষ্ট হল্লা জুড়তে পারে| কিন্তু সিংহ পালায় না|”একই ভাবে সর্বশক্তিমান প্রভু আসবেন সিয়োন পর্বতে| পর্বতের ওপর প্রভু যুদ্ধ করবেন| 5 বাসার ওপর উড়ন্ত পাখির মত সর্বশক্তিমান প্রভু জেরুশালেমের হয়ে যুদ্ধ করবেন| প্রভু তাঁকে রক্ষা করবেন| প্রভু জেরুশালেমকে প্রতিরক্ষা করবেন এবং তাকে উদ্ধার করবেন| 6 তোমরা ইস্রায়েলের শিশুরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধগামী| তোমাদের উচিত্‌ ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসা| 7 তখনই সোনা রূপো দিয়ে তোমাদের তৈরী করা মূর্ত্তির পূজা লোকেরা ছেড়ে দেবে| তোমরা সত্যিই ঐসব মূর্ত্তি তৈরী করবার সময় পাপ করেছ| 8 এটা সত্যি যে অশূর তরবারির সাহায্যে পরাস্ত হবে| কিন্তু তরবারিটি মানুষের তরবারি নয়| অশূর ধ্বংস হবে| কিন্তু সেই ধ্বংস মানুষের তরবারি দিয়ে হবে না| অশূর ঈশ্বরের তরবারি দেখে পালাবে| কিন্তু যুবকরা ধরা পড়বে এবং তাদের দাস বানানো হবে| 9 তাদের নিরাপদ স্থান ধ্বংস হবে| তাদের নেতারা পরাস্ত হয়ে তাদের পতাকা ত্যাগ করবে|ঐসব কথা প্রভুই বলেছেন| প্রভুর অগ্নিস্থান (বেদী) সিয়োনে আছে| প্রভুর উনুন (বেদী) জেরুশালেমে আছে|

ইসাইয়া 32

1 আমি যা যা বলি শোন| একজন রাজার এমন ভাবে শাসন করা উচিত্‌ যা প্রজাদের মঙ্গল সাধন করে| নেতারা যখন লোকদের নেতৃত্ব দেয় তখন তাদের নিরপেক্ষ ও উচিত্‌ সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার| 2 যদি এসব ঘটনাগুলি ঘটে তবে রাজা সেই জায়গার মতোই হবে যেখানে রোদ ও বৃষ্টি থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারব| এটা হয়ে উঠবে শুকনো জমিতে জলপ্রবাহ সমূহের মতো| এটা হবে গরম ভূখণ্ডে বিশাল পাথর খণ্ডের শীতল ছায়ার মতো| 3 লোকরা সাহায্যের জন্য রাজার কাছে যাবে এবং তিনি যা বলবেন লোকরা সত্যি সত্যিই তা শুনবে| 4 যে সব লোকরা এখন বিভ্রান্ত তারা সব কিছু বুঝতে সক্ষম হবে| যারা স্পষ্ট কথা বলতে পারে না তারা স্পষ্ট ও দ্রুত কথা বলতে পারবে| 5 দুষ্ট লোকদের বদান্য বলে ডাকা হবে না| লোভী লোকদের কেউ উদার বলবে না| 6 এক জন দুষ্ট লোক সর্বদাই অরুচিকর কথা বলে| এবং তার মনে পাপ কাজ করার চিন্তাই থাকে| এক জন বোকা লোক কেবল ভুল কাজ করে| সে যখন ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে তখনো প্রতারণাপূর্ণ কথা বলে| এক জন খল লোক ক্ষুধার্তকে খাবার দেয় না| ঈশ্বরের বিষয়ে অজ্ঞ যে মানুষ সে তৃষ্ণার্তকে জল দেয় না| 7 সেই দুষ্ট লোকটি পাপবুদ্ধিকে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করে| সে গরীব মানুষের সব কিছু আত্মসাত্‌ করার পরিকল্পনা করে| এমনকি যখন গরীব লোকটি সত্যি কথা বলছে সেই দুষ্ট লোক গরীব মানুষদের বিষয়ে মিথ্যা কথা বলে| 8 কিন্তু ভালো নেতা ভালো কাজের পরিকল্পনা করেন এবং সেই সব ভালো কাজই তাকে মহান নেতার আসনে বসায| 9 তোমাদের মহিলাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও শান্ত| তোমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছ| কিন্তু তোমাদের উঠে দাঁড়িয়ে আমার কথা শোনা উচিত্‌| 10 মহিলারা, তোমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করো| কিন্তু এক বছর পর তোমরা সমস্যায় পড়বে| কারণ পরের বছর তোমরা দ্রাক্ষাফল সংগ্রহ করতে পারবে না| সংগ্রহ করার মতো কোন দ্রাক্ষাফল তখন থাকবে না| 11 মহিলারা তোমরা এখন শান্ত| কিন্তু তোমাদের ভীত হওয়া উচিত্‌| মহিলারা তোমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছ কিন্তু তোমাদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত্‌| তোমরা সুন্দর পোশাক খুলে দুঃখের পোশাক পর| তোমরা কোমরে জড়িয়ে রাখ সেই কাপড়| 12 তোমার দুঃখে ভারাএান্ত স্তনয়ুগলকে সেই সব দুঃখের কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখ|কাঁদো যেহেতু তোমার জমি শস্য শূন্য| তোমার দ্রাক্ষাক্ষেত যা একসময় ফসল দিত তা এখন শূন্য| 13 আমার লোকদের দেশের জন্য কাঁদো| কাঁদো, কারণ দেশে কাঁটাগাছ আর আগাছাই জন্মাবে| কাঁদো সেই সব শহর ও ঘরবাড়ির জন্য যেগুলি এক সময় আনন্দে পরিপূর্ণ ছিল| 14 লোকরা রাজধানী, শহর ত্যাগ করবে| প্রাসাদ ও দুর্গগুলি পরিত্যক্ত হবে| লোকরা ঘরে বসবাস করতে পারবে না| তারা গুহায গিয়ে বাস করবে| বুনো গাধা ও মেষ শহরে বসবাস করবে| জীবজন্তুরা সেখানে ঘাস খেতে যাবে| 15 যতদিন না ঈশ্বর ওপর থেকে আমাদের জন্য তাঁর আত্মা প্রেরণ করেন ততদিন এটা চলতে থাকবে| কিন্তু ভবিষ্যতে এই মরুভূমি উত্তর ইস্রায়েলের সুউর্বর আবাদি এলাকা কর্মিলে পরিণত হবে- সেখানে ন্যায়বিচার বিরাজ করবে| এবং কর্মিল হবে সবুজ বনভূমির মত| সুবিচার সেখানে বিরাজ করবে| 16 17 এই ধার্মিকতা চির কালের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা এনে দেবে| 18 আমার লোকরা এই সুন্দর শান্তিপূর্ণ জায়গায় বাস করবে| আমার লোকরা নিরাপদ তাঁবুতে বাস করবে| তারা শান্ত ও শান্তিপূর্ণ জায়গায় বাস করবে| 19 কিন্তু এই সকল ঘটনা ঘটার আগে জঙ্গলটার পতন ঘটাতে হবে| শহরটিকে পরাস্ত করতে হবে| 20 এই সব লোকদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিটি জল প্রবাহের ধারে ফসল বুনবে| তোমাদের গাধা এবং গবাদি পশুরা এর চারি দিকে ঘুরে বেড়াবে ও স্বাধীন ভাবে খাদ্যগ্রহণ করবে| তোমরা খুব সুখী হবে|

ইসাইয়া 33

1 দেখ! তোমরা যারা তোমাদের কাছ থেকে কখনও কিছু চুরি করেনি, তাদের সঙ্গে ঝগড়া করো আর তাদের জিনিষ চুরি করো| তোমরা সেই সব লোকের বিপক্ষে যাবে, যারা কখনো তোমাদের বিপক্ষে যায়নি| তাই যখন তোমরা চুরি করা বন্ধ করবে অন্য লোকরা তখন তোমাদের কাছ থেকে চুরি করবে| তোমরা যখন অন্যের বিপক্ষে যাওয়া বন্ধ করবে তখন অন্য লোকরা তোমাদের বিপক্ষে যাওয়া শুরু করবে|তখন লোকরা বলবে, 2 “প্রভু আমাদের প্রতি সদয হোন| আমরা আপনার সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছি| প্রতিদিন সকালে আমাদের শক্তি দিন| আমরা বিপদে পড়লে আমাদের রক্ষা করুন| 3 আপনার শক্তিশালী রব লোকদের ভয়চকিত করে| এবং তারা আপনার কাছ থেকে দূরে পালাতে চায়| আপনার মহত্ব দেশগুলিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করবে|” 4 যুদ্ধে তোমরা জিনিসপত্র চুরি করবে| সেই সব জিনিস তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে| অনেক অনেক লোক আসবে| তারা তোমাদের ধনসম্পদ নিয়ে যাবে| এটা অনেকটা সেই সময়ের মতো হবে যখন পতঙ্গরা এসে শস্য ক্ষেতের সব ফসল খেয়ে নেয| 5 প্রভু খুবই মহান| তিনি খুব উচ্চস্থানে বসবাস করেন| প্রভু সিয়োনকে সাধুতা এবং ধার্ম্মিকতায পূর্ণ করবেন| 6 জেরুশালেম তুমি খুব ধনী| জেরুশালেমের লোক, তোমরা ঈশ্বরের জ্ঞান ও বিচক্ষণতা দ্বারা পরিপূর্ণ| তোমরা পরিত্রাণপ্রাপ্ত| তোমরা প্রভুকে শ্রদ্ধা কর এবং এটাই তোমাদের ধনী করেছে| সুতরাং তোমরা জান যে তোমরা সেটি করা অব্যাহত রাখবে| 7 কিন্তু শোন! বার্তাবাহকরা বাইরে কাঁদছে| যে সব বার্তাবাহকরা শান্তি আনছে তারাই খুব কাঁদছে| 8 রাস্তা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| পথ দিয়ে কেউ হাঁটছে না| মানুষ তাদের তৈরি চুক্তি ভঙ্গ করেছে| লোকরা সাক্ষ্য, প্রমাণ কোন কিছুই বিশ্বাস করতে চাইছে না| কেউ কাউকে শ্রদ্ধা করছে না| 9 দেশ রুগ্ন ও মৃতপ্রায| লিবানোন মারা যাচ্ছে| শারোণ উপত্যকা শুষ্ক ও শূন্য| একদা বাশন ও কর্মিলে সুন্দর গাছ জন্মাত, কিন্তু এখন শুকনো ও শূন্য| 10 প্রভু বলেন, “আমি এখন উঠে দাঁড়াব এবং আমার মহত্ব দেখাব| এখন আমি মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠব| 11 তোমরা অরয়োজনীয় কাজ করেছ| সেই সব কাজ হল খড় এবং খড়কুটোর মতো| সেই সবের কোন মূল্য নেই| তোমাদের আত্মা আগুনের মত হবে এবং তা তোমাদের পোড়াবে| 12 লোকদের পোড়ানো হবে যতক্ষণ না তাদের হাড় চুনে পরিণত হয়| লোকরা কাঁটা ও বুনো আগাছার মত দ্রুত পুড়ে যাবে| 13 “তোমরা দূর দেশের লোক আমার কর্মের কথা শোন, তোমরা যে সব লোকরা আমার কাছে আছো তারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে জান|” 14 সিয়োনের পাপীরা ভীত| যারা ভুল কাজ করেছিল তারা ভয়ে কাঁপছে| তারা বলছে, “এই ধ্বংসাত্মক আগুনের মধ্যে আমাদের কেউ কি বাঁচাতে পারবে? এই অনন্ত আগুনের কাছে কে বাস করতে পারে?” 15 ভালো সত্‌ মানুষরা অন্যের টাকায লোভ দেয় না| তাই তারা ঐ আগুনের মধ্যেও বসবাস করতে পারবে| যে সব লোকরা ঘুষ নেয না, যারা অন্য লোককে খুন করার পরিকল্পনার কথা শুনতে চায় না, যারা খারাপ কাজের পরিকল্পনায অংশগ্রহণ করে না| 16 তারাও উচ্চস্থানে নিরাপদে বাস করবে| উঁচু কেল্লার দ্বারা তারা সুরক্ষিত থাকবে| এই সব লোকদের কাছে সব সময় জল ও খাবার থাকবে| 17 তোমাদের চোখ রাজাকে তাঁর সৌন্দর্য়্য়ে দেখতে পাবে| তোমরা অনেক দূরের সেই ভূখণ্ডটি দেখতে পাবে| 18 তোমরা তোমাদের অতীতের সমস্যার কথা ভাববে| তোমরা ভাববে, “কোথায় গেল সেই বিদেশীরা যারা কথা বললে তাদের কথা বুঝতাম না? কোথায় সেই ভিনদেশী কর্মী ও কর আদাযকারীর দল? কোথায় গেল সেই চররা যারা আমাদের প্রতিরক্ষা দুর্গগুলির গণনা করত? তারা সবাই চলে গিয়েছে|” 19 20 সিয়োনের দিকে তাকাও| এই শহরটি আমাদের ধর্মীয় ছুটির দিনের জন্য| জেরুশালেমের দিকে তাকাও যা একটি সুন্দর বিশ্রামের জায়গা| জেরুশালেম একটা তাঁবুর মতো যাকে কখনও সরানো যাবে না| যে পেরেকগুলি তাকে নির্দিষ্ট জায়গায় ধরে রেখেছে তাদের কখনও উপড়ে ফেলা যাবে না| তার দড়িগুলি কখনো ছিঁড়ে যাবে না| 21 কারণ প্রভু সর্বশক্তিমান সেখানে রয়েছেন| এই দেশ ছোট ও বড় নদী বেষ্টিত জায়গা| কিন্তু এই নদীগুলিতে শএুর নৌকা বা শক্তিশালী জাহাজ থাকবে না| তোমরা যারা এই নৌকোগুলোতে কাজ করছ, তারা এই দড়িগুলি নিয়ে কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারো| তোমরা মাস্তুলকে যথেষ্ট শক্তিশালী করতে পারো না| তোমরা তোমাদের পাল খুলতে পারবে না| কারণ প্রভু আমাদের বিচারক| প্রভু আমাদের বিধি প্রণেতা| প্রভুই আমাদের রাজা| তিনি আমাদের রক্ষা করেন| তাই তিনি আমাদের যথেষ্ট সম্পদ দেবেন| এমনকি পঙ্গু লোকরা যুদ্ধ থেকে প্রচুর সম্পদ লাভ করবে| 22 23 24 সেখানে বাস করা কোনও লোকই বলবে না যে “আমি রুগ্ন|” পাপমুক্ত লোকরাই সেখানে বাস করবে|





AMAZING GRACE BIBLE INSTITUTE