যেরেমিয়া

1 এইগুলি হল যিরমিয়র বার্তাসমূহ| যিরমিয় ছিলেন হিল্কিয়ের পুত্র| যাজক পরিবারের সন্তান যিরমিয় বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর অঞ্চল অনাথোত্‌ শহরে বাস করতেন| 2 যিহূদার রাজা আমোনের পুত্র য়োশিযর ত্রযোদশ বছরের রাজত্বকালেপ্রভু প্রথম যিরমিয়র সঙ্গে কথা বলেছিলেন| 3 য়োশিযর পুত্র সিদিকিয়র একাদশ বছরের রাজত্বকাল পর্য়ন্ত অর্থাত্‌ ঐ বছরের পঞ্চম মাসে বন্দীদের জেরুশালেম থেকে নিয়ে আসার সময় পর্য়ন্ত যিরমিয় ঈশ্বরের কাছ থেকে বার্তা পেয়েছিলেন| 4 য়িরমিযের কাছে প্রভুর বার্তা পৌঁছালো| 5 প্রভুর বার্তা ছিল এই রূপ: “তোমাকে আমি তোমার মাতৃগর্ভে রূপ দেবার আগেই জানতাম| তোমার জন্মের আগে থেকেই আমি তোমাকে একটি বিশেষ কাজের জন্য নির্বাচন করে রেখেছিলাম| আমি তোমাকে জাতিসমূহের ভাব্বাদী হিসেবে মনোনীত করেছিলাম|” 6 যিরমিয় তখন বললেন, “কিন্তু প্রভু সর্বশক্তিমান, আমি তো কথাই বলতে জানি না| আমি এক জন বালক মাত্র|” 7 কিন্তু প্রভু আমাকে বললেন,“নিজেকে বালক বল না, যেখানে আমি তোমাকে পাঠাবো সেখানেই তোমাকে য়েতে হবে| আমি তোমাকে যা যা বলতে বলব তুমি কেবল তাই-ই বলবে| 8 কাউকে কখনও ভয় পাবে না| আমি সব সময় তোমার সঙ্গেই আছি এবং আমিই তোমাকে রক্ষা করবো|” এই হল প্রভুর বার্তা| 9 তারপর প্রভু তাঁর বাহু প্রসারিত করে আমার ঠোঁট স্পর্শ করে বললেন, “যিরমিয়, আমি আমার শব্দ তোমার ঠোঁটে স্থাপন করলাম| 10 আজ থেকে আমি তোমাকে এই জাতিগুলির এবং রাজ্যগুলির ভার দিলাম| তুমি তাদের উত্‌পাটন করবে এবং তাদের ছিঁড়ে ফেলে দেবে| তুমি তাদের ধ্বংস করবে এবং ক্ষমতাচ্যুত করবে| তুমিই সৃষ্টি করবে এবং বপণ করবে|” 11 প্রভুর এই বার্তা আমার কাছে এল: “যিরমিয়, কি দেখতে পাচ্ছো তুমি?”আমি প্রভুকে বললাম, “বাদাম কাঠের তৈরী একটি লাঠি দেখতে পাচ্ছি|” 12 প্রভু আমাকে বললেন, “তুমি ঠিকই দেখেছ এবং তোমার প্রতি আমার কথাগুলো যাতে সত্য হয় তার সম্বন্ধে নিশ্চিত হবার জন্য আমি লক্ষ্য রাখছি|” 13 আবার প্রভুর বার্তা আমার কাছে এসে পৌঁছালো: “যিরমিয়, এবার তুমি কি দেখতে পাচ্ছো?”আমি উত্তর দিলাম, “একটি ফুটন্ত গরম জলভর্তি পাত্র দেখতে পাচ্ছি| পাত্রটির উত্তর দিকের অগ্রভাগ উথলে পড়ছে|” 14 প্রভু আমাকে বললেন, “উত্তর দিক থেকে ভযানক কিছু ঘটতে চলেছে| এটি এই দেশের সমস্ত লোকের ওপর ঘটবে| 15 খুব অল্প কালের মধ্যে, আমি উত্তর দিকের দেশগুলির সমস্ত লোকদের ডাকব|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| “ওই দেশগুলির রাজারা এসে জেরুশালেমের ফটকের কাছে সিংহাসন প্রতিষ্ঠা করবে| তারা জেরুশালেমের প্রাচীর আক্রমণ করবে| তারা পাশাপাশি যিহূদার প্রতিটি শহর আক্রমণ করবে| 16 এবং আমি আমার লোকদের বিরুদ্ধেই রায় ঘোষণা করব| আমি এরকম করব কারণ ওরা খারাপ মানুষ এবং ওরা আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| আমাকে ছেড়ে গিয়েছে| ওরা অন্য দেবতাদের প্রতি উত্সর্গ নিবেদন করেছে| নিজেদের হাতে গড়া মূর্ত্তিকে পূজা করেছে| 17 “সুতরাং যিরমিয় তৈরী হও| উঠে দাঁড়াও এবং লোকদের সঙ্গে কথা বলো| আমি তোমাকে যা যা বলতে বলেছি তাদের তুমি তাই বলবে| তাদের সামনে ভয় পেযো না| এই লোকদের সম্বন্ধে ভয় পেযো না, নাহলে আমি কিন্তু ওদের ভয় পাওয়ার জন্য তোমাকে একটি ভাল কারণ দেব| 18 আর আমি আজ থেকে তোমাকে দুর্ভেদ্য এক নগরীর মতো তৈরী করব| তুমি লৌহ-স্তম্ভের মতো কঠিন, পিতলের দেওয়ালের মতো নিরেট| এই যিহূদা দেশের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তুমি সক্ষম হবে| সে য়েই হোক, রাজা অথবা নেতা, যাজক অথবা সাধারণ মানুষ, সবার চাইতে তুমিই হবে সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিধর| 19 সারা দেশের মানুষ তোমার সঙ্গে লড়াই করলেও, তোমাকে কেউ হারাতে পারবে না| কারণ আমি সব সময় তোমার সঙ্গে আছি| আমিই তোমাকে রক্ষা করব|” এই হল প্রভুর বার্তা|

যেরেমিয়া 2

1 প্রভুর বার্তা পৌঁছেছিল য়িরমিযর কাছে| প্রভুর বার্তা ছিল: 2 “যিরমিয় যাও এবং জেরুশালেমের লোকদের সঙ্গে কথা বল| তাদের বলো:“‘যখন তোমরা একটি নবীন জাতি ছিলে, তখন তোমরা আমার প্রতি খুব বিশ্বস্ত ছিলে| আমাকে অনুসরণ করতে নতুন কনের (প্রেমের) মতো| মরুভূমির মাঝেও তোমরা আমাকে অনুসরণ করেছ| অনুসরণ করে গিয়েছো মৃত্তিকার মধ্যে দিয়ে- অথচ য়ে মৃত্তিকায কখনো চাষ করা হয়নি| 3 ইস্রায়েলের লোকরা ছিল প্রভুর পবিত্র উপহার| তারা ছিল প্রথম ফল য়েগুলি ঈশ্বরের দ্বারা ফলাবার কথা ছিল| যারা তাদের ক্ষতি করতে চাইত, তারা দোষী সাব্যস্ত হত| এই সব দুষ্ট লোকদের জীবনে খারাপ ঘটনাসমূহ ঘটেছিল|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| 4 হে যাকোবের পরিবার, ইস্রায়েল পরিবারের সকল গোষ্ঠী প্রভুর বার্তা শোন| 5 প্রভু যা বললেন তা হল, “তোমরা কি মনে করো য়ে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষেদের প্রতি সুবিচার করি নি? সেই জন্যই কি তারা আমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে? তোমাদের পূর্বপুরুষরা মূল্যহীন মূর্ত্তিসমূহের পূজা করেছিল এবং নিজেরাই মূল্যহীন হয়ে পড়েছিল| 6 তোমাদের পূর্বপুরুষরা বলেনি য়ে, ‘তিনি কোথায় যিনি আমাদের শুষ্ক পাথুরে জমির মধ্য দিয়ে, অন্ধকার বন্ধ্যা জমির মধ্য দিয়ে এবং বিপজ্জনক রাস্তার মধ্য দিয়ে মরুভূমি পার করে এনেছিলেন?’ 7 প্রভু বললেন, “আমিই সেই য়ে তোমাদের এই ভালো উর্বর দেশে নিয়ে এসেছিলাম যাতে তোমরা এর ফল ও শস্যসমূহ খেতে পাও এবং খাদ্য জোগাতে পারো| তোমরা আমার মাটিকে ‘নোংরা’ করে দিলে| আমি তোমাদের একটি ভালো জমি দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা তাকে একটি খারাপ জায়গায় পরিণত করে দিলে| 8 “যাজকরা প্রশ্ন করেনি, ‘কোথায় সেই প্রভু?’ যারা বিধিটি জানত তারা আমাকে জানতে চায়নি| ইস্রায়েলের নেতারা আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল| ভাব্বাদীগণ বাল মূর্ত্তির নাম নিয়ে ভাব্বাণী করেছিল| তারা মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর পূজা করেছিল| তারা মূর্ত্তির অজুহাত দেখিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের পূজায বসিযেছে| ইস্রায়েলবাসী ভেবেছিল এই মূর্ত্তিই তাদের জন্য ফলনশীল জমি তৈরী করেছে| তারা বিশ্বাস করেছিল, মূর্ত্তিই বুঝি ঝড়, বৃষ্টি এনে দিয়েছে|” 9 প্রভু বললেন, “তাই আমি তোমাদের আবার অভিযুক্ত করছি| অভিযুক্ত করব তোমাদের পুত্র পৌত্রগণদেরও| 10 যাও, সমুদ্রের ওপারে কিত্তীযদের দ্বীপে| কোন এক জনকে কেদরের দেশে পাঠাও| দেখ আর কেউ কখনও এরকম করেছে কিনা| সেখানে দেখো কেউ তোমাদের মতো এই কাজ করছে কিনা| 11 কোনও দেশ কি তাদের পুরানো দেবতাকে ছুঁড়ে ফেলে নতুন দেবতার উপাসনা করেছে? কিন্তু তাদের সেই দেবতারা সত্যিকারের দেবতা নয়| কিন্তু আমার লোকরা তাদের মহিমাময ঈশ্বরের পরিবর্তে মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর পূজা শুরু করেছিল| 12 “হে আকাশমণ্ডল, যা সব ঘটেছিল তাতে আশ্চর্য়্য় হও! প্রচণ্ড ভয়ে কাঁপতে থাকো!” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 13 “আমার দেশের লোকরা দুটি ভুল কাজ করেছে| প্রথমতঃ যদিও আমি একটি জীবন্ত জলের ঝর্ণা তবু তারা আমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে| আমিই জলের অস্তিত্ব| দ্বিতীয়তঃ তারা নিজেদের জন্য কূপ খনন করেছে| (তারা ভিন্ন দেবতার উপর আস্থা রেখেছে|) কিন্তু সেগুলি ভাঙ্গা কূপ| জলাধার হতে পারে না| 14 “ইস্রায়েলবাসীরা কি দাস হয়ে গিয়েছে? তারা কি সেই লোকের মত হয়ে গেছে য়ে দাস হয়েই জন্মেছিল? লোকরা কেন ইস্রায়েলীয়দের ধনসম্পদ নিয়ে নিয়েছিল? 15 সিংহ শাবকরা (শএুরা) ইস্রায়েলের প্রতি গর্জন করে উঠেছিল| তারা তার প্রতি হুংকার করেছে| তারা ইস্রায়েল দেশটিকে ধ্বংস করেছে| এমনকি শহরগুলিকে পোড়ানো হয়েছিল এবং সেখানে কোন মানুষ পড়ে ছিল না| 16 মিশরের দুটি শহর নোফের এবং তফনহেষের লোকরাও তোমাদের মাথাকে গুঁড়িযে দিয়েছে| 17 এই ক্ষতির কারণ তোমরা নিজেরাই| কেননা প্রভু তোমার ঈশ্বর যখন তোমাদের সঠিক পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তোমরা নিজেরাই তাঁকে ত্যাগ করে দূরে সরে গিয়েছ| 18 যিহূদার লোকরা, এবার ভাবো: ওটি কি তোমাদের মিশরে য়েতে সাহায্য করেছিল? ওটি কি তোমাদের সাহায্য করেছিল নীল নদের জল পান করতে? না! সেটি কি তোমাদের অশূরে য়েতে সাহায্য করেছিল? ওটি কি তোমাদের সাহায্য করেছিল ফরাত্‌ নদীর জল পান করতে? না! 19 না! তোমরা খারাপ কাজ করেছিলে এবং সেই জন্য তোমাদের শাস্তি পেতে হবে| তোমাদের বিক্সমূহ আসবে এবং সেই সংকট তোমাদের উচিত্‌ শিক্ষা দেবে| তোমরা একবার ভেবে দেখো, তাহলেই বুঝতে পারবে ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরিণাম কি মারাত্মক| আমাকে ভয় না পাওয়া এবং সম্মান না করা নিতান্তই মুর্খামি|” এই ছিল প্রভু সর্বশক্তিমানের বার্তা| 20 “যিহূদা, অনেককাল আগে তুমি তোমার জোযাল ভেঙ্গেছিলে| তুমি আমাকে তোমায় নিয়ন্ত্রণ করতে অস্বীকার করেছিলে| তুমি আমাকে বলেছিলে, ‘আমি তোমার অনুগামী নই|’ সেই সময় থেকে, প্রতিটি পর্বতের চূড়ায় এবং প্রতিটি গাছের নীচে তুমি বেশ্যা বৃত্তিতে লিপ্ত ছিলে| 21 যিহূদা, আমি তোমাকে বিশেষ দ্রাক্ষা গাছ হিসেবে বপন করেছিলাম| তোমার বীজে তো কোন দোষ ছিল না| তাহলে কি করে তুমি একটি ভিন্ন জাতের দ্রাক্ষা কুঞ্জে পরিণত হলে, য়েটি শুধুই বাজে দ্রাক্ষা ধারণ করে? 22 তুমি যদি বার বার সাবান দিয়ে নিজেকে ধুয়ে ফেল, তবুও আমি তোমার দোষ দেখতে সক্ষম হবো|” এই ছিল প্রভু ঈশ্বরের বার্তা| 23 “যিহূদা, কি করে তুমি বলতে পারলে, ‘আমি অশুচি নই| কিন্তু তুমি কি বাল মূর্ত্তির পেছনে ছুটে বেড়াও নি?’ একবার ভাবো এই উপত্যকায় তুমি আর কি কি করেছিলে| তুমি এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় দৌড়ে বেড়ানো একটি স্ত্রী-উটের মত| 24 তুমি একটি বন্য গর্দ্দভীর মতো য়ে মরুভূমিতে বাস করে| কামাবেশে সে যখন বাতাসের গন্ধ শোঁকে তখন কে তাকে থামাতে পারে? সমস্ত পুরুষ যারা তাকে চায়, তাদের নিজেদের ক্লান্ত করবার দরকার নেই কারণ কামএযিার সময় তারা তাকে সহজেই খুঁজে পাবে| 25 যিহূদা মূর্ত্তির পিছনে ছোটা বন্ধ করো| ঐ দেবতাদের জন্য পিপাসিত হওয়া বন্ধ করো| কিন্তু তুমি বললে, ‘আমি ফিরতে পারব না| আমি ঐ দেবতাদের ভালোবাসি| আমি ওদেরই পূজা করতে চাই|’ 26 “এক জন চোর চুরি করবার সময় মানুষের হাতে ধরা পড়লে য়েমন লজ্জা পায়, তেমনি ইস্রায়েলীয়রা লজ্জিত, ইস্রায়েলের রাজারা, যাজকরা এবং ভাব্বাদীরাও লজ্জিত| 27 বস্তুত, তারা একটি কাঠের টুকরোকে বলে, ‘তুমি আমার পিতা!’ তারা একটি পাথরকে বলে, ‘তুমি আমাকে জন্ম দিয়েছ|’ তারা আমার দিকে তাকায না| তারা আমার দিকে তাদের পেছন ফিরিয়েছে| কিন্তু বিপদে পড়লে এই যিহূদার লোকরাই লজ্জিত হয়ে আমাকে বলবে, ‘এসো, আমাদের উদ্ধার করো|’ 28 দেখা যাক, তোমাদের তৈরী করা মূর্ত্তিরা এসে বিপদ থেকে তোমাদের উদ্ধার করতে পারে কি না? যিহূদা তোমাদের যত শহর, তত দেবতা| দেখি তারা কি ভাবে তোমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে| 29 “কেন আমার সঙ্গে তর্ক করছো? তোমরা সবাই আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছো|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 30 “আমি তোমাদের, যিহূদার লোকদের শাস্তি দিয়েছিলাম, কিন্তু সেটা সাহায্য করেনি| তোমরা কোন শিক্ষা পাও নি| য়ে সব ভাব্বাদীরা তোমাদের কাছে এসেছিল তাদেরও তরবারি দিয়ে হত্যা করেছো| তোমরা হিংস্র সিংহের মতো ভাব্বাদীদের হত্যা করেছো|” 31 ওহে, এই প্রজন্মের লোকরা, প্রভুর বার্তা মন দিয়ে শোন! “আমি কি ইস্রায়েলীয়দের কাছে মরুভূমির মতো শুষ্ক ছিলাম? আমি কি তাদের কাছে শুধুই অন্ধকার এবং বিপদের পূর্বাভাস ছিলাম? আমার লোকরা বলেছে, ‘আমরা স্বাধীনভাবে নিজেদের মতো চলতে পারি| আমরা আর তোমার কাছে ফিরে আসব না প্রভু!’ তারা একথাগুলো কি করে বলতে পারল? 32 কোন যুবতী তার গহনাকে ভুলতে পারে না| কোন কনে তার বিয়ের পোশাকের কথা ভুলে যায় না| কিন্তু আমার লোকরা আমাকে বহুবার ভুলে গিয়েছে| 33 “যিহূদা, তুমি খুব ভালো করেই জানো কভাবে প্রেমিকদের (মূর্ত্তির) পেছনে দৌড়তে হয়| তুমি কুকর্ম করতে শিখে গিয়েছিলে| 34 তাই তোমার হাতে নিরীহ গরীব মানুষের রক্তের দাগ| সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করেও তোমার শান্তি হয় নি| তুমি তাদের তোমার বাড়ীতে চুরি করতে দেখনি| তুমি তাদের বিনা কারণে মেরে ফেলেছিলে| 35 (এত কিছুর পরও) তুমি কিন্তু বলছো, ‘আমি নির্দোষ| ঈশ্বর আমার প্রতি রুদ্ধ নন|’ তাই আমিও তোমাকে মিথ্য়ে বলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করলাম| কেননা তুমি বলছো, ‘আমি কোন অন্যায় করি নি|’ 36 তুমি সহজেই নিজের মন বদলাও| অশূর তোমায় হতাশ করেছিল বলে তুমি অশূরকে ত্যাগ করেছিলে| এবং তুমি সাহায্যের জন্য মিশরের দিকে ঘুরেছিলে| মিশরও তোমাকে নিরাশ করবে| 37 তাই তুমি মিশরও ত্যাগ করবে| এবার তুমি লজ্জায মুখ লুকোলে| তুমি য়ে সমস্ত দেশগুলিকে বিশ্বাস করেছিলে তারা কেউই তোমাকে জেতার জন্য সাহায্য করতে পারেনি| কারণ প্রভু সেই দেশগুলিকে বাতিল করেছিলেন|

যেরেমিয়া 3

1 “একজন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে যাওয়ার পর, সেই স্ত্রী যদি অন্য এক পুরুষের সঙ্গে পুনরায় ঘর বাঁধে, তাহলে কি সেই স্বামী আবার তার প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে ফিরে যায়? না| কিন্তু সে যদি ঐ মহিলাটির কাছে আবার ফিরে যায় তাহলে সেই দেশ অপবিত্র হয়ে যাবে| যিহূদা তুমিও পতিতার মতো| তুমি এত জন প্রেমিকদের (মূর্ত্তির) সঙ্গে ছিলে, তুমি কি এখন আমার কাছে ফিরে আসবে?” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 2 “যিহূদা বৃক্ষ শূন্য পর্বতশৃঙ্গগুলোর দিকে তাকাও| সেখানে এমন কোন শৃঙ্গ আছে কি যেখানে তুমি তোমার প্রেমিকদের (মূর্ত্তির) সঙ্গে য়ৌনকর্মে লিপ্ত হও নি? তোমার সতীত্ব লঙিঘত হয়নি? আরব্বাসী য়েমন মরুভূমিতে অপেক্ষায বসে থাকে তেমন তুমিও প্রত্যেকটি রাস্তায় অপেক্ষা করেছো| তোমার এই সব প্রিয প্রেমিকদের জন্য| তুমিই অসংখ্য খারাপ কাজ আর ব্যভিচারের মাধ্যমে দেশের মাটিকে অপবিত্র করেছ| তুমি আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছো| 3 তোমার পাপের কারণে দেশ জুড়ে খরা দেখা দিয়েছে এবং বসন্তকালীন বৃষ্টি আসেনি| তবুও তোমার লজ্জাহীন মুখে পতিতার কামুক দৃষ্টি| কৃতকার্য়ের জন্য তোমার কোনও লজ্জা নেই| অনুশোচনা নেই| 4 কিন্তু তুমি আমাকে ‘পিতা’ বলে ডাকছো| তুমি বলছ, ‘ছোটবেলা থেকেই তুমি আমার বন্ধু|’ 5 তুমি এও বলেছিলে য়ে, ‘ঈশ্বর আমার প্রতি সব সময় রুদ্ধ হয়ে থাকবেন না| ঈশ্বরের রোধ চিরকাল থাকে না|’ “যিহূদা, তুমি একথা বললেও যত রকম শযতানি কাজ করা সম্ভব তুমি করেছ|” 6 যিহূদার রাজা য়োশিযের সময়ে প্রভু আমার সঙ্গে কথা বললেন| প্রভু বললেন, “যিরমিয়, ইস্রায়েল য়ে সব খারাপ কাজ করেছে তা কি তুমি দেখেছ? তুমি কি দেখেছ সে আমার প্রতি কতটা অবিশ্বাসী ছিল? প্রত্যেকটি মূর্ত্তির সঙ্গে সে ব্যভিচারে মেতে উঠেছিল| ব্যভিচারের সাক্ষী রয়েছে প্রতিটি পর্বতশৃঙ্গ, প্রতিটি গাছের ছায়া| 7 আমি নিজের মনে ভেবেছিলাম, ‘এইবারে নিশ্চয়ই ইস্রায়েল তার সমস্ত খারাপ কাজ করে আমার কাছে ফিরে আসবে|’ কিন্তু সে ফিরে আসেনি| 8 ইস্রায়েলের মতোই বিশ্বাসঘাতক তার বোন যিহূদাও স্বচক্ষে দেখেছিল তার দিদির ব্যভিচার| ইস্রায়েলের এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আমি তাকে ত্যাগ করেছিলাম| ইস্রায়েলের এই দশা দেখে তার বিশ্বাসঘাতক বোন যিহূদা কিন্তু এতটুকু শঙ্কিত হয়নি| আমার বিধানে যিহূদা ভীত হবার পরিবর্তে সে দিদির প্রদর্শিত পথেই চলতে শুরু করেছিল| সেও অবশেষে পতিতার মতো আচরণ শুরু করল| 9 ব্যভিচারিতায লিপ্ত হয়ে যিহূদাও তার দেশকে কলঙ্কিত করল| সে কাঠের এবং পাথরের মূর্ত্তিসমূহ পূজো করে ব্যভিচার করেছিল| 10 যিহূদা, ইস্রায়েলের বিশ্বাসঘাতক বোন আমার কাছে কখনোই সর্বান্তঃকরণে ফিরে আসেনি| শুধু বারবার ফিরে আসার ছল করেছিল|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 11 প্রভু আমাকে বললেন, “ইস্রায়েল আমার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না| কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতার প্রশ্োন যিহূদার চেয়ে তার অজুহাত অপেক্ষাকৃত উত্কৃষ্ট ছিল| 12 যিরমিয় উত্তর দিকে তাকিযে দেখ এবং এই বার্তা বল:‘ওহে বিশ্বাসহীন ইস্রায়েলবাসী, তোমরা ফিরে এসো|’ এই ছিল প্রভুর বার্তা| ‘আমি তোমাদের প্রতি আর কঠোর হবো না| আমি দযার সাগর|’ ‘আমি চিরকাল তোমাদের প্রতি রুদ্ধ থাকব না| এই ছিল প্রভুর বার্তা|’ 13 তোমাদের পাপকে তোমাদের উপলব্দি করা এবং স্বীকার করা উচিত্‌| তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলে- সেটাই হল তোমাদের পাপ| তোমরা প্রতিটি গাছের নীচে অন্য জাতিসমূহের মূর্ত্তিদের পূজো করেছিলে| তোমরা আমাকে মান্য করোনি| তাদের প্রতিষ্ঠা করেছিলে প্রতিটি গাছের তলায়|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| 14 “হে লোকরা, তোমরা বিশ্বস্ত নও| কিন্তু ফিরে এসো আমার কাছে!” এই ছিল প্রভুর বার্তা|“আমি হলাম তোমাদের প্রভু| এদেশের প্রত্যেকটি শহর থেকে এক জন এবং প্রত্যেকটি পরিবার থেকে দুজনকে আমি সিয়োনে নিয়ে আসব| 15 তারপর আমি তোমাদের নতুন শাসকগোষ্ঠী নির্বাচন করে দেব| সেই শাসকবৃন্দ আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে| তারা জ্ঞান এবং বিবেচনার সঙ্গে তোমাদের নেতৃত্ব দেবে| 16 সে সময় তোমরা সংখ্যায় বাড়বে| অনেকেই তখন সে দেশে বাস করবে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা|“কেউ সেই সময় আর বলতে পারবে না য়ে আমার মনে পড়ে সেইসব দিনের কথা যখন আমাদের কাছে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক ছিল|’ এমন কি তারা আর সেই পবিত্র সিন্দুক নিয়ে ভাববেও না| তারা সেই সিন্দুককে মনেও রাখতে পারবে না| তারা সেটা হারিযেও ফেলবে না| তারা আর কখনও অন্য একটি পবিত্র সিন্দুক তৈরী করবে না| 17 সেই সময় এই জেরুশালেম শহর ‘প্রভুর সিংহাসন’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠবে| এবং প্রভুর নামকে সম্মান জানাতে সমস্ত জাতি একত্রে জেরুশালেমে এগিয়ে আসবে| তারা আর তাদের উদ্ধত, জেদী এবং শযতান হৃদয়কে অনুসরণ করবে না| 18 সেই দিনগুলিতে যিহূদা এবং ইস্রায়েলের পরিবারবর্গ একসঙ্গে মিলিত হবে| এবং তারা একসঙ্গে উত্তর দিকের দেশ থেকে, য়ে দেশ আমি অধিকারের জন্য তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম সে দেশে আসবে| 19 “আমি, প্রভু মনে মনে বললাম, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে নিজের সন্তানের মতো ব্যবহার করতে চাই| আমি তোমাদের একটা মনোরম দেশ উপহার দিতে চাই, য়েটা অন্য সকল দেশের চেয়ে সেরা|’ আমি ভেবেছিলাম তোমরা আমাকে ‘পিতা’ বলে ডাকবে| আমাকেই অনুসরণ করবে| 20 কিন্তু তোমরা একটি নারীর মতো য়ে তার স্বামীর প্রতি অবিশ্বস্ত| ইস্রায়েলের পরিবারবর্গ, তোমরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকলে না|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 21 তোমরা বন্ধ্যা পাহাড়গুলি থেকে কান্না শুনতে পাবে| ইস্রায়েলীয়রা কাঁদছে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে| তারা শযতান হয়ে উঠেছিল| তারা ভুলে গিয়েছিল তাদের প্রভু ঈশ্বরকে| 22 প্রভু আরও বললেন, “হে ইস্রায়েলীয়রা, তোমরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত নও| তবু তোমরা আমার কাছে ফিরে এসো আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব|” ইস্রায়েলীয়দের বলা উচিত্‌, “তুমিই প্রভু আমাদের ঈশ্বর| আমাদের তোমার কাছেই ফিরে আসা উচিত্‌| 23 পাহাড়ের উপর মূর্ত্তিপূজো এবং উচ্ছৃঙ্খল অনুষ্ঠান করে আমরা ভুল করেছিলাম| ইস্রায়েলের মুক্তি প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে অবশ্যই আসে| 24 ঐ বাল মূর্ত্তি আমাদের পূর্বপুরুষদের সমস্ত ধনসম্পদ খেযে ফেলেছে| সে তাঁদের মেষ, গবাদিপশু, পুত্র ও কন্যাদের খেযে ফেলেছে| 25 লজ্জায আমাদের মরে য়েতে ইচ্ছে করছে| আমাদের লজ্জা আমাদের কম্বলের মত ঢেকে ফেলুক| আমাদের সর্বশক্তিমান প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করে| আমাদের পিতৃপুরুষদের মতো আমরাও পাপ করেছি| ছোটবেলা থেকেই আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে অমান্য করে এসেছি|”

যেরেমিয়া 4

1 এই বার্তা প্রভুর কাছ থেকে এলো| “ইস্রায়েল, যদি তুমি ফিরতে চাও তাহলে আমার কাছে ফিরে এসো| ভ্রান্ত দেবতাদের মূর্ত্তিগুলো ছুঁড়ে ফেলে দাও| আমার কাছ থেকে চ্যুত হয়ে বিপথগামী হযো না| 2 যদি কেবলমাত্র এগুলি কর তাহলেই কোন প্রতিজ্ঞা করবার সময় তোমরা আমার নাম ব্যবহার করতে পারবে| প্রতিশ্রুতি গ্রহণের সময় বলতে পারবে, ‘প্রভুর নিশ্চিত অস্তিত্বের দিব্য|’ এই কথাগুলো তোমরা সত্য, উচিত্‌ এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে| তাহলে জাতিসমূহ তাঁর আশীর্বাদ পাবে| তারপর তারা তাঁকে প্রশংসা করতে পারবে| তোমার দেশবাসী প্রভুর কার্য়কলাপ ঘিরে গর্ব অনুভব করবে|” 3 যিহূদা এবং জেরুশালেমের মানুষকে এই কথাগুলি প্রভু বলেছিলেন:“তোমাদের জমিগুলি চষা হয়নি| জমিতে লাঙল দাও! নিজেদের পতিত জমি চাষ করো| বীজ বোনো সেই জমিতে| কাঁটাবনে বীজ বপন করো না| 4 প্রভুর লোক হয়ে যাও! তোমাদের হৃদয়গুলোকে পরিবর্তন করো| আত্মাকে শুদ্ধ করো| হে যিহূদা ও জেরুশালেমের মানুষ, তোমরা যদি নিজেদের না শোধরাও তাহলে আমি রুদ্ধ হয়ে যাবো| আমার রোধ আগুনের মতো দ্রুত গতিতে তোমাদের সবাইকে বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেবে| সেই আগুন নেভানোর ক্ষমতা কারো হবে না| তোমাদের অসত্‌ কার্য়কলাপের জন্যই এইগুলো হবে|” 5 “যিহূদার লোকদের এই খবর বল:জেরুশালেম শহরের প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে বল, ‘দেশের সর্বত্র শিঙা বাজাও|’ জোরে চিত্কার কর: ‘এস, আমরা একত্র হই এবং প্রতিরক্ষার জন্য দূর্গবিশিষ্ট শহরগুলিতে যাই|’ 6 সিয়োনের দিকে নিশান পতাকা ওড়াও| বাঁচতে চাও তো তাড়াতাড়ি করো| অপেক্ষা কোরো না| যা বলছি তাই কর কারণ আমি উত্তর দিক থেকে বিপর্য়য বয়ে আনছি| আমি এক ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটাবো|” 7 এক “সিংহ” তার গুহা থেকে বেরিয়ে এসেছে| দেশসমূহের এক বিনাশকর্তা তার যাত্রা শুরু করেছে| তোমাদের দেশকে ধ্বংস করতে সে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে| ভয়ঙ্কর বিপর্য়য ঘনিয়ে আসছে এই দেশের ওপর, কোন মানুষ জীবিত থাকবে না, সব কটি শহর ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাবে| 8 সুতরাং শোকের পোশাক পরে তোমরা চিত্কার করে কাঁদো! কারণ প্রভু আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন|” 9 প্রভু বললেন, “যখন এগুলি ঘটবে, তখন রাজা এবং তাঁর পারিষদরা তাদের সাহস হারিযে ফেলবে, যাজকরা দারুণ ভয় পেয়ে যাবেন এবং ভাব্বাদীরা য়ত্‌পরোনাস্তি বিহবল হবেন|” 10 তখন আমি, যিরমিয় বললাম, “হে প্রভু আমার মনিব, আপনি অবশ্যই যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের এই বলে প্রতারণা করেছেন: ‘তোমরা শান্তি পাবে|’ কিন্তু এখন তরবারিটি তাদের গলার দিকে লক্ষ্য করে রয়েছে|” 11 একই সঙ্গে সেই সময় যিহূদা এবং জেরুশালেম বাসীদের জন্য এই বার্তা প্রেরিত হবে: “হে আমার লোক, অনাবৃত পর্বতশৃঙ্গ থেকে তপ্ত বাতাস বয়ে আসবে| এই ঝড় ছুটে আসবে মরুভূমি থেকে| এ ঝড় কোন মৃদু বাতাস নয়, যার দ্বারা কৃষকরা তাদের শস্যকণা ভূমি থেকে ঝেড়ে আলাদা করে নেয| 12 এই ঝড় অনেক বেশী শক্তিশালী এবং এটা আমার কাছ থেকেই আসে| এখন আমি আমার বিচারের রায় ঘোষণা করব যিহূদাবাসীদের বিরুদ্ধে|” 13 দেখো| মেঘের মতো শএু নড়ে উঠছে| তার রথসমূহকে দেখাচ্ছে য়েন ভযাবহ ঝড়| তার ঘোড়াগুলো ঈগলদের চাইতেও দ্রুতগামী| এটি আমাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক| আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো| 14 হে জেরুশালেমবাসী, কু-মতলব ত্যাগ করো| হৃদয় থেকে সমস্ত শযতানি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দাও| আত্মাকে শুদ্ধ করলে তবেই তোমরা রক্ষা পাবে| 15 ডান দেশেরসম্প্রদাযের বার্তাবাহকের কথা শোন| ইফ্রযিমের পর্বতমালা থেকে কেউ দুর্ঘটনার খবর নিয়ে আসছে| 16 “সারা জেরুশালেমবাসীকে সেই খবর জানিয়ে দাও| বহুদূরের দেশ থেকে শএুরা যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছে| ঐ শএুরা চিত্কার করে যিহূদার শহরগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ধ্বনি দিচ্ছে| 17 জেরুশালেমকে তারা সম্পূর্ণরূপে ঘিরে ফেলেছে| য়েমন একটি মাঠে লোকরা লক্ষ্য রাখে| যিহূদা তুমি আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিলে তাই শএু পক্ষ তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 18 “তোমার জীবনযাত্রা এবং কার্য়কলাপই এই সমস্যা সৃষ্টি করেছে| তোমার শযতানি তোমার জীবনকে খুব কঠোর করেছে| এই মূহুর্তে তোমার শযতানিই তোমার যন্ত্রণার কারণ| য়েটা তোমার হৃদয়ের গভীরে আঘাত করছে|” 19 হায! দুঃখ, যন্ত্রণা এবং চিন্তায আমি কুঁকড়ে যাচ্ছি, হায! কি দুশ্চিন্তা! কি ভয়| আমি অন্তরে ব্যথিত| আমার হৃদয় ধুক্ ধুক্ করছে| না, আমি আর চুপ করে থাকতে পারছি না| কারণ আমি শএু পক্ষের শিঙা শুনেছি| ঐ শিঙা ধ্বনি যুদ্ধের আহবান জানাচ্ছে| 20 বিপর্য়য বিপর্য়যকে অনুসরণ করে| এই পুরো দেশটাই ধ্বংস হয়ে গেছে| হঠাত্‌ই আমার তাঁবু ধ্বংস হয়ে গেল| আমার পর্দাগুলো ছিঁড়ে গেছে| 21 প্রভু, আর কতদিন এই যুদ্ধের পতাকা আমাকে দেখতে হবে? কতদিন আমি আর এই যুদ্ধের দামামা শুনব? 22 ঈশ্বর বললেন, “আমার লোকরা হল মূর্খ| তারা আমাকে জানে না| তারা হল নির্বোধ বালক| তারা বুঝতে পারছে না| তাদের বিবেচনা শক্তি নেই| তারা শযতানিতে পটু কিন্তু তারা জানে না কি করে ভাল কিছু করতে হয়|” 23 আমি পৃথিবীর দিকে তাকালাম| কিন্তু দেখলাম পৃথিবী শূন্য| পৃথিবীতে কিছুই ছিল না| আমি আকাশের দিকে তাকালাম| দেখলাম সমস্ত আলো নিভে গিয়েছে| 24 আমি পর্বতের দিকে তাকালাম| দেখলাম পর্বত কাঁপছে| সমস্ত পাহাড়গুলি ভয়ে কাঁপছে| 25 আমি দেখলাম কিন্তু কোন মানুষ খুঁজে পেলাম না| আকাশের সমস্ত পাখি মূহুর্তে উধাও হয়ে গিয়েছে| 26 আমি ভালো দেশের দিকে তাকালাম এবং দেখলাম তা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে| ঐ দেশে সমস্ত শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল| প্রভুর ভয়ঙ্কর রোধই এই দশা| 27 প্রভু এইগুলি বললেন: “এই পুরো দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে| কিন্তু আমি সম্পূর্ণভাবে তা ধ্বংস করব না| 28 জীবিত লোকরা আর্তনাদ করে মৃত লোকেদের জন্য কাঁদবে| আকাশ এমশঃ কালো হয়ে উঠবে| আমি যা বলব তার নড়চড় হবে না| আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলাবো না|” 29 যিহূদার লোকরা শুনতে পাবে অশ্বারোহী ও তীরন্দাজ সৈন্যবাহিনীর হুঙ্কার এবং ভয়ে তারা দৌড়ে পালাবে| কেউ লুকোবে গুহার ভেতরে, কেউ ঝোপঝাড়ে, কেউ বা পাথরের আড়ালে| যিহূদার সমস্ত শহরগুলি জনমানবহীন হয়ে যাবে| সেখানে কেউ বাঁচবে না| 30 যিহূদা তুমি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছ| তাহলে, এখন তুমি কি করছ? ঐ সমস্ত প্রেমিকদের জন্য তুমি তোমার সব চেয়ে ভালো পোশাক পরেছো, নিজেকে অলঙ্কারে সাজিযেছো, চোখে দিয়েছ কাজল, সুন্দর দেখাবার জন্য নিজেকে সাজিযেছো| কিন্তু তাতে কোন লাভ নেই কারণ তোমার প্রেমিকরা এখন তোমাকে ঘৃণা করে| তারাই তোমাকে মারতে চেষ্টা করছে| 31 এক জন মহিলা প্রসব বেদনায় য়েমন করে তেমনি একটি কান্না আমি শুনতে পাচ্ছি| এই কান্না একজন মহিলার তার প্রথম সন্তান প্রসব করবার কান্নার মত| এই মহিলা হল সিয়োন কন্যা| সে হাত জড়ো করে প্রার্থণার ভঙ্গিতে বলছে, “ওঃ, আমি অজ্ঞান হয়ে যাব! ঘাতকরা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে!”

যেরেমিয়া 5

1 প্রভু বললেন, “জেরুশালেমের রাস্তায় হাঁটো| শহরের সার্বজনীন প্রাঙ্গণগুলিতে খুঁজে দেখো| যদি একজনও সত্‌ ও ভাল মানুষের সন্ধান পাও য়ে অন্তত সত্যের খোঁজ করছে, যদি এরকম এক জনও মানুষ থাকে তাহলে জেরুশালেমকে আমি ক্ষমা করে দেব| 2 লোকে শুধু এই বলে প্রতিশ্রুতি নেয: ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত তার দিব্য, কিন্তু তারা আসলে তা বলে না|” 3 প্রভু, আমি জানি আপনি চান মানুষ আপনার অনুগত থাকুক| আপনি যিহূদাবাসীকে আঘাত করলেন| কিন্তু তারা কোন বেদনা অনুভব করে নি| আপনি তাদের ধ্বংস করলেন| কিন্তু তা থেকে তারা কোন শিক্ষা নেযনি| তারা ভীষণ একগুঁযে, জেদী| খারাপ কাজ করেছিল বলে তারা কোন রকম দুঃখপ্রকাশ পর্য়ন্ত করে নি| 4 কিন্তু আমি (যিরমিয়) আমাকে মনে মনে বললাম, “তারা এত দরিদ্র এবং নির্বোধ য়ে তারা প্রভুর জীবনযাত্রা শেখে নি| ঈশ্বরের শিক্ষা বিষয়েও তারা কিছু জানে না| 5 সুতরাং আমি যিহূদার নেতৃবৃন্দের কাছে যাব এবং তাদের সঙ্গে কথা বলব| নেতারা নিশ্চয়ই প্রভুর আচার বিধি জানবে| আমি নিশ্চিত য়ে তারা তাদের ঈশ্বরের বিধিসমূহ জানে|” কিন্তু নেতারা সব একত্র হল এবং প্রভুর সেবার কাজ থেকে দূরে সরে গেল| 6 তারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| তাই বন থেকে এক সিংহ এসে তাদের আক্রমণ করবে| মরুভূমি থেকে এক নেকড়ে বাঘ এসে সবাইকে মেরে ফেলবে| তাদের শহরের কাছে এক চিতা লুকিয়ে আছে| শহরের বাইরে কেউ বেরলেই তাকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে খাবে| যিহূদার লোকরা বার বার পাপ করার ফলেই এগুলি ঘটবে| প্রভু বার বার সতর্ক করে কোন ফল পান নি| প্রভুর কাছ থেকে তারা বার বারই দূরে থেকেছে| 7 ঈশ্বর বললেন, “হে যিহূদা, আমাকে একটি সঠিক কারণ দেখাও যার জন্য আমি তোমাদের ক্ষমা করব| তোমার ছেলেমেযেরা আমাকে ত্যাগ করে মূর্ত্তির কাছে প্রতিশ্রুতি নিয়েছে| অথচ তোমার সন্তানদের আমি চাহিদা মতো সব কিছুই দিয়েছিলাম| তবু ওরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকেনি| ওরা ব্যভিচারিনীদের সঙ্গে অনেক বেশী সময় নষ্ট করেছে| 8 তারা ভালোভাবে খাওয়া-দাওযা করা ঘোড়ার মতো, যারা কামাবেশের জন্য তৈরী| ওরা সেই সমস্ত ঘোড়ার মতো যারা প্রতিবেশীদের স্ত্রীকে ঘরে ডেকে আনে| 9 “তাহলে আমি কি ঐ সব কাজের জন্য যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব না?” এই হল প্রভুর বার্তা| “হ্যাঁ, তুমি জানো য়ে দেশ এই ভাবে বেঁচে থাকে তাকে আমার শাস্তি দিতে হবে| আমি তাদের য়োগ্য শাস্তিই দেব| 10 “যাও যিহূদার সমস্ত দ্রাক্ষা গাছ কেটে দাও| (কিন্তু তাদের কখনও পুরোপুরি ধ্বংস কর না|) কেটে দাও দ্রাক্ষা গাছগুলির শাখাপ্রশাখা| কারণ এই শাখাপ্রশাখা প্রভুর নয়| 11 যিহূদা এবং ইস্রায়েলের পরিবারগুলি আমার সঙ্গে প্রতি ভাবেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 12 “ঐ দেশবাসীরা প্রভুর বিরুদ্ধে মিথ্য়ে প্রচার করেছে| তারা বলেছে, প্রভু আমাদের কিছুই করতে পারবে না| আমাদের আক্রমণ করতে আসছে এমন কোন সৈন্য আমরা কখনও দেখব না| কোনদিন অনাহারে মারাও যাব না|’ 13 “ভ্রান্ত ভাব্বাদীরা হল একটি ফাঁকা বাতাস| ঈশ্বরের বাক্য তাদের মধ্যে নেই| তাদেরও কপালে দুর্ভোগ ঘটবে|” 14 প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেছেন: “ওই লোকরা বলেছিল য়ে আমি তাদের শাস্তি দেব না| সুতরাং যিরমিয়, আমি তোমাকে য়ে শাস্তি দেব তা আগুনের মতো হবে| ঐ লোকগুলি হবে কাঠের মতো| সেই আগুন ওদের পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে|” 15 ইস্রায়েলের পরিবার, এই বার্তা হল প্রভুর, “আমি শীঘ্রই তোমাদের আক্রমণ করবার জন্য বহু দূর থেকে একটি প্রাচীন দেশকে নিয়ে আসব| বহু প্রাচীন সেই দেশ| সেই দেশের মানুষের ভাষা তোমরা বুঝতে পারবে না| 16 তাদের তীরের থলিগুলি খোলা কবরের মতো| তারা সবাই বলবান সৈন্য| 17 ঐ সব সৈন্যরা তোমাদের মজুত করা সমস্ত খাদ্য খেযে ফেলবে| ধ্বংস করবে তোমাদের সন্তানদের| তোমাদের মেষ ও রাখাল বালকদের তারা খেযে ফেলবে| দ্রাক্ষা আর ডুমুর ফল খাবে| তারা তোমাদের সমস্ত বিশ্বস্ত দুর্ভেদ্য শহরগুলিকে ধ্বংস করবে|” 18 এই হল প্রভুর বার্তা, “কিন্তু যিহূদা, যখন এই ভয়ঙ্কর দিনগুলো তোমাদের জীবনে আসবে তখন কিন্তু আমি পুরোপুরি তোমাকে ধ্বংস করব না| 19 যিরমিয়, তোমাকে যিহূদার লোকরা জিজ্ঞাসা করবে, ‘কেন প্রভু তোমার ঈশ্বর আমাদের প্রতি এমন খারাপ ব্যবহার করলেন?’ তখন তুমি (যিরমিয়) তাদের উত্তর দেবে: ‘তোমরা প্রভুর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ, তোমাদের দেশে বিদেশী মূর্ত্তিসমূহ বানিয়েছ এবং তাদের সেবা করেছ| সুতরাং তোমরা এখন বিদেশে বিদেশীদের সেবা করবে|”‘ 20 প্রভু বলেছেন, “এই বার্তা জানিয়ে দাও যিহূদা এবং যাকোবের পরিবারগোষ্ঠীকে: 21 এই হল বার্তা: ‘হে নির্বোধ মানুষ তোমাদের কোন বুদ্ধি নেই| তোমাদের চোখ আছে অথচ দেখতে পাও না! কান আছে কিন্তু শুনতে পাও না|’ 22 নিশ্চয়ই তোমরা আমাকে ভয় পাও|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| “আমার সামনে তোমাদের ভয়ে শিউরে উঠতে হবে| আমিই সেই একজন য়ে তটভূমি দিয়ে সমুদ্রকে সীমাযিত করেছে, যাতে জল তার বাইরে না বইতে পারে| জলের ঢেউ হয়তো বালুতটে আছড়ে পড়বে| কিন্তু কোন কিছুকে ধ্বংস করতে পারবে না| ঢেউ গর্জন করে বালুতটে আছড়ে পড়তে পারে| কিন্তু কখনও বালুতটের সীমানা পেরোতে পারবে না| 23 কিন্তু যিহূদার লোকরা ভীষণ একগুঁযে এবং জেদী| তারা সর্বদা আমার বিরুদ্ধে যাবার ছক কষে গিয়েছিল এবং অবশেষে আমাকে ছেড়েও গিয়েছিল| 24 যিহূদার লোকরা কখনও বলেনি, ‘প্রভু আমাদের ঈশ্বরকে ভয় পাওয়া এবং সম্মান জানানো উচিত্‌| তিনিই আমাদের শরত্‌ এবং বসন্তকালে সঠিক সময় বৃষ্টি এনে দিয়েছেন| তিনিই আমাদের ফসল তোলার সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন|’ 25 যিহূদার লোকরা, তোমরা অনেক ভুল কাজ করেছ| তাই সময় মতো বৃষ্টির দেখা পাচ্ছো না| তোমরা যথেষ্ট ফসল ফলাওনি| তোমাদের পাপসমূহ প্রভুর কাছ থেকে ভালো জিনিষ পাওয়া থেকে তোমাদের বিরত করেছে| 26 আমার দেশবাসীর মধ্যে কিছু শযতান লুকিয়ে আছে| যারা পাখী ধরবার জন্য খাঁচা তৈরী করে, তারা তাদের মত| পাখী ধরবার পরিবর্তে তারা মানুষ ধরবার ফাঁদ পাতে| 27 এই সব দুষ্ট লোকদের, যারা মিথ্যায ভরা, তাদের বাড়ীগুলো হল পাখীতে ভরা খাঁচাসমূহের মতো| তাদের মিথ্যাগুলি তাদের ধনী ও শক্তিশালী করেছে| 28 তারা তাদের অসত্‌ কর্ম দিয়ে মোটা এবং স্বাস্থ্য়বান হয়ে উঠেছে| অশুভ উপায়ে তারা হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য়বান| তাদের শযতানির কোন শেষ নেই| তারা অনাথ শিশুদের ব্যাপারে কোন মিনতি করে নি| তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নি| তারা গরীব লোকদের প্রতি কখনও সুবিচার করেনি| 29 ঐসব কাজের জন্য আমি কি যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব না?” এই ছিল প্রভুর বার্তা| “তুমি জানো এই ধরণের দেশগুলোকে আমি উচিত্‌ শাস্তি দিয়ে থাকি| আমাকে তাদের য়োগ্য শাস্তিই দিতে হবে|” 30 প্রভু বললেন, “যিহূদা দেশে একটা সাংঘাতিক এবং রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটে গিয়েছে| 31 ভাব্বাদীরা মিথ্য়ে কথা বলে এবং যাজকদের যা করার কথা তা তারা করে না| আমার লোকরা, ভাব্বাদীরা এবং যাজকরা যা করে তাই ভালোবাসে| কিন্তু হে আমার লোকসমূহ, তোমাদের যখন শাস্তি পাবার সময় আসবে তখন তোমরা কি করবে?”

যেরেমিয়া 6

1 বিন্যামীনের লোক, প্রাণে বাঁচতে চাইলে জেরুশালেম শহর ছেড়ে চলে যাও| তকোয শহরে যুদ্ধের দামামা বাজিযে দাও| সতর্কতা সূচক পতাকা ওড়াও বৈত্‌-হক্কেরম শহরে| কারণ উত্তর দিক থেকে অমঙ্গল ও ধ্বংস আসছে| ভয়ঙ্কর এক ধ্বংসলীলা তোমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে| 2 সিয়োন কুমারী, তুমি হলে সুন্দরী এবং কোমলা| 3 মেষপালকরা তাদের মেষপাল নিয়ে জেরুশালেমে এলো| তারা সেই তৃণভূমির চারিদিকে তাঁবু গাড়লো| প্রত্যেক মেষপালক তার নিজের মেষপালকে দেখাশোনা করবে| 4 “জেরুশালেমকে আক্রমণ করার জন্য তৈরী হও| উঠে পড়ো| আজ দুপুরেই আমরা এই শহরকে আক্রমণ করবো| কিন্তু ইতিমধ্যেই খানিকটা দেরি হয়ে গিয়েছে| সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে| 5 সুতরাং আজ রাতেই এই শহরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে প্রস্তুত হও! জেরুশালেমের দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভেঙ্গে গুঁড়িযে দাও|” 6 প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন: “জেরুশালেমের চারপাশের সমস্ত গাছ কেটে ফেলো| পাথর আর মাটি দিয়ে এমন স্তূপ তৈরী করো যার সাহায্যে এ শহরের প্রাচীর অতি সহজেই অতিএম করতে পারবে| এই শহরে শোষণ ছাড়া আর কিছু নেই| তাই এই শহরকে শাস্তি পেতে হবে| 7 একটি কুযো য়েমভাবে জলকে তাজা রাখে, ঠিক তেমন ভাবেই জেরুশালেম তার পাপপূর্ণ কর্মগুলিকে তাজা করে রেখেছে| আমি এই শহরের লুঠতরাজ ও হিংসার ঘটনার কথা সব সময় শুনে এসেছি| এদের যন্ত্রণা আর অসুস্থতা দেখেছি| 8 জেরুশালেম এবার সতর্ক হও| যদি তোমরা এখনও সাবধান না হও তাহলে আমি তোমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব| তোমাদের দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করব| কোন মানুষই আর ওখানে বাস করতে পারবে না|” 9 সর্বশক্তিমান প্রভু আরও বললেন: “য়ে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা এখনও তাদের দেশে পড়ে আছে তাদের একত্রিত করো| য়ে ভাবে তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেতের শেষ দ্রাক্ষাগুলিকে এক একটি করে তুলে নিয়ে একত্রিত করো ঠিক সে ভাবে তাদের একত্রিত করো| য়েমন ভাবে দ্রাক্ষা চযন করবার সময় এক জন শ্রমিক প্রতিটি দ্রাক্ষালতা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখে ঠিক সে ভাবে ইস্রায়েলীয়দের খুঁজে বের করো|” 10 আমি কাদের সঙ্গে কথা বলব? আমি কাদের সতর্ক করব? কারাই বা আমার কথা শুনবে? ইস্রায়েলীয়রা আমার সতর্কবাণী শুনতে পাচ্ছে না কারণ তাদের কান বন্ধ| তারা প্রভুর কথা শুনতে অনিচ্ছুক| তারা তাঁর বার্তা শুনতে পছন্দ করে না| 11 কিন্তু আমি (যিরমিয়) প্রভুর রোধ বহন করতে করতে ক্লান্ত| “য়ে সমস্ত শিশুরা রাস্তায় খেলা করছে তাদের ওপর বর্ষিত হোক প্রভুর এই রোধ| যুবকদের সমাবেশের ওপরেও বর্ষিত হোক এই এোধ| একটি লোক ও তার স্ত্রী, দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হবে| সমস্ত প্রাচীন লোকদের গ্রেপ্তার করা হবে| 12 তাদের ঘর-বাড়ি, জমি-জমা এমন কি তাদের স্ত্রীদের পর্য়ন্ত বিলিযে দেওয়া হোক অন্য লোকদের কাছে| আমি আমার হাত তুলে নেব এবং যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 13 “ইস্রায়েলের সমস্ত লোক অবৈধ উপায়ে আরো বেশী বেশী পয়সা চায়| সব চেয়ে নিথথেকে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, তারা সবাই ঐরকম লোভী| ভাব্বাদী থেকে যাজক প্রত্যেকে শুধু মিথ্যাচার করে গিয়েছে| 14 আমার লোকেরা কঠিন আঘাত পেয়েছে| ভাব্বাদী এবং যাজকদের উচিত্‌ ছিল তাদের সেই আঘাতের ক্ষতে মলম লাগিয়ে দেওয়া| কিন্তু তারা এই ক্ষতকে কোন গুরুত্ব দেয়নি| তারা এই ক্ষতটিকে একটি ছোট আচঁড় বলে গণ্য করেছে| ভাব্বাদীরা এবং যাজকরা বলে: ‘সব কিছু ঠিক আছে|’ কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, সব ঠিক নেই| 15 যাজক এবং ভাব্বাদীদের তাদের কৃতকার্য়ের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত্‌| কিন্তু তারা বিন্দুমাত্র লজ্জিত নয়| তারা জানে না পাপের জন্য তাদের কতখানি বিব্রত হওয়া উচিত্‌| তাই তারা অন্যদের সাথে একই শাস্তি পাবে| যখন অন্যদের শাস্তি দেব, তখন তাদেরও মাটিতে আছড়ে ফেলা হবে|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 16 পাশাপাশি প্রভু জানালেন: “রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে তাকাও| জিজ্ঞাসা করো কোনটা পুরানো রাস্তা আর কোনটা নতুন| সেই রাস্তায় পা বাড়াও য়ে রাস্তা ভাল| ভালো রাস্তায় হাঁটলে নিজের জন্য শান্তি খুঁজে পাবে| কিন্তু তোমরা বলেছিলে, ‘আমরা ভালো রাস্তায় হাঁটব না|’ 17 আমি তোমাদের ওপর নজরদারি করার জন্য এক জনকে বেছে নিয়েছি| আমি তাদের বলেছিলাম, ‘যুদ্ধের দামামা শোন|’ কিন্তু তারা বলেছিল, ‘আমরা শুনব না!’ 18 সুতরাং সমস্ত দেশগুলি শোন, এই দেশগুলির লোকরা তোমরা মন দিয়ে শোন| 19 কান পেতে শোন এই পৃথিবীর মানুষ, আমি যিহূদার লোকদের জন্য ধ্বংস আনতে যাচ্ছি| কেন? কারণ তারা শুধু খারাপ কাজের ছক কষে গিয়েছে এবং তারা আমার বার্তাকে অগ্রাহ্য করেছে| অস্বীকার করেছে আমার বিধিকে|” 20 প্রভু বললেন, “তোমরা আমার কাছে শিবা দেশ থেকে কেন ধুপ নিয়ে আসো? তোমরা কেন একটি দূর দেশ থেকে আমার কাছে মিষ্ট গন্ধী বচ নিয়ে আসো? তোমাদের হোমবলি আমাকে সুখী করে নি| তোমাদের এই উত্সর্গ আমাকে খুশি করতে পারেনি|” 21 তাই প্রভু যা বললেন তা হল এইরকম: “আমি যিহূদার লোকদের সামনে প্রতিবন্ধক প্রস্তর পেতে দেব| তারা পাথর হয়ে নীচে গড়িযে পড়বে| পিতা এবং তার পুত্ররা হোঁচট খেযে পড়বে তাদের ওপর| বন্ধু বান্ধব এবং প্রতিবেশীরা মারা যাবে|” 22 প্রভু যা বললেন তা হল: “উত্তর দিক থেকে সৈন্যদল আসছে| এই বিশাল দেশ উত্তরের বহুদূর থেকে এগিয়ে আসছে| 23 সৈন্যরা বয়ে আনছে তীরধনুক এবং বর্শা| তারা প্রচণ্ড নিষ্ঠুর| প্রবল শক্তিশালী| তারা ঘোড়ায় ছুটে আসছে সমুদ্রের মতো গর্জন করতে করতে| সিয়োন কন্যা, ঐ সেনারা তোমাকেই আক্রমণ করতে আসছে|” 24 আমরা তাদের সম্পর্কিত খবর শুনেছি| অসহায় বোধ করছি| এক জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার শিশুকে জন্ম দেবার সময়ের মত আমরা অসহায় এবং ব্যথায কাতর রয়েছি| 25 বাড়ির বাইরে বা রাস্তায় য়েও না| কেন না শএুদের হাতে উদ্ধত তরবারি এবং সব জায়গায় বিপদ অপেক্ষা করছে| 26 আমার লোকরা, শোক পোশাকগুলি পরে নাও| সদ্য একমাত্র সন্তান হারানো জননীর মতো ভগ্ন হৃদয়ে চিত্কার করে কাঁদো, কারণ আমাদের শীঘ্রই ধ্বংসকারীর মুখোমুখি হতে হবে য়ে হঠাত্‌ আমাদের ওপর এসে পড়বে| 27 “যিরমিয়, আমি (প্রভু) তোমাকে একজন ধাতু পরীক্ষক হিসেবে তৈরী করেছি| তুমি আমার লোকদের পরীক্ষা করে দেখবে| তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে লক্ষ্য রাখবে| তারা ভীষণ জেদী| 28 এবং প্রত্যেকেই আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| তারা লোকদের সম্বন্ধে বাজে কথা বলে| তারা হল মরচে পড়া লোহার মত এবং কলঙ্কিত পিতলের মতো| 29 তারা হল আগুনের মাধ্যমে রূপাকে খাঁটি করবার চেষ্টায রত শ্রমিকদের মত| হাপর খুব জোরে বাতাস সৃষ্টি করল, তাপ বৃদ্ধি পেল, কিন্তু আগুন থেকে কেবল সিসে বেরিয়ে এলো| সমস্ত কাজটাই হল একটা পণ্ডশ্রম| একই রকম ভাবে, আমার লোকদের কাছ থেকে শযতানি সরানো হল না| 30 এদের ‘বাতিল রূপো’ বলে অভিহিত করা হবে| কারণ প্রভু এদের গ্রহণ করেন নি|”

যেরেমিয়া 7

1 এ হল যিরমিয়র প্রতি প্রভুর বার্তা: 2 যাও যিরমিয়, প্রভুর গৃহের দরজায দাঁড়িয়ে এই ধর্মোপদেশ দাও:“যিহূদার লোকরা, এই সেই প্রভুর বার্তা| তোমরা সবাই যারা এই ফটকগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রভুকে উপাসনা করতে আসো, তারা এই বার্তা শোন| 3 ইস্রায়েলের লোকদের কাছে প্রভুই হলেন ঈশ্বর| প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: ‘তোমরা তোমাদের জীবনযাত্রা বদলে ফেল| সত্‌ কাজ করো| যদি তোমরা তা করো তাহলে তোমাদের আমি এখানে বাস করতে দেব| 4 মিথ্য়েবাদীদের বিশ্বাস কর না| তারা বলে, “এই হল প্রভুর মন্দির স্থান|” 5 তোমরা যদি সত্যিই তোমাদের জীবন ধারা বদলাও এবং ভালো কর্মসমূহ কর এবং তোমরা যদি পরস্পরের প্রতি সত্‌ ও পক্ষপাতহীন থাকো, আমি তোমাদের এখানে থাকতে দেব| 6 বিদেশী ব্যক্তিদের প্রতিও সত্‌ থেকো| বিধ্বা এবং অনাথ শিশুদের উপকার করো| তাদের প্রতি সুবিচার করো| নিরীহ মানুষদের হত্যা করো না| আর অন্য কোন দেবতাদের অনুসরণ কোরো না| কারণ তারা তোমাদের জীবন ধ্বংস করে দেবে| 7 যদি তোমরা আমাকে মেনে চলো তাহলে আমি তোমাদের এখানে বাস করতে দেব| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের চিরকাল বসবাসের জন্য এই জমি দিয়েছিলাম| 8 “‘কিন্তু তোমরা মূল্যহীন মিথ্যায তোমাদের আস্থা স্থাপন করো| 9 তোমরা কি খুনী অথবা চোর হতে চাও? তোমরা কি ব্যভিচারের পাপ গায়ে মাখতে চাও? তোমরা কি মিথ্য়ে অভিয়োগে অন্যদের ফাঁসাতে চাও? তোমরা কি বালের মূর্ত্তি এবং অন্য দেবতাদের যাদের তোমরা জানো না তাদের পূজা করতে চাও? 10 তোমরা যদি এ সব পাপগুলো করো, তাহলে কি তোমরা এই গৃহের ভেতর, য়েটি আমার নামে অভিহিত সেখানে আসতে পারবে এবং আমার সামনে এসে দাঁড়াতে পারবে? তোমরা কি মনে করো আমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমরা বলবে, “আমরা সুরক্ষিত|” তাই আমরা এই ধরণের ভয়ঙ্কর কাজ করব?” 11 আরাধনার এই জায়গাটি আমার নামে নামাঙ্কিত| এই মন্দির কি তোমাদের কাছে ডাকাতদের গোপন ড়েবা ছাড়া আর বেশী কিছু নয়? আমি তোমাদের লক্ষ্য করে যাচ্ছি|”‘ এই ছিল প্রভুর বার্তা| 12 “যিহূদার লোকরা, তোমরা এখন শীলো শহরে চলে যাও| সেই স্থানে যাও যেখানে আমি আমার প্রথম নামাঙ্কিত বাড়িটি তৈরী করেছিলাম| যাও, গিয়ে দেখে এসো, আমার লোকদের, ইস্রায়েলের লোকদের মন্দ কাজের জন্য আমি ঐ জায়গার কি অবস্থা করেছি| 13 এবং আমি এগুলো করব কারণ তোমরা এগুলো সব করছিলে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তোমাদের সঙ্গে বারে বারে কথা বলেছি| কিন্তু তোমরা আমার কথা শুনতে চাও নি| আমি তোমাদের ডেকেছিলাম কিন্তু তোমরা কোন উত্তর দাও নি| 14 তাই জেরুশালেমে অবস্থিত আমার নামাঙ্কিত গৃহ আমি নিজেই ধ্বংস করে দেব, ঠিক শীলো শহরের উপাসনালযের ক্ষেত্রে য়েমন আমি করেছিলাম| জেরুশালেমের সেই মন্দিরকে, য়েটি আমার নামে অভিহিত, সেটিকে তোমরা বিশ্বাস কর| আমি সেই জায়গা তোমাদের এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম| 15 ইফ্রযিম থেকে তোমাদের সব ভাইদের য়েমন ছুঁড়ে ফেলেছিলাম তেমনি তোমাদেরও আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব|’ 16 “যিরমিয়, কখনও তুমি যিহূদার লোকের হয়ে প্রার্থনা করবে না| ওদের সাহায্যের জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করো না| আমি তাহলে ইচ্ছে করে তোমার সেই প্রার্থনা শুনব না| 17 আমি জানি তুমি লক্ষ্য রাখছো যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তায় তারা কি করে| 18 যিহূদার লোকরা যা করেছে তা হল এই রকম: ছেলেমেযেরা কাঠ জড়ো করছে| আর পিতারা সেই কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালাচ্ছে| মহিলারা মযদা মাখছে, পিঠা, রুটি বানাচ্ছে স্বর্গের রানীকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য| যিহূদার এইসব মানুষ অন্য মূর্ত্তিদের পূজার জন্য পেয নৈবেদ্য ঢালছে| তারা এগুলি করছে আমাকে রুদ্ধ করার জন্য| 19 কিন্তু আমি সত্যিই সে জন নই যাকে যিহূদার লোকরা দুঃখ দিচ্ছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তারা প্রকৃতপক্ষে নিজেদেরই আঘাত করছে এবং নিজেদের লজ্জায ফেলছে|” 20 তাই প্রভু বললেন, “আমি আমার রোধ এই জায়গার বিরুদ্ধে দেখাবো| এখানকার প্রত্যেক মানুষ এবং পশুকে শাস্তি দেব| শাস্তি দেব গাছ এবং ক্ষেতের শস্যকে| আমার রোধ হবে তপ্ত আগুনের মতো, যা নেভাবার ক্ষমতা কারো নেই|” 21 ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “যাও তোমরা যতখুশী চাও হোমবলি উত্সর্গ কর| যত খুশী ঐ উত্সর্গগুলোর মাংস খাও| 22 আমিই মিশর থেকে তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিলাম| আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম| কিন্তু তাদের হোমবলি বা উত্সর্গের আদেশ দিইনি| 23 আমি শুধু তাদের এই আদেশ দিয়েছিলাম য়ে, ‘আমাকে মান্য করো এবং আমিই তোমাদের ঈশ্বর হব এবং তোমরা হবে আমার লোক| আমার আদেশ পালন করো এবং তোমাদের ভালো হবে|’ 24 “কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি| তারা আমার প্রতি একেবারেই মনোয়োগ দেয়নি| তারা ছিল একঁগুযে, জেদী| সুতরাং তারা যা খুশী তাই করেছিল| তারা কখনই ভাল হয়নি| তারা আরও শযতান হয়ে সামনের দিকে না হেঁটে পিছনের দিকে হেঁটেছিল| 25 তোমাদের পূর্বপুরুষরা মিশর ছেড়ে যাবার দিন থেকে এখন পর্য়ন্ত আমি তোমাদের কাছে ভৃত্যদের পাঠিয়েছিলাম| আমার ভৃত্যরা হল ভাব্বাদী| আমি তাদের বার বার তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি| 26 কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি| আমার কথায় মনোয়োগ দেবার জন্য তাদের কান পাতেনি| জেদের বশে তারা তাদের পিতাদের চেয়েও আরও বেশী করে অসত্‌ কাজ করেছে| 27 “যিরমিয়, তুমি যিহূদার লোকদের এই কথাগুলি বলবে| কিন্তু তারা তোমার কথা শুনবে না| তুমি তাদের ডাকলে তারা উত্তর দেবে না| 28 সুতরাং তোমাকে বলতেই হবে: এই দেশ প্রভু ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলেনি| এই জাতির লোকরা ঈশ্বরের শিক্ষামালা শোনেনি| সত্যিকারের শিক্ষা কাকে বলে এরা জানে না| 29 “যিরমিয়, তুমি তোমার চুল কেটে ফেল এবং তা ছুঁড়ে ফেলে দাও| তারপর অনাবৃত পাহাড়ের চূড়ায় ওঠ এবং আর্ত্তনাদ করে কাঁদো| কারণ, প্রভু এই প্রজন্মের লোকদের প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং এদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন| প্রচণ্ড রুদ্ধ হয়ে তিনি তাদের শাস্তি দেবেন| 30 তুমি এগুলো করো কারণ আমি দেখেছি য়ে যিহূদার লোকরা শযতানি কাজ করে চলেছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তারা তাদের মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে| এবং আমি সেই সব মূর্ত্তিদের ঘৃণা করি| তারা আমার নামাঙ্কিত মন্দিরে এই মূর্ত্তিগুলি প্রতিষ্ঠা করেছে| তারা আমার গৃহ অপবিত্র করেছে| 31 তারা বেনহিন্নোম উপত্যকায় তোফত নামক সুউচ্চ স্থান নির্মাণ করেছে| এই সব জায়গার লোকেরা তাদের নিজেদের ছেলেমেযেদের হত্যা করেছে| তারা তাদের হোমবলি হিসেবে উত্সর্গ করেছে| কিন্তু আমি তাদের এই দুষ্ট কাজ করতে আদেশ দিইনি| আমি এমন একটা জিনিষের কথা কখনও ভাবিইনি| 32 তাই আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি| এমন দিন আসছে য়েদিন লোকে এই জায়গাকে তোফত বা বেনহিন্নোমের উপত্যকা বলে আর ডাকবে না| তারা একে গণহত্যার উপত্যকা বলে ডাকবে| তারা এরকম একটি নামকরণ করবে কারণ তারা তোফতে মৃতদেহ কবর দেবে যতক্ষণ পর্য়ন্ত আর কোন মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গা না থাকে| 33 মৃতদেহগুলি খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকবে| আর সেই মৃতদেহগুলি ছিঁড়ে খাবে আকাশের শকুন ও বনের পশুরা| ঐ শকুন ও পশুদের তাড়া করার মতো কেউ বেঁচে থাকবে না| 34 আমি জেরুশালেমের রাস্তা থেকে এবং যিহূদার শহরগুলি থেকে সমস্ত সুখ এবং আনন্দ কেড়ে নেব| ঐ জায়গাগুলিতে আর কখনও বর ও কনের গলা শোনা যাবে না| দেশটি মরুভূমিতে পরিণত হবে|”

যেরেমিয়া 8

1 এই হল প্রভুর বার্তা: “সেই সময় যিহূদার রাজা এবং গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারীদের অস্থিসমূহ, যাজকগণ ও ভাব্বাদীগণের অস্থিসমূহ এবং জেরুশালেমের লোকদের অস্থিসমূহ তাদের কবরগুলির থেকে বের করে আনা হবে| 2 তারপর তারা সংগ্রহ করা সমস্ত অস্থি ছড়িয়ে দেবে আকাশভরা সূর্য়, চন্দ্র এবং তারাদের নীচে এই মাটিতে| জেরুশালেমের লোকরা সূর্য়, চন্দ্র, তারাদের ভালোবাসতো| তারা ওদের সেবা করতো, অনুসরণ করতো, উপদেশ চাইতো এবং পূজা করতো| কিন্তু কেউ সেই অস্থি একত্রিত করে পুনরায় সমাধিস্থ করবে না| সুতরাং সেই অস্থিগুলো পশুদের বিষ্ঠার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে| 3 “আমি জোর করে যিহূদার লোকদের ভিটেমাটি ছাড়া করব| তাদের বিদেশের মাটিতে পাঠিয়ে দেব| যুদ্ধে য়ে সমস্ত যিহূদার মানুষ বেঁচে গিয়েছে তারাও মৃত্যু কামনা করবে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 4 যিরমিয় এই কথাগুলি যিহূদার লোকদের বলে দাও: প্রভু এই কথাগুলি বললেন: “যদি কোন মানুষ পড়ে যায়, সে আবার উঠে দাঁড়ায এবং যদি কেউ ভুল পথে যায় সে আবার সঠিক পথে ফিরে আসে| যিহূদার লোকরা ভুল পথে গিয়েছিল| 5 কিন্তু জেরুশালেমের ঐসব লোকরা কেন সেই একই ভুল পথে চলতে লাগল? তারা ফিরে এল না, বরং তারা নিজেদের তৈরী মিথ্য়েকেই বিশ্বাস করল| 6 আমি তাদের কথা মন দিয়ে শুনেছি| কিন্তু তারা সততার সঙ্গে কথা বলে না| তাদের পাপের জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করল না| তারা চিন্তা করল না তারা কতখানি অসত্‌| তারা চিন্তা না করে কাজ করে| তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটে বেড়ানো ঘোড়াদের মত| 7 এমন কি আকাশের পাখীরাও কাজ করবার সঠিক সময়টি জানে| সারস, পায়রা, বেগবান এবং গায়ক পাখীরাও জানে নতুন বাসায কখন উড়ে য়েতে হয়| কিন্তু আমার লোকরা জানেনা প্রভু তাদের কাছ থেকে কি চান| 8 “তোমরা বলে চলেছো, ‘তোমরা প্রভুর শিক্ষায় জ্ঞানী হয়ে উঠেছ!’ কিন্তু তা সত্যি নয়| কারণ শাস্ত্রবিদরা মিথ্যা লিখেছিলেন| 9 ঐ ‘জ্ঞানী ব্যক্তিরা’ প্রভুর শিক্ষামালা মেনে চলতে অস্বীকার করেছে| সুতরাং তারা প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানী ব্যক্তি নয়| সেই ‘জ্ঞানী ব্যক্তিদের’ ফাঁদে ফেলা হয়েছিল| তারা বিহবল এবং লজ্জিত হয়েছে| 10 তাই আমি তাদের স্ত্রীদের অন্য পুরুষদের হাতে তুলে দেব| আমি তাদের জমিসমূহ দান করে দেব অন্য মালিকদের| ক্ষুদ্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ সবাই শুধু বেশী পয়সা চায়| ভাব্বাদী থেকে যাজকদের প্রত্যেকেই মিথ্যা কথা বলে| 11 আমার লোকরা খুব বাজে ভাবে আহত হয়েছে| কিন্তু ভাব্বাদী ও যাজকরা ক্ষতগুলিতে পট্টি বেঁধে দেবার বদলে ওগুলোকে সামান্য আঁচড় বলে গণ্য করেছে| তারা বলে, ‘সব কিছু ঠিকঠাক আছে!’ আসলে কিছুই ঠিক নেই! 12 মন্দ কাজের জন্য তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত্‌| কিন্তু তারা এতটুকু লজ্জিত নয়| তারা তাদের পাপের ব্যাপারে যথেষ্ট বিব্রত নয়| তাই অন্যদের মতো তারাও শাস্তি পাবে| যখন আমি অন্যদের শাস্তি দেব তখন তাদেরও ছুঁড়ে ফেলব মাটিতে|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 13 “তোমাদের ফসল ঘরে তোলার উত্সব আর পালিত হবে না| আমি তোমাদের সমস্ত ফল ও শস্যসমূহ কেড়ে নেব তাই আর ফসল তোলা হবে না|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| “দ্রাক্ষা-ক্ষেতে কোন দ্রাক্ষা থাকবে না| থাকবে না কোন ডুমুর গাছ| এমন কি গাছের পাতা পর্য়ন্ত শুকিয়ে যাবে| আমি তোমাদের যা দিয়েছিলাম সব কিছু নিয়ে নেব|” 14 “কেন আমরা এখানে বসে আছি? আশ্রয়ের জন্য আমাদের দুর্গবিশিষ্ট শহরগুলিতে যাওয়া যাক| যদি আমাদের প্রভু ঈশ্বর মারতেই চান, তাহলে সেখানে মরাই আমাদের পক্ষে ভাল| আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি| তাই ঈশ্বর আমাদের বিষাক্ত জল পান করতে দিয়েছেন| 15 আমরা শান্তি আশা করেছিলাম কিন্তু কিছুই ভালো হল না| আমরা আশা করেছিলাম তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন| কিন্তু শুধুই বিপর্য়য আসছে| 16 দান পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে শএুপক্ষের ঘোড়াদের হ্রেষা ধ্বনি আমরা শুনতে পাচ্ছি| মাটি কেঁপে উঠেছে তাদের পায়ের ক্ষুরের শব্দে| তারা এই দেশের সব কিছু ধ্বংস করতে আসছে| তারা ধ্বংস করতে আসছে এই শহর এবং শহরের লোকেদের| 17 “যিহূদার লোকরা, আমি তোমাদের আক্রমণ করার জন্য বিষধর সাপ পাঠাচ্ছি| যিহূদার এই সাপেদের কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না| সাপরা তোমাদের ছোবল মারবে|” এই ছিল প্রভুর বার্তা| 18 ঈশ্বর, আমি ভীষণ দুঃখিত ও পরম বেদনায় আছি| 19 আমার লোকদের কথা শুনুন| এদেশের সর্বত্র মানুষ সাহায্যের জন্য আর্ত চিত্কার করছে| তারা বলছে, “প্রভু কি সিয়োনে এখনও আছেন? সিয়োনের রাজা এখনও কি সেখানে আছেন?” কিন্তু ঈশ্বর বললেন, “যিহূদার লোকরা ভিনদেশের মূর্ত্তির পূজা করে এসেছে| সেটা আমাকে প্রচণ্ড রুদ্ধ করে তুলেছে| কেন তারা এই কাজ করেছিল?” 20 এবং লোকরা বলল, “ফসল কাটার সময় পেরিযে গিয়েছে| গ্রীষ্মও চলে গিয়েছে| তবুও আমরা রক্ষা পেলাম না|” 21 আমার লোকরা কষ্ট পেয়েছে বলে আমিও ব্যথিত| দুঃখে আমার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে| 22 গিলিয়দে নিশ্চয়ই ডাক্তার এবং ওষুধ আছে| তাহলে আমার লোকদের আঘাত কেন সারে নি?

যেরেমিয়া 9

1 যদি আমার মাথা ভর্তি জল থাকতো, যদি আমার চোখ অশ্রু-জলের ঝর্ণা হতো তাহলে আমি আমার লোকেদের ধ্বংসের জন্য সারা দিনরাত কাঁদতাম| 2 মরুভূমির মাঝে আমার যদি একটা ছোট্ট বাড়ি থাকতো, যেখানে পথিক ক্লান্ত হয়ে রাত কাটায, তাহলে আমি আমার লোকদের ত্যাগ করতে পারতাম| তাদের কাছ থেকে সরে য়েতে পারতাম| কারণ তারা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত নয়, তারা প্রত্যেকে ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করেছে| 3 “জিহবা হল তাদের ধনুকের মতো| আর সেখান থেকে তীরের মতো উড়ে আসে এক রাশি মিথ্য়ে| এই দেশের সত্য নয়, চারিদিকে কেবল মিথ্য়েরই জয়জয়কার| এখানকার লোকরা একটা পাপ থেকে আরেক পাপের পথে হেঁটেছে| তারা আমাকে জানে না|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 4 “প্রতিবেশীদের লক্ষ্য কর! নিজের ভাইকেও বিশ্বাস করো না| কারণ তারা প্রত্যেকে ঠগ, প্রতারক, প্রত্যেক প্রতিবেশীই ওর পিছনে কথা বলে| 5 প্রত্যেকে তার প্রতিবেশীকে মিথ্য়ে বলে| কেউ সত্যি কথা বলে না| যিহূদার লোকরা শুধু মিথ্য়েই বলতে শিখেছে| যতক্ষণ না তারা খুব ক্লান্ত হয়ে ফিরে এলো ততক্ষণ তারা পাপাচার চালিযে গিয়েছিল| 6 মন্দ মন্দকেই অনুসরণ করে এবং মিথ্য়ে অনুসরণ করে মিথ্যাকে| লোকরা আমাকে চিনতে অস্বীকার করেছিল|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 7 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “খাঁটি ধাতু কি না তা বোঝার জন্য এক জন শ্রমিক আগুনে গালিযে দেখে| য়েহেতু আমার আর অন্য কোন বিকল্প নেই তাই আমি যিহূদার লোকদের এই ভাবেই পরীক্ষা করব| আমার লোকরা পাপ করেছে| 8 তীক্ষ্ণ তীরের ফলার মতো তাদের জিহবা| তা থেকে শুধু মিথ্য়েই উচ্চারিত হয়| প্রত্যেক ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুভাবে কথা বলে, কিন্তু সে গোপনে তাকে আঘাত করবার পরিকল্পনা করে| 9 যিহূদার লোকদের আমি শাস্তি দেবই|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তুমি জানো এই ধরণের লোককে আমার শাস্তি দেওয়া উচিত্‌| তাদের য়োগ্য শাস্তিই আমি দেব|” 10 আমি (যিরমিয়) পাহাড়দের জন্য আর্ত চিত্কার করে উঠবো| শূন্য জমির জন্য শোকের গান গাইব| কারণ জীবিত সব কিছু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে| কোন মানুষ এখন সেখানে হাঁটে না| কোন গবাদি পশুর আওয়াজ সেখানে শোনা যাবে না| পশু এবং পাখীরা দূরে কোথাও চলে গিয়েছে| 11 “আমি (প্রভু) জেরুশালেম শহরকে জঞ্জালের স্তূপে পরিণত করব| এ হবে শেযালদের দেশ| যিহূদার সমস্ত শহরকে আমি ধ্বংস করব যাতে সেখানে কেউ বাস করতে না পারে|” 12 এই জিনিসগুলি বোঝার মতো কোন যথেষ্ট জ্ঞানী ব্যক্তি আছে কি? প্রভুর দ্বারা শিক্ষণপ্রাপ্ত এমন কিছু লোক আছে কি যারা প্রভুর বার্তা ব্যাখ্যা করতে পারবে? কেন সেই দেশটি ধ্বংস হয়ে গেল? কেন তা শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হয়েছিল? সেখানে কোন মানুষ কেন য়েতে পারে না? 13 প্রভু প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়েছেন| প্রভু বলেছেন, “এসবগুলো ঘটেছে কারণ যিহূদার লোকরা আমার শিক্ষামালা অনুসরণ করা ছেড়ে দিয়েছিল| আমি তাদের শিক্ষামালা দিয়েছিলাম| কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিল| তারা আমার শিক্ষামালাকে অনুসরণ করেনি| 14 একগুঁযে, জেদী, যিহূদার লোকরা নিজের মতো করে চলেছিল| তারা বালের মূর্ত্তি অনুসরণ করেছিল| মূর্ত্তিদের অনুসরণ করার শিক্ষা তাদের পিতারাই দিয়েছিল|” 15 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন: “শীঘ্রই আমি যিহূদার লোকদের তিক্ত খাদ্য খেতে বাধ্য করব| আমি তাদের বিষাক্ত জল পান করতে বাধ্য করব| 16 অন্য সমস্ত দেশে আমি যিহূদার লোকদের ছড়িয়ে দেব| অদ্ভ্ুত দেশগুলিতে তারা বাস করবে| তারা এবং তাদের পিতারা কখনোই ঐ সব দেশের কথা শোনেনি বা জানে না| আমি লোকদের তরবারি হাতে পাঠাবো| তারা যিহূদার সব লোকদের হত্যা করবে|” 17 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন: “এখন এইগুলি নিয়ে ভাবো! অন্ত্য়েষ্টি এযিায কাঁদার জন্য ভাড়াটে মহিলাদের ডাকো (রুদালি)| য়ে মহিলারা ভালো কাঁদতে পারে তাদের পাঠাও| 18 লোকরা বলল, ‘তাড়াতাড়ি সেই মহিলারা আসুক এবং তাদের আমার জন্য কাঁদতে দাও| তাদের কান্না দেখে আমাদেরও চোখ থেকে ঝর্ণা বয়ে যাবে|’ 19 “সিয়োন থেকে চিত্কার করে কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে| ‘আমরা সত্যিই ধ্বংস হয়ে গিয়েছি! আমরা সত্যিই লজ্জিত! আমাদের দেশ ছেড়ে আমাদের চলে য়েতেই হবে| কারণ ঘরবাড়ি সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে গিয়েছে|”‘ 20 যিহূদার মহিলারা এখন প্রভুর বার্তা শোন| শোন প্রভুর মুখ নিঃসৃত শব্দ| প্রভু বলছেন, “তোমরা তোমাদের মেযেদের শেখাও কি করে চিত্কার করে কাঁদতে হয়| প্রত্যেক মহিলাকেই এই শোক সঙ্গীত গাওযা শিখতে হবে| 21 ‘মৃত্যু এসেছে| প্রতিটি ঘরের জানালা দিয়ে মৃত্যু ভেতরে এসেছে| মৃত্যু আমাদের প্রাসাদগুলিতে এসেছে| মৃত্যু এসেছে রাস্তায় খেলতে থাকা আমাদের সন্তানদের কাছে| মৃত্যু এসেছে যুবকদের প্রকাশ্য সমাবেশে|’ 22 “যিরমিয়, এই কথা বল: ‘প্রভু বলেন, গোবরের মতো মৃতদেহগুলি মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে| চাষীদের কাটা শস্যের মতো মাটিতে পড়ে থাকবে মৃতদেহ| কিন্তু কেউ তাদের একত্রিত করবে না|”‘ 23 প্রভু বলেন, “বিজ্ঞ ব্যক্তিদের তাদের জ্ঞানের বড়াই করা উচিত্‌ নয়| শক্তিশালী ব্যক্তিদের তাদের শক্তির বড়াই করা উচিত্‌ নয়| ধনী ব্যক্তিদের তাদের ধন নিয়ে বড়াই করা উচিত্‌ নয়| 24 কিন্তু যদি কেউ বড়াই করতে চায় তাহলে তাদের এগুলির জন্য বড়াই করতে দাও: য়ে সে আমাকে জানতে শিখেছে তা নিয়ে সে বড়াই করুক| তাকে বড়াই করতে দাও য়ে সে বোঝে য়ে আমি প্রভু, আমি দযালু এবং ন্যায়নিষ্ঠ এবং আমিই পৃথিবীতে ভালো কাজ করি| ওগুলিকে আমি ভালোবাসি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 25 এই বার্তাটি প্রভুর কাছ থেকে এসেছে, “সময় আসছে যখন আমি শাস্তি দেব সমস্ত লোকদের যারা শুধুমাত্র শারীরিকভাবে সুন্নত্‌ করেছে| 26 আমি মিসু যিহূদা, ইদোম, অম্মোন, মোয়াব এই সমস্ত দেশগুলির লোক এবং মরুভূমিতে বাস করা লোকদের কথা বলছি| ঐ সব দেশগুলির লোকরা শরীরে সত্যিকারের সুন্নত্‌ করেনি| আর ইস্রায়েলের পরিবারবর্গের লোকরা তাদের হৃদয়ের সুন্নত্‌ করেনি|”

যেরেমিয়া 10

1 ইস্রায়েলীয়রা, প্রভুর কথা শোন! 2 প্রভু যা বলেছেন তা হল:“ভিনদেশীযদের মতো বাস কোরো না| আকাশে বিশেষ চিহ্ন দেখে ভীত হযো না| অন্য দেশের লোকেরা এই চিহ্ন দেখে ভীত| কিন্তু তোমরা এসব দেখে ভয় পেযো না| 3 অন্য দেশের রীতি কোন কিছুর য়োগ্য নয়| কারণ তাদের দেবতা কিছু নয়, শুধু মূর্ত্তি মাত্র| তাদের মূর্ত্তি প্রতিমা ছোট্ট কাঠের তৈরী| শ্রমিকরা জঙ্গলে কাঠ কেটেছিল, তারপর তারা তা এনেছিল এবং তাকে মূর্ত্তিসমূহের রূপ দিয়েছিল| 4 সেই মূর্ত্তিকে সুন্দর করে তোলার জন্য কাঠের মূর্ত্তিতে সোনা রূপো লাগিয়েছে| তারপর সেই মূর্ত্তিরা যাতে পড়ে না যায় তার জন্য তারা হাতুড়ি ও পেরেকের সাহায্যে তাদের মাটিতে আবদ্ধ করেছে| 5 অন্যান্য জাতিসমূহের মূর্ত্তিগুলো তরমুজ ক্ষেতে কাকতাড়ুযার মত| ঐ মূর্ত্তিরা কথা বলতে পারে না| তারা নিজের পায়ে হাঁটতে পারে না| তাই লোকরা তাদের কাঁধে করে বয়ে নিয়ে বেড়ায| সুতরাং ঐ মূর্ত্তিদের ভয় পেও না| তারা তোমাদের য়েমন সাহায্য করতে পারবে না, তেমন কোন ক্ষতিও করতে পারবে না|” 6 প্রভু আপনি মহান! আপনার মতো আর কেউ নেই| আপনার নাম হল মহান এবং শক্তিমান! 7 হে ঈশ্বর, প্রত্যেকের আপনাকে সম্মান জানানো উচিত্‌| আপনি হলেন সমস্ত দেশের রাজা| আপনি তাদের সম্মান পাওয়ার য়োগ্য| জাতিগুলির মধ্যে অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তি আছেন, কিন্তু কেউ আপনার মতো বিজ্ঞ নয়| 8 অন্য দেশের সমস্ত লোকরা হল নির্বোধ| তাদের শিক্ষামালা আসে মূল্যহীন কাঠের মূর্ত্তিসমূহ থেকে| তাদের দেবতারা হল শুধু মাত্র কাঠের মূর্ত্তি| 9 তারা সেই মূর্ত্তি তৈরী করতে তর্শীশের রূপো এবং ঊফসের সোনা ব্যবহার করেছে| ছুতোর মিস্ত্রী এবং স্বর্ণকার শ্রমিকরা তাদের সেই মূর্ত্তিদের তৈরী করেছে| তারা সেই মূর্ত্তিদের বেগুনী ও নীল রঙের পোশাক পরিযেছে| “দক্ষ কারীগররা” ঐ “দেবতাদের” তৈরী করেছে| 10 কিন্তু প্রভুই হলেন সত্যিকারের ঈশ্বর| তিনিই এক মাত্র ঈশ্বর যিনি জীবিত| তিনি হলেন সর্বকালের রাজা| ঈশ্বর রুদ্ধ হলে পৃথিবী কেঁপে ওঠে এবং সেই এোধ থামানোর ক্ষমতা ঐ ভিন্দেশীদের নেই| 11 প্রভু বললেন, “এই বার্তা ঐ লোকদের জানিয়ে দাও| ‘ঐ ভ্রান্ত দেবতা পৃথিবী ও স্বর্গকে তৈরী করেনি| তারা ধ্বংস হবে এবং তাদের স্বর্গ ও মর্ত্য থেকে অদৃশ্য করে ফেলা হবে|”‘ 12 ঈশ্বর হলেন সেই এক জন যিনি এই পৃথিবী তৈরী করতে তাঁর শক্তি ব্যবহার করেছিলেন| ঈশ্বর তাঁর জ্ঞান দিয়ে এই পৃথিবীকে তৈরী করেছেন| তাঁর জ্ঞান ও বোধশক্তি দিয়ে পৃথিবীর ওপরে আকাশের আচ্ছাদন তৈরী করেছেন| 13 ঈশ্বরই উচ্চ বজ্রনির্ঘোষ, বন্যা ও বৃষ্টির কারণ| তিনিই পৃথিবীর সর্বত্র মেঘের সৃষ্টি করেছেন| তিনিই বৃষ্টির সঙ্গে বিদ্য়ুত্‌ পাঠান| তিনিই হাওযার সৃষ্টি করেন| 14 মানুষ এতো বোকা! নিজের হাতে তৈরী মূর্ত্তিদের কাছেই স্বর্ণকার শ্রমিকরা বোকা বনে গেল| ঐ মূর্ত্তিরা মিথ্য়ে ছাড়া আর কিছু নয়, ওরা বোধ্বুদ্ধিহীন| 15 ঐ মূর্ত্তিরা কোন কিছুর য়োগ্য নয়| ওদের নিয়ে কৌতুক করা যায়| বিচারের সময় ঐ মূর্ত্তিদের ধ্বংস করা হবে| 16 কিন্তু যাকোবের ঈশ্বর ঐ মূর্ত্তিদের মতো নয়| ঈশ্বর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন| ইস্রায়েলের পরিবারবর্গকে তিনি তাঁর নিজের লোক বলে নির্বাচন করেছিলেন| ঈশ্বরের নাম হল “প্রভু সর্বশক্তিমান|” 17 তোমাদের যথাসর্বস্ব নিয়ে চলে যাবার জন্য তৈরী হও| যিহূদার লোকরা তোমরা শহরের মধ্যে বন্দী হয়ে আছো এবং তোমাদের চারিদিকে শএুরা ঘিরে রয়েছে| 18 প্রভু বললেন, “এই বার আমি যিহূদার লোকদের এই দেশের বাইরে বের করে দেব| আমি তাদের কাছে যন্ত্রণা ও অশান্তি আনব| তারা যাতে উচিত্‌ শিক্ষা পায় তার জন্য আমি এগুলি করব|” 19 হায আমি (যিরমিয়) খুব বাজেভাবে আঘাত পেয়েছি| এই আঘাতে আমি আহত এবং সেরে উঠতে পারব না| তবুও আমি নিজেকে বললাম, “এটা আমার অসুখ এবং এর মধ্যে দিয়েই আমাকে কষ্ট পেতে হবে|” 20 আমার তাঁবু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| তাঁবুর সমস্ত দড়ি ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে| আমার সন্তানরা আমায় ত্যাগ করে চলে গিয়েছে| আমার তাঁবু খাটিযে দেবার জন্য কোন লোক নেই| আমাকে স্থায়ী একটা আস্তানা গড়ে দেবার জন্যও কেউ নেই| 21 মেষপালকরা (নেতৃবৃন্দ হল নির্বোধ| তারা প্রভুকে খোঁজার চেষ্টা করেনি| তারা জ্ঞানী নয়, তাই তাদের মেষের পাল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং হারিযে গিয়েছে| 22 শোন! উত্তর দিকে প্রচণ্ড শোরগোল উঠেছে| একটি সৈন্যবাহিনী যিহূদার শহরগুলিকে ধ্বংস করে দেবে| যিহূদা শূন্য এক মরুভূমিতে পরিণত হবে| সেখানে শুধু শেযাল চরে বেড়াবে| 23 প্রভু, আমি জানি য়ে লোকরা সত্যি সত্যি জানে না কি করে তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে হয়| লোকরা সত্যি সত্যি জানে না কি ভাবে সঠিক পথে জীবনযাপন করতে হয়| 24 প্রভু, আমাদের শোধন করুন, কিন্তু ন্যায়নিষ্ঠ হোন| রোধ আমাদের আর শাস্তি দেবেন না! 25 যদি আপনি রুদ্ধ হন তাহলে অন্য দেশগুলিকে শাস্তি দিন| তারা আপনাকে চেনে না| সম্মান করে না| তারা আপনার উপাসনাও করে না| ওই দেশগুলি যাকোবের পরিবারকে ধ্বংস করেছিল| ধ্বংস করেছিল ইস্রায়েলকে| তারা ধ্বংস করেছিল ইস্রায়েলের স্বদেশকে|

যেরেমিয়া 11

1 প্রভুর এই বার্তা যিরমিয়র কাছে এসে পৌঁছালো: 2 “চুক্তির ভাষা শোন যিরমিয়| তুমি যা শুনবে তা যিহূদার লোকেদের বলবে| জেরুশালেম বাসীদেরও বলবে| 3 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এইগুলি বললেন: ‘যারা এই চুক্তি মানবে না তাদের অমঙ্গল হবে|’ 4 তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আমি য়ে চুক্তি করেছিলাম তার সম্বন্ধে বলছি| মিশর থেকে যখন তাদের আমি নিয়ে এসেছিলাম তখনই এই চুক্তি করেছিলাম| মিশরের প্রচুর সমস্যা ছিল লোহা গলানো গরম ছিল সেখানে| আমি ওদের বলেছিলাম, আমাকে মেনে চলো এবং আমার আদেশমতো কাজ করো| যদি তা করো তাহলে তোমরা হবে আমার লোক| আমি হব তোমাদের ঈশ্বর| 5 “আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে য়ে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম তা বজায় রাখতে এটা করেছিলাম| আমি কথা দিয়েছিলাম য়ে, তাদের এমন উর্বর জমি দেব যা থেকে দুধ আর মধু সংগৃহীত হবে| এবং তোমরা এখন সেই দেশেই বাস করছো|”আমি (যিরমিয়) উত্তরে জানালাম, “আমেন, প্রভু|” 6 প্রভু আমাকে বললেন, “যিরমিয়, এই বার্তা তুমি যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তাগুলিতে ধর্মোপদেশ দ্বারা প্রচার করো| এই হল বার্তা: চুক্তির বযান শোন এবং বিধিগুলিকে মান্য করো| 7 আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে আসার সময় সতর্কবাণী দিয়েছিলাম| সেই দিন থেকে আজ পর্য়ন্ত বারে বারে আমি তাদের সতর্ক করে এসেছি| আমি তাদের আমাকে মেনে চলার কথা বলেছিলাম| 8 কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষ আমার কথা শোনেনি| তারা ছিল একঁগুযে, জেদী| তারা তাদের দুষ্ট অন্তরে যা ভাবত তাই করত| চুক্তিতে বলা হয়েছে য়ে যদি তারা ঈশ্বরকে অমান্য করে তাহলে তাদের অমঙ্গল হবে| আমি তাদের আদেশ দিয়েছিলাম এই বন্দোবস্ত মানতে| কিন্তু তারা তা মানেনি| তাই আমি তাদের অমঙ্গল ঘটাবো|” 9 প্রভু আমাকে বললেন, “যিরমিয়, আমি জানি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকরা গোপন ছক কষেছে| 10 তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মতো পাপ কাজ করছে| তাদের পূর্বপুরুষরা আমার বার্তা শুনতে অস্বীকার করেছিল| তারা অন্য দেবতার পূজা করেছিল| আমি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলাম তা যিহূদা ও ইস্রায়েলের পরিবার ভঙ্গ করেছে|” 11 তাই প্রভু বললেন, “আমি খুব শীঘ্রই যিহূদার লোকদের ভয়ঙ্কর অনিষ্ট করব| তারা পালাতে পারবে না| তারা অনুতপ্ত হবে এবং তারা আমার কাছে এসে চিত্কার করে সাহায্য চাইবে| কিন্তু আমি তাদের কথা কানেই তুলব না| 12 যিহূদা ও জেরুশালেম শহরের লোকরা তখন সাহায্যের প্রার্থনায ছুটে যাবে তাদের মূর্ত্তিদের কাছে| ঐ লোকরা মূর্ত্তিদের সামনে ধুপধূনো জ্বালাবে| কিন্তু সেই ভয়ঙ্কর সময় যখন আসবে তখন মূর্ত্তিরা যিহূদার লোকদের কোন সাহায্যই করতে পারবে না| 13 যিহূদার লোকরা, তোমাদের অসংখ্য মূর্ত্তি আছে| যিহূদার যত শহর আছে ততগুলি সংখ্যক মূর্ত্তি আছে| তোমরা ঐ বিরক্তিকর মূর্ত্তি ‘বাল’ এর জন্য বহু বেদী তৈরী করেছিলে| জেরুশালেমে যতগুলি সংখ্যক রাস্তা আছে ততগুলি বেদী তৈরী করেছিলে| 14 “যিরমিয় তোমায় বলেছি যিহূদার লোকদের জন্য প্রার্থনা কোরো না| তাদের জন্য কিছু চেযো না| তাদের জন্য প্রার্থনা করলে আমি শুনব না| ওরা কষ্ট পাবেই| কষ্ট পেলে তখন তারা আমার সাহায্যের জন্য কাঁদবে| কিন্তু আমি তাদের কথা শুনব না| 15 “আমার প্রেমিকা (যিহূদা) আমার উপাসনা গৃহে কেন? তার ওখানে থাকার কোন অধিকার নেই| সে অনেক পাপ কাজ করেছে| যিহূদা তুমি কি মনে কর বিশেষ প্রতিশ্রুতিসমূহ ও পশুবলিসমূহ তোমাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে? তুমি কি মনে কর আমাকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করে তুমি শাস্তির হাত থেকে রেহাই পাবে?” 16 প্রভু তোমাকে একটি নাম দিয়েছিলেন| তিনি তোমাকে ‘মনোরম এক হরিত্‌পর্ণ জিতবৃক্ষ’ বলে ডাকতেন| কিন্তু এক প্রবল ঝড়ের সাহায্যে প্রভু ঐ গাছে আগুন লাগিয়ে তার শাখাপ্রশাখা পুড়িয়ে ছাই করে দেবেন| 17 প্রভু সর্বশক্তিমান তোমাকে রোপণ করেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন য়ে বিপর্য়য তোমার কাছে আসবে| কারণ ইস্রায়েল ও যিহূদার পরিবার অনেক ক্ষতিকর অনিষ্ট কাজ করেছে| তারা বাল মূর্ত্তির উদ্দেশ্যে বলি দিয়েছে এবং আমাকে রুদ্ধ করেছে|” 18 প্রভু আমাকে দেখালেন অনাথোতের মানুষ কি ভাবে আমার বিরুদ্ধে চএান্ত করেছে| প্রভু আমাকে এইসব দেখালেন, যাতে আমি জানতে পারি য়ে তারা আমার বিরুদ্ধে| 19 আমার বিরুদ্ধে লোকদের এই ষড়য়ন্ত্রের কথা প্রভু আমাকে জানাবার আগে আমি ছিলাম একজন নিরীহ মেষশাবকের মত, জবাই এর অপেক্ষারত| আমি এই ষড়য়ন্ত্রের কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি| তারা আমার সম্বন্ধে এই কথাগুলি বলেছিল: “চলো ঐ গাছকে এবং গাছের ফলকে আমরা ধ্বংস করে দিই| চলো তাকে হত্যা করি| তাহলে মানুষ তাকে ভুলে যাবে|” 20 কিন্তু প্রভু আপনি হলেন নিরপেক্ষ বিচারক| আপনি জানেন কিভাবে মানুষের হৃদয় ও মনের পরীক্ষা নিতে হয়| আমি আপনাকে আমার যুক্তিগুলো সাজিযে দেব এবং আপনিই আমার হয়ে ওদের য়োগ্য শাস্তি দেবেন| 21 অনাথোতের মানুষ যিরমিয়কে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল| তারা যিরমিয়কে বলেছিল, “প্রভুর হয়ে ভাব্বাণী করলে তোমাকে আমরা হত্যা করব|” প্রভু সেই অনাথোতের লোকদের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নিলেন| 22 প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, “আমি অনাথোতের সেই লোকগুলোকে খুব শীঘ্রই য়োগ্য শাস্তি দেব| তাদের যুবকেরা যুদ্ধে মারা যাবে| তাদের ছেলেমেযেরা খাদ্যের অভাবে মারা যাবে| 23 অনাথোত শহরের কেউ বেঁচে থাকবে না| আমি তাদের শাস্তি দেব| আমিই ওদের অমঙ্গল ঘটাবো|”

যেরেমিয়া 12

1 প্রভু, আমি যদি আপনার সঙ্গে তর্ক করি, তাহলে আপনিই সর্বদা সঠিক, ধর্মময| তবুও আমি আপনার কাছে কয়েকটি ভুল-ভ্রান্তি সম্বন্ধে প্রশ্ন করতে চাই| কেন দুষ্ট লোকরাই সফলতা প্রাপ্ত? কেন বিশ্বাসঘাতকরা শান্তিতে থাকে? 2 আপনিই সেই এক জন যিনি দুষ্ট লোকদের এখানে রেখেছেন| বৃক্ষের মতো, তারা এখন তাদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে বিস্তার করেছে| ফুলে ফেঁপে উঠেছে ফলমুল| মুখে তারা বলে বেড়ায আপনি ওদের খুবই কাছের এবং প্রিয| কিন্তু হৃদয়ে ওরা আপনার কাছ থেকে বহুদূরে| 3 কিন্তু প্রভু, আপনি আমার হৃদয় জানেন| আপনি আমাকে দেখেছেন এবং আমার হৃদয় ও মনের পরীক্ষা নিয়েছেন| জবাই করার আগে মেষদের য়েমন টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়, তেমন করেই ঐ পাপী লোকদের তাড়িয়ে নিয়ে যান| জবাইযের দিনে ওদের জবাইযের জন্য বেছে নিন| 4 কতদিন আর এই দেশ শুষ্ক থাকবে? ঐ দুষ্ট লোকদের কারণে এই দেশের পশু এবং পাখীরা মারা গিয়েছে| কিন্তু তবুও দুষ্ট লোকরা বলে, “আমাদের কি দশা হবে তা দেখার জন্য যিরমিয় ততদিন পর্য়ন্ত জীবিত থাকবে না|” 5 “যিরমিয়, তুমি যদি লোকদের সঙ্গে দৌড় প্রতিয়োগিতায ক্লান্ত হয়ে পড়ো, তাহলে কি করে তুমি ঘোড়াদের সঙ্গে প্রতিয়োগিতা করবে? তুমি যদি নিরাপদ স্থানেই হাঁপিযে ওঠো, তাহলে বিপদ সঙ্কুল জায়গায় কি করবে? য়র্দনের নদী তীরে বেড়ে ওঠা কাঁটা ঝোপে পড়লে তুমি কি করবে? 6 তোমার বিরুদ্ধে যারা চএান্ত করেছে তারা হল তোমার নিজের ভাযেরা এবং তোমার নিজের পরিবারের লোকরা| তোমারই পরিবারের লোকরা তোমার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে| ওরা তোমার সঙ্গে বন্ধুর মতো কথা বললেও ওদের বিশ্বাস করো না|” 7 “আমি প্রভু আমার সমস্ত ঘরবাড়ি এবং আমার সমস্ত সম্পত্তিপরিত্যাগ করেছি| আমি যাকে ভালবাসি সেই তাকে (যিহূদা) আমি তার শএুদের তাকে দিয়ে দিয়েছি| 8 হিংস্র সিংহের মতো আমার লোকরা আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে| তারা আমার দিকে তাকিযে গর্জন করেছিল তাই আমি তাদের ছেড়ে চলে গিয়েছি| 9 আমার লোকরা শকুন পরিবৃত মৃত প্রায জন্তুর মতো হয়ে উঠেছে| তাদের ঘিরে পাক খাচ্ছে লোভী শকুনের দল| বন্য জন্তুরা এসো, এসো কিছু খাবার তোমাদের জন্য পড়ে আছে| 10 বহু মেষশাবক (নেতারা) আমার দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে| তারা আমার ক্ষেতে চারা গাছগুলিকে পায়ে মাড়িয়ে গিয়েছে| তারা আমার সবুজ শস্যে ভরা ক্ষেতকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে| 11 আমার মাঠকে তারা মরুভূমি বানিয়ে ফেলেছে| সবুজ ক্ষেত এখন সম্পূর্ণরূপে শুকনো| সেখানে কেউ বাস করে না| পুরো দেশটাই এখন শুকনো| ঐ দেশকে যত্ন করবার জন্য কেউ সেখানে পড়ে নেই| 12 সৈন্যরা ঐ মরুভূমিতে এসেছিল জিনিষপত্র লুঠ করতে| প্রভু সেই সৈন্যদের ব্যবহার করেছিলেন ঐ দেশকে শাস্তি দেবার জন্য| দেশটির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্য়ন্ত লোকেরা শাস্তি পেয়েছিল| কোন ব্যক্তি নিরাপদ ছিল না| 13 মানুষ গমের চাষ করবে| কিন্তু ফসল কাটার দিনে গাছে শুধু কাঁটাই খুঁজে পাবে| যদি তারা সম্পূর্ণরূপে পরিশ্রান্ত হয়ে যাওয়া পর্য়ন্তও কাজ করে, তবু তারা তাদের কঠিন পরিশ্রমের মূল্য পাবে না| তারা তাদের শস্য দেখে লজ্জিত হবে| প্রভুর রোধই এগুলি ঘটার কারণ|” 14 প্রভু যা বললেন তা হল: “ইস্রায়েলের চারপাশের দেশগুলিতে যারা বাস করে তাদের সঙ্গে আমি কি করব তা আমি তোমাকে বলে দেব| তারা দুষ্ট লোক| আমি ইস্রায়েলের লোকদের য়ে দেশ দিয়েছিলাম তা তারা ধ্বংস করে দিয়েছিল| আমিও ঐ পাপীদের দেশ থেকে ছুঁড়ে বাইরে বের করে দেব| তাদের সঙ্গে যিহূদার লোকদেরও একই অবস্থা করব| 15 দেশ থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর আমি তাদের জন্য সমব্যথিত হব| আমি প্রত্যেক পরিবারকে তাদের সম্পত্তিতে এবং তাদের দেশে আবার ফিরিয়ে আনব| 16 আমি চাই তারা ভাল করে শিক্ষা নিক| অতীতে তারা আমার লোকেদের বাল মূর্ত্তির নামে প্রতিশ্রুতি নিতে শিখিযেছিল| এখন আমি চাই তারা তাদের নতুন শিক্ষা একই ভাবে পাক| আমি চাই তারা আমার নাম ব্যবহার করতে শিখুক| আমি চাই তারা বলুক, ‘য়েমন প্রভু আছেন|’ যদি ওরা এরকম করে তাহলে ওরা সাফল্য পাবে এবং আমি ওদের আমার লোকদের সঙ্গে থাকতে দেব| 17 কিন্তু যদি ঐ জাতিটি আমার বাণী না শোনে তাহলে আমি তাদের পুরোপুরি ধ্বংস করে দেব| আমি তাদের মৃত গাছের মতো উপড়ে ফেলবো|” এটি হল প্রভুর বার্তা|

যেরেমিয়া 13

1 প্রভু আমাকে যা বলেছেন তা হল: “যিরমিয়, যাও একটি ক্ষৌম কটি বস্ত্র কিনে আনো এবং ওটি তোমার কটিদেশের চারপাশে শক্ত করে জড়াও| ওটিকে ভিজতে দিও না|” 2 সুতরাং আমি একটি কটি বস্ত্র কিনে আনলাম| প্রভুর কথা মতো কোমরে জড়িয়ে নিলাম| 3 দ্বিতীয়বার প্রভুর বার্তা আমার কাছে এলো| 4 এই ছিল বার্তা: “যিরমিয়, কিনে আনা কটিটি পরে তুমি ফরাত্‌ নদীর কাছে যাও| সেখানে কটিটি একটি পাথরের ফাঁকে লুকিয়ে রাখো|” 5 সুতরাং আমি প্রভুর কথা মতো ফসু নদীর কাছে গিয়ে কটিটি লুকিয়ে রাখলাম| 6 অনেকদিন পরে প্রভু আমাকে বললেন, “যিরমিয়, এখন তুমি আবার ফরাত্‌ নদীর কাছে গিয়ে লুকোনো কটিটি নিয়ে এসো|” 7 তখন আমি আবার ফরাতের কাছে গিয়ে পাথরের ফাঁক থেকে কটিটি বের করার পর দেখলাম য়ে ওটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে| আর কোন মতেই ওটা পরার মতো অবস্থায় নেই| 8 তখন আবার প্রভুর বার্তা আমার কাছে এলো| 9 প্রভু যা বলেছিলেন, “য়েমন ঐ কটিটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে ঠিক তেমনি আমি যিহূদা এবং জেরুশালেমের অহঙ্কারী মানুষদের ধ্বংস করে দেব| তাদের দর্প চূর্ণ করব| 10 আমি যিহূদার সমস্ত দুষ্ট ও অহঙ্কারী লোকদের ধ্বংস করে দেব| তারা আমার বার্তাসমূহ শুনতে অস্বীকার করেছিল| তারা একগুঁযে, জেদী| তারা নিজের মতো করে চলেছে| তারা অন্য দেবতাদের পূজা করেছে| যিহূদার লোকদের অবস্থা হবে ঐ কটির মতো| তারা ধ্বংস হবেই| 11 এক জন ব্যক্তি য়েমন করে কোমরে কটি বস্ত্র জড়ায ঠিক তেমন করে আমি ইস্রায়েল এবং যিহূদার সমস্ত লোককে আমার কোমরের চারপাশে জড়িয়ে নিলাম| এটি হল প্রভুর বার্তা| “আমি ঐ সব মানুষদের নিজের লোকে পরিণত করার জন্যই এটা করেছিলাম| ওরা আমার নিজস্ব লোকে পরিণত হলে আমি মান সম্মান খ্যাতি সব কিছু পেতাম| কিন্তু ওরা আমার কথা শুনল না|” 12 “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের বলো: ‘প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বললেন তা হল: চামড়ার তৈরী প্রত্যেকটি দ্রাক্ষারস রাখার থলি দ্রাক্ষারসে ভরে থাকা উচিত্‌|’ ওরা তোমাকে মৃদু হেসে বলবে, ‘আমরা কি জানি না য়ে প্রতিটি চামড়ার তৈরী দ্রাক্ষারস রাখার থলি দ্রাক্ষারসে পূর্ণ থাকা উচিত্‌|’ 13 তখন তুমি তাদের বলবে, ‘প্রভু যা বলেছেন তা হল: আমি এই দেশের সমস্ত লোককে অর্থাত্‌ দাযূদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজাদের, যাজকদের, ভাব্বাদীদের এবং জেরুশালেমের সমস্ত লোকদের মত্ততায পূর্ণ করব| 14 যিহূদার লোকরা আমার কারণে হোঁচট খাবে এবং পরস্পরের ঘাড়ে পড়বে| পিতাপুত্র মিলেও পা জড়াজড়ি করবে আর হোঁচট খেযে আছড়ে পড়বে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| “‘আমার সমবেদনাকে আমি যিহূদার লোকদের ধ্বংস করা থেকে বিরত করতে দেব না| যিহূদার লোকদের ধ্বংস করার ক্ষেত্রে আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত হব না|”‘ 15 মনোয়োগ দিয়ে শোন| প্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন| তোমরা গর্ব করো না| 16 তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান করো| তাঁর প্রশংসা করো| না হলে তিনি অন্ধকার বয়ে আনবেন| যেখানে তোমরা আলোর জন্য অপেক্ষা করছ এবং আশা করছ, সেই অন্ধকার পাহাড়গুলিতে হোঁচট খাবার আগে এবং পড়বার আগে প্রভুর প্রশংসা কর, নাহলে তিনি সেটাকে ভযাবহ অন্ধকারে পরিণত করবেন| তিনি আলোটিকে গাঢ় অন্ধকারে পরিবর্তিত করবেন| 17 যদি তোমরা প্রভুর কথা না শোন, তোমাদের অহঙ্কার আমাকে ভীষণ দুঃখ দেবে| আমি মুখ লুকিয়ে চিত্কার করে কাঁদব| আমার চোখ দিয়ে অঝোরে অশ্রু-ধারা বইতে থাকবে| কারণ প্রভুর পালকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে| 18 রাজা এবং তাঁর স্ত্রীকে বলো, “সিংহাসন থেকে নেমে এসো| তোমাদের চোখ ধাঁধানো রাজমুকুট মাথা থেকে খসে পড়ছে|” 19 নেগেভের মরু শহরগুলিতে তালা লাগানো হয়েছে এবং কোন ব্যক্তি তা খুলতে পারবে না| যিহূদার সমস্ত মানুষকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে| তাদের জেলের কয়েদীদের মতো বয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে| 20 জেরুশালেম দেখ! উত্তর দিক থেকে শএুরা আসছে| তোমার মেষের পালকোথায়? ঈশ্বর তোমাদের ঐ চমত্কার মেষের পালটি দিয়েছিলেন| তোমাদের ওটার দেখাশোনা করবার কথা ছিল| 21 প্রভু যখন তোমার কাছে তোমার মেষের পালের হিসেব দিতে বলবেন, তখন তুমি কি বলবে? কথা ছিল তুমি তোমার লোকদের ঈশ্বর সম্বন্ধে শিক্ষা দেবে| তোমার নেতাদের তাদের নেতৃত্ব দেবার কথা ছিল| কিন্তু তারা তাদের কাজ করেনি| তাই তোমাকে বেশী দুঃখ যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে| সে যন্ত্রণা হবে একজন মহিলার প্রসব যন্ত্রণার মতো| 22 তুমি হয়তো নিজেকে জিজ্ঞেস করবে, “আমার ক্ষেত্রে এইসব খারাপ ব্যাপারগুলো কেন ঘটল?” তোমার অনেক পাপের জন্য ঐ সব ঘটেছে| তোমার পোশাক ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং তোমার জুতোকেই নিয়ে চলে গেছে| তারা তোমাকে বিব্রত, বিরক্ত করার জন্যই ওগুলো করেছে| 23 এক জন কালো চামড়ার মানুষ কখনও তার গায়ের রক্ত পালটাতে পারে না| এবং চিতাও তার গায়ের দাগ পালটাতে পারে না| সেই রকম ভাবে জেরুশালেম তুমি কোনদিন পালটাবে না এবং ভাল কাজ করতে পারবে না| তুমি সর্বদাই খারাপ কাজ করবে| 24 “আমি তোমাকে জোর করে ঘর ছাড়া করবো| তুমি দিকবিদিক ছোটাছুটি করবে| তুমি ভূষির মতো মরু ঝড়ে উড়ে যাবে| 25 এসবই তোমাদের ভাগ্য়ে ঘটবে| তোমাদের ব্যাপারে আমার এটাই পরিকল্পনা|” এই হল প্রভুর বার্তা| “কেন এটা ঘটবে? কারণ তুমি আমায় ভুলে গিয়েছিলে| তুমি মূর্ত্তিদের বিশ্বাস করেছিলে| 26 জেরুশালেম আমি তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব| সবাই তোমাকে দেখবে| তুমি লজ্জিত হবে| 27 তোমার ভযাবহ কাজ আমি দেখেছি| আমি তোমাকে একজন ব্যাভিচারিণীর মত হাসিমুখে তোমার প্রেমিকদের সঙ্গে য়ৌনসহবাস করতে দেখেছি| আমি তোমাকে মাঠে-ঘাটে এবং পাহাড় চূড়ায় বেশ্যার মত ব্যবহার করতে দেখেছি| জেরুশালেম! এর জন্য তোমার জীবনে চরম দুর্দিন ঘনিয়ে আসবে| আমি অবাক হয়ে ভাবছি আর কতদিন তুমি এইসব নোংরা পাপ কাজ করে যাবে|”

যেরেমিয়া 14

1 খরা সম্বন্ধে যিরমিয়র প্রতি প্রভুর বার্তা: 2 “যিহূদার লোকরা মৃত ব্যক্তিদের জন্য চিত্কার করে কাঁদবে| যিহূদার শহরগুলিতে লোকরা আরো বেশী দুর্বল হয়ে পড়বে| তারা মাটিতে শুয়ে পড়ে থাকবে| জেরুশালেমবাসী ঈশ্বরের কাছে চিত্কার করে সাহায্য প্রার্থনা করবে| 3 নেতারা তাদের পরিচারকদের জল আনতে পাঠাবে| জলাধারে পরিচারকরা এসে জল দেখতে পাবে না| শূন্য পাত্র নিয়ে ফিরে যাবে, তারা লজ্জায মাথা ঢাকবে| 4 চাষীরা চরম বেদনা পাবে ও লজ্জিত হবে| কেউ ফসল বোনার জন্য মাটি কর্ষন করে নি| এক ফোঁটা বৃষ্টির দেখা নেই তাই লজ্জায তারা মাথা ঢাকবে| 5 তৃণের অভাবে হরিণী তার সদ্যজাত সন্তানকে একাকী মাঠেই রেখে চলে যাবে| 6 বন্য গাধারা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে শেযালের মতো ঘ্রাণ নেবে| কিন্তু তারা কোন খাবারের সন্ধান পাবে না| কারণ মাঠে কোন সবুজের চিহ্ন থাকবে না|” 7 “আমরা আমাদের ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি| আমরা আমাদের পাপের জন্য কষ্ট পাচ্ছি| হে প্রভু, আপনার নামের দোহাই, আমাদের সাহায্য করবার জন্য কিছু করুন| আমরা স্বীকার করছি আমরা পাপী, আমরা বার বার আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছি| 8 ঈশ্বর, আপনিই ইস্রায়েলের আশা ভরসা| এর আগেও বহুবার আপনি ইস্রায়েলকে সমস্যার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন| কিন্তু এখন আপনি একজন বিদেশীর মতো ব্যবহার করছেন| আপনি য়েন পথিকের মতো এক রাত্রি থাকার জন্যই এখানে এসেছেন| 9 আপনি য়েন স্তম্ভিত এক মানুষ| আপনি য়েন একজন সৈনিক যার প্রাণ বাঁচানোর কোন ক্ষমতা নেই| কিন্তু প্রভু, আপনি আমাদের সঙ্গেই আছেন| আপনার নাম ধরেই আমাদের ডাকা হয়| সুতরাং আমাদের সাহায্য না করে আপনি চলে যাবেন না|” 10 যিহূদার লোকদের সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল: “যিহূদার লোকরা আমাকে ছেড়ে দিতে ভালোবাসে| তারা আমাকে ত্যাগ করা থেকে নিজেদের নিবৃত্ত করেনি| সুতরাং এখন প্রভুও তাদের গ্রহণ করবেন না| প্রভু এখন তাদের সব বাজে কাজ করার কথা স্মরণ করবেন| প্রভু তাদের পাপের শাস্তি দেবেন|” 11 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের জন্য ভাল কিছু চেয়ে আমার কাছে প্রার্থনা কোরো না| 12 খুব সম্প্রতি হয়তো যিহূদার লোকরা উপবাস করতে এবং আমার কাছে প্রার্থনা করতে শুরু করবে| কিন্তু আমি তাদের প্রার্থনা শুনব না| এমনকি তারা যদি আমাকে হোমবলি এবং শস্য নৈবেদ্য দিতে চায় তাও আমি গ্রহণ করব না| যুদ্ধ ডেকে এনে যিহূদার লোকদের আমি ধ্বংস করব| আমি তাদের খাদ্য সরিয়ে নিয়ে যাব| এবং তারা দুর্ভিক্ষের সামনে পড়বে| মহামারী ডেকে এনে আমি তাদের ধ্বংস করব|” 13 কিন্তু আমি প্রভুকে বলেছিলাম, “প্রভু, আমার মালিক, ভাব্বাদীরা লোকদের অন্য কিছু বলছিল| তারা যিহূদার লোকদের বলছিল, ‘শএুর তরবারি তোমাদের ক্ষতি করবে না| তোমরা অনাহারে কষ্ট পাবে না| প্রভু তোমাদের এই দেশে শান্তি এনে দেবে|”‘ 14 তখন প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “যিরমিয়, ঐ ভাব্বাদীরা আমার নাম নিয়ে মিথ্য়ে ধর্মোপদেশ প্রচার করছে| আমি ঐ ভাব্বাদীদের পাঠাই নি| আমি তাদের আমার কথা দিয়ে আদেশও দিইনি| ঐ ভাব্বাদীরা মিথ্য়ে দর্শন, মূল্যহীন যাদু এবং জাগরণ-স্বপ্ন প্রচার করছে| সেটা তাদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা| য়ে ধারণা অন্তঃসারশূন্য ভোজবাজি ছাড়া আর কিছু নয়| 15 ঐ ভাব্বাদীরা, যারা আমার নাম নিয়ে ধর্ম-প্রচার করে তাদের নামে আমি এ-ই বলি| আমি তাদের পাঠাই নি| ঐ ভাব্বাদীরা বলেছিল, ‘কোন শএু এই দেশ আক্রমণ করতে পারবে না| এই দেশে অনাহার বলে কিছু থাকবে না|’ ঐ ভাব্বাদীরা অনাহারে মারা যাবে এবং শএুর তরবারির আঘাতে তাদের মৃত্যু ঘটবে| 16 এবং লোকদের, যাদের ভাব্বাদীরা ধর্মোপদেশ দিত, তাদের রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে| অনাহারে এবং শএুর তরবারিতে তাদের মৃত্যু ঘটলে কেউ তাদের কবর দিতে এগিয়ে আসবে না| কেউই আসবে না, এমন কি তাদের স্ত্রী পুত্র কন্যারাও নয়| আমি তাদের শাস্তি দেব| 17 “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের কাছে এই বাণী উচ্চারণ করো: ‘আমার চোখ জলে ভরে গিয়েছে| দিন রাত্রি আমি শুধুই কাঁদব| আমি আমার অক্ষত য়োনী কন্যার জন্য কাঁদব| কাঁদব আমার লোকেদের জন্য| কারণ কেউ তাদের আঘাত করেছে| তারা গুরুতরভাবে আহত| 18 যদি আমি সেই দেশটিতে যাই তবে আমি তরবারির আঘাতে নিহত মানুষদের দেখতে পাব| যদি আমি সেই শহরে যাই তাহলে খাদ্যের অভাবে বহু অসুস্থ মানুষকে দেখতে পাব| যাজক এবং ভাব্বাদীদের কোনও ভিন্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে|”‘ 19 লোকরা বলল, “প্রভু আপনি কি যিহূদাকে পুরোপুরি বাতিল করে দিয়েছেন? প্রভু আপনি কি সিয়োনকে ঘৃণা করেন? আপনি আমাদের এমন আঘাত করেছেন য়ে আমরা আর কখনও সুস্থ হয়ে উঠতে পারবো না| কেন আপনি এরকম করলেন? আমরা শান্তির আশায় বসে থাকলেও ভাল কিছু ঘটছে না| আমরা সেরে ওঠার অপেক্ষায বসে রইলাম কিন্তু শুধুই সন্ত্রাস এলো| 20 প্রভু, আমরা জানি আমরা খারাপ লোক| আমরা জানি আমাদের পূর্বপুরুষরাও অনেক খারাপ কাজ করেছিল| হ্যাঁ আমরা আপনার বিরুদ্ধে অনেক পাপ করেছি| 21 আপনার নামের দোহাই, আমাদের ঠেলে সরিয়ে রাখবেন না| আপনার মহিমান্বিত সিংহাসনকে অসম্মান অনাদরের পাত্র করবেন না| আপনার সঙ্গে আমাদের চুক্তির কথা স্মরণ করুন| আপনি সেই চুক্তি ভঙ্গ করবেন না| 22 বিদেশী মূর্ত্তিদের বৃষ্টি আনার ক্ষমতা নেই| আকাশেরও বৃষ্টি ঝরানোর শক্তি নেই| আপনিই আমাদের একমাত্র আশা ভরসা| আপনিই সব কিছুর স্রষ্টা|”

যেরেমিয়া 15

1 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “এমন কি যদি মোশি এবং শমূযেল আমার কাছে যিহূদার লোকদের হয়ে প্রার্থনা করে তাহলেও আমি তাদের প্রতি করুণা করব না, যিরমিয়| যিহূদার লোকদের আমার কাছে আসতে দিও না| ওদের চলে য়েতে বলো| 2 ওরা হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘আমরা কোথায় যাব?’ তুমি ওদের একথা বলো: প্রভু যা বললেন,‘আমি কিছু লোককে মৃত্যুর জন্য মনোনীত করেছি| তারা মরবে| আমি তরবারি দিয়ে নিহত হবার জন্য কিছু মানুষকে নির্বাচন করেছি| তারা তরবারির আঘাতেই মারা যাবে| আমি কিছু লোককে নির্বাচন করেছি অনাহারে মৃত্যুর জন্য| তারা অনাহারেই মারা যাবে| আমি কিছু লোককে বন্দী করে বিদেশে পাঠাবার জন্য নির্বাচন করেছি, তারা বিদেশে কয়েদীদের মতো বন্দী থাকবে| 3 আমি তাদের বিরুদ্ধে চার ধরণের ধ্বংসকারককে পাঠাব|’ এই হল প্রভুর বার্তা| ‘আমি তরবারি হাতে শএুকে পাঠাব তাদের মারতে| আমি সেই মৃতদেহগুলি টেনে নিয়ে য়েতে কুকুর পাঠাব| আমি চিল, শকুন এবং বন্য জন্তুদের পাঠাব তাদের মাংস খাওয়ার জন্য| 4 আমি যিহূদার লোকদের ভয়ঙ্কর এক উদাহরণ হিসেবে সারা বিশ্বের সামনে খাড়া করব| য়েহেতু যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের পুত্র মনঃশি জেরুশালেমে কুকর্ম করেছিল তাই আমিও যিহূদার সঙ্গে সেই একই জিনিষ করব|’ 5 “জেরুশালেম শহর কেউ তোমার জন্য দুঃখ অনুভব করবে না| কেউ দুঃখে তোমার জন্য কেঁদে উঠবে না| এমন কি তুমি কেমন আছো এ কথা জিজ্ঞাসা করবার দায কারো থাকবে না| 6 জেরুশালেম, তুমি আমায় ছেড়ে চলে গিয়েছিলে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “বারবার তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছো| তাই আমি তোমাকে শাস্তি দেব এবং ধ্বংস করব| তোমার শাস্তি পিছোতে পিছোতে আমি ক্লান্ত| 7 যিহূদার লোকদের আমি আমার কাঁটাযুক্ত দণ্ড দিয়ে তুলে আলাদা করে দেব| শহরের ফটকের সামনে থেকেই তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেব| আমার লোকরা বদলায নি| তাই আমি তাদের ধ্বংস করব| আমি তাদের ছেলেমেযেদের সরিয়ে নিয়ে যাব| 8 অনেক স্ত্রী তাদের স্বামীকে হারাবে| সমুদ্রে যত বালি আছে তার থেকেও বেশী সংখ্যার বিধ্বা সেখানে বাস করবে| আমি দুপুরে বয়ে আনব এক ধ্বংসকর্তাকে| সেই ধ্বংসকর্তা যিহূদার যুবকদের মাকে হত্যা করবে, যিহূদার লোকদের জন্য আমি শুধু ভয় আর যন্ত্রণা বয়ে আনবো| খুব শীঘ্রই আমি এটি ঘটাবো| 9 তাদের শএু তরবারি হাতে আক্রমণ করে হত্যা করবে| যিহূদার জীবিত সমস্ত লোককে তারা হত্যা করবে| এক জন মায়ের হয়ত সাত জন পুত্র থাকবে, কিন্তু তার সব পুত্রই মারা যাবে| সেই মহিলা শুধু কাঁদতেই থাকবে যতক্ষণ পর্য়ন্ত না তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়| সে মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ বিপর্য়স্ত হয়ে পড়বে| তার উজ্জ্বল দিনগুলি দুঃখের অন্ধকার গ্রাস করে নেবে|” 10 মা, আমি (যিরমিয়) দুঃখিত য়ে তুমি আমায় জন্ম দিয়েছো| আমিই হচ্ছি সেই ব্যক্তি যাকে পুরো দেশটিকে অভিযুক্ত ও সমালোচনা করতে হবে| আমি ধারদাতাও নই, ধারগ্রাহকও নই| তবু আমাকে প্রত্যেকে অভিশাপ দিচ্ছে| 11 প্রভু, আমি সত্যিই আপনাকে ভাল ভাবে সেবা করেছি| আমার শএুরা যখন আমায় বিপদে ফেলেছিল তখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি| 12 “যিরমিয় তুমি জানো য়ে কেউ লোহাকে চূর্ণ করতে পারে না| এমন কি পিতলকেও নয়| আমি উত্তরের়লোহার কথা বলছি| 13 যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি আছে| আমি সেই সব সম্পত্তি অন্যদের মধ্যে বিলিযে দেব| ঐ লোকদের ঐ সব সম্পত্তি কিনতে হবে না| কেন? কারণ যিহূদার লোকরা অনেক অনেক পাপ করেছে| তারা যিহূদার সর্বত্র পাপ করেছে| 14 যিহূদার লোকরা, তোমাদের আমি তোমাদের শএুর কাছে দাস করে রাখবে| অচেনা এক দেশে তোমরা দাসত্ব করবে| আমি প্রচণ্ড রুদ্ধ| আমার রোধ হল তপ্ত আগুনের মতোই এবং তোমরা তাতে পুড়ে মরবে|” 15 প্রভু, আপনি আমাকে বুঝতে পেরেছেন| আমাকে মনে রেখে আমাকে রক্ষা করুন| লোকরা আমাকে আঘাত করে চলেছে| ওদের য়োগ্য শাস্তি দিন| ওদের প্রতি আপনি য়ে ধৈর্য়্য়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন তাতে আমি য়েন ধ্বংস হয়ে না যাই| আমার সম্বন্ধে ভাবুন| আপনার জন্য য়ে কষ্ট ও যন্ত্রণা আমি ভোগ করছি সে ব্যাপারে একটু ভাবুন প্রভু| 16 আপনার বার্তা আমার কাছে পৌঁছেছিল| আপনার কথাগুলো আমার কাছে এসেছিল এবং সেগুলি আমি হজম করে ফেললাম| আপনার বার্তা আমাকে খুশী করেছিল| আমাকে আপনার নামে ডাকতে পারবার জন্য আমি খুশী হয়েছিলাম| আপনার নাম হল: “প্রভু সর্বশক্তিমান|” 17 আমি কখনও জনতার সঙ্গে বসিনি| য়েহেতু তারা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিল| আমি নিজেকে নিয়ে বসেছিলাম, কারণ আপনার প্রভাব আমার ওপর রয়েছে| আমার চারপাশে অসততার জন্যই আপনি আমাকে এোধ দিয়ে ভরে দিয়েছিলেন| 18 আমি বুঝতে পারি না কেন এখনও আমি ব্যাথা বোধ করি| আমি বুঝতে পারি না কেন আমার ক্ষত সেরে ওঠে না| প্রভু, আমার মনে হয় আপনি বদলে গিয়েছেন| আপনি হলেন শুকিয়ে যাওয়া ঝর্ণা| কিংবা হঠাত্‌ জলের প্রবাহ থেমে যাওয়া একটি ঝর্ণা| 19 তখন প্রভু বলেছিলেন, “যিরমিয়, তুমি নিজেকে বদলিযে আমার কাছে ফিরে এসো তাহলে তোমাকে শাস্তি দেব না| তুমি যদি নিজেকে পরিবর্তন করে আমার কাছে ফিরে আস তাহলেই তুমি আমার সেবা করতে পারবে| ঐসব মূল্যহীন কথা না বলে যদি তুমি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে পারো তবেই তুমি আমার হয়ে কথা বলতে পারবে| যিহূদার লোকদের নিজেদের বদলে ফেলে তোমার কাছে ফিরে আসতে হবে যিরমিয়| কিন্তু তুমি নিজেকে তাদের মতো করে বদলিও না| 20 আমি তোমাকে এমন শক্তিশালী করে তুলব য়ে লোকে ভাববে তুমি পিতলের দেওয়ালের মতো কঠিন| যিহূদার লোকেরা তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করলেও তোমাকে ওরা পরাজিত করতে পারবে না| কারণ আমি তোমার সঙ্গে আছি| আমি তোমাকে সাহায্য করব এবং আমিই তোমাকে রক্ষা করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 21 “আমি তোমাকে ঐসব দুষ্ট লোকদের হাত থেকে রক্ষা করব| ওরা তোমাকে ভয় দেখাবে| কিন্তু আমি তোমাকে ওদের হাত থেকে রক্ষা করবো|”

যেরেমিয়া 16

1 প্রভুর বার্তা আমার কাছে এসেছিল: 2 “যিরমিয় তুমি বিয়ে করতে পারবে না| এখানে তোমার কোন সন্তান থাকবে না|” 3 যিহূদার ছেলেমেযেদের সম্বন্ধে প্রভু এগুলি বললেন| এবং সেই সমস্ত ছেলেমেযেদের পিতা ও মাতার সম্বন্ধে প্রভু যা বললেন: 4 “ঐ লোকগুলোর ভয়ঙ্কর মৃত্যু আসবে| কেউ তাদের জন্য কাঁদবে না| তাদের জন্য কেউ চিতা জ্বালাবে না| মৃতদেহগুলি বিষ্ঠার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে| ওদের মৃত্যু ঘটবে একজন শএুর তরবারির আঘাতে অথবা তারা মারা যাবে অনাহারে| মৃতদেহগুলি শকুন এবং বন্য পশুদের খাদ্য হবে|” 5 সুতরাং প্রভু বললেন, “যিরমিয় কোন শ্রাদ্ধ বাড়ীতে য়েও না| তোমার তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার দরকার নেই| কারণ আমি আমার আশীর্বাদ ফিরিয়ে নিয়েছি| আমি যিহূদার লোকদের প্রতি দযা দেখাব না| আমি তাদের জন্য দুঃখও প্রকাশ করব না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 6 “যিহূদার সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ মানুষ সকলেই মারা যাবে| কেউ তাদের শবদেহ কবর দেবে না, কেউ কাঁদবেও না| কেউ তাদের জন্য শোক প্রকাশ করে মাথার চুল কামিয়ে ফেলবে না| 7 এন্দনরত লোকদের জন্য কেউ খাবার নিয়ে আসবে না| য়ে সমস্ত লোকরা তাদের অভিভাবকের মৃত্যুতে শোক করছে তাদের কোন ব্যক্তি আরাম দেবে না| যারা কাঁদবে তাদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থাও কেউ করে দেবে না| 8 “যিরমিয়, কোন উত্সব মুখর বাড়িতে যাবে না এবং সেই বাড়িতে কোন কিছু খেতেও বসবে না| 9 প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথাগুলি বললেন, ‘খুব শীঘ্রই আমি সমস্ত আনন্দ কোলাহলের শব্দ বন্ধ করে দেব| একটি ব্বিাহ সভায লোকেরা য়ে সব শব্দসমূহ করে আমি সে সব বন্ধ করে দেব| তোমার জীবন কালেই এগুলি ঘটবে| আমি এই কাজগুলি দ্রুত করব|’ 10 “যিরমিয়, যিহূদার লোকদের তুমি এই কথাগুলি জানিয়ে দাও| তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘প্রভু কেন আমাদের সম্বন্ধে এই ভয়ঙ্কর কথাগুলি বলেছেন? আমরা কি অন্যায় করেছি? আমাদের প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে আমরা কি পাপ করেছি?’ 11 তখন তুমি এগুলি তাদের অবশ্যই বলবে: ‘তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ত্যাগ করেছিল বলেই তোমাদের জীবনে এসব ভয়ঙ্কর জিনিষ আসবে|’ এই হল প্রভুর বার্তা| ‘তারা আমাকে ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের সেবা করেছিল| তারা অন্য দেবতাদের পূজা করেছিল| তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার বিধানকে অস্বীকার করে আমাকে ত্যাগ করেছিল| 12 কিন্তু তোমরা য়ে সব পাপ কাজ করেছ তা তোমাদের পূর্বপুরুষদের পাপকাজ থেকে অনেক খারাপ| তোমরা একগুঁযে, জেদী| তোমরা আমাকে অমান্য করে যা খুশী তাই করেছো| 13 তাই তোমাদের আমি এদেশের বাইরে ছুঁড়ে ফেলব| আমি তোমাদের জোর করে বিদেশে পাঠাব| এমন এক দেশে পাঠাব যা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও অচেনা| সেখানে তোমরা অন্যান্য মূর্ত্তিদের সেবা করতে পারবে| আমি তোমাদের কোন রকম সাহায্য করতে যাব না|’ 14 “লোকরা প্রতিশ্রুতি করো এবং বলো, ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত, যিনি আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন, সেই রকম নিশ্চিতরূপে| কিন্তু সময় এগিয়ে আসছে|” এই হল প্রভুর বার্তা, “যখন মানুষ আর ঐ কথা বলবে না| 15 লোকরা তখন নতুন কিছু বলবে| তারা বলবে, ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত যিনি আমাদের উত্তরের দেশ থেকে বার করে এনেছিলেন, সেই রকম নিশ্চিতভাবে|’ তিনি তাদের নিয়ে এসেছিলেন সেই সব দেশের বাইরে থেকে যেখানে তাদের তিনি পাঠিয়েছিলেন|’ কেন তারা একথা বলবে? কারণ আমি ইস্রায়েলীয়দের পূর্বপুরুষের মাটিতে ফিরিয়ে আনব| 16 “খুব শীঘ্রই আমি অনেক জেলেকে এদেশে পাঠাব” এই হল প্রভুর বার্তা| ঐ জেলেরা যিহূদার লোকদের ধরবে| তারপর আমি অনেক শিকারীকে এদেশে পাঠাব|তারা পাহাড়ে, পর্বতে, পাথরের খাঁজে যেখানেই যিহূদার লোকদের দেখতে পাবে, সেখানেই তাদের শিকার করবে| 17 তারা যা করে তার সবই আমি দেখতে পাচ্ছি| যিহূদার লোকরা যা করেছে তা আমার কাছে গোপন করা সম্ভব নয়| তাদের পাপ আমার কাছে অজানা নয়| 18 তাদের দুষ্ট কাজের জন্য আমি তাদের দ্বিগুণ পরিমাণ ফেরত্‌ দেব| তাদের প্রতিটি পাপের জন্য আমি তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দেব| কারণ তারা আমার দেশকে অপবিত্র করে দিয়েছে| তারা তাদের ভয়ঙ্কর মূর্ত্তিদের দিয়ে আমার দেশকে অপবিত্র করে তুলেছে| আমি ঐ মূর্ত্তিদের ঘৃণা করি| সেই জন্য আমি তাদের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করব|” 19 প্রভু, আপনি আমার শক্তি, আপনি আমার রক্ষক| আপনি বিপদের সময়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য এক নিরাপদ জায়গা| পৃথিবীর সমস্ত দেশ আপনার কাছে আসবে| তারা বলবে, “আমাদের পিতাদের দেশে ছিল মূর্ত্তি| তারা ঐ সমস্ত অসার মূর্ত্তিদের পূজা করেছিল| কিন্তু ঐ মূর্ত্তিরা এতটুকুও সাহায্য করেনি|” 20 মানুষ কি তার নিজের জন্য প্রকৃত দেবতাকে তৈরী করতে পারে? না তারা শুধু মূর্ত্তি বানাতে পারে| কিন্তু ঐ সব মূর্ত্তিরা প্রকৃত দেবতা নয়| 21 প্রভু বললেন, “যারা মূর্ত্তি বানায় সেই সব লোকদের আমি শিক্ষা দেব| ওদের আমি আমার ক্ষমতা ও শক্তির সম্বন্ধে শিক্ষা দেব| তাহলে তারা উপলব্ধি করতে পারবে য়ে আমিই ঈশ্বর| তারা জানবে আমিই প্রভু|”

যেরেমিয়া 17

1 “যিহূদার লোকদের পাপ এক জায়গায় লেখা আছে যেখানে সেইগুলো মোছা যায় না| লোহার কলম দিয়ে এবং ডগায হীরেদেওয়া কলম দিয়ে ঐ পাপগুলো পাথরের ওপর লেখা হয়েছে| এবং ঐ সব পাথরগুলি হল তাদের হৃদয়| ঐ সব পাপ লেখা হয়েছে তাদের উত্সর্গের বেদীর শৃঙ্গে| 2 তাদের সন্তানরা মনে রাখে সেই উত্সর্গের বেদীর কথা যা মূর্ত্তিসমূহকে উত্সর্গ করা হয়েছিল| তারা মনে রাখে সেই কাঠের খুঁটিগুলিকে য়েগুলো উত্সর্গ করা হয়েছিল আশেরাকে| তারা সেই সব জিনিষ মনে রাখে পাহাড় চূড়ায় এবং গাছের নীচে| 3 তারা মনে করবে উন্মুক্ত প্রান্তরে পর্বতের ওপরে কি হয়েছিল| যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি| আমি এই সব অন্য লোকদের বিলিযে দেব| সেই লোকরা তোমাদের দেশে মূর্ত্তিসমূহের সমস্ত উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করে দেবে| তোমরা সেই সমস্ত জায়গায় পূজা করেছো| এবং সেটা একটা পাপ| 4 আমি তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছিলাম তা তোমরা হারাবে| তোমাদের শএুদের আমি তোমাদের দেশ নিয়ে নিতে দেব এবং তোমাদের তাদের দাস হতে দেব এমন এক দেশে য়েটা তোমরা জানো না| কারণ আমি ভীষণ রুদ্ধ| আমার রোধ হল গনগনে আগুনের মতো এবং তোমরা সেই আগুনের লেলিহান শিখায় চির দিনের জন্য পুড়ে ছাই হয়ে যাবে|” 5 প্রভু এগুলি বললেন, “যারা অন্যদের বিশ্বাস করে, তাদের জীবনে অমঙ্গল ঘটবে| অন্যদের শক্তির ওপর যারা ভরসা করে থাকে তাদের ক্ষেত্রেও অমঙ্গল ঘটবে| কারণ ঐ লোকরা প্রভুর প্রতি বিশ্বাস হারিযেছে| 6 ঐ সমস্ত লোকরা হল জনমানবহীন মরুভূমির কাঁটা ঝোপের মতো| তপ্ত, শুষ্ক এবং অনুর্বর মাটিতেও তারা জন্মায়| সেই সব ঝোপঝাড় জানে না ঈশ্বর কত ভাল জিনিস দিতে পারেন| 7 কিন্তু য়ে ব্যক্তি প্রভুতে বিশ্বাস রাখবে, সে প্রভুর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হবে না| কারণ প্রভু তাকে দেখাবেন য়ে তাঁকে বিশ্বাস করা যায়| 8 এই ব্যক্তি জলের ধারে রোপণ করা গাছের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠবে| য়ে গাছের লম্বা শিকড় জলের সন্ধান পাবে, গ্রীষ্মের সময় সেই গাছ ভীত হবে না| সেই গাছের পাতা সর্বদা সবুজ থাকবে| খরার বছরেও সে নিশ্চিন্ত থাকবে| ফলদান থেকে সে কখনও বিরত থাকবে না| 9 “মানুষের মন খুবই কৌশলপূর্ণ| তার অসুস্থ অবস্থার কোন চিকিত্‌সা নেই| কিন্তু আমিই প্রভু এবং আমি মানুষের হৃদয়ও পরিষ্কার দেখতে পাই| আমি এক জন মানুষের মনকে পরীক্ষা করতে পারি| আমি নির্ধারণ করতে পারি কার কি থাকা উচিত্‌| আমি এক জন মানুষের কর্মের ফল নির্ধারণ করতে পারি| 10 11 কখনো কখনো একটা পাখী অন্যের ডিমে তা দিয়ে তাকে ফোটায| ঠিক একই ভাবে একজন মানুষ ঠকায এবং অন্যের টাকা আত্মসাত্‌ করে| সেই টাকা সে তার অর্ধেক জীবনে উড়িযে দেয়| জীবনের শেষ পর্য়াযে সে বুঝতে পারে য়ে সে কত বড় নির্বোধ|” 12 একদম প্রথম থেকেই আমাদের উপাসনাগৃহে ছিল ঈশ্বরের মহিমান্বিত সিংহাসন| তা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান| 13 প্রভু আপনিই ইস্রায়েলের আশা| প্রভু আপনি জীবন্ত ঝর্ণার মত| যদি একজন মানুষ আপনার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয, তার জীবন হয়ে যাবে খুবই ছোট| 14 প্রভু, আমাকে সারিয়ে তুলুন এবং আমি সত্যি সত্যিই সেরে উঠব| আমায় রক্ষা করুন, তাহলে আমি সত্যিই রক্ষা পাব| প্রভু, আমি আপনার প্রশংসা করি! 15 যিহূদার লোকরা আমাকে প্রশ্ন করেই চলেছে| তারা বলছে, “যিরমিয়, প্রভুর বার্তার কি হল? আমাদের দেখতে হবে ঐ বার্তা সত্যি হবে|” 16 প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে দৌড়ে পালাই নি বরং আমি আপনাকেই অনুসরণ করে চলেছি| আমি আপনারই ইচ্ছে মতো মেষপালক হয়েছি| আমি কখনোই চাইনি ভয়ঙ্কর দিন আসুক| প্রভু আমি যা বলেছিলাম, তা সব আপনি জানেন| যা ঘটেছে তার সব কিছুই আপনি নিজের চোখে দেখেছেন| 17 প্রভু আমাকে ধ্বংস করবেন না| আমি অশান্তির সময়গুলোতে আপনার ওপরে নির্ভর করে থাকি| 18 লোকরা আমাকে নির্য়াতন করছে| ওদের লজ্জিত করুন| কিন্তু আমাকে নিরাশ করবেন না| ঐ মানুষদের ভয় পেতে দিন| কিন্তু আমাকে ভীত করে তুলবেন না| প্রলয়ের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলো আমার শএুদের জীবনে আসুক| তাদের চূর্ণ করুন| বারবার তাদের চূর্ণ করুন| 19 প্রভু, আমাকে এই কথাগুলি বললেন: “যিরমিয়, যাও লোকদের ফটকের কাছে গিয়ে দাঁড়াও য়েটার মধ্যে দিয়ে যিহূদার রাজা ভেতরে ঢোকে এবং বাইরে যায়| লোকদের আমার বার্তা শোনাও এবং তারপর জেরুশালেমের প্রত্যেকটি ফটকে গিয়ে একই কাজ করো|” 20 “ঐ লোকদের বলো: ‘প্রভুর বার্তা শোন| শোন যিহূদার রাজা এবং যিহূদার সাধারণ মানুষ| এই ফটক দিয়ে জেরুশালেমে যাতায়াত করা প্রত্যেকটি মানুষ আমার কথা শোন! 21 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: সতর্ক থেকো, তোমরা বিশ্রামের দিনে জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না| 22 বিশ্রামের দিনে ঘরের মালপত্রও নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না| সেদিন কাজেও য়েতে পারবে না| বিশ্রামের দিন তোমরা পবিত্র দিন হিসেবে যাপন করবে| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও এই আদেশ দিয়েছিলাম| 23 কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি| তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে অমান্য করেছিল| তোমাদের পূর্বপুরুষরা ছিল একগুঁযে ও জেদী| আমি তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি| তারা আমার কোন কথা শোনেনি| 24 কিন্তু তোমরা মন দিয়ে আমার কথা শোন| আমাকে মান্য করো|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা: “‘বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র বয়ে এনো না| বিশ্রামের দিন কাজ করা বন্ধ রেখো এবং ঐ দিনটি পবিত্র ভাবে কাটাও| 25 “‘যদি তোমরা আমার আদেশ মান্য করো, তাহলে দাযূদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজগণ জেরুশালেমের ফটক দিয়ে প্রবেশ করবে| রথে চড়ে, ঘোড়ায় চড়ে বিভিন্ন রাজারা আসবে| যিহূদা এবং জেরুশালেমের নেতারা হবে সেই রাজা এবং জেরুশালেম চিরকালের জন্য বসবাসকারী লোক পাবে| 26 যিহূদা শহর থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে| জেরুশালেমের আশপাশের ছোট্ট গ্রাম থেকে, বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে, পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশ থেকে এবং নেগেভ থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে| ওরা সবাই সঙ্গে নিয়ে আসবে ধুপধূনা, হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য| তারা সেই সমস্ত উপহার এবং নৈবেদ্য আনবে প্রভুর উপাসনা গৃহের জন্য| 27 “‘কিন্তু যদি তোমরা আমাকে অমান্য করো এবং আমার কথা না শোন তাহলে অমঙ্গল ঘনিয়ে আসবে| যদি তোমরা বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে বোঝা বহন করো এবং তাকে অপবিত্র করো, তাহলে আমি জেরুশালেমের ফটকগুলোতে আগুন বালিয়ে দেব, সেই আগুন যা নেভানো যায় না| সেই আগুন জেরুশালেমের ফটক থেকে শুরু করে সব কিছু পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে|”‘

যেরেমিয়া 18

1 যিরমিয়র কাছে প্রভুর এই বার্তা এসেছিল: 2 “যিরমিয় যাও, কুমোরের বাড়ি যাও| কুমোরের ঘরে আমি তোমাকে আমার বার্তা জানাব|” 3 তাই আমি কুমোরের বাড়ি গিয়েছিলাম| আমি দেখেছিলাম কুমোর তার চাকায় কাদামাটি নিয়ে কাজ করছে| 4 কাদামাটি দিয়ে সে একটি পাত্র তৈরী করছিল| কিন্তু কোথাও কোন গণ্ডগোল হচ্ছিল| তাই কুমোর আবার কাদামাটি চড়াচ্ছিল নতুন পাত্র তৈরীর জন্য| মনের মতো করে হাত দিয়ে সে পাত্রের আকার গড়তে চাইছিল| 5 তখন প্রভুর বার্তা এসে পৌঁছালো আমার কাছে: 6 “ইস্রায়েলের পরিবার, তোমরা জানো য়ে আমি (ঈশ্বর) তোমাদের সঙ্গে এই রকমই করতে পারি| তোমরা হলে কুমোরের হাতে রাখা কাদামাটি আর আমি হলাম কুমোর| 7 হয়তো এমন সময় আসতে পারে যখন আমি তোমাদের একটি দেশ অথবা একটি রাজ্যের সম্বন্ধে কথা বলব| আমি হয়ত বলতে পারি য়ে আমি ঐ দেশটিকে গড়ে তুলব| আবার এও বলতে পারি য়ে আমি ঐ দেশটি ও তার রাজধানীকে ধ্বংস করব| 8 কিন্তু ঐ জাতির লোকরা হয়তো তাদের হৃদয় ও মনের পরিবর্তন করতে পারে| হয়তো তারা আর পাপ কাজসমূহ করবে না| তখন আমিও মত পরিবর্তন করব| তাহলে ঐ জাতির জন্য আমি আর ধ্বংস বয়ে আনব না| 9 আবার সেখানে অন্য এক সময় আসতে পারে যখন আমি আরেকটি জাতির কথা বলবো| আমি হয়ত বলব য়ে আমি ঐ জাতিটিকে গড়ে তুলব এবং স্থাপন করব| 10 কিন্তু আমি যদি দেখি ঐ জাতি খারাপ কাজ করছে এবং আমাকে অমান্য করছে, তাহলে আমাকেও ঐ জাতির জন্য ভাল কাজ করবার য়ে পরিকল্পনা করেছিলাম তার সম্বন্ধে আবার বিবেচনা করতে হবে| 11 “অতএব, যিরমিয়, যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোকদের এটা বলো, ‘প্রভু যা বলেছেন তা হল: এই মূহুর্তে আমি তোমাদের জন্য অশান্তি তৈরী করছি| আমি তোমাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করছি| সুতরাং অসত্‌ কাজ করা বন্ধ করো| প্রত্যেকে ভালো হওয়ার চেষ্টা করো|’ 12 কিন্তু যিহূদার লোকরা উত্তর দেবে, ‘চেষ্টা করে আমাদের বদলাতে চাইলে কোন লাভ হবে না| আমরা যা চাইছি তাই করে যাব| প্রত্যেকেই তার শযতান হৃদয় যা চাইছে তাই করে যাচ্ছে|”‘ 13 প্রভু যা বলেছেন শোন: “অন্য দেশগুলিকে এই প্রশ্নগুলো করো: ‘ইস্রায়েল য়ে খারাপ কাজগুলো করেছে সেইগুলো অন্য কোন লোককে কখনও করতে শুনেছ?’ ইস্রায়েল হল ঈশ্বরের বিশেষ কেউ| ইস্রায়েল হল ঈশ্বরের কনের মতো| 14 তোমরা জানো য়ে প্রস্তরখণ্ড কখনও নিজের ইচ্ছেয় মাঠ ছেড়ে য়েতে পারে না| তোমরা জানো য়ে লিবানোনের পর্বত শৃঙ্গের বরফ কখনোও গলে যায় না| তোমরা জানো য়ে শৈত্য প্রবাহ কখনও শুষ্ক হয়ে যায় না| 15 কিন্তু আমার লোকরা আমাকে ভুলে অসার মূর্ত্তিদের সামনে নৈবেদ্য সাজাচ্ছে| আমার লোকরা তাদের এই কৃতকার্য়ের জন্য হোঁচট খাচ্ছে| তারা তাদের পূর্বপুরুষদের তৈরী পুরানো পথেও হোঁচট খাচ্ছে| আমার লোকরা আমাকে ভালো রাস্তায় অনুসরণ করার চেয়ে বরং পিছনের রাস্তায় এবং খারাপ রাস্তা দিয়ে হাঁটবে| 16 সুতরাং যিহূদা শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| লোকরা তাদের দেশের এই করুণ অবস্থা দেখে প্রচণ্ড আঘাত পাবে| তারা শুধু শিস্ দিতে দিতে মাথা নাড়বে| 17 আমি যিহূদার লোকদেরও ছড়িয়ে দেব| তারা তাদের শএুদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে| আমি পূর্বদিকের ঝড়ের মত যিহূদার লোকদের ছত্রভঙ্গ করে দেব| ধ্বংস করে দেব ওদের| ওরা দেখতে পাবে আমি ওদের সাহায্য না করে দিব্য়ি ওদের ছেড়ে চলে যাচ্ছি|” 18 তখন যিরমিয়র শএুরা বলল, “এসো আমরা একত্রে মিলে যিরমিয়র বিরুদ্ধে চএান্তের উপায় বের করি| যাজকের দেওয়া অনুশাসনের শিক্ষা নিশ্চয়ই হারিযে যাবে না এবং জ্ঞানীদের উপদেশ আমাদের সঙ্গে আছে| ভাব্বাদীদের কথাও আমাদের সঙ্গে এখনও আছে| সুতরাং চলো যিরমিয়র বিরুদ্ধে আমরা স্য়ুা প্রচার চালাই| এই প্রচারই তাকে শেষ করে দেবে| তার কোন কথাকেই আমরা পাত্তা দেব না|” 19 প্রভু আমার কথা শুনুন! আমার যুক্তি শুনে বিচার করুন কে সঠিক| 20 আমি লোকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে খারাপ জিনিষ প্রতিদান দিচ্ছে| তারা আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছে এবং হত্যা করতে চাইছে| প্রভু, ঐ লোকদের ভালো করবার জন্য এবং ওদের ওপর রাগ করা বন্ধ করবার জন্য আপনার কাছে কত ভিক্ষা করেছিলাম মনে করুন| 21 সুতরাং ওদের ছেলেমেযেরা খরায় অনাহারে মরল| শএুরা ওদের পরাজিত করুক| তাদের মহিলারা সন্তান হারাক| তারা বিধ্বাও হয়ে যাক| যিহূদার সমস্ত পুরুষকে হত্যা করা হোক| ওদের স্ত্রীরা বিধ্বার জীবনযাপন করুক| যুদ্ধে মারা যাক যিহূদার সমস্ত যুবক| 22 ঘরে ঘরে কান্নার রোল উঠুক| যখন আপনি হঠাত্‌ ওদের বিরুদ্ধে শএুর আক্রমণ ঘটাবেন তখন ওরা কাঁদুক| এই সব কিছু ঘটুক কারণ আমার শএুরা আমাকে ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিল| তারা আমার জন্য ফাঁদ পেতে রেখেছিল তার মধ্যে পড়বার জন্য| 23 প্রভু, আমাকে হত্যা করবার জন্য ওরা য়ে পরিকল্পনা করেছিল আপনি তা জানেন| ওদের এই অপরাধ ক্ষমা করবেন না| ওদের পাপকে মুছে দেবেন না| আমার শএুদের ধ্বংস করে দিন| যখন আপনি রুদ্ধ হবেন তখন ওদের শাস্তি দেবেন!

যেরেমিয়া 19

1 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, “যিরমিয়, যাও কুমোরের কাছ থেকে এংটা মাটির পাত্র কিনে আনো| 2 খর্ত্রর ফষ্টকের কাছে বেন-হিন্নোম উপত্যকায় যাও| সঙ্গে কিছু নেতা ও যাজককে নাও| সেখানে তাদের আমি যা বলেছি তা বলো| 3 তাদের বলো, ‘যিহূদার রাজা এবং জেরুশালেমের মানুষ, প্রভুর বার্তা শোন! প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল এই: আমি খুব শীঘ্রই এই স্থানে ভয়ঙ্কর কিছু ঘষ্টাবো| প্রত্যেকে এই ঘষ্টনার কথা শুনে হতবাক হয়ে যাবে, ভয় পাবে| 4 যিহূদার লোকরা আমাকে পরিত্যাগ করেছে বলে আমি এগুলো ঘষ্টাবো| তারা এই দেশটাকে বিদেশী দেবতাদের জায়গা বানিয়ে তুলেছে| যিহূদার লোকরা অন্য দেবতাদের জন্য এই জায়গায় হোমবলি দিয়েছে| তারা অনেক আগে ঐ মূর্ত্তির পূজা করত না| তাদের পূর্বপুরুষরাও ঐ নতুন মূর্ত্তির পূজা করত না| এগুলি সব অন্যান্য দেশের নতুন দেবতা| যিহূদার রাজা এই দেশের মাটি নিরীহ শিশুদের রক্তে ভিজিযেছে| 5 যিহূদার রাজারা এই উচ্চ স্থানগুলি বাল মূর্ত্তির জন্য তৈরী করেছে| সেই স্থানকে তারা নিজেদের সন্তানদের বাল মূর্ত্তিকে হোমবলি উত্সর্গ হিসেবে ব্যবহার করত| বালের মূর্ত্তিকে হোমবলি দেওয়ার জন্য তারা নিজের সন্তানদের পুড়িয়ে মেরেছে| আমি তাদের এই সব করতে বলিনি| আমি বলিনি তাদের সন্তানকে এভাবে নৈবেদ্য হিসেবে বলি দিতে| আমি কখনো এংথা ভাবতেও পারি না| 6 এখন মানুষ এই জায়গাকে তোফত ও হিন্নোম উপত্যকা বলে ডাকে| কিন্তু আমি তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছি| এই বার্তাটি হল প্রভুর কাছ থেকে: “দিন আসছে, যখন মানুষ এই জায়গাকে নিধন উপত্যকা বলে সম্বোধন করবে| 7 এই জায়গাতেই আমি যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোকদের পরিকল্পনাগুলি ধ্বংস করব| শএু এই লোকদের তাড়া করবে এবং আমি তরবারির আঘাতে তাদের মৃত্যু দেখব| তাদের মৃতদেহ শকুন এবং বন্য জন্তুরা ছিঁড়ে খাবে| 8 আমি এই শহর পারোপুরি ধ্বংস করে দেব| জেরুশালেমের পাশ দিয়ে যাবার সময় লোকরা শিস্ দিতে দিতে মাথা নাড়বে| যখন তারা দেখবে এই শহর কি করে ধ্বংস হয়েছিল তখন তারা আশ্চর্য়্য় হয়ে যাবে| 9 শএু তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে এ শহর ঘিরে ফেলবে| সৈন্যরা লোকদের খাদ্যের সন্ধানে শহরের বাইরে য়েতে দেবে না| ফলে তারা অনাহারে কষ্ট পাবে| অনাহারে যন্ত্রণায় তারা তাদের নিজের সন্তানদের শরীর ছিঁড়ে খাবে| এবং তারপর তারা নিজেরাই একে অন্যের মাংস ছিঁড়ে খাবে|’ 10 যিরমিয়, লোকদের এই কথাগুলি বলো| এবং যখন তারা তোমাকে লক্ষ্য করবে তখন তুমি পাত্রটিকে ভেঙ্গে ফেলবে| 11 সেই সময় এই কথাগুলি বলো: ‘প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, এই মাটির পাত্রের মতোই আমি যিহূদা এবং জেরুশালেমকে ভেঙ্গে গুঁড়িযে দেব| য়েমন ঐ মাটির পাত্রটিকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না| যিহূদার সম্বন্ধেও সেই এংই ব্যাপার হবে| যিহূদার সমস্ত মৃত লোকদের তোফতে কবর দেওয়া হবে যতক্ষণ সেখানে কবর দেওয়ার মতো জায়গা অবশিষ্ট থাকবে| 12 আমি যিহূদার মানুষদের অবস্থাও তোফতের মতো করব|’ এই হল প্রভুর বার্তা| 13 ‘জেরুশালেমের প্রত্যেকটি বাড়ি তোফতের মতোই অপবিত্র হয়ে গিয়েছে| এমন কি রাজাদের প্লাসাদগুলিও তোফতের মতো ধ্বংস হয়ে যাবে| কেননা, ঐ সব বাড়ির ছাদে বসে মানুষ মূর্ত্তিসমূহের পূজা করেছে| তারা নক্ষত্রদেরও পূজা করেছে এবং তাদের সম্মান জানাতে তাদের উদ্দেশ্যে হোমবলি দিয়েছে| তারা মূর্ত্তিসমূহের পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছে|”‘ 14 এরপর যিরমিয় তোফত ছেড়ে চলে গেল, সেই জায়গা যেখানে প্রভু তাকে ভাব্বাণী করতে পাঠিয়েছিলেন| যিরমিয় প্রভুর উপাসনাগৃহে গেল এবং উপাসনাগৃহের চত্বরে উন্মুক্ত জমিতে গিয়ে দাঁড়াল| যিরমিয় সমস্ত মানুষকে বলল: 15 “প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বললেন: ‘আমি বলেছিলাম, আমি জেরুশালেম এবং তার চারপাশের গ্রামগুলিতে অনেক দুর্বিপাক আনব| খুব শীঘ্রই ঐ ঘষ্টনা ঘষ্টাবো| কারণ ঐ লোকরা ভীষণ জেদী| ওরা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছে এবং আমাকে অমান্য করেছে|”‘

যেরেমিয়া 20

1 পশ্হূর ছিল এক যাজক| প্রভুর উপাসনাগৃহের সে ছিল প্রধান যাজক| পশ্হূরের পিতার নাম ছিল ইম্মের| পশ্হূর শুনতে পেল প্রভুর উপাসনাগৃহের চত্বরে যিরমিয় ধর্মোপদেশ প্রচার করছে| 2 তাই সে ভাব্বাদী যিরমিয়কে প্রহার করেছিল| সে যিরমিয়র হাত এবং পাগুলি কাঠের গুঁড়ির মাঝখানে বেঁধে রেখেছিল| এটা ঘটেছিল প্রভুর মন্দিরে বিন্যামীনের উচ্চতর ফটকে| 3 পরদিন যখন পশ্হূর যিরমিয়কে সেই কাঠের খণ্ডের ভেতর থেকে বের করে আনল তখন যিরমিয় পশ্হূরকে বলেছিল, “তোমার, পশ্হূর নামটি প্রভুর দেওয়া নয়| এখন প্রভু তোমার নাম দিলেন সর্বদিকের সন্ত্রাস| 4 এটা তোমার নাম, কারণ প্রভু বলেছেন, ‘শীঘ্রই আমি তোমাকে তোমার নিজের কাছেই একটি সন্ত্রাসে পরিণত করব| তুমি তোমার সমস্ত বন্ধু-বান্ধবের কাছেও সন্ত্রাস হিসেবে পরিচিতি পাবে| তুমি লক্ষ্য করবে শএুর তরবারি তোমার বন্ধুদের হত্যা করছে| আমি যিহূদার সমস্ত লোকদের বাবিলের রাজাকে দিয়ে দেব| তিনি তাদের বাবিলে নিয়ে যাবেন| তাঁর সৈন্যরা তাদের তরবারি দিয়ে মেরে ফেলবে| 5 ধনসম্পদ অর্জন করতে জেরুশালেমের মানুষ পরিশ্রম করেছিল| কিন্তু আমি তাদের সমস্ত ধনসম্পদ শএুদের দিয়ে দেব| যিহূদার রাজাদেরও প্রচুর ঐশ্চর্য় ছিল| আমি সেই ঐশ্বর্য়ও শএুদের দিয়ে দেব| শএুবাহিনী সেই সব ধনসম্পদ ঐশ্বর্য় সমেত যিহূদার লোকদেরও বাবিলে নিয়ে যাবে| 6 পশ্হূর, তুমি এবং তোমার পরিবারও এর থেকে মুক্তি পাবে না| তোমাকে বাধ্য করা হবে বাবিলে চলে যাওয়ার জন্য| তোমার মৃত্যু হবে বাবিলে| সেখানেই তোমাকে সমাহিত করা হবে| তুমি তোমার বন্ধুদের কাছে মিথ্যা ধর্মোপদেশ প্রচার করেছিলে| তুমি বলেছো এটা ঘটবে না| কিন্তু তোমার বন্ধুরাও বাবিলে মারা যাবে এবং সেখানেই তাদের সমাহিত করা হবে|”‘ 7 প্রভু, আপনি কৌশল করেছিলেন এবং আমি প্রতারিতাহয়েছিলাম| আপনি আমার চেয়ে শক্তিশালী তাই আপনি জিতে গেলেন| আমি মানুষের কাছে হাস্যকর হয়ে গেলাম | ওরা আমাকে নিয়ে সারাদিন ধরে হাসাহাসি করল| 8 আমি যখনই কথা বলি, হিংসা ও ধ্বংসের বিরুদ্ধে চেঁচাই| প্রভুর বার্তা আমি লোকেদের জানিয়ে এসেছি| কিন্তু লোকরা আমাকে অপমান করেছে, আমাকে নিয়ে উপহাস করেছে| 9 কখনো আমি নিজে নিজে বলেছি, “আমি প্রভুকে ভুলে যাব| প্রভুর নাম করে আর কথা বলব না|” যখন আমি একথা বলি তখনই প্রভুর বার্তা আমার শরীরের ভেতরে আগুনের মতো জ্বালায পোড়ায| হাড়ের ভেতর সেই জ্বালা পোড়া এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে য়ে আমি আর ঠিক থাকতে পারি না, ক্লান্ত হয়ে পড়ি| প্রভুর বার্তা শরীরের ভেতরে আর ধরে রাখতে পারি না| 10 আমি শুনতে পাচ্ছি লোকরা আমার বিরুদ্ধে ফিসফিস করে কথা বলছে| সব জায়গায় একই কথা শুনে আমি ভয় পাই| এমন কি আমার বন্ধুরাও আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে| লোকরা আমার ভুল করবার অপেক্ষায রয়েছে| তারা বলছে, “চলো আমরা একটা মিথ্য়ে কথা বলি য়ে সে একটা ভীষণ খারাপ কাজ করেছে| অসত্‌ কাজ করি| আমরা হয়তো যিরমিয়কে প্রতারণাপূর্বক কৌশল করতে পারব| তাহলে পরিশেষে আমরা তার হাত থেকে মুক্তি পাবো| তারপর আমরা তাকে বন্দী করব এবং প্রতিশোধ নেব|” 11 কিন্তু প্রভু আমার সঙ্গে আছেন| প্রভু একজন শক্তিশালী সৈন্যের মত| তাই লোকরা যারা আমাকে তাড়া করছে তারা হোঁচট খাবে| তারা আমাকে হারাতে পারবে না| তারা নিজেরাই হেরে গিয়ে হতাশ হবে| তারা এমন অপমানিত হবে য়ে সেই লজ্জা তারা কখনো ভুলতে পারবে না| 12 সর্বশক্তিমান প্রভু তুমি সত্‌ লোকদের পরীক্ষা করো| তুমি আমাদের হৃদয়ের এবং মনের ভেতর গভীরভাবে দেখ| আমি তোমার সামনে ঐ সব লোকদের বিরুদ্ধে যুক্তিসমূহ এনেছিলাম যাতে হয়ত আমি দেখতে পাই য়ে তুমি ওদের শাস্তি দেবে| 13 প্রভুর কাছে গান কর! তাঁর প্রশংসা কর| প্রভু অসহায় মানুষকে ক্ষতিকর মানুষের কবল থেকে রক্ষা করেন| 14 অভিশাপ দাও সেই দিনটিকে য়েদিন আমি জন্ম নিয়েছিলাম| য়েদিন আমার মা আমাকে পেয়েছিল সেই দিনটিকে আশীর্বাদ কোরো না| 15 অভিশাপ দাও সেই মানুষটিকে য়ে আমার পিতাকে আমার জন্ম সংবাদ দিয়েছিল| সে বলেছিল, “তোমার একটি পুত্র সন্তান হয়েছে|” সে আমার পিতাকে এই সংবাদ দিয়ে খুশী করেছিল| 16 ঐ মানুষটিরও দশা হোক সেই সব শহরের মতো য়েগুলো প্রভু ধ্বংস করেছেন| প্রভু ঐ শহরগুলির ওপর কোন করুণা দেখান নি| ঐ মানুষটি য়েন প্রত্যেকদিন সকালে যুদ্ধের আর্তনাদ শুনতে পায়| দুপুর বেলায সে যুদ্ধনাদ শুনুক| 17 কারণ সে আমাকে মাতৃগর্ভে থাকাকালীন হত্যা করেনি| সে যদি আমাকে হত্যা করত তাহলে আমার কবর হত| আমার মাতৃগর্ভ এবং আমি কখনও জন্মগ্রহণই করতাম না| 18 আমাকে কেন আমার মাতৃগর্ভ থেকে বাইরে আসতে হল? আমি এই পৃথিবীতে যা কিছু দেখেছি তা হল দুঃখ এবং সমস্যাসমূহ| এবং আমার জীবন শেষ হবে দুঃখে ও অপমানে|

যেরেমিয়া 21

1 যিরমিয়র কাছে এই বার্তা এসেছিল যখন যিহূদার রাজা সিদিকিয় যিরমিয়র কাছে দুজন লোককে পাঠিয়েছিল: পশ্হূর এবং যাজক সফনিয় তখন এই বার্তা যিরমিয়র কাছে এসেছিল| পশ্হূর ছিল মল্কিযের পুত্র এবং সফনিয় ছিল মাসেযের পুত্র| পশ্হূর এবং সফনিয় যিরমিয়র জন্য একটি বার্তা বয়ে এনেছিল| 2 পশ্হূর ও সফনিয় যিরমিয়কে বলেছিল, “আমাদের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো| প্রভুকে জিজ্ঞেস করো কি ঘটতে চলেছে| আমরা জানতে চাই কারণ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর আমাদের আক্রমণ করেছে| হয়তো প্রভু আমাদের জন্য অতীতে য়েমন করেছিলেন তেমনি চমত্কার ও শক্তিশালী জিনিষগুলি তিনি করবেন| প্রভুই হয়তো নবূখদ্রিত্‌সরকে আমাদের প্রতি আক্রমণ থেকে বিরত করবেন|” 3 তখন যিরমিয়, পশ্হূর এবং সফনিয়কে উত্তরে বলল, “রাজা সিদিকিয়কে বলো: 4 প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল: ‘তোমার অস্ত্র সম্ভার আছে| এবং সেই অস্ত্র সম্ভার দিয়ে তুমি বাবিলের রাজা এবং বাবিলবাসীদের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করেছো| কিন্তু আমি তোমার সমস্ত অস্ত্র সম্ভার নষ্ট করে দেব| ওগুলো আর কোন কাজেই লাগবে না|“‘বাবিলের রাজার সৈন্যরা শহর ঘিরে ফেলছে| শীঘ্রই আমি তাদের জেরুশালেমের অভ্য়ন্তরে নিয়ে আসব| 5 বয়ং আমি তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| যিহূদার লোকেদের, আমি আমার শক্তিশালী এই হাত দিয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব| আমি তোমাদের ওপর প্রচণ্ড রুদ্ধ এবং আমি কতখানি রুদ্ধ তা বোঝানোর জন্যই আমি তোমাদের বিরুদ্ধে কঠিন যুদ্ধ করব| 6 আমি সমস্ত জেরুশালেমবাসীকে হত্যা করব| হত্যা করব পশুদেরও| তারা একটি ভয়ঙ্কর রোগে মারা যাবে য়েটি সারা শহরে ছড়িয়ে যাবে|”‘ 7 ঐটি ঘটবার পর, এই হল প্রভুর বার্তা, “‘আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের হাতে যিহূদার রাজা সিদিকিয় ও তার মন্ত্রী মণ্ডলীকে তুলে দেব| জেরুশালেমে যারা মহামারী, যুদ্ধ এবং অনাহারের পরও জীবিত থাকবে তাদেরও আমি তুলে দেব নবূখদ্রিত্‌সরের হাতে| রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের সেনাবাহিনী যিহূদার লোককে হত্যা করতে চাইবে| তাই যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোক মারা যাবে তরবারির আঘাতে| নবূখদ্রিত্‌সর অবশ্য কোন দযা দেখাবে না| সে ঐ লোকদের জন্য কোন রকম দুঃখও অনুভব করবে না|’ 8 “জেরুশালেমের লোককে এটাও বলে দাও| প্রভু এই কথাগুলি বললেন: ‘আমি তোমাদের জীবন এবং মৃত্যুর মধ্যে বাছতে দেব| 9 জেরুশালেমে যারা বাস করে তারা মরবে| তারা মারা যাবে তরবারির আঘাতে, নাহলে মহামারীতে নয়তো অনাহারে| কিন্তু কেউ যদি জেরুশালেম থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাবিল সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করে তাহলে সে বেঁচে যাবে| পুরো শহরটাই বাবিলীয সৈন্য ঘিরে রেখেছে| কেউ বাইরে য়েতে পারবে না এবং শহরের ভেতর খাবার আনতে পারবে না| কিন্তু কেউ যদি বাইরে যায় এবং বাবিলের সৈন্যের কাছে আত্মসমর্পণ করে, সে তার জীবন রক্ষা করবে| 10 আমি ঠিক করেছি জেরুশালেম শহরকে বিপদে জর্জরিত করে দেব কিন্তু কোন সাহায্য করব না|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা ‘আমি জেরুশালেম শহর বাবিলের রাজাকে দিয়ে দেব| সে এই শহরে আগুন লাগিয়ে দেবে|” 11 “এই বার্তা যিহূদার রাজপরিবারকে জানিয়ে দাও: প্রভুর বার্তা শোন| 12 দাযূদ পরিবার, প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ‘তুমি প্রতিদিন লোকদের ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে বিচার করবে| অভিযুক্তদের অপরাধীদের হাত থেকে বাঁচাবে| যদি তুমি তা না করো তাহলে আমি রুদ্ধ হব| আমার রোধ হল আগুনের মতো| একবার সেই রোধর আগুন জ্বললে কেউ আর তা নেভাতে পারবে না| এটি ঘটবে কারণ তোমরা পাপ কাজ করেছিলে|’ 13 “জেরুশালেম, আমি তোমার বিরুদ্ধে| তুমি পাহাড়ের চূড়ায় বসে থাকো| তুমি এই উপত্যকার ওপর রাণীর মত বসে থাকো| জেরুশালেমের লোকরা তোমরা বলছো, ‘কেউ আমাদের আক্রমণ করতে পারে না| কেউ আমাদের এই দূর্গসমন্বিত শহরগুলিতে প্রবেশ করতে পারে না|’ কিন্তু প্রভুর এই বার্তা শোন| 14 ‘তুমি য়োগ্য শাস্তি পাবে| আমি তোমার অরণ্যে আগুন লাগাবো| সেই আগুন তোমার চারিদিকের সব কিছু পুড়িয়ে দেবে|”‘

যেরেমিয়া 22

1 প্রভু বললেন: “যিরমিয়, রাজপ্রাসাদে যাও| যিহূদার রাজার কাছে গিয়ে এই ধর্মোপদেশ প্রচার করো: 2 ‘যিহূদার রাজা, প্রভুর বার্তা শোন| তুমি দাযূদের সিংহাসন থেকে শাসন করছ, তাই শোন হে রাজা, তুমি এবং তোমার সভা পরিষদগণও শোন| জেরুশালেমের ফটক দিয়ে আসা তোমার লোকদেরও ঈশ্বরের বার্তা শুনতে হবে| 3 প্রভু বললেন: যা ঠিক তাই করো| ডাকাতকে নয়, যার ডাকাতি হয়েছে তাকে রক্ষা করো| বিধ্বা মহিলাদের এবং অনাথ শিশুদের কোন ক্ষতি করো না| নিরীহ লোকদের মেরো না| 4 যদি এই নির্দেশগুলো তোমরা মেনে চলো তাহলে এগুলি ঘটবে: দাযূদের সিংহাসনে য়ে সব রাজারা অধিষ্ঠিত রয়েছে তারা জেরুশালেম শহরের ফটক দিয়ে আসা চালিযে যাবে| সঙ্গে থাকবে তাদের সভা পরিষদগণ| তারা সবাই রথে ঘোড়ায় চড়ে আসবে| 5 কিন্তু যদি এই নির্দেশগুলি মানা না হয়, তাহলে প্রভু বলেছেন: আমি, প্রভু, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি রাজার প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং সব কিছু জঞ্জালের স্তূপে পরিণত হবে|”‘ 6 যিহূদার রাজার রাজপ্রাসাদের সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল:“এই প্রাসাদ হল গিলিয়দের অরণ্যের মতো উচ্চ| এই রাজপ্রাসাদ হল লিবানোনের পর্বতের মতো উচ্চ, কিন্তু এই প্রাসাদকে মরুভূমিতে পরিণত করব| এই প্রাসাদ নির্জন শহরের মতো একাকি দাঁড়িয়ে থাকবে| 7 আমি ধ্বংসকারীদের এই প্রাসাদ ধ্বংস করতে পাঠাব| তারা প্রাসাদের সুদৃশ্য এরস কড়িকাঠগুলো কেটে ফেলবে এবং সেগুলোতে আগুন ধরিযে দেবে| 8 “অনেক জাতির লোকরা এই শহরের পাশ দিয়ে য়েতে য়েতে একে অন্যকে প্রশ্ন করবে, ‘মহান শহর জেরুশালেমের ওপর প্রভু এমন একটা সাংঘাতিক কাণ্ড কেন করলেন?’ 9 এই হবে তাদের প্রশ্োনর উত্তর: যিহূদার লোকরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে য়ে চুক্তি হয়েছিল তা তারা অমান্য করেছিল বলে ঈশ্বর জেরুশালেমকে ধ্বংস করেছেন| যিহূদার লোকরা মূর্ত্তি পূজা করেছিল বলে তাদের এই ভযানক ফল ভোগ করতে হল|”‘ 10 মৃত রাজাদের জন্য না কেঁদে বরং য়ে রাজাকে এই জায়গা ছেড়ে চলে য়েতে হবে তার জন্য কাঁদো| কারণ সে আর কখনো ফিরে আসবে না| আর কোন দিন সে নিজের মাতৃভূমিকে দেখতে পাবে না| 11 য়োশিযের পুত্র শল্লুম (য়েহোযাজ) সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল, (য়োশিয মারা যাবার পর তার পুত্র শল্লুম যিহূদার রাজা হয়েছিল|) “য়েহোযাজ জেরুশালেম ছেড়ে চলে গিয়েছিল| সে আর কোন দিন জেরুশালেমে ফিরে আসে নি| 12 মিশরের লোকেরা তাকে যেখানে ধরে নিয়ে গিয়েছে সেখানেই তার মৃত্যু হবে| সে আর কোনদিন এই দেশকে দেখতে পাবে না|” 13 রাজা যিহোয়াকীমের জীবনে খারাপ সময় ঘনিয়ে আসছে| সে তার রাজপ্রাসাদ তৈরী করতে বহু অসত্‌ কাজ করেছে| লোক ঠকিয়ে প্রাসাদের ঘর সমেত উচ্চতা বাড়িয়েছে| তার প্রজাদের দিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে সে কাজ করিযে নিয়েছে| 14 যিহোয়াকীম বলল, “আমি নিজের জন্য একটি বিশাল প্রাসাদ তৈরী করব| সেই প্রাসাদের ওপরের তলায় বড় বড় ঘর থাকবে|” তাই সে বড় বড় জানালা তৈরী করল| এরস বৃক্ষের কাঠ দিয়ে তৈরী জানালার চারিদিকে সে লাল রঙ করল| 15 যিহোয়াকীম, তোমার প্রাসাদে অসংখ্য এরস বৃক্ষের কাঠ তোমাকে মহান রাজা করে দিতে পারবে না| তোমার পিতা য়োশিয খাদ্য ও পানীয় পেয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন| তিনি সঠিক পথে সঠিক কাজ করেছিলেন| অতএব তাঁর ক্ষেত্রে সব কিছুই ভালো হয়েছিল| 16 য়োশিয গরীব দুঃখী লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছিল বলে তার সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটেনি| যিহোয়াকীম, ‘ঈশ্বরকে জানার অর্থ সত্‌ভাবে জীবনযাপন করা এবং যারা গরীব ও আর্ত্ত তাদের সাহায্য করা|’ এই হল প্রভুর বার্তা: 17 যিহোয়াকীম, তোমার চোখ দুটো শুধু তোমার লাভের দিকটাই দেখে| তোমার সমস্ত ভাবনা হল লাভ নিয়ে এবং কি করে আরো বেশী কিছু পাবে তাই নিয়ে| তুমি ইচ্ছা করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছো| স্বেচ্ছায় অন্যের জিনিস চুরি করেছো| 18 সুতরাং য়োশিযর পুত্র যিহোয়াকীমকে প্রভু এই কথাগুলি বললেন: “যিহূদার লোকেরা কখনও যিহোয়াকীমের জন্য কাঁদবে না| তারা একে অপরকে বলবে না; ‘হে আমার ভাই, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত! হে আমার ভগিনী, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত!’ তারা যিহোয়াকীমের জন্য দুঃখিত হবে না| তারা তার সম্বন্ধে বলবে না, ‘হে মনিব, আমরা দুঃখিত! হে রাজা আমরা মর্মাহত!’ 19 জেরুশালেমের লোকরা যিহোয়াকীমকে কবর দেবে একটি মৃত গাধার সত্‌কারের ভঙ্গিতে| তারা তার মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে জেরুশালেমের ফটকের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| 20 “যিহূদা, যাও লিবানোনের পাহাড়ে উঠে চিত্কার করে কাঁদো যাতে তোমাদের সেই কান্নার রোল বসনের পাহাড় থেকে শোনা যায়| অবারীম পাহাড় থেকে চেঁচিয়ে ওঠো| কারণ তোমার ‘প্রেমিকরা’ সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে| 21 “যিহূদা, তুমি নিজেকে নিরাপদ মনে করেছিলে কিন্তু আমি তোমাকে সতর্ক করেছিলাম! তোমায় সতর্ক করেছিলাম কিন্তু আমার কথা শোননি| ছেলেমানুষ ছিলে বলে তুমি ভুলপথে জীবনযাপন করেছিলে| যিহূদা, তুমি তোমার য়ৌবনকাল থেকে আমাকে অমান্য করেছ| 22 যিহূদা আমি তোমাকে য়ে শাস্তি দেব তা আসবে ঝড়ের মতো এবং সেই ঝড় তোমার সমস্ত মেষপালকদের উড়িযে নিয়ে যাবে| তুমি ভেবেছিলে অন্যান্য জাতিগুলি তোমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে, কিন্তু তারাও পরাজিত হবে| তখন তুমি সত্যি সত্যি নিরাশ হয়ে পড়বে| লজ্জিত হবে নিজের অতীতের কৃতকর্মের কথা ভেবে|” 23 “রাজা, তুমি পাহাড়ের একেবারে ওপরে এরস বৃক্ষের তৈরী সুদৃশ্য প্রাসাদে বাস করো| এটা অনেকটা তোমার কাছে লিবানোনে বাস করার মতোই য়েখান থেকে ঐ কাঠ আসে| য়েহেতু পাহাড়ের ওপর বিশাল প্রাসাদে তুমি বাস করো তাই তুমি নিজেকে নিরাপদ ভাবছো| কিন্তু যখন শাস্তি তোমার কাছে আসবে তখন তুমি আঘাত পাবে এবং প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলার মত আর্তনাদ করবে|” 24 প্রভু বললেন, “আমি আছি এটা য়েমন নিশ্চিত্‌,” এই হল প্রভুর বার্তা, “তেমনি ভাবে আমি এটা করব| যিহোয়াকীমের পুত্র যিহোয়াকীণ, যিহূদার রাজা, তুমি যদি আমার ডান হাতের মোহর করা আংটিওহও, আমি তোমাক ছুঁড়ে ফেলে দেব| 25 যিহূদারাজ কনিয, তুমি যাদের ভয়ে ভীত সেই বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের ও বাবিলের লোকদের হাতে আমি তোমাকে তুলে দেব| তারা তোমাকে হত্যা করতে চায়| 26 আমি তোমাকে ও তোমার মাকে এমন এক দেশে পাঠিয়ে দেব য়েটা তোমাদের কারোরই জন্মস্থান নয়| তোমরা সেখানে মারা যাবে| 27 যিহোয়াকীণ তুমি যদি স্বদেশ কাতর হয়ে যাও এবং তোমার নিজের দেশে ফিরেও য়েতে ইচ্ছা কর, তুমি কখনও ফিরে যাবার অনুমতি পাবে না|” 28 কনিয হল এক ভাঙ্গা পাত্রের মত যাকে কোন মানুষ বাতিল করে ফেলে দিয়েছে| সে এমনই এক পাত্র যাকে কেউ চায় না| যিহোয়াকীণ ও তার সন্তানদের কেন ফেলে দেওয়া হবে? কেন তাদের অন্য দেশে নিক্ষিপ্ত করা হবে? 29 ভূমি, যিহূদার দেশ, প্রভুর বার্তা শোন| 30 প্রভু বললেন, “কনিয সম্বন্ধে এই কথাগুলো লিখে নাও| ‘সে হবে এমনই এক মানুষ যার আর কোন সন্তান থাকবে না| সে কখনো জীবনে সফল হবে না| তার কোন সন্তান কখনো দাযূদের সিংহাসনে বসতে পারবে না| তার কোন সন্তান কখনো যিহূদার রাজত্ব করবে না|”‘

যেরেমিয়া 23

1 “যিহূদার মেষপালকদেরপক্ষে এটা খারাপ হবে| এই মেষপালকরা আমার মেষদের আহত করছে| তারা চারদিক থেকে এই মেষদের তাড়িয়ে আমার শস্যের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 2 এই মেষপালকরা (নেতৃবৃন্দ) আমার মেষদের (লোকদের) জন্য দাযী এবং প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর ঐ মেষপালকদের বললেন: “তোমরা মেষপালকরা আমার মেষদের চতুর্দিকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছ| এবং তোমরা তার রক্ষণাবেক্ষণ করনি| কিন্তু আমি তোমাদের দেখে নেব| তোমাদের মন্দ কাজের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 3 “আমি আমার মেষদের অন্য দেশে পাঠিয়ে দেব| তারপর ঐ বিদেশগুলোর থেকে আমি আমার বাকী মেষগুলিকে জড়ো করব এবং য়ে সমস্ত মেষরা পড়ে থাকবে, তাদের আমি একত্রিত করে তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনব| তারা যখন স্বদেশে ফিরবে তখন তাদের সন্তানরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে| 4 আমি তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নতুন মেষপালক রাখব এবং তাহলে আমার কোন মেষই ভয় পাবে নাবা হারিযে যাবে না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 5 প্রভু এই বার্তা বলেন, “সেই সময় আসছে যখন আমি একটি ভালো ‘নবোদগম’|উত্তোলন করব| সে বুদ্ধিমত্ত্বার সঙ্গে শাসন করবে এবং দেশে যা ন্যায্য এবং ঠিক তাই করবে| সে সুষ্ঠু ভাবে দেশ শাসন করবে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে| 6 তার রাজত্বের সময়, যিহূদা রক্ষা পাবে এবং ইস্রায়েল নিরাপদে থাকবে| এই হবে তার নাম: প্রভুই আমাদের ধার্মিকতা|” 7 “সেই সময় আসছে,” এই হল প্রভুর বার্তা, “যখন লোকরা আর প্রভুর পুরানো প্রতিশ্রুতির কথা বলবে না| পুরানো প্রতিশ্রুতি হল: ‘য়েহেতু প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত, প্রভু তিনিই, যিনি সমস্ত ইস্রায়েলবাসীকে মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলেন|’ 8 কিন্তু লোকরা এখন নতুন কথা বলবে| তারা বলবে, ‘প্রভুর অস্তিত্ব য়েমন নিশ্চিত, তিনিই হলেন সেই একজন যিনি সমস্ত ইস্রায়েলের লোকদের উত্তরদেশ থেকে বের করে এনেছিলেন| তিনি তাদের য়ে সব দেশে পাঠিয়েছিলেন, সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন|’ তখন থেকে ইস্রায়েলবাসী তাদের নিজেদের দেশে বসবাস শুরু করল|” 9 ভাব্বাদীদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা: আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে| প্রভু যা বলেছেন তাতে ভয়ে আমার হাড়ে পর্য়ন্ত কাঁপুনি ধরেছে| প্রভুর পবিত্র বার্তাটির দরুণ আমি এক জন বদ্ধ মাতালের মত বলছি| 10 যিহূদার মাটি ব্যাভিচারীদের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ভরে গেছে| তারা নানা বিষয়ে অবিশ্বস্ত| প্রভুর অভিশাপে এই দেশের মাটি শুষ্ক হয়ে যাবে| শুকিয়ে যাবে গাছের পাতা| শুকিয়ে যাবে পশুচারণের তৃণভূমি| শস্যভূমি শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাবে| ভাব্বাদীরা হোল শযতান| তারা তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা ভুল ভাবে ব্যবহার করেছিল| 11 “ভাব্বাদীরা তো বটেই, এমন কি যাজকরাও শযতান| আমি তাদের আমার মন্দিরে খারাপ কাজ করতে দেখেছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 12 “আমি যদি ভাব্বাদীদের এবং যাজকদের আমার বার্তা দেওয়া বন্ধ করি, তাহলে তাদের পিচ্ছিল পথে, অন্ধকারের মধ্যে হাঁটতে হবে| তারা ঐ অন্ধকারে পড়ে যাবে| আমি তাদের ওপর দুর্বিপাক আনব| আমি শাস্তি দেব ঐ সমস্ত ভাব্বাদী ও যাজকদের|” এই হল প্রভুর বার্তা| 13 “শমরিয়ার ভাব্বাদীদের অন্যায় করতে দেখেছি| আমি ঐ ভাব্বাদীদের বাল মূর্ত্তির নামে ভাব্বাণী করতে দেখেছি| ঐ ভাব্বাদীরা মিথ্যা শিক্ষা দিয়ে ইস্রায়েলবাসীকে প্রভুর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল| 14 এখন দেখছি যিহূদার ভাব্বাদীরা সেই সব গর্হিত কাজগুলি জেরুশালেমে করছে| এই ভাব্বাদীরা পাপ ও ব্যভিচার করে বেড়াচ্ছে| তারা মিথ্য়েকেই প্রশয দিয়ে এসেছে এবং তারা ভুল শিক্ষাগুলিকে পালন করেছিল| অসত্‌ লোকদের তারা একটা না একটা গর্হিত কাজ করার ব্যাপারে উত্সাহ দিয়ে এসেছে| তাই যিহূদার মানুষ সদোমের মানুষের মতো পাপ থেকে বিরত থাকেনি| এখন জেরুশালেম আমার কাছে ঘমোরার মতো|” 15 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান ভাব্বাদীদের সম্বন্ধে যা বলেন তা হল এই: “আমি ঐ ভাব্বাদীদের শাস্তি দেব| বিষাক্ত খাদ্য ও জল পান করার মতো শাস্তি দেব| ভাব্বাদীরা আত্মিক অসুখে ভুগতে শুরু করেছিল এবং সেই অসুখ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল| তাই আমি ঐ ভাব্বাদীদের শাস্তি দেব| ঐ অসুখ ভাব্বাদীদের মাধ্যমে জেরুশালেমে এসেছিল|” 16 সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেন: “ভাব্বাদীরা যা বলেছে তার দিকে তোমরা মন দিও না| তারা তোমাদের বোকা বানাতে চাইছে| ঐ ভাব্বাদীরা স্বপ্নদর্শন সম্বন্ধে কথা বলছে| কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে কোন স্বপ্নাদেশ পায় নি| ঐ স্বপ্নদর্শনগুলো তাদের নিজেদের মনের স্বপ্নদর্শন| 17 কিছু লোক প্রভুর সত্য বার্তাকে ঘৃণা করে তাই ভাব্বাদীরা ঐ লোকদের ভুল বার্তা দেয়| তারা বলে, ‘তোমরা শান্তিতে বিরাজ করবে|’ কিছু মানুষ ভীষণ একগুঁযে, জেদী| তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করে| তাই সেই সুযোগ নিয়ে ভাব্বাদীরা ঐ জেদী লোকদের বলল তোমাদের সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটবে না!’ 18 কিন্তু ঐ ভাব্বাদীদের কেউই স্বর্গীয সভায দাঁড়াযনি| তাদের কেউই প্রভুকে দেখেনি বা প্রভুর বার্তা শোনেনি| 19 এখন প্রভুর কাছ থেকে ঝড়ের মতো শাস্তি আসবে| প্রভুর রোধ হল ঘূর্ণিঝড়| সেই ঝড় অসত্‌ লোকেদের মাথার ওপর হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়বে| 20 পরিকল্পনা মাফিক কাজ শেষ না করে প্রভু তার রোধ প্রশমিত করবেন না| সেই দিনটি যখন আসবে তখন তোমরা পরিষ্কার ভাবে এটি বুঝতে পারবে| 21 আমি ঐ ভাব্বাদীদের পাঠাইনি| অথচ তারা দৌড়ে বেড়ালো নিজেদের তৈরী বার্তা নিয়ে| আমি তাদের সঙ্গে কথা বলিনি| অথচ তারা আমার নাম করে প্রচার করেছিল তাদের ভ্রান্ত ধর্মোপদেশ| 22 তারা যদি আমার স্বর্গীয সভায দাঁড়াতো, তাহলে তারা আমার বার্তা যিহূদার লোকদের কাছে প্রচার করতে পারতো| তারা পারত মানুষকে খারাপ কাজ করার থেকে বিরত করতে| তারা পারত মানুষকে অসত্‌ হওয়া থেকে বিরত করতে|” 23 “আমিই ঈশ্বর| আমি বহুদূরে নয়, খুব কাছেই আছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 24 কেউ গোপন জায়গায় লুকিয়ে থাকলেও আমি কিন্তু সহজেই তাকে দেখতে পাই| কেন? কারণ আমি স্বর্গ এবং মর্ত্য সর্বত্র বিরাজমান” প্রভু একথা বলেছেন| 25 “ঐ ভাব্বাদীরা আমার নাম দিয়ে মিথ্য়ে ধর্মোপদেশ প্রচার করেছে| তারা বলেছে, ‘আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি! আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি!’ আমি তাদের ঐ কথাগুলো বলতে শুনেছি| 26 আর কতদিন এভাবে চলবে? ঐ ভাব্বাদীরা মিথ্যা রচনা করে এবং লোকদের মিথ্যা শিক্ষা দেয়| 27 ঐ ভাব্বাদীরা চেষ্টা করল যাতে যিহূদার লোকরা আমার নাম ভুলে যায়| তারা তাদের মিথ্য়ে স্বপ্নাদেশের কথা বলে বেড়াতে লাগল| য়ে ভাবে তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে গিয়েছিল, সেই ভাবে তারা আমার লোকদের আমাকে ভুলে যাওয়াতে চেষ্টা করছে| তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে ভ্রান্ত দেবতার পূজা করেছিল| 28 খড় আর গম য়েমন এক জিনিস নয়, তেমনি ভাব্বাদীদের স্বপ্নাদেশ আর আমার বার্তাও এক নয়| কেউ যদি নিজেদের দেখা স্বপ্নকে বলে বেড়াতে চায় তা সে বলুক| কিন্তু এজন লোক যদি আমার বার্তা শোনে, তাকে সে কথা সত্যি করে বলতে হবে| 29 আমার বার্তা হল আগুনের মতো|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমার বার্তা হল পাথরে আছড়ে পড়া হাতুড়ি, যা পাথরকেও গুঁড়িযে দেয়| 30 “সুতরাং আমি ঐ কপট ভাব্বাদীদের বিরুদ্ধে|” ঐ ভাব্বাদীরা একে অন্যের কাছ থেকে আমার বাণীসমূহ চুরি করে চলেছে| এই হল প্রভুর বার্তা| 31 “আমি মিথ্যা ভাব্বাদীদের বিরুদ্ধে|” এই হল প্রভুর বার্তা, “তাদের নিজেদের কথাগুলোকে আমার বার্তা বলে তারা লোক ঠকাচ্ছে|” 32 আমি ঐ কপট ভাব্বাদী এবং তাদের মিথ্য়ে স্বপ্ন ও মিথ্য়ে ধর্মোপদেশ প্রচারের বিরুদ্ধে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তারা তাদের মিথ্য়ে ছলনা ও ভ্রান্ত শিক্ষা দিয়ে আমার লোকদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে| আমি ঐ ভাব্বাদীদের লোককে শিক্ষা দিতে পাঠাই নি| আমি তাদের আমার জন্য কিছু করার নির্দেশ দিইনি| তারা যিহূদার লোকদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারবে না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 33 “যিহূদার লোকরা ভাব্বাদী অথবা কোন যাজক হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘যিরমিয়, প্রভুর ঘোষণা কি?’ তুমি ওদের উত্তরে বলবে, ‘তোমরা হলে প্রভুর কাছে ভারী বোঝা এবং আমি ঐ ভারী বোঝা ছুঁড়ে ফেলব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 34 “কোন ভাব্বাদী, কোন যাজক অথবা কোন এক জন সাধারণ লোক হয়তো বলতে পারে, ‘এই হল প্রভুর ঘোষণা|’ য়ে একথা বলবে সে মিথ্য়েবাদী এবং আমি তাকে ও তার পরিবারকে শাস্তি দেব| 35 তোমরা একে অপরকে বলবে: ‘প্রভু কি উত্তর দিলেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বললেন?’ 36 কিন্তু তোমরা আর কখনও এই অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করবে না: ‘প্রভুর ঘোষণা (ভারী বোঝা|)’ একথা খবরদার উচ্চারণ কোরো না কারণ প্রভুর ঘোষণা কখনও কারও ক্ষেত্রে ভারী বোঝা হয় না| কিন্তু তোমরা আমাদের ঈশ্বরের কথায় পরিবর্তন ঘটিযেছ| তিনি জীবন্ত ঈশ্বর, তিনি প্রভু সর্বশক্তিমান| 37 “তোমরা যদি ঈশ্বরের বার্তা জানতে চাও তাহলে কোন ভাব্বাদীকে জিজ্ঞেস করো| ‘প্রভু আপনাকে কি উত্তর দিয়েছেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বলেছেন?’ 38 কিন্তু একথা বলো না, ‘প্রভুর ঘোষণা (ভারী বোঝা) কি ছিল?’ যদি তোমরা আবার এই কথার পুনরাবৃত্তি করো তাহলে প্রভু তোমাদের উদ্দেশ্যে এগুলি বলবেন: ‘তোমরা আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করবে না|’ আমি তোমাদের এই শব্দ ব্যবহার করতে বারণ করছি| 39 কিন্তু তোমরা যদি আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করো তাহলে আমিও তোমাদের এবং ঐ শহরটিকে ভারী বোঝা বলে মনে করে আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষকে এই জেরুশালেম শহর দিয়েছিলাম| কিন্তু আমি তোমাদের এই শহর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেব| 40 আমি তোমাদের চির কালের জন্য অপদস্থ করব এবং তোমরা কোন দিন তোমাদের বিব্রত অবস্থাকে ভুলতে পারবে না|”‘

যেরেমিয়া 24

1 প্রভু আমাকে এই জিনিসগুলি দেখিয়ে ছিলেন: আমি ডুমুর ভর্ত্তি দুটি ঝুড়ি দেখেছিলাম প্রভুর মন্দিরের সামনে রাখা আছে| বাবিলের নবূখদ্রিত্‌সর যখন য়িকনিযকে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে ছিলেন তখন আমার এই স্বপ্নদর্শন হয়েছিল| রাজা যিহোয়াকীমের পুত্র য়িকনিয ও তার গুরুত্বপূর্ণ সভাসদবৃন্দদের জেরুশালেম থেকে গ্রেপ্তার করে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| যিহূদার সমস্ত ছুতোর ও কানাদেরও নবূখদ্রিত্‌সর বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন| 2 একটা ঝুড়িতে ছিল খুব ভাল ডুমুর| ঐ ডুমুরগুলি ছিল মরশুমের শুরুতে পাকা ডুমুর| কিন্তু অপর ঝুড়িতে ছিল পচা ডুমুর| যা একেবারেই খাওয়ার অয়োগ্য| 3 প্রভু আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “যিরমিয়, তুমি কি দেখতে পাচ্ছ?” আমি উত্তর দিয়েছিলাম, “আমি ডুমুর দেখতে পাচ্ছি| ভাল ডুমুরগুলো খুবই ভাল| আর পচা ডুমুরগুলো এতোই পচা য়ে ওগুলো খাওয়া যাবে না|” 4 তারপর আমি প্রভুর কাছ থেকে বার্তা পেয়েছিলাম| 5 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাকে বলেছিলেন: “যিহূদার লোকদের তাদের দেশ থেকে শএুরা বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল| সেই লোকগুলি হবে ঐ ভাল ডুমুরগুলোর মতো| এদের প্রতি আমি দযালু হবো| 6 আমি তাদের রক্ষা করব| আমি তাদের যিহূদায় ফিরিয়ে আনব| আমি তাদের ছিন্নভিন্ন না করে গড়ে তুলব| আমি তাদের উদ্ধার করবো| আমি তাদের প্রতিষ্ঠা করবো| যাতে তারা বেড়ে উঠতে পারে| 7 আমি তাদের একটি হৃদয় দেব য়েটা আমাকে জানতে ইচ্ছা করবে| তখন তারা জানবে য়ে আমিই প্রভু| তারা হবে আমার লোক| আমি হব তাদের ঈশ্বর| আমি এটা করবো কারণ বাবিলের বন্দীরা সম্পূর্ণ ভাবে তাদের হৃদয় আমার কাছে সমর্পণ করবে| 8 “কিন্তু যিহূদার রাজা সিদিকিয় হবে ঐ খাওয়ার অয়োগ্য পচা ডুমুরগুলির মতো| সিদিকিয়র উচ্চপদস্থ পারিষদগণ, জেরুশালেমে পড়ে থাকা সমস্ত লোক ও মিশরে বসবাসকারী যিহূদার লোকরা হবে ঐ পচা ডুমুরের মতো| 9 “আমি ঐ লোকদের এমন একটি শাস্তি দেব য়েটা পৃথিবীর সমস্ত লোককে বিস্মযাভিভূত করবে| যিহূদার ঐ সব লোকেরা হবে অন্যদের উপহাসের সামগ্রী| আমি তাদের যেখানেই ছড়িয়ে দেব সেখানকার লোকরা তাদের শাপ দেবে| 10 তাদের বিরোধিতা করার জন্য আমি তরবারি, অনাহার এবং রোগ পাঠাব| আমি তাদের যতক্ষণ পর্য়ন্ত না প্রত্যেকে মারা যায় ততক্ষণ আক্রমণ করব| তাহলে তারা এই দেশ যা আমি তাদের এবং তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম সেখান থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে|”

যেরেমিয়া 25

1 যিহূদার লোকদের সম্বন্ধে যিরমিয়র কাছে এই বার্তা এসেছিল| যিহূদার রাজা হিসাবে যিহোয়াকীমের রাজত্ব কালের চতুর্থতম বছরে এই বার্তা এসেছিল| য়োশিযের পুত্র যিহূদা রাজ যিহোয়াকীমের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছর ছিল বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের রাজত্ব কালের প্রথম বছর| 2 এই বার্তা ভাব্বাদী যিরমিয়, যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত মানুষকে শুনিয়েছিল: 3 বিগত 23 বছর ধরে আমি বার বার তোমাদের কাছে প্রভুর বাণী দিয়ে এসেছি| আমোনের পুত্র য়োশিয যিহূদার রাজা হবার ত্রযোদশ বছর থেকে আমি এক জন ভাব্বাদী| আমার ভাব্বাদী প্রাপ্তির সময় যিহূদার রাজা ছিলেন আমোনের পুত্র য়োশিয| সেই সময় থেকে আজ পর্য়ন্ত আমি তোমাদের কাছে প্রভুর বার্তা প্রচার করে আসছি| কিন্তু তোমরা কেউ তা শোননি| 4 প্রভু তার ভৃত্যদের ও ভাব্বাদীদের বার বার পাঠানো সত্ত্বেও, তোমরা, তারা কি বলেছিল তা শোননি এবং তাদের দিকে মনোয়োগ দাওনি| 5 এই ভাব্বাদীরা বলেছিল, “তোমাদের জীবনযাত্রা বদলাও এবং খারাপ কাজ করা বন্ধ করো! নিজেদের জীবনযাত্রা পালটালে তবে তোমরা প্রভুর দেশে ফিরতে পারবে য়েটা প্রভুর দ্বারা বহু কাল আগে তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেওয়া হয়েছিল এবং চির কালের জন্য এখানে থাকতে দেওয়া হয়েছিল| 6 অন্য দেবতাদের অনুসরণ কোরো না| মানুষের তৈরী মূর্ত্তিগুলোর পূজো অথবা সেবা কোরো না| যদি তা করো তাহলে আমি রুদ্ধ হব| আর আমার রোধ তোমাদেরই ক্ষতি করবে|” 7 “কিন্তু তোমরা আমার কথা শোন নি|” ঐ মূর্ত্তিদের পূজা করে তোমরা আমাকে রুদ্ধ করেছ এবং সেটা তোমাদেরই ক্ষতি করেছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 8 প্রভু সর্বশক্তিমান যা বলেন তা হল, “তোমরা আমার কথাগুলো শোননি| 9 তাই শীঘ্রই উত্তরের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে এবং বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে যিহূদার লোকদের বিরুদ্ধে পাঠাব| নবূখদ্রিত্‌সর হল আমার অনুচর| আমি তাদের যিহূদার চার পাশের সমস্ত জাতির বিরুদ্ধে আনব| আমি যিহূদা ও তার চারপাশের সমস্ত দেশগুলিকে ধ্বংস করব এবং তাদের একটি চিরকালীন শূন্য মরুভূমিতে পরিণত করব| মানুষ শিস দিতে দিতে দেখবে কি ভাবে সেই সব দেশ ধ্বংস হবে| 10 ঐ দেশগুলিতে আর কোন আনন্দমুখর ধ্বনির উত্পত্তি হবে না| বিয়ের সানাই বেজে উঠবে না| শস্যদানা পেষাইযের কোন আওয়াজ থাকবে না| আমি রাতে সমস্ত বাতিগুলোর আলো কেড়ে নেব| 11 পুরো এলাকাটি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| আর সমস্ত মানুষ আগামী 70 বছরের জন্য বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের দাসত্ব করবে| 12 “কিন্তু 70 বছর পূর্ণ হবার পর বাবিলের রাজাকেও আমি শাস্তি দেব| শাস্তি দেব সমগ্র বাবিলবাসীকে তাদের পাপের জন্য|” এই হল প্রভুর বার্তা | “বাবিলও শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| 13 যিরমিয়র ভাব্বাণীর মাধ্যমে আমি ঐ বিদেশগুলির সম্বন্ধে য়েসব খারাপ ঘটনা ঘটবে বলে আগে বলেছিলাম সেইগুলো সত্য হবে| এই বইয়ে ঐ সমস্ত সতর্কবাণী লেখা আছে| এবং এই বইয়ে য়ে সমস্ত সতর্কবাণী লেখা আছে সেগুলোও প্রচার করো| 14 হ্যাঁ, বাবিলের লোকদের বহু জাতিদের এবং মহত্‌ রাজাদের সেবা করতে হবে| তাদের কৃতকার্য়ের য়োগ্য শাস্তি আমি দেব|” 15 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাকে এই কথাগুলি বললেন: “যিরমিয়, আমার হাত থেকে এই পেয়ালা ভর্তি দ্রাক্ষারস নাও| এই দ্রাক্ষারস হল আমার রোধ| আমি তোমাকে অন্য জাতিদের কাছে পাঠাচ্ছি| অন্যান্য দেশগুলিকে এই পেয়ালা থেকে চুমুক দেওয়াও| 16 তারা এই দ্রাক্ষারস পান করবে| তারা বমি করবে| পাগলের মতো আচরণ করবে| তারা এরকম ব্যবহার করবে কারণ আমি শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে তরবারিটি পাঠাব|” 17 সুতরাং আমি প্রভুর হাত থেকে দ্রাক্ষা ভর্তি পেয়ালা তুলে নিলাম| আমি সেই সমস্ত দেশে গেলাম এবং তাদের সেই পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম| 18 আমি জেরুশালেম এবং যিহূদার লোকদের জন্য এই দ্রাক্ষারস ঢেলে দিলাম| আমি যিহূদার রাজা এবং তার নেতাদের এই দ্রাক্ষারস পান করালাম| আমি এমন করেছিলাম কারণ যাতে তারা মরুভূমির মতো শুকিয়ে যায়| জেরুশালেম ও যিহূদা যাতে এমন ভাবে ধ্বংস হয় যা দেখে লোকরা শিস দিয়ে অভিশাপ দিতে পারে| এবং তাই ঘটেছিল বলে যিহূদার এখন এই দুরবস্থা| 19 মিশরের রাজা ফরৌণকেও আমি ঐ পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম| রাজার সভাষদ, নেতৃবৃন্দ এবং তার সমস্ত লোকরা প্রভুর রোধর পেয়ালা থেকে দ্রাক্ষারস পান করল| 20 সমস্ত আরবের লোক এবং ঊষ দেশের সমস্ত রাজাকেও এই দ্রাক্ষারস পান করালাম|আমি পলেষ্টীয় দেশের সমস্ত রাজাদেরও এর থেকে পান করালাম| এরা ছিল অস্কিলোন, ঘসা, ইএোণ শহরের এবং অস্দোদ শহরের বেঁচে যাওয়া অংশের রাজাগণ| 21 তারপর আমি ইদোম, মোয়াব এবং অম্মোন দেশের লোকদেরও ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| 22 সোর এবং সীদোনের শহরের রাজাদের ঐ পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম|বহু দূরের দেশগুলির রাজাদেরও ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| 23 দদান, টেমা, ছিন্নগুম্ফ এবং বূষ এর লোকদেরও ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| যারা তাদের মন্দিরে চুল কেটেছে তাদেরও ঐ পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করালাম| 24 আরবের সমস্ত রাজা যারা মরুভূমিতে বাস করে তাদেরও পান করালাম| 25 সিম্রী, এলম এবং মাদীয়দের রাজাদেরও ঐ পেয়ালা থেকে পান করালাম| 26 আমি উত্তরের রাজাদের কাছে, যারা কাছে এবং দূরে ছিল তাদের কাছে গিয়েছিলাম| একের পর এক রাজাকে আমি ঐ দ্রাক্ষারস পান করালাম| ঐ দ্রাক্ষারসের পেয়ালা থেকে প্রভুর রোধ পান করাবার জন্য আমি পৃথিবীর প্রত্যেকটি রাজ্যে গেলাম| কিন্তু বাবিলেররাজা আর সমস্ত রাজ্যগুলির পরে এই দ্রাক্ষারস পান করবে| 27 “যিরমিয়, ঐ সমস্ত দেশগুলিকে বলো, সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার রোধ ভর্তি ঐ দ্রাক্ষারস পান কর এবং তারপর বমি কর| তারপর শুয়ে পড়ো এবং উঠে দাঁড়িও না| কারণ এরপর আমি তোমাদের হত্যা করার জন্য তরবারি পাঠাচ্ছি|’ 28 “তোমার হাত থেকে ঐ দ্রাক্ষারস পান করতে য়ে সমস্ত লোকরা অস্বীকার করবে তাদের বলবে, ‘প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন: প্রকৃতপক্ষে তোমরা এই পেয়ালার দ্রাক্ষারস পান করবে! 29 আমার নামাঙ্কিত জেরুশালেম শহরে আমি ইতিমধ্যেই খারাপ ঘটনাগুলি ঘটাচ্ছি| যদি তোমরা ভেবে থাকো য়ে তোমরা হয়তো শাস্তি পাবে না, তাহলে ভুল ভাববে| শাস্তি তোমরাও পাবে| পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে আমি তরবারির দ্বারা আক্রমণ করব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 30 “যিরমিয়, তুমি আমার বার্তা তাদের দেবে: ‘ওপর থেকে, তাঁর পবিত্র মন্দির থেকে প্রভু তাঁর পশুচারণ ভুমির (তাঁর লোক জন) প্রতি চিত্কার করে উঠলেন| দ্রাক্ষারস তৈরীর সময় শ্রমিকরা য়েমন দ্রাক্ষার উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সমস্বরে চিত্কার করে তেমনি জোরে চিত্কার করছেন প্রভু| 31 পৃথিবীর সমস্ত লোকের মধ্যে এই আওয়াজ ছড়িয়ে পড়লো| এটা কিসের আওয়াজ? প্রভু সমস্ত দেশের মানুষদের শাস্তি দিচ্ছেন| লোকের বিরুদ্ধে প্রভু তার যুক্তি দেখাচ্ছেন| তিনি তাদের বিচার করেছেন এবং এখন তিনি সমস্ত অসত্‌ লোকদের একটি তরবারি দিয়ে হত্যা করছেন|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 32 প্রভু সর্বশক্তিমান যা বলেছেন তা হল: “শীঘ্রই এক দেশ থেকে আর এক দেশে বিপর্য়য ছড়িয়ে পড়বে| ভয়ঙ্কর ঝড়ের মতো সেই প্রলয পৃথিবীর বহু দূরে দূরে ছড়িয়ে যাবে|” 33 মৃত দেহগুলি দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে| কেউ শোক প্রকাশ করে কাঁদবে না| কেউ সেই মৃতদেহগুলি একত্রিত করে সত্‌কার করার বন্দোবস্ত করবে না| মৃত দেহগুলি পশুর বিষ্ঠার মতো মাটিতে পড়ে থাকবে| 34 মেষপালকরা (নেতারা) তোমরা মেষদের (লোকদের) নেতৃত্ব দেবে| মহান নেতৃবৃন্দ এবার কাঁদতে শুরু করো| মেষদের (মান্ুষদের) নেতারা যন্ত্রণায় মাটিতে ছটফট করো| কেন? কারণ এখন তোমাদের জবাই করার সময় এসেছে| আমি তোমাদের ছড়িয়ে দেব, ঠিক য়েমন একটি মাটির পাত্র ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে তেমন করে| 35 সেখানে মেষপালকদের লুকানোর কোন জায়গা থাকবে না| ঐ নেতারা পালাতে পারবে না| 36 আমি শুনতে পাচ্ছি মেষপালকরা চিত্কার করছে| কান্নাকাটি করছে| প্রভু তাদের গোচারণ ভূমিগুলি (দেশ) ধ্বংস করছেন| প্রভু রুদ্ধ হয়েছেন বলে এগুলো ঘটছে| 37 প্রভুর রোধর জন্য ঐ শান্তিপূর্ণ গোচারণ ভূমিগুলি একটি শূন্য মরুভূমির মত| 38 প্রভু হলেন গুহা থেকে বেরিয়ে আসা একটি ভয়ঙ্কর সিংহের মত| তাঁর রোধ লোকরা আহত হবে| এই দেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে|

যেরেমিয়া 26

1 যিহূদার ওপর রাজা যিহোয়াকীমের শাসনের প্রথম বছরে এই বার্তা প্রভুর কাছ থেকে এসেছিল| যিহোয়াকীম ছিলেন য়োশিযের পুত্র| 2 প্রভু বলেছিলেন, “যিরমিয়, প্রভুর মন্দির চত্বরে দাঁড়াও এবং যারা এই মন্দিরে উপাসনা করতে আসে সেই সমস্ত যিহূদার লোকদের এই বার্তাটি বলো| আমি তোমাকে যা যা বলেছি সব তাদের বলো| আমার বার্তার কোন অংশ বাদ দিও না| 3 তারা হয়তো আমার কথা শুনবে এবং পালন করবে| তারা হয়ত অসত্‌ কাজকর্ম থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবে| যদি তারা আমার বার্তা মেনে চলে, তাহলে হয়ত আমি তাদের শাস্তি দেব না| অনেক খারাপ কাজকর্ম করেছিল বলেই আমি তাদের শাস্তি দেবার পরিকল্পনা করেছিলাম| 4 তুমি তাদের বলবে, ‘প্রভু বলেছেন: আমি আমার শিক্ষামালা তোমাদের দিয়েছি| তোমাদের উচিত্‌ আমার বাধ্য হওয়া এবং আমার শিক্ষামালা অনুসরণ করা| 5 আমার ভৃত্যরা যা বলে তা তোমাদের শুনতে হবে| (ভাব্বাদীরা হল আমার ভৃত্য) আমি বারবার তোমাদের কাছে ভাব্বাদীদের পাঠিয়েছি| কিন্তু তোমরা তাদের কোন কথা শোন নি| 6 আমি এই মন্দিরটিকে শীলোর মত করে করব| এবং লোকরা এই শহরটিকে একটি উদাহরণ হিসেবে গণ্য করবে যখন তারা অন্যান্য জায়গায় খারাপ ঘটনাসমূহ ঘটাতে ইচ্ছে করবে|”‘ 7 যিরমিয়র এই কথাগুলি প্রভুর মন্দিরে উপস্থিত যাজক, ভাব্বাদী এবং সমস্ত মানুষ শুনেছিল| 8 প্রভু যিরমিয়কে যা কিছু বলার আদেশ দিয়েছিলেন সে তা বলা শেষ করেছিল| তখন যাজক, ভাব্বাদী এবং সাধারণ লোক যিরমিয়কে জোর করে চেপে ধরে বলেছিল, “এই ভয়ঙ্কর কথাগুলি বলার জন্য এবার তোমার মৃত্যু হবে| 9 প্রভুর নাম করে এই ধর্মোপদেশ প্রচার করার তোমার কি করে সাহস হল? শীলোর মতো এই মন্দিরও ধ্বংস হয়ে যাবে একথা বলার সাহস তোমার কি করে হয়? কোন সাহসে তুমি বললে য়ে জেরুশালেম জনমানবহীন এক মরুভূমিতে পরিণত হবে?” প্রভুর মন্দিরেই সবাই যিরমিয়কে ঘিরে ধরল| 10 যিহূদার শাসকবৃন্দ শুনলেন কি কি ঘটেছে| তাই তাঁরা রাজপ্রাসাদের বাইরে বেরিয়ে এসে প্রভুর মন্দিরে গিয়েছিলেন| তাঁরা নতুন ফটকের প্রবেশদ্বারের মুখে, য়েটা প্রভুর মন্দিরের দিকে যাচ্ছে সেখানে বসলেন| ঐ নতুন ফটকদ্বারের পথ প্রভুর মন্দিরকেই নির্দেশ করে| 11 তখন যাজকবৃন্দ ভাব্বাদীগণ এবং সমস্ত সাধারণ মানুষ শাসকবৃন্দের সঙ্গে কথা বলল| তারা বলল, “যিরমিয়কে হত্যা করতেই হবে| সে জেরুশালেম সম্বন্ধে অমঙ্গলজনক কথাবার্তা বলে বেড়িযেছে| আপনারাও সে সব শুনেছেন|” 12 তখন যিরমিয় যিহূদার শাসকবৃন্দ ও সাধারণ লোকদের সঙ্গে কথা বলেছিল| সে বলল, “প্রভু আমাকে এই মন্দির এবং এই শহর সম্বন্ধে এই কথাগুলি বলবার জন্য পাঠিয়েছিলেন| আমি যা কিছু বললাম সেগুলি আমার কথা নয়, সেগুলো হল প্রভুর বক্তব্য| 13 আপনারা নিজেদের জীবনযাত্রা বদলে ফেলুন| ভাল কাজ করতে শুরু করুন| আপনারা আপনাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করুন| যদি আপনারা তা করেন তাহলে প্রভু তাঁর মত পরিবর্তন করবেন| তিনি য়ে অমঙ্গলজনক কথাবার্তা বলেছিলেন সেগুলি তিনি তাহলে বাস্তবে রূপান্তরিত করবেন না| 14 আর আমার ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমি হলাম আপনাদের ক্ষমতার অন্তর্গত| যা ভাল এবং ঠিক বুঝবেন তাই আমার সঙ্গে আপনারা করতে পারেন| 15 কিন্তু যদি আপনারা আমায় হত্যা করেন তাহলে একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যান, য়ে আপনারা এক জন নিরীহ লোককে হত্যা করতে চলেছেন| এই দোষের ভাগীদার হবে এই শহর এবং এই শহরের প্রত্যেক বাসিন্দা এবং তার জন্য দাযী হবেন আপনারা| প্রভু সত্যিই আমাকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন| আপনারা যা শুনেছেন তা পুরোটাই প্রভুর প্রেরিত বার্তা|” 16 এরপর যিহূদার শাসকবৃন্দ এবং সাধারণ লোক যাজকদের এবং ভাব্বাদীদের বললেন: “যিরমিয় এমন কিছু করেনি যাতে ওর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্য় হতে পারে| যিরমিয় আমাদের যা যা বলেছিল তা তার নিজের ভাষা নয়, তা ছিল প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের বক্তব্য|” 17 তখন শীর্ষস্থানীয কিছু নেতা উঠে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন| 18 তাঁরা বললেন, “মোরেষ্টীয শহরে মীখা নামের ভাব্বাদী ছিলেন| মীখা যখন ভাব্বাদী ছিলেন, তখন যিহূদার রাজা ছিলেন হিষ্কিয়| যিহূদার লোকদের মীখা এই কথাগুলি বলেছিলেন: সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন:“সিয়োন ধ্বংস হয়ে যাবে| জেরুশালেম পরিণত হবে একটি পাথরের স্তূপে| মন্দিরের চূড়া হয়ে যাবে একটি মাটির টিবি, ঝোপঝাড়ে আবৃত|” মীখা 3:12 19 “হিষ্কিয় যিহূদার রাজা ছিলেন এবং তিনি মীখাকে হত্যা করেন নি| মীখাকে যিহূদার সাধারণ লোকরাও হত্যা করে নি| তোমরা জানো য়ে হিষ্কিয় প্রভুকে ভয় পেতেন এবং সম্মান করতেন এবং তাঁকে খুশী করতে চাইতেন| প্রভু বলেছিলেন, তিনি যিহূদাতে অঘটন ঘটাবেন| কিন্তু হিষ্কিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন এবং প্রভু তাঁর মত পরিবর্তন করেছিলেন| প্রভু আর তারপর যিহূদার কোন অমঙ্গল ঘটান নি| আমরা যদি যিরমিয়র কোন ক্ষতি করি তাহলে আমরা নিজেরাই নিজেদের ওপর অশান্তি টেনে আনব|” 20 অতীতে ঊরিয নামে এক জন প্রভুর বার্তা প্রচার করেছিলেন| ঊরিয ছিলেন শময়িয়ের পুত্র| ঊরিয বাস করতেন কিরিযত্‌ য়িযারীমস্থ শহরে| এই শহর এবং এই দেশের বিরুদ্ধে যিরমিয়র মত ঊরিয একই বার্তা প্রচার করেছিলেন| 21 রাজা যিহোয়াকীম, তাঁর সেনা প্রধানরা এবং নেতারা ঊরিযর ধর্মোপদেশ শুনে রেগে গিয়েছিলেন| রাজা যিহোয়াকীম ঊরিযকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন| কিন্তু ঊরিয শুনতে পেয়েছিলেন য়ে রাজা যিহোয়াকীম তাঁকে হত্যা করতে চাইছে| ঊরিয ভীত হয়ে মিশরে পালিয়ে গিয়েছিলেন| 22 কিন্তু রাজা যিহোয়াকীম ইল্নাথন সহ আরো কয়েক জনকে ঊরিযকে ধরে আনার জন্য মিশরে পাঠিয়েছিলেন| ইল্নাথন ছিলেন অক্বোরের পুত্র| 23 ঊরিযকে তারা মিশর থেকে ধরে বেঁধে এনেছিলেন| তারপর তাঁরা তাকে রাজার সামনে নিয়ে এসেছিলেন| রাজা যিহোয়াকীম ঊরিযকে তরবারি দিয়ে হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন| ঊরিযকে হত্যা করার পর তাঁর মৃতদেহ কবরস্থানে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল| সেই কবরস্থানে শুধু গরীব লোকদের মৃতদেহই কবর দেওয়া হত| 24 যিহূদায় অহীকাম নামে এক ব্যক্তি ছিলেন| অহীকাম ছিলেন শাফনের পুত্র| অহীকাম যিরমিয়কে সমর্থন জানিয়ে ছিলেন| তিনি যিরমিয়কে যাজক এবং ভাব্বাদীদের হত্যার য়ড়য়ন্ত্র থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন|

যেরেমিয়া 27

1 যিহূদার রাজা সিদিকিযের শাসনকালে যিরমিয়র কাছে প্রভুর একটি বার্তা এলো| য়োশিযের পুত্র সিদিকিযের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছরে এই বার্তা এসেছিল| 2 প্রভু আমাকে যা বলেছিলেন তা হল এই: “যিরমিয় একটি জোযাল তৈরী করো এবং সেই জোযালটিকে তোমার কাঁধের ওপর স্থাপন কর| 3 তারপর ইদোম, মোয়াব, অম্মোন, সোর এবং সীদোনের রাজাদের কাছে খবর পাঠিয়ে দাও| এই সব বার্তাগুলি দূতদের মারফত্‌ সব রাজাদের কাছে পাঠিয়ে দাও, যারা যিহূদার রাজা সিদিকিয়কে জেরুশালেমে দেখতে এসেছিল| 4 এই বার্তাবাহকদের বলো তাদের মনিবকে গিয়ে বলতে প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: 5 তোমাদের মনিবকে গিয়ে বলো আমি এই পৃথিবী এবং তার মানুষদের সৃষ্টি করেছি| এই পৃথিবীর সমস্ত পশু পাখীও আমার সৃষ্টি| আমি আমার শক্তি এবং শক্তিশালী বাহু দিয়ে তা সৃষ্টি করেছি| আমি যাকে খুশী এই পৃথিবী দিয়ে দিতে পারি| 6 এখন আমি পৃথিবীর সমস্ত দেশ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে দিয়ে দিলাম| সে হল আমার অনুচর| সমস্ত বন্য জন্তুদেরও আমি তাকে মান্য করতে বাধ্য করবো| 7 সবগুলো জাতি নবূখদ্রিত্‌সর তাঁর পুত্র এবং তাঁর পৌত্রদের সেবা করবে| তারপর বাবিলের পরাজয় ঘটবে| অনেক রাষ্ট্রের মহান রাজারা মিলে বাবিলকে তাঁদের দাসে পরিণত করবেন| 8 “‘কিন্তু কয়েকটি দেশ হয়ত বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের সেবা করতে অস্বীকার করবে| তারা তার জোযাল টানতে অস্বীকার করবে| যদি তা হয় তাহলে আমি ঐ দেশগুলিকে শাস্তি দেব| তারা সইবে তরবারির আঘাত, অনাহার এবং মহামারীর যন্ত্রণা|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| “‘যতক্ষণ না দেশগুলি ধ্বংস হয় ততক্ষণ আমি ঐ শাস্তি বহাল রাখব| আমি নবূখদ্রিত্‌সরকে দিয়ে যুদ্ধ করিযে ঐ জাতিগুলিকে ধ্বংস করাবো| 9 সুতরাং তোমরা ভাব্বাদীদের কথা শুনবে না| শুনবে না সমস্ত লোকদের কথা যারা ভোজবাজি দেখিয়ে ভবিষ্যত্‌বাণী করে| যারা স্বপ্ন ব্যাখ্যা করতে পারে বলে দাবী করে তাদের কথা শুনো না| যারা মৃতদের সঙ্গে কথা বলে অথবা যাদু কৌশল করে তাদের কথা শুনো না| তারা প্রত্যেকে বলবে, “বাবিলের রাজার দাসত্ব তোমাদের করতে হবে না|” 10 কিন্তু তারা তোমাদের মিথ্য়ে বলবে| তারাই তোমাদের দেশত্যাগী হবার কারণ হবে | আমি তোমাদের জোর করে মাতৃভূমি ছেড়ে য়েতে বাধ্য করাবো এবং তোমরা বিদেশের মাটিতে মৃত্যুবরণ করবে| 11 “‘কিন্তু দেশগুলোর সমস্ত লোকরা যারা বাবিলের রাজার কাছে আত্মসমর্পন করবে, তাকে সেবা করতে রাজী হবে এবং তার জোযালে নিজেদের গলা দেবে, তারা বাঁচবে| আমি সেই লোকদের তাদের স্বদেশে বাস করতে দেব এবং তাদের জমি চাষ করতে দেব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 12 “‘আমি যিহূদার রাজা সিদিকিযের কাছেও এই বার্তা পাঠিয়েছি| আমি তাকে বলেছি, “তোমাকে জোযালের নীচে কাঁধ রাখতে হবে| তোমাকে বাবিলের রাজাকে সেবা করতে হবে ও তার বাধ্য হতে হবে| যদি তুমি বাবিলের রাজা ও লোকদের সেবা করো তাহলে জীবিত থাকবে| 13 আর যদি তুমি রাজি না হও তাহলে তুমি ও তোমার দেশের মানুষ মারা যাবে শএুর তরবারির আঘাতে অথবা অনাহার ও মহামারীর দাপটে| প্রভু উল্লেখ করেছিলেন য়ে যারা বাবিলের রাজাকে মানতে অস্বীকার করবে সেই দেশে এগুলি ঘটবে| 14 কিন্তু ভ্রান্ত ভাব্বাদীরা বলতে থাকলো: তোমরা কখনও বাবিলের রাজার দাস হবে না| ঐ কপট ভাব্বাদীদের মিথ্য়ে প্রচারে কান দিও না| 15 আমি তাদের পাঠাই নি| “তারা মিথ্য়ে বলছে এবং বলছে য়ে এই বার্তাগুলি আমার কাছে থেকে এসেছে| তাই, যিহূদার লোকরা, আমি তোমাদের দূরে পাঠিয়ে দেব| তোমাদের মৃত্যু ঘটবে এবং ঐ মিথ্য়ুক ভাব্বাদীদেরও মৃত্যু ঘটবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 16 তখন আমি (যিরমিয়) যাজক এবং সাধারণ লোকেদের বলেছিলাম, “প্রভু বলেছেন: ঐ কপট ভাব্বাদীরা বলে বেড়াচ্ছে, ‘বাবিলের লোকেরা প্রভুর মন্দির থেকে অনেক কিছু নিয়ে গিয়েছে| ঐ জিনিসগুলি খুব শীঘ্রই নিয়ে আসা হবে|’ ঐ ভাব্বাদীদের কথায় তোমরা কান দিও না| কারণ তারা মিথ্যা প্রচার করে বেড়াচ্ছে| 17 ঐ ভাব্বাদীদের কথা শুনো না| বাবিলের রাজার সেবা কর তাহলে তোমরা বেঁচে থাকবে| জেরুশালেমের শহর কেন ধ্বংস হবে এবং কেন শূন্য হয়ে যাবে? 18 যদি ঐ মানুষগুলোই ভাব্বাদী হয় এবং তারাই যদি প্রভুর বার্তা পেয়ে থাকে তাহলে তাদেরই প্রার্থনা করতে দাও| প্রভুর মন্দিরের বাদবাকী জিনিষগুলির সম্বন্ধে তারা প্রার্থনা করুক| তারা প্রার্থনা করুক য়ে মন্দিরের, জেরুশালেম শহরের এবং প্রাসাদের জিনিষপত্র বাবিলে বয়ে নিয়ে যাওয়া হবে না| ঐ ভাব্বাদীদের প্রার্থনা করতে দাও যাতে আর কোন জিনিষ তার জন্য বাবিলে নিয়ে যাওয়া না হয়|” 19 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন য়ে, জেরুশালেমের মন্দিরে কিছু জিনিষপত্র আছে: পড়ে থাকা জিনিষগুলির মধ্যে আছে স্তম্ভগুলো, পিতলের সমুদ্র, অস্থাবর দণ্ডসমূহ এবং অন্যান্য জিনিষপত্র| বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর ওগুলি আর নিয়ে যায় নি তাই রয়ে গিয়েছে| 20 যিহূদার রাজা য়িকনিযকে যখন বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল তখন সে আর ঐ জিনিসগুলো নিয়ে যায় নি| য়িকনিয ছিল যিহোয়াকীমের পুত্র, নবূখদ্রিত্‌সর যিহূদা এবং জেরুশালেমের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও ধরে নিয়ে গিয়েছিল| 21 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন য়ে প্রভুর মন্দিরে, রাজপ্রাসাদে এবং জেরুশালেমে পড়ে থাকা জিনিসপত্র বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে| 22 যতদিন না সেই দিনটি আসে য়েদিন আমি যাব এবং সেগুলি নিয়ে আসব ততদিন পর্য়ন্ত এই সব জিনিষগুলি বাবিলে থাকবে|”

যেরেমিয়া 28

1 যিহূদার রাজা সিদিকিযের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছরের পঞ্চম মাসে ভাব্বাদী হনানিয আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| হনানিয ছিলেন অসূরের পুত্র| হনানিয ছিলেন গিবিয়োন শহরের বাসিন্দা| প্রভুর মন্দিরে যাজকগণ ও আরো অনেকের উপস্থিতিতে হনানিয আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| হনানিয যা বলেছিলেন তা হল: 2 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন: ‘বাবিলের রাজা যিহূদার লোকদের কাঁধে দাসত্বের য়ে জোযাল চাপিয়েছেন তা আমি ভেঙে দেব| 3 বাবিলের রাজার দ্বারা প্রভুর মন্দির থেকে য়ে সমস্ত জিনিষ লুঠ হয়ে গিয়েছিল তার প্রত্যেকটি জিনিষ আমি দুবছরের মধ্যে তাদের জায়গায় ফেরত্‌ নিয়ে আসব| নবূখদ্রিত্‌সর বাবিলে যা কিছু নিয়ে গিয়েছে আমি সেগুলো জেরুশালেম দেশে ফেরত্‌ নিয়ে আসব| 4 যিহূদার রাজা যিহোয়াকীণকে, য়ে যিহোয়াকীমের পুত্র, তাকেও এখানে ফিরিয়ে আনব| বাবিলের রাজা যিহূদার য়ে সমস্ত মানুষকে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তাদের সবাইকে আমি আবার যিহূদায় ফিরিয়ে আনব| আমি যিহূদার লোকদের বাবিলের রাজার দাসত্ব থেকে মুক্তি দেব|”‘ 5 প্রভুর মন্দিরে দাঁড়িয়ে যাজক ও অন্যান্য লোকদের উপস্থিতিতে ভাব্বাদী যিরমিয়, ভাব্বাদী হনানিযকে উত্তর দিল| 6 যিরমিয় হনানিযকে বলল, “আমেন! আমি আশা করি তুমি প্রভুর নামে য়ে বার্তা প্রচার করেছো তা প্রভু সত্যি করে তুলবেন| আমি আশা করি প্রভু সব কিছু আবার ফিরিয়ে আনবেন| আশা করি তিনি ফিরিয়ে আনবেন উপাসনাগৃহের লুণ্ঠিত জিনিসপত্র এবং বাবিলে দাসত্ব করা যিহূদার সমস্ত লোকদের| 7 “কিন্তু আমাকে যা বলতেই হবে তা শোন, হনানিয শোন, শোন উপস্থিত লোকরা| 8 হনানিয তোমার অনেক আগে আরও অনেক ভাব্বাদী ছিলেন এবং আমি ভাব্বাদী হতে পারতাম| তারা প্রচার করেছিল অনেক দেশগুলিকে যুদ্ধ, অনাহার, মহামারী গ্রাস করবে| অনেক মহত্‌ রাজ্যের বিরুদ্ধেও তারা এধরণের ভাব্বাণী দিয়েছিল| 9 কিন্তু য়ে ভাব্বাদীরা শান্তির ভাব্বাণী প্রচার করে, সেই ভাব্বাণীগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে য়ে সত্যিই সেগুলি প্রভুর পাঠানো কিনা| সত্যি হলেই বোঝা যাবে য়ে সেই ভাব্বাদী সত্যি সত্যিই প্রভুর দ্বারা প্রেরিত| যদি কোন ভাব্বাদীর বাণী সঠিক হয় তাহলে মানুষকে বুঝতে হবে ঐ ভাব্বাদী প্রভুর দ্বারা প্রেরিত|” 10 যিরমিয় একটি জোযাল তার নিজের কাঁধে চাপাচ্ছিল| আর তখন সেই জোযাল ভাব্বাদী হনানিয যিরমিয়র কাঁধ থেকে সরিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলল| 11 হনানিয চিত্কার করে সবাইকে শুনিয়ে বলে উঠেছিলেন, “প্রভু বলেছেন: ‘এই ভাবে ঠিক আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের দাসত্বের জোযাল ভেঙে ফেলব| সমস্ত পৃথিবীর কাঁধে সে য়ে দাসত্বের জোযাল চাপিয়েছে আমি তা দু বছরের মধ্যেই ভেঙে ফেলব|”‘হনানিযর এই কথা শেষ হওয়ার পর যিরমিয় উপাসনাগৃহ ত্যাগ করে চলে গেল| 12 হনানিয যিরমিয়র কাঁধ থেকে জোযালটি তুলে নেওয়ার পর এবং সেটি ভাঙ্গবার পর প্রভু যিরমিয়র সঙ্গে কথা বললেন| 13 প্রভু যিরমিয়কে বললেন, “যাও হনানিযকে গিয়ে বলো প্রভু বলেছেন: ‘তুমি একটি কাঠের জোযাল ভেঙেছ| এবার আমি লোহার জোযাল তৈরী করব|’ 14 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন, ‘আমি প্রত্যেকটি দেশকে লোহার জোযালে বাঁধ্ব| তারপর আমি এই সব জাতিগুলিকে দিয়ে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে সেবা করাব| আমি নবূখদ্রিত্‌সরকে বন্য পশুদেরও শাসন করার ক্ষমতা দেব|”‘ 15 ভাব্বাদী যিরমিয় তখন ভাব্বাদী হনানিযকে বলেছিল, “শোন হনানিয! তোমাকে প্রভু পাঠান নি| কিন্তু তুমি যিহূদার লোকদের মিথ্যাকে বিশ্বাস করতে শিখিযেছো| 16 তাই প্রভু বলেছেন, ‘শীঘ্রই আমি তোমাকে এই পৃথিবীর বাইরে সরিয়ে দেব হনানিয| তোমার এবছরেই মৃত্যু হবে| কেন? কারণ তুমি লোকদের প্রভুর বিরুদ্ধে যাবার শিক্ষা দিয়েছো|”‘ 17 হনানীয সেই বছরেই সপ্তম মাসে মারা গিয়েছিলেন|

যেরেমিয়া 29

1 যিরমিয় ইহুদীদের কাছে, যারা বাবিলে বন্দী ছিল, একটি চিঠি পাঠিয়েছিল| একই চিঠি সে বাবিলে বাস করা নেতাদের, যাজকদের, ভাব্বাদীদের এবং সাধারণ লোকদের পাঠিয়েছিল| এদের সবাইকে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর জেরুশালেম থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল| 2 (রাজা য়িকনিয, রানী মা, সভাপরিষদ, যিহূদা এবং জেরুশালেমের নেতৃবৃন্দকে, ছুতোর মিস্ত্রীদের এবং কামারদের জেরুশালেম থেকে নির্বাসিত হিসেবে নিয়ে যাবার পর এই চিঠি পাঠানো হয়েছিল| এদের সবাইকে জেরুশালেম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল|) 3 যিহূদার রাজা সিদিকিয় নবূখদ্রিত্‌সরের কাছে ইলিয়াসা এবং গমরিযকে পাঠিয়েছিল| ইলিয়াসা ছিল শাফনের পুত্র এবং গমরিয ছিল হিল্কিয়ের পুত্র| যিরমিয় ঐ দুজনকে বাবিলে পৌঁছিযে দেওয়ার জন্য একটি চিঠি দিয়েছিল| চিঠির বক্তব্য ছিল এই: 4 ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন তাদের সবাইকে যাদের তিনি জেরুশালেম থেকে বাবিলে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন: 5 “ওখানেই তোমরা স্থায়ী ভাবে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করো| চাষ আবাদ করে নিজেদের খাদ্যশস্য নিজেরাই ফলাও| 6 ব্বিাহ করে তোমরা সন্তানদের জন্ম দাও| পুত্র কন্যাদেরও ব্বিাহ দাও| তারাও য়েন সন্তান উত্‌পাদন করে যাতে বাবিলে সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়| প্রজন্মকে বাড়াও| কখনও সংখ্যালঘু হয়ে পোড়ো না| 7 য়ে শহরে আমি তোমাদের পাঠিয়েছি সেই শহরের উন্নতির জন্য ভালো কাজ কর| শহরের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো| কারণ শহরে যদি শান্তি বিরাজ করে তাহলে তোমরাও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে|” 8 ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: “ভাব্বাদীদের এবং যাদুকরদের তোমাদের ঠকাতে দিও না| তাদের স্বপ্নদর্শনের কথায় কান দিও না| 9 তারা মিথ্য়ে প্রচার করে বেড়ায| তারা নিজেদের বাণীকে আমার নামে চালায| কিন্তু আমি তাদের পাঠাই নি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 10 প্রভু যা বলেছেন তা হল এই: “70 বছরের জন্য বাবিলের এই ক্ষমতা ও আধিপত্য থাকবে| তারপরে আমি তোমাদের কাছে যারা বাবিলে বাস করছ তাদের কাছে আসবো এবং আমার প্রতিশ্রুতি মতো তোমাদের জেরুশালেমে ফিরিয়ে নিয়ে আসব| 11 আমি আমার পরিকল্পনাগুলো কি তা জানি| তাই এগুলো তোমাদের বললাম|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তোমাদের সুনিশ্চিত নিরাপদ ভবিষ্যত্‌ দিতে চাই| তোমাদের জন্য আমার ভাল ভাল পরিকল্পনা আছে| তোমাদের আঘাত করবার কোন পরিকল্পনা আমার নেই| আমি তোমাদের আশা এবং সু-ভবিষ্যত্‌ দিতে চাই| 12 তখন তোমরা লোকরা, আমার নামে মিনতি করবে, আমার কাছে এসে প্রার্থনা করবে| আমি তোমাদের কথা শুনব| 13 তোমরা আমাকে খুঁজে বেড়াবে এবং যখন তোমরা অন্তর দিয়ে আমাকে অন্বেষণ করবে তখনই আমাকে খুঁজে পাবে| 14 আমি তোমাদের আমাকে খুঁজতে দেব|” প্রভু বলেন: “আমি তোমাদের নির্বাসন থেকে এই জায়গায় ফিরিয়ে আনব| আমিই সেই জন য়ে তোমাদের বন্দীরূপে পাঠিয়ে ছিলাম| কিন্তু আমি তোমাদের সমস্ত দেশ থেকে এবং সমস্ত জায়গা থেকে যেখানে আমি তোমাদের বন্দীরূপে পাঠিয়ে ছিলাম সকলকে একত্রিত করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 15 তোমরা হয়ত বলবে, “কিন্তু প্রভু তো আমাদের এই বাবিলে ভাব্বাদীদের দিয়েছেন|” 16 কিন্তু প্রভু এইগুলি বলেছেন তোমাদের আত্মীযদের সম্বন্ধে যাদের বাবিলে নিয়ে আসা হয়নি| আমি বলছি দাযূদের সিংহাসনে বসা বর্তমান রাজা এবং সেই সব লোকদের সম্বন্ধে যারা এখনও জেরুশালেমে পড়ে আছে| 17 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন: “জেরুশালেমে যারা রয়ে গিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আমি তরবারি, অনাহার ও ভয়ঙ্কর রোগসমূহ পাঠাব| আমি তাদের সেই সমস্ত বাজে ডুমুরের মতো করে দেব য়েগুলো খাওয়া যায় না য়েহেতু সেগুলো পচা| 18 আমি তাদের তরবারি, অনাহার ও রোগসমূহ দিয়ে তাড়া করব| আমি তাদের দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা এমন ভযাবহ করে তুলব য়ে পৃথিবীর সমস্ত দেশগুলি বিস্ময বিহবল এবং ভীত হয়ে যাবে| তারা ধ্বংস হয়ে যাবে| তাদের নামগুলো অভিশাপ হিসেবে ব্যবহৃত হবে| সমস্ত জাতিগুলি, যেখানে আমি তাদের পাঠাব, ওদের অপমান করবে| 19 জেরুশালেমের মানুষ আমার বার্তা শোনেনি বলে আমি তাদের এই দুরবস্থা করব|” আমি আমার অনুচর এবং ভাব্বাদীদের মারফত্‌ বার বার আমার বার্তা পাঠিয়েছি| কিন্তু তারা শোনেনি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 20 “তোমরা লোকরা যারা নির্বাসনে রয়েছ, শোন! আমিই সে জন য়ে তোমাদের জেরুশালেম ছেড়ে বাবিলে য়েতে বাধ্য করেছিলাম| সেহেতু তোমরা প্রভুর বার্তা শোন|” 21 কোলাযের পুত্র আহাব এবং মাসেযের পুত্র সিদিকিয় সম্বন্ধে সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “এই দুজন তোমাদের কাছে মিথ্যা প্রচার করেছে| তারা বলে বেড়াচ্ছে য়ে তারা আমার বাণী প্রচার করছে| কিন্তু তারা মিথ্যা বলছে| আমি ঐ ভাব্বাদীদের বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে দিয়ে দেব এবং নবূখদ্রিত্‌সর ঐ দুই জন ভাব্বাদীকে বাবিলে নির্বাসিত সমস্ত লোকদের সামনে হত্যা করবে| 22 সমস্ত নির্বাসিতদের কাছে এই হত্যা শাস্তির উদাহরণ হিসেবে মনে থাকবে| ঐ বন্দী যিহূদার অন্যদের বলবে: ‘প্রভু তোমাদের সঙ্গেও সিদিকিয় এবং আহাবের মতো ব্যবহার করতে পারেন| বাবিলের রাজা ওই দুজনকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে|’ 23 ঐ দুই ভাব্বাদী ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছিল| তারা তাদের প্রতিবেশীদের স্ত্রীর সঙ্গে পাপ ও ব্যভিচারে মেতে উঠেছিল| তারা মিথ্য়ে প্রচার করে তা আমার নামে চালিযেছিল| আমি তাদের ওসব করতে বলিনি| আমি জানি তারা কি করেছিল| আমি তার এক জন সাক্ষী|” এই হল প্রভুর বার্তা| 24 শময়িয়কেও একটা বার্তা দাও| শময়িয় নিহিলামীয পরিবারের| 25 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন: “শময়িয় তুমি জেরুশালেমবাসীকে চিঠি পাঠিয়েছিলে এবং মাসেযের পুত্র যাজক সফনিয়কেও চিঠি পাঠিয়েছিলে| অন্য সমস্ত যাজকদেরও চিঠি পাঠিয়েছিলে| তুমি তোমার নামে সে সব চিঠি পাঠিয়েছিলে, প্রভুর নামে নয়| 26 শময়িয় তুমি তোমার চিঠিতে সফনিয়কে যা লিখেছিলে তা হল: ‘সফনিয়, প্রভু তোমাকে যিহোয়াদার জায়গায় যাজক হিসেবে নিয়োগ করেছেন| তুমিই প্রভুর মন্দিরের দায়িত্বে থাকবে| কেউ ভাব্বাদী হবার পাগলামি করলে তুমি তাকে বন্দী করবে| তুমি সেই বন্দীকে কাষ্ঠদণ্ডে পা বেঁধে তার ঘাড়ে লোহার শেকল পরিযে দেবে| 27 এখন যিরমিয় ভাব্বাদীদের মতো ব্যবহার করছে| সুতরাং কেন তুমি তাকে বন্দী করছো না? 28 যিরমিয় বাবিলে আমাদের কাছে এই কথাগুলি পাঠিয়েছে: “বাবিলে তোমাদের দীর্ঘদিনের জন্য বাস করতে হবে| সুতরাং তোমরা সেখানেই ঘরবাড়ি তৈরী করে থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করো| চাষ-আবাদ করে নিজেরাই নিজেদের খাদ্যশস্য উত্‌পাদন করো|”‘ 29 ভাব্বাদী যিরমিয়কে যাজক সফনিয় চিঠি পড়ে শোনাল| 30 তখন যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এলো: 31 “যিরমিয় এই কথাগুলি, বাবিলে যারা নির্বাসিত, সেই সমস্ত লোকের কাছে পাঠিয়ে দাও| শময়িয় নিহিলামীযটি সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল এই: শময়িয় তোমাদের কাছে বার্তা প্রচার করেছে কিন্তু আমি তাকে পাঠাই নি| শময়িয় তোমাদের মিথ্যাকে বিশ্বাস করতে শিখিযেছিল| 32 শীঘ্রই আমি শময়িয়কে শাস্তি দেব| শময়িয়ের পরিবারকেও ধ্বংস করে দেব এবং আমি আমার লোকদের যা কিছু ভাল করব তার থেকেও সে বঞ্চিত হবে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| “‘আমি শময়িয়কে শাস্তি দেব কারণ সে লোকদের প্রভুর বিরুদ্ধে যাবার শিক্ষা দিয়েছিল|”‘

যেরেমিয়া 30

1 ঈশ্বরের কাছ থেকে যিরমিয়র কাছে এই বার্তা এসেছিল| 2 ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু বললেন, “আমি যা বলেছি, যিরমিয়, তুমি তা একটি খাতায় লিখে রাখো| তারপর তা দিয়ে তুমি নিজের জন্য এই বইটি লিখো| 3 যা বলছি তা কর কারণ এমন দিন আসবে য়েদিন আমি ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকদের নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনব|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তাদের পূর্বপুরুষদের য়ে দেশ দিয়েছিলাম সেখানে তাদের ফিরিয়ে দেব| তখন আমার লোকরা আর এক বার সেই জমির মালিকানা পাবে|” 4 প্রভু ইস্রায়েলের এবং যিহূদার লোকদের সম্বন্ধে এই বার্তা উচ্চারণ করেছিলেন| 5 প্রভু যা বলেছিলেন তা হল:“আমরা শুনতে পাচ্ছি ভয় পেয়ে লোকরা কাঁদছে! লোকরা ভীত! সেখানে কোন শান্তি নেই! 6 “এই প্রশ্নটি করো এবং তার সম্বন্ধে ভাবো: একজন পুরুষ কি একটি শিশুকে জন্ম দিতে পারে? নিশ্চয়ই নয়| তাহলে কেন আমি দেখতে পাচ্ছি প্রত্যেকটি শক্তিশালী পুরুষ প্রসব বেদনায় কাতর একজন মহিলার মতো পেটে হাত দিয়ে আছে? কেন প্রত্যেকটি মানুষের মুখ মৃত ব্যক্তির মতো পাঁশুটে বর্ণ ধারণ করেছে? কারণ তারা প্রত্যেকে হঠাত্‌ ভীষণ ভয় পেয়েছে|” 7 “যাকোবের জন্য এটা একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সময়| এই সময়টা একটা খুব বড় অশান্তির সময়| আর কখনও এরকম সমস্যা সঙ্কুল সময় আসবে না| কিন্তু যাকোব রক্ষা পাবে| 8 এই হল সর্বশক্তিমান প্রভুর বার্তা: “সেই সময় আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের কাঁধে চাপানো জোযাল সরিয়ে নেব| তোমাদের দড়ির বাঁধন খুলে দেব| অন্য জাতির লোকরা আর কখনও আমার লোকদের দাসত্ব করতে বাধ্য করবে না| 9 তারা আর কোন বিদেশী রাজ্যের সেবা করবে না| তারা শুধু প্রভু তাদের ঈশ্বরের সেবা করবে এবং তারা তাদের রাজা দাযূদের সেবা করবে| আমি রাজাকে তাদের কাছে পাঠাব| 10 “সুতরাং যাকোব, আমার ভৃত্যদের ভয় পেও না!” “ইস্রায়েল ভয় পেও না| আমি তোমাকে রক্ষা করব| রক্ষা করব বন্দীদের পরবর্তী উত্তরপুরুষদেরও| আমি তাদের নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনব| আবার যাকোব শান্তি ফিরে পাবে| লোকরা তাকে আর বিরক্ত করবে না| সেখানে আর কোন শএু থাকবে না যাকে আমার লোকরা ভয় পাবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 11 যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকরা আমি তোমাদের সঙ্গে আছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| “আমি তোমাদের রক্ষা করবো| একথা সত্যি য়ে আমি তোমাদের অন্য দেশে পাঠিয়েছিলাম| আমি ঐসব দেশগুলিকে ধ্বংস করব, কিন্তু তোমাদের আমি ধ্বংস করব না| খারাপ কাজের শাস্তি তোমাদের পেতেই হবে| আমি তোমাদের ন্যায্যভাবে শিক্ষা দেব| আমি তোমাদের শাস্তি না নিয়ে য়েতে দেব না|” 12 প্রভু বললেন: “এমন কোন আঘাত আছে কি যা সারে না? ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকেরা, তোমাদের ক্ষত এমন য়ে তা সারবে না| 13 এমন কোন ব্যক্তি নেই য়ে তোমাদের ক্ষতের যত্ন নিতে পারে| তাই তোমাদের আঘাত সারবে না| 14 তোমরা বহু দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিযেছিলে কিন্তু তোমাদের দিকে তারা প্রযোজনের সময় ফিরেও তাকাযনি| তোমাদের বন্ধুরা তোমাদের ভুলে গিয়েছে| আমি তোমাদের শএুর মতো কঠিন আঘাত করেছিলাম| আমি তোমাদের কঠোর শাস্তি দিয়েছিলাম| তোমরা বহু মারাত্মক পাপ করেছিলে বলে তোমাদের সঙ্গে আমি ঐ ব্যবহার করেছি| 15 ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকরা কেন তোমরা তোমাদের ক্ষত নিয়ে এতো চিত্কার করেছো? ক্ষতের যন্ত্রণা তো হবেই এবং কেউ তা সারাতে পারবে না| আমি প্রভু, তোমাদের বহু ভয়ঙ্কর পাপের ফলস্বরূপ এই শাস্তি দিয়েছি| 16 আমি প্রভু, তোমাদের ধ্বংস করেছিলাম| কিন্তু এখন ওদের ধ্বংস হবার পালা| ইস্রায়েল ও যিহূদা তোমাদের শএুরা এবার বন্দী হবে| ওরা তোমাদের জিনিস চুরি করেছিল| এবার অন্যরা ওদের জিনিসপত্র চুরি করবে| ওরা যুদ্ধের সময় তোমাদের জিনিস নিয়ে গিয়েছিল| এবার যুদ্ধের সময় ওদের জিনিস অন্যরা নিয়ে যাবে| 17 আমি তোমাদের আবার স্বাস্থ্য়বান করে তুলব| আমি তোমাদের ক্ষত সারিয়ে দেব|” এই হল প্রভুর বার্তা| “কেন? কারণ লোকরা তোমাদের জাতিচ্য়ূত বলে উল্লেখ করেছে| ওরা বলেছিল, ‘সিয়োনকে দেখাশোনা করবার কেউ নেই|”‘ 18 প্রভু বলেছেন: “যাকোব পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা বর্তমানে নির্বাসিত হলেও তারা ফিরে আসবে এবং আমি যাকোবের বাড়ীগুলির ওপর করুণা দেখাব| এখন শহরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত গৃহগুলি দ্বারা আবৃত একটি শূন্য পাহাড় মাত্র| কিন্তু এই শহর আবার পুনর্নিমিত হবে এবং আবার রাজপ্রাসাদ তৈরী হবে নির্দিষ্ট স্থানে| 19 আবার শহরটি গমগম করবে লোকদের গানে ও প্রশংসায| কেউ তাদের উপহাস করবে না| আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের অনেক সন্তান দেব| আমি তাদের জন্য গৌরব আনব| কেউ তাদের নীচ নজরে দেখবে না| 20 “অনেক আগে য়েমন ইস্রায়েলের পরিবার ছিল তেমনই হবে যাকোবের পরিবার| যিহূদা ও ইস্রায়েলের য়েমন পরিবার ছিল তেমনই হবে যাকোবের পরিবার| যিহূদা ও ইস্রায়েলকে আমি শক্তিশালী করে তুলব| এবং যারা তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে আমি তাদের শাস্তি দেব| 21 তাদের নিজেদের এক জনই নেতৃত্ব দেবে| সেই শাসক আমারই লোকের থেকে আসবে| তারা আমার কাছের লোক হবে| আমি তাদের নেতাকে আমার কাছে আসতে বলব এবং সে হবে আমার কাছের লোক| 22 তোমরা হবে আমার লোক আর আমি হব তোমাদের ঈশ্বর|” 23 প্রভু ভীষণ রুদ্ধ ছিলেন! তিনি দুষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তি দিয়েছিলেন| তার শাস্তি এসেছিল ঘূর্ণি ঝড়ের মতো| 24 প্রভুর রোধ প্রশমিত হবে না যতক্ষণ না য়েরকম পরিকল্পনা করেছেন সেই ভাবে শাস্তি দেন| শেষের দিনগুলিতে তোমরা এসব বুঝতে পারবে|

যেরেমিয়া 31

1 প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন, “সে সময় আমি ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারবর্গের ঈশ্বর হব| এবং তারা হবে আমার লোক|” 2 প্রভু বলেছেন: “যারা শএুর তরবারির আক্রমণ থেকে পালিয়ে বেঁচ্ছেিল তারা মরুভূমিতেই আরাম খুঁজে পাবে| ইস্রায়েল সেখানে বিশ্রামের জন্য যাবে|” 3 বহুদূর থেকে প্রভু লোকদের দৃষ্টিগোচরে আসবেন| প্রভু বলেছেন, “আমি তোমাদের একটি অফুরন্ত ভালবাসা দিয়ে ভালবেসে ছিলাম| সেই জন্য আমি তোমাদের প্রতি দযা দেখানো চালিযে গিয়েছিলাম| 4 “ইস্রায়েল, আমার কনে, তোমাকে আবার নতুন করে তৈরী করব| তুমি আবার একটি দেশ হবে| পুনরায় তুমি তোমার খঞ্জনীসমূহ তুলে নেবে| খুশীর জোযার ভাসা লোকদের সঙ্গে তালে তাল মিলিযে তুমিও নেচে উঠবে| 5 ইস্রায়েলের কৃষক, তোমরা আবার দ্রাক্ষা চাষ করবে| শময়িয়র শহরের চারপাশের পাহাড় ঘিরে তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরী করবে| কৃষকরা সেই দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে উত্পন্ন হওয়া দ্রাক্ষার ফসল তুলবে এবং ঐ দ্রাক্ষা খেযে উপভোগ করবে| 6 একটা নির্দিষ্ট সময়ে পাহারাদার এই বাণী চিত্কার করে বলবে: ‘চলো, সিয়োনে গিয়ে আমাদের প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করি!’ এমন কি ইফ্রযিম পার্বত্য প্রদেশে পাহারাদাররাও ঐ বাণী চিত্কার করে বলবে|” 7 প্রভু বললেন, “সুখী হও! যাকোবের জন্য গান গাও! ইস্রায়েলের জন্য চিত্কার করো| ইস্রায়েল হল মহান রাষ্ট্র| প্রশংসা কর এবং চিত্কার করে বলো: ‘প্রভু তাঁর লোকদের রক্ষা করেছেন! ইস্রায়েলের যারা বন্দী হয়েছিল তাদের সবাইকে প্রভু রক্ষা করেছেন|’ 8 মনে রেখো, আমি ইস্রায়েলকে ঐ উত্তরের দেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসব| আমি উত্তরের বহু দূরের জায়গা থেকে ইস্রায়েলীয়দের একত্রিত করব| তাদের মধ্যে কিছু লোক থাকবে অন্ধ ও পঙ্গু| কিছু মহিলা থাকবে গর্ভবতী| কিন্তু অনেক অনেক মানুষ ফিরে আসবে সেখানে| 9 তারা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসবে কিন্তু আমি তাদের সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা দেব| আমি তাদের জলপ্রবাহের পাশ দিয়ে নেতৃত্ব দেব| আমি তাদের মসৃণ রাস্তার ওপর নেতৃত্ব দেব যাতে তারা হোঁচট না খায়| আমি এরকম করব য়েহেতু আমি ইস্রায়েলের পিতা এবং ইফ্রযিম আমার প্রথম সন্তান| 10 “জাতিসমূহ, প্রভুর কথাগুলি শোন! সমুদ্রের ধারে দূর দেশগুলিতে এই বার্তা বল| ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তাদের একত্র করে ফিরিয়ে আনবেন| এবং তিনি তার মেষপালের (লোকেদের) ওপর নজর রাখবেন মেষপালকের মতো|” 11 প্রভু যাকোব পরিবারকে ফিরিয়ে আনবেন| তিনি তাঁর লোকদের তাদের চেয়ে শক্তিশালী লোকদের হাত থেকে রক্ষা করবেন| 12 সিয়োনের শিখরে উঠে আসবে ইস্রায়েলের মানুষ| তারা আনন্দে উল্লাস করবে| তাদের মুখমণ্ডলের ওপর আনন্দ ও সুখের দীপ্তি দেখা দেবে| প্রভু য়ে সমস্ত ভালো জিনিষগুলি তাদের দেবেন সে সম্বন্ধে তারা খুশী হবে| প্রভু তাদের শস্যসমূহ, নতুন দ্রাক্ষারস, জলপাইযের তেল, মেষ এবং গরুসমূহ দেবেন| ইস্রায়েলের লোকের আর কোন সমস্যা থাকবে না| তাদের জীবন হয়ে উঠবে একটি বাগানের মত যাতে অনেক জল আছে| 13 যুবতীরা আনন্দে নৃত্য করবে| যুবক ও বৃদ্ধরাও সেই নৃত্যে অংশ নেবে| আমি তাদের শোককে আনন্দে পরিণত করব| আমি ইস্রায়েলের লোকদের আরাম দেব এবং দুঃখের বদলে তাদের আনন্দ দেব| 14 আমি তাদের যাজকদের প্রচুর খাদ্য দেব| আমার লোকরা, আমি তাদের য়ে ভালো জিনিষগুলি দেব তাতে সন্তুষ্ট হবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 15 প্রভু বললেন, “রামা থেকে কান্না ও দুঃখের শব্দ শোনা যাবে| রাহেলাতার সন্তানদের জন্য কাঁদবে| মৃত সন্তানদের জন্য রাহেল আরাম নিতে অস্বীকার করবে|” 16 কিন্তু প্রভু বললেন, “কান্না থামাও| চোখের জল মুছে নাও! তুমি তোমার কৃতকার্য়ের জন্য পুরস্কৃত হবে| এই হল প্রভুর বার্তা| “ইস্রায়েলের লোকরা তাদের শএুর দেশ থেকে ফিরে আসবে| 17 ইস্রায়েল, তোমার জন্য আশা আছে|” এই হল প্রভুর বার্তা| “তোমার সন্তানরা তাদের স্বদেশে ফিরে আসবে| 18 ইফ্রযিমের কান্না আমি শুনতে পেয়েছি| ইফ্রযিম কাঁদতে কাঁদতে বলছে: ‘প্রভু আপনি আমাকে সত্যি শাস্তি দিয়েছেন এবং আমি আমার শিক্ষা পেয়ে গিয়েছি| আমি ছিলাম একটি বাছুরের মতো যাকে কখনও শিক্ষা দেওয়া হয়নি| আপনিই আমার প্রভু ঈশ্বর| অনুগ্রহ করে আমার শাস্তি তুলে নিন| আমি আপনার কাছে ফিরে আসব| 19 প্রভু আমি আপনার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম কিন্তু আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি| তাই আমি আমার হৃদয় এবং আমার জীবন পরিবর্তন করেছি| আমি আমার বোকামিতে নিজেই ভীষণ লজ্জিত| আমার য়ৌবনের খারাপ কাজগুলো আজ আমাকেই অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছে|”‘ 20 ঈশ্বর বললেন, “তুমি কি জানো ইফ্রযিম আমার প্রিয পুত্র? আমি তাকে ভালোবাসি| ভীষণ ভালোবাসি এবং আমি তাকে সত্য স্বাচ্ছন্দ্য দিতে চাই|” এই হল প্রভুর বার্তা| 21 “ইস্রায়েলবাসী, রাস্তার সংকেত চিহ্নগুলিকে স্থাপন কর| পথ চিহ্নগুলি তুলে ধরো য়েগুলি বাড়ীর দিকে নির্দেশ করে| য়ে রাস্তায় তুমি হেঁটে এসেছ তা লক্ষ্য করো এবং মনে রেখো| ইস্রায়েল, আমার কনে, ঘরে ফিরে এসো| ফিরে এসো তোমার নিজের শহরগুলিতে| 22 অবিশ্বস্ত কন্যা, কতদিন তুমি এভাবে ঘুরে বেড়াবে? কবে তুমি ঘরে ফিরবে?” “প্রভু যখন দেশে কোন নতুন কিছু সৃষ্টি করেন (তখন) এক জন পুরুষকে এক জন মহিলা ঘিরে থাকে|” 23 ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “যিহূদার লোকদের জন্য আমি আবার ভাল কিছু করব| যাদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের আমি ফিরিয়ে আনব| সেই সময়, যিহূদা শহরগুলির লোকরা আবার ঐ কথাগুলি বলবে: ‘ধার্মিক বাসস্থান ও পবিত্র পর্বত, প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন|’ 24 “যিহূদার সমস্ত শহরে শান্তি বিরাজ করবে| কৃষক এবং মেষপালকরা উভয়েই শান্তিতে বসবাস করবে| 25 যারা ক্লান্ত এবং অসুস্থ তাদের আমি বিশ্রাম ও শক্তি য়োগাব এবং যারা দুঃখিত ছিল তাদের ইচ্ছাসমূহ পূর্ণ করব|” 26 একথা শোনার পর আমি (যিরমিয়) জেগে উঠে চারি দিকে তাকালাম| আমার খুব ভাল ঘুম হয়েছিল| 27 এই হল প্রভুর বার্তা| “সেই দিন আসছে যখন আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের তাদের সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করব| আমি তাদের সন্তান ও গবাদি পশুদের সংখ্যায় বেড়ে উঠতে সাহায্য করব এটা হবে গাছ পোঁতা ও তার দেখাশোনা করবার মত| 28 অতীতে আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার ওপর নজর রেখেছিলাম কিন্তু সেটা ছিল তাদের ভেঙ্গে ফেলবার জন্য| আমি তাদের ধ্বংস করেছিলাম| আর এখন তাদের গড়ে তোলবার জন্য এবং তাদের শক্তিশালী করবার জন্য তাদের ওপর নজর রাখব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 29 “লোকরা আর কখনও বলবে না:পিতামাতা টক দ্রাক্ষা খেযেছিল, কিন্তু তাদের সন্তানরা টক স্বাদ পেয়েছিল| 30 না, প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের পাপের জন্যই মারা যাবে| য়ে ব্যক্তি টক দ্রাক্ষা খাবে সে নিজেই টক স্বাদ পাবে|” 31 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “সময় আসছে যখন আমি নতুন একটি চুক্তি করব যিহূদা ও ইস্রায়েলের পরিবারের সঙ্গে| 32 আমি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলাম এটা সেরকম নয়| তাদের মিশর থেকে বাইরে নিয়ে আসার সময় আমি ঐ চুক্তি করেছিলাম| আমি ছিলাম তাদের প্রভু, কিন্তু তারা সেই চুক্তি ভেঙে ফেলেছিল|” এই হল প্রভুর বার্তা| 33 “ভবিষ্যতে, আমি এই বন্দোবস্ত ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে করব|” এটি হল প্রভুর বার্তা| আমি আমার শিক্ষামালা তাদের মনে গেঁথে দেব এবং তাদের হৃদয়ে লিখে দেব| আমি হব তাদের ঈশ্বর আর তারা হবে আমার লোক|” 34 “লোকদের তাদের প্রতিবেশীদের অথবা তাদের আত্মীযদের প্রভুকে জানতে শেখাবার কোন প্রয়োজন পড়বে না| কারণ ক্ষুদ্রতম থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্য়ন্ত সব লোকরা আমায় জানবে| আমি তাদের দুষ্ট কাজগুলি ক্ষমা করে দেব এবং তাদের পাপসমূহ মনে রাখব না|” এই হল প্রভুর বার্তা| 35 প্রভু বললেন: “দিনের রৌদ্র কিরণ প্রভুর সৃষ্টি এবং প্রভু সৃষ্টি করেছেন চাঁদ, তারাদের ঔজ্জ্বল্য| প্রভু সৃষ্টি করেছেন সমুদ্রতট যেখানে ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে| তাঁর নাম হল সর্বশক্তিমান প্রভু|” 36 প্রভু একথাগুলি বললেন, “ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষ একটি জাতি হওয়া থেকে বিরত হবে| তারা একটি জাতি হওয়া থেকে বিরত হবে তখনই যদি আমি সূর্য়, চন্দ্র, তারা এবং সমুদ্রের ওপর থেকে আমার নিয়ন্ত্রণ হারাই|” 37 প্রভু বললেন: “ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষকে আমি কখনও অস্বীকার করব না| তাদের তখনই বাতিল করব যখন তারা আকাশের পরিমাপ করতে পারবে এবং পৃথিবীর নীচের সমস্ত গোপন তথ্য জানতে পারবে| এক মাত্র তখনই আমি তাদের অসত্‌ কর্মসমূহের জন্য বাতিল করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 38 এই হল প্রভুর বার্তা, “দিন আসছে যখন প্রভুর জন্য জেরুশালেম শহর পুনর্নিমিত হবে| হননেলের দুর্গ থেকে কোণের ফটক পর্য়ন্ত শহরে প্রতিটি জিনিষকে আবার গড়ে তোলা হবে| 39 শহরের সীমান্তরেখা টানা হবে প্রান্তিক ফটক থেকে সোজাসুজি গারেব পাহাড় পর্য়ন্ত, তারপর সেই রেখা ঘুরে যাবে গোযা পয়সু3| 40 উপত্যকাটি, যেখানে মৃতদেহগুলি ও ছাই ইতস্ততঃ ছড়ানো রয়েছে, প্রভুর কাছে পবিত্র হয়ে উঠবে| কিদ্রোণ উপত্যকার একেবারে নীচ পর্য়ন্ত সমস্ত ছাদগুলি, অশ্বফটকের কোণ পর্য়ন্ত সমস্ত রাস্তাগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র হয়ে উঠবে| জেরুশালেম শহরকে আর কখনো ধ্বংস করা হবে না অথবা বিচ্ছিন্ন করা হবে না|”

যেরেমিয়া 32

1 যিহূদার রাজা সিদিকিযের রাজত্ব কালে প্রভুর বার্তা এল যিরমিয়র কাছে| নবূখদ্রিত্‌সর যখন রাজা হিসেবে 18 বছর পূর্ণ করেছেন তখন সিদিকিয় রাজা হিসেবে 10 বছরে পা দিয়েছেন| 2 সেই সময় বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেম শহরের চারদিকে ঘিরে ধরেছিল এবং যিরমিয় কয়েদ হিসেবে রক্ষীদের উঠোনে ছিল| এই উঠোনটি যিহূদার রাজার প্রাসাদে ছিল| 3 (যিহূদার রাজা যিরমিয়কে সেখানে কারাবন্দী করে রেখেছিল কারণ সে তার পূর্ব থেকে করা ভাব্বাণী পছন্দ করত না| যিরমিয় বলেছিল, “প্রভু বলেছেন: ‘আমি শীঘ্রই বাবিলের রাজাকে জেরুশালেম দিয়ে দেব| নবূখদ্রিত্‌সর এই শহরকে অধিগ্রহণ করবে| 4 যিহূদার রাজা সিদিকিয়, বাবিলের সৈন্যদের হাত থেকে পালাতে সক্ষম হবে না| সৈন্যরা তাকে নবূখদ্রিত্‌সরের হাতে তুলে দেবে| এবং দুই রাজা মুখোমুখি কথা বলবে| সিদিকিয় স্বচক্ষে নবূখদ্রিত্‌সরকে দেখতে পারবে| 5 বাবিলের রাজা সিদিকিয়কে বাবিলে নিয়ে যাবে| আমি তাকে শাস্তি না দেওয়া পর্য়ন্ত সিদিকিয় বাবিলেই থাকবে|’ এই হল প্রভুর বার্তা| ‘তোমরা যদি বাবিলের সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, তোমরা তাদের ওপর জিততে সক্ষম হবে না|”‘) 6 যিরমিয় যখন বন্দী ছিল তখন সে বলেছিল, “প্রভুর বার্তা আমার কাছে এসেছিল| এই হল সেই বার্তা: 7 যিরমিয়, তোমার খুড়তুতো ভাই, হনমেল শীঘ্রই তোমার কাছে আসবে| হনমেল হল তোমার কাকা শল্লুমের পুত্র| হনমেল এসে বলবে, ‘যিরমিয়, অনাথোত শহরের কাছে আমার জমিটা তুমি কিনে নাও| তুমি আমার নিকট আত্মীয বলেই তোমাকে এই প্রস্তাব দিচ্ছি| জমিটা কেনার অধিকার এবং দায়িত্ব তোমার|’ 8 “প্রভু যা বলেছিলেন তাই ঘটল| আমার খুড়তুতো ভাই হনমেল রক্ষীদের উঠোনে আমার কাছে এলো এবং বলল, ‘যিরমিয় তুমি আমার অনাথোত শহরের কাছে বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর সীমানার অন্তর্ভুক্ত জমিটা কিনে নাও| এটা তোমার অধিকার ও দায়িত্ব| তাই তুমি তোমার জন্য জমিটা কিনে নাও|’“সুতরাং আমি জানতাম য়ে প্রভুর বার্তা কি ছিল| 9 আমি হনমেলের কাছ সুক অনাথোত শহরের জমিটা কিনলাম| জমির দাম হিসেবে আমি হনমেলকে 17 শ্কেল রৌপ্য়মুদ্রা দিয়েছিলাম| 10 আমি সেই জমি বিক্রিীর চুক্তিপত্রে সই করে তা যত্ন করে তুলে রেখে দিলাম| জমি বিক্রিীর সময় আমি কয়েকজনকে সাক্ষী হিসাবেও উপস্থিত রেখেছিলাম| দাম মেটানোর সময়, যখন আমি রূপাটি ওজন করছিলাম তারাও উপস্থিত ছিল| 11 তারপর আমি সীলমোহর করা একটি প্রত্যযিত নকল প্রমাণপত্র নিলাম আর একটি সীলমোহর বিহীন প্রতিলিপি নিলাম| 12 এবং সেগুলি আমি বারূকের হাতে তুলে দিলাম| বারূক হল নেরিযের পুত্র| নেরিযে ছিল মহসেযের পুত্র| সীলমোহর করা প্রতিলিপিতে আমার জমি কেনার সমস্ত চুক্তি ও শর্ত লেখা ছিল| আমি যখন বারূককে সেই সীলমোহর করা দলিলের প্রতিলিপি দিচ্ছিলাম তখন সেখানে হনমেল সহ অন্যান্য সাক্ষীরাও উপস্থিত ছিল| সাক্ষীরাও জমি কেনার চুক্তি পত্রে সই করেছিল| যিহূদার আরও অনেক লোক সেখানে উপস্থিত ছিল| 13 “তাদের প্রত্যেকের উপস্থিতিতে আমি বারূককে বললাম: 14 ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: ‘সীলমোহর করা ও সীলমোহর বিহীন দুটি প্রতিলিপিই নাও এবং দুটোকেই একটি মাটির পাত্রে রাখো| এভাবে রাখলে জমি বিক্রিরি দলিলের প্রতিলিপিগুলি দীর্ঘদিন ঠিক থাকবে, নষ্ট হবে না| 15 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “ভবিষ্যতে আমার লোকরা আবার ইস্রায়েলে বাড়ি, জমি ও দ্রাক্ষাকুঞ্জ কিনবে|”‘ 16 “বারূকের হাতে ঐ দলিল তুলে দেবার পর প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলাম: 17 “প্রভু ঈশ্বর আপনি আপনার বিরাট শক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এই আকাশ ও পৃথিবী| আপনার পক্ষে কিছুই করা খুব একটা শক্ত নয়| 18 প্রভু আপনি হাজার হাজার লোকের প্রতি বিশ্বস্ত ও দযালু| কিন্তু আবার আপনিই সেইজন যিনি পিতাদের পাপসমূহের জন্য তাদের সন্তানদের শাস্তি দিচ্ছেন| হে মহান ও শক্তিশালী ঈশ্বর, আপনার নাম হল প্রভু সর্বশক্তিমান| 19 আপনি পরিকল্পনা মত মহান কাজ করেছেন| প্রভু, লোকরা যা করে আপনি তা সবই দেখতে পান| সত্‌ মানুষকে পুরস্কৃত করছেন আবার অসত্‌ মানুষকে তার য়োগ্য শাস্তি দিচ্ছেন| 20 প্রভু আপনি মিশরে শক্তিশালী অলৌকিক ঘটনা ঘটিযেছেন| এমনকি আজও আপনি আপনার শক্তির মহিমা প্রকাশ করছেন| ইস্রায়েলেও ঘটিযেছেন অলৌকিক ঘটনা| যেখানে মানুষ সেখানেই আপনি আপনার অলৌকিক শক্তির প্রকাশ ঘটিযেছেন| আপনি আপনার এই মৌলিক ক্ষমতার জন্যই বিখ্যাত| 21 আপনার ক্ষমতা কল্পনাতীত| আপনি আপনার শক্তিশালী অলৌকিক ক্ষমতা ও বিস্মযকর ভয়ঙ্কর ক্ষমতা প্রযোগ করে মিশর থেকে আপনার লোকদের ইস্রায়েলে নিয়ে এসেছিলেন| 22 “প্রভু আপনি ইস্রায়েলের লোকদের এই দেশ দিয়েছেন| এই সেই দেশ য়েটি বহু বছর আগে আপনি তাদের পূর্বপুরুষদের দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন| এটি একটি দেশ যেখানে দুধ ও মধু বয়ে যাচ্ছে| 23 ইস্রায়েলের লোকরা এই দেশে এসে দেশটিকে নিজেদের করে নিয়েছিল কিন্তু আপনাকে তারা মান্য করেনি| তারা আপনার পাঠ ও শিক্ষাকে অনুসরণ করেনি| তারা আপনার নির্দেশ মেনে চলেনি| তাই ইস্রায়েলের লোকদের ওপর আপনি এই সব সাংঘাতিক ব্যাপারগুলি সংঘটিত করিযেছেন| 24 “এবং তখন এই শহর শএু পরিবেষ্টিত| সৈন্যরা জাঙ্গাল নির্মাণ করছে যাতে তারা জেরুশালেম শহরের প্রাচীরগুলোর ওপর চড়তে পারে এবং তাকে অবরোধ করতে পারে| তরবারি, অনাহার এবং ভয়ঙ্কর মহামারী ছড়িয়ে বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেমকে পরাজিত করবে| বাবিলের সৈন্যরা এখন আক্রমণ করতে এগিয়ে আসছে| প্রভু, আপনি বলেছিলেন এই ঘটনা ঘটবে| এখন দেখুন কি কি ঘটছে| 25 “প্রভু আমার চারিদিকে এমন দুরবস্থা কিন্তু আপনি আমাকে বলেছেন, ‘যিরমিয়, সাক্ষীর উপস্থিতিতে রৌপ্য় মুদ্রার বিনিময়ে ঐ জমিটা কিনে নাও|’ আপনি আমাকে এ কথা বলছেন যখন বাবিলের সৈন্যদল শহর আক্রমণ করবার জন্য প্রস্তুত| “তাহলে কেন আমি এই অবস্থায় জমি কিনে অর্থ নষ্ট করব?” 26 তখন প্রভুর বার্তা এল যিরমিয়র কাছে: 27 “যিরমিয়, আমি প্রভু, আমি প্রতিটি জীবন্ত বস্তুর ঈশ্বর| যিরমিয়, তুমি জান, আমার পক্ষে কোন কিছুই অসম্ভব নয়|” 28 প্রভু আরো বলেছিলেন, “শীঘ্রই আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে জেরুশালেম দিয়ে দেব| বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেম শহর অধিগ্রহণ করে নেবে| 29 বাবিলের সৈন্যরা ইতিমধ্যেই আক্রমণ করেছে| তারা জেরুশালেম শহরে আগুন বালিয়ে ধ্বংস করে দেবে| এই শহরের লোকরা তাদের বাড়িগুলির মাথায় বালের মূর্ত্তিগুলি রেখেছে, তাকে নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছে, পূজো করেছে এবং অন্যান্য দেবতাদের পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করে আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছে| বাবিলের সৈন্যরা সেই ইমারত্‌গুলিকে পুড়িয়ে ছাই করে দেবে| 30 আমি সবকিছু লক্ষ্য রাখছি| দেখছি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকরা অসংখ্য পাপ কাজ করে যাচ্ছে| য়ৌবন থেকেই তারা খারাপ কাজ করে আসছে| তাদের এই কাজই আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছে| তারা তাদের নিজেদের হাতে তৈরী মূল্যহীন দেবতাদের পূজো করেছে| সেই কারণে আমি খুব রুদ্ধ হয়েছি|” এই হল প্রভুর বার্তা| 31 “জেরুশালেম নির্মিত হবার সময় থেকে আজ পর্য়ন্ত সেখানকার লোকরা আমাকে রুদ্ধ করেছে| আমি এতো রুদ্ধ য়ে আমি আর জেরুশালেমকে সহ্য করতে পারছি না| অতএব ওটাকে আমার চোখের সামনে থেকে আমায় সরাতে হবে| 32 আমি জেরুশালেমকে ধ্বংস করব কারণ যিহূদা এবং জেরুশালেমের লোকরা অনেক অসত্‌ কাজ করেছে| যিহূদা এবং জেরুশালেমের মানুষ, রাজা, নেতৃবৃন্দ, যাজক এবং ভাব্বাদীরা প্রত্যেকে আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছে| 33 “আমার কাছে সাহায্যের জন্য ওই লোকদের আসা উচিত্‌ ছিল| কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে মুখ ঘুরিযে নিয়েছিল| আমি তাদের বার বার শেখাবার চেষ্টা করেছিলাম| কিন্তু তারা আমার কথা শোনে নি| আমি চেষ্টা করেছি তাদের শুধরে দিতে| কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে চায় নি| 34 তারা তাদের মূর্ত্তিগুলি গড়েছিল য়েটা আমি ঘৃণা করি| তারা তাদের মূর্ত্তিগুলোকে আমার নামাঙ্কিত মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেছিল| এই ভাবে তারা আমার মন্দির অপবিত্র করে তুলেছিল|’ 35 “তারা বিন-হিন্নোম উপত্যকায় বাল মূর্ত্তির জন্য উচ্চস্থানসমূহ গড়েছিল| পূজার ঐ সব জায়গাগুলিতে মোলকের মূর্ত্তিকে হোমবলি নৈবেদ্য দেবার জন্য তারা তাদের সন্তানদের পোড়াত| আমি তাদের এসব করার নির্দেশ দিইনি| আমি কখনো ভাবতেও পারি নি য়ে যিহূদার মানুষ এরকম ভয়ঙ্কর কাজ করতে পারে| 36 তোমরা বলছো, ‘বাবিলের রাজা জেরুশালেম অধিগ্রহণ করবে| তরবারি, অনাহার ও ভয়ঙ্কর মহামারীর আঘাতে জেরুশালেমের পরাজয় ঘটবে|’ কিন্তু প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: 37 ‘আমি যিহূদা, ইস্রায়েলের লোকদের তাদের দেশ ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য করেছি| তাদের ওপর আমি প্রচণ্ড রুদ্ধ ছিলাম| কিন্তু আমিই আবার তাদের এখানে ফিরিয়ে আনব| আমি আবার তাদের সমস্ত দেশগুলি থেকে, যেখানে আমি তাদের য়েতে বাধ্য করেছিলাম, সেখান থেকে সংগ্রহ করব এবং তাদের এখানে ফিরিয়ে আনব এবং তাদের শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন করতে দেব| 38 যিহূদা এবং ইস্রায়েলের লোকরা হবে আমার লোক আর আমি হব তাদের ঈশ্বর| 39 আমি ঐ সব লোকেদের মধ্যে এক হবার ইচ্ছা আরোপ করব| তাদের সকলের একটাই লক্ষ্য থাকবে এবং তা হল আমাকে সারা জীবন উপাসনা করে যাওয়া| আমাকে উপাসনা করার ফলে এবং সম্মান করার ফলে তাদের এবং তাদের সন্তানদের ভালো করবে| 40 “‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের মানুষদের সঙ্গে আমি একটি চুক্তি করব| এই চুক্তি চির কালের জন্য বহাল থাকবে| এই চুক্তিতে আমি ওদের কাছ থেকে নিজেকে কখনো সরিয়ে নেব না| আমি তাদের প্রতি সর্বদা মঙ্গলকর থাকব| তারা যাতে আমাকে সম্মান করতে চায় আমি তাদের তাই করব| ওরাও কখনও আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাবে না| 41 তারা আমাকে খুশী করবে| আমিও আনন্দের সঙ্গে ওদের জন্য ভালো কাজ করব| আমি নিশ্চিত ভাবে ওদের এখানে নিয়ে এসে বড় করে তুলবো| আমি এগুলো করব আমার হৃদয় ও আত্মা দিয়ে|”‘ 42 প্রভু যা বলেন তা হল এই: “ঠিক য়েমন আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের জীবনে বিপর্য়য এনেছিলাম সেই ভাবেই আমি তাদের ভালোও করব| আমি তাদের জন্য ভাল কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলাম| 43 তোমরা বলছো: ‘বাবিলের সৈন্য এদেশকে একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত করেছে| এখানে কোন প্রাণের স্পন্দন নেই|’ কিন্তু ভবিষ্যতে মানুষ এখানেই বাস করার জন্য জমি কিনবে| 44 মানুষ অর্থ ব্যয করে জমি কিনবে| তারা তাদের চুক্তিগুলিতে সই করবে ও সীলমোহর লাগাবে| জমি কেনার জন্য দলিলে সই করবার সময় সাক্ষীসমূহ উপস্থিত থাকবে| বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী যেখানে থাকতো সেখানকার জমি মানুষ আবার কিনবে| তারা জেরুশালেমের চারপাশের জমি এবং যিহূদার শহরগুলির, পার্বত্য দেশের, পশ্চিম পাদদেশের এবং দক্ষিণের মরুভূমি এলাকার জমি কিনবে| এরকমই ঘটবে কারণ আমি সবাইকে ঘরে ফিরিয়ে আনব|” এই হল প্রভুর বার্তা|

যেরেমিয়া 33

1 প্রভুর কাছ থেকে দ্বিতীয় বারের জন্য এই বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| যিরমিয় তখনও রক্ষীদের উঠোনে কারারুদ্ধ| 2 প্রভুই বিশ্বকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তিনিই বিশ্বকে রক্ষা করেছেন| প্রভু হল তার নাম| প্রভু বলেছেন, 3 “যিহূদা আমার কাছে প্রার্থনা করো, আমি তোমার প্রার্থনার উত্তর দেব| আমি তোমাকে গুরুত্বপূর্ণ গোপন কথা বলব| য়ে কথা এর আগে তুমি শুনতে পাওনি| 4 প্রভু হলেন ইস্রায়েলের ঈশ্বর| যিহূদার রাজপ্রাসাদ এবং জেরুশালেমের ঘরবাড়ি সম্বন্ধে প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| শএুরা ঐ সমস্ত ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলবে| শএুরা ঐ সমস্ত শহরে প্রাচীর ভেঙে ফেলে তরবারি হাতে শহরের অভ্য়ন্তরের বাসিন্দাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে| 5 জেরুশালেমের লোকরা অসংখ্য খারাপ কাজ করেছে| আমি তাদের প্রতি রুদ্ধ| আমি তাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছি| তাই আমি অসংখ্য মানুষকে হত্যা করব| যখন বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে, তখন জেরুশালেমের বাড়ীগুলোতে মৃতদেহ পড়ে থাকবে| 6 “কিন্তু তখন আমি তাদের সারিয়ে দেব| ফিরিয়ে দেব তাদের আনন্দ ও শান্তিপূর্ণ জীবন| 7 তারপর আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের তাদের দেশে ফিরিয়ে আনব| অতীতের মতো আবার আমি তাদের শক্তিশালী করে তুলব| 8 তারা আমার বিরুদ্ধে য়ে পাপ করেছিল সব পাপ আমি ধুয়ে দেব| তারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল কিন্তু আমি তাদের ক্ষমা করে দেব| 9 তখন জেরুশালেম আবার অপূর্ব হয়ে উঠবে| সেখানে লোকরা খুশীতে আনন্দ করবে| অন্য জাতির লোকেরা যখন ভালো কাজগুলির কথা, য়েগুলো আমি জেরুশালেমের জন্য করছি শুনতে পাবে, তখন তারা আমার প্রশংসা করবে| আমি জেরুশালেমে য়ে সমৃদ্ধি ও শান্তি আনছি তার জন্য জাতিগুলি আমাকে ভয় ও শ্রদ্ধা করবে| 10 “লোকরা, তোমরা বলছো, ‘আমাদের দেশতো এখন শূন্য মরুভূমি| এখানে প্রাণের কোন চিহ্ন নেই|’ জেরুশালেমের পথ সমূহে এবং যিহূদার শহরগুলিতে কোন শব্দ শোনা যাচ্ছে না| কিন্তু খুব শীঘ্রই তোমরা এই জায়গাগুলিতে শব্দ শুনতে পাবে| 11 গানের শব্দ এবং উত্সবের শব্দ শোনা যাবে| বর ও কনের আনন্দপূর্ণ কোলাহল শোনা যাবে| লোকরা তাদের উপহার সামগ্রী নিয়ে মন্দিরে আসবে| তারা বলবে, ‘সর্বশক্তিমান প্রভুর প্রশংসা করো কারণ তিনি ভালো| তাঁর সত্যকার ভালবাসা চিরকাল প্রবহমান|’ ওরা একথা বলবে কারণ আমি আবার যিহূদার ভালো করব| সে জায়গা আগের মত হয়ে যাবে|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 12 প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, “এখন এই জায়গা শূন্য| এখানে এখন কোন প্রাণী যাবে না | কিন্তু যিহূদার প্রত্যেকটি শহরে লোক বাস করবে| সেখানে থাকবে মেষপালকরা| থাকবে পশুচারণের তৃণভূমি| সেখানে মেষপালকরা মেষের পালকে চরাবে| 13 মেষপালক য়েমন তার মেষ গোনে, লোকরা তেমনি সর্বত্র তাদের মেষ গুনবে- পাহাড়ী দেশে, পশ্চিমের পাদদেশে, নেগেভে এবং যিহূদার অন্যান্য সব শহরগুলিতেও|” 14 এই হল প্রভুর বার্তা: “আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের কাছে একটি বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম| আমার সেই প্রতিশ্রুতি পালনের সময় আসছে| 15 আমি দাযূদের পরিবার থেকে একটি ভালো ‘শাখাকে’ বৃদ্ধি করব| সেই ‘শাখা’ বেড়ে উঠবে এবং দেশের জন্য সঠিক এবং ভাল কাজসমূহ করবে| 16 এই ‘শাখার’ সময় যিহূদার লোকরা বেঁচে যাবে| জেরুশালেমের লোকেরা নিরাপদে বসবাস করতে পারবে| সেই ‘শাখার’ নাম হল: ‘প্রভু মঙ্গলময|”‘ 17 প্রভু বলেছেন, “দাযূদ পরিবারের এক জন ইস্রায়েলের সিংহাসনে সর্বদা শাসন করবে| 18 এবং যাজকগণ হবে সর্বদা লেবীয় ় পরিবার থেকে| ঐ যাজকগণ সর্বদাই আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার উদ্দেশ্যে হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং বলি দেবে|” 19 প্রভুর এই বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| 20 প্রভু বললেন, “দিন ও রাত্রির সঙ্গে আমার একটি চুক্তি আছে| তারা একইভাবে বরাবর ঘুরে ফিরে আসবে| তোমরা এই চুক্তি বদল করতে পারবে না| দিন ও রাত্রি সঠিক সময়েই আসবে| 21 তোমরা যদি এই বন্দোবস্ত বদল করতে পারো তাহলে তোমরা দাযূদ ও লেবীয় পরিবারের সঙ্গে আমার য়ে চুক্তি তাও বদলে দিতে পারবে| তখন আর দাযূদ ও লেবীয় পরিবারের উত্তরপুরুষরা রাজা বা যাজক হবে না| 22 কিন্তু আমার সেবক দাযূদ ও লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অসংখ্য উত্তরপুরুষ দেব| তারা সংখ্যায় আকাশের তারাদের মতো অগণিত হবে, হবে সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচের বালুকণার মতো যা কেউ কোনদিন গুনে শেষ করতে পারবে না|” 23 প্রভুর এই বার্তা যিরমিয় গ্রহণ করল: 24 “যিরমিয়, তুমি কি শুনতে পাচ্ছো লোকরা কি বলছে? ঐ লোকরা বলছে, ‘প্রভু ইস্রায়েল ও যিহূদার দুই পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছেন| প্রভু তাদের নির্বাচন করেছেন, কিন্তু এখন তিনি তাদের একটি জাতি বলে গ্রহণ করেন না|’ 25 প্রভু বলেছেন, “দিন ও রাত্রির সঙ্গে আমার বন্দোবস্ত যদি না স্থায়ী হয় এবং যদি আমি পৃথিবী ও আকাশের জন্য বিধি তৈরী না করতাম, তাহলে হয়তো আমি ঐ লোকদের ত্যাগ করতাম| 26 তাহলে যাকোবের উত্তরপুরুষদের কাছ থেকেও সরে য়েতাম এবং তাহলে হয়তো আমি দাযূদের উত্তরপুরুষদের অব্রাহাম, ইস্হাক এবং যাকোবের উত্তরপুরুষদের শাসন করতে দিতাম না| কিন্তু দাযূদ হল আমার সেবক এবং আমি ঐ লোকদের প্রতি দযা দেখাব| আমি ওদের জন্য ভালো কিছু ঘটিযে দেব|”

যেরেমিয়া 34

1 প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর যখন জেরুশালেম এবং তার চারপাশের সমস্ত শহরগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল তখন প্রভুর বার্তা যিরমিয়র কাছে এসেছিল| নবূখদ্রিত্‌সরের সঙ্গে ছিল তার সমস্ত সৈন্য এবং তার সাম্রাজ্য| তার শাসনাধীন সমস্ত রাজ্যের সৈন্যসমূহ এবং লোকরা| 2 এই হল বার্তা: “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: যিরমিয় যিহূদার রাজা সিদিকিয়কে গিয়ে তাকে এই বার্তা দাও: ‘সিদিকিয়, প্রভু যা বলেছেন তা হল: আমি খুব শীঘ্রই বাবিলের রাজাকে জেরুশালেম দিয়ে দেব| এবং সে জেরুশালেমকে পুড়িয়ে দেবে| 3 সিদিকিয়, তুমি পালাতে পারবে না, ধরা পড়বেই| তোমাকেও বাবিলের রাজার হাতে তুলে দেওয়া হবে| তুমি বাবিলের রাজাকে স্বচক্ষে দেখতে পাবে| রাজার সঙ্গে তোমার মুখোমুখি কথা হবে এবং তোমাকে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে| 4 কিন্তু যিহূদার রাজা সিদিকিয়, প্রভুর প্রতিশ্রুতি শোন| প্রভু তোমার সম্বন্ধে এই কথা বলেছেন: তোমার মৃত্যু তরবারির আঘাতে হবে না| 5 তোমার মৃত্যু হবে শান্তিতে| অতীতে অন্ত্য়োষ্টি এযিা যাত্রার সময় তোমার পূর্বপুরুষদের জন্য, তোমার পূর্বে য়ে রাজা শাসন করেছিল তাদের য়ে ভাবে লোকে সম্মান দেখিয়েছিল, একই ভাবে তারাও তোমার অন্ত্য়োষ্টি এযিায তোমাকে সম্মান জানাবে| তারা তোমার জন্য চোখের জল ফেলবে এবং বিষন্নভাবে বলবে, “হে মনিব!” আমি নিজে আপনার কাছে প্রতিশ্রুতি করছি|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| 6 তাই যিরমিয় প্রভুর এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল জেরুশালেমে সিদিকিযের কাছে| 7 তখন বাবিলের রাজা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে সৈন্যসামন্ত নিয়ে যুদ্ধ করছে| যিহূদার য়ে সমস্ত শহরগুলি তখনও অধিকৃত হয়নি সেগুলি অধিকার করবার লক্ষ্য নিয়ে বাবিলের সৈন্যদল যুদ্ধ করছিল| ঐ শহরগুলি ছিল লাখীশ এবং অসেকা- দুটি শহর য়েগুলি দুর্গদ্বারা রক্ষিত ছিল| 8 ইব্রীয দাসদের মুক্তির জন্য রাজা সিদিকিয় জেরুশালেমের লোকেদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল| সিদিকিয় চুক্তি করবার পর যিরমিয়র কাছে ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি বার্তা এসেছিল| 9 প্রত্যেকেই তার ইব্রীয দাসকে মুক্তি দেবে| স্ত্রী ও পুরুষ ইব্রীয দাস দাসীরা দাসত্ব থেকে মুক্তি পাবে| কেউ যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর কাউকে দাসত্বের শৃঙ্খল পরাতে পারেনি| 10 সুতরাং সমস্ত নেতৃবৃন্দ ও লোকরা এই চুক্তি গ্রহণ করেছিল| প্রত্যেকেই রাজী হয়েছিল তাদের দাসদের মুক্তি দেবার প্রশ্োন| এবং তাই প্রত্যেক দাসই স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল| 11 কিন্তু তারপর যাদের দাস ছিল তারা মত পরিবর্তন করে সেই সব দাসদের দাসত্বের জন্য ধরে এনেছিল| 12 তখন প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে: 13 যিরমিয় প্রভু় ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল: “মিশর থেকে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিলাম| তারাও সেখানে দাসত্ব করত| যখন আমি তাদের নিয়ে এসেছিলাম তখন আমি তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম| 14 আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছিলাম: ‘প্রতি 7 বছর পর প্রত্যেককে তার ইব্রীয দাসকে মুক্তি দিতে হবে| কোন ইব্রীয যদি নিজেকে তোমার কাছে বিক্রিও করে দেয় তাহলেও 6 বছর পর তাকে তুমি মুক্তি দিয়ে দেবে|’ কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি| 15 কিছু দিন আগে তোমরা তোমাদের মন পরিবর্তন করেছিলে এবং আমার মতে, তোমরা ঠিক কাজ করেছিলে| তোমার ইব্রীয দাসদের মুক্ত করেছিল| এমন কি তোমরা মন্দিরেও এসেছিলে য়েটি আমার নামে নামাঙ্কিত এবং আমার সামনে একটি চুক্তি করেছিলে| 16 কিন্তু এখন আবার তোমরা তোমাদের মন পরিবর্তন করেছো এবং আমার নামকে অসম্মান করেছো| কি করে তোমরা এটা করলে? তোমরা আবার সেই সব ইব্রীয নারী পুরুষদের জোর করে ধরে এনে তোমাদের দাস করলে অথচ এদেরই কিছু দিন আগে তোমরা মুক্ত করে দিয়েছিলে| 17 “তাই প্রভু যা বলেছেন তা হল: ‘তোমরা আমাকে অমান্য করেছিলে| তোমরা তোমাদের ইব্রীয দাসদের মুক্তি দাও নি| তোমরা চুক্তি রক্ষা করো নি| কিন্তু আমি তোমাদের “স্বাধীনতা” দেব|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা| তরবারিসমূহ, অনাহার এবং মারাত্মক রোগসমূহ দ্বারা মরবার জন্য আমি তোমাদের “স্বাধীনতা” দেব| সারা বিশ্ব জানবে তোমাদের দুরবস্থার কথা| 18 যারা চুক্তিটি ভঙ্গ করেছিল আমি তাদের শএুদের হাতে তুলে দেব| তারা য়ে বাছুরটি দু-খণ্ড করেছিল এবং সেই দু-খণ্ডের মধ্য দিয়ে হেঁটেছিল, আমি তাদের সেই রকম করে দেব| 19 চুক্তি ভঙ্গকারীরা আমার সামনে বাছুরকে দু-খণ্ড করে বলি দিয়েছিল| তবু ওরা সেই চুক্তি মানে নি| যিহূদা ও জেরুশালেমের নেতৃবৃন্দ, রাজসভার গুরুত্বপর্তৃ সভাপরিষদ, যাজকগণ এবং সাধারণ মানুষ, প্রত্যেকে আমার সামনে চুক্তি করবার সময় বাছুরটির দুই খণ্ডের মাঝখান দিয়ে হেঁটেছিল| 20 তাই আমি তাদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য শএুবাহিনীর হাতে তুলে দেব| তাদের মৃতদেহ হবে পশু ও শকুনের খাদ্য| 21 যিহূদার রাজা সিদিকিয় ও তার নেতৃবৃন্দকে আমি শএুবাহিনীর হাতে তুলে দেব| যদিও বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেম শহরটি ছেড়ে গেছে, আমি সিদিকিয় এবং তার নেতাদের তাদের হাতে তুলে দেব| 22 কিন্তু আমি আদেশ দেব বাবিলের সেনাদের আবার জেরুশালেমে ফিরে এসে যুদ্ধ করার জন্য| তারা জেরুশালেমকে কবতৃা করে আগুন বালিয়ে দেবে| এবং আমি যিহূদার শহরগুলিকেও ধ্বংস করে দেব| ঐ শহরগুলি একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা|

যেরেমিয়া 35

1 যিহূদার রাজা যখন যিহোয়াকীম তখন যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এলো| যিহোয়াকীম ছিলেন য়োসিযের পুত্র| এই হল প্রভুর বার্তা: 2 “যিরমিয়, যাও রেখবীয পরিবারকে মন্দিরের পাশের ঘরগুলির কোন একটি ঘরে আসবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে এসো| তাদের দ্রাক্ষারস পানের প্রস্তাব দাও|” 3 সুতরাং আমি (যিরমিয়) যাসিনিয়ের কাছে গিয়েছিলাম| যাসিনিয ছিল যিরমিয়নামক এক ব্যক্তির পুত্র এবং হবত্সিনিয়ের পৌত্র| আমি যাসিনিযর অন্য ভাইদের এবং তার সব ছেলেদের রেখবীয পরিবারের সকল সদস্যদের পেয়েছিলাম| 4 তারপর আমি রেখবীয পরিবারকে প্রভুর মন্দিরে নিয়ে এলাম| আমরা হাননের পুত্রের ঘরে গেলাম| হানন ছিল ঈশ্বরের প্রিয মানুষ| তার পিতার নাম ছিল য়িগ্রলিয| পাশের ঘরে থাকতেন যিহূদার যুবরাজগণ| নীচের ঘরে থাকতো শল্লুমের পুত্র মাসেয| মাসেয ছিল মন্দিরের প্রহরী| 5 তখন আমি (যিরমিয়) রেখবীয পরিবারের আমন্ত্রিত সদস্যদের সামনে দ্রাক্ষারসের পাত্র রেখে বললাম, “সামান্য দ্রাক্ষারস পান করুন|” 6 কিন্তু তারা উত্তর দিল, “আমরা কখনও দ্রাক্ষারস পান করি না, কারণ আমাদের পূর্বপুরুষ রেখবীয পুত্র য়িহোনাদব আমাদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন: ‘তোমরা এবং তোমাদের উত্তরপুরুষ কেউ কখনো দ্রাক্ষারস পান করবে না| 7 তোমরা ঘরবাড়ি তৈরী করবে না,ফসল বুনবে না, দ্রাক্ষার চাষ করবে না| তোমরা কেবল তাঁবুতে থাকবে| তোমরা যদি এগুলি মেনে চলো তাহলে তোমরা যাযাবরের মতো স্থান পরিবর্তন করে দীর্ঘদিন জীবিত থাকবে|’ 8 তাই আমরা রেখবীয পরিবারের সদস্যরা আমাদের পূর্বপুরুষ য়িহোনাদবের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলি| আমরা কেউ দ্রাক্ষারস পান করি না| আমাদের স্ত্রী, ছেলেমেযে কেউ দ্রাক্ষারস পান করে না| 9 আমরা কখনও বাস করার জন্য বাড়ি তৈরী করি না| দ্রাক্ষার চাষ করি না, ফসল ফলানোর জন্য বীজ বুনি না| 10 আমরা আমাদের পূর্বপুরুষ য়িহোনাদবের নির্দেশ পালন করেছি এবং আমরা তাঁবুতেই বসবাস করেছি| 11 কিন্তু যখন নবূখদ্রিত্‌সর, বাবিলের রাজা যিহূদা আক্রমণ করেছিল, আমরা বলেছিলাম, ‘বাবিলীয এবং আর্মেনীয সৈন্যদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য আমাদের জেরুশালেম শহরে যাওয়া যাক|’ তাই আমরা জেরুশালেমে পালিয়ে গিয়েছিলাম এবং তারপর থেকে ওখানেই থেকেছি|” 12 তখন প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| 13 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বললেন: “যিরমিয় যাও| যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের গিয়ে বলো: তোমাদের শিক্ষা হওয়া উচিত্‌ এবং তোমরা আমার বার্তা পালন করবে|” 14 “রেখব তার উত্তরপুরুষদের নির্দেশ দিয়েছিল দ্রাক্ষারস পান না করতে| এবং সেই নির্দেশ আজও রেখবীয পরিবারের সদস্যরা পালন করে আসছে| কিন্তু আমি প্রভু এবং আমি যিহূদার লোকরা, তোমাদের বারবার বার্তা পাঠানো সত্ত্বেও তোমরা আমাকে অগ্রাহ্য করেছ এবং অমান্য করেছ| 15 যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বারবার আমার অনুচর এবং ভাব্বাদীদের পাঠিয়েছি| তারা তোমাদের বলেছে: ‘অসত্‌ হওয়া বন্ধ করো| ভালো কাজ কর| অন্য দেবতাদের অনুসরণ করো না ও তাদের সেবা করো না| তোমরা যদি আমাকে মেনে চলতে তাহলে তোমরা এই দেশে বসবাস করতে পারতে, য়ে দেশ তোমাদের পূর্বপুরুষকে আমি দিয়েছিলাম|’ কিন্তু তোমরা আমার বার্তাকে পাত্তাই দিলে না| 16 য়িহোনাদবের নির্দেশ তার উত্তরপুরুষরা মেনে চলেছিল কিন্তু যিহূদার লোকরা আমাকে মান্য করেনি|” 17 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বললেন: “আমি বলেছিলাম যিহূদা ও জেরুশালেমে লোকেদের ওপর বহু মারাত্মক ঘটনা ঘটবে| শীঘ্রই আমি সেগুলি ঘটাবো কারণ আমি ওই লোকদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিল| আমি তাদের চিত্কার করে ডেকেছিলাম কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি|” 18 যিরমিয়, রেখবীয পরিবারকে বলেছিল, “সর্বশক্তিমান প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ য়িহোনাদবের সব নির্দেশ মেনে চলেছো| তোমরা য়িহোনাদবের শিক্ষাকেই অনুসরণ করে গিয়েছো| 19 তাই সর্বশক্তিমান প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন সেখানে সর্বদাই রেখবের পুত্র য়িহোনাদবের উত্তরপুরুষদের কোন এক জন আমাকে সেবা করবার জন্য আমার সামনে থাকবে|”‘

যেরেমিয়া 36

1 যিহূদার রাজা য়োশিযের পুত্র যিহোয়াকীম যখন তার রাজত্বকালের চতুর্থ বছরে পা দিয়েছে তখন প্রভুর এই বার্তা যিরমিয়র কাছে এসেছিল| এই হল প্রভুর বার্তা: 2 “যিরমিয়, আমি তোমাকে য়ে সমস্ত বাণী শুনিয়েছি তা সব একটি পাকানো পুঁথিতে লিখে রাখো| যিহূদা, ইস্রায়েল এবং অন্যান্য দেশগুলি সম্বন্ধে যা যা বলেছি তাও লিখে রাখো| য়োশিযের রাজত্বকাল থেকে আজ পর্য়ন্ত য়ে কথা বলেছি তার সব অক্ষরে অক্ষরে লিখে রাখো তোমার খাতায়| 3 যিহূদার পরিবারের জন্য আমি য়ে সমস্ত বাজে জিনিষের পরিকল্পনা করেছি তা হয়তো তারা জানতে পারবে এবং হয়তো তারা খারাপ কাজ করা বন্ধ করবে| যদি তারা তাই করে তাহলে আমি তাদের ক্ষমা করব| ক্ষমা করে দেব তাদের সমস্ত পাপ|” 4 তাই যিরমিয় বারূককে ডাকল| বারূক ছিল নেরিযের পুত্র| যিরমিয় প্রভুর বার্তা বলছিল| যিরমিয় যখন সেই বার্তাগুলি বলছিল তখন বারূক তা খাতায় লিখে নিচ্ছিল| 5 তখন যিরমিয় বারূককে বলেছিল, “আমি প্রভুর উপাসনা গৃহে য়েতে পারব না| আমার সেখানে যাওয়া নিষেধ| 6 তাই আমি চাই তুমি প্রভুর উপাসনা গৃহে যাও| সেখানে একটি উপবাসের দিন যাও এবং এই পুঁথি থেকে প্রভুর কথাগুলি লোকেদের পড়ে শোনাও| আমি যা বলেছি তুমি তা লিখেছো এগুলো সবই প্রভুর বার্তা| যাও গিয়ে যিহূদার বিভিন্ন শহর থেকে জেরুশালেমে আসা সমস্ত লোককে এই বার্তা খাতা থেকে পাঠ করে শোনাও| 7 হয়তো লোকরা প্রভুর কাছে এসে সাহায্য চাইবে| হয়তো তারা তাদের অসত্‌ কাজগুলি করা বন্ধ করবে| প্রভু আগেই ঘোষণা করেছিলেন য়ে তিনি তাদের ওপর প্রচণ্ড রুদ্ধ হয়ে আছেন|” 8 সুতরাং বারূক তাই করল যা তাকে ভাব্বাদী যিরমিয় করতে বলেছিল| সুরূক প্রভুর উপাসনাগৃহে খাতায় লিপিবদ্ধ করা প্রভুর বার্তা উচ্চস্বরে পাঠ করতে লাগল| 9 যিহোয়াকীমের রাজত্বকালের পঞ্চম বছরের নবম মাসে উপবাসের একটি দিন ঘোষিত হয়েছিল| জেরুশালেমের নাগরিক এবং যিহূদার সমস্ত শহর থেকে জেরুশালেম শহরে আসা প্রত্যেক লোককে প্রভুর সামনে উপবাস করতে হবে| 10 সে সময় বারূক খাতায় লেখা যিরমিয়র মুখ থেকে উচ্চারিত প্রভুর বার্তা পড়ে শোনাচ্ছিল উপাসনা গৃহে উপস্থিত লোকেদের| বারূক তখন থাকতো গমরিযের ঘরে| ঘরটি ছিল উপাসনাগৃহের নতুন ফটকের কাছে| গমরিযের পিতা ছিল শাফন| গমরিয উপাসনাগৃহের লিপিকার ছিল| 11 বারূক যখন পড়ছিল তখন গমরিযের পুত্র মীখায় শুনছিল| গমরিয ছিল শাফনের পুত্র| 12 মীখায় যখন পুঁথির সব বার্তা শুনল, তখন সে রাজপ্রাসাদের সচিবের ঘরে গেল| সেই ঘরে তখন রাজপরিবারের সমস্ত সভাসদরা উপস্থিত ছিলেন| উপস্থিত সভাসদদের নামগুলি হল: রাজার আপ্ত সহায়ক ইলীশামা, শময়িয়ের পুত্র দলায, অক্বোরের পুত্র ইল্নাথন, শাফনের পুত্র গমরিয, হনানিয়ের পুত্র সিদিকিয় এবং অন্যান্য রাজসভার সভাসদরাও সেই ঘরে উপস্থিত ছিলেন| 13 পুঁথি থেকে বারূক যা কিছু পড়ে শুনিয়েছিল তা সব মীখায় গিয়ে সভাপারিষদদের বলেছিল| 14 তখন সেই সভাসদরা বারূকের কাছে যিহূদীকে পাঠাল| যিহূদী ছিল নথনিয়ের পুত্র এবং শেলিমিযের পৌত্র| শেলিমিযের পিতার নাম ছিল কূশি| যিহূদী বারূককে বলেছিল: “তুমি য়ে খাতাটি পাঠ করেছিলে সেই খাতাটি নিয়ে আমার সঙ্গে চলো|”বারূক সেই খাতা সঙ্গে নিয়ে যিহূদীর সঙ্গে সভাপরিষদদের কাছে গেল| 15 রাজার সেই সভাষদরা বারূককে বললেন, “এখানে বসো এবং পুঁথিতে লেখা বাণীগুলি পড়ে শোনাও|”সুতরাং বারূক খাতায় লেখা বাণীগুলি পাঠ করতে শুরু করল| 16 রাজার সভাসুরা সমস্ত বাণীগুলি শুনলেন এবং তারপর তারা ভয়ে একে অন্যের দিকে তাকালেন| তাঁরা বারূককে বললেন, “রাজা যিহোয়াকীমকে আমাদের এই খাতার সম্বন্ধে জানানো উচিত্‌|” 17 তখন তাঁরা বারূককে একটি প্রশ্ন করলেন, “আচ্ছা বারূক বলো তো এই খাতায় য়ে বাণী তুমি লিখেছো তা তুমি কোত্থেকে পেলে? যিরমিয় তোমাকে য়ে সব জিনিসের কথা বলেছিল সে সব কি তুমি লিখেছিলে?” 18 বারূক উত্তর দিল, “হ্যাঁ! যিরমিয় আমাকে বলে গিয়েছে আর কালি দিয়ে সেই বাণী খাতায় আমি লিখে নিয়েছি|” 19 তখন রাজার পারিষদরা বারূককে বললেন, “তুমি আর যিরমিয় গিয়ে আত্মগোপন করে থাকো কিন্তু কোথায় আত্মগোপন করবে তা কাউকে জানিও না|” 20 তখন পারিষদরা ইলীশামার ঘরে সেই খাতাটি তুলে রেখে রাজা যিহোয়াকীমের কাছে গিয়ে সব খুলে বললেন| 21 সব শুনে রাজা যিহোয়াকীম খাতাটি নিয়ে আসার জন্য যিহূদীকে পাঠালেন| যিহূদী ইলীশামার ঘর থেকে পুঁথিটি নিয়ে এলো| তারপর সে রাজাকে এবং তার চার পাশের দাঁড়িয়ে থাকা কর্মচারীদের পুঁথিতে লেখা বাণীগুলি পড়ে শোনাতে লাগল| 22 এটা ঘটেছিল নবম মাসে, সুতরাং রাজা যিহোয়াকীম তাঁর শীতকালীন আবাসে বসেছিলেন| ঘরকে উসুরাখার জন্য তার সামনে তখন আগুন জ্বলছে| 23 যিহূদী আস্তে আস্তে খাতা থেকে লিপিবদ্ধ করা বাণী পড়ে য়েতে থাকল| কিন্তু সে দুই বা তিন অনুচ্ছেদ পড়ার পরই রাজা তার কাছ থেকে খাতা ছিনিয়ে নিয়ে ছুরি দিয়ে খাতা থেকে পাতাগুলি কেটে কেটে আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দিতে লাগলেন| এই ভাবে পুরো খাতাটাই পুড়ে ছাই হয়ে গেল| 24 এবং রাজা যিহোয়াকীম ও তাঁর অনুচররা এই বাণী শুনেও ভীত হল না| শোকের চিহ্ন হিসেবে তারা তাদের কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে ফেলল না| 25 ইল্নাথন, দলায এবং গমরিয চেষ্টা করেছিল রাজার সঙ্গে কথা বলার যাতে তিনি খাতাটি না পোড়ান| কিন্তু রাজা তাদের কথা শোনেননি| 26 বরং উলেট রাজা য়িরহমেল, সরায় এবং শেলিমিযকে আদেশ দিলেন ভাব্বাদী যিরমিয় এবং লিপিকার (লেখক) বারূককে গ্রেপ্তার করতে| য়িরহমেল হল যুবরাজ ও সরায় হল অস্রীযেলের পুত্র এবং শেলিমিয হল অব্দিয়েলের পুত্র| কিন্তু তারা কেউই বারূক এবং যিরমিয়কে খুঁজে বার করতে পারল না| কারণ প্রভু তাদের লুকিয়ে রেখেছিলেন| 27 যিহোয়াকীম খাতাটি পুড়িয়ে ফেলার পর প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে| ঐ খাতাতেই লিপিবদ্ধ ছিল প্রভুর সমস্ত বার্তা যা যিরমিয় বলে গিয়েছিল আর বারূক লিপিবদ্ধ করেছিল| ঐ খাতার প্রতিটি পাতায এই ছিল সেই বার্তা যা পুনরায় প্রভু যিরমিয়কে বললেন: 28 “যিরমিয় আরেকটি খাতা নাও এবং সমস্ত বার্তাগুলি পুনরায় লিপিবদ্ধ করো| 29 যিরমিয়, আবার যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমকে একথাগুলি বলো| প্রভু যা বললেন: ‘যিহোয়াকীম তুমি খাতাটি পুড়িয়ে ফেলে বলেছিলে, “যিরমিয় কেন একথা লিখলো য়ে বাবিলের রাজা নিশ্চিতভাবেই এসে এই দেশ ধ্বংস করে দেবে? কেন সে লিখল য়ে বাবিলের রাজা এই দেশের মানুষ এবং পশু প্রাণী সবাইকে হত্যা করবে?” 30 তাই প্রভু যিহূদার রাজা যিহোয়াকীম সম্বন্ধে বললেন: যিহোয়াকীমের উত্তরপুরুষরা কেউ দাযূদের সিংহাসনে বসতে পারবে না| এমনকি যিহোয়াকীম তার মৃত্যুর পরে সত্‌কারের সময় রাজকীয মর্য়াদাও পাবে না| তার মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে মাঠের মধ্যে| দিনের প্রখর তাপ ও রাতের প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যে খোলা মাঠে তার মৃতদেহ পড়ে থাকবে| 31 আমি প্রভু, যিহোয়াকীমকে তার সন্তানদের এবং তার পারিষদদেরও শাস্তি দেব| আমি তাদের প্রত্যেককে শাস্তি দেব কারণ তারা অসত্‌ এবং মন্দ| আমি প্রতিশ্রুতি করেছি তাদের শাস্তি দেব| আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জেরুশালেম এবং যিহূদার লোকদের জীবনে ভয়ঙ্কর প্রলয ঘটানোর জন্য| সমস্ত অমঙ্গল বয়ে আনব তাদের জীবনে| তারা আমার কথা শোনেনি|”‘ 32 তখন যিরমিয় অন্য একটি পুঁথি নিল এবং সেটি নেরিযর পুত্র, লেখক বারূককে দিল লিপিবদ্ধ করার জন্য| যিরমিয় যা যা বলে য়েতে থাকল বারূক তা লিপিবদ্ধ করতে থাকল| রাজা যিহোয়াকীম য়ে বার্তাগুলি পুড়িয়ে দিয়েছিল সেগুলি আবার নতুন খাতায় লিপিবদ্ধ করতে থাকল বারূক| এরই সঙ্গে য়োগ হল আরো নতুন নতুন বার্তা|

যেরেমিয়া 37

1 নবূখদ্রিত্‌সর ছিল বাবিলের রাজা| যিহোয়াকীমের পুত্র য়িকনিয়ের পরিবর্তে সিদিকিয়কে যিহূদার রাজা হিসেবে নিযুক্ত করেছিল নবূখদ্রিত্‌সর| সিদিকিয় ছিল রাজা য়োশিযের পুত্র| 2 কিন্তু সিদিকিয় ভাব্বাদী যিরমিয় মারফত্‌ প্রচারিত প্রভুর বার্তাকে গুরুত্ব দেয়নি| এবং সিদিকিযের ভৃত্যগণ ও যিহূদার লোকরাও প্রভুর বার্তাকে গুরুত্ব দেয়নি| 3 সিদিকিয় যিহূখল এবং যাজক সফনিয়কে যিরমিয়র কাছে পাঠিয়েছিল একটি বার্তা দিয়ে| যিহূখল ছিল শেলিমিযের পুত্র এবং সফনিয় ছিল মাসেযের পুত্র| বার্তাটি ছিল: “যিরমিয়, আমাদের জন্য প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো|” 4 সেই সময় যিরমিয়কে তখনও কারাগারে বন্দী করা হয়নি, তাই লোকদের মধ্যে য়ে কোন জায়গায় য়েতে তার বাধা ছিল না| 5 একই সময় ফরৌণের সৈন্যরা মিশর ছেড়ে যিহূদার দিকে রওনা দিয়েছিল| এবং বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেমকে অধিকার করবার জন্য তাকে ঘিরে ফেলেছিল| কিন্তু যখন তারা শুনল ফরৌণের সৈন্যরা মিশর ছেড়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে তখন তারা জেরুশালেম ত্যাগ করে মিশরের সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আগুযান হয়েছিল| 6 ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এলো: 7 “প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল: ‘যিহূখল ও সফনিয়, তোমাদের য়ে রাজা সিদিকিয় আমার কাছে পাঠিয়েছে তা আমি জানি| যাও সিদিকিয়র কাছে ফিরে গিয়ে বলো: ফরৌণের সৈন্যরা মিশর ছেড়ে বাবিলের সৈন্যদের হাত থেকে তোমাদের বাঁচাতে এলেও তারা কিন্তু আবার মিশরেই ফিরে যাবে| 8 তারপর বাবিলের সৈন্য আবার এখানে এসে জেরুশালেম আক্রমণ করবে| তখন বাবিলের সৈন্য জেরুশালেম দখল করে নেবে এবং তাতে আগুন লাগিয়ে দেবে|’ 9 প্রভু এরপর যা বললেন: ‘জেরুশালেমের লোকরা, তোমরা নিজেরাই নিজেদের বোকা বানিও না| নিজেদের একথা বলো না, “বাবিলের সৈন্যরা নিশ্চিত ভাবে আমাদের একলা ছেড়ে চলে যাবে|” তারা তা করবে না| 10 ওহে জেরুশালেমবাসী, তোমরা যদি বাবিলের সৈন্যদের যুদ্ধে পরাজিতও করতে পারতে তাহলেও তাদের তাঁবুতে কিছু আহত সৈনিক পড়ে থাকতো| এমনকি সেই আহত সৈনিকরাই উঠে এসে এই জেরুশালেম শহর পুড়িয়ে দিতে সক্ষম হতো|”‘ 11 বাবিলের সৈন্যরা যখন জেরুশালেম ত্যাগ করে মিশরের ফরৌণের সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল তখন 12 বিন্যামীন দেশেযাবার জন্য যিরমিয় জেরুশালেম ত্যাগ করল| সে এই শহরে ভ্রমণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল| সে সেখানে য়েতে চেয়েছিল পারিবারিক সম্পত্তি ভাগ বাটোযারার জন্য| 13 কিন্তু যিরমিয় যখন জেরুশালেমের বিন্যামীন ফটকে পৌঁছেছিল তখনই তাকে ঐ ফটকের দায়িত্বে থাকা প্রধান রক্ষী গ্রেপ্তার করেছিল| সেই প্রধান রক্ষীর নাম ছিল য়িরিয| য়িরিয ছিল শেলিমিযের পুত্র এবং হনানিয়ের পৌত্র| য়িরিয যিরমিয়কে গ্রেপ্তার করার পর বলেছিল, “যিরমিয় তুমি আমাদের ত্যাগ করে বাবিলের পক্ষে য়োগ দিতে যাচ্ছিলে|” 14 যিরমিয় য়িরিযকে বলেছিল, “তোমার অভিযোগ সত্যি নয়, আমি বাবিলের পক্ষে য়োগ দিতে যাচ্ছিলাম না|” কিন্তু য়িরিয যিরমিয়র সেই আপত্তি শুনতে অস্বীকার করেছিল এবং সে যিরমিয়কে গ্রেপ্তার করে রাজার সভাপরিষদদের সামনে এনে হাজির করেছিল| 15 5ঐ সভাপরিষদরা যিরমিয়র প্রতি প্রচণ্ড রুদ্ধ হয়েছিলেন| সভাসদরা যিরমিয়কে প্রহার করে কারাগারে বন্দী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন| য়োনাথন নামক এক ব্যক্তির বাড়িটিকেই কারাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল| য়োনাথন ছিল যিহূদার রাজার আজ্ঞাবাহী লেখক 16 যিরমিয়কে তারা সেই বাড়ির ভূগর্ভস্থ একটি অন্ধকার কারা কক্ষে বন্দী করে রেখেছিল| কক্ষটি ছিল মাটির নীচে| যিরমিয়কে সেখানে দীর্ঘদিন রাখা হয়েছিল| 17 দীর্ঘদিন পর রাজা সিদিকিয় যিরমিয়কে তাঁর প্রাসাদে নিয়ে এসে একান্তে তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| রাজা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “প্রভুর আর কোন বার্তা আছে?”যিরমিয় উত্তর দিয়ে বলেছিল, “হ্যাঁ, প্রভুর বার্তা হল, সিদিকিয় তোমাকে বাবিলের রাজার হাতে তুলে দেওয়া হবে|” 18 যিরমিয় এরপর রাজা সিদিকিয়কে বলেছিল, “আমার অন্যায়টা কি? আমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করবার মত কি এমন ভুল কাজ করেছি আপনার বিরুদ্ধে, আপনার কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অথবা জেরুশালেমের লোকদের বিরুদ্ধে? 19 রাজা সিদিকিয় কোথায় এখন আপনার ভাব্বাদীরা? এই ভাব্বাদীরা আপনার কাছে ভুল বার্তা প্রচার করেছিল| তারা বলেছিল, ‘বাবিলের রাজা আপনাকে এবং ঐ দেশ যিহূদাকে আক্রমণ করবে না|’ 20 কিন্তু আমার প্রভু, যিহূদার রাজা এখন অনুগ্রহ করে আমার কথা শুনুন| আমাকে অনুগ্রহ করে অনুরোধ করতে দিন| এই হল আমার অনুরোধ: আমাকে আর এই লেখক য়োনাথনের বাড়িতে কারাবন্দী করে রাখবেন না| যদি আপনি আবার আমাকে সেখানে পাঠান, আমি সেখানে মারা যাব|” 21 সুতরাং রাজা সিদিকিয় আদেশ দিয়েছিলেন য়ে, এবার থেকে যিরমিয়কে প্রহসুর পাহারায় মন্দির় চত্বরে বন্দী হয়ে থাকতে হবে এবং রাজার আদেশ ছিল যিরমিয়কে রুটি দেওয়া হবে রাস্তার হকারদের কাছ থেকে| শহরে যতদিন পর্য়ন্ত রুটি পাওয়া যাবে ততদিন পর্য়ন্ত যিরমিয়কে রুটি দেওয়া হবে| তাই যিরমিয়কে উঠোনে রক্ষীর অধীনে রাখা হয়েছিল|

যেরেমিয়া 38

1 যিরমিয় য়ে বার্তাগুলি প্রচার করেছিল সেগুলি রাজার কয়েকজন সভাপরিষদরা শুনতে পেয়েছিলেন| তাঁরা হলেন: মত্তনের পুত্র শফটিয, পশ্হূরের পুত্র গদলিয়, শেলিমিযের পুত্র যিহূখল এবং মল্কিযের পুত্র পশ্হূর| যিরমিয় সমস্ত লোকদের এই বাণী বলেছিল: 2 “প্রভু যা বলেছেন তা হল এই: ‘জেরুশালেমে বসবাসকারী প্রত্যেকে হয় তরবারির আঘাতে নয় অনাহারে বা ভয়ঙ্কর মহামারীতে মারা যাবে| কিন্তু য়ে ব্যক্তি নিজেকে বাবিলের সৈন্যবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে সে বেঁচে থাকবে|’ 3 এবং প্রভু যা বলেছেন তা হল: ‘জেরুশালেম শহর বাবিলের রাজার সৈন্যবাহিনীকে দিয়ে দেওয়া হবে এবং বাবিলের রাজাই দখল করবে এই শহর|”‘ 4 রাজার ঐ সমস্ত সভাপারিষদরা যিরমিয়র প্রচারিত ঐ বাণী শুনে রাজা সিদিকিযের কাছে গিয়ে বলল, “যিরমিয়কে অবিলম্বে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত্‌| সে আমাদের সৈন্যদের নিরুত্‌সাহিত করছে| তার কথা দিয়ে সে সমস্ত নাগরিককে নিরুত্‌সাহিত করেছে| যিরমিয় চায় না আমাদের ভাল কিছু হোক| সে শুধু জেরুশালেমের লোকদের ক্ষতি কামনা করে|” 5 এই সব কথা শুনে রাজা সিদিকিয় ঐ সভাপরিষদদের বলল, “যিরমিয় পুরোপুরি তোমাদের নিযন্ত্রণাধীন| সুতরাং তোমরা কিছু করতে চাইলে আমি তোমাদের থামাতে পারি না|” 6 সুতরাং সভাসদরা যিরমিয়কে নিয়ে গেল মল্কিযের চৌবাচচায় ফেলে দেসু়ার জন্য (মল্কিয ছিল রাজপুত্র)| চৌবাচচাটি ছিল উপাসনালয চত্বরে, সেখানে থাকতো রাজার প্রহরীরা| সভাসদরা যিরমিয়কে দড়ি দিয়ে বাঁধল এবং জলাধারে ফেলে দিল| জলাধারটিতে জল ছিল না, ছিল শুধু কাদা| এবং যিরমিয় সেই কাদার ভেতরে ডুবে গেল| 7 কিন্তু এবদ-মেলক নামক এক ব্যক্তি শুনতে পেয়েছিল য়ে সভাসদরা যিরমিয়কে জলাধারে ফেলে দিয়েছে| এবদ-মেলক ছিল একজন কূশ দেশীয (ইথিওপিযার) ব্যক্তি এবং সে ছিল রাজার প্রাসাদের সেবক, একজন নপুসংক| রাজা সিদিকিয় তখন বসেছিল বিন্যামীন ফটকে| তাই এবদ-মেলক রাজার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে রওনা দিল| 8 রাজাকে সে বলেছিল, “আমার মনিব এবং মহারাজ, ঐ সভাসদরা অসত্‌ উপায় অবলম্বন করেছে ভাব্বাদী যিরমিয়র বিরুদ্ধে| তারা যিরমিয়কে জলাধারে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে| তারা তাকে সেখানে মরবার জন্য ছেড়ে রেখেছে|” 9 10 তখন রাজা সিদিকিয় এবদ-মেলককে আদেশ দিয়েছিল, “এবদ-মেলক রাজপ্রাসাদ থেকে তিন জনকে সঙ্গে করে নিয়ে যাও এবং জলাধার থেকে যিরমিয়কে সে মরে যাবার আগে তুলে নাও|” 11 এবদ-মেলক তিনজন লোক সঙ্গে নিল কিন্তু তার আগে সে রাজপ্রাসাদের নীচে ভাঁড়ার ঘরে গিয়ে কিছু পুরানো বস্ত্র ও কিছু জীর্ণ বস্ত্রখণ্ড জোগাড় করল| তারপর জলাধারের কাছে গিয়ে সে ঐ জীর্ণ বস্ত্রখণ্ডগুলি দড়ির সঙ্গে নীচে নামিয়ে দিয়ে 12 যিরমিয়র উদ্দেশ্যে বলল, “যিরমিয় এই জীর্ণ বস্ত্রখণ্ডগুলি তুমি তোমার কাঁধের নীচে ভাল করে জড়িয়ে নাও| আমরা যখন দড়ির সাহায্যে তোমায় টেনে তুলব তখন ঐ বস্ত্রখণ্ডগুলি দড়ির আঘাত থেকে তোমায় রক্ষা করবে|” এবদ-মেলকের কথা মতোই যিরমিয় বস্ত্রখণ্ডগুলি বাহুতে জড়িয়ে নিল| 13 তারপর তারা তাকে দড়িগুলো দিয়ে টেনে তুলল এবং জলাধারের থেকে বাইরে আনল| যিরমিয়কে আবার রক্ষীদের অধীনে উঠোনে রেখে দেওয়া হয়েছিল| 14 রাজা সিদিকিয় ভাব্বাদী যিরমিয়কে তার কাছে নিয়ে আসার জন্য এক জনকে পাঠাল| যিরমিয়কে প্রভুর মন্দিরের তৃতীয় প্রবেশ পথে আনা হয়েছিল| রাজা বললেন, “যিরমিয় আমি তোমাকে কয়েকটি কথা জিজ্ঞেস করব| তুমি কিন্তু আমার কাছে কোন কিছু লুকোবে না, সব কথা আমাকে খোলাখুলি বলবে|” 15 যিরমিয় সিদিকিয়কে বলল: “আমি যদি আপনার কথার উত্তর দিই, আপনি হয়ত আমায় মেরে ফেলবেন| আমি যদি আপনাকে উপদেশও দিই, আপনি আমার কথা শুনবেন না|” 16 কিন্তু রাজা সিদিকিয় গোপনে এই বলে যিরমিয়র কাছে একটি প্রতিশ্রুতি করলেন, “যিরমিয়, প্রভু হচ্ছেন সেই জন যিনি আমাদের জীবনের রুটি দেন| আমি প্রভুর নামে শপথ করছি, আমি তোমায় মেরে ফেলব না এবং যারা তোমায় মারতে চায় সেই কর্মচারীদের হাতেও তুলে দেব না|” 17 তখন যিরমিয় রাজা সিদিকিয়কে বলল, “প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘যদি আপনি বাবিলের রাজার সভাসদদের হাতে আত্মসমর্পণ করেন তাহলে জীবন রক্ষা পাবে এবং জেরুশালেমকেও আগুনে পোড়ানো হবে না| আপনার পরিবারও জীবিত থাকবে| 18 কিন্তু যদি আপনি আত্মসমর্পণ না করেন, বাবিলীয সৈন্যদল জেরুশালেমকে পুড়িয়ে ছাই করে দেবে এবং আপনি তাদের দ্বারা বন্দী হবেন|”‘ 19 কিন্তু রাজা সিদিকিয় যিরমিয়কে বললেন, “কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি যিহূদার সেই সমস্ত লোকদের যারা ইতিমধ্যেই বাবিলের পক্ষ নিয়েছে| আমি ভীত কারণ বাবিলের সৈন্যরা আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে যিহূদার ঐ মানুষগুলোর হাতে তুলে দেবে| তারা আমার ওপর নিদারুণ অত্যাচার চালাবে|” 20 কিন্তু উত্তরে যিরমিয় বলল, “বাবিলের সৈন্যরা আপনাকে যিহূদার লোকদের হাতে তুলে দেবে না| রাজা সিদিকিয়, আমি যা বলছি তা করে প্রভুকে মান্য করুন| তাহলে আপনার ভাল হবে| আপনি রক্ষা পাবেন| 21 কিন্তু আপনি যদি বাবিলের সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করেন তাহলে কি হবে তা প্রভু আমাকে আগেই দেখিয়েছেন| প্রভু বলেছেন: 22 রাজবাড়ির সমস্ত মহিলাকে বাবিলের গুরুত্বপূর্ণ সভাসদদের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে| রাজমহিলাগণ আপনাকে নিয়ে মজা করে গান গাইবে| ওরা গাইবে:“তোমার বন্ধুরা যাদের তুমি বিশ্বাস করতে, তোমাকে ভুল পথে চালিত করেছে| তোমার পা কাদায় আটকে গিয়েছিল আর তারা তোমায় একা ফেলে পালিয়ে গিয়েছে|” 23 “তোমার স্ত্রীদের ও সন্তানদের বাবিলের সৈন্যরা ধরে নিয়ে আসবে| তুমিও পালাতে পারবে না| তুমি বন্দী হবে আর জেরুশালেমকে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হবে|” 24 তখন সিদিকিয় যিরমিয়কে বলে উঠল, “কাউকে বলো না য়ে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলেছি| যদি তুমি বলে দাও তাহলে হয়তো তোমাকে হত্যা করা হবে| 25 ঐ সভাসদরা হয়তো জানতে পারবে য়ে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলেছি| তারা তোমার কাছে এসে বলবে, ‘যিরমিয় রাজাকে কি বলেছো তা আমাদের বলো এবং রাজা তোমাকে কি বলেছে তাও আমাদের বলো| সত্‌ভাবে আমাদের সব কিছু জানাও না হলে তোমাকে হত্যা করব|’ 26 যদি সভাসদরা এরকম বলে, তাহলে তোমার তাদের বলা উচিত্‌: ‘আমি রাজার কাছে ভিক্ষা করেছিলাম আমাকে আবার য়োনাথনের বাড়ীর নীচে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ না করতে, নাহলে আমি সেখানে মারা যাব|”‘ 27 তাই ঘটল| ঐ সভাসদরা জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য যিরমিয়র কাছে এলো| সুতরাং যিরমিয় তাদের তাই বলল যা রাজা তাকে বলার জন্য আদেশ দিয়ে ছিলেন যখন ঐ সভাসদরা যিরমিয়কে একা ছেড়ে দিল| কেউ জানতে পারল না রাজা এবং যিরমিয়র মধ্যে কি কথা হয়েছিল| 28 অবশেষে যিরমিয় মন্দির চত্বরে প্রহরীদের নজরবন্দী হয়ে রয়ে গেল যতদিন পর্য়ন্ত না জেরুশালেম দখল হয় ততদিন পর্য়ন্ত|

যেরেমিয়া 39

1 এই ভাবে জেরুশালেম দখল হল: যিহূদার ওপর রাজা সিদিকিয়র নবম বছরের রাজত্বের দশম মাসে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর তাঁর সৈন্যবাহিনীসহ জেরুশালেম শহর অধিগ্রহণের জন্য বেরিয়েছিলেন| তারা শহরটিকে অধিকার করবার জন্য তাকে ঘিরে ফেলেছিল| 2 এবং সিদিকিয়র রাজত্ব কালের একাদশতম বছরের চতুর্থ মাসের নবম দিনে বাবিলের সৈন্যরা জেরুশালেমের প্রাচীর ভেঙে ফেলেছিল| 3 তখন বাবিলের রাজার সভাসদরা জেরুশালেম শহরে প্রবেশ করেছিল| তারা এসে বসেছিল শহরের মাঝখানের ফটকে| সেই সভাসদদের নাম ছিল: সমগর জেলার রাজ্যপাল নের্গল-শরেত্‌সর, সমগরনবো নামের এক উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী এবং আরও অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পারিষদবৃন্দও সেখানে উপস্থিত ছিল| 4 বাবিল থেকে আসা ঐ সভাসদদের সিদিকিয় দেখেছিলেন| অতএব, সেই রাত্রেই তিনি এবং তাঁর বিশ্বস্ত সৈন্যরা রাজার বাগানের মধ্যে দিয়ে একটি গোপন ফটক পেরিযে, দুটি প্রাচীরের মধ্যে দিয়ে জেরুশালেম থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন| তাঁরা য়র্দন উপত্যকার দিকে পালিয়েছিলেন| 5 বাবিলের সৈন্যদল সিদিকিয় ও তাঁর সৈন্যদের তাড়া করেছিল এবং তাদের য়িরীহোর সমতলভূমিতে গ্রেপ্তার করেছিল| গ্রেপ্তারের পর তাদের নিয়ে আসা হয় বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের কাছে| নবূখদ্রিত্‌সর তখন ছিলেন হমাত্‌ প্রদেশের রিব্লা শহরে| সেখানে তিনি ঠিক করেছিলেন সিদিকিয়র প্রতি কি করা হবে| 6 এই রিব্লা শহরেই সিদিকিয়র চোখের সামনেই সিদিকিয়র পুত্রদের নবূখদ্রিত্‌সর হত্যা করেছিলেন| এবং যিহূদার রাজসভার সমস্ত সভাপারিষদবৃন্দকেও হত্যা করা হয়েছিল| 7 নবূখদ্রিত্‌সর সিদিকিয়র চোখ দুটো উপড়ে ফেলেছিলেন, তাকে পিতলের শেকল দিয়ে শৃঙ্খলিত করেছিলেন এবং তাকে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন| 8 বাবিলের সৈন্যরা রাজপ্রাসাদ এবং সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি বালিয়ে দিয়েছিল এবং তারা জেরুশালেমের পাঁচিল ভেঙে গুঁড়িযে দিয়েছিল| 9 বাবিলের রাজার বিশেষ রক্ষীদের প্রধান নবূষরদন যারা তখনও বেঁচে ছিল তাদের সবাইকে বন্দী করেছিল এবং বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল| যারা আগেই আত্মসমর্পণ করেছিল তাদেরও নবূষরদন বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল| 10 কিন্তু যিহূদার কিছু গরীব লোককে নবূষরদন বন্দী করে নিয়ে না গিয়ে বরং তাদের সে জমি ও দ্রাক্ষাক্ষেত দান করে দিয়েছিল| 11 কিন্তু নবূখদ্রিত্‌সর যিরমিয়র ব্যাপারে নবূষরদনকে কিছু আদেশ দিয়েছিলেন| নবূষরদন ছিল নবূখদ্রিত্‌সরের বিশেষ দেহরক্ষীদের প্রধান| আদেশ ছিল: 12 “যিরমিয়কে খুঁজে বের করো এবং ভালো করে তার দেখাশোনা কর| তাকে আঘাত করো না| সে যা চায় তাই তাকে দাও|” 13 সুতরাং নবূষরদন, নবূখদ্রিত্‌সরের বিশেষ রক্ষীদের প্রধান, বাবিলের বিশেষ রক্ষসুদর মুখ্য আধিকারিক নবূশস্বন, উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী নের্গল-শরেত্‌সর এবং অন্যান্য উচ্চপর্য়াযের আধিকারিকদের যিরমিয়র সন্ধানে পাঠানো হয়েছিল| 14 তারা যিরমিয়কে উপাসনালয চত্বরে খুঁজে পেয়েছিল| সেখানে তাকে নজরবন্দী করে রেখেছিল যিহূদার রাজার রক্ষীরা| ঐ আধিকারিকরা যিরমিয়কে গদলিযের হাতে তুলে দিয়েছিল| গদলিয় ছিল অহীকামের পুত্র এবং শাফনের পৌত্র| গদলিয়কে নির্দেশ দেওয়া ছিল যিরমিয়কে তার নিজের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য| সুতরাং যিরমিয় তার নিজের বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে এসেছিল| 15 মন্দির চত্বরে প্রহরীদের পাহারায় যিরমিয় যখন বন্দী ছিল তখন তার কাছে প্রভুর বার্তা এসেছিল| 16 এই ছিল সেই বার্তা: “যাও এবং কূশীয় এবদ-মেলককে বল: ‘প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন: জেরুশালেম সম্বন্ধে আমার বাণী খুব শীঘ্রই আমি সত্যে পরিণত করব| আমার বার্তা সত্য হবে বিপর্য়যের মধ্যে দিয়ে, ভালো জিনিষ দিয়ে নয়| তোমরা তা তোমাদের নিজেদের চোখেই দেখতে পাবে| 17 কিন্তু এবদ-মেলক, আমি তোমাকে সেদিন রক্ষা করব|’ যাদের তুমি ভয় পাও তোমাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে না| 18 আমি তোমাকে রক্ষা করব| তরবারির আঘাতে তোমার মৃত্যু হবে না| কিন্তু তুমি পালিয়ে যাবে এবং বাঁচবে| তুমি আমার ওপর তোমার বিশ্বাস রেখেছিলে বলেই তুমি বেঁচে যাবে|”‘ এই হল প্রভুর বার্তা|

যেরেমিয়া 40

1 এটি হল প্রভুর একটি বার্তা য়েটি যিরমিয়র কাছে এসেছিল যখন প্রধাণ দেহরক্ষী নবুষরদন তাকে রামা শহর থেকে বিতাড়িত করেছিল| এটা ঘটেছিল যখন নবূষরদন যিরমিয়কে শেকলে বাঁধা অবস্থায় জেরুশালেম এবং যিহূদা থেকে আসা অন্যান্য বন্দীদের সঙ্গে পেয়েছিল যাদের পরে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| 2 নবূষরদন যিরমিয়কে খুঁজে পাওয়ার পর বলেছিল, “যিরমিয়, প্রভু, তোমার ঈশ্বর ঘোষণা করেছিলেন য়ে এই বিপর্য়য এই স্থানের ওপর আসবে| 3 এবং এখন তিনি য়ে ভাবে য়েটা হবে বলেছিলেন সেই ভাবে প্রতিটি জিনিষ করলেন| যিহূদার লোকরা ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বহু পাপ কাজ সংগঠিত করেছিল বলেই এই বিপর্য়য ঘটেছিল| তারা প্রভুকে অমান্য করেছিল| 4 যিরমিয় এখন তোমাকে আমি মুক্ত করে দিচ্ছি| আমি তোমার হাতকড়া খুলে দিচ্ছি| তুমি যদি আমার সঙ্গে বাবিলে আসতে চাও আসতে পারো| আমি তোমার সব রকম খেযাল রাখব| আর যদি না য়েতে চাও এসো না| এটা কোন ব্যাপার নয়| তোমার জন্য সব রাস্তা খোলা| যেখানে খুশি তুমি য়েতে পারো| 5 অথবা তুমি গিয়ে শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিয়র সঙ্গে থাকতে পারো| বাবিলের রাজা গদলিয়কে যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেছেন| সুতরাং যিহূদার লোকদের কাছেও ফিরে য়েতে পার, গদলিয়র সঙ্গেও থাকতে পারো অথবা যেখানে খুশী তুমি যাও|”এরপর নবূষরদন যিরমিয়কে কিছু খাবার এবং একটি উপহার দিয়ে মুক্ত করে দিয়েছিল| 6 সুতরাং যিরমিয় মিস্পাতে গিয়েছিল অহীকামের পুত্র গদলিয়র কাছে| যিহূদায় পড়ে থাকা লোকগুলো সহ যিরমিয় গদলিয়র সঙ্গে বাস করেছিল| 7 জেরুশালেম যখন ধ্বংস হয়েছিল তখন যিহূদার কিছু সেনা আধিকারিক এবং তাদের সৈন্যরা খোলা দেশটিতে রয়ে গিয়েছিল| তারা শুনলো য়ে বাবিলের রাজা অহীকামের পুত্র গদলিয়কে, যারা খুব গরীব ছিল এবং যাদের বন্দী হিসেবে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়নি সেই সব পুরুষ, স্ত্রীলোক এবং শিশুদের রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেছেন| যিহূদার গরীব লোকদের বাবিলের সৈন্যরা বন্দী করে নিয়ে না গিয়ে নবূষরদনের নির্দেশে সেখানেই জমি-জমা দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ দিয়েছিল| 8 সুতরাং যিহূদার সৈন্যরা মিস্পাতে এসে গদলিয়র সঙ্গে দেখা করতে সুযোগ দিয়েছিল| সৈন্যদের মধ্যে ছিল: নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল, কারেহের দুই পুত্র য়োহানন ও য়োনাথন, তন্হূমতের পুত্র সরায় নটোফা থেকে এফ-এর পুত্ররা এবং মাখাথীযের পুত্র যাসনিয় এবং তাদের লোকরা| 9 গদলিয় ঐ সৈন্যদের নিরাপত্তা দেবার জন্য একটি শপথ নিয়ে বলেছিল: “সৈন্যগণ তোমাদের কোন ভয় নেই| তোমরা এখানে থেকে যাও, বসতি স্থাপন করো এবং বাবিলের রাজার সেবা কর| বাবিলেই তোমরা গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করো| তোমাদের তাতে মঙ্গল হবে| 10 আমি বয়ং মিস্পাতে থাকব| আমি তোমাদের হয়ে কল্দীয অধিবাসীদের কাছে বলব| ওটা তোমরা আমার ওপর ছেড়ে দাও| কিন্তু তোমাদের দ্রাক্ষা থেকে দ্রাক্ষারস তৈরী করতে হবে| গ্রীষ্মকালীন ফলের এবং তৈলবীজের চাষ করবে| চাষের ফসল মজুত করে রাখবে| তোমরা য়ে সমস্ত শহরের দায়িত্ব নিয়েছ সেখানেই থেকো|” 11 যিহূদার য়ে সব মানুষ মোয়াব, অম্মোন, ইদোম এবং অন্যান্য দেশে চলে গিয়েছিল তারা শুনতে পেলো য়ে বাবিলের রাজা যিহূদার কিছু গরীব লোককে বন্দী করে না নিয়ে গিয়ে যিহূদাতেই বাস করতে দিয়েছে এবং তারা জানতে পারল য়ে সে গদলিয়কে সেই লোকদের রাজ্যপাল নির্বাচিত করেছে| 12 যিহূদার লোকরা যখন এই খবর পেলো তখন তারা এই সমস্ত দেশগুলি থেকে যিহূদায় ফিরে এসেছিল| তারা ফিরে এসেছিল গদলিয়র কাছে মিস্পাতে, বসতি স্থাপন করেছিল, প্রচুর পরিমাণে দ্রাক্ষারস তৈরী করেছিল এবং গ্রীষ্মকালীন ফলের ফসল সংগ্রহ করেছিল| 13 কারেহের পুত্র য়োহানন এবং যিহূদার সৈন্যদের আধিকারিকরা মিস্পাতে গদলিয়র কাছে আবার এসেছিল| 14 তারা গদলিয়কে বলেছিল, “আপনি কি জানেন য়ে, অম্মোনের লোকদের রাজা বালীস নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েলকে পাঠিয়েছে আপনাকে হত্যা করার জন্য?” কিন্তু অহীকামের পুত্র গদলিয় তাদের কথা বিশ্বাস করেনি| 15 তখন য়োহানন ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেছিল গদলিয়র সঙ্গে মিস্পাতে| য়োহানন বলেছিল, আমরা আপনাকে হত্যা করতে দেব না| “আপনি যদি আমায় অনুমতি দেন, আমি ইশ্মায়েলকে হত্যা করব এবং ফিরে আসব| কেউ এ সম্বন্ধে জানতে পারবে না| ইশ্মায়েল এর হাতে আপনাকে হত্যা হতে দেওয়া আমাদের উচিত্‌ নয়| আমরা আপনাকে হারাতে চাই না কারণ আপনি যদি নিহত হন তাহলে যিহূদার লোক আবার বিভিন্ন দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়বে| এবং ফলস্বরূপ, যিহূদার পড়ে থাকা লোকগুলো প্রাণ হারাবে|” 16 কিন্তু গদলিয় য়োহাননকে বলেছিল, “না ইশ্মায়েলকে হত্যা করো না| তোমরা ইশ্মায়েল সম্বন্ধে যা বলছো তা সত্যি নয়|”

যেরেমিয়া 41

1 সাত মাসের মাথায় নথনিয়ের পুত্র, ইলীশামার পৌত্র ইশ্মায়েল এসেছিল গদলিয়র কাছে| ইশ্মায়েল সঙ্গে নিয়ে এসেছিল আরো দশ জনকে| ঐ দশ জন লোক, ইশ্মায়েলের সঙ্গীরা এসে ছিল মিস্পা শহরে| ইশ্মায়েল ছিল রাজপরিবারের এক জন সদস্য| সে ছিল যিহূদার রাজার রাজসভার এক জন সভাসদ| ইশ্মায়েল ও তার সঙ্গীরা গদলিয়র সঙ্গে এক সঙ্গে খাওয়া-দাওযা করেছিল| 2 যখন তারা এক সঙ্গে খাওয়া-দাওযা করছিল, তখন ইশ্মায়েল ও তার দশ জন সঙ্গী তাদের তরবারি বের করেছিল এবং গদলিযের ওপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করেছিল| গদলিয় ছিল সেই জন য়ে বাবিলের রাজার দ্বারা যিহূদার রাজ্যপাল নিযুক্ত হয়েছিল| 3 ইশ্মায়েল হত্যা করেছিল গদলিযের সঙ্গে মিস্পায বাস করা যিহূদার লোকদের এবং বাবিলের সৈন্যদেরও| 4 গদলিয় নিহত হবার পরের দিন 80 জন মানুষ মিস্পা শহরে এসেছিল| তারা প্রভুর উপাসনালযে এসেছিল শস্য নৈবেদ্য ও হোমবলি নিয়ে| ঐ 80 জন মানুষ তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলেছিল, তাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ছিল এবং তাদের নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করেছিল| ঐ লোকরা এসেছিল শিখিম, শীলো এবং শমরিয়া থেকে| তাদের মধ্যে কেউই জানতো না য়ে গদলিয় নিহত হয়েছে| 5 6 ইশ্মায়েল মিস্পা ছেড়েছিল এবং ঐ লোকদের সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়েছিল| হাঁটবার সময় সে কাঁদছিল|ঐ লোকদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর সে চিত্কার করে বলেছিল, “আমার সঙ্গে চলো তোমরা গদলিয়র সঙ্গে দেখা করতে|” 7 তারা যখন গদলিয়র সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে শহরে এসেছিল, ইশ্মায়েল ও তার সঙ্গীরা ঐ 80 জনকে হত্যা করে একটি গভীর জলাধারে ফেলে দিয়েছিল| কিন্তু হত্যার আগে ইশ্মায়েলকে ঐ 80 জনের 10 জন বলেছিল, “আমাদের অন্তত তুমি হত্যা কোরো না| আমরা মাঠের মধ্যে কিছু জিনিস লুকিয়ে রেখেছি| আমাদের গম আছে, য়ব আছে, তেল ও মধু আছে| এই সব তোমাকে আমরা দেব|” তাই ইশ্মায়েল অন্যদের হত্যা করার সময় ঐ 10 জনকে হত্যা করেনি| 8 9 ইশ্মায়েল গভীর জলাধারটি মৃতদেহে ভরিয়ে ফেলেছিল| জলাধারটি ছিল বিশাল| জলাধারটি নির্মিত হয়েছিল যিহূদার রাজা আসার দ্বারা| আসা জলাধারটি তৈরী করেছিল যাতে যুদ্ধের সময় জলের অভাব না হয়| ইস্রায়েলের রাজা বাশার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আসা ঐ জলাধারটি তৈরী করেছিল| 10 ইশ্মায়েল মিস্পা শহরের লোকদের জোর করে তার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল নদী পার করে অম্মোন সম্প্রদাযের লোকদের দেশে পৌঁছবার জন্য| (ঐ লোকদের মধ্যে ছিল রাজকন্যাগণ, এবং সাধারণ মানুষ যাদের নবূখদ্রিত্‌সর বন্দী করে নি| নবূষরদন, রাজার বিশেষ রক্ষীদের আধিকারিক, গদলিয়কে এই লোকদের রাজ্যপাল করেছিল|) 11 কারেহের পুত্র য়োহানন এবং তার সঙ্গের সেনা আধিকারিকরা ইশ্মায়েলের দুষ্ট কর্মসমূহের কথা শুনেছিল| 12 তারা যুদ্ধের জন্য সৈন্যবাহিনী নিয়ে রওনা দিয়েছিল| তারা ইশ্মায়েলকে ধরেছিল গিবিযোনে একটি বিশাল জলাশযের কাছে| 13 ইশ্মায়েলের বন্দীরা য়োহানন এবং তার সঙ্গে সেনা আধিকারিকদের দেখে খুব খুশী হয়েছিল| 14 তারপর মিস্পাতে ইশ্মায়েল কর্ত্তৃক যাদের বন্দী করে নেওয়া হয়েছিল সেই সমস্ত লোকরা কারেহের পুত্র য়োহাননের কাছে ছুটে এলো| 15 কিন্তু ইশ্মায়েল কোন মতে তার 8 জন সঙ্গী নিয়ে দৌড়ে লুকিয়ে পড়েছিল অম্মোন দেশের মানুষদের মধ্যে| 16 অতএব গদলিয়কে হত্যা করবার পর ইশ্মায়েল যাদের মিস্পা থেকে বন্দী করেছিল তাদের সবাইকে য়োহানন ও তার সেনা আধিকারিকরা উদ্ধার করেছিল| যারা পড়ে ছিল তারা হল সৈন্যগণ, মহিলাগণ, ছোট ছোট বাচচারা এবং রাজ সভার উচ্চপদস্থ কর্মচারীগণ| গিবিয়োন শহর থেকে এই সব লোকদের য়োহানন ফেরত্‌ এনেছিল| 17 য়োহানন এবং তার সেনা প্রধানরা কল্দীযদের ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছিল| গদলিয় যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর দ্বারা নিযুক্ত হয়েছিল, কিন্তু পরে ইশ্মায়েল তাকে হত্যা করে| তাই য়োহানন ভেবেছিল য়ে এই খবর পেয়ে কল্দীযরা রেগে যাবে| কারণ ইশ্মায়েল তাদের পরিচিত| তাই তারা দ্রুত মিশর ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল| মিশর যাওয়ার পথে বৈত্‌লেহেম শহরের কাছে গেরুথ কিমহমের য়ে সরাইখানা আছে সেখানে তারা থেকে গিয়েছিল| 18

যেরেমিয়া 42

1 তারা যখন গেরুথ কিমহমে বাস করছিল, তখন য়োহানন এবং হোশযিযের পুত্র যাসনিয় সমস্ত সেনা আধিকারিক এবং ক্ষুদ্রতম থেকে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব লোকদের নিয়ে ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে গিয়েছিল| তাদের সঙ্গে ছিল সমস্ত সেনা আধিকারিক, গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ লোকরাও| 2 তারা প্রত্যেকে গিয়ে যিরমিয়কে বলেছিল, “যিরমিয়, অনুগ্রহ করে আমাদের কথা শোন| প্রভু, তোমার ঈশ্বরের কাছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া যিহূদার কোন মতে জীবিত এই সামান্য কয়েক জন লোকদের জন্য প্রার্থনা করো| যিরমিয় তুমি দেখতেই পাচ্ছো য়ে একটা সময় আমরা সংখ্যায় অনেক থাকলেও এখন আমরা সামান্য কয়েক জনে এসে ঠেকেছি| 3 যিরমিয় প্রভু তোমার ঈশ্বরকে প্রার্থনা করে বলে দিতে বলো আমরা এখন কি করব, কোথায় যাব?” 4 তখন ভাব্বাদী যিরমিয় উত্তর দিয়েছিল, “আমি বুঝতে পারছি তোমরা আমাকে কি করতে বলছো| আমি তোমাদের ইচ্ছামতো তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে প্রার্থনা করে সব বলব| এবং প্রভুর উত্তরও গোপন না করে তোমাদের জানাব|” 5 তখন তারা যিরমিয়কে বলেছিল, “প্রভু তোমার ঈশ্বর আমাদের যা করতে বলবেন তা যদি আমরা না করি তাহলে আমরা আশা করি প্রভু হবেন আমাদের বিরুদ্ধে এক জন সত্যবাদী বিশ্বস্ত সাক্ষী| আমরা জানি প্রভু, তোমার ঈশ্বর তোমাকে পাঠিয়ে আমাদের কি কি করতে বলবেন| 6 আমরা বাণী পছন্দ করি কি না করি সেটা কোন ব্যাপারই নয়| আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করব| আমরা তোমাকে প্রভুর কাছে পাঠাচ্ছি তাঁর একটি বাণীর জন্য| তিনি যা বলবেন তা আমরা মেনে চলব তখন আমাদের মঙ্গল হবে| হ্যাঁ, আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করব|” 7 দশ দিন পর প্রভুর বার্তা এসেছিল যিরমিয়র কাছে| 8 তখন য়োহানন ও তার সেনা আধিকারিকদের এবং অন্যান্য সমস্ত লোককে ডেকে যিরমিয় বলেছিল, 9 তোমরা আমাকে প্রভুকে জিজ্ঞাসা করতে পাঠিয়েছিলে, “প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল এই: 10 ‘তোমরা যদি যিহূদা দেশে বাস করো, আমি তোমাদের শক্তিশালী করে তুলব- আমি তোমাদের ধ্বংস করব না| আমি তোমাদের চারাগাছের মতো বপন করব এবং তোমাদের আগাছার মতো উপড়ে ফেলব না| আমি এটা করব কারণ আমি দুঃখীত য়ে আমি তোমাদের জীবনে মারাত্মক বিপর্য়যগুলি এনেছিলাম| 11 বাবিলের রাজাকে এখন আর তোমরা ভয় পেও না| কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে আছি| আমি তোমাদের রক্ষা করব| তার হাত থেকে আমি তোমাদের উদ্ধার করব| 12 আমি তোমাদের প্রতি করুণা করব এবং বাবিলের রাজাও তোমাদের প্রতি কৃপা প্রদর্শন করবে| এবং সে তোমাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনবে|’ 13 কিন্তু তোমরা হয়তো বলবে, ‘আমরা যিহূদায় থাকব না|’ যদি তোমরা একথা বলো তাহলে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে অমান্য করবে| 14 তোমরা হয়তো বলবে, ‘না, আমরা মিশরে গিয়ে বসবাস করব| সেখানে যুদ্ধের শিঙা বেজে উঠবে না| যুদ্ধের প্রকোপে আমাদের সেখানে অনাহারে যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না|’ 15 যদি তোমরা এই কথা বলো তাহলে প্রলয়ের রক্ষা পাওয়া যিহূদার লোকরা, শোন, প্রভুর বার্তা শোন| প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘তোমরা যদি মিশরে গিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকো তাহলে এই ঘটনাগুলি ঘটবে: 16 তোমরা তরবারিকে ভয় পাও| কিন্তু মিশরে তোমরা তরবারি দ্বারা পরাজিত হবে| তোমরা ক্ষুধার চিন্তা কর, কিন্তু মিশরেও তোমরা অনাহারে থাকবে| তোমরা সেখানে মারা যাবে| 17 য়ে সমস্ত লোক মিশরে য়েতে এবং সেখানে বাস করতে স্থির করেছিল তাদের মধ্যে এক জনও বেঁচে থাকবে না| তরবারির আঘাত, অনাহার এবং মহামারীর প্রকোপে প্রত্যেকে মারা যাবে| আমার তাণ্ডব থেকে কেউ পালিয়ে বাঁচতে পারবে না|’ 18 “প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘আমি জেরুশালেমের বিরুদ্ধে আমার রোধ দেখিয়েছিলাম| জেরুশালেমবাসীদের আমি শাস্তিও দিয়েছি| একই ভাবে মিশরে য়েতে ইচ্ছুক প্রত্যেক ব্যক্তির বিরুদ্ধেও আমি আমার রোধ দর্শন করাবো| লোক খারাপ ঘটনার উদাহরণ হিসেবে তোমাদের কথা উল্লেখ করবে| তোমরা হবে অভিশপ্ত| লোকরা তোমাদের জন্য লজ্জিত হবে| তোমাদের অপমান করবে| এবং তোমরা আর কোন দিন যিহূদাকে স্বচক্ষে দেখতে পাবে না|’ 19 যিহূদার বেঁচে যাওয়া লোকরা, প্রভু তোমাদের বলেছিলেন: ‘মিশরে য়েও না|’ এখন আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, 20 তোমরা একটা ভুল করছো য়েটা তোমাদের মৃত্যু আনবে| তোমরা আমাকে পাঠিয়েছিলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কাছে| তোমরা আমাকে বলেছিলে, ‘প্রভু, আমাদের ঈশ্বরের কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো| প্রভু আমাদের কি করতে বলেছেন তা সব আমাদের জানাও| আমরা প্রভুকে মান্য করব|’ 21 তাই আজ আমি তোমাদের প্রভুর বার্তাগুলি বলেছি| কিন্তু তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে অমান্য করেছো| আমি তাঁর কাছ থেকে য়ে বাণীগুলি নিয়ে এসেছি তা তোমরা শুনে চলছো না| 22 সুতরাং এখন নিশ্চিতভাবে তোমরা একথা বুঝে নাও: তোমরা যারা মিশরে য়েতে চাও তাদের জীবনে দুর্য়োগ আসবেই| তোমাদের মৃত্যু হবে তরবারির আঘাতে, অনাহারে অথবা ভয়ঙ্কর মহামারীর প্রকোপে|”

যেরেমিয়া 43

1 সুতরাং যিরমিয়, প্রভু তাদের ঈশ্বরের সব বার্তা তাদের বলে শেষ করেছিল| যিরমিয় সবসুছু তাদের বলেছিল যা যা প্রভু তাকে ঐ লোকদের বলতে পাঠিয়েছিলেন| 2 হোশযিযের পুত্র অসরিয় ও কারেহের পুত্র য়োহানন এবং আরও কিছু মানুষ ভীষণ অহঙ্কারী এবং একগুঁযে ও জেদী| তারা যিরমিয়র প্রতি রুদ্ধ হয়ে উঠেছিল| রুদ্ধ জনতা যিরমিয়কে বলেছিল, “তুমি মিথ্য়ে বলছো যিরমিয়| প্রভু, আমাদের ঈশ্বর তোমাকে আমাদের কাছে একথা বলতে পাঠাননি য়ে, আমরা য়েন মিশরে না যাই| 3 যিরমিয়, আমাদের মনে হচ্ছে নেরিযের পুত্র বারূক তোমাকে উত্সাহ য়োগাচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য| বারূক চায় আমাদের বাবিলের লোকদের হাতে তুলে দিতে| সে চায় আমাদের ওরা হত্যা করুক| কিংবা আমাদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে যাক|” 4 তারপর য়োহানন, সেনা প্রধানরা এবং সমস্ত লোক প্রভুর আদেশ মান্য করল না এবং 5 যিহূদার লোকদের নিয়ে মিশরে চলে গিয়েছিল| অতীতেও শএুবাহিনী ঐ লোকদের যিহূদা থেকে অন্যান্য দেশে নিয়ে চলে গেলেও তারা আবার যিহূদাতেই ফিরে এসেছিল| 6 এবার য়োহানন ও তার সেনা প্রধান সমস্ত পুরুষ, মহিলা, শিশু এবং রাজকন্যাদের মিশরে নিয়ে গেল| (বাবিলের রাজার বিশেষ রক্ষীদের প্রধান, নবূষরদন, গদলিয়কে ঐ লোকদের তত্ত্বাবধানে রেখেছিলেন|) সে ভাব্বাদী যিরমিয় এবং নেরিযের পুত্র বারূককেও মিশরে নিয়ে গিয়েছিল| 7 প্রভুর বারণ না শুনে তারা গিয়ে উঠল মিশরের উত্তর পূর্বাঞ্চলের তফন্হেষ শহরে| 8 তফন্হেষ শহরে যিরমিয় প্রভুর বার্তা পেয়েছিল| এই হল প্রভুর বার্তা: 9 “যিরমিয়, যাও কিছু বড় আকারের পাথর জোগাড় করে আনো| তফন্হেষ শহরে ফরৌণের প্রাসাদের সামনে মাটি ও ইঁটের তৈরী ফুটপাতে ঐ পাথরগুলি পুঁতে ফেল| যিহূদার লোকদের চোখের সামনেই তুমি ঐ পাথরগুলি মাটিতে পুঁতবে| 10 সেই সময় তুমি ঐ লোকদের উদ্দেশ্যে বলবে: ‘প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: আমি আমার ভৃত্য বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে এখানে আনব এবং তার সিংহাসনে য়ে পাথরগুলি আমি পুঁতেছি তার ওপর রাখব| নবূখদ্রিত্‌সর এখানেই তার মাথার ওপর চাঁদোযা খাটিযে সিংহাসনে বসবে| 11 সে আসবে এবং মিশর আক্রমণ করবে| কাউকে মেরে ফেলা হবে, কাউকে বন্দি করা হবে এবং অপর কাউকে যুদ্ধে নিহত করা হবে| 12 মিশরের মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলো সে নিয়ে চলে যাবে| তারপর সে ভ্রান্ত দেবতাদের সমস্ত মন্দিরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেবে| এক জন মেষপালক য়েমন তার পোশাক থেকে ছারপোকা বেছে তার পোশাকাদি পরিষ্কার করে তেমন করেই নবূখদ্রিত্‌সর মিশরকে পরিষ্কার করবে| তারপর সে নিরাপদে মিশর ত্যাগ করবে| 13 সূর্য় দেবতার মন্দিরে সমস্ত স্মরণস্তম্ভগুলি নবূখদ্রিত্‌সর ভেঙে দেবে| এবং সে মিশরের মূর্ত্তিসমূহের সমস্ত মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেবে| তারপর সে নিরাপদে মিশর ছেড়ে চলে যাবে|”‘

যেরেমিয়া 44

1 মিশরে বসবাসকারী যিহূদার লোকদের জন্য প্রভুর বার্তা এসেছিল যিরমিয়র কাছে| যিহূদার লোকরা তখন মিশরের মিগ্দোলে, তফন্হেষে, নোফে এবং দক্ষিণ মিশরের শহরগুলিতে বসবাস করছিল| প্রভুর বার্তা ছিল: 2 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, “তোমরা ইতিমধ্যে দেখতে পেয়েছো জেরুশালেম ও যিহূদার শহরগুলিকে আমি কি ভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছি| 3 ঐ শহরগুলির লোকরা অসত্‌ কার্য়কলাপসমূহের মধ্যে লিপ্ত ছিল, সেই কারণেই আমি ঐ শহরগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছি| ঐ শহরগুলির লোকরা অন্য দেবতাদের নৈবেদ্য দিয়ে আমাকে রুদ্ধ করে তুলেছিল| যাদের তাদের পূর্বপুরুষরাও পূজো করেনি এবং তাতেই আমার রাগ হয়ে গিয়েছিল| 4 আমি তাদের কাছে বার বার আমার ভাব্বাদীদের পাঠিয়েছিলাম, ভাব্বাদীরা আমারই অনুচর| ঐ ভাব্বাদীরা আমার বার্তা ঐ লোকদের কাছে বলেছিল| ভাব্বাদীরা বলেছিল, ‘এই ভয়ঙ্কর কাজ করো না| অন্য মূর্ত্তিদের পূজাকে আমি ঘৃণা করি|’ 5 কিন্তু ঐ লোকরা ভাব্বাদীদের কথা মন দিয়ে শোনে নি| তারা অসত্‌ পথ থেকে সরে আসেনি| মূর্ত্তিদের নৈবেদ্য সাজিযে পূজো করা বন্ধ করেনি| 6 তাই আমি আমার রোধ দেখিয়েছিলাম| শাস্তি দিয়েছিলাম যিহূদার শহরগুলিকে এবং জেরুশালেমের রাস্তাগুলিকে| আমার রোধ বর্ষণের ফলেই আজ যিহূদা ও জেরুশালেম শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে|” 7 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, “কেন তোমরা মূর্ত্তিদের পূজা করে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছো? তোমাদের জন্যই যিহূদার পরিবার ছিন্নমূল, তোমাদের জন্যই স্ত্রী, পুরুষ এবং শিশুদের যিহূদা থেকে আলাদা করা হয়েছে| এবং সেই জন্য যিহূদার পরিবার থেকে জীবিত কেউ বাকী থাকবে না| 8 কেন তোমরা মূর্ত্তি তৈরী করে আমাকে রুদ্ধ করে তোল? এখন আবার তোমরা মিশরের মূর্ত্তিকে নৈবেদ্য সাজিযে পূজো করে আমায় রুদ্ধ করে তুলেছো| তোমরা তোমাদের নিজেদের দোষেই ধ্বংস হবে| অন্যান্য দেশগুলির লোকদের কাছে তোমরা হবে অভিশাপ এবং উপহাসের পাত্র| 9 তোমরা কি তোমাদের পূর্বপুরুষরা যা অসত্‌ কর্মগুলি করেছিল তা ভুলে গিয়েছো? ভুলে গিয়েছো যিহূদার রাজা ও রানীরা কত পাপ কাজ করেছিল? যিহূদা দেশে ও জেরুশালেমের রাস্তাগুলোয তোমাদের স্ত্রীরা ও তোমরা য়ে পাপগুলো করেছিলে সেগুলোর কথা কি ভুলে গিয়েছো? 10 এমন কি আজ পর্য়ন্ত যিহূদার লোকরা নিজেদের নম্র বিনীত করে তুলল না| তারা আমাকে কোন রকম সম্মান জানায নি| এবং তারা আমার শিক্ষামালাকে অনুসরণ করেনি| মান্য করেনি বিধিকে যা আমি প্রণযন করেছিলাম তাদের ও তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য|” 11 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: “আমি তোমাদের জীবনে ভয়ঙ্কর কিছু ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি| আমি সমগ্র যিহূদা পরিবারকে ধ্বংস করে দেব| 12 সামান্য কিছু যিহূদার জীবিত মানুষ (যিহূদা ধ্বংসের পর যারা বেঁচে গিয়েছিল) রয়ে গিয়েছিল তারাই মিশরে চলে এসেছে| তাদেরও আমি ধ্বংস করে দেব| তাদের মৃত্যু হবে তরবারির আঘাতে অথবা অনাহারে| যিহূদার অবশিষ্ট এই লোকদের জীবনে এমন দুর্য়োগ আসবে যা দেখে অন্য দেশের লোকরাও ভয়ে শিউরে উঠবে| অভিশপ্ত হয়ে উঠবে মিশরে চলে আসা যিহূদার মানুষগুলোর জীবন| অন্য দেশের মানুষ তাদের নিয়ে হাসাহাসি করবে, অপমান করবে| 13 মিশরে যারা চলে এসেছে তাদের আমি চরম শাস্তি দেব| তাদের শাস্তি দেবার জন্য আমি তরবারি, অনাহার এবং মারাত্মক রোগসমূহের ব্যবহার প্রযোগ করব, ঠিক য়েমন আমি জেরুশালেমকে শাস্তি দিয়েছিলাম| 14 মিশরে চলে আসা যিহূদার জীবিত মানুষরা কেউ আমার শাস্তি থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারবে না| যিহূদায় কেউ বেঁচে ফিরে য়েতে পারবে না| যিহূদায় ফিরে য়েতে চাইলেও তারা ফিরতে পারবে না তবে হয়তো কয়েক জন পালিয়ে য়েতেও পারে|” 15 মিশরে বাস করা যিহূদার অধিকাংশ মহিলা নৈবেদ্য সাজিযে মূর্ত্তি পূজা করতো| অথবা তাদের স্বামীরাও জানতো কিন্তু বারণ করতো না| যিহূদার বহু লোকে, যারা দক্ষিণ মিশরে বাস করত একত্রিত হয়েছিল| তারা তাদের স্ত্রীদের অন্য দেবতাদের নৈবেদ্য সাজিযে পূজো দেওয়ার বিষযটি নিয়ে যিরমিয়কে বলেছিল, 16 “তুমি য়ে প্রভুর বার্তা আমাদের বলেছিলে তা আমরা শুনব না| 17 আমরা স্বর্গের রানীকেই আমাদের নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ| এবং আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি মতোই কাজ করব| আমরা আমাদের পেয নৈবেদ্য তাকেই উত্সর্গ করব উপাসনার মধ্যে দিয়ে| আমরা আমাদের পূর্বপুরুষ, আমাদের রাজারা ও তার সভাসদেরা অতীতে তাই করে এসেছে| আমরা যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তাগুলিতে একই জিনিষ করেছি| আমরা যখনই স্বর্গের রানীকে পূজা করেছি তখনই আমরা প্রচুর খাদ্য পেয়েছি| আমরা সাফল্য পেয়েছি| এবং আমাদের জীবনে কোন খারাপ ঘটেনি| 18 কিন্তু আমরা যখন তার পূজা বন্ধ করেছি তখনই আমাদের জীবনে সমস্যা ঘনীভূত হয়ে উঠেছে| আমাদের মানুষ মারা গিয়েছে তরবারির আঘাতে ও অনাহারে|” 19 এখন এই স্বামীদের স্ত্রীরাও যিরমিয়কে বলে উঠল, “আমাদের স্বামীরা জানতো য়ে আমরা কি করছি| তাদের সম্মতিএমেই আমরা স্বর্গের রানীকে উত্সর্গ ও পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছিলাম| তারা এও জানতো য়ে আমরা তার মুখের আদলে কেক বানাতাম|” 20 তখন যিরমিয় সেই পুরুষ এবং মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছিল| 21 যিরমিয় তাদের বলেছিল, “প্রভু সব কিছু মনে রাখেন, যিহূদা ও জেরুশালেমের রাস্তায় তোমরা অন্য দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দিয়েছিলে| তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ তোমাদের রাজা ও তার সভাসদেরা এবং ঐ দেশের সমস্ত মানুষ কি কি করেছিল সব প্রভু মনে রেখেছিলেন| 22 তোমাদের পাপ কাজগুলি প্রভু আর সহ্য করতে পারছিলেন না| তোমাদের মারাত্মক কাজগুলির জন্য তিনি তোমাদের দেশকে একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত করেছিলেন| কোন ব্যক্তি আর সেখানে এখন বাস করে না| অন্য দেশের লোকরা ঐ দেশের নিন্দা করে| 23 তোমরা অন্য দেবতাদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করেছিলে বলে, প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কর্ম করেছিলে বলে, প্রভুকে মান্য করনি বলে, প্রভুর শিক্ষামালা অনুসরণ করনি বলে এবং তাঁর চুক্তিতে তোমরা তোমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করনি বলে তোমাদের জীবনে ঐ বিপর্য়য ঘটেছিল|” 24 তখন যিরমিয় ঐ পুরুষ ও মহিলাদের বলেছিল: “যিহূদার লোকরা যারা আজ মিশরে এসে থাকছো তারা মন দিয়ে প্রভুর বার্তা শোন: 25 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘হে নারী তোমরা বলেছিলে, “আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করব না| আমরা স্বর্গের রানীকে পেয নৈবেদ্য উত্সর্গ করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ|” সুতরাং যাও তোমরা তোমাদের প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করো| 26 মিশরে বাস করা যিহূদার লোকরা প্রভুর বার্তা শোন: আমি আমার মহান নামের শপথ নিচ্ছি: মিশরে বাস করা যিহূদার কোন মানুষ আর কখনো আমার নামে প্রতিশ্রুতি করতে পারবে না| তারা আর কখনো বলে উঠবে না, “জীবন্ত প্রভুর দিব্য|” 27 “‘যিহূদার সেই লোকগুলিকে আমি লক্ষ্য করছি| তাদের ভালো করবার জন্য আমি এটা করছি না, করছি তাদের আঘাত করবার জন্য| মিশরে বসবাস করা যিহূদার লোকদের অনাহারে ও তরবারির আঘাতে মৃত্যু হবে| 28 কিছু লোক পালিয়ে যাবে| তরবারির আঘাতে মারা যাবে না| তারা প্রাণ নিয়ে মিশর থেকে যিহূদায় ফিরে আসবে| কিন্তু তাদের সংখ্যা খুবই সামান্য| তখন তারা বুঝতে পারবে কার কথা সত্যি হল, আমার না তাদের কথা| 29 প্রভু বলেন: ‘আমি য়ে তোমাদের এখানে, এই মিশরে, শাস্তি দেব তার একটা প্রমাণ দেব| তখন তোমরা জানবে য়ে তোমাদের আঘাত করবার য়ে শপথ আমি নিয়েছিলাম তা পরিপূর্ণ হয়েছে| 30 এটাই তোমাদের কাছে প্রমাণ করবে য়ে আমি যা কিছু বলি তা সত্য হবে| মিশরের রাজা ফরৌণ হফ্রাকে তার শএুরা হত্যা করতে চায়| আমি ফরৌণ হফ্রাকে তার শএুদের হাতে তুলে দেব| য়েমন করে আমি যিহূদার রাজা সিদিকিয়কে তার শএুপক্ষ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের হাতে তুলে দিয়েছিলাম, ঠিক একই রকম ভাবে ফরৌণ হফ্রাকেও আমি তার শএুদের হাতে তুলে দেব|”‘

যেরেমিয়া 45

1 য়োশিযের পুত্র যিহোয়াকীম তখন যিহূদার রাজা| যিহোয়াকীমের রাজত্বকালের চার বছরের মাথায় ভাব্বাদী যিরমিয় নেরিযের পুত্র বারূককে এই বার্তাগুলি বলেছিল| বারূক একটি খাতায় সেগুলি লিখেছিল| যিরমিয় বারূককে বলেছিল, 2 “এই হল প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমাদের সম্বন্ধে বলেছেন| 3 ‘বারূক তুমি বলেছিলে: সেটা আমার জন্য খুব খারাপ| প্রভু আমার যন্ত্রণায় দুঃখ য়োগ করছেন| আমি আমার যন্ত্রণার দরুন ক্লান্ত এবং বিশ্রাম পাচ্ছি না|”‘ 4 প্রভু বলেছিলেন, “যিরমিয়, বারূককে একথা জানিয়ে দাও: ‘প্রভু যা বললেন তা হল, আমি যা বপন করেছি তা আমিই আবার উপড়ে ফেলব| আমি যা সৃষ্টি করেছি আমিই আবার তা নষ্ট করে ফেলব| যিহূদার সর্বত্র এই ঘটনা ঘটাবো| 5 বারূক, তুমি তোমার নিজের জন্য বিরাট একটা কিছুর খোঁজ করছ| কিন্তু এমন বিরাট জিনিষ খুঁজো না| কারণ আমি সমস্ত লোকের ওপর মারাত্মক ঘটনা ঘটাবো|’ কিন্তু তোমাকে আমি জীবিত ছেড়ে দেব, তুমি যেখানে খুশী পালিয়ে য়েতে পারো|”‘ প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন|

যেরেমিয়া 46

1 অন্যান্য জাতিগুলি সম্বন্ধে ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে এই বার্তাগুলি এসেছিল| 2 এই বার্তা হল মিশর ও মিশরের রাজা ফরৌণ-নখোর সৈন্যবাহিনীর জন্যে| নখোর সৈন্যরা ফরাত্‌ নদীর তীরে কর্কমীশ শহরে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের কাছে পরাজিত হয়েছিল| রাজা য়োশিযের পুত্র রাজা যিহোয়াকীম যখন তার রাজত্বের চতুর্থ বছরে ছিল সেই সময় নবূখদ্রিত্‌সর ফরৌন-নখোর সৈন্যদের পরাজিত করেছিল| এই হল মিশর সম্পর্কিত প্রভুর বার্তা: 3 “তোমরা ছোট এবং বড় ঢাল নিয়ে যুদ্ধের জন্য এগিয়ে যাও| 4 সৈন্যরা, তোমরা তোমাদের অশ্বদের প্রস্তুত করবে এবং তাদের ওপর বসবে| যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে দুর্বারভাবে এগিয়ে যাও| তোমাদের শিরস্ত্রাণ পরে নাও; তোমাদের বর্শাকে ঘষা-মাজা করে নাও এবং তোমাদের বর্ম পরে নাও| 5 আমি কি দেখতে পাচ্ছি? সৈন্যরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছুটে পালাচ্ছে| তাদের সাহসী সৈন্যরা পরাজিত| তারা দ্রুত দৌড়চ্ছে, পিছন ফিরে তাকাচ্ছে না| সেখানে চতুর্দিকে বিপদ|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 6 “দ্রুতগামী লোকরা আর দৌড়তে পারছে না| শক্তিশালী সৈন্যরা পালাতে পারছে না| তারা হোঁচট খেযে পড়ে যাচ্ছে| ফরাত্‌ নদীর তীরে, উত্তরদিকে এই ঘটনা ঘটবে| 7 নীল নদের মতো কে এগিয়ে আসছে? কে এগিয়ে আসছে দ্রুতগামী শক্তিশালী নদীর মতো? 8 মিশর নীল নদের মতো জেগে ওঠো, একটি বেগবান ও শক্তিশালী নদীর মত| শক্তিশালী দ্রুতগামী নদীর মতো য়ে আসছে সে মিশর| মিশর বলল, ‘আমি আসব এবং পৃথিবীকে গ্রাস করব| আমি ধ্বংস করব শহরগুলিকে এবং সেই শহরের মানুষকে|’ 9 অশ্বারোহী সৈন্যরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ো| রথচালকরা, দ্রুত ছোটাও রথের চাকা| বীর য়োদ্ধা এগিয়ে চলো| কূশ এবং পূটিয সৈন্যগণ, তোমাদের বর্মগুলি বহন কর| লূদীয় সৈন্যগণ, তোমাদের ধনুকগুলো ব্যবহার কর| 10 “কিন্তু সে সময় আমাদের প্রভু সর্বশক্তিমান জয়ী হবেন| সেই সময় তিনি তাদের য়োগ্য শাস্তি দেবেন| প্রভুর তরবারি ততক্ষণ হত্যা করে যাবে যতক্ষণ না তাদের রক্তের জন্য তাঁর তৃষ্ণা নিবারন হয়| এটা হবে কারণ আমাদের মালিক, প্রভু সর্বশক্তিমানের জন্য একটি উত্সর্গ আছে| ফরাত্‌ নদীর ধারে ঐ দেশের উত্তর দিকে মিশরের সৈন্যদল হল সেই উত্সর্গ| তাই এগুলি ঘটবে| 11 “মিশর তুমি তোমার রয়োজনীয় ওষুধের জন্য গিলিয়দে যাবে| তুমি প্রচুর ওষুধ পাবে কিন্তু তাতে তোমার কাজ হবে না| তুমি কখনও সুস্থ হয়ে উঠবে না| তোমার ক্ষত কোনদিন সারবে না| 12 অন্যান্য জাতিগুলি তোমার কান্না শুনতে পাবে| তোমার কান্না শোনা যাবে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে| কারণ একজন ‘বীরয়োদ্ধা’ আরেক জনের ওপর হুমড়ি খেযে পড়বে| কিন্তু তারা দুজনেই এক সঙ্গে মাটিতে আছাড় খাবে|” 13 নবূখদ্রিত্‌সর আসছে মিশর আক্রমণ করতে| এই ব্যাপারে প্রভুর বার্তা এল ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে| 14 “মিশরে, মিগ্দোল শহরে, নোফে এবং তফন্হেষ শহরেও এই বার্তা ঘোষণা করে দাও| ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| কেন? কারণ তোমাদের চারপাশের সমস্ত জাতিসমূহ তরবারি দ্বারা নিহত হচ্ছে|’ 15 “মিশর, তোমার শক্তিশালী সৈন্যরা নিহত হবে| তারা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না| কারণ তারা উঠে দাঁড়াতে গেলেই প্রভু তাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেবেন| 16 ঐ সৈন্যরা বার বার হোঁচট খেযে একে অন্যের ঘাড়ের ওপর পড়বে| তারা বলবে, ‘চলো ওঠো আমরা ফিরে যাই নিজেদের দেশে, নিজেদের লোকের কাছে| শএুরা আমাদের পরাজিত করেছে সুতরাং আমাদের তো চলে য়েতেই হবে|’ 17 তাদের স্বদেশে ফিরে গিয়ে সৈন্যরা বলবে, ফরৌণ শুধু মুখে বড় বড় কথা বলে| রাজার গৌরবের সময় ফুরিযে গেছে|”‘ 18 এ হল রাজার বাণী| রাজাই হলেন প্রভু সর্বশক্তিমান| “আমি আছি এটা য়েমন নিশ্চিত, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এক ক্ষমতাশালী নেতা আসবে| সে হবে সমুদ্রের সন্নিকটে স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তাবোর এবং কর্মিল পর্বতের মতো বিশাল| 19 মিশরের লোকরা, জিনিসপত্র গুছিযে নিয়ে নির্বাসনে যাবার জন্য প্রস্তুত হও| কারণ নোফে ও অন্যান্য শহরগুলি ধ্বংস হয়ে শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে, কেউ সেখানে বাস করবে না| 20 “মিশর হল একটি রুপসী গাইয়ের মতো, কিন্তু তাকে বিরক্ত করতে উত্তর দিক থেকে ঘোড়া দংশক মাছি আসছে| 21 মিশর সেনাবাহিনীর ভাড়াটে সৈন্যরা হল তরুণী গাভীর মতো| তারা কখনো শক্তিশালী আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না| তারা দৌড়ে পালাবে| তাদেরও শেষ হবার সময় ঘনিয়ে আসছে| শীঘ্রই তারা শাস্তি পাবে| 22 মিশর শুধু সাপের মতো হিসহিস শব্দ করে ফুঁসবে আর পালানোর চেষ্টা করবে| শএুপক্ষ এমশঃ তার কাছে এগিয়ে আসবে| এবং মিশরের সৈন্যরা শুধু আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবে কি করে পালিয়ে যাওয়া যায়| শএুদল কুঠার নিয়ে মিশরকে আক্রমণ করবে| তারা য়েন গাছ কেটে ফেলছে এমন লোকদের মত|” 23 প্রভু এই কথাগুলি বলেন, “অরণ্যের গাছ কাটার মতো তারা মিশরের সৈন্যদের কেটে ফেলবে| মিশরের সৈন্য সংখ্যা অসংখ্য হলেও তারা কেউ ছাড়া পাবে না| শএুপক্ষের সৈন্যরা হল পঙ্গপালের মতো অগুনতি| 24 মিশর লজ্জিত হবে| উত্তরের শএুপক্ষ তাকে পরাজিত করবে|” 25 প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “খুব শীঘ্রই আমি থীবসদের দেবতা, অম্মোনকে শাস্তি দেব| এবং আমি ফরৌণকে, মিশরকে ও তার দেবতাদেরও শাস্তি দেব| ফরৌণের ওপর নির্ভরশীল লোকদেরও আমি শাস্তি দেব| 26 শএুপক্ষের কাছে আমি ঐ লোকদের পরাজিত করব| শএুসেনা তাদের হত্যা করতে চায়| আমি ঐ লোকদের বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর ও তার অনুচরদের হাতে তুলে দেব|”“অতীতে মিশরে শান্তি বিরাজ করতো| এবং এই সমস্ত সমস্যাগুলি কেটে যাবার পর মিশরে আবার শান্তি ফিরে আসবে|” প্রভু এই কথা বললেন| 27 “যাকোব, আমার অনুচর, আমার সেবক, ভীত হযো না| ভয় পেও না ইস্রায়েল| আমি তোমাকে ঐ সব দূর দেশের হাত থেকে রক্ষা করব| তোমার নির্বাসিত সন্তানদের আমি রক্ষা করব| যাকোবে আবার নিরাপত্তা ও শান্তি ফিরে আসবে| কেউ আর তাকে ভয় দেখাতে পারবে না|” 28 প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন, “যাকোব আমার সেবক, ভয় পেও না| আমি তোমার সঙ্গে আছি| আমি তোমাকে ভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি কিন্তু তোমাকে পুরোপুরি ধ্বংস করিনি| অথচ আমি অন্যান্য দেশগুলোকে ধ্বংস করে দেব| খারাপ কাজ করার ফলস্বরূপ তুমি আজ সাজা প্রাপ্ত| আমি তোমাকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দিতে পারি না| আমি তোমাকে শাস্তি দেব, কিন্তু আমি সেটি ন্যায়পরায়ণভাবে করব|”

যেরেমিয়া 47

1 পলেষ্টীয়দের সম্বন্ধে ভাব্বাদী যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এসেছিল| ফরৌণ ঘসা শহর আক্রমণের আগে এই বার্তা এসেছিল| 2 প্রভু বলেছেন: “দেখ, শএুপক্ষের সেনারা উত্তরে একত্রিত হচ্ছে| তারা এগিয়ে আসছে কূলছাপানো প্রবল নদীর মতো| ঐ সৈন্যদল সমগ্র দেশটিকে এবং তার সমস্ত শহরগুলোকে এক শক্তিশালী বন্যার মত ঢেকে দেবে| সমস্ত শহরের এবং গোটা দেশের মানুষ সাহায্যের জন্য চিত্কার করে উঠবে| 3 “তারা শুনতে পাবে ছুটন্ত ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ| শুনতে পাবে তীব্র গতিতে ছুটে আসা রথের চাকার শব্দ| পিতারা তাদের সন্তানদের রক্ষা করতে পারবে না| তারা এত দুর্বল হয়ে পড়বে য়ে সাহায্য করার শক্তিও তাদের মধ্যে অবশিষ্ট থাকবে না| 4 “পলেষ্টীয় লোকদের ধ্বংসের সময় আসছে| যারা সোর ও সীদোনের লোকদের সাহায্য করেছিল তাদের ধ্বংসের সময় আসছে| শীঘ্রই প্রভু পলেষ্টীয় লোকদের ধ্বংস করবেন| তিনি ধ্বংস করবেন কপ্তোর দ্বীপের জীবিত অবশিষ্ট লোকদেরও| 5 ঘসার লোকরা তাদের মাথা কামাবে এবং শোক প্রকাশ করবে| অস্কিলোনের লোকরা চুপ করে থাকবে| উপত্যকায় বেঁচে যাওয়া লোকরা, তোমরা আর কত দিন নিজেদের আহত করবে? 6 “প্রভুর তরবারি, তুমি এখনো ফিরে যাওনি| আর কতদিন এই ভাবে যুদ্ধ করে যাবে? যাও এবার তোমার খাপে ফিরে যাও এবং স্থির হও| 7 হে প্রভুর তরবারি, কি করে তুমি প্রভুর আদেশ অগ্রাহ্য করতে পারো এবং তোমার খাপে ফিরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারো? প্রভুই তাঁর তরবারিকে আদেশ দিয়েছেন অস্কিলোন শহর এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলকে আক্রমণ করার জন্য|”

যেরেমিয়া 48

1 মোয়াব দেশ সম্বন্ধে হল এই বার্তা| প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন: “নবো পর্বতের জন্য খুব খারাপ হবে| নবো পর্বত ধ্বংস হয়ে যাবে| কিরিযাথযিমকে অপদস্থ করা হবে এবং তাকে দখল করা হবে| ঐ শক্তিশালী জায়গাটিকে অবদমিত ও ধ্বংস করা হবে| 2 মোয়াবের আর কখনো প্রশংসা করা হবে না| হিশ্বোনের লোকরা মোয়াবের পরাজয়ের পরিকল্পনা করবে| তারা বলবে, ‘এসো, আমরা ঐ দেশটি শেষ করে দিই|” মদ্মেনা, তুমিও নিশ্চুপ হয়ে যাবে| প্রভুর তরবারি তোমাকেও তাড়া করবে| 3 হোরোণযিম থেকে কান্নার রোল উঠছে শোন| তারা বিশৃঙ্খল অবস্থা ও ধ্বংস দেখে কাঁদছে| 4 মোয়াব ধ্বংস হবে| তার সন্তানরা সাহায্যের জন্য চিত্কার করে কাঁদবে| 5 মোয়াবের লোকরা কাঁদতে কাঁদতে লূহীতের ফুটপাত দিয়ে হাঁটবে| তাদের সেই বেদনাবিধুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাবে হোরোণযিম শহরের রাস্তা থেকে| 6 বাঁচার জন্য পালাও| দৌড়োও! ঝোপের ছোট ছোট শেকড় য়েমন মরুঝড়ে উড়ে যায় সেই ভাবে পালিয়ে যাও| 7 “তোমরা যা তৈরী করেছিলে তাতে তোমাদের বিশ্বাস আছে, বিশ্বাস আছে তোমাদের সম্পদে| তাই তোমরা বন্দী হবে| তোমাদের দেবতা কমোশকেও নির্বাসনে পাঠানো হবে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে| তার যাজক এবং আধিকারিকদেরও বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে| 8 ধ্বংস আসবে প্রত্যেক শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে| কোন শহর পালাতে পারবে না| এই উপত্যকা ধ্বংস হয়ে যাবে| উচ্চ সমতলভূমিও ধ্বংস হবে| প্রভু য়েহেতু বলেছেন এইগুলি ঘটবে, তাই এগুলি ঘটবেই| 9 মোয়াবের সমস্ত জমিতে নুন ছড়িয়ে দাও| এই দেশ শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে| মোয়াবের শহরগুলি শূন্য শহরসমূহে পরিণত হবে| 10 যদি কোন ব্যক্তি প্রভুর নির্দেশ মতো তার তরবারি ব্যবহার না করে এবং হত্যা করে তাহলে সেই ব্যক্তির জীবনে বিপর্য়য আসবে| 11 “মোয়াব কখনও অশান্তি কি তা জানতে পারেনি| মোয়াব ছিল নির্দিষ্ট স্থানে সঞ্চিত রাখা সুরার মতো স্থির| তাকে কখনও এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালা হয়নি| তাকে কখনও নির্বাসনের জন্য বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়নি| তাই তার স্বাদ আগের মতোই অভিন্ন এবং তার গন্ধেরও পরিবর্তন হয়নি|” 12 প্রভু বলেছেন, “কিন্তু শীঘ্রই আমি কিছু লোক পাঠাব যারা তোমাকে সুরার মতো এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালবে| তারপর তারা শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে তোমাকে টুকরো টুকরো করবে|” 13 তখন মোয়াবের লোকরা তাদের মূর্ত্তি কমোশের জন্য লজ্জিত হবে| বৈথেলে ইস্রায়েলের লোকরাও মূর্ত্তিকে বিশ্বাস করেছিল এবং যখন ঐ মূর্ত্তি তাদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারেনি তখন তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিল| মোয়াবের সেই রকমই হবে| 14 “তুমি বলতে পারো না, ‘আমরা ভালো সৈন্য| আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসী|’ 15 শএুপক্ষ মোয়াব আক্রমণ করবে| তারা মোয়াব শহরগুলির ভেতরে ঢুকে সেগুলিকে ধ্বংস করে দেবে| গণ হত্যার সময় মোয়াবের সবচেয়ে শক্তিশালী যুবকরা মারা যাবে|” এই বার্তা হল রাজার| রাজার নাম হল প্রভু সর্বশক্তিমান| 16 মোয়াবের ধ্বংস হবে শীঘ্রই| মোয়াবের পরিসমাপ্তি খুব কাছে এগিয়ে আসছে| 17 মোয়াবের প্রতিবেশী লোকরা, তোমরা ঐ দেশের জন্য চিত্কার করে কাঁদো! লোকরা, তোমরা জানো য়ে মোয়াব কতখানি বিখ্যাত তাই তার জন্য কাঁদো| এই বিলাপ গীত গাও: ‘রাজার শাসন শেষ| মোয়াবের শক্তি ও গৌরব শেষ হয়ে গেছে|’ 18 তোমরা দীবোনের লোকরা, তোমাদের শ্রদ্ধার জায়গা থেকে নেমে এসো| কারণ ধ্বংসকারী আসছে| সে এসে তোমাদের সমস্ত শক্তিশালী শহরগুলোকে ভেঙ্গে গুঁড়িযে দেবে| 19 অরোযের লোকরা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করে দেখো এক জন পুরুষ ও নারী দৌড়ে পালাচ্ছে| ওদের জিজ্ঞেস করো কি হয়েছে| 20 মোয়াব ধ্বংস হবে এবং লজ্জায ভরে যাবে| মোয়াব শুধু কাঁদবে আর কাঁদবে| অর্ণোন নদীতে ঘোষণা হচ্ছে মোয়াব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| 21 উচ্চসমতল ভূমির লোকরাও শাস্তি পাবে| হোলন, য়হস, মেফাত্‌ শহরে শাস্তির বিধান এসে গিয়েছে| 22 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে দীবোন, নবো এবং বৈত্‌-দিব্লাথযিম শহরে| 23 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে কিরিযাথযিম, বৈত্‌গামূল এবং বৈত্‌-মিযোন শহরে| 24 বিচার দণ্ড এসেছে করিযোত্‌ এবং বস্রা শহরগুলিতে| বিচার দণ্ড এসেছে মোয়াবের কাছের ও দূরের সমস্ত শহরগুলিতেও| 25 মোয়াবের সমস্ত শক্তি ছিন্ন করা হয়েছে| মোয়াবের বাহু ভেঙে দেওয়া হয়েছে|” প্রভু এই কথা বলেছিলেন| 26 মোয়াব নিজেকে প্রভুর চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছিল| অতএব মোয়াবকে শাস্তি দাও যতক্ষণ না সে মাতালের মতো টলতে টলতে হাঁটে, যতক্ষণ না সে বমি করে এবং তার ওপর নিজেই গড়াগড়ি খায়! মানুষ মোয়াবকে নিয়ে উপহাস করবে| 27 মোয়াব তুমি সব সময় ইস্রায়েলকে নিয়ে হাসাহাসি করেছ| ইস্রায়েল যখন একদল চোরের হাতে ধরা পড়েছিল তখন তুমি তাকে নিয়ে উপহাস করেছো, মজা করেছো| তুমি সব সময় নিজেকে ইস্রায়েলের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করে এসেছো| যতবার তুমি ইস্রায়েলের সম্বন্ধে কথা বলেছ, তুমি সব সময় এমন ব্যবহার করেছ য়েন তুমি তার চেয়ে ভালো| 28 তোমরা, মোয়াবের লোকরা, তোমদের শহরগুলি ত্যাগ কর এবং পাথর সমূহের মাঝে বাস কর য়েমন করে একটি ঘুঘু পাখী একটি গুহার প্রবেশমুখে তার বাসা তৈরী করে|” 29 “মোয়াবের আত্মম্ভরিতার কথা আমরা শুনেছি| সে ছিল ভীষণ অহঙ্কারী| হামবড়া ভাব দেখিয়ে সে নিজেকে কেউ কেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করতো|” 30 প্রভু বলেন, “আমি জানি য়ে মোয়াব খুব তাড়াতাড়ি রেগে যায়| সে নিজেই নিজের বড়াই করে বেড়ায| কিন্তু তার সব বড় বড় কথাই মিথ্য়ে| সে যা বলে তার কিছুই করে দেখাতে পারে না| 31 তাই আমি মোয়াবের জন্য কাঁদি| কাঁদি তার লোকদের জন্য| আমি কাঁদলাম কীর-হেরেসের লোকদের জন্য| 32 যাসের লোকদের জন্য আমি যাসেরের সঙ্গে কাঁদলাম| সিব্মা অতীতে তোমার দ্রাক্ষা ক্ষেত সমুদ্র উপকূল ঘিরে বিস্তৃত ছিল যাসের পর্য়ন্ত| কিন্তু ধ্বংসকারী তোমাদের ফসল ও দ্রাক্ষা নিয়ে গিয়েছে| 33 মোয়াবের বিশাল দ্রাক্ষাক্ষেতগুলির থেকে সমস্ত আনন্দ ও হাসি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে| আমি দ্রাক্ষার থেকে রসের প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছি যাতে আর কখনও দ্রাক্ষারস না বানানো যায়| কেউ আর ওগুলোর ওপর দিয়ে নাচতে নাচতে এবং গাইতে গাইতে না হাঁটে| সেখানে কোন আনন্দের কোলাহল থাকবে না| 34 “হিশ্বোন ও ইলিয়ালী শহরের মানুষ কাঁদছে| সুদূর য়হস শহর থেকেও তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে| তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে সোযর, হোরেসুযম এবং ইগ্লত্‌-শলিশীযা শহর থেকেও| এমন কি নিম্রীম নদীর জল শুকিয়ে গিয়েছে| 35 আমি মোয়াবকে সমস্ত উচ্চ স্থানগুলিতে হোমবলি উত্সর্গ করা থেকে বিরত করব| আমি মোয়াবকে তাদের দেবতাদের প্রতি নৈবেদ্য দেওয়া থেকে বিরত করব|” প্রভু এগুলি বললেন| 36 মোয়াবের জন্য আমি খুবই দুঃখিত| শবযাত্রা কালে শোকসঙ্গীতের সুর তোলা বাঁশির মতো আমার হৃদয় কাঁদছে| আমি কীর হেরেসের লোকদের জন্যও দুঃখিত| সুদর সমস্ত ধনসম্পত্তি লুঠ হয়ে গিয়েছে| 37 প্রত্যেকেই শোক পালনের উদ্দেশ্যে মাথা ন্যাড়া করেছে, দাড়ি কেটেছে, হাত কেটে রক্তপাত ঘটিযেছে| প্রত্যেকে শোকের পোশাক পরেছে| 38 মোয়াবে মৃতদের জন্য প্রত্যেক জায়গায় লোকেরা, প্রত্যেক বাড়ির মাথায় এবং সমস্ত জনসাধারণ্যে কাঁদছে| আমি মোয়াবকে শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করেছি বলেই চারিদিকে এত শোক|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন| 39 মোয়াব চুর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে| মানুষ কাঁদছে| মোয়াব আত্মসমর্পণ করেছে এবং এখন লজ্জায পড়ে গেছে বলে অন্য দেশের মানুষ তাকে নিয়ে উপহাস করছে| কিন্তু মোয়াবে যা ঘটেছে তাতে তারা আতঙ্কে পূর্ণ|” 40 প্রভু বলেন, “দেখ! একটি ঈগল পাখী আকাশ থেকে নীচের দিকে ধেয়ে আসছে আর তার ডানার পরিধি বিস্তৃত হচ্ছে মোয়াবের ওপর| 41 মোয়াবের শহরগুলি অধিকৃত হবে| দূর্গ দিয়ে ঘেরা জায়গাগুলিও পরাজিত হবে| সেই সময় মোয়াবের সৈন্যরা প্রসব বেদনায় কাতর মহিলার মতো ভীত হয়ে পড়বে| 42 পুরো মোয়াব দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে| কেননা তারা ভেবেছিল য়ে তারা প্রভুর থেকেও বেশী গুরুত্বপূর্ণ|” 43 প্রভু এই কথাগুলি বলেন: “মোয়াবের লোকরা, ভীত হও, গভীর খাদ এবং ফাঁদ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে| 44 লোকরা ভয়ে দৌড়বে এবং গভীর খাদগুলিতে পড়বে| কেউ যদি সেই খাদ বেয়ে বাইরে উঠে আসে, সে মুক্ত হবে না কারণ তাকে ধরবার জন্য ফাঁদ পাতা আছে| আমি মোয়াবে শাস্তির বছর নিয়ে আসব|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 45 “শএুবাহিনীর ভয়ে মানুষ নিরাপত্তার জন্য হিশ্বোন শহরের দিকে ছুটবে কিন্তু সেখানেও তারা নিরাপদ নয়| হিশ্বোনে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে| সীহোনের শহর থেকে এই আগুনের উত্পত্তি| ঐ আগুন মোয়াবের নেতাদের পুড়িয়ে মারবে, পুড়িয়ে মারবে অহঙ্কারী লোকগুলোকে| 46 মোয়াব তোমার সত্যিই দুঃসময় ঘনিয়ে আসছে| তোমার দেবতা কমোশ ও তার লোকরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| তোমার ছেলেমেযেদের বন্দী করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নির্বাসনে| 47 “মোয়াবের লোকদের নির্বাসনে পাঠানো হলেও এমন একদিন আসবে য়েদিন তাদের সবাইকে আবার আমি মোয়াবে ফিরিয়ে আনব|” এই ছিল প্রভুর বার্তা|মোয়াবের বিচারদণ্ড এখানেই শেষ|

যেরেমিয়া 49

1 এই হল প্রভুর বার্তা অম্মোনের লোকদের জন্য| প্রভু বলেছেন: “অম্মোনের লোকরা তোমরা কি ভাবো য়ে ইস্রায়েলের লোকদের কোন সন্তান নেই? তোমরা কি ভাবো সেখানে কোন উত্তরপুরুষ নেই যারা তাদের পিতা মাতার মৃত্যুর পর দেশের ভার নিতে পারে? হয়তো এই কারণেই কি মিল্কম গাদের দেশ নিয়ে নিয়েছিল?” 2 প্রভু বলেন, “সময় আসবে যখন রব্বা অম্মোন দেশের রাজধানী, লোকরাও যুদ্ধের শব্দ শুনতে পাবে| রব্বা শহরও ধ্বংস হবে| শহরের শূন্য পাহাড়গুলির মাথায় পড়ে থাকবে ধ্বংসস্তূপের জঞ্জাল| এই শহরের লোকরা ইস্রায়েলীয়দের দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল কিন্তু পরে ইস্রায়েল তাদের দেশ পুনরায় অধিকার করবে|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন| 3 “হিশ্বোনের মানুষ কাঁদো! কারণ অয় শহর ধ্বংস হয়ে গিয়েছে| রব্বা এবং অম্মোনের কন্যারা কাঁদো! শোক পোশাক পরে কাঁদো| ছুটে যাও নিরাপদ শহরের খোঁজে| কারণ শএুবাহিনী আসছে| তারা দেবতা মিল্কমকে এবং তার যাজক ও কর্তাদের ধরে নিয়ে যাবে| 4 তোমরা তোমাদের শক্তি নিয়ে বড়াই করছো কিন্তু তোমরা সেই শক্তি হারাবে| তোমরা ভেবেছিলে তোমাদের অর্থ তোমাদের রক্ষা করবে| তোমরা ভেবেছিলে তোমাদের আক্রমণের কথা কেউ কল্পনাও করতে পারে না|” 5 কিন্তু প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: “তোমাদের আমি চারিদিক থেকে সমস্যায় জর্জরিত করে তুলব| তোমরা দৌড়ে পালাবে এবং কেউ তোমাদের আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না|” 6 “অম্মোনের লোকদের বন্দী করে নির্বাসনে পাঠানো হলেও সময় আসবে যখন আমি আবার তাদের ফিরিয়ে আনব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 7 এই বার্তা হল ইদোম সম্বন্ধে|প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন: “তৈমনে কি আর কোন জ্ঞান নেই? ইদোমের জ্ঞানী ব্যক্তিরা কি উপদেশ দিতে সক্ষম নয়? তারা কি তাদের জ্ঞান হারিযে ফেলেছে? 8 দদানের লোকরা, দৌড়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ো| কারণ এষৌকে তার পাপের জন্য আমি শাস্তি দেব| 9 “শ্রমিকরা, যারা দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করে, তারা ক্ষেতে কিছু দ্রাক্ষা ছেড়ে রেখে যায়| রাত্রে যদি চোর আসে তারা চুরি করে, কিন্তু তারা সবকিছু চুরি করে না| 10 কিন্তু আমি এষৌযের সব কিছু নিয়ে যাবো| যেখানেই সে লুকিয়ে থাকুক আমি তাকে খুঁজে বার করবই| এষৌযের সন্তান, আত্মীযস্বজন এবং প্রতিবেশীদের হত্যা করা হবে| 11 তার সন্তানদের দেখাশোনা করবার জন্য কেউ পড়ে থাকবে না| তার স্ত্রীরা কাউকেই পাবে না যার ওপর নির্ভর করা যায়|” 12 প্রভু যা বলেন তা হল এই: “কিছু মানুষ শাস্তির য়োগ্য না হলেও তাদের এই কষ্ট ভোগ করতে হবে| কিন্তু ইদোম, তুমি শাস্তির য়োগ্য এবং তোমাকে সত্যিই শাস্তি পেতে হবে| তুমি শাস্তির হাত থেকে পালাতে পারবে না|” 13 প্রভু বলেছেন, “আমি আমার শক্তির দ্বারাই এই প্রতিশ্রুতি করছি: আমি প্রতিশ্রুতি করছি য়ে বস্রা শহর ধ্বংস হবে| ঐ শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে| বস্রা শহরকে লোকরা ধ্বংসের উদাহরণ হিসাবে নেবে যখন তারা অন্য শহরগুলিতে খারাপ ঘটনা ঘটাবার ইচ্ছে করবে| অন্য দেশের মানুষ ঐ শহরকে অপমান করবে এবং বস্রা শহরের আশে-পাশের শহরগুলিও চিরদিনের জন্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে|” 14 প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা আমি শুনেছি| এবং দেশগুলিতে তিনি একটি বার্তাসহ তাঁর দূত পাঠালেন: “সৈন্যদের একত্রিত করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও! সৈন্যবাহিনী সমেত ইদোমের দিকে এগিয়ে চলো| 15 “ইদোম, আমি তোমাকে গুরুত্বহীন করে দেব| মানুষ তোমাকে ঘৃণা করবে| 16 ইদোম, তুমি অন্য দেশগুলিকে ভয় দেখিয়েছিলে| তুমি নিজেকে ভেবেছিলে গুরুত্বপূর্ণ কেউ একজন| কিন্তু আসলে তুমি তোমার অহঙ্কার দ্বারা বোকা হয়ে গিয়েছিলে| তোমার অহঙ্কারই তোমার কাল হল| ইদোম, তুমি পাহাড়ের চূড়ায় একটি সুরক্ষিত বাড়ী তৈরী কর়েছিলে| কিন্তু তুমি যদি ঈগল পাখীরা যেখানে তাদের বাসা বাঁধে সেই উচ্চতায় একটি বাড়ী তৈরী করতে এবং সেখানে থাকতে, তাহলেও তোমাকে আমি টেনে নীচে নামাতাম|” প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন| 17 “ইদোম ধ্বংস হয়ে যাবে| শহরের দুরবস্থা দেখে লোকেরা শোকাহত হবে| ধ্বংপ্রাপ্ত শহরগুলি দেখে লোকরা বিস্ময বিহবল হয়ে যাবে| তারা ধ্বংপ্রাপ্ত শহরগুলির দিকে বিস্ময বিহবল হয়ে শিস দেবে| 18 সদোম ঘমোরা এবং তার আশপাশের শহরের মতো ইদোমও ধ্বংস হয়ে যাবে| কোন মানুষ আর সেখানে জীবিত থাকবে না|” প্রভু এই কথাগুলি বললেন| 19 “য়র্দন নদীর তীরবর্তী ঝোপ থেকে কখনো কখনো একটি সিংহ বেরিয়ে আসবে| সেই সিংহ হানা দেবে মেষ ও বাছুরের আস্তানায| আমিও সেই সিংহের মতো হানা দেব ইদোমে| ভয় দেখাব ঐ লোকদের| তারা দৌড়ে পালাবে| তাদের কোন যুবক আমাকে থামতে পারবে না| আমার মত কে আছে? কে আমার প্রতিষ্ঠিত করবে? তাদের কোন মেষপালক (নেতারা) আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে না|” 20 ইদোমের লোকদের নিয়ে প্রভু কি করবেন তার পরিকল্পনা শোন| শোন তৈমনের লোকদের নিয়ে প্রভু কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন| শএুরা ইদোমের পালের (লোকরা) ছোট ছোট ছেলেমেযেদের জোর করে টেনে নিয়ে যাবে| ইদোমের তৃণভূমি শুকিয়ে যাবে তাদের কৃতকর্মের জন্য| 21 ইদোমদের পতনের শব্দে পৃথিবী কেঁপে উঠবে| তাদের কান্না সেই সূফ সাগর পর্য়ন্ত শোনা যাবে| 22 প্রভু হবেন তার শিকারের ওপর উড়ন্ত একটি ঈগল পাখীর মত| তিনি হবেন বস্রা শহরের ওপর তার ডানা ছড়ানো একটি ঈগল পাখীর মত| সেই সময় ইদোমের সৈন্যরা ভয় পেয়ে যাবে এবং শিশু প্রসবরত একটি মহিলার মত কাঁদবে| 23 এই বার্তাটি দম্মেশক সম্বন্ধে:“হমাত্‌ এবং অর্পদ শহরগুলি আতঙ্কিত কারণ তারা খারাপ খবরটি শুনতে পেয়েছে| তারা নিরুত্‌সাহ হয়ে পড়েছে| তারা অশান্ত সমুদ্রের মত অশান্ত হয়েছে| 24 দম্মেশক শহর দুর্বল হয়ে গিয়েছে| শহরের মানুষ পালাতে চায়| তারা আতঙ্কিত| কারণ তারা অনুভব করছে যন্ত্রণার কষ্ট| সে যন্ত্রণা য়েন প্রসব বেদনায় কাতর মহিলার মতো|” 25 “দম্মেশক হল সুখের শহর| এখনো সেখানকার মানুষ ঐ ‘মজার শহর’ ছেড়ে চলে যায়নি| 26 সুতরাং শহরের যুবকরা মারা যাবে চৌরাস্তার ওপর| সৈনিকদেরও একই সময়ে হত্যা করা হবে| প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেছেন| 27 “আমি দম্মেশক শহরের প্রাচীরে আগুন লাগিয়ে দেব| ঐ আগুন বিন্হদদের শক্তিশালী দূর্গগুলোকে সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেবে|” 28 এই বার্তা হল কেদর পরিবারগোষ্ঠী এবং হাত্‌সোরের শাসকবৃন্দের সম্বন্ধে| বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর তাদের যুদ্ধে পরাজিত করেছিল| প্রভু বলেছেন:“যাও কেদর পরিবারগোষ্ঠীকে আক্রমণ করো| ধ্বংস করে দাও পূর্বের লোকদের| 29 তাদের তাঁবু এবং মেষের পালকে নিয়ে যাওয়া হবে| তাদের ধনসম্পদ ও সমস্ত তল্পি-তল্পাও নিয়ে নেওয়া হবে| শএুপক্ষ তাদের উটও নিয়ে যাবে| লোকরা চিত্কার করে বলবে: ‘আমাদের চারিদিকে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা ঘটছে|’ 30 হাত্‌সোরের লোকরা, তাড়াতাড়ি পালাও লুকোনোর গোপন জায়গা খুঁজে নাও|” এই হল প্রভুর বার্তা| “নবূখদ্রিত্‌সর তোমাদের পরাজিত করার জন্য একটি বেদনাদাযক পরিকল্পনা করেছে|” 31 “সেখানে একটি দেশ আছে য়ে নিজেকে নিরাপদ মনে করে| ঐ দেশের কোন ফটক নেই, সীমানায কোন কাঁটা তারের বেড়াজাল নেই| সেই দেশের আশেপাশে কোন মানুষ থাকে না| প্রভু বললেন, ‘ঐ দেশকে আক্রমণ করো|’ 32 শএুবাহিনী তাদের বাছুর ও উট চুরি করে নিয়ে যাবে| তারা তাদের রুটির কোণা কাটে| বেশ, আমি তাদের দৌড় করিযে নিয়ে যাব পৃথিবীর আরেক প্রান্তে| এবং প্রত্যেক জায়গাতেই তাদের জীবন সমস্যায় জর্জরিত করে তুলব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 33 “হাত্‌সোর নামের এই দেশটিতে শুধু কুকুর ঘুরে বেড়াবে| এখানে কোন মানুষ থাকবে না| চির কালের জন্য এই দেশ শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে|” 34 যিহূদার রাজা সিদিকিয়র রাজত্বের শুরুতে ভাব্বাদী যিরমিয় প্রভুর কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছিল| বার্তাটি ছিল এলম সম্বন্ধে| 35 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “এলমের সব থেকে শক্তিশালী অস্ত্র হল ধনুক| আমি সেই ধনুক শীঘ্রই ভেঙে দেব| 36 আমি এলমের বিরুদ্ধে চারটি বাযুসমূহকে পঠাব| আমি ঐ লোকগুলিকে পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গায় পাঠাব যেখানে চারটি বাযুসমূহ বয| তারপর তাদের বন্দী করে বিভিন্ন দেশে নির্বাসনে পাঠানো হবে| 37 আমি তাদের শএুদের চোখের সামনে এলমকে টুকরো টুকরো করে কাটব| আমি এলমের ওপর মারাত্মক অশান্তি আনব| আমি আমার রোধ তাদের দেখাব|” এই হল প্রভুর বার্তা| “এলমকে তাড়া করার জন্য আমি আমার তরবারি পাঠাব| এলমের লোকদের শেষ না করা পর্য়ন্ত আমার তরবারি ফিরে আসবে না| 38 আমি এলমকে দেখাব য়ে আমার দমন কর্ত্তৃত্ব আছে| আমি এলমের রাজা ও তার সভাসদদের ধ্বংস করব|” এই হল প্রভুর বার্তা| 39 “কিন্তু ভবিষ্যতে আবার আমি এলমের জন্য শুভ খবর বয়ে আনব| ভাল ঘটনা ঘটাবো এখানেই|” এই হল প্রভুর বার্তা|

যেরেমিয়া 50

1 প্রভুর এই বার্তাটি বাবিল দেশ ও বাবিলীযদের সম্পর্কে| যিরমিয়র মাধ্যমে প্রভু এই বার্তাগুলি জানিয়েছেন| 2 “সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে এই ঘোষণা করে দাও! পুরো বার্তাটি পড়ে বল ‘বাবিলের জাতিকে বন্দী করা হবে| বেল মূর্ত্তি লজ্জিত হবে| মরোদক মূর্ত্তি খুবই ভীত হয়ে পড়বে| বাবিলের দেবমূর্ত্তিদের লজ্জায পড়তে হবে| তার দেবমূর্ত্তিগুলি প্রচণ্ড ভয় পাবে|’ 3 উত্তরের একটি জাতি বাবিলকে আক্রমণ করবে| এই জাতির আক্রমণে বাবিল এক শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হবে| কোন মানুষই সেখানে বাস করতে পারবে না| শুধু মানুষই নয় জীবজন্তুরাও ঐ জায়গা ছেড়ে পালিয়ে আসবে|” 4 প্রভু বললেন, “ঐ সময়ে ইস্রায়েল ও যিহূদার অধিবাসীরা একত্র মিলিত হবে| কাঁদতে কাঁদতে লোকেরা একত্রে খুঁজে ফিরবে প্রভু তাদের ঈশ্বরকে| 5 ঐসব লোকরা সিয়োনে যাওয়ার পথ জানতে চাইবে| তারপর তারা সিয়োনের উদ্দেশ্যে রওনা হবে| য়েতে য়েতে তারা একে অপরের উদ্দেশ্যে বলবে, ‘এস, আমরা প্রভুর সঙ্গে মিলিত হই| এসো, আমরা এক চুক্তি করি যা চিরকাল স্থায়ী হবে| একটা চুক্তি করা যাক যা আমরা কখনও ভুলব না|’ 6 “আমরা লোকরা হারিযে যাওয়া মেষের মতো| তাদের মেষপালকরা (নেতারা) তাদের ভুলপথে চালিত করেছে| নানা পাহাড়ে পর্বতমালায় তাদের পথহারা করেছে| লোকরা উদভ্রান্তের মতো এক পর্বত থেকে অন্য পর্বতে ভ্রমণ করেছে| তারা তাদের বিশ্রামের জায়গা ভুলে গিয়েছে| 7 যারা আমার লোকদের দেখেছে তারাই তাদের আঘাত করেছে| এবং ঐসব শএুরা বলেছে, ‘আমরা মোটেই অন্যায় করিনি|’ ঐসব লোকরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছে| এই প্রভুই তাদের সত্যিকারের বিশ্রামস্থল| এই প্রভুই তাদের ঈশ্বর যা তাদের পিতারাও বিশ্বাস করত| 8 “বাবিল ছেড়ে পালিয়ে এস| বাবিলদের দেশ ত্যাগ কর| এবং পালের আগুযান ছাগলের মতো হও| (প্রকৃত নেতার মতো জনগণকে নেতৃত্ব দাও|) 9 আমি উত্তরে অনেক তৃজাতিকে একত্রিত করব| এই মিলিত জাতির দল বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হবে| উত্তর দিকের লোকরাই বাবিলের দখল নেবে| ঐ সব জাতির লোকরা বাবিলের দিকে অনেক তীর ছুঁড়বে| ঐ সব তীরগুলি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে খালি হাতে ফিরে না আসা সৈন্যদের মতো হবে| অর্থাত্‌ প্রতিটি তীরই তার লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করবে| 10 শএুরা কল্দীয লোকদের সমস্ত ধনসম্পদ নিয়ে নেবে| সৈন্যরা যা খুশী তাই নেবে|” প্রভু এইগুলি বললেন| 11 “বাবিল তোমরা উল্লসিত এবং খুশী| তোমরা আমার দেশ অধিকার করেছ| শস্য ক্ষেত্রগুলিতে ছোট ছোট গরুর মত তোমরা চারিদিকে নৃত্য করে বেড়াচ্ছ| তোমাদের উল্লাস য়েন ঘোড়ার সুখী ডাকের মতো|” 12 “এখন তোমার মা হতবুদ্ধি হয়ে যাবে| য়ে মা তোমার জন্মদাত্রী সে বিব্রত হবে| বাবিল সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে| তার অবস্থা হবে শুষ্ক, পরিত্যক্ত মরুভূমির মতো| 13 প্রভু তাঁর রোধ প্রকাশ করবেন| ফলে কোন মানুষই সেখানে বাস করতে পারবে না| বাবিল পুরোপুরি পরিত্যক্ত হবে| “বাবিলের ওপর দিয়ে যারাই যাবে তারাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে| বাবিলের ধ্বংসস্তূপ দেখে প্রত্যেকেই মাথা নাড়বে| 14 “বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও| তীরন্দাজ সৈন্যরা বাবিলের দিকে তীর ছোঁড়| একটা তীরও রেখে দিও না| কারণ বাবিল প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছে|” 15 বাবিলকে চারিদিক থেকে ঘিরে রাখা সৈন্যরা যুদ্ধ বিজয়ের নাদ গর্জন করল| বাবিল আত্মসমর্পণ করেছে| তার প্রাচীর এবং দুর্গগুলি ভেঙে ফেলা হয়েছে| এই সব লোকদের যা শাস্তি পাওনা ছিল প্রভু তা দিচ্ছেন| অন্য জাতিগুলির প্রতি বাবিল য়ে কাজ করেছে জাতিগুলির উচিত্‌ বাবিলকে তার জন্য য়োগ্য শাস্তি দেওয়া| 16 বাবিলের লোকদের চাষবাস করতে দিও না| তাদের শস্য সংগ্রহ করতে দিও না| বাবিলের সৈন্যরা অনেক বন্দীকে তাদের শহরে এনেছিল| কিন্তু এখন শএু সৈন্যরা এসেছে| তাই এখন ঐসব বন্দীরা তাদের ঘরে ফিরে যাচ্ছে| ঐসব বন্দীরা তাদের নিজেদের দেশে ফিরে যাচ্ছে| 17 “ইস্রায়েল সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মেষের পালের মতো| সিংহসমূহের তাড়া খাওয়া মেষের মত ইস্রায়েল ছড়িয়ে পড়ছে| প্রথম আক্রমণকারী সিংহ হল অশূরের রাজা| এবং শেষ আক্রমণকারী য়ে সিংহ ইস্রায়েলের হাড়গোড় গুঁড়িযে দেবে সে হল বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর|” 18 তাই প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “আমি খুব শীঘ্রই বাবিল এবং তার রাজাকে শাস্তি দেব| অশূরের রাজাকে আমি য়েমন শাস্তি দিয়েছি বাবিলকে আমি তেমনই শাস্তি দেব| 19 আমি ইস্রায়েলকে তার নিজের শস্য ক্ষেতে ফিরিয়ে আনব| কর্মিল পাহাড়ের ওপর এবং বাশনের সমতলে য়ে সমস্ত শস্য জন্মায়, ইস্রায়েলীয়রা তাই খাবে| ইফ্রযিম এবং গিলিয়দের পার্বত্য দেশগুলিতে তারা পেট ভরে খাবে|” 20 প্রভু বলেন, “সেই সময় লোকরা ইস্রায়েলের দোষএুটি খুঁজতে জোরদার ভাবে চেষ্টা করবে| কিন্তু খুঁজে পাওয়ার মত কোন দোষ থাকবে না| লোকরা যিহূদার পাপও খুঁজে বের করতে চেষ্টা করবে| কিন্তু তারা কোন পাপ খুঁজে পাবে না| কেন? কারণ আমিই ইস্রায়েলের ও যিহূদার কিছু বেঁচে যাওয়া লোকদের পাপসমূহ ক্ষমা করব এবং আমি তাদের রক্ষা করব|” 21 প্রভু বললেন, “মরাথযিম আক্রমণ কর| পকোদের লোকদের আক্রমণ কর| তাদের হত্যা করে পুরোপুরি ধ্বংস কর| আমি যা আদেশ করছি তাই কর| 22 “গোটা দেশ জুড়ে যুদ্ধের দামামা শোনা যাচ্ছে| এটা ব্যাপক ধ্বংসের দামামা| 23 সমগ্র পৃথিবীর হাতুড়ি বলে পরিচিত ছিল বাবিল| ‘কিন্তু এখন এই হাতুড়িই খণ্ড বিখণ্ড|’ সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে বাবিলই সব চেয়ে বেশী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে| 24 বাবিল, তোমার জন্য আমি একটা ফাঁদ পেতেছিলাম| এবং তা জানার আগেই সেই ফাঁদে তুমি ধরা পড়েছ| তোমরা প্রভুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছ| তাই তোমাদের খুঁজে বন্দী করা হয়েছে| 25 প্রভু তাঁর অস্ত্র ভাণ্ডার খুললেন| প্রভু তাঁর রোধর অস্ত্রগুলি বের করে আনলেন| প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ঐসব অস্ত্রগুলি আনলেন কারণ কলদীযদের দেশে তাঁর কিছু কাজ আছে| 26 “দূর দেশের লোকরা, তোমরা বাবিলের বিরুদ্ধে দাঁড়াও| বাবিলের শস্য ভাণ্ডার ভেঙ্গে খুলে ফেল| বাবিলকে পুরোপুরি ধ্বংস করো| কাউকে জীবিত রেখো না| অনেক শস্যকে য়েমন স্তূপীকৃত করা হয়, তেমন বাবিলবাসীদের মৃতদেহগুলি স্তূপীকৃত কর| 27 বাবিলের সমস্ত যুবক ষাঁড়দের (লোকদের) হত্যা কর| জন্তুদের মত তাদের বধ কর| তাদের পরাস্ত করার সময় এসে গিয়েছে| তাই এটা তাদের পক্ষে খুবই খারাপ হবে| তাদের শাস্তি পাওয়ার সময় হয়েছে| 28 বাবিল থেকে লোক ছুটে পালাচ্ছে| তারা ঐ দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে| এই সব লোকরা সিয়োনের দিকে আসছে| তারা প্রত্যেককে প্রভুর ধ্বংসলীলার কথা বলছে| তারা লোকদের বলছে য়ে, প্রভু বাবিলকে উপযুক্ত শাস্তি দিচ্ছেন| বাবিল প্রভুর উপাসনাগৃহ ধ্বংস করেছিল তাই প্রভু বাবিলকে ধ্বংস করছেন| 29 “তীরন্দাজদের ডাকো| তাদের বাবিলকে আক্রমণ করতে বল| ঐ সব তীরন্দাজদের শহরের চারিদিকে ঘিরে ফেলতে বল| কাউকে পালাতে দিও না| বাবিলকে তাদের অপকর্মের উপযুক্ত শাস্তি দাও| সে অন্য জাতিদের জন্য যা করেছিল, তাকেও তাই করো| বাবিলীযরা প্রভুকে সম্মান করেনি| তারা ইস্রায়েলের পবিত্র এক জনের সঙ্গে খুব রূঢ় ব্যবহার করেছে| অতএব বাবিলকে শাস্তি দাও| 30 বাবিলের যুবকদের রাস্তায় হত্যা করা হবে| তার সমস্ত সৈন্য ঐদিন মারা যাবে|” এই হল প্রভুর বার্তা| 31 “বাবিলের লোকরা, তোমরা খুবই অহঙ্কারী| এবং আমি তোমাদের বিরুদ্ধে|” আমাদের মালিক, প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন| 32 গর্বিত বাবিল হোঁচট খাবে এবং পড়ে যাবে| কেউই তাকে তুলে ধরতে এগিয়ে আসবে না| আমি তার শহরগুলিতে আগুন ধরিযে দেব| এই আগুন শহরের প্রত্যেককে এবং তার চারপাশের প্রত্যেকটি জিনিষকে সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেবে|” 33 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন: “ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকরা হল দাস| শএুরা তাদের নিয়ে গিয়েছিল| এবং শএুরা ইস্রায়েলের লোকদের য়েতে দেয়নি| 34 কিন্তু ঈশ্বর ঐসব লোকদের ফিরিয়ে আনবেন| তাঁর নাম হল প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান| তিনি ঐসব লোকদের সর্বশক্তি দিয়ে রক্ষা করবেন| তিনি তাদের রক্ষা করবেন যাতে তিনি দেশটিকে বিশ্রাম দিতে পারেন| কিন্তু বাবিলবাসীদের কোন বিশ্রাম থাকবে না|” 35 প্রভু বলেন, “তরবারি, বাবিলীযদের তুমি হত্যা কর, রাজার সভাসদদের এবং জ্ঞানী লোকদের হত্যা কর| 36 তরবারি বাবিলের যাজকদের হত্যা কর| ঐসব যাজকরা বোকা লোকদের মত হয়ে যাবে| তরবারি, বাবিলের সৈন্যদের তুমি হত্যা কর| ঐসব সৈন্যরা ভয়ে পূর্ণ হয়ে যাবে| 37 তরবারি বাবিলের ঘোড়া এবং যুদ্ধরথদের হত্যা কর| তরবারি অন্য দেশ থেকে ভাড়া করে আনা সৈন্যদের হত্যা কর| ঐসব লোকরা ভযার্ত মহিলার মতো হবে| তরবারি বাবিলের সম্পদ ধ্বংস কর| ঐসব সম্পদ নিয়ে যাওয়া হবে| 38 তরবারি বাবিলের জলকে আঘাত কর| ঐসব জল শুকিয়ে যাবে| বাবিলের অসংখ্য মূর্ত্তি আছে| বাবিলের লোকরা য়ে বোকা ঐসব মূর্ত্তিরা সেটাই প্রমাণ করে| তাই ঐসব লোকদের ভাগ্য়ে অঘটন ঘটবে| 39 “বাবিল আর কখনও লোকে পরিপূর্ণ হবে না| বন্য কুকুরসমূহ, উটপাখিরা এবং মরুভূমির অন্যান্য জন্তু জানোযাররা সেখানে বাস করবে| কিন্তু কোন লোকই আর সেখানে কোন দিনের জন্য বাস করবে না| 40 ঈশ্বর সদোম এবং ঘমোরাকে তাদের চারদিকের শহরগুলিসহ পুরোপুরি ধ্বংস করেছেন| এবং কোন লোকই ঐসব শহরগুলিতে এখন বাস করে না| একই ভাবে কোন লোকই বাবিলে বাস করবে না| এবং কোন লোকই আর সেখানে কোনদিন বাস করতে যাবে না| 41 “দেখ, উত্তরের লোকরা আসছে| তারা একটি শক্তিশালী জাতি থেকে আসছে| পৃথিবীর চারিদিক থেকে অনেক রাজারা একসঙ্গে আসছে| 42 তাদের সৈন্যদের তীর-বল্লম আছে| সৈন্যরা নিষ্ঠুর| তাদের কোন মাযা মমতা নেই| উত্তাল সমুদ্র গর্জনের মতো সৈন্যরা তাদের ঘোড়ায় চড়ে আসছে| বাবিল শহর, সৈন্যরা তোমাকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত| তারা তাদের জায়গায় দাঁড়িয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে| 43 বাবিলের রাজা ঐসব সৈন্যদের সম্বন্ধে শুনল| এবং সে ভীষণ ভয়চকিত হয়ে পড়ল| সে এতই ভীত হয়ে পড়ল য়ে তার হাত অবশ হয়ে পড়ল| তার ভয় তাকে প্রসব বেদনায় কাতরানো মহিলার মতো যন্ত্রণা দিতে থাকল|” 44 প্রভু বলেন, “মাঝে মাঝে য়র্দন নদীর পাশ্ববর্তী ঘন ঝোপঝাড় থেকে একটি সিংহ আসবে| যেখানে লোকরা জন্তু জানোযার রেখেছে সেই মাঠের ওপর দিয়ে সিংহটি হেঁটে যাবে| এবং সমস্ত জন্তুরা ভয়ে পালাবে| আমি ঐ সিংহটির মতো হব| আমি বাবিলবাসীদের তাদের দেশ থেকে তাড়া করব| এটা করার জন্য আমি কাকেই বা মনোনীত করতে পারতাম? কেউই আমার মতো নয়| আমাকে মোকাবিলা করার ক্ষমতা কারোর নেই| তাই আমি এটা করবই| কোন মেষপালকই আমাকে ধাওযা করতে আসবে না| আমি বাবিলের লোকদের তাড়া করে নিয়ে যাব|” 45 বাবিলের প্রতি প্রভু যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই পরিকল্পনার কথা শোন| শোন, বাবিলের লোকদের প্রতি প্রভুর সিদ্ধান্তের কথা| শএুরা বাবিলের পালের (লোক) ছোট ছেলেমেযেদের জোর করে টেনে নিয়ে যাবে| তাদের কৃতকর্মের জন্যই বাবিলের চারণভূমি শূন্য হবে| 46 বাবিলের পতন হবে| এবং সেই পতনে পৃথিবী কেঁপে উঠবে| সমস্ত জাতির লোকরা বাবিলের এই ধ্বংসের কথা শুনবে|

যেরেমিয়া 51

1 প্রভু বললেন, “আমি শক্তিশালী বাতাস প্রবাহিত করব| আমি এই শক্তিশালী বাতাসকে বাবিলের বিরুদ্ধে এবং ‘লেব-কামাই’এর লোকদের বিরুদ্ধে বওযাবো| 2 আমি বাবিলকে শষ্য থেকে তুষ ঝেড়ে ফেলবার মত করবার জন্য লোক পাঠাব এবং তারা বাবিলকে তুষের মত করে দেবে| তারা বাবিল থেকে সবকিছু নিয়ে নেবে| সেনারা শহর ঘিরে রাখবে এবং ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটবে| 3 বাবিলের সেনারা তাদের তীর ধনুক ব্যবহার করবে না| তারা এমন কি তাদের অস্ত্রশস্ত্রও তুলবে না| বাবিলের যুবকদের জন্য দুঃখিত হযো না| তার সেনাদের পুরোপুরি ধ্বংস কর| 4 কল্দীযদের দেশে বাবিলের সৈন্যদের হত্যা করা হবে| বাবিলের রাস্তায় তারা গুরুতরভাবে আহত হবে|” 5 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েল এবং যিহূদাকে বিধ্বা মহিলাদের মতো একাকী ফেলে চলে যান নি| ঈশ্বর ঐসব লোকদের ত্যাগ করেন নি| না! ঐ লোকরা দোষী| তারা ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে ত্যাগ করেছিল| তারা ত্যাগ করলেও ঈশ্বর তাদের ত্যাগ করেন নি| 6 বাবিল থেকে পালিয়ে যাও| পালাও নিজেদের জীবন বাঁচাতে| বাবিলের পাপের জন্য সেখানে থেকে নিহত হযো না| তাদের অপকর্মের জন্য ঈশ্বরের বাবিলীযদের শাস্তি দেবার সময় এসেছে| বাবিল তার য়োগ্য শাস্তি পাবেই| 7 বাবিল ছিল প্রভুর হাতের স্বর্ণ পেয়ালার মতো| বাবিল গোটা পৃথিবীকে মদ্যপ বানিয়েছে| জাতিগুলি বাবিলের মদ পান করেছে| তাই তাদের মস্তিষ্কের এই বিকৃতি| 8 বাবিলের হঠাত্‌ পতন হবে| ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে| তার জন্য কাঁদো| তার যন্ত্রণা উপশমের জন্য ওষুধ দাও! সে সুস্থ হতেও পারে| 9 আমরা বাবিলকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি| কিন্তু সে সুস্থ হতে পারবে না| তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত্‌ তাকে ত্যাগ করে নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া| স্বর্গের ঈশ্বর ঠিক করবেন তার শাস্তি| তিনিই ঠিক করবেন বাবিলে কি হবে| 10 প্রভু আমাদের জন্যও প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন| এসো, সিয়োন সেই সব কথা বলো| এখন বলো, প্রভু আমাদের ঈশ্বরের কৃত কর্মের কথা| 11 তীরগুলি তীক্ষ্ণ করো| বর্ম তুলে নাও| ঈশ্বর মাদীয় রাজাদের উত্তেজিত করে তুললেন| তিনি তাদের উত্তেজিত করে তুলবেন| কারণ তিনি বাবিলকে ধ্বংস করতে চান| বাবিলের লোকদের প্রভু তাদের পাওনা শাস্তি দেবেন| জেরুশালেমে প্রভুর উপাসনাগৃহগুলি ধ্বংস করেছিল বাবিল| এর জন্য য়ে শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত্‌ প্রভু তাই দেবেন| 12 বাবিলের প্রাচীরগুলির বিরুদ্ধে একটি ধ্বজা তোল| আরও রক্ষী আনো| নজরদার নিয়োগ করো| তৈরী হও গোপন আক্রমণের জন্য| প্রভু নিজের পরিকল্পনা মত কাজ করে যাবেন| বাবিলের লোকদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর কথা মত সবকিছুই করবেন| 13 বাবিল তুমি গভীর জলের কাছে বাস করো| কোষাধ্যক্ষদের সঙ্গে সঙ্গে তুমিও ধনী| তোমার সমাপ্তি সমাগত| এটাই তোমার ধ্বংসের সময়| 14 প্রভু সর্বশক্তিমান এই প্রতিশ্রুতির সময় তাঁর নাম ব্যবহার করেছিলেন: “বাবিল আমি তোমাকে বহু শএু সৈন্য দিয়ে ভরে দেব| তারা দ্রুত শস্য বিনাশকারী কীটেদের মতো হবে| তারা তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করবে এবং তোমার ওপর দাঁড়িয়ে বিজয় উল্লাস করবে|” 15 প্রভু তাঁর মহান ক্ষমতাবলে পৃথিবীর সৃষ্টি করেছেন| এই বিশ্ব গড়তে তিনি তাঁর জ্ঞানকে ব্যবহার করেছিলেন| আকাশকে বিস্তৃত করতে তাঁর নিজের বুদ্ধি ব্যবহার করেছেন| 16 যখন তিনি বজ্র নির্ঘোষ করেন, আকাশের জল গর্জন করে ওঠে| তিনিই পৃথিবীর ওপরে মেঘ পাঠান| তিনি বৃষ্টির সঙ্গে বিদ্য়ুতের ঝলকানি পাঠান| তিনিই তাঁর গুদাম থেকে এনে দেন বাতাস| 17 কিন্তু মানুষ এতই বোকা য়ে তারা বুঝতে পারে না ঈশ্বর কি করেছেন| দক্ষ কারিগররা ভ্রান্ত দেবতার মূর্ত্তি বানায়| সেই মূর্ত্তি একমাত্র ভ্রান্ত দেবতারই| সেগুলি য়ে করেছে সেই কারিগরের বোকামি তারা দেখিয়ে দেয়| সেই মূর্ত্তি জীবন্ত নয়| 18 সেই মূর্ত্তিগুলি মূল্যহীন| যারা বানিয়েছে তারা নিজেরাই হাসির খোরাক হয়েছে| তাদের বিচারের সময় আসবে এবং মূর্ত্তিগুলি ধ্বংস হবে| 19 কিন্তু যাকোবের নিযতি (ঈশ্বর) ঐ মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর মত নয়| মানুষ ঈশ্বর বানায় না, ঈশ্বরই মানুষ বানায়| সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর| তাঁর নাম প্রভু সর্বশক্তিমান| 20 প্রভু বললেন, “বাবিল, তুমি আমার গদা| জাতিগুলিকে ধ্বংস করতে আমি তোমাকে ব্যবহার করেছি| ব্যবহার করেছি তোমাকে রাজ্যগুলি ধ্বংসের কাজে| 21 অশ্ব ও অশ্বারোহীকে ধ্বংসের কাজে তোমাকে ব্যবহার করেছি| আমি তোমাকে রথসমূহ ও তাদের চালকদের ধ্বংস করবার জন্য ব্যবহার করেছি| 22 তুমি আমার দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছো পুরুষ ও মহিলা ধ্বংসের কাজে, আমি তোমাকে ব্যবহার করেছিপুরুষ, বৃদ্ধ ও যুবকদের বিনাশের কাজে| তরুণ তরুণীদের বিনাশের কাজে তোমাকে ব্যবহার করেছি| 23 আমি তোমাকে মেষপালক ও তার পালকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবার জন্য ব্যবহার করেছি| কৃষকদের ও গরুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবার জন্য তোমাকে ব্যবহার করেছি| রাজ্যপাল ও গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকদের চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে তোমাকে ব্যবহার করেছি| 24 কিন্তু বাবিলকে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেব| সিয়োনের প্রতি য়ে সমস্ত কুকর্মগুলি তারা করেছিল তার জন্য আমি তাদের মূল্য দিতে বাধ্য করব| যিহূদা আমি তোমার সামনে ওদের শাস্তি দেব|” এই সব প্রভু বলেছেন| 25 প্রভু বলেন, “বাবিল, তুমি ধ্বংসকারী পাহাড়ের মতো এবং আমি তোমার বিরুদ্ধে| বাবিল, তুমি গোটা দেশকে ধ্বংস করেছো, আমি তোমার বিরুদ্ধে| আমি তোমার বিরুদ্ধে হাত রাখব| আমি তোমাকে দূরারোহ পাহাড়গুলির থেকে গড়িযে ফেলে দেব| আমি তোমাকে পুড়ে যাওয়া পাহাড়ে পরিণত করব| 26 মানুষ বাড়ি তৈরী করতে বাবিল থেকে পাথর নিতে পারবে না| ভিত্তি প্রস্তরসমূহের মত ব্যবহার করবার জন্য যথেষ্ট বড় পাথর সমূহও পাওয়া যাবে না| কেন? কারণ তোমার শহর চির কালের মত ভাঙ্গা পাথরের কুচির মতো হবে|” এই সব প্রভু বলেছেন| 27 “হাতে যুদ্ধ ধ্বজা তুলে নাও! সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে ভেরী বাজাও| বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সব জাতিকে প্রস্তুত করো| বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অরারট, মিন্নি ও অস্কিনস রাজ্যকে ডাকো| 28 তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সেনানাযক বেছে নাও| এত বেশী ঘোড়া পাঠাও যাতে ওরা শস্য বিনাশকারী পতঙ্গ পালের মত হয়ে ওঠে| জাতিগুলিকে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য প্রস্তুত করো| মাদীয় রাজাদের তৈরী করো| তাদের রাজ্যপালদের ও গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকদের প্রস্তুত করো| 29 দেশটা যন্ত্রণায় কাতরানোর মতো কাঁপবে| বাবিলের জন্য প্রভুর য়ে পরিকল্পনা করছে সেগুলো পালনের সময় কেঁপে উঠবে| বাবিলকে পরিত্যক্ত মরুতে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রভুর| 30 বাবিলের সেনারা যুদ্ধ থামিয়ে দুর্গে থেকে যাবে| তাদের শক্তি চলে গিয়েছে| তারা হল ভীত মহিলাদের মতো| বাবিলের বাড়িগুলি জ্বলছে| তার ফটকগুলির আগলসমূহ ভেঙ্গে গিয়েছে| 31 এক জন বার্তাবাহককে অন্য জন অনুসরণ করছে| বার্তাবাহকরাই বার্তাবাহকদের অনুসরণ করছে| তারা বাবিলের রাজাকে বলে য়ে তার সমগ্র শহর অধিকৃত হয়ে গিয়েছে| 32 য়ে জায়গা দিয়ে মানুষ নদী পার হয় সেই জায়গাও অধিকৃত| নদীর ধার বরাবর ঘাসের জমি পুড়ছে| বাবিলের সব লোকরাই আতঙ্কিত|” 33 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “বাবিল হচ্ছে একটি মাড়ানো ভূমির মতো| ফসল কাটার সময় লোকরা শস্য ঝাড়ে তাকে তুষ থেকে আলাদা করবার জন্য| বাবিলকে মারবার সময় খুব শীঘ্রই আসছে|” 34 সিয়োনের লোকরা বলবে, “বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর অতীতে আমাদের ধ্বংস করেছে| অতীতে নবূখদ্রিত্‌সর আমাদের আঘাত করেছে| আমাদের লোকদের দূরে নিয়ে গিয়ে আমাদের খালি পাত্রের মতো করে ছেড়েছে| সে আমাদের সমস্ত ভালো জিনিষগুলি নিয়ে গিয়েছিল এবং আমাদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল| সে এক জন দৈত্যাকার দানব য়ে ভরপেট না হওয়া পর্য়ন্ত সব কিছুকে খেযে নেয| সে আমাদের যা কিছু ভালো ছিল তা নিয়ে নিয়ে আমাদের দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে| 35 বাবিল আমাদের আঘাত করতে ভয়ঙ্কর জিনিস ঘটিযেছিল| এখন আমরা চাই য়ে বাবিলে ঐসব ঘটনা ঘটুক|” সিয়োনের লোকরা ঐসব জিনিসগুলির কথা বলবে: “আমাদের লোকদের হত্যা করার জন্য বাবিলের লোকরা দোষী| এখন অপকর্মের জন্য তাদের শাস্তি হচ্ছে|” জেরুশালেম শহর ঐসব জিনিসগুলির কথা বলবে| 36 তাই প্রভু বলেন, “যিহূদা, আমি তোমাকে রক্ষা করব| বাবিলের শাস্তি প্রদান আমি নিশ্চিত করব| আমি বাবিলের সমুদ্রের জল শুকিয়ে দেব এবং তার জলের প্রবাহ বন্ধ করে দেব| 37 বাবিল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে| বাবিল বন্য কুকুরের বাসস্থান হবে| ধ্বংসস্তূপ দেখে লোকরা অবাক হয়ে যাবে| বাবিলের কথা ভাবার সময় লোকরা তাদের মাথা নাড়বে| বাবিল এমন একটা জায়গায় পরিণত হবে যেখানে কোন লোক বাস করবে না| 38 “বাবিলের লোকরা গর্জনরত সিংহের মত| তারা সিংহশাবকের মত গর্জন করছে| 39 ঐসব লোকরা শক্তিশালী সিংহের মতো আচরণ করছে| আমি তাদের জন্য একটি ভোজসভা দেব| আমি তাদের দ্রাক্ষারস পান করাব| তারা সুসময়ের মতো হাসবে এবং তারপর তারা চির দিনের জন্য ঘুমিযে পড়বে| তারা আর কখনও উঠে দাঁড়াবে না|” প্রভু এই কথাগুলি বলেন| 40 “বাবিলের লোকরা বধ হওয়ার জন্য অপেক্ষারত মেষ এবং ছাগলের মত হবে| আমি তাদের কসাই-খানায নিয়ে যাব| 41 “শেশক” পরাজিত হবে| পৃথিবীর সব চেয়ে গর্বিত শহর বন্দী হবে| অন্যান্য জাতির লোকরা বাবিলের দিকে তাকাবে| এবং তারা এমন সব জিনিস দেখবে য়ে ভয় পাবে| 42 সমুদ্র বাবিলের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে| এর গর্জনরত ঢেউ তাকে আচ্ছাদিত করবে| 43 বাবিলের শহরগুলি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে এবং শূন্য হয়ে যাবে| বাবিল শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হবে| এটা জনমানবহীন একটা দেশে পরিণত হবে| লোকরা বাবিলের ওপর দিয়ে চলাচলও করতে পারবে না| 44 আমি বাবিলে বেল মূর্ত্তিকে শাস্তি দেব| ঐ মূর্ত্তি যাদের গিলে খেযেছে বমি করিযে তাদের বের করে আনব| বাবিলের চারি দিকের প্রাচীর ভেঙ্গে পড়বে| এবং অন্য জাতির লোকরা বাবিলে আসা বন্ধ করবে| 45 আমার লোকরা, তোমরা বাবিল ছেড়ে বেরিয়ে এস| নিজেদের জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পালিয়ে এস| প্রভুর ভয়ঙ্কর রোধ থেকে দূরে সরে এস| 46 “আমার লোকরা, আশা হারিযো না| গুজব ছড়াবে কিন্তু তোমরা ভীত হবে না| একটা গুজব আসবে এবছরে| অন্য গুজব আসবে পরের বছরে| দেশে ভয়ঙ্কর যুদ্ধের গুজব আসবে| শাসকরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এই গুজবও আসবে| 47 বাবিলের মূর্ত্তিগুলোকে শাস্তি দেওয়ার সময় নিশ্চিত ভাবেই আসবে| আমি তাদের নিশ্চয়ই শাস্তি দেব| এবং গোটা বাবিল দেশ তাতে লজ্জিত হবে| রাস্তার ওপরে অনেক মৃতদেহ পড়ে থাকবে| 48 তখন স্বর্গ ও মর্ত এবং তার মধ্যে যত কিছু আছে বাবিলের ব্যাপারে আনন্দে উল্লাস করবে| তারা উল্লাস করবে কারণ উত্তর থেকে একটি সেনাবাহিনী এসে বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে|” প্রভু এই কথাগুলি বলেন| 49 “বাবিল ইস্রায়েলীয়দের হত্যা করেছিল| বাবিল পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গার লোকদের হত্যা করেছিল| তাই বাবিলের পতন অবশ্যই হবে| 50 তোমরা লোকরা, যারা তরবারির হাত থেকে পালিয়ে এসেছে, তোমরা যদি বাঁচতে চাও তবে তোমাদের বাবিল পরিত্যাগ করতে হবে| তাড়াতাড়ি কর| অপেক্ষা করো না| তোমরা দূরবর্তী দেশে আছ| কিন্তু যেখানেই থাক না কেন প্রভুকে স্মরণ কর| এবং সেই সঙ্গে জেরুশালেমকেও স্মরণ কর| 51 “আমরা যিহূদার লোকরা লজ্জিত| আমাদের অপমান করা হয়েছে| কেন? কারণ বিদেশীরা এসে পবিত্রস্থান প্রভুর উপাসনাগৃহে ঢুকে পড়েছে|” 52 প্রভু বলেন, “বাবিলের মূর্ত্তিদের আমার শাস্তি দেওয়ার সময় আসছে| সে সময় ঐ দেশের সর্বত্র আহত লোকরা যন্ত্রণায় কাঁদবে| 53 বাবিল হয়তো আকাশ না ছোঁযা পর্য়ন্ত উঠতে পারে| বাবিল তার দুর্গগুলিকে হয়তো শক্তিশালী করতে পারে| কিন্তু আমি ঐ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য লোক পাঠাব| এবং ঐ সব লোকরা তাকে ধ্বংস করবে|” প্রভু এই কথাগুলি বলেন| 54 “আমরা বাবিলের লোকদের কান্না শুনতে পাব| লোকরা বাবিলের সমস্ত জিনিসপত্র ধ্বংস করছে| সেই ধ্বংসের শব্দ আমরা শুনতে পাব| 55 প্রভু বাবিলকে খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস করবেন| তিনি শহরের চিত্কার শব্দ থামিয়ে দেবেন| শএুরা সমুদ্র গর্জনের মতো চিত্কার করতে করতে আসবে| লোকরা চারদিক থেকে সে শব্দ শুনতে পাবে| 56 সেনারা আসবে এবং বাবিলকে ধ্বংস করবে| বাবিলের সৈন্যদের বন্দী করা হবে| তাদের ধনুক ভেঙ্গে দেওয়া হবে| কেন? কারণ প্রভু এখানকার লোকদের তাদের অপকর্মের শাস্তি দিচ্ছেন| প্রভু তাদের য়োগ্য শাস্তি পুরোপুরি দেবেন| 57 আমি বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী মানুষ এবং গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের মাতাল করব| আমি রাজ্যপাল, আধিকারিক এবং সেনাদেরও মাতাল করব| তারপর তারা চির কালের জন্য ঘুমিযে পড়বে| তারা আর কখনও জেগে উঠবে না|”রাজা এই কথাগুলি বললেন| তাঁর নাম প্রভু সর্বশক্তিমান| 58 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “বাবিলের মোটা শক্তিশালী দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলা হবে| তার উঁচু ফটকগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হবে| বাবিলের লোকরা কঠোর পরিশ্রম করবে| কিন্তু এটা তাদের কোনও কাজেই আসবে না| শহরকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে গিয়ে তারা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়বে| কিন্তু তারা শুধুমাত্র জ্বলন্ত শিখার জ্বালানী হবে|” 59 এটা হল সেই বার্তা য়েটা যিরমিয় উচ্চপদস্থ কর্মচারী সরায়কে দিয়েছিলো| সরায় হল নেরিযের পুত্র| নেরিয হল মহসেযের পুত্র| সরায় যিহূদার রাজা সিদিকিযের সঙ্গে বাবিলে গিয়েছিল| এটা সিদিকিযের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছরে ঘটেছিল| সে সময়ে যিরমিয় সরায়কে এই বার্তা দিয়েছিল| 60 বাবিলে য়ে সব ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে তা যিরমিয় একটা বিশেষ ধরণের খাতায় লিখেছিল| বাবিল সম্পর্কে যাবতীয় ঘটনার কথা সে লিখেছিল| 61 যিরমিয় সরায়কে বলল, “সরায় বাবিলে যাও| বার্তাগুলি সেখানে পাঠ করবে| সবাই য়েন নিশ্চিত ভাবে এই বার্তাগুলি শুনতে পায়| 62 তারপর বল: ‘প্রভু আপনি বলেছিলেন য়ে আপনি বাবিলকে ধ্বংস করবেন| আপনি বাবিলকে এমন ভাবে ধ্বংস করবেন য়ে সেখানে কোন জনপ্রাণী বেঁচে থাকবে না| এই দেশটি চির কালের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে|’ 63 এই খাতাটি পাঠ করার শেষে, এর সঙ্গে একটি পাথর বাঁধবে| তারপর এই খাতাটি ফরাত্‌ নদীর জলে ছুঁড়ে ফেলে দেবে| 64 তারপর বলবে, ‘একই ভাবে, বাবিলও ডুবে যাবে| বাবিল আর কখনও উঠে দাঁড়াবে না| বাবিল ডুবে যাবে কারণ ভয়ঙ্কর সব ঘটনা আমি এখানে ঘটাব|”‘য়িরমিযের কথা এখানে শেষ হল|

যেরেমিয়া 52

1 সিদিকিয় 21বছর বযসে যিহূদার রাজা হন| তিনি 11 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন| সিদিকিযের মা হলেন হমুটল| তিনি ছিলেন য়িরমিযের কন্যা| লিব্না নামক শহরে হমুটল থাকতেন| 2 সিদিকিয় পাপ কাজ করে বেড়াতেন| অনেকটা রাজা যিহোয়াকীমের মতো| সিদিকিযের এইসব অসত্‌ কর্মসমূহ প্রভু পছন্দ করেন নি| 3 প্রভু জেরুশালেম ও যিহূদার প্রতি এত রেগে গেলেন য়ে অবশেষে তিনি তাদের তাঁর সামনে থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন|সিদিকিয় বাবিলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন| 4 সুতরাং সিদিকিযের শাসনের নবমতম বছরের দশম মাসের দশম দিনে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সর জেরুশালেম আক্রমণ করেন| বাবিলের রাজার সঙ্গে তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী ছিল| তারা জেরুশালেমের বাইরে অস্থায়ী শিবির গড়ে| তারপর তারা উঁচু প্রাচীরের মত বাঁধ তৈরী করল যাতে এই প্রাচীরগুলির ওপর উঠে অনায়াসে জেরুশালেমে প্রবেশ করা যায়| 5 জেরুশালেম শহর বাবিলের সেনাদের দ্বারা সিদিকিযের রাজত্ব কালের প্রায একাদশ বছর পর্য়ন্ত অবরুদ্ধ ছিল| 6 ঐ বছরের চতুর্থ মাসের নবম দিনে শহরের সমস্ত খাদ্য নিঃশেষিত হয়ে গেল| লোকদের জন্য আর কোন খাদ্যই রইল না| 7 ক্ষুধায পাগল প্রায অবরুদ্ধ শহরবাসীদের ঠিক ঐ সময়ই বাবিলের সৈন্যরা আক্রমণ করল| য়িরমিযর সৈন্যরা রাতের অন্ধকারে দুই প্রাচীরের মধ্যবর্তী প্রবেশদ্বার দিয়ে পালাতে লাগল| বাবিলের সেনারা চারিদিক ঘিরে থাকলেও রাজার বাগানের কাছের গেট দিয়ে জেরুশালেমের সেনারা শহর ছাড়তে থাকে| এই পলায়নরত সেনাদের গন্তব্যস্থল ছিল দূরবর্তী মরুভূমি| 8 বাবিলের সৈন্যদল সিদিকিয়কে তাড়া করল| অবশেষে য়িরীহোর সমতলভূমিতে তারা তাকে ধরতে সফল হয়| সিদিকিযের সব সৈন্যরা পালিয়ে যায়| 9 বন্দী সিদিকিয়কে রিব্লা শহরে বাবিলের রাজার কাছে হাজির করানো হয়| হমাত্‌ দেশেই রিব্লা শহর| এখানে বাবিলের রাজা সিদিকিযের শাস্তি নির্ধারণ করে| 10 বাবিলের রাজা প্রথমে সিদিকিযের পুত্রকে হত্যা করে| নিজ সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে সিদিকিয়কে| বাবিলের রাজা সিদিকিয়কে তাঁর পুত্রদের হত্যা সাক্ষী হতে বাধ্য করেছিলেন| তিনি যিহূদার রাজকর্মচারীদেরও রিব্লাতে হত্যা করেছিলেন| 11 এর পর বাবিলের রাজার নির্দেশে সিদিকিযের দুই চোখ উপড়ে নেওয়া হয়| পিতলের চেনে বেঁধে সিদিকিয়কে বাবিলে এনে কারারুদ্ধ করা হয়| মৃত্যুর দিন পর্য়ন্ত সিদিকিয় এই কারাগারেই ছিলেন| 12 বাবিলের রাজার বিশেষ রক্ষী ছিল নবূষরদন| রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের শাসনের উনবিংশতি বছরেরপঞ্চম মাসের দশম দিনে নবূষরদন জেরুশালেমে আসেন| 13 প্রভুর উপাসনালয সে পুড়িয়ে দেয়| জেরুশালেমে সমস্ত বাড়িসমূহ এবং রাজপ্রাসাদ নবূষরদনের নির্দেশে পুড়িয়ে ফেলা হয়| 14 বাবিলীয সৈন্যদল জেরুশালেমের চারিদিকের প্রাচীরগুলো ভেঙে দিয়েছিল| এই সেনাদের নেতৃত্বে ছিলেন নবূষরদন| 15 সমস্ত লোকরা যারা জেরুশালেম শহরে বন্দী হয়েছিল, তাদের বাবিল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| তাছাড়া আগেই যারা আত্মসমর্পণ করেছিল তাদেরও বন্দী করে বাবিলে নিয়ে আসে নবূষরদন| দক্ষ কারিগরদেরও সে বাবিলে আনে| 16 কিন্তু নবূষরদন কিছু খুব গরীব লোকেদের ফেলে রেখে যায়| সে তাদের ক্ষেতগুলিতে এবং দ্রাক্ষা ক্ষেগুলিতে কাজ করবার জন্য রেখে যায়| 17 বাবিলের সেনারা উপাসনালযের পিতলের থাম ভেঙে দেয়| তারা প্রভুর উপাসনাগৃহে খুঁটিগুলি ও পিতলের ট্য়াঙ্কও ভেঙে দেয়| সমস্ত পিতলই তারা বাবিলে বয়ে নিয়ে গিয়েছিল| 18 বাবিলের সেনারা উপাসনালযের ব্যবহৃত পিতলের সমস্ত মূল্যবান সামগ্রী লুঠ করে নেয| ধাতুর তৈরি ছোট বড় মাপের পাত্র, বেলচা, মোমবাতিদান তারা নিয়ে যায়| 19 রাজার বিশেষ রক্ষীদের নেতা এই সব জিনিসগুলি লুট করে নিয়ে গিয়েছিল: লুণ্ঠিত সামগ্রীর মধ্যে বেসিন, বাতিদান, আগুনের পাত্র, বড় আকারের পাত্র, পেয নৈবেদ্যর সাজ সরঞ্জাম প্রভৃতি উল্লেখয়োগ্য| সে সোনা ও রূপোর তৈরী সমস্ত জিনিসপত্র লুঠ করেছিল| 20 সে আরো নিয়েছিল: স্তম্ভ দুটি, নীচে 12টি ষাঁড়সহ সমুদ্রটি এবং অস্থাবর খুঁটিগুলি| এগুলো সব রাজা শলোমন তৈরী করেছিলেন| এটাও সে লুঠ করে| পিতলের তৈরী এই সব জিনিসগুলি এত ভারী ছিল য়ে তা ওজন করা য়েত না| 21 স্তম্ভগুলির উচ্চতা ছিল 27ফুট | প্রতিটি স্তম্ভ ছিল 18 ফুট চওড়া ও ফাঁপা| প্রতিটি স্তম্ভের দেওয়াল 4 ইঞ্চি পুরু ছিল| 22 স্তম্ভের ওপরের পিতলের চূড়া ছিল 7 1,2 ফুট উঁচু| ওটা একটি জালের মত নকশা ও পিতলের তৈরী বেদানা দিয়ে সাজানো ছিল| 23 স্তম্ভের দেওয়ালে 96 টি এবং সব মিলিযে মোট 100 টি খোদাই করা বেদানা দেখা য়েত| 24 নবূষরদন ও তারা বিশেষ রক্ষী বাহিনী সরায় এবং সফনিয়কে বন্দী করে| সরায় ছিলেন প্রধান যাজক| সফনিয়র পদ ছিল পরবর্তী উচ্চতম যাজক| উপাসনালযের তিন দ্বাররক্ষীও বন্দী হয়| 25 বিশেষ রক্ষীক্টবাহিনীর প্রধান যুদ্ধরত লোকদের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে বন্দী করল| রাজার সাত উপদেষ্টা বন্দী হয়| 60 জন সাধারণ লোকসহ এক জন লেখক যিনি লোকদের সেনাবিভাগে দেবার ভারপ্রাপ্ত ছিলেন, সবাই বন্দী হয়েছিল| সমস্ত বন্দীদের জেরুশালেম থেকে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| 26 নবূষরদন, সৈন্যাধক্ষ ঐ সমস্ত লোকেদের রিব্লা, যেখানে বাবিলের রাজা ছিলেন সেখানে নিয়ে গেল| 27 বন্দীদের নিয়ে নবূষরদন রিব্লা শহরে আসে| রিব্লা হমাত্‌ দেশে অবস্থিত| এই শহরেই বাবিলের রাজা অবস্থান করছিলেন| রাজার নির্দেশে সমস্ত বন্দীদের হত্যা করা হয়| একই ভাবে যিহূদা থেকে লোকেদের বন্দী করে এনে হত্যা করা হল|তাই, যিহূদার লোকদের তাদের দেশ থেকে নির্বাসন দেওয়া হল| 28 এই ভাবে নবূখদ্রিত্‌সর অনেক লোককে বন্দী করেন:নবূখদ্রিত্‌সরের রাজত্ব কালের সপ্তম বছরে যিহূদা থেকে 3,023 জনকে বন্দী করে আনা হয়েছিল| 29 তাঁর রাজত্ব কালের অষ্টাদশ বছরে জেরুশালেম থেকে নেওয়া বন্দীদের সংখ্যা ছিল 832 জন| 30 রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের ত্রযোবিংশতিতম বছরের রাজত্বের সময় নবূষরদন যিহূদা থেকে 745 জনকে বন্দী করে আনেন|মোট 4,600 মানুষ বন্দী হয়েছিল রাজার এই নির্দেশে| এদের বন্দী করেছিল বিশেষ রক্ষীবাহিনীর নেতা নবূষরদন| 31 যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন 37 বছর বাবিলের কারাগারে বন্দী ছিল| যিহোয়াখীনের কারাবাসের সাঁইত্রিশতম বর্ষে বাবিলের রাজা ইবিল মরোদক করুণা করে তাকে মুক্তি দেন| তিনি দ্বাদশ মাসের 25তম দিনে যিহোয়াখীনকে মুক্তি দেন| ইবিল ঐ বছরেই বাবিলের রাজা হয়েছিল| 32 রাজা ইবিল-মরোদক যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের প্রতি দযাপরবশ হয়ে ভাল ব্যবহার করেন| অন্য রাজারা যারা তাঁর সঙ্গে বাবিলে ছিল, তাদের তুলনায় যিহোয়াখীনকে উচ্চতর পদে সম্মানিত করেছিলেন| 33 যিহোয়াখীন তার কারা-বস্ত্র খুলে ফেলেছিল এবং তাকে নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছিল| শুধু তাই নয় সে জীবনের বাকী সময় রাজার টেবিলে বসে খাওয়া দাওযা করেছিল| 34 বাবিলের রাজা প্রতিদিন যিহোয়াখীনকে অনুদান দিত| এই অনুদান যিহোয়াখীনের মৃত্যুর আগে পর্য়ন্ত চালু ছিল|





AMAZING GRACE BIBLE INSTITUTE