বংশাবলি ২1 প্রভু তাঁর ঈশ্বর সহায় থাকায় শলোমন রাজা হিসেবে খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন, প্রভু তাঁকে অতুল সম্পদ ও ক্ষমতার অধীশ্বর করেছিলেন| 2 শলোমন ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর সেনাপতি থেকে শুরু করে বিচারক এবং পরিবারসমূহের কর্ত্তাগণ, সকলের সঙ্গে কথা বললেন| 3 শলোমন সহ তাঁরা সবাই গিবিয়োনের উচ্চ স্থানে জড়ো হলেন যেখানে ঈশ্বরের সমাগম তাঁবু ছিল|প্রভুর অনুগত দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকেরা যখন মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, সে সমযে তাঁরা এই তাঁবুর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন| 4 এখন দায়ূদ কিরিযত্-য়িযারীম থেকে ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুকটি জেরুশালেমে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এটা রাখার জন্য সেখানে একটা বিশেষ তাঁবু বানিয়েছিলেন| 5 ঊরির পুত্র বত্সলেল একটি পিতলের বেদী বানিয়েছিলেন| সেটা গিবিয়োনের এই পবিত্র তাঁবুর সামনে রাখা হয়েছিল| এ কারণে শলোমন ও লোকরা সেখানে প্রভুর পরামর্শ ও উপদেশ নিতে গিয়েছিলেন| 6 শলোমন সমাগম তাঁবুর সামনে পিতলের বেদীর ওপর গেলেন, যেটি প্রভুর সামনে ছিল এবং সেই বেদীর ওপরে 1,000 হোমবলি উত্সর্গ করলেন| 7 সেই রাতে ঈশ্বর শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “শলোমন তুমি আমার কাছে যা চাও প্রার্থনা করো|” 8 শলোমন ঈশ্বরকে বললেন, “হে প্রভু, আমার পিতা দাযূদের প্রতি আপনি আপনার অসীম করুণা বর্ষন করেছিলেন| তাঁর জায়গায় আপনি বয়ং আমাকে নতুন রাজা হিসেবে বেছে নিয়েছেন| 9 প্রভু ঈশ্বর, আপনি তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমাকে সুবিশাল সাম্রাজ্যের রাজা করবেন| এখন আপনি সেই প্রতিশ্রুতি রাখুন! আকাশের সহস্র তারার মত পৃথিবীর অগনিত লোক এখন আমার আজ্ঞাধীন| 10 আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে এই সমস্ত লোকদের সঠিক পথে পরিচালনা করবার মতো বুদ্ধি ও জ্ঞান দিন| আপনার কৃপা ছাড়া কারো পক্ষেই এই সমস্ত লোকদের শাসন করা সম্ভব নয়|” 11 ঈশ্বর শলোমনকে বললেন, “তুমি সঠিক উত্তরটি দিয়েছ; যাদের আমি মনোনীত করেছি, আমার সেই লোকদের নেতৃত্ব দেবার ও শাসন করবার জন্য তুমি জ্ঞান ও বুদ্ধি চেয়েছ, বিষয সম্পত্তি, ধন ও সম্মান, তোমার শএুদের মৃত্যু এমনকি দীর্ঘ জীবনও চাওনি| 12 তাই আমি তোমাকে জ্ঞান ও বুদ্ধি তো দেবই উপরন্তু তোমায় ধনসম্পদ, খ্যাতি ও প্রতিপত্তি, নাময়শ এসবই দেবো| তুমি যা পাবে এখনো পর্য়ন্ত কোনো রাজাই তা পায়নি এবং ভবিষ্যতেও পাবে না|” 13 শলোমন তারপর গিবিয়োনের উপাসনাস্থানে গেলেন এবং সমাগম তাঁবু থেকে আবার ইস্রাযেল শাসন করার জন্য জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 14 এরপর শলোমন তাঁর সেনাবাহিনীর জন্য ঘোড়া ও রথ সংগ্রহ করতে শুরু করলেন| শলোমন 1,400 রথ এবং 12,000 অশ্বারোহী সারথী সংগ্রহের পর এইসব রথ রাখার জন্য যে বিশেষ শহরগুলি বানিয়েছিলেন সেখানে পাঠিয়ে দিলেন| কিছু রথ ও অশ্বারোহী সেনা জেরুশালেমে তাঁর প্রাসাদেও রেখে দিলেন| 15 শলোমন জেরুশালেমে সোনা এবং রূপাকে পাথরের মতো সাধারণ করে তুলেছিলেন| তিনি সাধারণ সুকমোর গাছপালার মতোই তাঁর রাজত্বের পশ্চিমের পাহাড়গুলিতে বিরল এরস গাছ লাগিয়েছিলেন| 16 শলোমনের ঘোড়াগুলি মিশর এবং কুযে থেকে আনা হয়েছিল| তাঁর বণিকরা সেগুলি কুযে থেকে কিনেছিল| 17 এই সমস্ত বণিকরা 600 শেকল রূপোর বিনিময়ে একটি রথ ও 150 শেকল রূপোর বিনিময়ে একটা ঘোড়া কিনত| সমস্ত হিত্তীয় ও অরামীয় রাজারা এইসব বণিকদের মারফত তাঁদের ঘোড়া ও রথগুলি কিনেছিলেন|
1 প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য শলোমন একটি মন্দির ও নিজের জন্য একটি রাজপ্রাসাদ বানানোর পরিকল্পনা করেন| 2 এই কাজের জন্য তিনি 70,000 শ্রমিক, 80,000 পাথর কাটা মিস্ত্রী ও এদের কাজের তদারকির জন্য 3,600 জন তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করেছিলেন| 3 এরপর শলোমন সোরের রাজা হূরমের কাছে অনুরোধ করে পাঠালেন, “আমার পিতা দায়ূদকে যেভাবে সাহায্য করেছিলেন, আপনাকে আমায় সেভাবেই সাহায্য করতে হবে| আপনি এরস কাঠ পাঠিয়েছিলেন, যাতে আমার পিতা তাঁর নিজের জন্য একটি বাসয়োগ্য বাড়ী তৈরী করতে পারেন| 4 এখন আমি আমার প্রভু, ঈশ্বরের নামে একটা মন্দির বানিয়ে তাঁকে উত্সর্গ করতে চলেছি যাতে সেই মন্দিরে প্রভুর সামনে আমরা সুমিষ্টগন্ধী ধুপধূনো জ্বালাতে পারি এবং নিয়মিতভাবে সেই বিশেষ টেবিলে পবিত্র রুটিনৈবেদ্য দিতে পারি| প্রতি সকাল-সন্ধ্যা, বিশ্রামের দিন ও অমাবস্যায এবং প্রভু আমাদের ঈশ্বরের নির্দেশিত উত্সবের দিন হোমবলি উত্সর্গ করা হবে| ঠিক হয়েছে, ইস্রায়েলের লোকরা চিরকাল এই এযিা-কর্ম চালিযে যাবে| 5 “যেহেতু আমাদের ঈশ্বর অন্যান্য দেবতা থেকে মহান তাই আমি তাঁর উদ্দেশ্যে একটা বিশাল মন্দির বানাতে চাই| 6 কারো পক্ষেই কোনো ঘর বাড়ী বানিয়ে সেখানে আমাদের ঈশ্বরকে রাখা সম্ভব নয়| এমনকি স্বর্গ এবং স্বর্গের স্বর্গও ঈশ্বরকে ধরে রাখতে পারে না| সুতরাং, আমি ক্ষুদ্র মানুষ, ঈশ্বরের মন্দির আর কি করে বানাবো? আমি শুধুমাত্র তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ধুপধূনো দেবার মতো একটা জায়গা বানাতে পারি| 7 “আমি চাই আপনি আমাকে সোনা, রূপো, পিতল ও লোহার কাজ জানা একজন দক্ষ কারিগর পাঠান যে বেগুনী, লাল এবং নীল রঙের সূক্ষ্ম কাপড় দিয়েও কাজ করতে জানে| সে এখানে যিহূদা এবং জেরুশালেমে আমার পিতার বেছে রাখা কারিগরদের সঙ্গে কাজ করবে| 8 এছাড়াও, আপনাকে আমায় লিবানোন থেকে শক্ত ও দামী দামী কিছু গাছের গুঁড়ি পাঠাতে হবে| আমি জানি আপনার কর্মচারীরা লিবানোন থেকে গাছ কাটার ব্যাপারে অভিজ্ঞ| আমার কর্মচারীরাও তাদের সঙ্গে গিয়ে হাত লাগাবে| 9 আমি মন্দিরটা খুব বড় আর সুন্দর করে বানাতে চাই এবং সে কারণে আমার বহু পরিমাণ কাঠ লাগবে| 10 তাদের কাজের মজুরি হিসেবে আমি আপনার কর্মচারীদের 1,25,000 বুশেল গমের আটা, 1,25,000 বুশেল যব, 1,15,000 গ্যালন দ্রাক্ষারস এবং 1,15,000 গ্যালন তেল দেবো|” 11 হূরম শলোমনকে বলে পাঠালেন, “শলোমন প্রভু তাঁর লোকদের ভালোবাসেন বলেই তিনি তোমাকে তাদের রাজা করেছেন| 12 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তিত হোক যিনি স্বর্গ ও পৃথিবী বানিয়েছেন এবং রাজা দায়ূদকে একটি সুসন্তান দিয়েছেন| শলোমন তোমার প্রজ্ঞা ও বোধ আছে এবং তুমি প্রভুর জন্য একটি মন্দির আর তোমার নিজের জন্য একটি প্রাসাদ তৈরী করছ| 13 আমি তোমার কাছে হূরম আবি নামে একজন দক্ষ কারিগর পাঠাবো| 14 হূরমের মাতা ছিলেন দান গোষ্ঠীর থেকে আর পিতা ছিলেন সোর থেকে| হূরম আবি সোনা, রূপো, পিতল, লোহা এবং কাঠের একজন দক্ষ কারিগর| এছাড়াও দামী বেগুনী, লাল ও নীল রঙের কাপড়েরও সে একজন দক্ষ কারিগর| তোমার নির্দেশ মতো সবকিছুই ও বানাতে পারবে| তোমার পিতা রাজা দাযূদের বাছাই করা কারিগরদের সঙ্গে গিয়ে কাজ করবে| 15 “এখন, হে রাজন, তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি মত আমার কর্মচারীদের গম, যব, তেল ও দ্রাক্ষারস দিও| 16 লিবানোন থেকে তোমার যতটা পরিমাণ কাঠ লাগবে সেগুলি আমরা কাটব এবং সেগুলি ভেলায করে সমুদ্র পথে যাফোতে পাঠিয়ে দেবো| সেখান থেকেই তুমি সেগুলো জেরুশালেমে নিয়ে যেতে পারো|” 17 এরপর, শলোমন তাঁর পিতা দায়ূদ যেভাবে লোক গণনা করেছিলেন সেভাবে ইস্রায়েলে কতজন বিদেশী বাস করে তা জানবার জন্য গণনা করলেন| বিদেশী জনসংখ্যা ছিল 1,53,600 জন| 18 এর মধ্যে শলোমন ভার বইবার জন্য 70,000 লোক আর পর্বতের ওপর পাথর কাটার জন্য 80,000 লোককে বেছে নিয়েছিলেন| আর এইসব কাজকর্ম তদারকি করার জন্য 3,600 জনকে বাছলেন|
1 জেরুশালেমের মোরিযা পর্বতের ওপর শলোমন প্রভুর মন্দির বানানোর কাজ শুরু করলেন| এইটি সেই জায়গা যেখানে প্রভু, শলোমনের পিতা, রাজা দাযূদের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং সেটি ছিল যিবূষীয় অর্ণানের শস্য মাড়াইযের খামার| 2 শলোমন তাঁর রাজত্বের চতুর্থ বছরের দ্বিতীয় মাসে মন্দির বানানোর কাজ শুরু করেন| 3 ঈশ্বরের মন্দিরের ভিতের দৈর্য়্ঘ ছিল 60 হাত আর প্রস্থ 20 হাত| 4 মন্দিরের সামনের গাড়ি বারান্দাটি উচ্চতায় ও দৈর্য়্ঘে ছিল 20 হাত| ভেতরের দিকের চত্বরটি শলোমন আগাগোড়া সোনায মুড়ে দিয়েছিলেন| 5 তিনি মন্দিরের বড় ঘরের দেওয়ালে দেবদারু কাঠের আস্তরণ দিয়ে তার ওপরে সোনার আস্তরণ দিয়েছিলেন| সেই সব দেওয়ালে তালগাছ আর শিকলের ছবি খোদাই করা ছিল| 6 মন্দিরটিকে আরো সুন্দর দেখাবার জন্য শলোমন বহু মূল্যবান পাথর দিয়ে সাজিযেছিলেন এবং তিনি পর্বযিমের সোনা ব্যবহার করেছিলেন| 7 মন্দিরের কড়িকাঠগুলি, দরজার কাঠামোগুলি, দরজাগুলি এবং মন্দিরের দেওয়ালগুলি তিনি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন এবং দেওয়ালের ওপর তিনি করূব দূতদের প্রতিকৃতি খোদাই করেছিলেন| 8 শলোমন মন্দিরের পবিত্রতম স্থানটিও নির্মাণ করেছিলেন| পবিত্রতম স্থানটি দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে ছিল 20 হাত| অর্থাত্ পবিত্রতম স্থানের মাপ আর মন্দিরের প্রস্থের মাপ ছিল এক| পবিত্রতম স্থানের দেওয়ালও 23 টন সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়| 9 এক একটা সোনার পেরেকের ওজন ছিল 1 1,4 পাউণ্ড| মন্দিরের ওপর ঘরগুলোও শলোমন সোনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন| 10 পবিত্রতম স্থানে রাখবার জন্য তিনি দুটি করূব দূতের মূর্ত্তি খোদাই করেছিলেন এবং সেগুলো সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন| 11 এই করূব দূতদের এক একটা ডানার দৈর্য়্ঘ ছিল প্রায 5 হাত অর্থাত্ ডানার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্য়ন্ত মোট দৈর্য়্ঘ ছিল প্রায 20 হাত| 12 করূব দূতের মূর্ত্তি দুটো এমনভাবে বসানো হয়েছিল যাতে মাঝামাঝি জায়গায় এদের একজনের ডানার সঙ্গে অন্যজনের ডানা ছুঁযে থাকে| 13 তাদের ডানাগুলি ছড়িয়ে দিয়ে তারা 20 হাত জায়গা ঢেকে দিয়েছিল এবং তাদের পাযের ওপর এমনভাবে দাঁড়িয়েছিল যে মনে হচ্ছিল যেন তারা ঘরের ভেতরের দিকে চেয়ে আছে| 14 নীল, বেগুনী এবং লাল রঙের কাপড় দিয়ে শলোমন পর্দাসমূহ বানিয়েছিলেন এবং সেগুলোর ওপর সূচীশিল্প দিয়ে করূব দূতও বানিয়েছিলেন| 15 মন্দিরের সামনে প্রায 35 হাত দীর্ঘ দুটি স্তম্ভ বানানো হয়েছিল| এই দুটি স্তম্ভের ওপরের অংশ দুটো ছিল 5 হাত দীর্ঘ| 16 তিনি শেকলের মত মালা তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলো স্তম্ভ দুটির মাথায় রেখেছিলেন| এর পরে তিনি এক শত ডালিম তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলো মালায স্থাপন করেছিলেন| তারপর তিনি 100 টি ডালিম তৈরী করে সেই মালায বসিযে দিয়েছিলেন| মন্দিরের সামনে ডানদিকে যে স্তম্ভটা বসানো হয়েছিল শলোমন তার নাম দিয়েছিলেন “যাখীন” এবং বাঁদিকের স্তম্ভটার নাম দেওয়া হয় “বোযস|” 17
1 শলোমন পিতল দিয়ে মন্দিরের বর্গাকৃতি বেদীটি বানিয়েছিলেন| দৈর্য়্ঘ ও প্রস্থে এটি ছিল 20 হাত এবং উচ্চতায় 10 হাত| 2 গলানো পিতল দিয়ে মন্দিরের সুবিশাল গোলাকার জলের চৌবাচচাটি ঢালাই করা হয়েছিল| এই জলাধারের ব্যাস ছিল 10 হাত, পরিধি 30 হাত এবং উচ্চতা প্রায 5 হাত| 3 পিতলের তৈরী জলাধারটির নীচে সমস্ত বৃত্তটিকে ঘিরে দুটো সারিতে 10 হাত ষাঁড়ের প্রতিকৃতি রাখা ছিল| ষাঁড়গুলি এবং চৌবাচচাটি ছিল একটি খণ্ডে ঢালাই করা| 4 চৌবাচচাটি বারোটি ষাঁড়ের মূর্ত্তির ওপরে বসানো ছিল, যার মধ্যে তিনটে ষাঁড় ছিল উত্তরমুখী, তিনটে পশ্চিমমুখী, তিনটে দক্ষিণমুখী এবং তিনটে পূর্বমুখী| চৌবাচচাটি সেগুলোর মাথায় বসানো ছিল যাদের শরীরের পিছন দিকগুলো ছিল কেন্দরের দিক| 5 এই জলাধারের পরিধি দেওয়াল ছিল 3 ইঞ্চি পুরু এবং জলাধারের কানাটা ফুলকাটা পেয়ালার মতো করা ছিল| এটি প্রায 17,500 গ্যালন জল ধারণ করতে পারত| 6 পিতলের জলাধারের বাঁ পাশে ও ডান পাশে পাঁচটি করে মোট দশটি গামলা তৈরী করেছিলেন| সেখানে হোমবলি নিবেদনের জিনিসপত্র ধোযা হতো| আর বড় জলাধারের জল যাজকরা উত্সর্গের আগে ধোযাধুযির কাজে ব্যবহার করতেন| 7 দাযূদের পরিকল্পনা অনুযাযী, শলোমন 10 টা বাতিদান বানালেন এবং তার মধ্যে পাঁচটিকে মন্দিরের উত্তরদিকে এবং পাঁচটিকে দক্ষিণ দিকে সাজিযে রেখেছিলেন| 8 একই ভাবে তিনি 10 টি টেবিলও বানিয়ে মন্দিরের মধ্যে রাখেন| মন্দিরের জন্য 100 টি বেসিন বা হাত ধোওযার জায়গা সোনা দিয়ে বানানো হয়েছিল| 9 এছাড়াও, শলোমন যাজকদের জন্য উঠোন, একটি বিরাট প্রাঙ্গণ এবং উঠোনের দরজাসমূহও বানিয়েছিলেন| এই দরজাগুলো পিতল মুড়ে দেওয়া হয়েছিল| 10 এসব শেষ হলে শলোমন বড় জলাধারটিকে মন্দিরের ডানদিকে দক্ষিণ পূর্বদিকে বসিযে দিয়েছিলেন| 11 হূরম পাত্র, বেলচা এবং গামলাসমূহ বানিয়েছিলেন| এইভাবে শলোমনের জন্য যে সমস্ত কাজ হাতে নিয়েছিলেন সে সমস্ত কাজ তিনি শেষ করেন| বাটির আকারের গম্বুজসহ স্তম্ভ দুটি, স্তম্ভের ওপর বাটি আকারের গম্বুজগুলিকে সাজাবার জন্য দুটি জাফরি; 400টি ছোট ছোট ডালিম; প্রত্যেকটি জাফরিতে এই ছোট ছোট ডালিমগুলি দুটি সারিতে সাজানো ছিল; ষাঁড়গুলির পিঠে পিতলের বড় চৌবাচচাটি; সমস্ত পাত্রগুলি, বেলচাসমূহ, কাঁটাগুলি এবং এগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য যন্ত্রপাতি| রাজা শলোমনের জন্য হূরম আবি এই সবই তৈরী করেছিলেন| প্রভুর মন্দিরে ব্যবহার য়োগ্য পালিশ করা পিতল দিয়ে তৈরী করেছিলেন| 12 13 14 15 16 17 রাজা প্রথমে এই জিনিষগুলিকে মাটির ছাঁচে ফেলেছিলেন| মাটির ছাঁচ তৈরী হত যর্দন উপত্যকায সুক্কোত্ ও সরেদার মধ্যবর্তী অঞ্চলে| 18 শলোমনের তৈরী পিতলের জিনিষগুলো এত বেশি ছিল যে কতখানি পিতল ব্যবহার করা হয়েছিল কেউ তার পরিমাপ করবার চেষ্টা করেনি| তিনি নিথলিখিত জিনিষগুলিও তৈরী করেছিলেন: ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য একটা সোনার বেদী, ঈশ্বরের অস্তিত্বের পবিত্র রুটি রাখার জন্য টেবিল, 10টি খাঁটি সোনার বাতিদান এবং সেগুলোর বাতি যেগুলো ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে অভ্য়ন্তরস্থ পবিত্র স্থানে পোড়াবার কথা ছিল, ফুলগুলি, খাঁটি সোনার বাতি ও চিম্টেগুলি; কর্ত্তারিসমূহ, গামলাগুলি, ধুপপাত্রগুলি, এবং খাঁটি সোনার উনুন, অভ্য়ন্তর গৃহের দরজা, পবিত্রতম স্থানের দরজাগুলি এবং মন্দিরের খাঁটি সোনার দরজাগুলি| 19 20 21 22
1 প্রভুর মন্দিরের সমস্ত কাজ শেষ হবার পর শলোমন, তাঁর পিতা দায়ূদ মন্দিরের জন্য যেসব সোনা রূপোর জিনিষ ও আসবাবপত্র দান করেছিলেন সেগুলি নিয়ে এসে কোষাগারে রাখলেন| 2 শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবার গোষ্ঠীসমূহের নেতাদের জেরুশালেমে জড়ো হবার আদেশ দিলেন| তাদের উপস্থিতিতে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি দাযূদের শহর যাকে সিযোন বলা হয়, সেখান থেকে মন্দিরে আনবার আদেশ দিলেন| 3 নির্দেশ মতো ইস্রায়েলের সমস্ত ব্যক্তি সপ্তম মাসে (অধুনা সেপেটম্বরে) কুটিরবাস পর্বের সময় রাজা শলোমনের সামনে উপস্থিত হলেন| 4 যখন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিরা সেখানে এসে পৌঁছলেন, লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুকটি তুলে নিলেন এবং 5 সমাগম তাঁবুটিকে এবং তার ভেতরের সমস্ত পবিত্র জিনিস জেরুশালেম পর্য়ন্ত ওপরে বয়ে আনলেন| 6 রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে উপস্থিত হয়ে অসংখ্য় মেষ ও ষাঁড় বলিদান করলেন| 7 এবং তারপর যাজকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি সেইখানে নিয়ে এলেন যে জায়গাটি ওটার জন্য তৈরী হয়েছিল| ঐ জায়গাটি ছিল মন্দিরের পবিত্রতম স্থান| সিন্দুকটিকে করূব দূতদের ডানার নীচে রাখা হল| 8 সাক্ষ্যসিন্দুকটিকে এমনভাবে রাখা হল যাতে ঐ ঘরে বসানো করূব দূতদের মূর্ত্তির ডানা সাক্ষ্যসিন্দুক ও সিন্দুক বহন করার ডাণ্ডার ওপর ছড়িয়ে থাকে| 9 বহন করার ডাণ্ডাগুলো এত লম্বা ছিল যে পবিত্রতম স্থানের সামনে থেকেই সেগুলো দেখা যেত| তবে মন্দিরের বাইরে থেকে এগুলো দেখা যেতো না| ঐ ডাণ্ডাগুলো এখনো পর্য়ন্ত ঠিক সেভাবেই রাখা আছে| 10 সাক্ষ্যসিন্দুকের মধ্যে দুটো পাথরের ফলকছাড়া আর কিছুই ছিল না| মোশি হোরেব পাহাড়ে এই ফলকদুটো সাক্ষ্যসিন্দুকে রেখেছিলেন| হোরেব পাহাড়েই প্রভুর সঙ্গে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের চুক্তি হয়েছিল| ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর এই ঘটনা ঘটে| 11 উপস্থিত সমস্ত যাজকরা ঈশ্বর নির্দেশিত বিধি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে নিজেদের পবিত্র করলেন| তারপর, যাজকরা সকলে বিশেষ কোনো দলে না এসে সমবেতভাবে সেই পবিত্র স্থানে এসে দাঁড়ালেন| 12 সমস্ত লেবীয় গায়করা আসফ, হেমন ও য়িদূথূন তাদের পুত্রসমূহ ও আত্মীযস্বজনসহ বেদীর পূর্বদিকে দাঁড়িয়েছিল| তাঁরা সাদা লিনেনের পোশাক পরেছিলেন এবং তাঁরা কর্তাল, বীণাসমূহ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন| তাঁদের কাছে বীণা, তানপুরা ও খঞ্জনী জাতীয বাদ্যযন্ত্র ছিল| সেখানে 120 জন যাজকও ছিলেন য়াঁরা তূরী বাজিযেছিলেন| 13 সমবেতভাবে একসুরে বাদকরা শিঙা ও কাড়ানাকাড়া বাজিযেছিলেন, গায়করা গান করেছিলেন| প্রভুকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা জ্ঞাপনের সময় মনে হচ্ছিল এঁরা যেন পৃথক পৃথক কোনো ব্যক্তি নয়, একই ব্যক্তি| কাড়ানাকাড়া, খোল, কর্তাল, বীণা, যা কিছু বাদ্যযন্ত্র ছিল, সবাই সোত্সাহে সজোরে সেসব বাজিযে গাইছিলেন, ‘প্রভুর মহিমা কীর্ত্তন করো, তিনি ভাল| তাঁর প্রেম চির প্রবাহমান|’এরপর প্রভুর মন্দির মেঘে পরিপূর্ণ হল| 14 যাজকরা তাদের কাজ চালিযে যেতে পারেন নি কারণ সেই মেঘ ছিল মন্দিরকে পূর্ণ করে দেওয়া ঈশ্বরের মহিমা|
1 তখন শলোমন বললেন, “প্রভু অন্ধকার মেঘের মধ্যে থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন| 2 হে প্রভু, আমি আপনার চিরকালের বসবাসের জন্যই এই বিশাল মন্দির বানিয়েছি|” 3 রাজা শলোমন ঘুরে দাঁড়ালেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের, যারা তাঁর সামনে জড়ো হয়েছিল তাদের আশীর্বাদ করলেন| 4 এবং শলোমন বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তিত হোক| তিনি আমার পিতা দায়ূদকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রেখেছেন| প্রভু ঈশ্বর বলেছিলেন, 5 ‘যেদিন আমি ইস্রাযেলকে মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলাম, সেই সময় থেকে আজ অবধি আমি আমার নামে বাড়ী তৈরী করবার জন্য কোন একটি বিশেষ জায়গা পছন্দ করিনি, এমন কি আমি কোন লোককেও আমার লোকদের ওপর শাসন করবার জন্য মনোনীত করি নি| 6 কিন্তু এখন আমি জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছি, আমার নামের জায়গা হিসেবে এবং আমি দায়ূদকে আমার লোক, ইস্রায়েলের ওপর শাসন করার জন্য মনোনীত করেছি|’ 7 “আমার পিতা দায়ূদ প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে একটি মন্দির বানাতে চেয়েছিলেন| 8 কিন্তু প্রভু আমার পিতাকে বলেছিলেন, ‘দায়ূদ আমার মন্দির বানানোর কথা ভেবে তুমি ভাল করেছো| 9 কিন্তু তুমি নিজে এই মন্দির বানাতে পারবে না| তোমার পুত্র শলোমন আমার নামের জন্য এই মন্দির বানাবে|’ 10 এখন প্রভুর ইচ্ছেয তাই ঘটতে চলেছে| আমার পিতা দাযূদের জায়গায় আমি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হয়েছি এবং প্রভুর কথা মতো আমি প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে এই মন্দির বানিয়েছি| 11 এবং আমি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে প্রভুর চুক্তি সমন্বিত সাক্ষ্যসিন্দুকটা ঐ মন্দিরে রেখেছি|” 12 ইস্রায়েলের সমবেত লোকের উপস্থিতিতে দুই হাত প্রসারিত করে শলোমন প্রভুর বেদীর সামনে দাঁড়ালেন| 13 উঠোনের মাঝখানে বসানো পিতলের তৈরী প্রায 5 হাত লম্বা, 5 হাত চওড়া ও 3 হাত উঁচু একটা মঞ্চে উঠলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের সামনে আভূমি নত হয়ে আকাশের দিকে দুহাত ছড়িয়ে বললেন: 14 “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে তোমার সমকক্ষ কোনো ঈশ্বর নেই| তুমি তোমার ভালবাসা ও দয়ার চুক্তিতে বিশ্বস্ত| যারা তোমার সামনে বিশ্বস্তভাবে তাদের সর্বান্তঃকরণ দিয়ে জীবনযাপন করে তাদের সঙ্গে তোমার চুক্তি বজায় রাখ| 15 আমার পিতা দায়ূদকে তুমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে আজ তাকে তুমি সত্যে পরিণত করে বাস্তবায়িত করেছো| 16 এখন প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাঁকে দেওয়া তোমার সে প্রতিশ্রুতি পালন করো| তুমি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে যে সবসমযেই ইস্রায়েলের সিংহাসনে তাঁর বংশের কেউ না কেউ অধিষ্ঠিত থাকবে| একথা তুমি ভুলো না| হে প্রভু, তুমি পিতাকে বলেছিলে যদি তাঁর সন্তানরা তাঁর মতোই তোমার প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তোমার নির্দেশিত পথে জীবন অতিবাহিত করে, তাহলে সদাসর্বদা তাঁর বংশধররাই তোমার সামনে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে| 17 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এবার তুমি তোমার দাস দায়ূদকে দেওয়া তোমার সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করো| 18 “আমরা জানি যে পৃথিবীর লোকের সঙ্গে প্রভু বাস করেন না| সর্বোচচতম স্বর্গও যখন তোমায় ধরে রাখতে পারে না তখন আমার বানানো এই সামান্য মন্দির কি করে তোমায় ধরে রাখবে? 19 তাহলেও প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার প্রার্থনার প্রতি তোমাকে মনোয়োগী হতে মিনতি করি এবং তোমার অনুগ্রহ চাই| আমি, তোমার দাস তোমাকে যে কান্না এবং প্রার্থনা নিবেদন করি তা শোন| 20 যাতে এই মন্দিরে, যেখানে তুমি তোমার নাম রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলে সেখানে কি হয় তা তুমি সর্বদাই দেখতে পাও এবং যখন আমি এই মন্দিরের দিকে তাকাই তখন আমার প্রার্থনা শুনতে পাও| 21 আমার প্রার্থনা শোনো এবং তোমার লোক ইস্রায়েলের প্রার্থনা শোনো| যখন আমরা এই মন্দিরের দিকে তাকিযে প্রার্থনা করব আমাদের প্রার্থনা শুনো| তুমি অনুগ্রহ করে স্বর্গ থেকে আমাদের প্রার্থনা শোনো এবং আমরা যা পাপ করি তা ক্ষমা করে দাও| 22 “কারোর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করার পর কেউ যখন এই মন্দিরের বেদীর সামনে দাঁড়িয়ে তোমার নামে শপথ নিয়ে কথা বলবে, 23 তখন স্বর্গ থেকে সত্যি মিথ্য়া বিচার করে সেই অপরাধীকে তার কৃত অপরাধের যথায়োগ্য শাস্তি দিও| আর যদি কেউ নিরপরাধী হয় তবে তাকে রক্ষা করো| 24 “তোমার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করার অপরাধে হয়তো কখনও শএুরা তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের যুদ্ধে পরাজিত করবে| তারপর যদি ইস্রায়েলীয়রা আবার তোমার কাছে এসে এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে তোমার নামের প্রশংসা করে এবং প্রার্থনা করে ও ক্ষমা ভিক্ষা করে, 25 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায সাড়া দিয়ে তুমি তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের ক্ষমা করে তাদের পূর্বপুরুষকে তুমি যে বাসস্থান দিয়েছিলে তা ফিরিযে দিও| 26 “তোমার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করার জন্য হয়তো আকাশ শুকিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড খরা হবে| তখন যদি তারা এই মন্দিরের দিকে প্রার্থনা করে, তাদের পাপ স্বীকার করে এবং তুমি তাদের শাস্তি দিয়েছ বলে পাপকাজ করা বন্ধ করে, 27 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায সাড়া দিয়ে তুমি তাদের ক্ষমা করে দিও| আর তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করে, তোমার দেওয়া এই ভূখণ্ডে আবার বৃষ্টি পাঠিও| 28 “যখন দুর্ভিক্ষ অথবা মহামারী লাগবে, তাদের শস্যে রোগসমূহ দেখা দেবে, ফড়িং অথবা পঙ্গপাল শস্য নষ্ট করবে, অথবা শএুরা যখন ইস্রাযেলবাসীকে তাদের শহরগুলিতে আক্রমণ করবে অথবা ইস্রায়েলে প্লেগ বা ব্যধি যাই আসুক, 29 তখন যদি কোন ব্যক্তি অথবা ইস্রায়েলের সব লোকরা, যাদের প্রত্যেকে তার নিজের রোগ এবং ব্যথার কথা জানে যদি দুহাত প্রসারিত করে এই মন্দিরের দিকে তাকিযে তোমায় কোন প্রার্থনা বা আবেদন জানায, 30 তখন তুমি যেখানে বাস কর সেই স্বর্গ থেকে তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার অপরাধ ক্ষমা করো| তুমি তো ঈশ্বর, সবার হৃদয় ও মনের কথা তুমি জানো তাই যার যা প্রাপ্য় তাকে তাই দিও| 31 তাহলে যে দেশ তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, যতদিন তারা সেখানে বসবাস করবে ততদিন তোমায সমীহ ও মান্য করবে| 32 “হয়তো তোমার মহিমা ও সাহায্যের কথা শুনে ভিনদেশীদের কেউ এসে এই মন্দিরের দিকে তাকিযে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে| 33 তখন স্বর্গ থেকে তুমি সেই ভিনদেশীর প্রার্থনার ডাকে সাড়া দিও, তাহলে এই পৃথিবীর সবাই তোমার মহিমার কথা জানতে পারবে এবং ইস্রায়েলীয়দের মতোই তোমায় শ্রদ্ধা করবে| পৃথিবীর সকলে তোমার নাম মাহাত্ম্য় প্রচারের জন্য বানানো আমার এই মন্দিরের কথা জানতে পারবে| 34 “তুমি তোমার লোকদের অন্য কোথাও তাদের শএুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠাবে এবং তারা তোমার পছন্দ করা শহর ও মন্দিরের দিকে তাকিযে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে| 35 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদন শোনো এবং তাদের সাহায্য কোরো| 36 “এমন কোনো ব্যক্তি নেই যে পাপ করে না| লোকরা যখন তোমার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করে তোমায় রুদ্ধ করে তুলবে তুমি তাদের শএুদের হাতে যুদ্ধে পরাজিত করে সুদূরের কোনো দেশে বন্দীত্ব বরণে বাধ্য করবে| 37 কিন্তু তার পরে যখন তাদের মনোভাবের পরিবর্তন হবে আর সেই দূর দেশে বন্দীদশার মধ্যে তারা বলে উঠবে, ‘হে প্রভু, আমরা পাপ করেছি এবং দুষ্ট ও খুব নিষ্ঠুর আচরণ করেছি|’ 38 যদি তারা তাদের বন্দীদশার় দেশে সর্বান্তঃকরণে তোমার দিকে মুখ ফিরিযে নেয, তাদের পূর্বপুরুষকে তোমার দেওয়া ভূখণ্ডের দিকে মুখ করে, তোমার এই পবিত্র শহরের উদ্দেশ্যে আকাশের দিকে তাকিযে আমার দ্বারা তোমার জন্য বানানো মন্দিরের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করে, 39 তখন স্বর্গে, তোমার বাসস্থান থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদনে তুমি সাড়া দিও, এবং যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে তোমার সেই লোকদের তুমি সাহায্য কর এবং ক্ষমা করে দিও| 40 হে আমার ঈশ্বর, এখন আমি এখানে দাঁড়িয়ে তোমার কাছে যে প্রার্থনা করছি স্বকর্ণে তুমি সেই প্রার্থনা শোনো, তোমার করুণাময চোখ মেলে আমাদের এই প্রার্থনাস্থলে দৃষ্টিপাত করো| 41 “এখন, হে প্রভু ঈশ্বর, তুমি ওঠ এবং বিশ্রামের জন্য তোমার মনোনীত স্থানে সাক্ষ্যসিন্দুক নিয়ে এসো যা তোমার ক্ষমতার প্রতীক| হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, তোমার যাজকদের পরিধানে সদাসর্বদা থাকবে পরিত্রাণের পোশাক, আর তোমার একনিষ্ঠ ভক্তরা মঙ্গলে আনন্দ করুক| তোমার সেবক যাজকরা যেন সবসময় ত্যাগের পোশাক পরে থাকে| 42 হে প্রভু ঈশ্বর, তোমার অভিষিক্ত লোকদের বাতিল কর না; তোমার অনুগত দাস দাযূদের বিশ্বস্ত কাজগুলি মনে রেখো|”
1 শলোমনের প্রার্থনা শেষ হলে, আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা নেমে এসে হোমবলি নিবেদিত উত্সর্গগুলিকে পুড়িয়ে ফেলল এবং প্রভুর মহিমার উপস্থিতিতে সমস্ত মন্দির ভরে গেল| 2 প্রভুর মহিমার উপস্থিতির কারণে যাজকরা প্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করতে পারলেন না| 3 সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা যারা এই অগ্নিশিখা ও প্রভুর মহিমার উপস্থিতি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করল তারা তাদের মাথা আভূমি নত করল, তারা প্রভুর উপাসনা করল এবং গাইল, “আমাদের প্রভু মহান; তাঁর করুণা সদা প্রবহমান|” 4 অতঃপর রাজা শলোমন এবং ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর সামনে 5 শুধুমাত্র ঈশ্বরের উপাসনার জন্য 22,000 ষাঁড় এবং 1,20,000 মেষ বলি দিয়ে মন্দিরটিকে শুদ্ধ ও পবিত্র করলেন| 6 যাজকরা, য়াঁরা কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তাঁরা লেবীয়দের বিপরীতে দাঁড়িয়েছিলেন| যাজকরা শিঙা বাজিযে উঠলেন এবং লেবীয়রা বাদ্যয়ন্ত্রের দ্বারা, যা রাজা দায়ূদ বানিয়েছিলেন প্রভুর প্রশংশা গান গাইবার জন্য কারণ তিনি চিরবিশ্বস্ত| যখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোক সেখানে দাঁড়িয়েছিল| 7 এবং শলোমন প্রভুর মন্দিরের সামনের অঙ্গণের মধ্যভাগ নিবেদন করলেন এবং তিনি হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য়ের চর্বি অংশটি উত্সর্গ করলেন| শলোমন এই উত্সর্গগুলি অঙ্গণের মাঝখানে নিবেদন করলেন কারণ তিনি পিতলের যে বেদীটি বানিয়েছিলেন সেটি হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য চর্বি ধারণের পক্ষে খুবই ছোট ছিল| 8 শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকরা টানা সাত দিন ধরে খাওয়াদাওযা ও উত্সব করলেন| শলোমনের সঙ্গে অনেকে ছিলেন| এঁরা সকলে হমাতের প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে মিশরের ঝর্ণা পর্য়ন্ত বিস্তৃত সুবিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাস করতেন| 9 সাতদিন উত্সব পালনের পরে অষ্টম দিনের দিন একটা বড় পবিত্র সভার আযোজন করা হল| এরপর শুধুমাত্র প্রভুর উপাসনার জন্য বেদীটিকে পবিত্র করে তাঁরা আরো সাতদিন ধরে খাওয়াদাওযা ও আনন্দ করলেন| 10 সপ্তম মাসের 23 দিনের দিন শলোমন সবাইকে তাদের বাড়িতে ফেরত্ পাঠালেন| দায়ূদ ও তাঁর পুত্র শলোমন এবং ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি প্রভুর কৃপাদৃষ্টির কথা ভেবে সবাই খুবই খুশী ছিল এবং তাদের হৃদয় ভরে ছিল এক অনির্বচনীয আনন্দে| 11 শলোমন সফলভাবে প্রভুর মন্দির ও তাঁর নিজের রাজপ্রাসাদ নির্মাণের কাজ শেষ করলেন| 12 তারপর রাতে বয়ং প্রভু শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “শলোমন, তোমার প্রার্থনা আমার কানে পৌঁছেছে| এই স্থানটিকে আমি আমার কাছে বলিদানের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছি| 13 যদি আমি খরা পাঠাই অথবা পঙ্গপালের ঝাঁককে জমি গ্রাস করার আদেশ দিই অথবা যদি আমি লোকদের জীবনে ব্যাধি পাঠাই, 14 তখন যদি আমার লোকরা অসত্ পথ ও আচরণ ত্যাগ করে ব্যাকুল ও অনুতপ্ত চিত্তে আমায় ডাকে, তবে আমি অবশ্যই তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের পাপকে ক্ষমা করব এবং দেশটিকে সারিযে তুলব| 15 এখন যে প্রার্থনা এই স্থানে নিবেদিত হবে আমি তার প্রতি সজাগ থাকবো| 16 আমি এই মন্দিরকে আমার নাম প্রচারের জন্যে বেছে নিয়েছি এবং আমার উপস্থিতি দিয়ে একে পবিত্র করেছি| আমার দৃষ্টি ও হৃদয় সদাসর্বদা এখানেই থাকবে| 17 “শোনো শলোমন, তুমি যদি তোমার পিতা দাযূদের মতো আমার বিধি ও নিয়ম মেনে জীবনযাপন করো, 18 তাহলে তোমার পিতা দাযূদের সঙ্গে আমি যে চুক্তি করেছিলাম, যাতে আমি বলেছিলাম, ‘তোমার উত্তরপুরুষদের একজন সর্বদা ইস্রাযেল শাসন করবে,” সেই চুক্তি অনুযায়ীআমি তোমাকে শক্তিশালী রাজা করে তুলবো|’ 19 “কিন্তু তুমি যদি আমার বিধি নির্দেশ যা আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, অমান্য কর এবং অন্যান্য মূর্ত্তিসমূহের পূজো কর ও তাদের সেবা করতে শুরু করো, 20 তাহলে আমি আমার যে ভূখণ্ড তাদের দিয়েছিলাম সেখান থেকে ইস্রায়েলের লোকদের বিতাড়িত করব; এবং আমার নামে বানানো এই পবিত্র মন্দির ত্যাগ করব এবং এর এমন দশা করবো যে সমস্ত জাতিসমূহের মধ্যে সেটা একটা উপহাসের পাত্র হয়ে দাঁড়াবে| 21 এখন এই গৃহটি মহিমান্বিত| কিন্তু যখন এসব ঘটবে, যারাই এর পাশ দিয়ে হেঁটে যাবে, আশ্চর্য্য় হয়ে বলবে, ‘প্রভু কেন এই দেশ ও মন্দিরের প্রতি এই আচরণ করলেন?’ 22 তখন লোকরা উত্তর দেবে, ‘কারণ ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরকে, যিনি তাদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, তাঁকে পরিত্যাগ করেছে| তারা অন্য মূর্ত্তিসমূহের পূজো করে ও তাদের সেবা করে তাদের গ্রহণ করেছে| এই কারণে প্রভু তাদের ওপরে এই ভয়ঙ্কর এবং আতঙ্কজনক শাস্তি এনে দিয়েছেন|”
1 প্রভুর মন্দির ও নিজের রাজপ্রাসাদ বানাতে শলোমনের 20 বছর সময় লেগেছিল| 2 এরপর হূরম তাঁকে যে শহরগুলো দিয়েছিলেন শলোমন সেগুলির সংস্কার করেন| ইস্রায়েলের বেশ কিছু লোককে তিনি ঐ সমস্ত শহরে বসবাসের অনুমতি দিয়েছিলেন| 3 অতঃপর তিনি সোবাতের হমাত্ দখল করেন| 4 তিনি মরু অঞ্চলে তদ্মোর শহরটি এবং হমাতে গুদাম শহরগুলিও বানিয়েছিলেন| 5 এছাড়াও তিনি শক্তিশালী দূর্গ হিসেবে ঊর্দ্ধ বৈত্-হোরোণ ও নিথ বৈত্-হোরোণের শহরগুলো দেওয়াল ও ফটক সহ হুড়কো লাগিয়ে তৈরী করেছিলেন| 6 জিনিসপত্র মজুত রাখার জন্য বালত্ সহ আরো কযেকটি শহর পুননির্মাণ করেছিলেন| রথ রাখার জন্য ও অশ্বারোহী সারথীদের বসবাসের জন্যও তাঁকে বেশ কিছু শহর বানাতে হয়েছিল| জেরুশালেমে লিবানোন সহ তাঁর সমগ্র রাজ্যে শলোমন যা কিছু বানাতে চেয়েছিলেন সবই বানিয়েছিলেন| 7 হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয়দের সমস্ত উত্তরপুরুষরা এরা ইস্রায়েলীয় ছিল না| যাদের ইস্রায়েলীয়রা য়িহোশূযার জয়যাত্রার সময় ধ্বংস করেনি তারা শলোমন দ্বারা এীতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছিল| তারা আজও তাই করে| এরা সকলেই ছিল ইস্রায়েলীয়দের ধ্বংস করা অন্যান্য শএু রাজ্যের বাসিন্দাদের উত্তরপুরুষ| 8 9 কিন্তু শলোমন কোন ইস্রায়েলীয়কে এীতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করেননি| ইস্রায়েলীয়রা সকলেই ছিল তাঁর য়োদ্ধা এবং তাঁর আধিকারিক যারা তাঁর রথবাহিনী ও অশ্বারোহী সৈনিকদের চালনা করতেন| 10 কেউ কেউ ছিলেন শলোমনের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের আধিকারিক অথবা নেতা| 250 জন নেতা এই সমস্ত লোকদের তত্ত্বাবধান করতেন| 11 শলোমন দায়ূদ নগর থেকে ফরৌণের কন্যাকে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাকে তার জন্য বানানো এক সুন্দর বাড়িতে রেখেছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমার স্ত্রী, ইস্রায়েলের রাজা দাযূদের প্রাসাদে থাকবে না কারণ, সমস্ত জায়গাগুলো যেখানে যেখানে সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখা ছিল সেগুলো অতি পবিত্র জায়গা|” 12 এরপর শলোমন মন্দিরের সামনের দালানে প্রভুর জন্য তাঁর বানানো বেদীতে প্রভুকে হোমবলি নিবেদন করলেন| 13 মোশির আদেশ মতোই শলোমন প্রত্যেক দিন বলিদান করা ছাড়াও বিশ্রামের দিন, অমাবস্যায ও তিনটে বাত্সরিক ছুটির দিনে নিয়মিত বলি উত্সর্গ করতেন| এই তিনটে বাত্সরিক ছুটির দিন হল খামিরবিহীন রুটির উত্সবের দিন, সাত সপ্তাহের উত্সবের দিন ও কুটিরবাস পর্বের দিন| 14 তাঁর পিতা রাজা দাযূদের নির্দেশ মতোই তিনি মন্দিরের কাজকর্মের জন্য যাজক ও লেবীয়দের দলভাগ করে দিয়েছিলেন| লেবীয়রা মন্দিরের নিত্য নৈমিত্তিক কাজকর্মে যাজকদের সহায়তা করতেন| এছাড়াও মন্দিরের প্রত্যেকটি ফটকের জন্য শলোমন দ্বাররক্ষীদের দলও নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন| 15 ইস্রায়েলীয়রা কখনো যাজক ও লেবীয় সংএান্ত শলোমনের দেওয়া কোনো নির্দেশ অমান্য বা তার কোনো পরিবর্তন করেননি| এমনকি দুর্মূল্য জিনিসপত্র রাখার ব্যাপারেও তাঁরা শলোমনের বিধান মেনে নিয়েছিলেন| 16 প্রভুর মন্দিরের ভিত্তিস্থাপনের দিন থেকে সেটি শেষ হওয়া পর্য়ন্ত, শলোমনের সব কাজ তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ীকরা হয়| 17 এরপর শলোমন লোহিত সাগরের তীরস্থ ইদোমের ইত্সিযোন গেবরে ও এলতে যান| 18 হূরম সেখানে তাঁর নিজস্ব দক্ষ নাবিকদের দ্বারা পরিচালিত জাহাজ পাঠান| শলোমনের দাসরা এদের সঙ্গে ওফীরে গিয়ে তাঁর জন্য 17 টন সোনা নিয়ে এসেছিল|
1 শিবার রাণী শলোমনের খ্যাতির কথা শুনে তাঁকে পরীক্ষা করতে বয়ং জেরুশালেমে এলেন| শিবার রাণীর সঙ্গে একটা বড় সড় দল উটের পিঠে মশলাপাতি, প্রচুর পরিমাণে সোনা ও মূল্যবান পাথর বয়ে নিয়ে এসেছিল| তিনি শলোমনের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে অনেক শক্ত শক্ত রশ্ন করলেন| 2 শলোমন তাঁর সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন কারণ তাঁর ব্যাখ্যার অতীত বা বোধগম্য় নয় এমন কিছুই ছিল না| 3 শিবার রাণী তাঁর প্রজ্ঞার পরিচয পেলেন এবং তাঁর বানানো প্রাসাদের চারদিকে তাকিযে, 4 শলোমনের টেবিলে পরিবেশন করা খাবার দাবার, তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রাজকর্মচারী, ভৃত্যদের কাজের ধারা ও তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, শলোমনের দ্রাক্ষারস পরিবেশক, তাদের পরিধেয বস্ত্র, ইত্যাদি ছাড়াও প্রভুর মন্দিরে শলোমনের দেওয়া হোমবলির পরিমাণ দেখে তিনি বিস্মযে অভিভূত হয়ে গেলেন| 5 তারপর তিনি রাজা শলোমনকে বললেন, “আমি আমার দেশে বসে আপনার অতুল কীর্তি ও জ্ঞানের সম্পর্কে যা শুনেছিলাম দেখছি তার সবই সত্যি| 6 এখানে এসে স্বচক্ষে না দেখা পর্য়ন্ত আমি সেসব কথা বিশ্বাস করি নি, কিন্তু এখন দেখছি আমি যেসব গল্প শুনেছিলাম, আপনার প্রকৃত জ্ঞান তার চেয়েও ঢ়েব বেশী| 7 আপনার স্ত্রীদের ও আপনার অধীনস্থ কর্মচারীদের কি সৌভাগ্য যে তাঁরা সর্বক্ষণ আপনার সেবা করতে করতে আপনার বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তা শুনতে পান| 8 তোমার প্রভু ঈশ্বরের যথার্থই প্রশংসা করো| তিনি আপনার মতো একজন সেবককে তাঁর সিংহাসনে বসিযে নিশ্চয়ই খুবই সন্তুষ্ট| তিনি প্রকৃতই ইস্রাযেলকে সহানুভূতি ও প্রেমসহ দেখেন এবং তাকে চিরকালের মতো দাঁড় করিযে দিতে চান এবং সেজন্যই তিনি আপনাকে যথায়থ এবং ঠিক কাজ করবার জন্য ইস্রায়েলের রাজা করেছেন|” 9 এরপর শিবার রাণী শলোমনকে 4 1,2 টন সোনা সহ বহু মশলাপাতি ও দামী দামী পাথর উপহার দিলেন| তাঁর মতো এতো উত্কৃষ্ট মশলাপাতি রাজা শলোমনকে কেউ কখনো উপহার দেননি| 10 রাজা হূরম ও শলোমনের ভৃত্যরা ওফীর থেকে সোনা ছাড়াও, চন্দন কাঠ ও বহু দামী দামী পাথর এনেছিলেন| 11 রাজা শলোমন সেই কাঠ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের ও রাজপ্রাসাদের সিঁড়িগুলি এবং বীণা ও বাদ্যয়ন্ত্রাদি বানিয়েছিলেন| যিহূদার কেউ এর আগে চন্দন কাঠ দিয়ে বানানো এতো সুন্দর জিনিস দেখে নি| 12 রাজা শলোমনও, শিবার রাণীকে তিনি যা যা চেয়েছিলেন সবই দিয়েছিলেন| তিনি শলোমনকে যা উপহার দিয়েছিলেন শলোমন তার থেকেও অনেক বেশী পরিমাণ উপহার শিবার রাণীকে দিয়েছিলেন| তারপর শিবার রাণী ও তাঁর ভৃত্যরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন| 13 প্রতি বছর শলোমনের প্রায 25 টন সোনা সংগ্রহ হতো| 14 বণিক ও ব্যবসাযীরা ছাড়াও আরবের সমস্ত রাজারা এবং দেশের শাসনকর্তারা শলোমনের জন্য বহু পরিমাণে সোনা ও রূপো নিয়ে আসতেন| সোনা ও রূপো ছাড়াও তাঁরা ঘোড়া ও খচচরের পিঠে চাপিয়ে কাপড়চোপড়, অস্ত্রশস্ত্র, মশলাপাতি নিয়ে আসতেন| 15 রাজা শলোমন পেটানো সোনা দিয়ে 200 খানা বড় বড় ঢাল বানিয়েছিলেন| এক একটা ঢাল বানাতে প্রায 7 1,2 টন করে সোনা ব্যবহার করা হয়েছিল| 16 এছাড়াও তিনি পেটানো সোনায ছোট ছোট 300টি ঢাল বানিয়েছিলেন, যার এক একটা বানাতে প্রায 3 3,4 টন করে সোনা ব্যবহার করা হয়েছিল| এই সমস্ত ঢালগুলো শলোমন তাঁর প্রাসাদে টাঙিযে রেখেছিলেন| 17 শলোমন হাতির দাঁত দিয়ে একটা বিশাল রাজসিংহাসনও বানিয়েছিলেন এবং সেটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন| 18 এই সিংহাসনে ছটা ধাপ দিয়ে উঠতে হতো আর এর পা-দানীটি ছিল খাঁটি সোনায বানানো| সিংহাসনের দুধারের হাতলের পাশে ছিল একটা করে সিংহের প্রতিমূর্ত্তি| 19 সিংহাসনে ওঠার ধাপগুলোর প্রত্যেকটার দুধারে একটা করে ছটা ছটা মোট 12টা সিংহের প্রতিকৃতি ছিল| অন্য কোন রাজ্যে কখনো এধরনের কোন সিংহাসন বসানো হয়নি| 20 শলোমনের প্রত্যেকটা পানপাত্র ছিল সোনায বানানো| প্রাসাদের সমস্ত জিনিস ছিল সোনায তৈরী| শলোমনের রাজত্বের সময় সোনা ও রূপো এতো সুলভ হয়ে পড়েছিল যে সোনা ও রূপোকে কেউ মূল্যবান জিনিস বলে গণ্যই করতো না, 21 কারণ রাজার জাহাজ প্রতি তিন বছর অন্তর তর্শীশে পাড়ি দিত এবং হূরমের নাবিকরা জাহাজ ভরে সোনা ও রূপো, হাতির দাঁত, নানান প্রজাতির বাঁদর ও মযূর নিয়ে আসত| 22 সম্পদে ও বুদ্ধিতে পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত রাজাদের তুলনায় শলোমন অনেক বড় ছিলেন| 23 পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাজারা শলোমনের কাছে তাঁর ঈশ্বর প্রদত্ত জ্ঞান ও সূক্ষ্ম বিচার বুদ্ধির পরিচয পেতে আসতেন| 24 প্রত্যেক বছর এই সমস্ত রাজারা শলোমনের জন্য সোনা ও রূপোয বানানো জিনিসপত্র, জামাকাপড়, মশলাপাতি, ঘোড়া, খচচর ইত্যাদি নিয়ে আসতেন| 25 ঘোড়া ও রথ রাখার জন্য শলোমন 4,000 আস্তাবল বানিয়েছিলেন| তাঁর সারথির মোট সংখ্যা 12,000 ছিল| এদের থাকার জন্য বানানো বিশেষ কযেকটি শহর ও তাঁর কাছে জেরুশালেমে তাদের রাখা হতো| 26 শলোমন, ফরাত্ নদী থেকে শুরু করে পলেষ্টীয়দের দেশ বরাবর মিশরের সীমানা পর্য়ন্ত সমস্ত রাজাদের শাসক হলেন| 27 রাজা শলোমন তাঁর সমযে এত প্রচুর পরিমাণ রূপো সংগ্রহ করেছিলেন যে তিনি জেরুশালেমে রূপোকে পাথরের মত সস্তা করে তুলেছিলেন| ইস্রায়েলের উপকূলবর্তী অরণ্যে অন্য যে কোন গাছের মতো দামী ধরণের এরস গাছপালা ছিল খুব মামুলি| 28 লোকেরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শলোমনের কাছে ঘোড়া নিয়ে আসতেন| 29 শলোমন প্রথম থেকে শেষ পর্য়ন্ত যে সমস্ত কাজ করেছিলেন ভাব্বাদী নাথনের ইতিহাস থেকে, শীলোনীয অহীযর ভবিষ্যদ্বাণী থেকে এবং ভাব্বাদী ইদ্দোর নবাটের পুত্র যারবিযাম সম্পর্কিত দর্শন থেকে সে সমস্তই জানা যায়| 30 শলোমন 40 বছর ধরে জেরুশালেম থেকে সমগ্র ইস্রাযেল শাসন করেছিলেন| 31 তারপর তাঁর মৃত্যু হলে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরে চিরনিদ্রায সমাহিত করা হল| এরপর শলোমনের পুত্র রহবিয়াম শলোমনের জায়গায় নতুন রাজা হলেন|
1 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক রহবিয়ামকে নতুন রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করবার জন্য শিখিমে জমায়েত হয়েছিল, তাই রহবিয়াম সেখানে গিয়েছিলেন| 2 নবাটের পুত্র যারবিযাম যখন একথা শুনলেন, তিনি মিশর থেকে যেখানে তিনি রাজা শলোমনের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে ফিরে এলেন| 3 ইস্রায়েলের উত্তরাঞ্চলের উপজাতিরা তাঁকেও তাদের সঙ্গে য়োগ দিতে বললেন| এবং তিনি ও ইস্রায়েলের সবাই রহবিয়ামের কাছে গিয়ে বললেন, 4 “মহারাজ, আপনার পিতার জন্য আমাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল| এখন আপনি দয়া করে সেই বোঝা কিছুটা হাল্কা করলে আমরা আপনার জন্য কাজ-কর্ম করতে পারি|” 5 রহবিয়াম তাদের বললেন, “তোমরা তিনদিন পরে আমার কাছে ফিরে এসো|” সুতরাং তারা তখনকার মতো চলে গেল| 6 তখন রাজা রহবিয়াম, তাঁর পিতার আমলে কাজ করেছেন এরকম সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন| রহবিয়াম তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা পরামর্শ দিন এখন আমি কি করব?” 7 প্রবীণরা তাঁকে বললেন, “আপনি যদি এই সমস্ত প্রজাদের সঙ্গে সদ্ব্য়বহার করেন এবং তাদের কষ্ট লাঘব করার ব্যবস্থা করেন তাহলে তারা চিরজীবন আপনার অনুগত হয়ে কাজ করবে|” 8 কিন্তু রহবিয়াম প্রবীণদের কথায় কর্ণপাত করলেন না| তার বদলে তিনি যাদের সঙ্গে বড় হয়েছিলেন সেই যুবকদের একই কথা জিজ্ঞাসা করলেন, 9 “এই লোকদের আমি কি উত্তর দেব? ওরা আমাকে ওদের কাজের ভার কমাতে বলছে|” 10 তখন রহবিয়ামের বন্ধু ও সঙ্গীরা তাঁকে পরামর্শ দিলেন, “যেসব লোক তাদের কাজের ভার নিয়ে নালিশ করেছে, আপনি তাদের এই কথা বলুন| লোকরা আপনাকে বলছে, ‘আপনার পিতা আমাদের জীবন কঠিন করে তুলছে, ইহা অত্যন্ত ভারী বোঝার মতো| কিন্তু আমরা চাই আপনি তা লঘু করুন|’ কিন্তু রহবিয়াম তাদের বলল, ঐসব লোকদের ডাকুন আর বলুন, “বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় হয়|” 11 তোমরা বলছো যে আমার পিতা নাকি তোমাদের খাটিযে মারছিলেন, তোমাদের ওপর বড্ড বোঝা পড়ছিল? বোঝা কাকে বলে এবার বুঝবে| আমি তোমাদের কি রকম কাজ করাই দেখো| আমার পিতা তোমাদের শুধু চাবকাতেন| আমি তোমাদের কাঁকড়া বিছে দিয়ে চাবকাবো|” 12 তিনদিন পরে আমার কাছে রহবিয়ামের আদেশ মতো, যারবিযাম সহ সবাই তাঁর কাছে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানতে এলো| 13 প্রবীণদের কথায় কান না দিয়ে সঙ্গীদের পরামর্শ মতো রহবিয়াম তাঁদের সঙ্গে খুব কর্কশভাবে কথা বললেন এবং 14 সঙ্গীদের উপদেশ অনুযায়ীবললেন, “আমার পিতা তোমাদের জোযালকে ভারী করেছিলেন, আমি তাকে আরো ভারী করব| আমার পিতা শুধু তোমাদের চাবকাতেন, কিন্তু আমি কাঁকড়া বিছে দিয়ে চাবকাবো|” 15 অর্থাত্ রহবিয়াম প্রজা সাধারণের আবেদনে কোনো কর্ণপাত করলেন না| অবশ্য যাতে যারবিযাম সম্পর্কে বলা শীলোনীয অহিযের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয় তাই এসব ঘটনা প্রভুর অভিপ্রায় অনুযায়ীঘটেছিল| 16 যখন ইস্রায়েলের লোকরা দেখল যে রাজা রহবিয়াম তাঁদের আবেদনে কোনই মনোয়োগ দিলেন না, তখন তাঁরা উত্তর দিলেন, “আমরা কি দাযূদের বংশের অধিকারভুক্ত অথবা য়িশযের উত্তরাধিকারে আমাদের কোন দাবী আছে? না! সুতরাং ইস্রাযেল, চল আমরা আমাদের নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাই এবং দাযূদের বংশ নিজেই দেখাশোনা করুক|” সুতরাং ইস্রায়েলের উত্তরাঞ্চলের উপজাতি সমস্ত লোক যে যার নিজের বাড়িতে ফিরে গেল| 17 সুতরাং, যারা যিহূদা অঞ্চলে বাস করত শুধুমাত্র সেই লোকদের ওপর রহবিয়াম রাজত্ব করেছিলেন| 18 হদোরাম এীতদাসদের ওপর নজরদারির কাজ করতো| যখন রহবিয়াম তাকে উত্তরাঞ্চলের উপজাতি লোকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পাঠিয়েছিলেন, তারা সকলে পাথর ছুঁড়ে হদোরামকে হত্যা করেছিল| তখন রহবিয়াম তাড়াতাড়ি নিজের রথে চড়ে জেরুশালেমে পালিয়ে গেলেন| 19 এই ঘটনার পর থেকে আজ পর্য়ন্ত উত্তরাঞ্চলের জনগোষ্ঠী দাযূদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এসেছে|
1 রহবিয়াম জেরুশালেমে এসে যিহূদা ও বিন্যামীনের উপজাতিগুলির থেকে বেছে 1,80,000 সেনা জোগাড় করলেন| তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নিজের জন্য রাজ্য দখল করা| 2 কিন্তু প্রভু ভাব্বাদী শময়িয়র সঙ্গে কথা বললেন এবং বললেন, 3 “শময়িয় যাও, গিয়ে রহবিয়াম আর যিহূদা ও বিন্যামীনে বসবাসকারী ইস্রায়েলীয়দের গিয়ে বলো 4 আমি বলেছি, প্রভু বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে বাড়িতে ফিরে যাও কারণ আমার অভিপ্রায়েই এই ঘটনা ঘটেছে|”‘ প্রভুর বার্তা শুনে যারবিযামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে রহবিয়াম ও তাঁর সেনাবাহিনীর সবাই যে যার বাড়ি ফিরে গেল| 5 রহবিয়াম নিজে জেরুশালেমে বাস করতেন| তিনি শএুপক্ষের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবার জন্য যিহূদায় অনেক সুদৃঢ় শহর বানিয়েছিলেন| 6 তিনি যিহূদা ও বিন্যামীনের বৈত্লেহম, ঐটম, তকোয, বৈত্-সুর, সেখো, অদুল্লম, গাত্, মারেশা, সীফ, অদোরযিম, লাখীশ, অসেকা, সরা, অযালোন ও হিব্রোণ প্রমুখ শহরগুলো শক্তিশালী করেন| 7 8 9 10 11 এই শহরগুলো শক্তিশালী করবার পর তিনি এই শহরগুলির জন্য সেনাপতিসমূহ নিযোগ করলেন এবং তাদের খাবার, তেল, দ্রাক্ষারস ইত্যাদি সরবরাহ করেছিলেন এবং 12 এই সমস্ত শহরগুলোতে রহবিয়াম ঢাল এবং বর্শাসমূহ রেখেছিলেন যাতে তারা শহরগুলি প্রতিরক্ষা করতে পারে| সুতরাং শহরগুলি রহবিয়ামের অধিকারভুক্ত ছিল| 13 যাজকগণ এবং ইস্রায়েলের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর লোকেরা ও লেবীয়রা এলেন এবং রহবিয়ামকে সমর্থন করবার জন্য তাঁর সঙ্গে য়োগ দিলেন| 14 লেবীয়রা তাঁদের নিজস্ব চাষ আবাদের জমি ও ঘাস জমি ছেড়ে যিহূদা এবং জেরুশালেমে চলে এসেছিলেন, কারণ যারবিযাম ও তাঁর পুত্ররা তাঁদের প্রভুর যাজক হিসেবে কাজ করতে দেননি| 15 বেদীতে তাঁর তৈরী বাছুর ও ছাগলের মূর্ত্তিগুলোর সামনে পূজো করার জন্য তিনি নিজের পছন্দমতো যাজকদের নিয়োগ করেছিলেন| 16 লেবীয়রা যখন ইস্রাযেল ত্যাগ করে চলে গেলেন তখন ইস্রায়েলের ধর্মভীরু পরিবারগোষ্ঠীর সদস্যরাও জেরুশালেমে তাঁদের পূর্বপুরুষের প্রভুর কাছে বলিদান করার জন্য চলে এলেন| 17 জেরুশালেমে এসে এই লোকরা যিহূদাকে শক্তিশালী করল এবং রহবিয়ামকে তিন বছরের জন্য সহায়তা দিল, কারণ তারা দায়ূদ ও শলোমনের মতো ঈশ্বরকে মান্য করে জীবনযাপন করেছিল| 18 রহবিয়াম দাযূদের পুত্র য়িরীমোতের কন্যা মহলত্কে বিয়ে করেছিলেন| মহলতের মাতা অবীহযিল ছিলেন য়িশযের পৌত্রী, ইলীয়াবের কন্যা| 19 রহবিয়াম আর মহলতের পুত্রদের নাম ছিল: য়িযূশ, শমরিয় এবং সহম| 20 এরপর, রহবিয়াম অবশালোমের কন্যা মাখাকে বিয়ে করেন| তাঁদের দুজনের পুত্রের নাম হল: অবিয, অত্তয, সীষ এবং শলোমীত্| 21 রহবিয়ামের 18 জন স্ত্রী ও 60 জন উপপত্নী থাকলেও তিনি তাঁর স্ত্রী মাখাকেই সবচেয়ে বেশী ভালবাসতেন| সব মিলিযে রহবিয়ামের 28 জন পুত্র ও 60 জন কন্যা হয়েছিল| 22 তাঁর পুত্রদের মধ্যে রহবিয়াম অবিযকে য়ুবরাজ, তার ভাইদের মধ্যে নেতা বলে ঘোষণা করেন কারণ তিনি তাকেই পরবর্তী রাজা করতে চেয়েছিলেন| 23 বিচক্ষণতার সঙ্গে রহবিয়াম তাঁর পুত্রদের যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত জায়গায়, দূর্গসম্বলিত সমস্ত শহরে পাঠিয়েছিলেন এবং তাদের সঙ্গে পর্য়াপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়েছিলেন| তিনি তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করেছিলেন|
1 এমশঃ রহবিয়াম তাঁর রাজ্যের ভিত সুদৃঢ় করে একজন ক্ষমতাশালী রাজায পরিণত হলেন| কিন্তু এরপর রহবিয়াম ও যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী প্রভুর বিধি ও নির্দেশ অমান্য করতে শুরু করলেন| 2 এর ফলস্বরূপ প্রভুর ইচ্ছেয মিশরের রাজা শীশক রহবিয়ামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে জেরুশালেম আক্রমণ করলেন| 3 শীশকের সঙ্গে ছিল 12,000 রথসমূহ এবং 60,000 ঘোড়-সওযার সহ একটি বিশাল সেনাবাহিনী| শীশকের সেনাবাহিনীতে এত লূবীয, সুক্কীয,কূশীয় লোক ছিল যে তাদের গোনা যেত না| 4 জেরুশালেমে এসে উপস্থিত না হওয়া পর্য়ন্ত শীশক যিহূদার সমস্ত দূর্গ নগরীগুলি দখল করতে লাগলেন| 5 সেই সমযে, ভাব্বাদী শময়িয়, রহবিয়াম ও যিহূদার নেতৃবৃন্দ য়াঁরা শীশকের আক্রমণের কারণে জেরুশালেমে এসে জড়ো হয়েছিলেন তাদের কাছে গেলেন এবং বললেন, “প্রভু বলেছেন: ‘রহবিয়াম, তুমি ও যিহূদার লোকেরা আমায় ত্যাগ করেছো, অতএব একইভাবে আমিও তোমাদের শীশকের বিরুদ্ধে আমার সাহায্য ছাড়াই যুদ্ধ করতে ছেড়ে দিয়েছি|”‘ 6 তখন রহবিয়াম ও যিহূদার নেতারা বিনম্র হলেন, অনুতাপ করলেন এবং বললেন, “প্রভু তো ঠিক কথাই বলেছেন, আমরা পাপাত্মা|” 7 প্রভু যখন দেখলেন যে রাজা ও তাঁর নেতারা বিনীত হয়েছেন এবং অনুশোচনা করেছেন তখন তিনি শময়িয়কে বললেন, “যেহেতু রাজা ও নেতারা বিনীত হয়েছেন ও অনুতপ্ত হয়েছেন, আমি ওদের ধ্বংস করবো না, কিন্তু জেরুশালেমকে শীশকের সেনাবাহিনীর হাত থেকে মুক্তি দিয়ে আমার রোধর থেকে তাদের কযেকজনকে অব্যাহতি দেব| 8 কিন্তু তবুও, তারা তার দাস হবে, যাতে তারা বুঝতে পারে যে আমাকে সেবা করা আর একজন পার্থিব রাজাকে সেবা করার মধ্যে তফাত্ আছে|” 9 মিশররাজ শীশক জেরুশালেম আক্রমণ করে প্রভুর মন্দিরের সমস্ত ধনসম্পদ লুঠ তো করলেনই, রাজপ্রাসাদের যাবতীয় সম্পদও তিনি অপহরণ করে সঙ্গে নিয়ে গেলেন| রাজা শলোমনের বানানো সোনার ঢালগুলোও শীশক নিয়ে যান| 10 তার জায়গায় রহবিয়াম পিতলের ঢালগুলি রাখলেন এবং সেগুলো রাজপ্রাসাদের দ্বাররক্ষীদের দায়িত্বে রেখে দিলেন| 11 যখন তিনি প্রভুর মন্দিরে যেতেন তারা এগুলো বের করতো, পরে আবার দ্বাররক্ষীদের ঘরেই তুলে রাখতো| 12 যেহেতু রহবিয়াম বিনীত হয়েছিলেন এবং যা করেছিলেন তার জন্য অনুতপ্ত হয়েছিলেন, প্রভু তাঁর রোধ সরিয়ে নিলেন এবং তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করলেন না কারণ যিহূদায় কিছু ধার্মিকতা তখনও বাকী ছিল| 13 রাজা রহবিয়াম এমশঃ জেরুশালেমে নিজেকে ক্ষমতাশালী রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন| তিনি 41 বছর বয়সে রাজা হয়েছিলেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে থেকে প্রভু যে স্থানটিতে নিজের নাম রাখার জন্য বেছে নিয়েছিলেন সেই জেরুশালেমে 17 বছর রাজত্ব করেছিলেন| রহবিয়ামের মা নয়মা ছিলেন একজন অম্মোনীয়া| 14 রহবিয়াম বিভিন্ন অসত্ কর্মে লিপ্ত হয়েছিলেন কারণ তিনি অন্তঃকরণ থেকে প্রভুকে অনুসরণ করেন নি| 15 তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষ পর্য়ন্ত রহবিয়াম যা কিছু করেছিলেন সেসবই ভাব্বাদী শময়িয় আর ভাব্বাদী ইদ্দোর লেখা পারিবারিক ইতিহাস থেকে জানতে পারা যায়| রহবিয়াম ও যারবিযামের রাজত্বকালে, দুজনের মধ্যে সব সমযেই যুদ্ধ লেগে থাকতো| 16 মৃত্যুর পর দায়ূদ নগরীতে রহবিয়ামকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাহিত করা হয়| তারপর তাঁর পুত্র অবিয নতুন রাজা হলেন|
1 যারবিযামের ইস্রায়েলে রাজত্বের 18 বছরের মাথায় অবিয ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন| 2 তিনি মোট তিন বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| অবিযর মা মীখায়া ছিলেন গিবিয়ার ঊরীযেলের কন্যা| অবিয আর যারবিযামের মধ্যেও যুদ্ধ হয়েছিল| 3 অবিযর সেনাবাহিনীতে 4,00,000 বীর সৈনিক ছিল| অবিয তাদের নিয়ে যুদ্ধে যান| ইতিমধ্যে যারবিযাম 8,00,000 বীর সেনা নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে রইলেন| 4 অবিয ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলে সমারযিম পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে বললেন, “যারবিযাম আর ইস্রায়েলের অন্য সবাই, তোমরা আমার কথা শোনো| 5 তোমরা নিশ্চয়ই জানো যে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর দায়ূদ ও তাঁর উত্তরপুরুষদের সঙ্গে একটি দৃঢ় চুক্তিকরেছিলেন এবং চিরদিনের জন্য তাদের ইস্রায়েলের ওপর রাজা হিসেবে কর্তৃত্ব করার অধিকার দিয়েছিলেন| 6 কিন্তু নবাটের পুত্র যারবিযাম তাঁর প্রকৃত রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন| যারবিযাম আসলে দাযূদের পুত্র শলোমনের অধীনস্থ একজন ভৃত্য ছিল| 7 তারপর স্বার্থান্বেষী অপদার্থ কিছু লোক আর যারবিযাম মিলে রহবিয়ামের বিরুদ্ধে চএান্ত করেছিলেন| যেহেতু রহবিয়ামের তখন অল্প বয়স এবং য়থেষ্ট অভিজ্ঞতা ছিল না তাই তিনি যারবিযামকে বাধা দিতে পারেননি| 8 “আর এখন তোমরা সকলে মিলে ভাবছো দাযূদের সন্তানদের দ্বারা শাসিত প্রভুর রাজ্যকে যুদ্ধে হারাবে! তোমাদের সঙ্গে অনেক লোক আর দেবতা হিসেবে যারবিযামের তৈরী ঐ ‘সোনার বাছুরগুলো’ আছে| 9 তোমরা প্রভুর যাজক-লেবীয় আর হারোণের বংশধরদের তাড়িয়ে দিয়ে পৃথিবীর অন্যান্য জাতির মতো নিজেরা নিজেদের যাজক বেছে নিয়েছো| এখন যে খুশি সেই একটা ষাঁড় আর সাতটা মেষ এনে এইসব মূর্ত্তিগুলোর যাজক হয়ে বসতে পারে| 10 “কিন্তু আমাদের প্রভুই আমাদের ঈশ্বর| আমরা যিহূদাবাসীরা কখনও প্রভুকে অবজ্ঞা করিনি বা তাঁকে পরিত্যাগ করিনি| আমাদের এখানে কেবলমাত্র হারোণের বংশধররা লেবীয়দের প্রভুর সেবা করেন| 11 তাঁরাই সকাল সন্ধ্যায হোমবলি উত্সর্গ করেন, ধুপধূনো দিয়ে থাকেন এবং মন্দিরের সোনার টেবিলে তাঁরাই রুটি নিবেদন করেন আর সোনার বাতিদানগুলোর যত্ন নিয়ে থাকেন যাতে তাদের আলো কখনও নিভে না যায়| আমরা পরম শ্রদ্ধা ভরে আমাদের প্রভুর সেবা করি, কিন্তু তোমরা তাঁকেই পরিত্যাগ করেছ| 12 প্রভু তাই আমাদের সহায়| তিনিই আমাদের প্রকৃত শাসক| তাঁর যাজকরাও আমাদের অনুগত| তাঁরা যখন কাড়া-নাকাড়া, শিঙা বাজান প্রভুর ভক্তরা তাঁর কাছে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন| শোনো ইস্রাযেলবাসীরা, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো না| তোমরা কখনোই সফল হতে পারবে না|” 13 কিন্তু যারবিযাম অবিযর সেনাবাহিনীর পেছনে লুকিয়ে থাকার জন্য এবং তাদের পেছন থেকে আক্রমণ করবার জন্য কিছু সৈন্য পাঠিয়ে দিলেন| সুতরাং যারবিযামের মুখ্য় সৈন্যদল, অবিযর সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হল এবং তিনি তাঁর পেছনেও অতর্কিত আক্রমণের জন্য সৈন্য মোতাযেন রাখলেন| 14 তখন অবিযর সেনাবাহিনী বুঝতে পারল যে সামনে পেছনে দুদিক থেকেই যারবিযামের সেনারা তাদের ঘিরে ফেলেছে আর যিহূদার লোকরা এবং প্রভুর যাজকরা সকলে মিলে শিঙা বাজাচ্ছে, প্রভুর উদ্দেশ্যে সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করছে| 15 তখন অবিযর সেনারা যুদ্ধের হুংকার দিতে লাগলো এবং শেষ পর্য়ন্ত প্রভু যারবিযামের ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীকেই পরাজিত করলেন| 16 ইস্রায়েলীয়রা, যিহূদাদের থেকে পালাতে লাগলো| 17 ইস্রায়েলের 5,00,000 বাছাই করা সৈন্য অবিয এবং তার সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হল| 18 অর্থাত্ ইস্রায়েলীয়রা পরাজিত হল এবং যিহূদাদের জয় হল| যিহূদারা যুদ্ধে জিতলো কারণ তারা তাদের পূর্বপুরুষের আদরনীয ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করেছিল| 19 অবিযর সেনাবাহিনী যারবিযামের সেনাবাহিনীকে তাড়া করে বের করে দিল এবং যারবিযামের কাছ থেকে বৈথেল, য়িশানা, ইফ্রোণ শহরগুলি এবং চারপাশের গ্রামগুলি দখল করে নিল| 20 অবিযর জীবদ্দশায় যারবিযাম আর তার ক্ষমতা ফিরে পান নি| প্রভু যারবিযামকে আঘাত করেছিলেন এবং তিনি মারা গিয়েছিলেন| 21 কিন্তু অবিয এমশঃ শক্তিশালী হয়ে ওঠেন| তিনি 14 জন মহিলাকে বিয়ে করেন আর তাঁর 22 জন পুত্র ও 16 জন কন্যা হয়েছিল| 22 অবিয যা কিছু করেছিলেন এবং যেরকম ব্যবহার করেছিলেন তা ভাব্বাদী ইদ্দোরের লেখা কাহিনী থেকে জানতে পারা যায়|
1 অবিযর মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাহিত করার পর অবিযর পুত্র রাজা আসা তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন| আসার রাজত্বকালে দেশে দশ বছরের জন্য শান্তি বিরাজ করেছিল| 2 আসা নিষ্ঠাভরে তাঁর প্রভুর সেবা করেছিলেন| 3 তিনি বিদেশীদের বেদী এবং উচ্চস্থলগুলি সরিয়ে দিলেন এবং তিনি পাথরের মূর্ত্তিগুলি এবং আশেরার খুঁটিগুলি ভেঙ্গে দিলেন| 4 তিনি লোকদের তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের বিধি এবং আদেশসমূহ পালন করতে বলেছিলেন| 5 আসা যিহূদার সবকটি শহরের উঁচু বেদীগুলি এবং সূর্য় মূর্ত্তিগুলি ভেঙ্গে দিয়েছিলেন| যে কারণে প্রভুর আশীর্বাদে তাঁর রাজত্বকালে রাজ্যের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করতো| 6 শান্তির সময় আসা শহরগুলোকে শক্তিশালী করেছিলেন যখন দেশ যুদ্ধ থেকে মুক্ত ছিল, কারণ প্রভু তাকে শান্তি দিয়েছিলেন| 7 আসা যিহূদার লোকদের ডেকে বললেন, “এসো আমরা এই সব শহরগুলো পোক্ত করে বানিয়ে এগুলোর চারপাশ দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দিই| তারপর প্রহরা স্তম্ভ আর গরাদ বসানো দরজা বানাই| আমাদের প্রভুকে অনুসরণ করার জন্যই আজ এই শহর আমাদের হয়েছে| প্রভু আমাদের শান্তি দিয়েছেন|” আসা ও তাঁর প্রজারা তাঁদের এই কাজে সফল হয়েছিলেন| 8 আসার সেনাবাহিনীতে যিহূদা জনগোষ্ঠীর মোট 3,00,000 বল্লমধারী সেনা ও বিন্যামীন জনগোষ্ঠীর 2,80,000 ধনুর্ধর সেনা ছিল| যিহূদার সৈনিকরা বল্লম ও ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করতেন| বিন্যামীনের সৈনিকরা ছোট ছোট ঢাল এবং তীরধনুক নিয়ে যুদ্ধ করতে পারতেন| এঁরা সকলেই ছিলেন সাহসী ও বীর য়োদ্ধা| 9 কূশ দেশের সেরহ 10,00,000 সেনা ও 300 রথ নিয়ে আসার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসে মারেশা নগর পর্য়ন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন| 10 আসাও তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে মারেশার সফাথা উপত্যকায এসে উপস্থিত হলেন| 11 আসা তাঁর প্রভু ঈশ্বরকে ডেকে বললেন, “হে প্রভু, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্বলদের একমাত্র তুমিই সাহায্য করতে পারো|আমাদের প্রভু, ঈশ্বর তুমি আমাদের সহায় হও| আমরা তোমার ওপর নির্ভর করছি| প্রভু তোমার নাম নিয়ে আমরা এই বিশাল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি| তুমি আমাদের ঈশ্বর| দেখো, তোমার সেনাবাহিনীকে কেউ যেন হারাতে না পারে|” 12 প্রভু তখন আসার সেনাবাহিনীর হাতে কূশ দেশের সেনাবাহিনীর পরাজয় সাধন করলেন| সেই কূশ সেনারা পালিয়ে গেল| 13 আসার সেনারা তাদের ধাওযা করে গরার পর্য়ন্ত তাড়া করল| যুদ্ধে প্রভুর বাহিনীর এতো বেশী সংখ্য়ক কূশ সেনা মারা গিয়েছিল যে তাদের পক্ষে আর একত্রিত হয়ে বাহিনী তৈরী করে যুদ্ধ করা সম্ভব ছিল না| আসা আর তাঁর সেনাবাহিনী শএুপক্ষের ফেলে যাওয়া বহু মূল্যবান জিনিষপত্র উদ্ধার করে দখল করলেন| 14 তারা গরারের পাশ্ববর্তী সমগ্র শহরকে যুদ্ধে পরাজিত করলেন| এই সব শহরের বাসিন্দারা প্রভুর কোপানলের ভয়ে ভীত ছিল| আসার সেনাবাহিনী এইসব শহর থেকে বহু দুর্মূল্য জিনিসপত্র দখল করে নিয়েছিল| 15 এরপর তারা মেষপালকদের ছাউনি আক্রমণ করে সেখান থেকে বহু সংখ্য়ক মেষ ও উট কেড়ে নিয়ে আবার জেরুশালেমে ফিরে গেল|
1 এখন ঈশ্বরের আত্মা ওবেদের পুত্র অসরিয়র ওপর এল| 2 তিনি আসার সঙ্গে দেখা করে বললেন, “আসা আর যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত লোকরা তোমরা শোনো! তোমরা যদি প্রভুকে অনুসরণ করো তিনি তোমাদের সহায় থাকবেন| তোমরা যদি সত্যিই তাঁকে পেতে চাও, তোমরা তাঁকে পাবে| কিন্তু, তোমরা যদি তাঁকে পরিত্যাগ করো, তিনিও তোমাদের পরিত্যাগ করবেন| 3 দীর্ঘকাল ইস্রায়েলে কোনো প্রকৃত ঈশ্বর, কোনো শিক্ষক, যাজক বা বিধি ছিল না| 4 কিন্তু যখন ইস্রায়েলীয়রা সঙ্কটের সন্মুখীন হল, তারা আবার প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের দিকে মুখ ফিরিযে তাকালো| তারা তাঁকে খুঁজলো এবং তিনি তাদের তাকে খুঁজতে দিলেন| 5 সেই সমযে, সমস্ত জাতিগুলোর মধ্যে একটি বিরাট অশান্তি চলছিল| যে কোন একজন ব্যক্তির পক্ষে নিরাপদে চলাফেরা করা প্রায অসম্ভব ছিল| 6 জাতিগুলি অপর জাতির সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল, এবং শহরগুলি অন্য শহরগুলির সঙ্গে লড়াই করছিল, যার ফলে সকলেই এক নিদারুণ তাণ্ডবের মধ্যে ছিল, কারণ ঈশ্বর সমস্ত রকম অশান্তি দিয়ে তাদের ওপর আঘাত হেনেছিলেন| 7 কিন্তু শোনো আসা, তুমি আর যিহূদা ও বিন্যামীনের লোকেরা সবরকম পরিস্থিতিতেই দৃঢ় থেকো| কখনও কোনো দুর্বলতা প্রকাশ করো না| তোমাদের এই দৃঢ় থাকার উপযুক্ত প্রতিদান তোমরা নিশ্চয়ই পাবে|” 8 আসা ওবেদের এইসব কথা শুনে খুবই অনুপ্রাণিত বোধ করলেন| তিনি যিহূদার ও বিন্যামীনের সমগ্র অঞ্চল থেকে ও তাঁর দখল করা ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের সমস্ত শহরগুলি থেকে যাবতীয় ঘৃণ্য মূর্ত্তিগুলি সরিয়ে দিলেন| প্রভুর মন্দিরের দালানের সামনের প্রভুর বেদীটিও তিনি মেরামত্ করলেন| 9 এরপর, আসা যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত লোককে ও ইফ্রয়িম, মনঃশি ও শিমিযোন পরিবারগোষ্ঠী যারা ইস্রাযেল ত্যাগ করে যিহূদায় বাস করতে গিয়েছিলেন তাদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করলেন| তাদের মধ্যে অনেকেই প্রভুকে আসার পক্ষ নিতে দেখেই ইস্রাযেল ত্যাগ করে গিয়েছিল| 10 আসা আর এই সমস্ত লোকরা তাঁর রাজত্বের 15তম বছরের তৃতীয় মাসে জেরুশালেমে একত্রিত হল| 11 সেই সময় তারা তাদের শএুদের কাছ থেকে আনীত লুট দ্রব্য থেকে প্রভুর উদ্দেশ্যে 700 ষাঁড় এবং 7,000 মেষ ও ছাগল উত্সর্গ করলেন| 12 সেই সমযে তাঁরা সর্বান্তঃকরণে প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের সেবা করবেন বলে তাঁদের নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করলেন| 13 ঠিক হল যে ব্যক্তি প্রভু ঈশ্বরের সেবা করতে প্রতিবাদ করবে তা সে য়তো গণ্যমান্য হোক বা সাধারণ কেউ হোক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে| এমনকি মহিলা হলেও তাকে মার্জনা করা হবে না| 14 তারপর আসা ও সবাই মিলে সমস্বরে প্রভুর সামনে শপথ করলো এবং শিঙা ও কাড়া-নাকাড়া বাজালো| 15 অতএব যিহূদার সমস্ত লোক আনন্দ করল কারণ তারা সর্বান্তঃকরণে একটি শপথ নিল, সম্পূর্ণ বাসনা নিয়ে তাঁর অনুসরণ করেছিল এবং তাঁকে খুঁজে পেয়েছিল| তাই প্রভু তাদের সারা দেশে শান্তি দিয়েছিলেন| 16 রাজা আসা তাঁর মা মাখাকে রাণীর পদ থেকে অপসারণ করেছিলেন যেহেতু তিনি আশেরা মূর্ত্তির জন্য পূজার বস্তু হিসাবে ভয়ঙ্কর খুঁটিগুলোর একটা নিজে পুঁতেছিলেন| তিনি সেই খুঁটিটা উপড়ে ফেলে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে কিদ্রোণ নদীতে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিলেন| 17 যিহূদা থেকে উঁচু বেদীগুলো সরানো না হলেও আসা আজীবন সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন| 18 এছাড়াও আসা ঈশ্বরের মন্দিরে তাঁর ও তাঁর পিতার পক্ষ থেকে বহু মূল্যবান সোনা ও রূপোর সামগ্রী দান করেছিলেন| 19 আসার রাজত্বের 35 বছর পর্য়ন্ত কোনো যুদ্ধ হয় নি|
1 আসার রাজত্বের 36 বছরের মাথায় ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদা আক্রমণ করেছিলেন| তিনি রামা শহরটি নির্মাণ করে শহরটিকে দুর্গে পরিণত করেছিলেন, যাতে উত্তরের রাজ্যগুলির লোকরা যিহূদার রাজা আসার কাছে না যায়| 2 তখন আসা প্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ থেকে সোনা ও রূপো নিলেন এবং দম্মেশকে অরাম দেশের রাজা বিন্হদদের কাছে দূত মারফত্ তা পাঠালেন, ও বললেন, 3 “আমার পিতা ও আপনার পিতার মধ্যে যেরকম চুক্তি হয়েছিল, চলুন আমরাও নিজেদের মধ্যে সেরকম একটা চুক্তি করি| আমি আপনার কাছে সোনা ও রূপো পাঠাচ্ছি| পরিবর্তে আপনি ইস্রাযেলরাজ বাশার সঙ্গে আপনার চুক্তি ভঙ্গ করুন যাতে তিনি আমাকে আর বিরক্ত না করেন এবং আমাকে নিজের মতো থাকতে দেন|” 4 বিন্হদদ রাজা আসার প্রস্তাবে রাজী হয়ে ইস্রায়েলের শহরগুলো আক্রমণ করার জন্য তাঁর সেনাবাহিনীর সেনাপতিদের নির্দেশ দিলেন| এইসব সেনাপতিরা ইযোন, দান, আবেল-মযিম ও নপ্তালি শহরগুলি, যেখানে খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা হতো আক্রমণ করলেন| 5 যখন বাশা এই আক্রমণের খবর পেলেন তিনি রামার দুর্গ বানানোর কাজ বন্ধ করে চলে যেতে বাধ্য হলেন| 6 তখন আসা যিহূদার সমস্ত পুরুষদের নিয়ে বাশা রামা নগর বানানোর জন্য যে সব পাথর আর কাঠ ব্যবহার করেছিলেন, সেইগুলো নিয়ে এলেন এবং গেবা ও মিস্পা দুটো দুর্গসহ শহর তৈরী করলেন| 7 এসমযে ভাব্বাদী হনানি যিহূদার রাজা আসার সঙ্গে দেখা করতে এসে বললেন, “আসা তুমি সাহায্যের জন্য তোমার প্রভু ঈশ্বরের ওপর নয় অরাম রাজের ওপর নির্ভর করেছিলে| এই কারণে, সিরিযার রাজার সৈন্যদলের ওপর তুমি তোমার নিয়ন্ত্রণ হারাবে| 8 কূশীয় ও লূবীযদের বহু রথ ও অশ্বারোহী সৈন্যসহ বিশাল সেনাবাহিনী ছিল, কিন্তু তুমি প্রভুর ওপর নির্ভর করেছিলে বলে তিনি তোমাকে ওদের পরাজিত করতে দিয়েছিলেন| 9 সমস্ত পৃথিবীতে খুঁজে বেড়ায প্রভুর দৃষ্টি, যে সমস্ত ব্যক্তি তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত, তিনি তাদের মধ্য দিয়েই তাঁর ক্ষমতা প্রদর্শন করেন| আসা তুমি মূর্খের মতো কাজ করেছো অতএব এরপর থেকে তোমায় শুধুই যুদ্ধ করে যেতে হবে|” 10 একথা শুনে, আসা হনানির ওপর রেগে গিয়ে তাঁকে কারাগারে পুরে দিলেন এবং কযেকজনের সঙ্গে আসা নিষ্ঠুর ব্যবহারও করেছিলেন| 11 আসা তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি যা কিছু করেছিলেন সেসবই যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 12 তাঁর রাজত্বের 39 বছরের মাথায় আসার পাযে মারাত্মক ধরণের রোগ হয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি প্রভুর সাহায্য প্রার্থনা না করে শুধুমাত্র ডাক্তারদের দিয়েই চিকিত্সা করিযেছিলেন| 13 ফলস্বরূপ 41 বছর রাজত্ব করার পর অবশেষে তাঁর মৃত্যু হল| 14 মৃত্যুর পর আসাকে তাঁর পূর্বপুরুষদের পাশে দায়ূদ নগরীতে তাঁর জন্য বানিয়ে রাখা সমাধিস্তূপে সমাহিত করা হল| লোকরা সমাধিটিকে বিভিন্ন ধরণের মশলাপাতি ও সুগন্ধী আতরে ভরিয়ে দিয়েছিল এবং তাঁর সম্মানার্থে এক বিশাল আগুন বালিয়েছিল|
1 আসার জায়গায় যিহূদার নতুন রাজা হলেন তাঁর পুত্র যিহোশাফট| ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যিহোশাফট যিহূদাকে সুদৃঢ় করেছিলেন| 2 যিহূদার যে সমস্ত শহরকে দুর্গে পরিণত করা হয়েছিল সেই সবকটি শহরে তিনি সেনাবাহিনী মোতাযেন করেছিলেন| এছাড়া তিনি যিহূদায় এবং তাঁর পিতা আসার দখল করা ইফ্রয়িমের শহরগুলিতেও সৈন্যবাহিনী মোতাযেন করেছিলেন| 3 প্রভু য়িহোশাফটের সহায় হয়েছিলেন কারণ তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দাযূদের মতোই বাধ্যভাবে জীবনযাপন করতেন এবং বাল মূর্ত্তিসমূহের পূজো করেন নি| 4 পরিবর্তে তিনি তাঁর পিতা, আসার ঈশ্বরকে অনুসরণ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলের উত্তরাঞ্চলের লোকদের মতো জীবনযাপন করেন নি| যিহোশাফট প্রভুর বিধি ও নির্দেশ অনুযায়ীজীবনযাপন করতেন| 5 প্রভু তাই যিহূদা রাজ্যে য়িহোশাফটের ক্ষমতাকে দৃঢ় করেছিলেন| সমস্ত লোক তাঁর জন্য উপহার ও উপঢৌকন আনত, সে কারণে তিনি বহু খ্যাতি ও সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন| 6 প্রভুর আজ্ঞানুবর্তী হয়ে জীবনযাপন করতে যিহোশাফট কৃতসংকল্প ছিলেন| তিনি ভণ্ড মূর্ত্তি আশেরার খুঁটি ও যাবতীয় উঁচু পূজোর বেদী নির্মূল করেছিলেন| 7 যিহোশাফট তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে যিহূদার শহরগুলিতে শিক্ষাদানের জন্য তাঁর বিন্-হযিল, ওবদিয, সখরিয়, নথনেল, মীখায় প্রমুখ আধিকারিকদের পাঠান| 8 এঁদের সঙ্গে তিনি কিছু লেবীয় পাঠিয়েছিলেন| তারা হল: শময়িয়, নথনিয, সবদিয়, অসাহেল, শমীরামোত্, য়িহোনাথন, অদোনিয, টোবিয এবং টোব্-অদনীয এবং যাজক ইলীশামা ও যিহোরাম| 9 এঁরা সকলে মিলে যিহূদার সমস্ত শহর পর্য়টন করতে করতে প্রভুর বিধিপুস্তক অনুযায়ীলোকেদের শিক্ষাদান করেছিলেন| 10 যিহূদার চারপাশের অঞ্চলের বসবাসকারী লোকরা প্রভুর ভয়ে ভীত থাকায় য়িহোশাফটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি| 11 কিছু পলেষ্টীয় ব্যক্তি য়িহোশাফটের জন্য রূপো ও অন্যান্য উপহার এনেছিলেন কারণ তারা তাঁর ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন ছিল| আরবীযরা যিহোশাফটকে 7,700টি মেষ ও 7,700টি ছাগল উপহার দিয়েছিল| 12 যিহোশাফট এমে এমে আরো শক্তি সঞ্চয় করেন এবং যিহূদার প্রত্যেকটা শহরে দুর্গ ও গোলাঘর বানান| 13 এই সমস্ত শহরে তিনি নিয়মিত দৈনন্দিন ব্যবহার্য় জিনিসপত্র পাঠাতেন| এছাড়া তিনি জেরুশালেমে যুদ্ধ বিদ্য়ায পারদর্শী সৈনিক রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন| 14 এই সমস্ত সৈনিকদের নাম তাদের পরিবারগোষ্ঠীর ইতিহাস থেকে জানতে পারা যায়|সৈনিকদের মধ্যে যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী থেকে অদন ছিলেন 3,00,000 সেনার অধ্যক্ষ| 15 য়িহোহাননের অধীনে ছিল 2,80,000 সেনা| 16 সিখির পুত্র অমসিয, প্রভুর সেবায একজন স্বেচ্ছাসেবক, 2,00,000 ধনুর্ধর সেনার সেনাপতি ছিলেন| 17 বিন্যামীনের জাতি থেকে সেনাপতি ইলিয়াদার অধীনে ছিল 2,00,000 ধনুর্ধর সৈন্য| এরা সকলে তীরধনুক ও ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করতো| ইলিয়াদা নিজেও ছিলেন সাহসী য়োদ্ধা| 18 য়িহোশাফটের অধীনে ছিল 1,80,000 পারদর্শী য়োদ্ধা| 19 এরা ছাড়াও রাজা য়িহোশাফটের অধীনে যিহূদার প্রত্যেকটা দুর্গে আরো বহু লক্ষ সৈনিক কাজ করতেন|
1 যিহোশাফট প্রভুত পরিমাণে সম্পদ ও সম্মানের অধিকারী হয়েছিলেন| তিনি ঐ দুটি রাজ্যের মধ্যে একটি সন্ধি স্থাপনের জন্য রাজা আহাবের সঙ্গেও একটি ব্বৈাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন| 2 কযেকবছর পরে যখন তিনি শমরিয়া শহরে রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আহাব তাঁর ও তাঁর সঙ্গের লোকদের সম্মানার্থে বহু মেষ ও গরু বলিদান করেন| আহাব যিহোশাফটকে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে উত্সাহ দিয়েছিলেন| 3 আহাব যিহোশাফটকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি আমার সঙ্গে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে যাবেন?” যিহোশাফট, আহাবকে উত্তর দিয়েছিলেন, “আপনার আর আমার মধ্যে কোনো পার্থক্য় নেই, আমার প্রজারা তো আপনারও প্রজা| আমরা অবশ্যই আপনার সঙ্গে যুদ্ধে য়োগ দেব|” 4 যিহোশাফট আরো বললেন, “প্রথমে প্রভুর সন্মতি চাওযা যাক|” 5 রাজা আহাব তাই 400 জন ভাব্বাদীকে জড়ো করলেন| তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা কি রামোত্-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতে পারি?” তখন ভাব্বাদীরা বললেন, “যান ঈশ্বর আপনাদের রামোত্-গিলিয়দকে হারাতে সাহায্য করবেন|” 6 কিন্তু যিহোশাফট একথায় সন্তুষ্ট না হয়ে বললেন, “আমার প্রভুর কোনো ভাব্বাদী কি এখানে উপস্থিত আছেন? তাহলে তাঁর মাধ্যমে আমাদের প্রভুর সম্মতি নেওয়া উচিত্ |” 7 তখন রাজা আহাব যিহোশাফটকে জানালেন, “একজন আছেন য়াঁর মাধ্যমে আমরা প্রভুকে রশ্ন করতে পারি| কিন্তু এই লোকটাকে আমার মোটেই পছন্দ নয় কারণ ও কখনও প্রভুর কাছ থেকে জেনে আমায় কোনো ভাল কথা বলেনি| ও সবসময় আমার সম্পর্কে খারাপ ভবিষ্যদ্বাণী করে| এ হল য়িম্লের পুত্র মীখায়|” যিহোশাফট বললেন, “আহাব আপনার মুখে একথা শোভা পায় না|” 8 রাজা আহাব তখন তাঁর এক কর্মচারীকে ডেকে বললেন, “তাড়াতাড়ি গিয়ে য়িম্লের পুত্র মীখায়কে এখানে ডেকে নিয়ে এসো” 9 ইস্রাযেলরাজ আহাব এবং যিহূদারাজ যিহোশাফট দুজনেই তখন তাঁদের রাজকীয পোশাক পরে শমরিয়া শহরের সামনের দরজার কাছে এক শস্য মাড়াইযের জায়গায় নিজেদের সিংহাসনে বসেছিলেন| ঐ 400 জন ভাব্বাদী তাদের সামনে ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন| 10 কনানার পুত্র সিদিকিয লোহা দিয়ে কযেকটা শিং বানিয়ে বলল, “প্রভু বলেছেন: ‘ধ্বংস না হওয়া পর্য়ন্ত আপনারা অরামীয়দের এই শিংগুলি দিয়ে বিদ্ধ করে যাবেন|”‘ 11 সমস্ত ভাব্বাদীরা একই সুরে কথা বলতে লাগলেন| তারা বললেন, “আপনারা রামোত্-গিলিয়দে যান| প্রভুর সহায়তায আপনারা নিশ্চয়ই অরামীয়দের পরাজিত করতে পারবেন|” 12 এদিকে বার্তাবাহকরা মীখায়কে গিয়ে বললেন, “শুনুন মীখায়, সমস্ত ভাব্বাদীরা রাজাদের যুদ্ধ জয়ের কথা শুনিয়েছেন| আপনিও এবার গিয়ে ভাল ভাল কথা বলুন|” 13 প্রত্যুত্তরে মীখায় বললেন, “জীবন্ত প্রভুর দিব্য, আমার ঈশ্বর যা বলেন আমি তাই বলব|” 14 তারপর মীখায় রাজা আহাবের কাছে এসে উপস্থিত হলেন| রাজা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “মীখায় আমরা কি রামোত্-গিলিয়দে যুদ্ধ করতে যেতে পারি?” মীখায় উত্তর দিলেন, “যান আক্রমণ করুন| ঈশ্বর আপনাদের শএুকে পরাজিত করতে সাহায্য করবেন|” 15 রাজা আহাব তখন মীখায়কে বললেন, “বহুবার আমি তোমাকে বলেছি, প্রভুর নামে আমাকে সব সমযে সত্যি কথা বলবে!” 16 একথা শুনে মীখায় বললেন, “আমি দেখলাম ইস্রায়েলের লোকরা মেষপালক ছাড়া মেষের পালের মত পাহাড়গুলোর ওপর ছড়িয়ে পড়েছে| প্রভু বলেছেন: ‘এদের নেতৃত্ব দেবার মতো কেউ নেই, প্রত্যেকে যে যার বাড়িতে ফিরে যাক|”‘ 17 ইস্রায়েলের রাজা আহাব যিহোশাফটকে বললেন, “দেখেছেন, আমি আগেই আপনাকে বলেছিলাম মীখায় কখনও আমার সম্পর্কে ভাল কিছু বলেন না| শুধুই আমার অপবাদ দেন|” 18 মীখায় বললেন, “প্রভুর বার্তা শুনুন| আমি প্রভুকে তাঁর সিংহাসনে বসে থাকতে দেখেছি আর স্বর্গের সেনাবাহিনী তাঁকে দুদিকে ঘিরে রেখেছিল| 19 প্রভু জিজ্ঞেস করলেন: ‘তোমাদের মধ্যে কে রামোত্-গিলিয়দে যাবে এবং আহাবকে প্রতারণা করে হত্যা করবে?’ তখন প্রভুর চারপাশে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তাদের একেকজন একেক রকম কথা বলতে লাগলেন| 20 শেষ অবধি এক আত্মা এসে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে বললো, ‘আমি যাবো আহাবের সঙ্গে ছলনা করতে|’ প্রভু সেই আত্মাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি ভাবে?’ 21 তখন সেই আত্মা বললো, ‘আমি যাবো এবং আহাবের ভাব্বাদীদের ভর করব এবং তাদের দিয়ে মিথ্য়া ভবিষ্যদ্বাণী করাব|’ তখন প্রভু বললেন, ‘যাও আহাবকে ছলনা করার কাজে তুমি অবশ্যই সফলকাম হবে|’ 22 “দেখুন আহাব, প্রভু আপনার ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে মিথ্য়া ভাষণ করিযেছেন| আসলে প্রভু আপনার অমঙ্গল সাধন করতে চান|” 23 তখন কনানার পুত্র সিদিকিয গিয়ে মীখায়ের মুখে আঘাত করে বলল, “মীখায়, আমাকে বল প্রভুর আত্মা কেমন করে আমাকে ছেড়ে গেল এবং তার বদলে তোমার সঙ্গে কথা বলল?” 24 মীখায় উত্তর দিলেন, “সিদিকিয এ কথার উত্তর তুমি তখন পাবে যখন নিজের প্রাণ বাঁচাতে তোমায একটা চোরা কুঠুরিতে গিয়ে লুকোতে হবে|” 25 রাজা আহাব হুকুম দিলেন, “মীখায়কে আটক কর এবং তাকে শহরের শাসনকর্তা আমোনার কাছে এবং রাজপুত্র যোয়াশের কাছে পাঠিয়ে দাও| 26 আর ওদের জানিয়ে দাও আমি মীখায়কে কারাগারে পুরতে বলেছি| আমি যুদ্ধ থেকে নিরাপদে ফিরে না আসা পর্য়ন্ত যেন ওকে জল আর শুকনো রুটি ছাড়া আর কিছু খেতে না দেওয়া হয়|” 27 প্রত্যুত্তরে মীখায় বললেন, “আহাব আপনি যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসেন তাহলে বুঝবো প্রভু কোনোদিনই আমার মুখ দিয়ে কোনো কথা বলেননি| তোমরাও সকলে মন দিয়ে আমার একথা শুনে রাখো|” 28 অতঃপর ইস্রায়েলের রাজা আহাব আর যিহূদার রাজা যিহোশাফট দুজনে মিলে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে গেলেন| 29 রাজা আহাব যিহোশাফটকে বললেন, “যুদ্ধে যাবার আগে আমি ছদ্মবেশ পরে যেতে চাই| আপনি আপনার পোশাকেই চলুন|” তখন ইস্রায়েলের রাজা আহাব ছদ্মবেশ ধারণ করলেন এবং তারপর দুজনে যুদ্ধে গেলেন| 30 অরামের রাজা তাঁর রথবাহিনীর সেনাপতিদের আদেশ দিলেন, “কোন সৈন্যর সঙ্গে যুদ্ধ কর না| তোমরা শুধু ইস্রায়েলের রাজা আহাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো|” 31 রথ বাহিনীর সেনাপতিরা প্রথমে যিহোশাফটকে দেখে ভাবলেন, “ঐ বুঝি ইস্রায়েলের রাজা আহাব!” তারা সকলে মিলে যেই যিহোশাফটকে আক্রমণ করতে গেল যিহোশাফট সাহায্যের জন্য প্রভুকে চিত্কার করে ডাকলেন| ঈশ্বর রথের সেনাপতিদের অভিমুখ য়িহোশাফটের দিক থেকে ঘুরিযে দিলেন| 32 যখন রথের সেনাপতিরা যিহোশাফটকে দেখল তারা হৃদয়ঙ্গম করল যে তিনি আসলে ইস্রায়েলের রাজা আহাব নন, তাই তারা আর তাঁকে তাড়া করলো না| 33 ইতিমধ্যে, একজন সেনা তার ধনুক থেকে একটা তীর লক্ষ্যহীনভাবে ছুঁড়েছিল এবং সেই তীরটা ইস্রায়েলের রাজা আহাবের গায়ে গিয়ে বিঁধলো| তীরটা তাঁর শরীরের এমন জায়গায় বিঁধল যেখানটা বক্ষত্রাণ দিয়ে ঢাকা ছিল না| আহাব তাঁর রথের সারথীকে বললেন, “রথের মুখ ঘোরাও এবং আমাকে যুদ্ধ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাও| আমি আহত|” 34 সেদিন যুদ্ধ এমশঃ প্রচণ্ড হয়ে উঠল| সন্ধ্যা পর্য়ন্ত রাজা আহাব তাঁর রথে অধিষ্ঠিত থেকে যুদ্ধের সামনা করলেন| তারপর সূর্য়াস্তের সময় তিনি মারা গেলেন|
1 যিহূদার রাজা যিহোশাফট অক্ষত অবস্থায় জেরুশালেমে তাঁর বাড়িতে ফিরে এলেন| 2 ভাব্বাদী হনানির পুত্র যেহূ য়িহোশাফটের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| তিনি যিহোশাফটকে বললেন, “আপনি কেন যেসব ব্যক্তিরা প্রভুকে ঘৃণা করেন সেই সমস্ত অসত্ ব্যক্তিদের সাহায্য করেছেন? এ কারণেই প্রভু আপনার ওপর রুদ্ধ হয়েছেন| 3 তা সত্ত্বেও আপনার মধ্যে এখনও ভাল কিছু আছে যেহেতু আপনি সর্বান্তঃকরণে ঈশ্বরকে খুঁজতে দৃঢ়সংকল্প করেছেন এবং এদেশ থেকে আশেরার খুঁটিগুলোও সরিয়ে দিয়েছেন|” 4 জেরুশালেমে থাকাকালীন যিহোশাফট আবার বের্-শেবা থেকে পার্বত্য দেশ ইফ্রয়িম পর্য়ন্ত লোকদের সঙ্গে মিশলেন এবং তাদের প্রভুর কাছে, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের কাছে ফিরিযে আনলেন| 5 যিহোশাফট যিহূদার প্রত্যেকটা দুর্গের জন্য আলাদা আলাদা বিচারক নির্বাচন করে তাঁদের বলেছিলেন, 6 “আপনারা অত্যন্ত সতর্কভাবে নিজেদের কাজ করবেন| কারণ আপনারা যে বিচার করবেন তা কোনো ব্যক্তির জন্য নয়, বয়ং প্রভুর হয়ে আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্তগুলি লোকদের দেবেন| আর আমি নিশ্চিত, যখন আপনারা কোন সিদ্ধান্ত নেবেন প্রভু বয়ং আপনাদের সহায় হবেন| 7 প্রভু কিন্তু নিরপেক্ষ তাঁর চোখে সকলেই সমান| ঘুষ দিয়ে তাঁর বিচার বদলানো যায় না| আপনারা সকলে এ কথা মাথায় রেখে, প্রভুর শক্তি ও রোধর কথা স্মরণ করে নিজেদের কাজ করবেন|” 8 জেরুশালেমে বিচারক হিসেবে কাজ করার জন্য যিহোশাফট কযেকজন লেবীয়, কিছু যাজক ও ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠী নেতাদের বেছে নিয়েছিলেন| এদের ওপর দায়িত্ব ছিল প্রভুর বিধি নির্দেশ মেনে জেরুশালেমের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যার প্রতিবিধান করা| 9 যিহোশাফট এদের বলেছিলেন, “প্রভুর ভয়ে তোমাদের কর্ত্তব্য়ে তোমাদের একনিষ্ঠ হতে হবে, সমস্ত হৃদয় দিয়ে তা করতে হবে| 10 তোমাদের বিভিন্ন ধরণের মামলা যেমন খুন-জখম, জুযাচুরি, আইন, বিধি-নির্দেশ অমান্য করার সন্মুখীন হতে হবে| আর এসব মামলা আসবে এই সব শহরে বসবাসকারী তোমাদেরই সহ নাগরিকদের মধ্যে থেকে| তোমরা সবসমযেই লোকদের প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করার বিষযে সতর্ক করে দেবে| তোমরা যদি নিজেদের কর্তব্য়ের ব্যাপারে নিষ্ঠাবান না হও তাহলে প্রভুর রোধ তোমাদের এবং তোমাদের সহ নাগরিকদের ওপর গিয়ে পড়বে| কিন্তু যা বললাম তা যদি তোমরা করো তাহলে ভয়ের কোনো কারণ নেই| 11 সর্বোচচ পদস্থ যাজক অমরিয ধর্ম ও প্রভু সংএান্ত যাবতীয় মামলা নিষ্পত্তির সমযে তোমাদের সাহায্য করবেন| রাজার বিষযে মামলার কাজকর্মে তোমরা ইশ্ামাযেলের পুত্র, যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর অন্যতম নেতা, সবদিয়র কাছ থেকে সাহায্য পাবে| লেবীয়রা লেখকের কাজ করবে| সাহসে ভর করে, নিজেদের ওপর আস্থা রেখে তোমরা তোমাদের কাজ করো| প্রার্থনা করি, প্রভু যেন ন্যাযের পক্ষে থাকেন|”
1 কিছু কাল পরে, মোয়াবীয়, অম্মোনীয় ও মাযোনীয ব্যক্তিরা য়িহোশাফটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছিলেন| 2 কিছু লোক এলো এবং যিহোশাফটকে বলল, “মৃত সাগরের ওপারে, ইদোম থেকে একটা বড় সড় সৈন্যদল যাত্রা শুরু করেছে| দলটা কিন্তু ইতিমধ্যেই হত্সসোন তামর পর্য়ন্ত এসে গেছে|” (হত্সসোন তামরকে ঐন্-গদীও বলা হয়ে থাকে|) 3 যিহোশাফট ভীত হলেন এবং প্রভুর সাহায্য চাইবেন বলে ঠিক করলেন| তিনি যিহূদার সমস্ত লোককে উপবাস করতে আদেশ দিলেন| 4 যিহূদার প্রত্যেক শহর থেকে লোকরা প্রভুর কাছ থেকে সাহায্য চাইবার জন্য জড়ো হলো| 5 যিহোশাফট প্রভুর মন্দিরের নতুন উঠোনে যিহূদা ও জেরুশালেমের সমবেত লোকদের সামনে দাঁড়ালেন এবং 6 বললেন, “হে প্রভু! আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তুমিই স্বর্গের অধীশ্বর| বিশ্বের প্রত্যেক জাতি ও দেশের ভবিতব্য়ের তুমি নিযামক| তুমি সর্বশক্তিমান, কেউ তোমার বিরোধিতা করতে পারে না| 7 হে ঈশ্বর, এই দেশের লোকদের তুমি এই স্থান পরিত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলে এবং তারা ইস্রায়েলের লোকদের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল| তুমি বয়ং এই ভূখণ্ড চিরকালের জন্য তোমার বন্ধু অব্রাহামের উত্তরপুরুষদের হাতে তুলে দিয়েছিলে| 8 তারা এই অঞ্চলে বাস করত এবং এখানে তোমার নামের জন্য একটি পবিত্র স্থান নির্মাণ করেছে| 9 তারা বলেছিল, ‘যদি কোনদিন কোনো বিপদ আমাদের কাছে আসে- তরবারি, শাস্তি, রোগসমূহ অথবা দুর্ভিক্ষ, আমরা এসে এই মন্দিরের সামনে, প্রভু তোমার সন্মুখে দাঁড়াব| যেহেতু তোমার নাম রযেছে এই মন্দিরে, বিপদের সমযে আমরা চিত্কার করে তোমাকেই ডাকবো আর তখন তুমি আমাদের ডাক শুনবে এবং আমাদের উদ্ধার করবে|’ 10 “কিন্তু এখন অম্মোন, মোযাব আর সেয়ীযের পার্বত্য অঞ্চলের সেইসব অধিবাসীরা এসে ইস্রায়েলের আক্রমণ করতে উদ্যত হয়েছেন যাদের রাজ্য তুমিই বয়ং একদিন ইস্রায়েলীয়দের আক্রমণ করতে দাওনি বলে তারা রক্ষা পেয়েছিল| মিশর থেকে আসার পথে তোমার নির্দেশ মেনে ইস্রায়েলীয়রা সেদিন এদের ধ্বংস করেনি| 11 অথচ দেখো আজ তারা তার কি প্রতিদান দিচ্ছে| তারা তোমার দেওয়া ভূখণ্ড থেকে আমাদের উত্খাত করতে আসছে| 12 হে আমাদের প্রভু ঈশ্বর, তুমি কি এদের শাস্তি দেবে না? এই যে বিপুল সৈন্যবাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছে তার বিরুদ্ধে আমরা ক্ষমতাহীন| আমরা জানি না আমরা কি করব| তাই আমরা তোমার দিকে তাকিযে আছি|” 13 তাই যিহূদার সমস্ত লোকরা তাদের স্ত্রী এবং ছেলেমেয়ে নিয়ে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিল| 14 সেই সময়, প্রভুর আত্মা য়হসীযেলের ওপর ভর করল| য়হসীযেল ছিল সখরিয়র পুত্র; সখরিয় ছিল বনায়ের পুত্র| বনায ছিল য়িযেলের পুত্র এবং য়িযেল ছিল লেবীয় মত্তনিয়ের পুত্র| এরা সবাই ছিল আসফের উত্তরপুরুষ| সেই জমায়েতের মাঝখানে, 15 য়হসীযেল বলল, “যিহূদা ও জেরুশালেমবাসীরা এবং রাজা যিহোশাফট, তোমরা সকলে শোনো| প্রভু বলেন, ‘এই বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে চিন্তা করবার বা ভয় পাবার কোনো দরকার নেই কারণ এই যুদ্ধ তোমাদের নয়, ঈশ্বরের যুদ্ধ| 16 আগামীকাল তোমরা সকলে গিয়ে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে| ওরা সীসের গিরিখাত দিয়ে আসবে এবং তোমরা তাদের য়রূযেল মরুভূমির পূর্বদিকে উপত্যকার প্রান্তে দেখতে পাবে| 17 এই সংঘর্ষে তোমাদের যুদ্ধ করবারও প্রযোজন নেই| তোমাদের শুধু যে যার জায়গায় দৃঢ় চিত্তে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আর দেখো আমি কিভাবে তোমাদের আর যিহূদা ও জেরুশালেমকে রক্ষা করি| চিন্তা করো না| আগামীকালের যুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে যাও এবং প্রভু তোমাদের সহায় হবেন|”‘ 18 যিহোশাফট তখন মুখ নীচের দিকে করে আভূমি আনত হলেন| যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত লোক প্রভুর সামনে আভূমি নত হল এবং প্রভুর উপাসনা করল| 19 কহাত্ ও কোরহ পরিবারগোষ্ঠীর লেবীয়রা উঠে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলো| 20 পরদিন ভোরবেলা য়িহোশাফটের সেনাবাহিনী তকোয মরুভূমি অভিমুখে যাত্রা করলো| তারা রওনা হবার ঠিক আগের মূহুর্তে যিহোশাফট উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমরা, যিহূদা আর জেরুশালেমের লোকরা, শোনো; প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখো তাহলে তোমাদের দেহে ও মনে শক্তি পাবে| তাঁর ভাব্বাণীর ওপর বিশ্বাস রেখো| জয় তোমাদের সুনিশ্চিত|” 21 যিহোশাফট তাঁর লোকদের অনুপ্রেরণা ও নির্দেশ দিতে লাগলেন| তারপর তিনি প্রভুর প্রশংসা ও সৌন্দর্য়্য় বর্ণনার জন্য এবং গাইবার জন্য কযেকজনকে মনোনীত করলেন| তারা সেনাবাহিনীর সামনে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে, প্রভুর প্রশংসা করে গান করল| “প্রভুকে ধন্যবাদ দাও কারণ তাঁর করুণা চিরস্থায়ী|” এই প্রশংসা গান গাইতে গাইতে যেতে লাগলো| 22 ইতিমধ্যে, এরা যখন ঈশ্বরের প্রশংসা সুচক গান করছিল, প্রভু তখন অম্মোনীয, মোয়াবীয় ও সেয়ীরের লোকদের অতর্কিত আক্রমণের জন্য সেনা সাজাচ্ছিলেন| যারা যিহূদা আক্রমণ করতে এসেছিল তারা পরাজিত হল| 23 অম্মোনীয় ও মোয়াবীয়রা সেয়ীরের পার্বত্য অঞ্চলের লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে শুরু করলো এবং তাদের হত্যা করলো| এরপর তারা একদল অপরদলকে হত্যা করলো! 24 যিহূদার লোকরা যুদ্ধের ওপর নজর রাখার জায়গায় এসে পৌঁছনোর পর শএুপক্ষের বিশাল সেনাবাহিনীর সন্ধান করতে গিয়ে চতুর্দিকে শুধুই স্তূপাকার মৃতদেহ দেখতে পেলো| কোন লোকই বেঁচে ছিল না| 25 যিহোশাফট আর তাঁর সেনাবাহিনী ঐসব মৃতদেহের স্তূপের কাছে এলো এবং মৃতদেহগুলোর থেকে বহু দুর্মূল্য জিনিসপত্র যেমন জন্তুজানোযার, অর্থ, পোশাক-পরিচ্ছদ উদ্ধার করে নিয়ে গেল| এতো বেশি জিনিসপত্র সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল যে তা বয়ে নিয়ে যেতে তিনদিন সময় লেগেছিল| 26 চতুর্থ দিনে যিহোশাফট আর তাঁর সেনাবাহিনী বরাখা উপত্যকায উপনীত হয়ে প্রভুকে ধন্যবাদ জানালো| সেই জন্যই এই উপত্যকাকে সেই সময় থেকে “বরাখা উপত্যকা” বলা হয়| 27 এরপর যিহোশাফট যিহূদা আর জেরুশালেমের সবাইকে নেতৃত্ব দিয়ে জেরুশালেমে ফিরিযে নিয়ে গেলেন| প্রভু তাদের শএুকে পরাজিত করেছেন বলে সকলেই খুব খুশি ছিল| 28 বীণা, বাঁশি, শিঙা, কর্তাল বাজিযে তারা জেরুশালেমে এলো এবং প্রভুর মন্দিরে গেল| 29 বয়ং প্রভু ইস্রায়েলের শএুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, এখবর জানতে পেরে অন্যান্য রাজ্যগুলির প্রত্যেকে ভীত হল| 30 সে কারণে য়িহোশাফটের রাজত্বকালে ইস্রায়েলে শান্তি বিরাজ করেছিল| প্রভু সবদিক থেকে তাঁকে শান্তি দিয়েছিলেন| 31 পযত্রিশ বছর বয়সে যিহূদার রাজা হবার পর যিহোশাফট 25 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মাতা অসূবা ছিলেন শিল্হির কন্যা| 32 যিহোশাফট তাঁর পিতা আসার মতোই সত্পথে জীবনযাপন করেছিলেন| তিনি সর্বদাই প্রভুর প্রতি বাধ্য ছিলেন| 33 কিন্তু অন্য মূর্ত্তিদের পূজোর জন্য বানানো উঁচু জায়গাগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয় নি এবং লোকে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের কাছে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে সমর্পণ করেন নি| 34 তাঁর রাজত্বকালে প্রথম থেকে শেষাবধি যিহোশাফট যা কিছু করেছিলেন তা হনানির পুত্র যেহূর লেখা সরকারি নথিপত্রে লেখা আছে, যা পরবর্তীকালে ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত করা হয়| 35 যিহূদার রাজা যিহোশাফট তাঁর রাজত্বের শেষের দিকে ইস্রায়েলের রাজা অহসিয়র সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন| অহসিয় বহু পাপাচরণে লিপ্ত ছিলেন| 36 যিহোশাফট তাঁর সঙ্গে য়ৌথভাবে তর্শীশে যাবার জন্য জাহাজ বানানোর কাজ শুরু করেন| ইত্সিযোন- গেবর শহরে এইসব জাহাজ বানানো হতো| 37 তখন মারেশা থেকে দোদাবাহূর পুত্র ইলীযেষর যিহোশাফটকে বললেন, “তুমি অহসিয়র সঙ্গে হাত মিলিযেছো, তাই প্রভু তোমার জাহাজগুলি ধ্বংস করবেন|” বানানো জাহাজগুলো ভেঙ্গে যায় এবং শেষ পর্য়ন্ত যিহোশাফট বা অহসিয় কেউই আর তর্শীশে জাহাজ পাঠাতে পারেন নি|
1 রাজা য়িহোশাফটের মৃত্যুর পর তাকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর পুত্র যিহোরাম তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন| 2 যিহোরামের ভাইদের নাম হল অসরিয়, য়িহীযেল, সখরিয়, অসরিয়, মীখায়েল আর শফটিয| এঁরা সকলেই ছিলেন যিহূদার ভূতপূর্ব রাজা য়িহোশাফটের সন্তান| 3 যিহোশাফট তাঁর পুত্রদের সবার জন্যই বহু পরিমাণ সোনা, রূপো, দামী দামী জিনিসপত্র, যিহূদার সুরক্ষিত দুর্গসমূহ রেখে গেলেও তিনি তাঁর রাজত্বের ভার দিয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ পুত্র যিহোরামের হাতে| 4 যিহোরাম তাঁর পিতৃদত্ত রাজত্বের শাসনভার গ্রহণ করলেন এবং নিজের ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করলেন| তারপর তরবারির সাহায্যে তাঁর অন্যান্য ভাইদের ও ইস্রায়েলের কিছু নেতাকে হত্যা করলেন| 5 বত্রিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে তিনি মোট 8 বছর জেরুশালেমে শাসন করেন| 6 তিনি ইস্রায়েলের অপরাপর রাজাদের মতো এবং আহাবের কন্যাকে বিয়ে করার পর আহাবের বংশের ধারায জীবনযাপন করেছিলেন| প্রভুর চোখে যা মন্দ তিনি সেই সব কাজ করেছিলেন| 7 কিন্তু, যেহেতু তিনি দাযূদের সঙ্গে চুক্তি কর়েছিলেন, প্রভু দাযূদের বংশ নিঃশেষ করলেন না| প্রভু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, চির দীপ্য়মান প্রদীপের মতো, দাযূদের উত্তরপুরুষদের একজন সর্বদা যিহূদায় শাসন করবে| 8 যিহোরামের রাজত্বকালে ইদোম যিহূদার কর্তৃত্ব থেকে ভেঙ্গে বেরিয়ে নিজেরা নিজেদের রাজা নির্বাচন করেছিল| 9 যিহোরাম তাই তাঁর সমস্ত সেনাপতিসহ সেনা ও রথবাহিনী নিয়ে ইদোম আক্রমণ করতে গিয়েছিলেন| ইদোমীয় সেনাবাহিনী তাঁদের চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেললেও যিহোরাম রাতের অন্ধকারে সেই সৈন্যব্য়ূহ ভেদ করে বেরিয়ে এসেছিলেন এবং ইদোমীয়দের পরাজিত করেছিলেন| 10 সেই থেকে এখন পর্য়ন্ত ইদোম যিহূদার শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে চলেছে| লিব্নার স্থানীয বাসিন্দারা যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন কারণ যিহোরাম তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিলেন| 11 এছাড়াও তিনি যিহূদার পাহাড়গুলিতে উঁচু জায়গায় ভ্রান্ত মূর্ত্তিগুলির জন্য বেদীসমূহ বানিয়েছিলেন| তিনি জেরুশালেমের বাসিন্দাদের ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বস্ত করেছিলেন এবং যিহূদার বাসিন্দাদের বিপথে ঠেলে দিয়েছিলেন| 12 ইতিমধ্যে যিহোরাম ভাব্বাদী এলিযর কাছ থেকে একটি চিঠি পেলেন যাতে লেখা ছিল, “তোমার পূর্বপূরুষ দাযূদের ঈশ্বর বলেছেন: ‘যিহোরাম, তুমি তোমার পিতা য়িহোশাফটের বা যিহূদার রাজা আসার মতো জীবনযাপন করনি| 13 কিন্তু ইস্রায়েলের অপরাপর রাজাদের মতো, তুমি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের আহাবের পরিবারের মত অবিশ্বস্ত করেছ| তুমি তোমার ভাইদের, যারা তোমার চেয়ে ভাল তাদেরও হত্যা করেছ| 14 এই কারণে বয়ং প্রভু তোমার পরিবারের সবাইকে ও তোমার লোকদের ওপর একটি রোগ পাঠিয়ে তোমাকে শাস্তি দেবেন| তিনি তোমার সমস্ত সম্পদ ধ্বংস করবেন| 15 তুমি ভয়ঙ্কর উদর পীড়ায আএান্ত হবে| দিনের পর দিন তোমার অবস্থা খারাপ হতে থাকবে এবং একটা সময় আসবে যখন তোমার অন্ত্রাদি বেরিয়ে আসবে|”‘ 16 প্রভু এরপর পলেষ্টীয় ও কূশ দেশের নিকটস্থ আরবীযদের মন রাজা যিহোরামের বিরুদ্ধে বিষিযে তোলেন| 17 তখন তারা সকলে একত্র হল এবং যিহূদা আক্রমণ করল| তারা যিহোরামের সমস্ত ধনসম্পদ, তার স্ত্রীদের এবং পুত্রদের নিয়ে গেল| যিহোরামের কনিষ্ঠ পুত্র য়িহোযাহস ছাড়া আর কেউই এই আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেলো না| 18 এসব ঘটনার পর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ীপ্রভু রাজা যিহোরামকে দুরারোগ্য উদরপীড়ায আএান্ত করলেন| 19 দুবছর পরে বহু যন্ত্রণাভোগের পর তাঁর নাড়িভুঁড়ি পেট থেকে বেরিয়ে এসে তিনি মারা যান| লোকেরা তাঁর পিতা য়িহোশাফটের মতো যিহোরামের মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানার্থে কোনো য়জ্ঞের আযোজন করেন নি| 20 তাঁর মৃত্যুতে কোনো ব্যক্তিই দুঃখিত হন নি বা শোক প্রকাশ করেন নি| 32 বছর বয়সে রাজা হয়ে আট বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করার পর রাজা যিহোরামের মৃত্যু হল| লোকে তাকে দায়ূদ নগরীতেই কবরস্থ করলো, তবে রাজাদের বিশেষ সমাধি ক্ষেত্রে তারা যিহোরামকে সমাধিস্থ করেনি|
1 যিহোরামের পর, লোকরা তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র অহসিয়কে নতুন রাজা হিসাবে নির্বাচিত করলেন কারণ আরবদের সঙ্গে যারা প্রাসাদ আক্রমণ করেছিল তারা অহসিয় ছাড়া যিহোরামের আর সব পুত্রদের হত্যা করেছিল| কনিষ্ঠ পুত্র হয়েও তিনি রাজত্বের দায়িত্ব পেলেন| 2 অহসিয় 22 বছর বয়সে যিহূদায় রাজা হয়ে মাত্র 1 বছর জেরুশালেম শাসন করেছিলেন|অহসিয়র মাতা অথলিয়া ছিলেন অম্রির কন্যা| 3 অহসিয় আহাব পরিবারের মতোই প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করেছিলেন,কারণ তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তাঁর মাতা তাঁকে পাপপূর্ণভাবে রাজ্য শাসন করতে উপদেশ দিয়েছিলেন| 4 এবং তিনি আহাবের পরিবারের মত প্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করেছিলেন, কারণ তার পিতার মৃত্যুর পর তারাই তার উপদেষ্টা হয়েছিল এবং তারা তাকে নষ্ট করেছিল| 5 তাই, অহসিয় আহাব পরিবারের লোকদের কুপরামর্শ অনুযায়ীজীবনযাপন করত| তাদের পরামর্শতেই অহসিয় রামোত্-গিলিয়দে আহাবের পুত্র য়োরামের সঙ্গে অরামীয় রাজা হসায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যান, যেখানে তিনি আহত হয়েছিলেন 6 এবং সুস্থ হতে য়িষ্রিযেলে গিয়েছিলেন|এরপর, যিহূদার প্রাক্তন শাসক যিহোরামের পুত্র অহসিয়, য়িষ্রিযেলে আহাবের পুত্র য়োরামের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন কারণ য়োরাম আহত হয়েছিলেন| 7 ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযাযী, য়োরামের সঙ্গে অহসিয়র সাক্ষাত্ তাঁর মৃত্যু ঘনিয়ে এনেছিল কারণ যখন তিনি এসেছিলেন, তিনি এবং য়োরাম নিম্শির পুত্র যেহূর সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন যাকে প্রভু আহাবদের শাস্তি দেবার জন্য আহাব বংশ ধ্বংস করতে বেছে নিয়েছিলেন| 8 আহাব বংশের সদস্যদের হত্যা করার পর তিনি যিহূদার নেতাদের এবং অহসিয়র আত্মীযদের যারা তাঁর সেবা করেছিল, তাদের খুঁজে বের করলেন| তাদের তিনি হত্যা করলেন| 9 তারপর যেহূ অহসিয়র সন্ধান শুরু করেছিলেন| তাঁর লোকরা শমরিয়ায় লুকিয়ে থাকা অহসিয়কে ধরে যেহূর কাছে নিয়ে এলো| তাকে হত্যা করে তারা তাকে সমাধিস্থ করলো| তারা বলল, “যিহোশাফট, যিনি সর্বান্তঃকরণে প্রভুকে মেনে চলতেন, ইনি তাঁর নাতি|” এরপর অহসিয়র পরিবার আর যিহূদার রাজ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন নি| 10 অহসিয়র মাতা, রাণী অথলিয়া যখন দেখলেন যে তাঁর নিজের পুত্র অহসিয় মারা গিয়েছে তিনি তখন আদেশ দিলেন যে যিহূদার রাজত্বের উত্তরাধিকারী প্রত্যেককে হত্যা করতে হবে| 11 যিহোরামের কন্যা য়িহোসেবা, যাজক যিহোয়াদার স্ত্রী, অহসিয়র অন্য পুত্ররা নিহত হবার আগে তাঁর পুত্র য়োযাশ আর তাঁর ধাইমাকে শোবার ঘরে লুকিয়ে রেখেছিলেন| তিনি এরকম করেছিলেন যাতে অথলিয়া য়োযাশকে হত্যা করতে না পারেন| 12 প্রভুর মন্দিরে যাজকদের সঙ্গে য়োযাশ যখন লুকিয়েছিলেন সে সমযে অথলিয়া রাণী হিসেবে ছয় বছর রাজ্যটি শাসন করেছিলেন|
1 ছয় বছর চুপচাপ থাকার পর যিহোয়াদার আত্মবিশ্বাস য়থেষ্ট বেড়ে উঠল এবং তিনি সেনাপতিদের সঙ্গে একটি চুক্তি করলেন| সেই সেনাপতিরা ছিলেন: যিহোরামের পুত্র অসরিয়, য়িহোহাননের পুত্র ইশ্ামাযেল, ওবেদের পুত্র অসরিয়, অদাযার পুত্র মাসেয আর সিখ্রির পুত্র ইলীশাফট| 2 চুক্তি অনুযায়ীএরা যিহূদা ও যিহূদার পার্শ্ববর্তী থেকে সমস্ত লেবীয়দের ও ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারের নেতাদের একত্রিত করে তারপর জেরুশালেমে গেলেন| 3 এঁরা সবাই একসঙ্গে ঈশ্বরের মন্দিরে রাজার সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন| যিহোয়াদা এঁদের সবাইকে বলেছিলেন, “আমাদের অবশ্যই রাজার ছেলেকে শাসন করতে দেওয়া উচিত্, কারণ প্রভু দাযূদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে শুধু তাঁর উত্তরপুরুষরাই যিহূদা শাসন করবে| 4 এখন তোমাদের সবাইকে কযেকটা কর্তব্য পালন করতে হবে| যাজক ও লেবীয়দের মধ্যে যারা বিশ্রামের দিন মন্দিরের নিত্যকর্ম সম্পাদন করতে যান তাঁদের এক তৃতীয়াংশ মন্দিরের দরজার ওপর নজর রাখবেন| 5 আর এক তৃতীয়াংশ যাবেন রাজপ্রাসাদে| আরেক এক তৃতীয়াংশ থাকবেন ভিত্তিমূলের দরজায আর বাদবাকী সকলেই প্রভুর মন্দিরের আঙিনায থাকবেন| 6 কাউকে যেন প্রভুর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া না হয়| শুধুমাত্র যেসব যাজকগণ ও লেবীয়রা মন্দিরের সেবা করেন, তাঁদেরই প্রভুর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে কারণ তাঁরা পবিত্র| অন্যান্যরা প্রভু তাদের যে যে কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন তাই করবে| 7 লেবীয়দের তরবারি ধারণ করতে হবে এবং সব সময় রাজার কাছাকাছি থাকতেই হবে| কেউ যদি মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করে তাকে যেন হত্যা করা হয়|” 8 লেবীয় ও যিহূদার সমস্ত ব্যক্তি অক্ষরে অক্ষরে যাজক যিহোয়াদার সমস্ত নির্দেশ পালন করেছিলেন| যাজক যিহোয়াদা যাজকবর্গের সবাইকেই কোনো না কোনো কাজে নিযুক্ত করেছিলেন| যে কারণে ছুটির দিন সমস্ত সেনাপতি তাঁদের অধীনস্থ সবাইকে নিয়ে সেদিন যারা মন্দিরে এসেছিল তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন| 9 যাজক যিহোয়াদা সমস্ত সেনানাযকদের রাজা দাযূদের আমলের বল্লম ও ছোট বড় ঢালগুলো বের করে দিয়েছিলেন| রাজা দাযূদের এই সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র প্রভুর মন্দিরেই রাখা হতো| 10 এরপর যিহোয়াদা কাকে কোথায দাঁড়াতে হবে বুঝিযে দিয়েছিলেন| সশস্ত্র প্রহরীরা মন্দিরের দক্ষিণদিক থেকে শুরু করে উত্তরদিক পর্য়ন্ত মন্দিরের কাছে, বেদীর পাশে আর রাজার চারপাশে দাঁড়িয়েছিল| 11 এরপর, সকলে মিলে বালক রাজপুত্রকে নিয়ে এলেন এবং তার মাথায় রাজমুকুট পরিযে তার হাতে চুক্তিটির একটি প্রতিলিপি দিলেন| যাজক যিহোয়াদা আর তাঁর পুত্ররা সবাই পবিত্র তেল ছিটোলেন, বালক য়োযাশকে রাজা বলে ঘোষণা করে জয়ধ্বনি দিয়ে উঠলেন, “মহারাজ দীর্ঘজীবী হোন!” 12 এদিকে রাণী অথলিয়া মন্দিরে অনেক লোকের পদ শব্দ ও জয়ধ্বনি শুনে কি হয়েছে দেখতে প্রভুর মন্দিরে এলেন| 13 সেখানে তিনি নতুন রাজাকে দেখতে পেলেন| সেই সময় য়োযাশ প্রধান ফটকে, রাজার স্তম্ভের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন এবং সমস্ত সেনাপতি ও লোকরা তাঁকে ঘিরে আনন্দ সহকারে বাদ্যযন্ত্রসমূহ এবং শিঙা ও ভেরী বাজাচ্ছিল| গায়করা তাদের বাদ্যযন্ত্র বাজিযে উত্সবে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন| এই দেখে পরণের পোশাক ছিঁড়তে ছিঁড়তে রাণী অথলিয়া বলে উঠলেন, “বিদ্রোহ, বিদ্রোহ করেছে সবাই!” 14 যাজক যিহোয়াদা তখন উপস্থিত সেনানাযকদের নিয়ে এসে নির্দেশ দিলেন, “তোমরা সৈনিকরা অথলিয়াকে মন্দিরের বাইরে নিয়ে যাও| কেউ যদি ওর পিছু নেবার চেষ্টা করে সঙ্গে সঙ্গে তরবারি দিয়ে তাকে হত্যা করবে|” কিন্তু দেখো, অথলিয়াকে যেন প্রভুর মন্দিরের চত্বরে না মারা হয়| 15 রাজপ্রাসাদের অশ্বদ্বার পার হওয়া মাত্রই, সেনাবাহিনীর লোকরা অথলিয়াকে ধরে ফেললো এবং তাকে সেখানে হত্যা করলো| 16 এরপর, যিহোয়াদা সমস্ত প্রজা ও রাজার সঙ্গে চুক্তি করলো| প্রত্যেকে প্রভুর বিশ্বস্ত সেবক হতে সম্মতি জানালো| 17 সবাই মিলে বালদেবতার মূর্ত্তি বসানো মন্দিরে গিয়ে, মন্দির ও সেখানকার বেদী ও মূর্ত্তি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করলো| বালদেবের বেদীর সামনে তারা বালদেবের পূজারী মত্তনকে হত্যা করলো| 18 তখন যিহোয়াদা লেবীয় গোষ্ঠীর যাজকদের আদেশ দিলেন আনন্দের সঙ্গে এবং গান গেয়ে সেবা কাজগুলি করতে যেগুলি দায়ূদ মন্দিরের জন্য নির্দিষ্ট করেছিলেন এবং মোশির বইতে যেমন লেখা আছে সেইমত প্রভুকে বলি উত্সর্গ করতে যেমন দায়ূদ করতেন| 19 অধিকন্তু যিহোয়াদা মন্দিরের দরজায প্রহরীদের নিয়োগ করেছিলেন যাতে কোন ব্যক্তি যে অশুচি, সে মন্দিরে ঢুকতে না পারে| 20 যিহোয়াদা, সেনাপতিবর্গ, নেতৃবর্গ, শাসকবর্গ ও দেশের লোকেরা রাজাকে যথায়থ সম্মানে বের করে আনলেন এবং উত্তর দ্বারের পথ দিয়ে রাজপ্রাসাদে গেলেন এবং সেখানে তারা তাঁকে সিংহাসনে বসালেন| 21 যিহূদার সকলেই সেদিন খুব খুশি ছিল| অনেকদিন পর অত্যাচারী রাণী অথলিয়ার মৃত্যুতে জেরুশালেম শহরে আবার শান্তি নেমে এলো|
1 য়োযাশ মাত্র 7 বছর বয়সে রাজা হয়ে 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা সিবিযা ছিলেন বের্-শেবা শহরের বাসিন্দা| 2 যতদিন পর্য়ন্ত যাজক যিহোয়াদা জীবিত ছিলেন ততদিন পর্য়ন্ত য়োযাশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেছিলেন| 3 যিহোয়াদা যোয়াশের দুটো বিয়ে দিয়েছিলেন| বিয়ের পর, রাজা যোয়াশের অনেকগুলি সন্তান হয়েছিল| 4 পরবর্তীকালে, রাজা য়োযাশ প্রভুর মন্দিরকে নবরূপ দেবার পরিকল্পনা করেছিলেন| 5 তিনি সমস্ত লেবীয় ও যাজকদের একসঙ্গে ডেকে বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রত্যেকে প্রতি বছর যে কর দেয তা সংগ্রহ কর এবং তোমাদের প্রভুর মন্দিরকে নতুন রূপ দাও| যাও, আর দেরী করো না|” কিন্তু লেবীয়রা এতে বিশেষ উত্সাহ দেখালেন না| 6 তখন রাজা য়োযাশ প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “আপনি কেন লেবীয়দের যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে আদেশ দেন নি যা প্রভুর দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র তাঁবুর জন্যই ব্যবহার করতেন|” 7 অতীতে, দুষ্ট রাণী অথলিয়ার পুত্ররা প্রভুর মন্দির থেকে পবিত্র জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেগুলো বালদেবতার আরাধনার জন্য ব্যবহার করেছিলেন| 8 রাজা য়োযাশ প্রভুর মন্দিরের দরজার বাইরে একটা প্রণামীর সিন্দুক বানিয়ে বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন| 9 এরপর লেবীয়রা যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের প্রভুর জন্য কর দেবার কথা ঘোষণা করেন| ঈশ্বরের জন্য ইস্রায়েলীয়রা যখন মরুভূমিতে দিন কাটাচ্ছিল তখন এইভাবে মোশি এই কর সংগ্রহ করেছিলেন| 10 সমস্ত নেতা ও লোকরা খুশি মনে করে নিয়ে এসে প্রণামীর সিন্দুকে জমা দিল| সিন্দুকটা যতক্ষণ পর্য়ন্ত না ভরে গেল ততক্ষণ পর্য়ন্ত সবাই সিন্দুকে অর্থ জমা করতে লাগলো| 11 সিন্দুকটা ভরে গেলে লেবীয়রা সেটা রাজকর্মচারীদের কাছে নিয়ে গেল| যখন রাজার সচিব ও প্রধান যাজকের সহকারী সিন্দুক খালি করে তার থেকে যাবতীয় অর্থ বের করে নিলেন, ওটা আবার ভরে যাওয়া পর্য়ন্ত একই জায়গায় ফেরত্ দেওয়া হয়েছিল| এইভাবে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল| 12 রাজা য়োযাশ ও যিহোয়াদা দুজনে এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের তদারকির কাজ য়াঁরা করতেন তাদের দিলেন| তারা প্রভুর মন্দির সারানোর জন্য সুদক্ষ পাথরকাটিযে ও ছুতোর মিস্ত্রি ভাড়া করলেন| এছাড়াও লোহা ও পিতলের কাজ জানা কারিগরদেরও ভাড়া করা হয়েছিল| 13 যারা প্রভুর মন্দির তদারকির কাজ করতো তারা সকলেই নিষ্ঠাবান ও সত্ হওয়ায ঈশ্বরের মন্দির পুননির্মাণের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এবং প্রভুর মন্দিরকে ঠিক আগের মতো ও আরো দৃঢ় করে বানানো হয়| 14 কাজটি শেষ হলে কর্মচারীরা অবশিষ্ট অর্থ রাজা য়োযাশ ও যাজক যিহোয়াদার কাছে ফিরিযে আনলো| এই অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানো ছাড়াও, এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের নিত্যসেবা ও হোমবলি নিবেদনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল| এছাড়াও এই অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে সোনা ও রূপোর পাত্র ও টুকিটাকি জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল| যিহোয়াদার জীবদ্দশায় যাজকরা নিয়মিত প্রভুর মন্দিরে হোমবলি উত্সর্গ করতেন| 15 অবশেষে, যিহোয়াদা বৃদ্ধ হলেন এবং 130 বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হল| 16 লোকরা দায়ূদ নগরীতে রাজাদের সমাধি ক্ষেত্রে যিহোয়াদাকে সমাধিস্থ করেছিলেন কারণ তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও তাঁর মন্দিরের জন্য বহু ভাল ভাল কাজ করেছিলেন| 17 যিহোয়াদার মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ রাজা য়োযাশকে অভ্য়র্থনা করলেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর স্তুতি করতে শুরু করলেন| য়োযাশ তাদের পরামর্শগুলি গ্রহণ করেছিলেন| 18 রাজা ও নেতারা, প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের মন্দিরের দিক থেকে মুখ ফিরিযে নিলেন| পরিবর্তে, তারা আশেরার খুঁটি ও অন্যান্য ভ্রান্ত মূর্ত্তি পূজো শুরু করলেন| রাজা ও নেতাদের অপরাধের জন্য ঈশ্বর যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর রুদ্ধ হলেন| 19 ঈশ্বর লোকদের মন তাঁর প্রতি ফিরিযে আনার জন্য ভাব্বাদীদের পাঠালেন| কিন্তু লোকরা সদুপদেশে কর্ণপাত পর্য়ন্ত করলো না| 20 তারপর ঈশ্বরের আত্মা যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়র ওপর ভর করলো| তিনি লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলেছেন: ‘তোমরা কেন প্রভুর বিধিসমূহ ও আজ্ঞা অমান্য করছো? এভাবে তোমরা কখনোই কোনো কাজে কৃতকার্য় হতে পারবে না| তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তিনিও তোমাদের ত্যাগ করেছেন|” 21 কিন্তু বিচারবুদ্ধিহীন লোকরা তখন একসঙ্গে চএান্ত করলো এবং রাজা যখন তাদের সখরিয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো| 22 একবারও রাজা য়োযাশ তাঁর প্রতি সখরিয়র পিতা যাজক যিহোয়াদার করুণার কথা মনে করলেন না| মারা যাবার আগের মূহুর্তে সখরিয় বললেন, “প্রভু যেন তোমার এই অপরাধ দেখতে পান এবং তোমাকে এর য়োগ্য শাস্তি দেন|” 23 এক বছরের মধ্যে অরামীয় সেনাবাহিনী এসে রাজা যোয়াশের রাজ্য আক্রমণ করলো| তারা যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করল এবং সমস্ত নেতাদের হত্যা করবার পর সেনাবাহিনী যাবতীয় দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে দম্মেশকে রাজার কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দিল| 24 অরামীয়রা ছোট সেনাবাহিনী নিয়ে এলেও প্রভু তাদের যিহূদার সেনাবাহিনী, যেটা তাদের সেনাবাহিনীর চেয়ে বড় ছিল, তাকে পরাজিত করতে দিলেন| কারণ যিহূদার লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল| এইভাবে রাজা যোয়াশের শাস্তি বিধান হল| 25 অরামীয়রা যখন চলে গেল তখন তিনি ভীষণভাবে আহত| তাঁর নিজের ভৃত্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে তাঁর বিছানায হত্যা করলো| এরপর লোকরা তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করলো, তবে তা রাজাদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধি ক্ষেত্রে নয়| যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়কে হত্যা করার জন্যই যোয়াশের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করেছিল| 26 যোয়াশের বিরুদ্ধে যারা চএান্ত করেছিল তাঁরা হল অম্মোনের শিমিযতের পুত্র সাবদ ও মোয়াবের শিম্রীতের পুত্র য়িহোষাবদ| 27 যোয়াশের পুত্রদের গল্প, তাঁর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী ও তিনি কিভাবে আবার প্রভুর মন্দির নবরূপে নির্মাণ করেছিলেন সেসব কথা ‘রাজাদের সম্বন্ধে ব্বিরণী গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে| যোয়াশের পর তাঁর পুত্র অমত্সিয নতুন রাজা হলেন|
1 পঁচিশ বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে অমত্সিয মোট 29 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মাতা য়িহোযদ্দনও ছিলেন জেরুশালেম থেকেই| 2 অমত্সিয প্রভুর অভিপ্রায় অনুযায়ীসমস্ত কাজ করলেও তিনি সর্বান্তঃকরণে এইসব কাজ করেন নি| 3 অবশেষে তিনি রাজা হিসেবে নিজের শাসন প্রতিষ্ঠিত করলেন এবং যে সমস্ত রাজকর্মচারীরা তাঁর পিতাকে খুন করেছিল তাদের হত্যা করলেন| 4 কিন্তু অমত্সিয এইসব ব্যক্তিদের সন্তানদের হত্যা করেন নি| কারণ তিনি মোশির পুস্তকে লেখা বিধি অনুযায়ীকাজ কর়েছিলেন| প্রভু আদেশ দিয়েছিলেন, “সন্তানদের অপরাধের জন্য যেমন অভিভাবকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না, ঠিক একই রকমভাবে পিতামাতার কোনো অপরাধের জন্য কোন সন্তানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ঠিক হবে না| কোন ব্যক্তিকে কেবলমাত্র তার কৃত কোন কুকর্মের জন্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে|” 5 অমত্সিয যিহূদা এবং বিন্যামীনের সমস্ত ব্যক্তিদের একত্রিত করলেন এবং তাদের পরিবার অনুযায়ীপৃথক করেছিলেন| তিনি তাদের সৈন্যাধ্যক্ষ ও অধিনাযকদের কর্ত্তৃত্বের অধীনে রেখেছিলেন| 20 বছর বা তার বেশী বয়স্ক লোকদের সৈনিক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল| এভাবে সব মিলিযে ঢাল ও বল্লমধারী মোট 3,00,000 য়োদ্ধা ছিল| 6 এছাড়াও অমত্সিয ইস্রায়েলের থেকে 3 3,4 টন রূপোর বিনিময়ে 1,00,000 সৈন্য ধার করেছিলেন| 7 কিন্তু এসমযে একজন ভাব্বাদী এসে অমত্সিযকে বললেন, “মহারাজ, ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীকে আপনার সঙ্গে যেতে দেবেন না| কারণ বর্তমানে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে নেই, ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর সঙ্গেও নেই| 8 যদি তোমরা যুদ্ধে যাও তোমরা অবশ্যই একটি কঠিন যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রেখো| ঈশ্বর হয়তো তোমাদের বাধা দেবেন কারণ ঈশ্বরের ক্ষমতা আছে তোমাকে সাহায্য করতে অথবা তোমাকে বাধা দিতে|” 9 তখন অমত্সিয তাকে বললেন, “কিন্তু আমি এর মধ্যে ইস্রায়েলীয়দের যে অর্থ দিয়েছি তার কি হবে?” ঈশ্বরের লোক উত্তর দিলেন, “প্রভুর ভাণ্ডার অফুরন্ত| তিনি চাইলে আপনাকে এর থেকেও বেশি দিতে পারেন!” 10 অমত্সিয তখন ইস্রায়েলীয় সেনাদের ইফ্রয়িমে তাদের বাসভূমিতে পাঠিয়ে দিলেন| এর ফলে এরা সকলেই যিহূদার রাজা ও অধিবাসীদের ওপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে গেল| 11 এরপর অমত্সিয বীর বিক্রিমে তাঁর সেনাদের ইদোমের লবণ উপত্যকায় যুদ্ধে নেতৃত্ব দিলেন| সেখানে তাঁর সেনাবাহিনী 10,000 সেয়ীর় সৈন্যকে হত্যা করলো, 12 এবং আরও 10,000 সৈন্যকে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে গিয়ে ধাক্কা মেরে তাদের নীচে ফেলে দিল| নীচে কঠিন পাথরের ওপর পড়বার জন্য এইসব সৈনিকদের মৃত্যু হল| 13 কিন্তু এসমযে যে সমস্ত ইস্রায়েলীয় সেনাদের অমত্সিয ফেরত্ পাঠিয়েছিলেন তারা যিহূদার বৈত্-হোরোণ থেকে শমরিয়া পর্য়ন্ত অঞ্চলের শহরগুলো আক্রমণ করতে শুরু করেছিল| এরা 3,000 ব্যক্তিকে হত্যা করে বহু দামী দামী জিনিস লুঠ করেছিল| 14 ইদোমীয়দের যুদ্ধে পরাজিত করার পর অমত্সিয স্বদেশে ফিরে এলেন| ফিরে আসার সমযে অমত্সিয সেয়ীরের লোকেদের সেই মূর্ত্তিগুলো এনেছিলেন| এরপর অমত্সিয নিজে সেইসব মূর্ত্তি পূজো করতে শুরু করলেন| এদের সামনে তিনি নত হয়েছিলেন এবং তাদের কাছে ধুপধূনো জ্বালাতেন| 15 এতে প্রভু যারপরনাই রুদ্ধ হলেন এবং অমত্সিযের কাছে এক ভাব্বাদীকে পাঠালেন| তিনি এসে অমত্িসযকে বললেন, “তুমি কেন হঠাত্ ভিনদেশীয মূর্ত্তির পূজো শুরু করলে? এইসব মূর্ত্তিগুলো তো এদের উপাসকদেরও তোমার বিরুদ্ধে রক্ষা করতে পারেনি|” 16 এর উত্তরে অমত্সিয উদ্ধতভাবে সেই ভাব্বাদীকে বললেন, “চুপ কর নয়তো মারা পড়বে| আমরা কি তোমাকে রাজার পরামর্শদাতা নিয়োগ করেছি?” সেই ভাব্বাদী তখন বললেন, “প্রভু তাহলে সত্যি সত্যিই তোমার পাপাচরণের জন্য তোমাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন যেহেতু তুমি আমার উপদেশ নিলে না|” 17 অমত্সিয তাঁর মন্ত্রণাদাতাদের সঙ্গে পরামর্শ করার পর ইস্রায়েলের রাজা য়িহোযাহসের পুত্র যেহূর পৌত্র য়িহোযামকে খবর পাঠালেন, “চলো আমরা সম্মুখ যুদ্ধ করি|” 18 ইস্রায়েলের রাজা য়োযাশ এর প্রত্যুত্তরে যিহূদার রাজা অমত্সিযকে খবর পাঠালেন, ‘লিবানোনের এক কাঁটাঝাড়, এক মহীরূহকে বলেছিলেন, ‘তোমার কন্যার সঙ্গে আমার পুত্রের বিয়ে দাও|’ আর এদিকে এক বুনো জন্তু এসে কাঁটাঝাড় মাড়িয়ে দিয়ে চলে গেলো| 19 শোনো, তোমরা ইদোমকে হারিযে দিয়েছ তাই তোমরা গর্বিত ও অহঙ্কারী হয়েছ| বাড়ীতে বসে থাক, আমাদের প্ররোচিত করো না| যদি তোমরা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাও তোমরা তো বটেই, এমনকি যিহূদাও পরাজিত হবে|” 20 কিন্তু অমত্সিয একথায় কান দিতে চাইলেন না| আসলে এ ঘটনা প্রভুর অভিপ্রায় অনুসারেই ঘটেছিল| ইস্রায়েলীয়দের হাতে যিহূদাকে পরাজিত করার পরিকল্পনা বয়ং প্রভুই করেছিলেন কারণ তারা ইদোমীযদের মূর্ত্তি পূজো করবার অপরাধ করেছিল| 21 ইস্রায়েলের রাজা য়িহোযাস যিহূদায় বৈত্-শেমশেতে রাজা অমত্সিযর মুখোমুখি হলেন| 22 যুদ্ধে ইস্রাযেল যিহূদাকে পরাজিত করল| যিহূদার প্রত্যেকে রণে ভঙ্গ দিয়ে বাড়ি পালালো| 23 রাজা য়িহোযাস বৈত্-শেমশেতে যিহূদার রাজা অমত্সিযকে বন্দী করে তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন| অমত্সিয ছিলেন যোয়াশের পুত্র এবং য়িহোযাহসের পৌত্র| য়িহোযাস ইফ্রয়িমের ফটক থেকে কোণের ফটক পর্য়ন্ত জেরুশালেমের প্রাচীরের 600 ফুট ভেঙ্গে ফেললেন| 24 তিনি সমস্ত সোনা ও রূপো এবং ওবেদ ইদোম যা কিছু জিনিষপত্র মন্দিরে পাহারা দিত, প্রাসাদের সমস্ত কিছু সম্পদ এবং বন্দীদের নিয়েছিলেন| তিনি এই সব কিছু শমরিয়াতে ফিরিযে নিয়ে গেলেন| 25 য়িহোযাসের মৃত্যুর পর অমত্সিয আরো 15 বছর বেঁচ্ছেিলেন| 26 অমত্সিয তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি আর যা কিছু করেছিলেন সেসবই ‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 27 অমত্সিয যখন প্রভুকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দিলেন তখন জেরুশালেমের লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করলো| অমত্সিয কোনোমতে লাখীশে পালিয়ে গেলেও লোকেরা সেখানে লোক পাঠিয়ে অমত্সিযকে হত্যা করল| 28 তারপর তারা ঘোড়ার পিঠে করে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে এলো এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করলো|
1 এরপর যিহূদার লোকরা অমত্সিযর জায়গায় কিশোর উষিযকে নতুন রাজা হিসেবে নিযুক্ত করলো| উষিয মাত্র 16 বছর বয়সে রাজা হয়ে 52 বছর জেরুশালেমে শাসন করেছিলেন| তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তিনি ‘এলত্’ শহরটি নতুন করে বানিয়ে যিহূদাকে ফেরত্ দিয়েছিলেন|উষিযর মা য়িখলিযা ছিলেন জেরুশালেমের বাসিন্দা| 2 3 4 উষিয প্রভুর বাধ্য ছিলেন এবং তাঁর পিতা অমত্সিযর মত জীবনযাপন করেছিলেন| 5 সখরিয়র জীবদ্দশায় তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করে ও অনুপ্রেরণা পেয়ে উষিয ঈশ্বরকে অনুসরণ করেছিলেন| আর ঈশ্বরের প্রতি যতদিন তাঁর অবিচল ভক্তি ছিল প্রভু ঈশ্বরও তাঁকে সাফল্য দিয়েছিলেন| 6 উষিয পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, গাত, য়ব্নি ও অস্দোদ শহরগুলোর চারপাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছিলেন এবং অস্দোদ ও পলেষ্টীয় অধ্য়ুষিত অন্যান্য অঞ্চলগুলিতে নতুন শহরসমূহ তৈরী করেছিলেন| 7 পলেষ্টীয় ও গূরবালে বসবাসকারী আরবীয ও মিযূনীযদের বিরুদ্ধে যখন উষিয যুদ্ধ করেছিলেন, প্রভু উষিযর সহায়তা করেছিলেন| 8 অম্মোনীয়রা উষিযর বশ্যতা স্বীকার করে তাঁকে উপঢৌকন পাঠায| তাঁর অসীম সাহসের খ্যাতি মিশরের সীমান্ত পর্য়ন্ত ছড়িয়ে পড়ে কারণ তিনি খুব ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিলেন| 9 জেরুশালেমের কোণার ফটকে, উপত্যকার ফটকে এবং প্রাচীরের বাঁকের মুখে উষিয সুদৃঢ় নজরদারি স্তম্ভসমূহ তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলোর সবগুলোকে দূর্গ দিয়ে বেষ্টিত করেছিলেন| 10 উষিয জনহীন স্থানে কযেকটি গম্বুজ বানিয়েছিলেন, কারণ পার্বত্য অঞ্চলে ও সমভূমিতে তাঁর বিস্তর গবাদি পশু ছিল| তিনি পাহাড়তলী এবং উপত্যকাবর্তী সমভূমিতে কৃষকও রেখেছিলেন ও কারমেলে দ্রাক্ষাক্ষেত দেখাশোনার লোক রেখেছিলেন যেহেতু তিনি কৃষিকাজ ভালবাসতেন| 11 উষিযর একটি সুদক্ষ সেনাবাহিনীও ছিল| য়িযূযেল নামে এক সচিব ও মাসেয নামে জনৈক অধ্যক্ষ মিলে গুণে গেঁথে সেনাবাহিনীটিকে কযেকটি দলে বিভক্ত করে হনানিযকে প্রধান সেনাপতি পদে নিয়োগ করেছিলেন| হনানিয ছিলেন রাজার অধীনস্থ পদস্থ চাকুরেদের অন্যতম| 12 সেনাবাহিনীকে যারা নির্দেশ দিতেন তাদের মধ্যে মোট 2,600 জন পরিবারের নেতা ছিলেন| 13 এই লোকরা 3,07,500 য়োদ্ধার এই সৈন্যদলকে পরিচালনা করতেন, যারা যে কোন শএুর বিরুদ্ধে অত্যন্ত পারদর্শীতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারত| 14 উষিয তাঁর সেনাবাহিনীর জন্য বল্লম, ঢাল, শিরস্ত্রাণ, তীর, ধনুক ও গুলতির জন্য পাথর তৈরি করিযেছিলেন| 15 জেরুশালেমে প্রাচীরের ওপরে এবং নজরদারির স্তম্ভগুলোর ওপরে পারদর্শীদের দ্বারা আবিস্কৃত বিশেষ ধরণের গুলতিসমূহ বসানো হয়েছিল যেগুলো পাথর ও তীর ছুঁড়তে পারত| দূরদূরান্তে উষিযর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি এমে বিখ্যাত ও শক্তিশালী এক রাজায পরিণত হন| 16 কিন্তু শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষিযর দম্ভ তাঁকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয, কারণ তিনি প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করতে শুরু করেন| এমনকি উষিয একবার প্রভুর মন্দিরের বেদীতে ধুপধূনো জ্বালাতেও গিয়েছিলেন| 17 যাজক অসরিয় ও প্রভুর সেবায নিযুক্ত আরো 80 জন সাহসী যাজক ও উষিযকে অনুসরণ করেন| 18 তাঁরা উষিযকে থামিয়ে দেন ও সতর্ক করে বলেন, “ধুপধূনো জ্বালাবার অধিকার আপনার নেই, এ কাজ একমাত্র হারোণের এবং যাজক উত্তরপুরুষরা করতে পারেন কারণ এ কাজের জন্য তাঁদের নির্দিষ্ট করা হয়েছে| আপনি অনুগ্রহ করে পবিত্রতমস্থান থেকে চলে যান| আপনি অনধিকার প্রবেশ করেছেন এবং এটা প্রভুর কাছ থেকে আপনাকে সম্মান এনে দেবে না|” 19 কিন্তু একথা শুনে, উষিয যাজকদের প্রতি অত্যন্ত রুদ্ধ হলেন| তাঁর হাতে ছিল একটি ধুনুচি এবং সেসমযে যাজকদের চোখের সামনে বেদীর পাশে দাঁড়ানো অবস্থাতেই উষিযর কপালে কুষ্ঠরোগের লক্ষণ ফুটে উঠলো| 20 অসরিয় ও অন্যান্য যাজকরা উষিযর কপালে কুষ্ঠর চিহ্ন ফুটে উঠতে দেখে জোর করে তাঁকে মন্দির থেকে বের করে দিলেন| উষিয দ্রুত মন্দির ছেড়ে চলে গেলেন কারণ শাস্তিস্বরূপ প্রভু তাঁকে চর্মরোগ দিয়েছিলেন| 21 এইভাবে মৃত্যুর দিন অবধি রাজা উষিযর চর্মরোগ ছিল এবং তিনি প্রভুর মন্দিরে প্রবেশের অধিকার হারালেন| তাঁর পুত্র য়োথম তাঁর রাজত্বের শেষদিকে শাসক হিসেবে রাজপ্রাসাদ ও লোকদের ওপর কর্তৃত্ব করতেন| 22 প্রথম থেকে শেষাবধি উষিয আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই আমোসের পুত্র ভাব্বাদী য়িশাইয লিখে গিয়েছিলেন| 23 উষিযর মৃত্যুর পর তাকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর না দিয়ে তাঁদের সমাধিক্ষেত্রের নিকটস্থ এক মাঠে সমাধিস্থ করা হয়| তিনি কুষ্ঠরোগী হওয়ায লোকরা তাঁকে রাজাদের সমাধিক্ষেত্রে সমাধিস্থ করেনি| তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র য়োথম তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন|
1 পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে য়োথম মোট 16 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মাতা য়িরূশা ছিলেন সাদোকের কন্যা| 2 য়োথম প্রভুর অভিপ্রায় অনুসারে তাঁর পিতা উষিযর মতোই ঈশ্বরকে অনুসরণ করতেন| কিন্তু তিনি কখনও তাঁর পিতা উষিযর মতো প্রভুর মন্দিরে ঢুকে ধুপধূনো দেবার দুঃসাহস প্রকাশ করেন নি| কিন্তু তা সত্ত্বেও লোকেরা পাপাচরণ করে যেতে লাগলো| 3 য়োথম প্রভুর মন্দিরের উত্তর দরজাটি পুনর্নিমাণ করা ছাড়াও ওফলের প্রাচীরের ওপর অনেক কিছু স্থাপন করেন এবং 4 যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলে বেশ কিছু শহর স্থাপন করেছিলেন| এছাড়াও তিনি জঙ্গলে দুর্গ ও নজরদারির জন্য স্তম্ভ বানান| 5 অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি যুদ্ধে অম্মোন-রাজকে পরাজিত করেন যার ফলস্বরূপ তিন বছর ধরে একটানা প্রত্যেক বছর অম্মোনীয়রা তাঁকে 3 3,4 টন রূপো, প্রায 62,000 বুশেল গম ও যব নজরানা দিত| 6 প্রভু তাঁর ঈশ্বরকে অনুসরণ করে য়োথম শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন| 7 তিনি আর যা কিছু করেছিলেন সেসব ও তাঁর যুদ্ধের ব্বিরণী ‘ইস্রাযেল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| 8 পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে 16 বছর জেরুশালেম শাসন করার পর তাঁর মৃত্যু হলে 9 তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করা হল| এরপর য়োথমের জায়গায় রাজা হলেন তাঁরই পুত্র আহস|
1 আহস 20 বছর বয়সে রাজা হয়ে মোট 16 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তিনি তাঁর ধর্মনিষ্ঠ পূর্বপুরুষ দাযূদের মতো বা প্রভুর অভিপ্রায় অনুযায়ী জীবনযাপন করেন নি| 2 আহস ইস্রায়েলের রাজাদের খারাপ দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে জীবনযাপন করেছিলেন| তিনি বালদেবতাদের আরাধনার জন্যও মূর্ত্তিসমূহ বানিয়েছিলেন| 3 এছাড়া ইস্রায়েলীয়দের তাড়াবার আগে প্রভু যে কনানীয জাতিদের তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের ঘৃণ্য আচরনের মত আহস বিন্-হিন্নোমের উপত্যকায ধুপধূনো দিয়েছিলেন ও তাঁর নিজের পুত্রদের আগুনে উত্সর্গ করেছিলেন| 4 বলিদান করা ছাড়াও আহস উঁচু বেদীগুলোয পাহাড়ে এবং প্রত্যেকটি সবুজ গাছের তলায় ধুপধূনো দিতেন| 5 যেহেতু আহস এই সমস্ত পাপাচরণে লিপ্ত হয়েছিলেন সেহেতু প্রভু, তাঁর ঈশ্বর অরাম রাজের হাতে তাঁকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন| আহসের বহু সৈন্যকে বন্দী করে অরামরাজ তাদের দম্মেশকে নিয়ে যান| উপরন্তু, ইস্রায়েলের রাজা রমলিযর পুত্র পেকহর হাতেও আহসের পরাজয় ঘটে| পেকহ ও তাঁর সেনাবাহিনী মিলে একদিনের মধ্যে যিহূদার 1,20,000 হাজার বীর সেনাকে হত্যা করেছিলেন| পেকহ এদের পরাজিত করতে পেরেছিলেন কারণ এরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল| 6 7 ইফ্রয়িম থেকে একজন শক্তিশালী য়োদ্ধা সিখ্রি, আহসের পুত্র মাসেযকে, প্রাসাদের অধ্যক্ষ অস্রীকামকে আর কর্তৃত্বে যিনি ছিলেন রাজার পরেই সেই ইল্কানাকে হত্যা করেন| 8 ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনী যিহূদায় বসবাসকারী তাদের 2,00,000 আত্মীযস্বজনকে বন্দী করা ছাড়াও যিহূদা নারী ও শিশুসহ বহু মূল্যবান জিনিসপত্র অপহরণ করে শমরিয়াতে নিয়ে এসেছিল| 9 কিন্তু সে সমযে, ওদেদ নামে এক প্রভুর ভাব্বাদী বিজয়ী ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীকে বললেন, “তোমাদের পূর্বপুরুষের দ্বারা পূজিত প্রভুর কৃপায় তোমরা যিহূদাকে হারাতে পেরেছো কারণ তিনি তাদের ওপর রুদ্ধ হয়েছিলেন| কিন্তু তোমরা খুব নিষ্ঠুর ও র্ব্বরোচিতভাবে যিহূদার সৈন্যদের হত্যা করেছো, তাই এখন প্রভু তোমাদের ওপর রুদ্ধ হয়েছেন| 10 তোমরা যিহূদা এবং জেরুশালেমের বন্দীদের এীতদাস হিসেবে রাখবার পরিকল্পনা করেছিলে| কিন্তু তোমরা নিজেরাই প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছ| 11 এখন আমার কথা শোনো| তোমরা তোমাদের বন্দী ভাই-বোনদের মুক্তি দাও কারণ এই অপরাধের জন্য প্রভু তোমাদের প্রতি খুবই রুদ্ধ হয়েছেন|” 12 সেই সময য়িহোহাননের পুত্র অসরিয়, মশিল্লেমোতের পুত্র বেরিখিয, শল্লুমের পুত্র য়িহিষ্কিয় এবং হদ্লযের পুত্র অমাসা প্রমুখ ইফ্রয়িমের সৈন্যবাহিনীর এইসব নেতারা যুদ্ধ থেকে একদল ইস্রায়েলীয় সৈনিকদের ঘরে ফিরতে দেখে তাদের সতর্ক করে দিলেন| 13 তাঁরা ইস্রায়েলীয় সেনাদের বললেন, “যিহূদা থেকে কাউকে আর বন্দী করে এখানে নিয়ে এসো না কারণ তাতে প্রভুর প্রতি আমাদের পাপের বোঝা উত্তরোত্তর বাড়বে| এতে প্রভু আমাদের ও ইস্রায়েলের প্রতি খুবই ক্ষুব্ধ হবেন|” 14 তখন সেনারা তাদের নেতাদের হাতে সমস্ত বন্দীদের ও যাবতীয় লুঠ করা সম্পদ তুলে দিল| 15 বেরিখিয, য়িহিষ্কিয় এবং অমাসা নেতৃগণ ইস্রায়েলীয়রা যে সমস্ত পোশাকআশাক এনেছিল তা থেকে উলঙ্গ বন্দীদের পরবার জন্য পোশাক দিলেন ও তাদের পরিচর্য়া করতে লাগলেন| বন্দীদের সবাইকে খাবার ও পানীয় দেওয়া হল এবং তাদের মধ্যে যারা আহত হয়েছিল তাদের ক্ষতস্থানে তেল লাগিয়ে দেওয়া হল| তারপর নেতারা সমস্ত বন্দীদের, যারা খুব দুর্বল ছিল তাদের গাধার পিঠে তুলে দিলেন এবং তাদের বাড়ির কাছে ‘তালগাছের দেশ’ য়িরীহোতে তাদের নিয়ে গেলেন এবং শমরিয়াতে ফিরে এলেন| 16 এই সমযে, ইদোমীয় সেনাবাহিনী আবার ফিরে এলো এবং যিহূদাকে অন্য একটি যুদ্ধে পরাজিত করে এবং তাদের বন্দীদের ইদোমে নিয়ে যায়| তখন রাজা আহস অশূররাজের সাহায্য প্রার্থনা করলেন| 17 18 পলেষ্টীয়রাও এসে দক্ষিণ যিহূদা ও যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলে বৈত্শেমশে, অযালোন, গদেরোত্, সোখো, তিথা, গিম্সো প্রমুখ শহর ও এইসব শহরের পাশ্ববর্তী গ্রামগুলো দখল করে বসবাস করতে শুরু করলো| 19 রাজা আহস যিহূদার লোকদের পাপের পথে পরিচালনা করার জন্যই প্রভু যিহূদাকে সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন| আহস প্রভুতে মোটেই বিশ্বাসী ছিলেন না| 20 সাহায্যের পরিবর্তে অশূররাজ তিল্গত্ পিল্নেষর এসে আহসের সঙ্কট আরো বাড়িযে তুলেছিলেন| 21 প্রভুর মন্দির, রাজপ্রাসাদ ও রাজপুত্রদের থাকা জায়গা থেকে বহু মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে সেসব অশূররাজকে দিয়েও আহস তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারেন নি| 22 সঙ্কটাবস্থায আহস আরো বেশি করে পাপাচরণ ও প্রভুর প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে শুরু করেন| 23 তিনি দম্মেশকের লোকদের দেবতার কাছে বলিদান নিবেদন করলেন| তাদের হাতে পরাজিত হয়ে আহস ভাবলেন, “তাহলে আমি অরামের দেবতার আরাধনা করি ও তাঁর কাছে বলিদান করি, তাহলে নিশ্চয়ই এইসব দেবতাগণ ও তাদের উপাসকরা আমাকে সাহায্য করবে|” যাই হোক, তাঁরা তাঁকে সাহায্য করতে পারেন নি এবং তাঁর পতন ঘটিযেছিলেন| এবং তাঁর সঙ্গে, সমগ্র ইস্রায়েলের পতন হয়েছিল| 24 ঈশ্বরের মন্দির থেকে সমস্ত জিনিসপত্র জড়ো করে আহস সেই সমস্ত টুকরো টুকরো করে ভেঙে প্রভুর মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিলেন| জেরুশালেমের রাস্তার মোড়ে মোড়ে বেদী বানিয়ে 25 যিহূদার সমস্ত শহরগুলিতে আহস অন্য দেবতাদের ধুপধূনা দেবার জন্য উঁচু স্থান বানিয়ে দিলেন| এইভাবে আহস তাঁর পূর্বপুরুষদের প্রভু ঈশ্বরকে অত্যন্ত রুদ্ধ করে তুললেন| 26 রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি আর যা কিছু আহস করেছিলেন সেসবই ‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ করা আছে| 27 আহসের মৃত্যুর পর তাঁকে জেরুশালেমে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়| তবে তাঁকে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়নি| তাঁর পরে তাঁর পুত্র হিষ্কিয় তার জায়গায় নতুন রাজা হলেন|
1 হিষ্কিয় 25 বছর বয়সে রাজা হয়ে মোট 29 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তাঁর মা অবিয়া ছিলেন সখরিয়র কন্যা| 2 হিষ্কিয় প্রভুর অভিপ্রায় অনুসারে তাঁর পূর্বপুরুষ দাযূদের মতো সত্ ও ধর্মনিষ্ঠভাবে জীবনযাপন করেন| 3 তাঁর রাজত্বকালের প্রথম বছরের, প্রথম মাসের মধ্যেই হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরটি আবার খুলে দিয়েছিলেন এবং মন্দিরের দরজাগুলো মেরামত করে দিয়েছিলেন| 4 যাজক ও লেবীয়দের একত্রিত করে মন্দিরের পূর্ব প্রান্তের খোলা চত্বরে হিষ্কিয় তাঁদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়ে বললেন, “লেবীয়রা শোনো, মন্দিরের সেবা করবার পবিত্র কাজের জন্য তোমরা নিজেদের প্রস্তত কর| প্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের মন্দিরটিকে শুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলো| মন্দিরকে অশুদ্ধ ও অপবিত্র করেছে এমন প্রতিটি জিনিষ মন্দির থেকে সরিয়ে দাও| 5 6 আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর অবাধ্য হয়ে জীবন কাটিযেছে| তারা মন্দিরকে অশ্রদ্ধা করে এবং প্রভুর দিক থেকে মুখ ফিরিযে নিয়ে প্রভুর পথ থেকে সরে গেছে| 7 তারা মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাতিদানের প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখা নিভিযে দিয়েছে| ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র স্থানের বেদীতে ধুপধূনো দেওয়া আর হোমবলিও তারা বন্ধ করে দিয়েছে| 8 তাই প্রভু, যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর রুদ্ধ হয়ে তাদের শাস্তি দিয়েছেন, যাতে অন্য জাতিরা তাদের ভয়, বিস্ময এবং উপহাসের পাত্র হিসেবে দেখে এবং তোমরা নিজেরা দেখতে পাও যে এ সবই সত্যি| তোমরা জানো এর এক বর্ণও মিথ্য়া নয়, কারণ তোমরা স্বচক্ষে এই ঘটনা দেখেছো| 9 তোমরা দেখেছো যে এ কারণেই আমাদের পূর্বপুরুষদের যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে; এবং আমাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের কারারুদ্ধ করা হয়েছে| 10 একারণে আমি হিষ্কিয় প্রভু ঈস্রাযেলের ঈশ্বরকে আবার নতুন করে প্রতিশ্রুতি দিতে চাই, যাতে তিনি আর আমাদের ওপর রুদ্ধ হয়ে না থাকেন| 11 আমার লোকরা শোন, তোমরা কর্ত্তব্য়ে অবহেলা কোর না| প্রভু তাঁর সেবার জন্য তোমাদের মনোনীত করেছেন| তাঁর মন্দিরে সেবা ও ধুপধূনো দেবার অধিকার তিনি শুধু তোমাদেরই দিয়েছেন|” 12 একথা শুনে নিথলিখিত লেবীয়রা কাজে লেগে গেল: অমাসযের পুত্র মাহত্ এবং কহাত্ পরিবারের অসরিয়ের পুত্র য়োযেল; অব্দির পুত্র কীশ এবং মরারি পরিবারভুক্ত য়িহলিলেলের পুত্র অসরিয়; সিম্মের পুত্র য়োযাহ আর গের্শোন পরিবারের য়োযাহের পুত্র এদন; ইলীষাফণের বংশের শিম্রি ও য়িযূযেল, আসফের পরিবারের সখরিয় ও মত্তনিয, হেমনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়িহূযেল ও শিমিযি, য়িদূথূনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে শময়িয় ও উষীযেল| 13 14 15 তারপর তারা অন্যান্য সমস্ত লেবীয়দের একত্রে জড়ো করে প্রভুর মন্দির আনুষ্ঠানিকভাবে শোধন করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করলেন| রাজার মুখ দিয়ে প্রভুর যে আদেশ এসেছিল তা তাঁরা শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করলেন| 16 যাজকরা প্রভুর মন্দিরের অভ্য়ন্তরভাগে গেলেন| তাঁরা মন্দিরের মধ্যে যে সমস্ত অশুচি জিনিসপত্র ছিল সে সমস্ত বের করে মন্দিরের উঠোনে আনলেন| তারপর লেবীয়রা সেসব কিদ্রোণ উপত্যকায নিয়ে গেলেন এবং তার মধ্যে ফেলে দিলেন| 17 প্রথম মাসের প্রথম দিনে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দিরের শোধনের কাজ শুরু করেছিলেন| ঐ মাসেরই অষ্টম দিনে তাঁরা মন্দিরের প্রবেশ পথে এসে উপস্থিত হলেন এবং তারপর আরো আটদিন ধরে মন্দিরের শুচিকরণের কাজ করে গেলেন| সেই মাসের 16 দিনের মাথায় সমস্ত কাজ শেষ হয়েছিল| 18 এরপর তারা রাজা হিষ্কিয়র কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, “আমরা প্রভুর মন্দিরটি আগাগোড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছি| হোমবলি নিবেদনের জন্য বেদী ও অন্যান্য যা কিছু, যেমন রুটি রাখার জন্য টেবিল এবং সেখানে ব্যবহৃত বাসনকোসন পরিষ্কার ও পবিত্র করেছি| 19 রাজা আহস ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করার পরে তিনি মন্দিরের জিনিসপত্র এবং আসবাবপত্রগুলিকে অবহেলা করেছিলেন| আমরা এসব জিনিষ শুদ্ধ করেছি এবং সেগুলো প্রভুর বেদীর সামনে সাজিযে রেখেছি|” 20 পরদিন ভোরবেলা, রাজা হিষ্কিয় শহরের সমস্ত উচ্চপদাধিকারী কর্মচারীদের নিয়ে মন্দিরে গেলেন| 21 রাজপরিবারের, পবিত্রস্থানের এবং যিহূদার লোকদের পাপমোচনের নৈবেদ্য হিসেবে তাঁরা সাতটা ষাঁড়, সাতটা মেষ, সাতটা মেষশাবক এবং সাতটা পুং ছাগল এনেছিলেন| রাজা হিষ্কিয় হারোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের ঐ প্রাণীগুলিকে প্রভুর বেদীতে বলি দিতে আদেশ দিলেন| 22 তাই যাজকরা প্রথমে ষাঁড়গুলি বলি দিয়ে প্রভুর বেদীতে সেই রক্ত ছিটিয়ে দিলেন| 23 অনুরূপভাবে যাজক সাতটা মেষ, সাতটা মেষশাবক আর সাতটা ছাগল ছানাকে পরপর বলি দিয়ে বেদীতে তাদের রক্ত ছিটিয়ে তা পবিত্র করলেন যাতে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের তাদের পাপ থেকে মুক্তি দেন| রাজা সমস্ত ইস্রাযেলবাসীদের হয়ে এই পাপমোচনের নৈবেদ্য ও হোমবলি নিবেদনের নির্দেশ দিয়েছিলেন| 24 25 এরপর মহারাজ হিষ্কিয় মহাসমারোহে রাজা দাযূদের ভাব্বাদী গাদ ও নাথনের দেওয়া আদেশ অনুযায়ীখোল-কর্তাল, বীণা, তানপুরা বাজাতে বাজাতে লেবীয়দের আবার প্রভুর মন্দিরে পাঠালেন| এভাবে তাঁদেরকে মন্দিরে পাঠানোর নির্দেশ প্রভু তাঁর ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে পাঠিয়েছিলেন| 26 লেবীয়রা সকলে দাযূদের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে এবং যাজকরা শিঙা নিয়ে প্রস্তুত হলেন| 27 তারপর রাজা হিষ্কিয় বেদীতে হোমবলি উত্সর্গের নির্দেশ দিলেন| হোমবলিগুলির উত্সর্গ যখন শুরু হল, তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাওযা শুরু করলো| রাজা দাযূদের বানানো ভেরী ও বাদ্যযন্ত্রগুলি বাজানো হল| 28 যখন বাদ্যযন্ত্রগুলি বাজতে লাগল এবং গায়করা গান করতে লাগলেন তখন সমস্ত লোক, য়াঁরা ওখানে জড়ো হয়েছিলেন তাঁরা প্রভুর উপাসনা করলেন| হোমবলি উত্সর্গ শেষ না হওয়া পর্য়ন্ত তাঁরা উপাসনা করে গেলেন| 29 বলিদানের কাজ শেষ হলে হিষ্কিয় সহ অন্যান্য সকলেই আভূমি নত হয়ে উপাসনা করলেন| 30 যখন রাজা হিষ্কিয় ও পদস্থ ব্যক্তিরা তাঁদের প্রভুর প্রশংসা করে গান গাইতে নির্দেশ দিলেন তাঁরা দায়ূদ ও ভাব্বাদী আসফের লেখা গানগুলো গাইলেন| প্রভুর প্রশংসা করে ও তাঁর সামনে মাথা নত করে তাঁরা সকলেই আনন্দিত হয়ে উঠলেন| 31 হিষ্কিয় বললেন, “যিহূদাবাসীরা শোনো, তোমরা নিজেদেরকে প্রভুর চরণে নিবেদন করলে| এসো তোমরা প্রভুর উদ্দেশ্যে দেওয়ার জন্য আরো বলির জীব ও ধন্যবাদ নৈবেদ্য নিয়ে এসো|” তখন সকলে যার যেমন ইচ্ছে প্রভুর জন্য নৈবেদ্য ও হোমবলি নিয়ে এলো| 32 সেদিন, হোমবলি হিসেবে মোট 70টি ষাঁড়, 100টি মেষ এবং 200টি মেষশাবক প্রভুর কাছে নিবেদিত হল| 33 পবিত্র নৈবেদ্য হিসেবে নিবেদিত হল 600টি ষাঁড় ও 3,000 মেষ| 34 হোমবলির নিমিত্তে সমস্ত জন্তুদের ছাল ছাড়ানো ও কাটবার জন্য যাজকেরা সংখ্যায় খুব কমই ছিলেন| তাই তাঁদের আত্মীযবর্গ, লেবীয়রা সাহায্য করতে এলেন যতক্ষণ না কাজটি শেষ হয় এবং যতক্ষণ না যাজকরা নিজেদের শুদ্ধ করেন, কারণ যাজকদের থেকে লেবীয়রা নিজেদের শুদ্ধ করতে বেশী বিশ্বস্ত ছিলেন| 35 বহু পরিমাণ হোমবলি ছাড়াও, শান্তি নৈবেদ্য এবং পেয নৈবেদ্যর জন্য প্রচুর চর্বি ছিল যেগুলি হোমবলির সঙ্গে দেওয়ার জন্য ছিল| প্রভুর মন্দিরের নিত্যকর্ম আবার শুরু হল| 36 হিষ্কিয় ও তাঁর প্রজারা সকলে ঈশ্বর যে ভাবে অতি দ্রুত তাদেরকে তাঁর সেবার জন্য প্রস্তুত করেছেন তা ভেবে খুবই আনন্দিত হলেন|
1 রাজা হিষ্কিয় ইস্রাযেল ও যিহূদায় প্রত্যেককে বার্তা পাঠালেন এবং ইফ্রয়িম ও মনঃশির লোকেদের চিঠি লিখে দিলেন প্রভুর মন্দিরে আসার জন্য, যাতে তাঁরা সবাই প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য নিস্তারপর্ব উদয়াপন করতে পারেন| 2 তিনি তাঁর সমস্ত উচ্চপদস্থ কর্মচারী এবং জেরুশালেমে সমবেত লোকেদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন এবং দ্বিতীয় মাসে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করবেন বলে স্থির করলেন| 3 যেহেতু যাজকদের অধিকাংশ এই পবিত্র সেবা অনুষ্ঠান উদ্য়াপনের জন্য তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না, এবং লোকরা তখনও জেরুশালেমে সমবেত হয় নি, সেহেতু নির্ধারিত সমযে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করা গেল না| 4 তবে তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাতে হিষ্কিয় সহ সমবেত সকলেই সন্তুষ্ট হয়েছিলেন| 5 এবং বের্-শেবা থেকে শুরু করে দান শহর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের সর্বত্র সকলকে জেরুশালেমে এসে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নিস্তারপর্বে য়োগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হল| ইস্রায়েলের লোকদের একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন যাবত্ মোশির বর্ণিত বিধি অনুযায়ীনিস্তারপর্ব পালন করেন নি| 6 তাই বার্তাবাহকরা ইস্রাযেল ও যিহূদার সর্বত্র রাজা হিষ্কিয়র চিঠি নিয়ে গেল যাতে জানানো হল:“ইস্রায়েলের সন্ততিরা, তোমরা অব্রাহাম, ইস্হাক ও ইস্রায়েলের আরাধ্য ঈশ্বরের দিকে মুখ ফেরাও| একমাত্র তাহলেই তোমরা যারা অশূররাজের সৈন্যদল থেকে পালিয়ে এসেছ, তাদের প্রতি তিনি করুণা পরবশ হবেন| 7 তোমাদের পূর্বপুরুষ এবং সহনাগরিকদের মতো আচরণ কোরো না| তাঁরা তাদের পিতার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছিলেন| তাই প্রভু তাদের ধ্বংস হতে দিয়েছিলেন| এসবই তোমরা নিজেদের চোখে দেখেছো| 8 তোমাদের এইসব পূর্বপুরুষদের মতো গোঁযার্তুমি না করে সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে প্রভুর বন্দনা করো| প্রভু তাঁর আশীর্বাদে যে পবিত্রতম স্থানকে চিরপবিত্র করে তুলেছেন সেখানে এসে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সেবা করো| একমাত্র তাহলেই প্রভুর রোষদৃষ্টির হাত থেকে তোমরা অব্যাহতি পাবে| 9 তোমরা যদি তাঁর চরণতলে ফিরে এসে তাঁকে অনুসরণ করো তাহলে তোমাদের আত্মীযস্বজন ও সন্তানসন্ততিদের অপহরণকারীরা তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবেন এবং তারা সকলে আবার এই দেশে ফিরে আসতে পারবে| তোমাদের প্রভু দয়ালু এবং করুণাময| তোমরা যদি তাঁর কাছে ফিরে আসো তিনি কখনোই তোমাদের দিক থেকে মুখ ফেরাবেন না|” 10 বার্তাবাহকরা সবূলূন পর্য়ন্ত ইফ্রয়িম ও মনঃশির সর্বত্র প্রত্যেকটা শহরে এই আবেদন নিয়ে গেল| কিন্তু লোকেরা এর কোনো গুরুত্ব না দিয়ে এই আবেদন ও বার্তাবাহকদের নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করতে শুরু করলো| 11 তবে আশের মনঃশি ও সবূলূনের বিভিন্ন অঞ্চলের কিছু ব্যক্তি পরম দীনের মতো জেরুশালেমে এসে উপস্থিত হল| 12 এমনকি যিহূদাতেও প্রভু এমনভাবে চলেছিলেন যাতে সমস্ত লোক, রাজা ও তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের মেনে চলতে রাজী হল| 13 দ্বিতীয় মাসে বহু ব্যক্তি জেরুশালেমে খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করতে এলো| 14 এরা সকলে জেরুশালেমের ভ্রান্ত দেবদেবীদের জন্য বানানো বেদী ও ধুপধূনো দেবার বেদীগুলো ভেঙে কিদ্রোণ উপত্যকায ফেলে দিল| 15 দ্বিতীয় মাসের 14 দিনের দিন এরা নিস্তারপর্বের নৈবেদ্যটি বলি দিলেন| যাজকগণ ও লেবীয়রা লজ্জিত মনে সেবার কাজের জন্য প্রস্তুত হলেন কারণ তাঁরা অনুষ্ঠানটির জন্য যথায়থভাবে পবিত্র ছিলেন না| তাঁরা প্রভুর মন্দিরে হোমবলি নিয়ে এলেন| 16 মোশির বিধি অনুযাযী, তাঁরা মন্দিরে তাঁদের নির্ধারিত জায়গাগুলি গ্রহণ করলেন| লেবীয়রা যাজকদের হাতে রক্তের পাত্র তুলে দেবার পর যাজকরা সেই রক্ত বেদীতে ছিটিয়ে দিলেন| 17 উপস্থিত লোকদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন য়াঁরা এই পবিত্র সেবার কাজের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেন নি| এরকম লোকদের জন্য, লেবীয়রা নিস্তারপর্বের নৈবেদ্যটি বলিদান করলেন| 18 এরকম করা হল যেহেতু ইফ্রয়িম, মনঃশি, ইষাখর ও সবূলূনের অনেকেই নিস্তারপর্বের ভোজসভায য়োগদানের জন্য নিজেদের শুচি করেন নি এবং মোশির বিধি অনুযায়ীতাঁরা এটি পালন করেন নি| কিন্তু তারাও য়োগদান করলেন, কারণ হিষ্কিয় প্রার্থনা করে বললেন, “হে প্রভু, তুমি মঙ্গলময| এরা সকলেই সর্বান্তঃকরণে তোমার উপাসনা করতে চাইলেও বিধি অনুযায়ীনিজেদের শুচি করে নি| তুমি এদের ক্ষমা করো| তুমি আমাদের পূর্বপুরুষের আরাধ্য ঈশ্বর| এরা যদি এই পবিত্রতম স্থানের জন্য উপযুক্তভাবে নিজেদের শুদ্ধ করে নাও থাকে, তাহলেও তুমি এদের সবাইকে, যারা সমস্ত হৃদয় দিয়ে তোমাকে চায, ক্ষমা করে দিও|” 19 20 প্রভু রাজা হিষ্কিয়ের় প্রার্থনায সাড়া দিয়ে এদের সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন| 21 ইস্রায়েলের বাসিন্দারা সাতদিন ধরে মহাসমারোহে ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে জেরুশালেমে খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করলো| লেবীয় ও যাজকরা প্রত্যেকদিন তাঁদের সাধ্যমতো প্রভুর প্রশংসা করলেন| 22 যে সমস্ত লেবীয়রা প্রভুর সেবা কাজের অনুধাবন করেছিলেন রাজা হিষ্কিয় তাদের সবাইকে উত্সাহিত করতে লাগলেন| সাতদিন এই উত্সব পালনের পর লোকরা নিস্তারপর্বের নৈবেদ্য উত্সর্গ করলো| তারা তাদের পূর্বপুরুষের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা ও তাঁর প্রতি তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলো | 23 তখন সমস্ত লোক আরো সাতদিন থাকতে রাজী হল| আরো সাতদিন ধরে তারা আনন্দের সঙ্গে নিস্তারপর্ব পালন করলো| 24 যিহূদার রাজা হিষ্কিয়, যাতে এটি সম্ভব হয় তার জন্য 1,000 ষাঁড়, 7,000 মেষ উপস্থিত লোকদের খাবার জন্য দান করলেন| নেতারা সকলে আরো 1,000 ষাঁড় আর 10,000 মেষ দান করলেন| সমস্ত যাজকরা পবিত্র সেবার কাজের জন্য নিজেদের শুদ্ধ করলেন| 25 উপস্থিত প্রত্যেকে, যিহূদার প্রত্যেক যাজকগণ ও লেবীয়রা, ইস্রাযেল থেকে যিহূদায় আসা বহিরাগতরা, অন্যান্য প্রত্যেকে যারা ইস্রাযেল থেকে এসেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকেই খুশী ও আনন্দের সঙ্গে উত্সব পালন করলেন| 26 তাই জেরুশালেমের সর্বত্র তখন খুশীর বন্যা কারণ ইস্রায়েলের রাজা, দাযূদের পুত্র, শলোমনের সময় থেকে জেরুশালেমে এরকম কোনো উত্সব আর কখনও হয়নি| 27 যাজকগণ ও লেবীয়রা উঠে দাঁড়ালেন এবং লোকদের আশীর্বাদ করার জন্য প্রার্থনা করলেন| প্রভু স্বর্গে তাঁর পবিত্র বাসস্থান থেকে তাঁদের সেই প্রার্থনা শুনতে পেলেন|
1 যখন নিস্তারপর্বের উত্সব উদয়াপন শেষ হল, তখন নিস্তারপর্বের জন্য যে সমস্ত ইস্রাযেলবাসী জেরুশালেমে উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁরা যিহূদার বিভিন্ন শহরগুলিতে গেলেন এবং পাথরের তৈরী মূর্ত্তিগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করলেন| আশেরার খুঁটি উপড়ে ফেলে যিহূদা ও বিন্যামীনের সর্বত্র উচ্চ স্থলগুলি ভেঙ্গে দেওয়া হল| ইফ্রয়িম ও মনঃশিতেও একই জিনিস করা হল| মূর্ত্তি পূজোর যাবতীয় চিহ্ন নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্য়ন্ত লোকেরা এইসব করে যেতে লাগলো| তারপর ইস্রায়েলীয়রা নিজেদের শহরে যে যার বাড়িতে ফিরে গেল| 2 যাজকগণ ও লেবীয়দের কযেকটি দলে বিভক্ত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেকটি বিভাগের জন্য কাজের সংজ্ঞা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল| রাজা হিষ্কিয় এই সমস্ত দলের সবাইকে আবার নিজেদের কর্তব্য করতে আদেশ দিলেন| যাজক ও লেবীয়রা আবার নৈবেদ্য, হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদনের কাজে নিযুক্ত হলেন| মন্দিরের সেবা করা ছাড়াও তারা প্রভুর গৃহে ভক্তিগীতি ও প্রশংসা গান করতেন| 3 হিষ্কিয় হোমবলি হিসেবে তাঁর নিজস্ব কিছু পশু নিবেদন করলেন| প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায এইসব পশুদের হোমবলি হিসেবে বলি দেওয়া হতো| প্রভুর বিধি অনুযায়ীপ্রতি বিশ্রামের দিন অমাবস্যার উত্সবের দিন এবং উত্সবের দিনে এইসব পশু বলিদান করা হতো| 4 নিয়ম অনুযায়ীলোকরও তাদের শস্যের একটি নির্ধারিত অংশ ও অন্যান্য জিনিসপত্র যাজক ও লেবীয়দের দেবার কথা ছিল| হিষ্কিয় জেরুশালেমের সবাইকে সেই নিয়ম মেনে চলতে আদেশ দিলেন, যাতে যাজকগণ ও লেবীয়রা তাঁদের ওপর ন্যাস্ত কাজ অবিক্ষিপ্ত মনোয়োগে স্বচ্ছন্দে করতে পারেন| 5 দেশের সর্বত্র লোকরা রাজার এই আদেশের কথা শুনলেন| যে মূহুর্তে ইস্রায়েলীয়রা এই আদেশ শুনলো, তারা তাদের শস্য, দ্রাক্ষারস, তেল ও মধুর ফলনের প্রথমভাগ থেকে উদারভাবে দান করল; তারা যা কিছু এনেছিল তার এক-দশমাংশ দিয়ে দিল| 6 ইস্রাযেল ও যিহূদার শহরাঞ্চলে বসবাসকারী লোকরা তাদের গবাদি পশুর এক-দশমাংশ ও অন্যান্য সামগ্রী ও একই পরিমাণে নিয়ে গ্রামে প্রভু ঈশ্বরের জিনিসপত্র রাখার জন্য নির্ধারিত একটি বিশেষ জায়গায় স্তূপীকৃত করলো| 7 তৃতীয় মাস অর্থাত্ মে-জুন থেকে শুরু করে সপ্তম মাস অর্থাত্ সেপেটম্বর-অক্টোবর পর্য়ন্ত এইভাবে দানসামগ্রী সংগ্রহ করা হল| 8 যখন হিষ্কিয় আর অন্যান্য নেতারা এসে সেই স্তূপাকার জিনিষ যেগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল, দেখলেন, তারা প্রভু আর তাঁর ইস্রায়েলের লোকদের ধন্যবাদ জানালেন| 9 এরপর, হিষ্কিয় যখন স্তূপীকৃত দান সামগ্রী সম্পর্কে যাজকগণ ও লেবীয়দের রশ্ন করলেন, 10 প্রধান যাজক, সাদোক বংশের অসরিয় বললেন, “যেদিন থেকে লোকরা প্রভুর মন্দিরের জন্য দান করতে শুরু করেছে সেই সময় থেকে আমরা কেবল খেযেই চলেছি | কিন্তু আমরা পেট ভরে খাবার পরও এখনও য়থেষ্ট খাবার দাবার পড়ে রযেছে| প্রভু সত্যি সত্যিই তাঁর সেবকদের প্রতি সদয তাই এতো সমস্ত খাবারদাবার সংগ্রহ হয়েছে|” 11 হিষ্কিয় যাজকদের মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলো ঠিকঠাক করতে বললেন| সে কাজ হয়ে গেলে, 12 যাজকরা লোকদের দান ও এক-দশমাংশ ও অন্যান্য যা কিছু প্রভুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়েছিল তা বিশ্বস্তভাবে নিয়ে এসে মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলোয রাখলেন| লেবীয়-কনানীয ছিলেন এই সমস্ত সংগৃহীত জিনিসপত্রের দায়িত্বে| এ ব্যাপারে তাঁর সহকারী ছিলেন তাঁর ভাই শিমিযি| 13 কনানীয আর তাঁর ভাই শিমিযির তত্ত্বাবধানে কাজ করেছিলেন যাজক য়িহীযেল, অসসিয, নহত্, অসাহেল, য়িরীমোত্, য়োষাবদ, ইলীযেল, য়িষ্মখিয, মাহত্, বনায| রাজা হিষ্কিয় ও ঈশ্বরের মন্দিরের অধ্যক্ষ অসরিয় দুজনে মিলে এই সমস্ত লোকদের বেছে নিয়েছিলেন| 14 য়িথার পুত্র কোরি,- মন্দিরের পূর্ব প্রান্তের দ্বাররক্ষী লোকদের ঈশ্বরকে দেওয়া দান এবং পবিত্রতম নৈবেদ্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন| 15 এদন, মিন্যামীন, যেশূয, শময়িয়, অমরিয আর শখনিয এই সংগৃহীত জিনিসগুলি তাদের আত্মীযদের মধ্যে তাদের বিভাজন অনুযাযী, নবীন ও প্রবীণ উভয়কেই বিশ্বস্তভাবে বিতরণ করেছিলেন| 16 যে সব পুরুষ তিন বছর ও তার উর্দ্ধ বয়সের ছিল এবং যাদের নাম বংশ তালিকায ছিল, তারাও এই জিনিষগুলি পেয়েছিল| তাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে হত এবং তাদের বিভাজন অনুসারে তাদের যে সব নিত্য কর্মের দায়িত্ব ছিল তা করতে হত| 17 যাজকদের প্রত্যেককে তাদের প্রাপ্য সামগ্রী দেওয়া হল| এসব কাজ পারিবারিক নথিপত্রে লিপিবদ্ধ পরিবারের নাম দেখে বিধি মতো করা হয়েছিল লেবীয়দের মধ্যে যাদের বয়স 20 বা তার বেশী তারা সকলেই গুরুত্ব ও গোষ্ঠী অনুযায়ীতাদের জন্য নির্ধারিত দানসামগ্রী পেয়েছিলেন| 18 এমনকি লেবীয় পরিবারের স্ত্রী ও পুত্রকন্যারাও দানসামগ্রীর অংশবিশেষ লাভ করেছিলেন| পারিবারিক নথিপত্রে যে সমস্ত লেবীয় পরিবারের নাম ছিল তাঁরা কেউই এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হননি| কারণ লেবীয়রা সব সমযেই একনিষ্ঠ ও পবিত্র মনে সেবার কাজের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতেন| 19 হারোণের উত্তরপুরুরদের মধ্যে কিছু যাজকদের শহরের কাছে চাষবাসের জমি ছিল যেখানে তাঁরা বাস করতেন| এই শহরগুলির প্রত্যেকটি থেকে সুনাম আছে এমন লোকদের হারোণের উত্তরপুরুষদের মধ্যে এবং লেবীয়দের পারিবারিক ইতিহাসে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত তাদের মধ্যে দানসামগ্রী বিলি-বণ্ট্নের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল| 20 রাজা হিষ্কিয় যিহূদায় এই সমস্ত ভাল ভাল কাজ করেছিলেন| তিনি তাঁর প্রভু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা কিছু ভাল ও মঙ্গলজনক সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন| 21 তিনি যে যে কাজে হাত দিয়েছিলেন প্রভুর মন্দিরের সংষ্কার থেকে শুরু করে বিধি নির্দেশ পালন করা, ঈশ্বরকে অনুসরণ করে চলা সব কিছুতেই সাফল্য লাভ করেছিলেন| হিষ্কিয় সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে এই সমস্ত কর্তব্য পালন করেছিলেন|
1 রাজা হিষ্কিয় এই সমস্ত কর্তব্য সুষ্ঠভাবে পালন ও সমাধা করার পর অশূররাজ সন্হেরীব যিহূদা আক্রমণ করতে আসেন| সন্হেরীব তাঁর সেনাবাহিনী সহ দুর্গ দ্বারা সুরক্ষিত যিহূদা শহরের বাইরে তাঁবুসমূহ গেড়েছিলেন কারণ তিনি সেগুলি নিজের জন্য দখল করতে চেয়েছিলেন| 2 যখন হিষ্কিয় জানতে পারলেন যে সন্হেরীব জেরুশালেম আক্রমণ করতে এসেছেন, 3 হিষ্কিয় তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও সৈন্যাধ্যক্ষদের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করলেন দুর্গের বাইরের ঝর্ণার জলধারা বন্ধ করে দেবেন| 4 তখন সকলে মিলে দূর্গের বাইরে সমস্ত ঝর্ণা আর যিহূদার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত নদীর জল বন্ধ করার ব্যবস্থা করলেন| তাঁরা বললেন, “অশূররাজ এখানে আসুন এবং দেখুন কত জলকষ্ট আছে|” 5 হিষ্কিয় জেরুশালেমের প্রাচীরের ভেঙে যাওয়া অংশ মেরামত করে প্রাচীরের ওপর নজরদারি স্তম্ভ বসিযে জেরুশালেমের সুরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করলেন| উপরন্তু, তিনি প্রথম প্রাচীরের চতুর্দিকে আরেকটা দেওয়াল তুলে পূর্ব দিকের পাঁচিল শক্ত করে গাঁথলেন| অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও ঢালও বানালেন| 6 যুদ্ধের সৈন্যাধ্যক্ষদের ওপর তিনি সাধারণ লোকদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিলেন| তিনি শহরের প্রবেশ পথে এই সমস্ত সৈন্যাধ্যক্ষদের সঙ্গে দেখা করে তাদের উত্সাহ দিয়ে বললেন, “শক্তিশালী এবং সাহসী হও| অশূররাজের বিশাল সেনাবাহিনীর কথা ভেবে ভয় পাবার কোনো কারণ নেই| অশূররাজের থেকেও বড় শক্তি আমাদের সঙ্গে আছেন| 7 8 অশূররাজের শুধু সৈন্যই আছে কিন্তু আমাদের সঙ্গে আমাদের প্রভু ঈশ্বর আছেন| তিনি আমাদের সাহায্য করবেন এবং আমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন|” এই ভাবে যিহূদারাজ হিষ্কিয় সকলকে অনুপ্রাণিত করে তাদের মনের জোর বাড়িযে দিলেন| 9 ইতিমধ্যে, অশূররাজ সন্হেরীব আর তাঁর সেনারা লাখীশ শহরের কাছে শহরটা দখল করার জন্য তাঁবু ফেলেছিলেন| তখন সন্হেরীব রাজা হিষ্কিয় ও যিহূদার লোকদের কাছে একটি খবর পাঠালেন যাতে বলা হল, 10 ‘কোন বিশ্বাস এবং অবলম্বনের ওপর তোমরা ভরসা করছ যে তোমরা অবরুদ্ধ জেরুশালেমে রয়েছ? 11 হিষ্কিয় তোমাদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে| চালাকি করে সে তোমাদের জেরুশালেমে আটকে রেখেছে, যাতে তোমরা খাবার ও জলের অভাবে বেঘোরে মারা পড়| হিষ্কিয় তোমাদের বলছে, “আমাদের প্রভু ঈশ্বর অশূররাজের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করবেন|” 12 আর এদিকে ও নিজে প্রভুর সমস্ত উচ্চস্থান ও বেদী ভেঙ্গে দিয়ে যিহূদা আর জেরুশালেমের লোকদের একটিমাত্র বেদীতে উপাসনা করতে ও ধুপধূনো দিতে বলছে| 13 তোমরা সকলে নিশ্চয়ই জানো আমি ও আমার পূর্বপুরুষরা অন্যান্য রাজ্যের লোকদের কি অবস্থা করেছি| এমন কি ঐ সব দেশের দেবতারাও সেসব লোককে আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি| 14 আমার পূর্বপুরুষরা একের পর এক রাজ্য ধ্বংস করেছেন| এমন কোনো দেবতা নেই যিনি আমাকে তাঁর ভক্তদের হত্যা করার থেকে থামাতে পারেন| তোমরা ভাবছো তোমাদের দেবতা তোমাদের আমার হাত থেকে বাঁচাতে পারবে? 15 হিষ্কিয়র চালাকির ফাঁদে পড়ো না| কারণ কোনো দেশের কোনো দেবতাই তাঁর ভক্তদের আমার বা আমার পূর্বপুরুষের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি| ভুলেও ভেবো না যে তোমাদের প্রভু তোমাদের মৃত্যু আটকাতে পারবে|”‘ 16 অশূররাজের পদস্থ কর্মচারীরা সকলে প্রভু ঈশ্বর ও তাঁর দাস হিষ্কিয়র বিরুদ্ধে আরো নানা ধরণের বিরূপ মন্তব্য করেছিল| 17 অশূররাজ তাঁর চিঠিতেও প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর সম্পর্কে বিভিন্ন অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন| তিনি চিঠিতে লিখেছিলেন: “অন্য দেশের দেবতারা যেমন তাদের ভক্তদের আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি, সে রকমই হিষ্কিয়র দেবতাও আমার হাত থেকে ওর ভক্তদের একটাকেও বাঁচাতে পারবে না|” 18 এরপর সন্হেরীবের আধিকারিকরা দুর্গপ্রাকারের ওপর যে সমস্ত জেরুশালেমের লোক দাঁড়িয়েছিলেন তাদের ভয় দেখানোর জন্য হিব্রু ভাষায় চেঁচিয়ে উঠলেন যাতে তিনি নগরীটি দখল করতে পারেন| 19 তারা জেরুশালেমের ঈশ্বর সম্পর্কেও এমনভাবে কথা বলল যেন তিনি অন্যান্য জাতির সেই সমস্ত দেবতাদের একজন যাদের মানুষ হাতে করে তৈরী করেছে| 20 রাজা হিষ্কিয় আর আমোসের পুত্র ভাব্বাদী যিশাইয় তখন এই সঙ্কটের থেকে রক্ষা পেতে উচ্চস্বরে স্বর্গের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করলেন| 21 এবং প্রভু অশূররাজের শিবিরে একজন দূত পাঠালেন| সেই দূত তখন অশূরীয়দের সমস্ত সৈন্য, নেতা ও আধিকারিকদের হত্যা করলেন| অবশেষে, চরম লজ্জা নিয়ে অশূররাজ তাঁর রাজ্যে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন| এরপর, যখন তিনি তাঁর দেবতার মন্দিরে গেলেন, তাঁর নিজেরই কযেকজন পুত্র তরবারির সাহায্যে তাঁকে হত্যা করলো| 22 প্রভু এইভাবে হিষ্কিয় ও তাঁর লোকদের অশূররাজ সন্হেরীব ও অন্যান্যদের হাত থেকে রক্ষা করেন| প্রভু তাদের সব দিকেই শান্তি দিয়েছিলেন| 23 বহু ব্যক্তি জেরুশালেমে প্রভুর জন্য এবং যিহূদার রাজা হিষ্কিয়র জন্য মূল্যবান উপহার এনেছিলেন যাতে অন্য সমস্ত দেশ হিষ্কিয়কে সম্মান প্রদর্শন করে| 24 সেই সমযে, হিষ্কিয় খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং প্রায মৃত্যুমুখে পতিত হলেন| তিনি তখন প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলে প্রভু তাঁকে দর্শন দিয়ে একটি দৈব সংকেতের প্রতি লক্ষ্য রাখতে বলেন| 25 কিন্তু হিষ্কিয় এতো গর্বিত ছিলেন যে তিনি তখন ঈশ্বরের এই করুণার জন্য তাঁর প্রতি ধন্যবাদ পর্য়ন্ত জ্ঞাপন করেন নি| এতে ঈশ্বর হিষ্কিয় এবং যিহূদা ও জেরুশালেমের ওপর অত্যন্ত রুদ্ধ হলেন| 26 এই কারণে হিষ্কিয় ও এই সমস্ত লোকরা তাদের মনোভাব ও জীবনযাপনের ধারা পরিবর্তন করেছিলেন এবং গর্বিত হবার পরিবর্তে নম্রভাবে থাকতে শুরু করলেন| এর ফলে, হিষ্কিয়র জীবদ্দশায় প্রভুর রোধাগ্ন তাদের স্পর্শ করেনি| 27 হিষ্কিয় বহু ধনসম্পদ ও সম্মানের অধিকারী হয়েছিলেন| তিনি সোনা, রূপো, গযনাগাঁটি, মশলাপাতি অস্ত্রশস্ত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র রাখার জন্য নতুন নতুন জায়গা বানিয়েছিলেন| 28 লোকরা তাকে যে সমস্ত খাদ্যশস্য, দ্রাক্ষারস, তেল ইত্যাদি পাঠাতো সেসব রাখার জন্যও ভাঁড়ার ঘর ছিল| গবাদি পশু, ঘোড়া এদের থাকার জন্য বানানো হয়েছিল গোযাল ও আস্তাবল| 29 এছাড়াও হিষ্কিয় অনেক নতুন শহরের পত্তন করেছিলেন এবং মেষপাল ও অন্যান্য গবাদি পশুর অধিকারী হয়েছিলেন| ঈশ্বর হিষ্কিয়কে ধনবান করেছিলেন| 30 হিষ্কিয়ই জেরুশালেমের গীহোন ঝর্ণার উত্স মুখের স্রোত আটকে তার গতিপথ দায়ূদ নগরীর পশ্চিম প্রান্তে পরিবর্তিত করেছিলেন| তাঁর সমস্ত কাজেই হিষ্কিয় সফলতা লাভ করেন| 31 হিষ্কিয়র এই একটানা সফলতার কারণে বাবিলের নেতাদের তাঁর সাফল্যের গোপন কথা শিখতে পাঠানো হয়েছিল| হিষ্কিয়কে পরীক্ষা করার জন্য ঈশ্বর তাকে একা রেখে দিলেন, যাতে তিনি জানতে পারেন হিষ্কিয় সত্যি কতটা বিশ্বস্ত ছিল| 32 হিষ্কিয় আর যা কিছু করেছিলেন তিনি কিভাবে প্রভুকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছিলেন সে সবই আমোসের পুত্র যিশাইয়র ‘দর্শন পুস্তক’ এবং ‘যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে| 33 হিষ্কিয়র মৃত্যুতে, লোকরা তাঁকে পাহাড়ের ওপর দাযূদের পূর্বপুরুষের মধ্যে সমাধিস্থ করল এবং তাঁর মৃত্যুর পর যিহূদার ও জেরুশালেমের সমস্ত লোকরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানায| হিষ্কিয়র মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মনঃশি নতুন রাজা হলেন|
1 মাত্র বারো বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে রাজা মনঃশি 55 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 2 মনঃশি প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন| যে সমস্ত জাতির লোকদের প্রভু ইস্রায়েলীয়রা আসার আগে পাপাচরণের জন্য তাদের ভূখণ্ড থেকে উত্খাত করেছিলেন, মনঃশি তাদের অনুসৃত ভযানক ও জঘন্য পথে জীবনযাপন করেন| 3 মনঃশি আবার নতুন করে তাঁর পিতার ভেঙ্গে দেওয়া উচ্চস্থান বানানো ছাড়াও বাল দেবতার বেদী ও দেবী আশেরার খুঁটি বসিযেছিলেন| আকাশের নক্ষত্ররাজির সামনেও তিনি মাথা নত করেন ও তাদের পূজো করেন| 4 প্রভুর মন্দিরে, জেরুশালেমে যে মন্দিরে প্রভু আজীবন তাঁর উপস্থিতির চিহ্ন প্রকাশের বাসনা করেছিলেন, সেই মন্দিরে মনঃশি মূর্ত্তিদের বেদী স্থাপন করেছিলেন| 5 প্রভুর মন্দিরের দুটো উঠোনে মনঃশি আকাশের তারকারাজির জন্য বেদী স্থাপন করেছিলেন| 6 বিন্হিন্নোমের উপত্যকায, তিনি তাঁর নিজের সন্তানদের আগুনে উত্সর্গ করেছিলেন| তিনি ভবিষ্যত্ দ্রষ্টা, মোহক, য়ৌগিক ও মাযাএযিার মাধ্যমেও দুষ্ট আত্মা, প্রেতাত্মা ও যাদুকরদের সহায়তায তাঁর মনঃস্কামনা পূর্ণ করতে চেয়েছিলেন| এইরকম নানাভাবে প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করে তিনি প্রভুকে রুদ্ধ করে তুলেছিলেন| 7 তিনি মন্দিরে এক মূর্ত্তি স্থাপন করেছিলেন যেখানে প্রভু দায়ূদ ও তাঁর পুত্র শলোমনের কাছে ঘোষণা করেছিলেন, “আমি এই মন্দিরে এবং ইস্রায়েলের সমস্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে থেকে যাকে মনোনীত করেছি সেই জেরুশালেমে আমার নাম চিরকাল রাখব| সেই মন্দিরে তিনি একটি মূর্ত্তি স্থাপন করলেন| 8 আমি মোশিকে যে বিধি ও নির্দেশগুলি দিয়েছিলাম শুধু যদি ইস্রায়েলীয়রা সেগুলি পালন করে তাহলে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষকে যে জমি দিয়েছিলাম তা কখনো আবার ফিরিযে নেব না|” 9 কিন্তু যিহোশূয়র সময় প্রভু যে জাতিগুলিকে ধ্বংস করেছিলেন মনঃশি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের, তার থেকেও বেশী পাপাচরণে প্রবৃত্ত করেছিলেন| 10 প্রভু মনঃশি ও তাঁর প্রজাদের সতর্ক করলেও তাঁরা তাঁর কথায় কর্ণপাত করলেন না| 11 তখন প্রভু অশূররাজের সৈন্যাধ্যক্ষদের দিয়ে মনঃশির রাজত্ব আক্রমণ করালেন| এই সৈন্যাধ্যক্ষরা মনঃশিকে বন্দী করে তাঁর হাতে পাযে বেড়ি পরিযে, শেকলে বেঁধে তাঁকে বাবিলে নিয়ে গেলেন| 12 তারপর, যখন তিনি মহা সঙ্কটে পড়লেন, তখন মনঃশি প্রভু তাঁর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন এবং গভীরভাবে তার পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের কাছে নিজেকে অবনত করলেন| 13 তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন এবং সাহায্য চাইলেন| ঈশ্বর তার প্রার্থনা শুনলেন এবং তার অনুরোধ রাখলেন এবং তিনি তাঁকে জেরুশালেমে, তাঁর রাজত্বে ফিরে গিয়ে তাঁর সিংহাসনে বসতে দিলেন| মনঃশি বুঝতে পারলেন যে প্রভুই প্রকৃত ঈশ্বর| 14 এ ঘটনার পর মনঃশি নগরীর বাইরে আরেকটি পাঁচিল তুললেন| এই দেওয়ালটি গীহোন ঝর্ণার পশ্চিম প্রান্তের কিদ্রোণ উপত্যকা থেকে ওফেল পর্বতের মত্সদ্বার পর্য়ন্ত বিস্তৃত হল| এবারের পাঁচিলগুলো খুব উঁচু করে বানানো হয়| এরপর মনঃশি যিহূদার সমস্ত দুর্গবেষ্টিত শহরে সেনাপতিসমূহ নিযোগ করেন| 15 তিনি সমস্ত মূর্ত্তি ও প্রতিকৃতিগুলি প্রভুর মন্দির থেকে সরিয়ে ফেলেন এবং মন্দিরের পর্বতের ওপর এবং জেরুশালেমে তাঁর বানানো বেদীগুলিও ভেঙে শহরের বাইরে ফেলে দিলেন| 16 তারপর তিনি প্রভুর জন্য বেদীটি উদ্ধার করলেন এবং মঙ্গল নৈবেদ্য ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন-সূচক নৈবেদ্য অর্পণ করলেন এবং যিহূদার সমস্ত লোকদের প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সেবায নিযোজিত হতে আদেশ দিলেন| 17 লোকরা উচ্চস্থলীতে বলি দিলেও তারা তা একমাত্র তাদের প্রভু ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই দিতেন| 18 মনঃশি আর যা কিছু করেছিলেন, ঈশ্বরের প্রতি তাঁর প্রার্থনা বা প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে যে সমস্ত ভাব্বাদী তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের সরকারী নথিপত্র’তে লিপিবদ্ধ আছে| 19 মনঃশির প্রার্থনা এবং ঈশ্বরের তাতে সাড়া দেওয়া, তাঁর পাপ এবং বিশ্বাসহীনতা, যেখানে যেখানে তিনি উচ্চস্থান স্থাপন করেছিলেন সেই সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা, আশেরার খুঁটি সমূহ ও মূর্ত্তিসমূহ, নিজেকে নম্র করবার পূর্বে, এগুলি পরিপূর্ণভাবে “ভাব্বাদীদের ইতিহাস গ্রন্থে” লেখা আছে| 20 মনঃশির মৃত্যুর পর লোকরা তাকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করার পর তাঁর পুত্র আমোন নতুন রাজা হলেন| 21 আমোন 22 বছর বয়সে রাজা হয়ে মাত্র দু বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 22 আমোন প্রভুর প্রতি বহু পাপাচরণ করেন| তাঁর পিতার বানানো খোদাই করা মূর্ত্তির সামনে বলিদান করা ছাড়াও আমোন এই সমস্ত মূর্ত্তি পূজো করতেন| 23 তিনি তাঁর পিতা মনঃশির মতো দীনভাবে প্রভুর কাছে আত্মসমর্পণও করেন নি| বরঞ্চ তিনি উত্তরোত্তর আরো অপরাধ করতে থাকেন| 24 আমোনের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চএান্ত করে তাঁকে রাজপ্রাসাদেই হত্যা করলো| 25 কিন্তু যিহূদার লোকরা এই সমস্ত চএান্তকারী ভৃত্যদের হত্যা করে আমোনের পুত্র য়োশিযকে সিংহাসনে বসালো|
1 যোশিয় মাত্র আট বছর বয়সে রাজা হয়ে 31 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 2 য়োশিয প্রভু বর্ণিত সত্ পথে জীবনযাপন করেছিলেন| তাঁর পূর্বপুরুষ দাযূদের মতোই তিনি বহু সত্কাজ করেন এবং এই পথ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি| 3 তাঁর রাজত্বের আট বছরে, য়োশিয, যখন তিনি তখনও একজন বালক মাত্র ছিলেন, ঈশ্বরকে খুঁজতে শুরু করেন, যিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ দ্বারা পূজিত| বারো বছর রাজত্ব করার পর, তিনি যিহূদা ও জেরুশালেম থেকে উঁচু স্থানগুলির উত্পাটন, আশেরার খুঁটিগুলি, মূর্ত্তিসমূহ ও প্রতিকৃতি নির্মূল করার অভিযান শুরু করেন| 4 লোকরা তাঁর আদেশে বালদেবের বেদী ও ধুপধূনো দেবার উঁচু বেদীগুলি ভেঙে ফেলেন| মূর্ত্তি ও প্রতিকৃতিগুলো ভেঙে গুঁড়ো করার পর তিনি সেই ধূলো বালদেবের মৃত উপাসকদের কবরে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন| 5 এবং য়োশিয বালের সেই সব যাজকদের হাড়গুলি এবং তাদের বেদীগুলি পুড়িয়ে ছাই করেন| 6 মনঃশি থেকে ইফ্রয়িম, শিমিযোন থেকে নপ্তালি- সমগ্র যিহূদা ও জেরুশালেম থেকে 7 য়োশিয এভাবে মূর্ত্তিপূজোর অবসান ঘটিযেছিলেন| এই সবকটি শহরে ও শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইস্রায়েলের সর্বত্র তিনি উচ্চস্থান ও আশেরার খুঁটি, দেবতাদের মূর্ত্তিসমূহ ভেঙে ধূলায মিশিয়ে দিয়ে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 8 যিহূদায় 18 বছর রাজত্ব করার পর এবং সেই ভূখণ্ডকে এবং মন্দিরকে শুদ্ধ করবার পর, য়োশিয অত্সলিযর পুত্র শাফন, নগরপাল মাসেয় ও সচিব য়োযাহষের পুত্র য়োযাহকে প্রভুর মন্দিরটি সারানোর আদেশ দিলেন| 9 আদেশ পালন করতে এরা সকলে প্রথমে মহাযাজক হিল্কিযর সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে লোকরা ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য যে অর্থ দিয়েছেন তা তুলে দিলেন| লেবীয় দ্বাররক্ষীগণ এই অর্থ মনঃশি, ইফ্রয়িম, যিহূদা, বিন্যামীন, জেরুশালেম ও ইস্রায়েলে যারা থেকে গিয়েছিল, তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন| তারপর তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে গেলেন| 10 এরপর লেবীয়রা সেই অর্থ প্রভুর মন্দিরের কাজের তত্ত্বাবধায়কদের দিলেন| এমানুসারে তত্ত্বাবধায়করা সেই অর্থ প্রভুর মন্দিরে যেসব শ্রমিক কাজ করবে তাদের দিলেন| 11 ছুতোরকে কড়িবর্গার জন্য কাঠ কিনতে এবং পাথর কেনবার জন্য পাথর কাটুরেদের অর্থ দিলেন| তাঁরা এটা করলেন কারণ যিহূদার আগের রাজারা মন্দিরের ইমারতগুলিকে ধ্বংস হয়ে যেতে দিয়েছিলেন| 12 নিযুক্ত শ্রমিকরা লেবীয় মরারি পরিবারের লেবীয় য়হত্ ও ওবদিযর তত্ত্বাবধানে এবং কহাত্ পরিবারের সখরিয় ও মশুল্লমের অধীনে মন প্রাণ দিয়ে কাজ করলো| যে সমস্ত লেবীয়রা দক্ষ গাইযে, বাজিযে ছিলেন তাঁরা শ্রমিকদের এবং যারা বিভিন্ন রকমের কাজ করেছিলেন, তাদের তত্ত্বাবধান করলেন| কিছু লেবীয় করনিক, অধিকারিক ও রক্ষী হিসেবে কাজ করলেন| 13 14 সেই সময, যখন লেবীয়রা প্রভুর মন্দির থেকে অর্থ বের করছিলেন, যাজক হিল্কিয, মোশির মাধ্যমে প্রভু যে বিধিপুস্তকটি দিয়েছিলেন সেটিকে খুঁজে পেলেন| 15 উত্তেজিত হিল্কিয তখন সচিব শাফনকে ডেকে বললেন, “আমি প্রভুর গৃহ থেকে বিধি পুস্তক খুঁজে পেয়েছি|” এবং তিনি শাফনকে সেটি দেখতে দিলেন| 16 শাফন তা রাজা য়োশিযর কাছে নিয়ে এসে বললেন, “আপনার কর্মচারীরা আপনার সমস্ত নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে| 17 প্রভুর মন্দিরে যে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল তা দিয়ে ঠিকাদার আর মিস্ত্রিদের মজুরি দেওয়া হয়েছে|” 18 তারপর শাফন রাজা য়োশিযকে বললেন, “যাজক হিল্কিয আমায় একটা বই দিয়েছিলেন|” একথা বলে রাজার সামনে বিধি পুস্তকটি পাঠ করতে শুরু করলেন| 19 বিধি পুস্তকের কথাগুলি শুনে রাজা য়োশিয মানসিকভাবে বিপর্য়্য়স্ত হলেন এবং তাঁর জামাকাপড় ছিঁড়তে শুরু করলেন| 20 এবং তখন য়োশিয হিল্কিযকে, শাফনের পুত্র অহীকাম, মীখায়ের পুত্র অব্দোন, লেখক শাফন আর রাজার ভৃত্য অসাযকে নির্দেশ দিলেন, 21 “শিগ্গির গিয়ে প্রভুর কাছে খুঁজে পাওয়া বিধি পুস্তকে বর্ণিত বিষয সম্পর্কে রশ্ন করো| আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর বিধি অনুসরণ করেন নি বলে প্রভু আমাদের ওপর খুবই রুদ্ধ হয়েছেন| তারা এই বইয়ে বর্ণিত সমস্ত বিধি ঠিকমতো পালন করেন নি|” 22 হিল্কিয ও রাজার সমস্ত ভৃত্যরা সকলে তখন রাজার বস্ত্রাগারের তত্ত্বাবধায়ক হস্রহের পৌত্র, তোখতের পুত্র, শল্লুমের স্ত্রী ভাব্বাদিনী হুল্দার কাছে জেরুশালেমে গিয়ে উপস্থিত হলেন| তখন হিল্কিয আর রাজভৃত্যরা হুল্দাকে বইটি সম্পর্কে জানাল| 23 হুল্দা তাদের বললেন: “রাজা য়োশিযকে গিয়ে বলো: প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর জানিয়েছেন, 24 ‘আমি এই অঞ্চলে ও এখানে বসবাসকারী লোকদের জীবনে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলবো| যিহূদার রাজার সামনে যা পাঠ করা হয়েছে, বিধি পুস্তকে যেসব ভযানক ঘটনার কথা বর্ণিত হয়েছে আমি সেই সবই এখানে ঘটাবো| 25 কারণ লোকরা আমাকে পরিত্যাগ করেছে এবং অন্যান্য মূর্ত্তিসমূহের সামনে ধুপধূনো বালিয়েছে; তাদের যাবতীয় কুকাজ আমায় রুদ্ধ করে তুলেছে| তাই এই সমগ্র অঞ্চলের ওপর আমি আমার রোধাগ্ন বর্ষণ করবো যা কিছুতে নির্বাপিত হবে না|” 26 “যাই হোক, যিহূদার রাজা য়োশিয, যিনি তোমাদের প্রভুর কাছে খবর সংগ্রহের জন্য পাঠিয়েছেন, তাঁকে বলো যে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এ কথাও বলেন: 27 ‘য়োশিয, তুমি তোমার মন বদলেছ এবং আমার কাছে নিজেকে নম্র করেছ, তোমার পরনের পোশাক ছিঁড়েছ এবং আমার সামনে কেঁদেছ| তোমার হৃদয় কোমল, তাই আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি| 28 আমি তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের মধ্যে নিয়ে যাবো| তুমি শান্তিতেই মরতে পারবে| এই ভূখণ্ডে ও এখানকার লোকদের জীবনে আমি যে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলবো তা তোমায় চোখে দেখে যেতে হবে না|”‘ হিল্কিয ও রাজকর্মচারীরা এসে রাজাকে এই খবর জানালেন| 29 রাজা য়োশিয তখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বললেন| 30 রাজা নিজে প্রভুর মন্দিরে গেলেন| যখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত লোক, যাজক ও লেবীয়রা, ধনী-দরিদ্র, উচ্চ-নীচ সবাই য়োশিযর কাছে এলো, তিনি তাদের প্রভুর মন্দিরে খুঁজে পাওয়া চুক্তি পুস্তকে লিখিত সবকিছু পাঠ করে শোনালেন| 31 এরপর রাজা তাঁর নিজের জায়গায় উঠে দাঁড়িয়ে প্রভুর সামনে তাঁর অনুগামী হইবার এবং সমস্ত অন্তঃকরণের ও সমস্ত প্রাণের সহিত তাঁহার আজ্ঞা বিধি এবং নিয়মসকল পালন করবেন বলে শপথ করলেন| 32 এরপর তিনি জেরুশালেম ও বিন্যামীনের সকলকে দিয়েও একই প্রতিশ্রুতি করালেন| জেরুশালেমের লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের সামনে করা শপথ রক্ষা করতে সম্মত হলেন| 33 ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বিভিন্ন দেশের মূর্ত্তি ছিল| য়োশিয সেইসব ভযানক জঘন্য মূর্ত্তি ভেঙে ফেলে ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর সেবা করতে বাধ্য করালেন| যতদিন পর্য়ন্ত য়োশিয বেঁচে ছিলেন লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের প্রভু ঈশ্বরের সেবা করে চলেছিলেন|
1 রাজা য়োশিয জেরুশালেমে প্রভুর জন্য নিস্তারপর্ব উদয়াপন করেছিলেন| প্রথম মাসের 14 দিনে তারা নিস্তারপর্বের মেষটি বলিদান করে| 2 য়োশিয তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য যাজকদের বেছে নিয়েছিলেন এবং প্রভুর মন্দিরে কাজকর্ম করার সময় তিনি তাদের উত্সাহিত করেছিলেন| 3 যে সমস্ত লেবীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের শিক্ষাদান করতেন এবং প্রভুর সেবার জন্য য়াঁরা পৃথকভাবে সমর্পিত ছিলেন, য়োশিয তাঁদের বলেছিলেন, “পবিত্র সিন্দুকটি রাজা দাযূদের সন্তান শলোমনের বানানো মন্দিরে রেখে দাও| ওটা কাঁধে বয়ে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর তোমাদের আর কোনো প্রযোজন নেই| এবার মন দিয়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও ইস্রায়েলের লোকদের সেবা করো| 4 পরিবারগোষ্ঠী অনুযায়ীমন্দিরের সেবার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখো| রাজা দায়ূদ ও তাঁর সন্তান তোমাদের জন্য যে কর্তব্য বিধান করেছেন মন প্রাণ দিয়ে তা পালন করো| 5 যাও, লোকদের বিভিন্ন পরিবারের জন্য নির্দ্দিষ্ট মন্দিরের পবিত্র স্থানে লেবীয়গোষ্ঠীর সঙ্গে দাঁড়াও| 6 নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দাও, প্রভুর জন্য নিজেদের শুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলো| তোমাদের ভাইদের জন্য মেষগুলো প্রস্তুত করে রাখো| এসো, প্রভু মোশির মাধ্যমে আমাদের যা যা করতে আদেশ দিয়েছেন আমরা সেই সব করি|” 7 নিস্তারপর্বে বলি দেবার জন্য য়োশিয ইস্রায়েলের লোকদের নিজের গবাদি পশু থেকে 30,000 ছাগল ও মেষ ছাড়াও আরো 3,000 ষাঁড় দিয়েছিলেন| 8 য়োশিযর অধীনস্থ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও মুক্ত হস্তে নিস্তারপর্ব উদ্য়াপনের জন্য লেবীয় ও যাজকবর্গ লোকদের বিভিন্ন পশু ও জিনিসপত্র দান করেছিলেন| প্রভুর মন্দিরের প্রধান আধিকারিক হিল্কিয, সখরিয় এবং য়িহীযেল যাজকদের কাছে 2,600টি মেষ ও ছাগল এবং 300টি ষাঁড় দান করেছিলেন| 9 কনানিয, শময়িয়, নথনেল ও তাঁর ভাইরা, হশবিয, য়ীযীযেল, লেবীয় প্রধান, য়োষাবদের মত লোকরা নিস্তারপর্বে বলিদানের জন্য লেবীয়দের 500টি মেষ ও ছাগল এবং 500 টি ষাঁড় দান করেছিলেন| এই লোকরা ছিল লেবীয়দের নেতৃবৃন্দ| 10 রাজা যেমন আদেশ করেছিলেন সেই অনুযায়ীসমস্ত রকম প্রস্তুতি শেষ হলে যাজকরা তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ালেন এবং লেবীয়রা তাদের নিজের নিজের দলগুলির সঙ্গে দাঁড়ালেন| 11 নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দেওয়া হল| তারপর লেবীয়রা চামড়া ছাড়িযে যাজকদের হাতে বলি দেওয়া পশুর রক্ত তুলে দিলেন| যাজকরা সেই রক্ত বেদীর ওপর ছিটিয়ে দিলেন এবং 12 তারপর বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর হাতে, মোশির বিধি পুস্তক অনুযাযী, প্রভুর প্রতি হোমবলির জন্য বলির মাংস তুলে দিলেন| 13 নির্দেশ অনুযাযী, লেবীয়রা আগুনের অাঁচে নিস্তারপর্বের মেষশাবকের মাংস ঝলসে নিলেন| তারপর দ্রুত লোকদের মধ্যে মাংস বিতরণ করা হল| 14 এসব কাজ শেষ হবার পর, লেবীয়রা তাদের নিজেদের ও হারোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের জন্য বরা? মাংসের ভাগ পেলেন| যেহেতু রাত্রি পর্য়ন্ত এই সমস্ত যাজক সকলেই হোমবলি এবং চর্বি নিবেদনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন, লেবীয়রা তাঁদের এবং যাজকদের জন্য মাংস তৈরী করলেন| 15 আসফের বংশের লেবীয় গায়করা এরপর রাজা দাযূদের নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন| এদের মধ্যে আসফ, হেমন রাজার ভাব্বাদী য়িদূথূন প্রমুখরা ছিলেন| দ্বাররক্ষীদের কাউকেই নিজেদের জায়গা ছেড়ে নড়তে হয়নি কারণ তাদের অন্যান্য লেবীয় ভাইরা সকলেই নিস্তারপর্বের জন্য যা যা করা প্রযোজন, সুষ্ঠভাবে করেছিলেন| 16 অথার্ত্ রাজা য়োশিয যেভাবে বলেছিলেন প্রভুর উপাসনার জন্য সব কিছু ঠিক সেইভাবে প্রস্তুত করা হল| এরপর নিস্তারপর্ব উদয়াপন করা হল এবং বেদীতে হোমবলি নিবেদন করা হল| 17 ইস্রায়েলের যে সমস্ত লোকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তারা সকলে সাতদিন ধরে নিস্তারপর্ব ও খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করলো| 18 সেই ভাব্বাদী শমূযেলের সমযের পর থেকে আর এভাবে ইস্রায়েলে নিস্তারপর্ব উদয়াপন করা হয়নি| য়োশিয যেভাবে যাজকদের সঙ্গে, লেবীয়দের সঙ্গে এবং সমগ্র যিহূদা ও ইস্রায়েলে জেরুশালেমের লোকেদের সঙ্গে এই নিস্তারপর্ব উদয়াপন করলেন, ইস্রায়েলের কোনো রাজাই আগে তা পালন করেন নি| 19 রাজা য়োশিযর রাজত্বের 18 বছরের মাথায় এই নিস্তারপর্ব উদয়াপন করেছিলেন| 20 যোশিয় এই সবকিছু করার পরে মিশররাজ নখো ফরাত্ নদীর তীরবর্তী কর্কমীশ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলেন, এবং য়োশিয তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করলেন| 21 নখো রাজা য়োশিযকে বার্তাবাহক মারফত্ জানালেন, “মহারাজ, আমি আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসি নি| এটি আদৌ আপনার কোনো সমস্যা নয়| আমি আমার শএুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছি কারণ ঈশ্বর আমার পক্ষে এবং তিনি আমাকে দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছেন| তাই আমাকে থামাবেন না, তাহলে ঈশ্বর আপনাকে ধ্বংস করবেন|” 22 কিন্তু য়োশিয এই সতর্কবাণীতে কর্ণপাত করলেন না এবং ছদ্মবেশে মগিদ্দোতে নখোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন| 23 যখন তীরন্দাজরা রাজা য়োশিযকে বিদ্ধ করল, তিনি তাঁর ভৃত্যদের বললেন, “আমাকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে চলো, আমি গুরুতর ভাবে জখম হয়েছি|” 24 ভৃত্যরা য়োশিযকে তাঁর রথ থেকে সরিয়ে তাঁরই আনা অন্য একটি রথে করে জেরুশালেমে নিয়ে এলো| সেখানেই তাঁর মৃত্যু হল| য়োশিযকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর মৃত্যুতে যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকরা গভীরভাবে শোকাচ্ছন্ন হলেন| 25 য়িরমিয য়োশিযর পারলৌকিক অনুষ্ঠানের জন্য কিছু গান লিখেছিলেন এবং গেয়েও ছিলেন, লোকরা এখনো সেই গান গেয়ে থাকে| রাজা য়োশিযর জন্য শোক প্রকাশ করে গান গাওযা ইস্রায়েলীয় জনজীবনের একটি অঙ্গে পরিণত হল| এই গানগুলি ‘পারলৌকিক অনুষ্ঠানের গান’ পুস্তকে লিপিবদ্ধ আছে| 26 রাজা য়োশিয তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রাযেল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| এই গ্রন্থ থেকে প্রভুর প্রতি তাঁর ভক্তি ও নিষ্ঠা এবং তিনি কিভাবে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন সে কথাও জানা যায়| 27
1 যিহূদার লোকরা য়োশিযর পুত্র য়িহোযাহসকে জেরুশালেমে নতুন রাজা হিসেবে নির্বাচিত করলেন| 2 য়িহোযাহস 23 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে মাত্র তিন মাস জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 3 তারপর মিশরের রাজা নখো এসে য়িহোযাহসকে বন্দী করেন| তিনি যিহূদার লোকেদের 3 3,4 টন রূপো ও 75 পাউণ্ড সোনা কর হিসেবে দিতে বাধ্য করেন| 4 নখো য়িহোযাহসের ভাই ইলীয়াকীমকে যিহূদা ও জেরুশালেমের নতুন রাজা হিসেবে নিযুক্ত করলেন, এবং তাঁর নতুন নামকরণ করলেন য়িহোযাকীম, তবে তিনি য়িহোযাহসকে তাঁর সঙ্গে মিশরে নিয়ে যান| 5 য়িহোযাকীম মাত্র 25 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে এগারো বছর জেরুশালেমের রাজত্ব করেছিলেন| তিনি প্রভুর ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপনের পরিবর্তে তাঁর ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন| 6 বাবিলরাজ নবূখদ্রিত্সর যিহূদা আক্রমণ করে য়িহোযাকীমকে পেতলের শিকল দিয়ে বেঁধে বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গেলেন| 7 ফিরে যাবার সময় নবূখদ্নিত্সর প্রভুর মন্দির থেকে বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গিয়ে বাবিলে তাঁর রাজপ্রাসাদে রেখে দিয়েছিলেন| 8 য়িহোযাকীম আর যা কিছু করেছিলেন তাঁর সমস্ত জঘন্য পাপাচরণের কথা ‘ইস্রাযেল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| য়িহোযাকীমের পর তাঁর জায়গায় তাঁর পুত্র য়িহোযাখীন নতুন রাজা হলেন| 9 য়িহোযাখীন 18 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে মাত্র তিন মাস দশ দিন জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| তিনিও প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করেছিলেন| 10 বসন্তের সময়, রাজা নবূখদ্নিত্সর প্রভুর মন্দির থেকে অনেক দামী জিনিসপত্রের সঙ্গে য়িহোযাখীনকে বন্দী করে বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন| এরপর নবূখদ্নিত্সর য়িহোযাখীনের জনৈক আত্মীয, সিদিকিযকে যিহূদা ও জেরুশালেমের নতুন রাজা নিযুক্ত করলেন| 11 সিদিকিয মাত্র 21 বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়ে এগারো বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন| 12 সিদিকিযও প্রভুর ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপন না করে তাঁর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করেছিলেন| ভাব্বাদী য়িরমিয তাঁকে প্রভুর প্রেরিত সতর্কবাণী শোনালেও সিদিকিয তাতে কর্ণপাত করেন নি বা নম্র ও ধার্মিকভাবে জীবনযাপন করেন নি| 13 ইতিপূর্বে নবূখদ্নিত্সর সিদিকিযকে তাঁর অনুগত থাকতে বললেও সিদিকিয নবূখদ্নিত্সরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন| তিনি ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলেছিলেনযে তিনি নবূখদ্নিত্সরের অনুগত থাকবেন| কিন্তু শপথ করার পরেও তিনি তাঁর জীবনযাপনের রীতির কোনো পরিবর্তন করেন নি; এমনকি প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নির্দেশ মেনেও চলতে রাজী হননি| 14 উপরন্তু, যাজকগণের এবং লোকদের নেতৃবৃন্দ সকলেই প্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত ছিল এবং অন্যান্য জাতির মতোই পাপাচরণ করেছিল| তারা প্রভুর মন্দিরটিকেও অপবিত্র করেছিল যেটিকে তিনি জেরুশালেমে পবিত্র করেছিলেন| 15 তাদের পূর্বপুরুষদের প্রভু ঈশ্বর বারংবার ভাব্বাদীদের মাধ্যমে তাদের সতর্ক করেছিলেন কারণ তিনি এই মন্দির ও লোকেদের পরিণতির কথা ভেবে করুণা বোধ করেছিলেন| 16 কিন্তু তারা ঈশ্বরের বার্তাবাহকদের নিয়ে মজা করেছিল, তারা তাঁর বাক্য় ঘৃণা করেছিল এবং তাঁর ভাব্বাদীদের অপমান করেছিল যতক্ষণ না তাঁর ক্রোধ এত বেশী হয়ে গিয়েছিল যে তার কোন প্রতিকার ছিল না| 17 ঈশ্বর তখন বাবিলরাজকে দিয়ে যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করালেন| বাবিলরাজ এসে সমস্ত তরুণদের এমনকি মন্দিরে উপাসনারত লোকদেরও হত্যা করলেন| নিষ্ঠুরভাবে, কোনো দয়ামাযা না দেখিয়ে তিনি স্ত্রী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, সুস্থ-অসুস্থ, যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত ব্যক্তিকে নির্বিচারে হত্যা করলেন| প্রভুই তাকে যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের শাস্তি দেবার অধিকার দিয়েছিলেন| 18 নবূখদ্রিত্সর প্রভুর মন্দির থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র বাবিলে নিয়ে গেলেন| রাজকর্মচারীদের মূল্যবান জিনিসপত্রও তিনি নিয়ে যান| 19 তিনি ও তাঁর সেনাবাহিনী মিলে জেরুশালেমের প্রাকার গুঁড়িযে দিয়ে মন্দির, রাজপ্রাসাদও রাজকর্মচারীদের বাড়ী ঘরদোর সব কিছু পুড়িয়ে দিলেন| 20 যেসমস্ত ব্যক্তিরা বেঁচে ছিল নবূখদ্রিত্সর তাদের সবাইকে এীতদাস হিসেবে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন| পারস্যরাজ বাবিল অধিকার করা পর্য়ন্ত এই সমস্ত ব্যক্তিরা বাবিলেই ছিল| 21 এইভাবে প্রভু ভাব্বাদী য়িরমিযর মুখ দিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের উদ্দেশ্যে যা যা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন সে সবই মিলে গেল| প্রভু য়িরমিযর মারফত্ ভবিষ্যদ্বাণী করেন, “বিশ্রামদিনে বিশ্রাম না নিয়ে লোকেরা যে পাপাচরণ করেছে তা শোধন করতে এই ভূখণ্ড এভাবে পতিত থাকবে|” এইভাবে, দেশটি 70 বছর ধরে বিশ্রাম পেয়েছিল| 22 পারস্যরাজ কোরসের রাজত্বের প্রথম বছরে, প্রভু কোরসকে দিয়ে তাঁর রাজ্যের সর্বত্র একটি বিশেষ ঘোষণা করালেন এবং সেটি লিখিত হল যাতে ভাব্বাদী য়িরমিযর মাধ্যমে দেওয়া প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণীটি সত্যি হয়| কোরস তাঁর রাজত্বের সর্বত্র বার্তাবাহক পাঠিয়ে ঘোষণা করালেন: 23 “পারস্যের রাজা কোরস জানিয়েছেন যে স্বর্গের প্রভু ঈশ্বর আমাকে পৃথিবীর অধীশ্বর করেছেন| তিনি আমাকে জেরুশালেমে তাঁর জন্য একটি মন্দির তৈরী করবার দায়িত্ব দিয়েছেন| এখন তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সেবকরা সকলেই স্বাধীন এবং জেরুশালেমে যেতে পারো| প্রার্থনা করি প্রভু তোমাদের সকলের সহায় হোন|” 1 পারস্যের রাজা কোরসের রাজত্বের প্রথম বছরেপ্রভু একটি ঘোষণা করবার জন্য তাঁকে উত্সাহিত করলেন| কোরস সেই ঘোষণাটি লিখিযে নিলেন এবং তাঁর রাজ্যের সব জায়গায সেটি পড়াবার ব্যবস্থা করলেন| যিরমিয়র মুখ দিয়ে বলা প্রভুর এই বার্তাটি যাতে প্রচার হয় তার জন্য এই ব্যবস্থা হল| ঘোষণাটি এইরূপ: 2 “পারস্যের রাজা কোরসের কাছ থেকে:স্বর্গের প্রভু আমায় পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য উপহার দিয়েছেন| যিহূদা দেশের জেরুশালেমে তাঁর জন্য একটি মন্দির নির্মাণের নিমিত্ত তিনি আমাকে নিযুক্ত করেছেন| 3 যদি তোমাদের মধ্যে তাঁর কোন লোক বাস করে তবে তারা য়েন তাদের যিহূদা দেশের জেরুশালেম শহরে গিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর জন্য একটি মন্দির নির্মাণ করে য়েটি জেরুশালেমে আছে| প্রভু তাদের আশীর্বাদ করুন| 4 সমস্ত জায়গায যেখানে বেঁচে যাওয়া ইস্রায়েলীযরা বাস করে তাদের সেখানকার অধিবাসীদের সমর্থন অবশ্যই পাওয়া দরকার| জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের জন্য প্রত্যেককে তাদের সোনা, রূপো, গবাদি পশু ও অন্যান্য রয়োজনীয় সামগ্রী দান করতে হবে|” 5 তখন যিহূদা ও বিন্যামীন উপজাতির পরিবারের অধিনায়করা প্রভুর মন্দির নির্মাণের জন্য জেরুশালেমে য়েতে প্রস্তুত হল| অন্যান্য লোকরাও, যারা ঈশ্বরের দ্বারা উত্সাহিত হয়েছিল, তারাও তাদের সঙ্গে য়োগদান করতে প্রস্তুত হল| 6 এই কাজের জন্য তাদের প্রতিবেশীরা সকলেই মুক্তহস্তে তাদের সোনা, রূপো, গবাদি পশুসহ আরো অন্যান্য বহুমূল্য উপহার দান করল| 7 য়ে সমস্ত জিনিষ মূলতঃ জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে ছিল সেগুলিও পারস্য-রাজ কোরস সেখান থেকে বের করে আনলেন| এই জিনিষগুলি রাজা নবূখদ্নিত্সর বের করে নিয়ে এসে তাঁর মন্দিরে মূর্ত্তিসমূহের মধ্যে রেখেছিলেন| রাজা কোরস তাঁর কোষাধ্যক্ষ মিত্রদাতের হাত দিয়ে সেই সমস্ত সামগ্রী বের করে ইহুদী নেতা শেশ্বসরের হাতে প্রভুর মন্দিরের জন্য তুলে দিলেন| 8 9 মিত্রদাত য়ে সমস্ত সামগ্রী এনেছিলেন তার মধ্যে ছিল:সোনার থালা 30রূপোর থালা 1,000ছুরি এবং চাটুসমূহ 29 10 সোনার বাটি 30ঠিক সোনার বাটির মত রূপোর বাটি 410এবং অন্যান্য পাত্র 1,000 11 সেখানে সব সমেত 5,400 টি সোনার এবং রূপোর জিনিষ ছিল| য়ে সমস্ত বন্দী বাবিল ছেড়ে জেরুশালেমে ফিরে যাচ্ছিল তাদের সঙ্গে শেশ্বসর এই সমস্ত জিনিষ এনেছিলেন|
1 বাবিলের রাজা নবূখদ্নিত্সর যাদের বন্দী করেছিলেন, তারা জেরুশালেম এবং যিহূদায় য়ে যার নিজের নগরে ফিরে গেল| 2 এরা সকলে সরুব্বাবিল, য়েশূয, নহিমিয়, সরায়, রিযেলায়, মর্দখয়, বিল্শন, মিস্পর, বিগ্রয়, রহূম ও বানাদের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করল| যারা ইস্রায়েলে ফিরেছিল তাদের তালিকাটি নিম্নরূপ: 3 পরোশের উত্তরপুরুষ 2,172 4 শফটিয়ের উত্তরপুরুষ 372 5 আরহের উত্তরপুরুষ 775 6 য়েশূয় এবং য়োয়াব পরিবারের পহত্-মোয়াবের উত্তরপুরুষ 2,812 7 এলমের উত্তরপুরুষ 1,254 8 সত্তূর উত্তরপুরুষ 945 9 সক্কয়ের উত্তরপুরুষ 760 10 বানির উত্তরপুরুষ 642 11 ব্বেয়ের উত্তরপুরুষ 623 12 অস্গদের উত্তরপুরুষ 1,222 13 অদোনীকামের উত্তরপুরুষ 666 14 বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষ 2,056 15 আদীনের উত্তরপুরুষ 454 16 যিহিষ্কিয়ের বংশজাত আটেরের উত্তরপুরুষ 98 17 বেত্সয়ের উত্তরপুরুষ 323 18 য়োরাহের উত্তরপুরুষ 112 19 হশুমের উত্তরপুরুষ 223 20 গিব্বরের উত্তরপুরুষ 95 21 বৈত্লেহেম শহরের 123 22 নটোফা শহরের 56 23 অনাথোত শহরের 128 24 অস্মাবত শহরের 42 25 কিরিয়ত্-আরীম, কফীরা ও বেরোত শহরের 743 26 রামা ও গেবা শহরের 621 27 মিক্মস শহরের 122 28 বৈথেল ও অয় শহরের 223 29 নবো শহরের 52 30 মগ্বীশ শহরের 156 31 এলম নামে একটি শহরের 1,254 32 হারীম শহরের 320 33 লোদ, হাদীদ ও ওনো শহরের 725 34 য়িরিহো শহরের 345 35 সনায়া শহরের 3,630 36 যাজকদের মধ্যে ছিলেন:য়েশূয় পরিবারের যিদয়িয়ের উত্তরপুরুষ 973 37 ইম্মেরের উত্তরপুরুষ 1,052 38 পশ্হূরের উত্তরপুরুষ 1,247 39 হারীমের উত্তরপুরুষ 1,017 40 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে যারা ছিল তারা হল:হোদবিয়ের পরিবারের মাধ্যমে য়েশূয় ও কদ্মীয়েলের উত্তরপুরুষ 74 41 আসফের গায়কবর্গের মধ্যে 128 42 মন্দিরের দ্বারপালের উত্তরপুরুষের মধ্যেশল্লূম, আটের, টলমোন, অক্কূব,হটীটা এবং শোবয়ের উত্তরপুরুষের 139 43 মন্দিরের সেবা-দাসদের উত্তরপুরুষের মধ্যে ছিলেন:সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের উত্তরপুরুষরা, 44 কেরোস, সীয ও পাদোনের সন্তানরা, 45 লবানা, হগাব ও অক্কূবের সন্তানরা, 46 হাগব, শল্ময ও হাননের সন্তানরা, 47 গিদ্দেল, গহর ও রায়ার সন্তানরা, 48 রত্সীন, নকোদর ও গসমের সন্তানরা, 49 উষ, পাসেহ ও বেষযের সন্তানরা, 50 অস্না, মিযূনীম ও নফূষীমের সন্তানরা, 51 বক্বূক, হকূফার ও হর্হূরের সন্তানরা, 52 বসলূত, মহীদা ও হর্শার সন্তানরা, 53 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের সন্তানরা, 54 নত্সীহ ও হটীফার সন্তানরা| 55 শলোমনের ভৃত্যদের উত্তরপুরুষরা ছিল:সোটয়, হস্সোফেরত ও পরূদা | 56 যালা, দর্কোন ও গিদ্দেল, 57 শফটিয, হটীল, পোখেরত্-হত্সবাযীমেরএবং আমীর সন্তানগণ| 58 মন্দিরের সেবা-দাসরা এবংশলোমনের ভৃত্যদের উত্তরপুরুষরা 392 59 তেল্-মেলহ, তেল হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের নগর থেকে জেরুশালেমে এসেছিল নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা, কিন্তু তারা ইস্রায়েলের পরিবারবর্গের পরিবার ছিল কিনা তা প্রমাণ করতে পারল না| 60 দলায়, টোবিয় ও নকোদের উত্তরপুরুষ 652 61 হবায়, হক্কোস ও বর্সিল্লয় যাজক পরিবারের উত্তরপুরুষ| (যদি কোন পুরুষ গিলিয়দের বর্সিল্লয় কন্যাকে বিয়ে করত, তাহলে সেই পুরুষটিকে বলা হত বর্সিল্লয়ের উত্তরপুরুষ|) 62 এরা সকলেই তাদের পরিবারের ইতিহাস স্থাপন করবার চেষ্টা করল| 63 য়েহেতু যাজক তালিকায় এদের পূর্বপুরুষদের নামোল্লেখ ছিল না, সেহেতু তাদের পূর্বপুরুষরা সত্যিই যাজক ছিলেন কিনা তা তারা প্রমাণ করতে পারল না| তাই তারাও যাজক হিসেবে কাজ করবার অনুমতি পেল না| রাজ্যপাল তাদের আদেশ দিলেন, যতক্ষণ পর্য়ন্ত না এক জন যাজক ঊরীম এবং তুম্মীম দ্বারা ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত না জানাতে পারে ততক্ষণ তারা য়েন পবিত্র খাদ্য গ্রহণ না করে| 64 যারা ফিরে এল তাদের মধ্যে 42,360 জন ব্যক্তি ছিল| এছাড়াও তাদের সঙ্গে ছিল 7,337 জন পুরুষ ও নারী ভৃত্য, 200 জন গায়ক ও গাযিকা| 65 66 তাদের 736টি ঘোড়া, 245টি খচচর, 435টি উট ও 6,720টি গাধা ছিল| 67 68 তারা যখন জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে এসে পৌঁছল তখন পরিবারের কর্তারা, প্রভুর মন্দির নির্মাণের জন্য উপহারগুলি দান করলেন| 69 এই উপহারের মধ্যে ছিল 1,100 পাউণ্ড সোনা, 3 টন রূপো ও যাজকদের পরিবারের জন্য 100টি অঙ্গরক্ষক বস্ত্র| আগে যেখানে প্রভুর মন্দিরটি ছিল সেই খানেই তারা মন্দিরটি নির্মাণ করবে| 70 এই কাজের জন্য যাজকগণ, লেবীয় ও অন্যান্য ব্যক্তিরা জেরুশালেমের কাছাকাছি অঞ্চলে বসতি স্থাপন করল| এই দলের মধ্যে মন্দিরের দ্বাররক্ষী, গায়কবর্গ, ও সেবাদাসরা ছিল| ইস্রায়েলের অন্যান্য ব্যক্তিরা তাদের নিজ নিজ শহরে বাসা বাঁধলো|
1 যে সমস্ত ইস্রায়েলীয় ফিরে এসেছিল এবং নিজেদের শহরে বসতি স্থাপন করেছিল, তারা সবাই সপ্তম মাসে এক জাতি হিসেবে জেরুশালেমে একত্রিত হল| 2 তারপর য়োষাদকের পাত্র য়েশূয় এবং তাঁর সঙ্গের যাজকগণ, শলটীয়েলের পাত্র সরুব্বাবিল ও তাঁর সঙ্গের লোকরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটি বেদী নির্মাণ করলেন| ঈশ্বরের দাস মোশি য়ে ভাবে বর্ণনা করেছিলেন, বেদীটি সে ভাবেই বানানো হল| 3 যদিও তারা, কাছাকাছি বাস করত এমন অন্য জাতির লোকদের ভয় করত, তবুও তারা য়জ্ঞবেদীটি পুরানো ভিত্তির ওপরই তৈরী করেছিল এবং তার ওপর নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছিল| তারা প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় প্রার্থনা করত| 4 এরপর তারা মোশির আদেশ অনাসারে কুটিরপর্ব উত্সব পালন করল| তারা উত্সবের প্রতিটি দিন ঠিং সংখ্যক হোমবলি উত্সর্গ করল| 5 তারপর তারা প্রতিদিন নিত্য হোমবলি উত্সর্গ করা শুরু করল, এবং অমাবস্যার উত্সবের জন্য, অন্যান্য সমস্ত ছুটির দিনের জন্য এবং ঈশ্বরের আদেশকৃত উত্সবের দিনগুলোর জন্য উত্সর্গ করতে লাগল| লোকরা প্রভুকে বিশেষ উপহারগুলোর মধ্যে য়ে কোন উপহার দিতে শুরু করল যা তারা প্রভুকে দিতে চাইত| 6 মন্দির পুননির্মাণ শুরু না হওয়া সত্ত্বেও সপ্তম মাসের প্রথম দিন থেকে ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে উপহার উত্সর্গ করতে শুরু করল| 7 তারপর তারা পাথর কাটুরে ও ছুতোরদের পয়সা দিল| এবং তারা সোরীয় ও সীদোনীয়দের জাহাজে করে লিবানোন থেকে সমুদ্র তীরবর্ত্তী যাফো নগর পর্য়ন্ত এরস কাঠ আনবার জন্য খাদ্য, দ্রাক্ষারস ও জলপাই তেল দিল| পারস্যের রাজা কোরস তাদের এই সব করবার অনুমতি দিয়েছিলেন| 8 জেরুশালেমে ফিরে আসার পর দ্বিতীয় বছরের দ্বিতীয় মাসে শলটীয়েলের পাত্র সরুব্বাবিল, য়োষাদকের পাত্র য়েশূয ও তাঁদের ভাইরা, যাজকগণ, লেবীয়গণ ও অন্যান্য ব্যক্তিরা য়াঁরা বন্দীদশা থেকে জেরুশালেমে ফিরে এসেছিলেন তাঁরা মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করলেন| তাঁরা 20 বছর এবং তার চেযে বেশী বযস্ক লেবীয়দের মন্দির নির্মাণের তত্ত্বাবধানের জন্য বেছে নিলেন| 9 য়াঁরা মন্দির নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধান করেছিলেন তাঁরা হলেন: য়েশূয় ও তাঁর পাত্ররা, কদ্মীযেল ও তাঁর পাত্ররা (যিহূদার উত্তরপুরুষ), লেবীয় হেনাদদের পাত্রগণ ও তাঁদের ভাইরা| 10 যখন সহপতিরা প্রভুর মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করলেন, তখন যাজকরা পূর্নপরিচ্ছদ পরে শিঙা বাজালেন: আসফের সন্তানরা তাঁদের খোল কর্তাল নিলেন এবং ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের আদেশানুসারে প্রভুকে প্রশংসা করবার জন্য তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়ালেন| 11 এক সঙ্গে প্রভুর প্রশংসা করতে করতে এবং প্রভুকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁরা গাইলেন, “প্রভু ভালো! তাঁর প্রকৃত প্রেম চির কাল অব্যাহত থাকে|” তারপর সমস্ত লোক একটি বিরাট চিত্কার করে হর্ষধ্বনি করে উঠল এবং তারা প্রভুর প্রশংসা করল কারণ প্রভুর মন্দিরের ভিত্তিস্থাপন হয়ে গেল| 12 তখন আগেকার সুন্দর পুরানো মন্দিরের কথা স্মরণ করে বহু বয়স্ক লোক, যাজক অথবা লেবীয়দের গাল বেযে চোখের জল গড়িযে পড়ল| অন্যরা যখন আনন্দ করছিল ও কোলাহল করছিল তখন তাঁরা কাঁদছিল| 13 সেই আনন্দ ও কোলাহলের ধ্বনি বহুদূর থেকেও শোনা যাচ্ছিল| কিন্তু এত জোরে শব্দ হচ্ছিল য়ে যারা দূর থেকে তা শুনছিল তারা বুঝতে পারছিল না সেটা আনন্দের শব্দ না কান্নার|
1 অন্য দেশের বহু লোক যাঁরা ঐ অঞ্চলে বাস করতেন তাঁরা যিহূদা ও বিন্যামীনের লোকদের প্রতি বিরূপ মনোভাবাপন্ন ছিলেন| তাঁরা শুনতে পেলেন য়ে যারা বন্দীদশা থেকে ঐ অঞ্চলে ফিরে এসেছে তারা প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটি মন্দির নির্মাণ করছে| তাই তাঁরা সরুব্বাবিল ও পিতৃকুলপতিদের কাছে এলেন এবং বললেন, “নির্মাণের কাজে আমাদের য়োগ দিতে দাও| আমরা তোমাদেরই মত| যখন থেকে অশূর রাজা এসর-হদ্দোন আমাদের এখানে নিয়ে এসেছেন তখন থেকে আমরা তোমাদের প্রভুকে হোমবলি উত্সর্গ করছি|” 2 3 সরুব্বাবিল, য়েশূয় ও ইস্রায়েলের অন্যান্য পিতৃকুলপতিরা তাঁদের বললেন, “না, তোমরা আমাদের সঙ্গে মন্দির নির্মাণ করতে পার না| রাজা কোরসের আদেশ অনুযায়ীইস্রায়েলের প্রভুর মন্দির নির্মাণের কাজ একমাত্র আমরাই সম্পন্ন করতে পারি|” 4 একথা শুনে এই সব ব্যক্তিরা রুদ্ধ হলেন| তাঁরা যিহূদার লোকদের নিরুত্সাহ করবার চেষ্টা করলেন এবং তাদের নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার চেষ্টা করলেন| 5 ওইসব শএুরা মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার নিমিত্ত নানা রকম সমস্যা সৃষ্টির জন্য সরকারী কর্মচারীদেরও ভাড়া করে এনেছিলেন| পারস্য-রাজ কোরসের রাজত্বকাল থেকে শুরু করে পারস্য-রাজ দারিয়াবসের রাজত্ব প্রাপ্তি পর্য়ন্ত এই প্রতিকুল অবস্থা চলেছিল| 6 এমনকি ইহুদীদের নিবৃত্ত করার জন্য তারা রাজা কোরসকে বেশ কিছু অভিয়োগাত্মক চিঠিও লিখেছিলেন| অহশ্বেরশর য়ে বছরে পারস্যের রাজা হলেন সেই বছরে শএুরা তাঁকেও একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন| 7 অর্তক্ষস্ত যখন পারস্যের রাজা হলেন, তখন এই সব ব্যক্তিরা ইহুদীদের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে তাঁকে আরেকটি চিঠি লিখেছিলেন| বিশ্ালম, মিত্রদাত্, টাবেল ও তাঁর অন্যান্য সঙ্গীরা অরামীয় ভাষায় এই চিঠি রচনা করেছিলেন| 8 তারপর সেনাপতি রহূম এবং সচিব শিম্শয় রাজা অর্তক্ষস্তের কাছে জেরুশালেমের লোকদের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছিলেন| তাঁরা এইরূপ লিখেছিলেন: 9 “সেনাপতি রহূম এবং সচিব শিম্শয় এবং টর্পলীয়, পারস্য, অর্কবীয় ও বাবিলীয় গণের বিচারকবর্গ, গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারী এবং এলমীয লোকদের শূশন্খীয লোকদের কাছ থেকে 10 এবং অন্যান্য লোকদের যাদের মহামহিম অস্নপপর শমরিয়া নগরে এবং ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের দেশের অন্যান্য জায়গায এনেছিলেন তাদের কাছ থেকে| 11 রাজা অর্তক্ষস্তের য়ে চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল এটি তারই একটি অনুলিপি:“আপনার ভৃত্য ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের প্রজাবর্গের কাছ থেকে-হে রাজা অর্তক্ষস্ত, আমরা আপনার কাছে বিনীত নিবেদন করতে চাই য়ে, য়ে সব ইহুদীদের আপনি এখানে ফেরত্ পাঠিয়েছিলেন তারা শহর পুনর্নিমাণ করতে চেষ্টা করছে| জেরুশালেমের বাসিন্দারা বরাবর অন্যান্য রাজাদের প্রতি বিদ্রোহ করে এসেছে| বর্তমানে ইহুদীরা শহরের ভিত নির্মাণ করছে ও দেওয়াল গাঁথছে| 12 13 হে মান্যবর, আপনার জ্ঞাতার্থে জানাই য়ে শহরের চারপাশে দেওয়াল বানানোর কাজ শেষ হলেই কিন্তু জেরুশালেমের বাসিন্দারা আপনাকে কর প্রদান করা বন্ধ করবে এবং এতে রাজকোষের আর্থিক ক্ষতি হবে| 14 আমরা রাজার প্রতি অনুগত থাকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আমরা এরকম একটি ঘটনা ঘটতে দিতে চাই না এবং আমরা এও মনে করি য়ে এসব কথা আপনাকে জানানো আমাদের কর্ত্তব্য| 15 রাজা অর্তক্ষস্ত, আপনাকে আমরা আপনার পূর্বে য়ে সব রাজাগন রাজত্ব করেছেন তাঁদের নথিপত্র পড়ে দেখতে পরামর্শ দিচ্ছি| ঐ নথিপত্রে দেখবেন জেরুশালেম সব সময়ই বহু রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে| জেরুশালেমের বাসিন্দারা রাজা ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বহু অসুবিধার সৃষ্টি করেছিল| ঐ সব কারণবশতঃই এই শহরটি ধ্বংস হয়| 16 হে রাজাধিরাজ, আমরা আপনাকে সাবধান করে দিতে চাই, জেরুশালেমের চারপাশের দেওয়াল যদি আবার গাঁথা হয় তাহলে আপনি ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চল থেকে আপনার কর্তৃত্ব হারাতে বসবেন| 17 রাজা অর্তক্ষস্ত এদের চিঠির উত্তরে লিখলেন: 18 আমার শুভেচ্ছা নেবেন| আপনাদের পাঠানো চিঠিটি আমাকে অনুবাদ করে পড়ে শোনানো হয়েছে| 19 আমি আপনাদের পরামর্শ অনুযায়ীভূতপূর্ব রাজাদের দলিল ও অন্যান্য তথ্যাদি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিই| 20 সেই সব লেখা পড়া হয় ও জানা যায় য়ে দীর্ঘকাল থেকেই জেরুশালেম শহরের বাসিন্দারা শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এসেছে| বিদ্রোহ এবং বিরোধিতার সৃষ্টি করা এই শহরের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা| জেরুশালেম ও ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলে বহু ক্ষমতাবান রাজগণ রাজত্ব করে এসেছেন, এবং তাঁরা এই সমুদয অঞ্চল থেকে করও পেয়েছেন| 21 এখন, আমি পুনরায় নির্দেশ না দেওয়া পর্য়ন্ত আপনারা ইহুদীদের জেরুশালেম শহরের চারপাশে দেওয়াল তোলার কাজ বন্ধ করতে আদেশ করুন| 22 দেখবেন, এই ব্যাপারে য়েন কোন গাফিলতি না হয়| আমরা জেরুশালেম শহরকে নতুন করে বানাতে দিতে পারি না, কারণ আমরা হয়ত এই শহর থেকে কর পাবো না| 23 রাজা অর্তক্ষস্তের চিঠিটির একটি অনুলিপি রহূম, শিম্শয় এবং তাঁদের সঙ্গের লোকদের কাছে পড়ে শোনানো হল| তারপর ঐ ব্যক্তিরা সোজা জেরুশালেমে ইহুদীদের কাছে গেলেন এবং ইহুদীদের নির্মাণ কার্য়্য় বন্ধ করতে বাধ্য করলেন| 24 ফলস্বরূপ, জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ হল| পারস্যের রাজা হিসেবে দারিয়াবসের রাজত্বের দ্বিতীয় বছর পর্য়ন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল|
1 সেই সময় হগয় ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয় ভাব্বাদীদ্বয প্রভুর নামে ভবিষ্যত্বাণী করে জেরুশালেম ও যিহূদার লোকদের উদ্দীপিত করতে লাগলেন| 2 তখন শলটীয়েলের সন্তান সরুব্বাবিল ও য়োষাদকের পুত্র য়েশূয় আবার জেরুশালেমে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করলেন| ঈশ্বরের সমস্ত ভাব্বাদীরা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এবং তাঁরা এই কাজ সমর্থন করছিলেন| 3 তখন ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের শাসক তত্তনয়, শথরবোষণয় ও তাঁদের অনুচরবর্গ, যাঁরা মন্দির পুননির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন তাঁদের কাছে গিয়ে জানতে চাইলেন, “কার সম্মতিতে তোমরা আবার নতুন করে মন্দির বানাতে শুরু করেছ?” 4 সরুব্বাবিলের কাছেও যারা এই মন্দির পুননির্মাণের কাজে জড়িত ছিলেন তাঁদের নাম জানতে চাইলেন| 5 কিন্তু ঈশ্বর বয়ং ইহুদী নেতাদের প্রতি লক্ষ্য রাখছিলেন| রাজা দারিয়াবসকে একটা খবর না পাঠানো পর্য়ন্ত তাদের কাজ বন্ধ করবার কোন প্রয়োজন ছিল না| রাজার কাছ থেকে উত্তর না আসা পর্য়ন্ত তারা কাজ চালিয়ে গেলেন| 6 ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের শাসক তত্তনয়, শথর বোষণয় ও তাঁদের সঙ্গে প্রধান ব্যক্তিরা 7 রাজা দারিয়াবসকে একটি চিঠি পাঠালেন| 8 হে রাজা, আমরা যিহূদা অঞ্চলে গিয়েছিলাম এবং মহান ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেছি এবং দেখলাম য়ে, ইহুদীরা বড় বড় পাথর ও কাঠের গুঁড়ি দিয়ে মন্দিরটি বানিয়ে চলেছে| আমাদের বিশ্বাস এই গতিতে কাজ হলে মন্দির নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে| 9 আমরা তাদের দলপতিদের কাছে, আপনাকে পাঠানোর জন্য ব্যক্তিদের নামের তালিকা চেয়েছিলাম এবং প্রশ্ন করেছিলাম| আমরা এটাও জানতে চেযেছিলাম য়ে কার অনুমতিতে তারা মন্দিরটি পুননির্মাণ করছে| 10 11 উত্তরে তারা বলল:“আমরা স্বর্গ ও মর্ত্যের ঈশ্বরের দাস| আমরা মন্দিরটি পুনর্নিমাণ করছি য়েটি বহু বছর আগে ইস্রায়েলের এক মহান রাজা বানিয়েছিলেন| 12 আমাদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরকে রুষ্ট করেছিল তাই ঈশ্বর নবূখদ্নিত্সরকে বাবিলের রাজা করে পাঠিয়েছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষকে শাসন করবার জন্য| নবূখদ্নিত্সর এই মন্দিরটি ধ্বংস করে আমাদের পূর্বপুরুষদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে যান| 13 বাবিলে কোরসের প্রথম বছরের রাজত্বকালে তিনি এই মন্দির পুননির্মাণের জন্য আদেশ দেন| 14 অতঃপর রাজা কোরস সমস্ত সোনার ও রূপোর জিনিষ, য়েগুলো জেরুশালেমের মন্দির থেকে নবূখদ্নিত্সর দ্বারা লুণ্ঠিত হয়েছিল এবং তাঁর মূর্ত্তির মন্দিরে রাখা হয়েছিল, সেগুলো শেশ্বসরের হাত দিয়ে ফেরত্ পাঠান| 15 রাজা কোরস, শেশ্বসরকে রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করলেন এবং তাঁকে বললেন, “এই সব সোনা এবং রূপোর জিনিষ নিয়ে যাও এবং জেরুশালেমের মন্দিরে পুনরায় রেখে দাও এবং মন্দিরটি পূর্বে যেখানে ছিল ঠিক সেখানেই মন্দির পুননির্মাণ কর|” 16 শেশ্বসর তখন জেরুশালেমে এসে এই নতুন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন; সেদিন থেকে আমরা এই ঈশ্বরের মন্দির পুননির্মাণের কাজ করে আসছি, কিন্তু আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি| 17 এখন রাজা যদি ইচ্ছা করেন, দয়া করে পুরানো নথিপত্র দেখতে পারেন, এটা প্রমাণ করবার জন্য য়ে, রাজা কোরস সত্যি সত্যিই জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির পুননির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না| অতঃপর তিনি যদি এ বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা আমাদের একটি চিঠিতে জানান তাহলে আমরা বিশেষ বাধিত হব|
1 তখন রাজা দারিয়াবস তাদের কথার সত্যতা যাচাইযের জন্য প্রাচীন রাজাদের নথিপত্র খুঁজে দেখার নির্দেশ দিলেন| এই সমস্ত নথিপত্র বাবিলে কোষাগারে রক্ষিত হত| 2 ভালভাবে অনুসন্ধান করে মাদীয় প্রদেশের অক্মথা দুর্গে প্রাচীন তুলোট কাগজে লেখা একটি সরকারি নথি পাওয়া গেল যাতে রাজা কোরস জেরুশালেমে মন্দির নির্মাণের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন|নথিতে এইরূপে লেখা ছিল: 3 কোরস তাঁর রাজা হওয়ার প্রথম বছরে জেরুশালেমের মন্দির সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছিলেন| আদেশটি ছিল এইরূপ:“ঈশ্বরের জন্য মন্দিরটি আবার বানানো হোক| এই মন্দিরে ঈশ্বরের জন্য উত্সর্গ নিবেদন করা হবে| এই মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করা হোক| মন্দিরটি 90 ফুট চওড়া ও উচ্চতায় 90 ফুট হবে| 4 মন্দিরকে ঘিরে তিন সারি বড় পাথরের দেওয়াল ও একসারি বড় কাঠের গুঁড়ির দেওয়াল থাকবে| মন্দির নির্মাণের ব্যয় বহন হবে রাজার কোষাগার থেকে| 5 নবূখদ্নিত্সর য়ে সব সোনা এবং রূপো লুণ্ঠন করে বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন সেগুলি সব অবশ্যই ঈশ্বরের মন্দিরে ফেরত্ পাঠাতে হবে| 6 আমি, দারিয়াবস, ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়কে, শথর-বোষণয়কে ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের জেরুশালেম থেকে সরে য়েতে আদেশ দিচ্ছি| 7 এই ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার চেষ্টা করো না| কর্মীদের বিরক্ত করো না| ইহুদীদের রাজ্যপাল এবং ইহুদীদের নেতারা আদিস্থানের ওপর মন্দির পুননির্মাণ করুক| 8 এখন আমি এই আদেশ করছি য়ে তোমরা এসব কাজ ইহুদী নেতাদের জন্য করবে, যারা মন্দির নির্মাণের কাজে লিপ্ত| মন্দির নির্মাণের খরচ আসবে রাজার কোষাগার থেকে এবং ঐ অর্থ আসবে ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের অঞ্চলে সংগৃহীত কর থেকে| এই সব নির্দেশগুলি তাড়াতাড়ি পালন কর যাতে কাজটি বন্ধ না হয়ে যায়| 9 স্বর্গের ঈশ্বরের মন্দিরে উত্সর্গ করবার জন্য যা যা লাগবে সবই ওদের দাও| জেরুশালেমের যাজকদের যদি ষাঁড়, মেষ, পাঁঠা, এমন কি গম, নুন, দ্রাক্ষারস অথবা তেল এসবের প্রয়োজন হয় তবে এসবই ওদের প্রত্যেক দিন দিও; এর য়েন অন্যথা না হয়| তাহলে তারা হয়ত স্বর্গের ঈশ্বরকে সুগন্ধ সম্বলিত হোম উত্সর্গ করবে এবং ঈশ্বরের কাছে আমার ও আমার পুত্রদের জন্য প্রার্থনা করবে| 10 11 আমি এও আদেশ দিচ্ছি, “কেউ যদি এই আদেশ বদলে দেয় তবে তার বাড়ীর থেকে একটি কড়ি কাঠ খুলে নেওয়া হবে, এবং সেই ব্যক্তিকে ঐ কড়ি কাঠে ফাঁসি দেওয়া হবে এবং তার বাড়ীটি ধ্বংস করে একটি বারোযারী শৌচালয়ে পরিনত করা হবে| 12 ঈশ্বর তাঁর নাম জেরুশালেমে রেখে দেবেন| কোন রাজা অথবা দেশ অথবা কেউ যদি এই আদেশ বদলাবার চেষ্টা করে অথবা জেরুশালেমে মন্দির ধ্বংস করবার চেষ্টা করে তাহলে য়েন ঈশ্বর তাদের পরাজিত ও ধ্বংস করেন|আমি, দারিয়াবস এই আদেশ দিয়েছি| এই আদেশ অতি সত্ত্বর এবং সম্পূর্ণভাবে পালন করা চাই| 13 তখন ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়, শথর-বোষণয় ও তাঁর লোকরা রাজা দারিয়াবসের আদেশ তাড়াতাড়ি ও পুরোপুরিভাবে মেনে নিলেন| 14 ইহুদীদের প্রবীণরা ভাব্বাদী হগয় ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয়ের ভবিষ্যতবাণীর দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উত্সাহিত হয়ে মন্দির নির্মাণের কাজ চালিযে গেলেন| ইস্রায়েলের ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে এবং পারস্যের বিভিন্ন রাজা কোরস, দারিয়াবস এবং অর্তক্ষস্তের নির্দেশ পালন করে তাঁরা মন্দির নির্মাণের কাজে সাফল্যলাভ করেছিলেন| 15 দারিয়াবসের রাজত্বের ষষ্ঠ বছরের অদর মাসের তৃতীয় দিনে মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছিল| 16 ইস্রায়েলের বাসিন্দারা মন্দির উত্সর্গীকরণের উত্সবটি আনন্দ সহকারে পালন করল| বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়া সমস্ত যাজকগণ ও লেবীয়রাও উত্সবে য়োগদান করলেন| 17 100টি ষাঁড়, 200 টি মেষ, 400টি পুরুষ মেষশাবক বলি দিয়ে মন্দিরটিকে প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত করা হল| এছাড়াও ইস্রায়েলের পাপস্খালনের জন্য 12টি ছাগল বলি দেওয়া হল| ইস্রায়েলের 12টি পরিবারের প্রত্যেকটির জন্য 12টি ছাগল উত্সর্গ করা হয়েছিল| 18 এরপর তারা জেরুশালেমের মন্দিরে ঈশ্বরের সেবার জন্য তাদের দল অনুযায়ী মোশির পুস্তকে লিপিবদ্ধ নির্দেশ অনুযায়ী যাজকগণ ও লেবীয়দের বেছে নিলেন| 19 প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনের মাথায় বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীরা নিস্তারপর্ব পালন করলেন| 20 যাজক ও লেবীয়রা সকলে পরিচ্ছন্ন হয়ে বিশেষ দিনটির জন্য প্রস্তুত হলেন| লেবীয়রা বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীদের সকলের জন্য, তাঁদের নিজেদের জন্য এবং তাঁদের যাজক ভাইদের জন্য নিস্তারপর্বের উত্সর্গীকৃত মেষটিকে বলি দিলেন| 21 এরপর বন্দীদশা থেকে ইস্রায়েলে ফিরে আসা সকলে মিলে সেই মেষের মাংস গ্রহণ করলেন| ঐ শহরের অন্য লোকরাও ঐ দেশেরই বাসিন্দা অন্য লোকদের অপবিত্রতা থেকে নিজেদের পবিত্র করে ঐ মেষের মাংস গ্রহণ করলেন| তাঁরা সকলে ঈশ্বরের সামনে প্রার্থনা করার জন্য নিজেদের পবিত্র করলেন| 22 এই সমস্ত ব্যক্তিরা সাতদিন ধরে মহানন্দে খামিরবিহীন রুটির উত্সব পালন করলেন| ঈশ্বর তাদের সকলকে আনন্দিত করে তুললেন কারণ তিনি অশূররাজের মনোবৃত্তিতে পরিবর্তন এনেছিলেন এবং তার ফলে অশূর-রাজতাঁদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজে সমর্থন জানিয়েছিলেন|
1 এসব ঘটনা ঘটে যাবার পর, পারস্যের রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে ইষ্রা বাবিল থেকে জেরুশালেমে এলেন| ইষ্রা ছিলেন সরায়ের পুত্র| সরায অসরিয়ের, অসরিয় হিল্কিয়ের, 2 হিল্কিয় শলূ্লুমের, শলূ্লুম সাদোকের, সাদোক অহীটূবের, 3 অহীটূব অমরিযের, অমরিয অসরিয়ের, অসরিয় মরাযোতের, 4 মরাযোত্ সরহিয়ের, সরহিয উষির, উষি বুক্কির পুত্র| 5 বুক্কি ছিলেন অবীশূয়ের পুত্র, অবীশূয় ছিলেন পীনহসের পুত্র, পীনহস ছিলেন ইলিয়াসরের পুত্র, এবং ইলিয়াসর ছিলেন প্রধান যাজক হারোণের পুত্র| 6 শিক্ষক ইষ্রা, বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন| মোশির ঈশ্বরদত্ত অনুশাসন সম্পর্কে তাঁর সুগভীর ব্যুত্পত্তি ছিল| রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে তাঁর অনুরোধ অনুসারে সমস্ত প্রয়োজনীয জিনিষ দিয়েছিলেন কারণ প্রভু ইষ্রার সঙ্গে ছিলেন| 7 ইস্রায়েলের বহু মানুষ য়েমন, যাজকগণ, লেবীয়গণ, গীতকারগণ, দ্বাররক্ষীগণ, প্রভৃতি ব্যক্তিরা ইষ্রার সঙ্গে ইস্রায়েলে এসেছিলেন| এই সমস্ত ব্যক্তিরা রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষে জেরুশালেমে এসে পৌঁছেছিলেন| 8 ইষ্রা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষের পঞ্চম মাসে এসেছিলেন| 9 ইষ্রা ও তাঁর দল ওই বছরের প্রথম মাসে বাবিল ত্যাগ করে এবং পঞ্চম মাসের প্রথম দিন জেরুশালেমে এসে উপস্থিত হন| 10 ইষ্রা প্রভুর বিধিগুলি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জনের জন্য তাঁর জীবনের সমস্ত সময় ব্যয় করেন| তিনি ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর বিধি ও আদেশগুলি শেখাতে ও সম্পাদন করাতে চেষ্টা করেছিলেন| 11 ইষ্রা ছিলেন একজন যাজক ও শিক্ষক যাঁর ইস্রায়েলের প্রতি প্রদত্ত ঈশ্বরের আদেশ ও বিধি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ছিল| রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন: 12 রাজা অর্তক্ষস্তের কাছ থেকে:যাজক ইষ্রা, যিনি স্বর্গের প্রভুর বিধির একজন শিক্ষক,তাঁকে রাজা অর্তক্ষস্তের অভিনন্দন! 13 আমি এই আদেশ দিচ্ছি: য়ে কোন ইস্রায়েলীয়, কোন যাজক অথবা য়ে কোন লেবীয় যারা আমার রাজত্বে বসবাস করে, তারা কেউ যদি ইষ্রার সঙ্গে জেরুশালেমে য়েতে চায় তো য়েতে পারে| 14 ইষ্রা, তোমাকে আমি ও আমার সাতজন মন্ত্রীর দায়িত্ব দিলাম, তুমি অতি অবশ্য যিহূদা ও জেরুশালেমে গিয়ে বয়ং পর্য়বেক্ষণ করবে, সেখানে তোমার ব্যক্তিবর্গ ঈশ্বরের বিধিগুলি কতদূর পালন করছে| আর সেই বিধি তো তোমার সঙ্গেই আছে| 15 আমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য তোমার সঙ্গে য়ে সোনা ও রূপো দিলাম, তুমি তা জেরুশালেমে ঈশ্বরের জন্য নিয়ে যাবে| 16 এছাড়াও, তোমাকে যদি কেউ জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য উপহার দিতে চায় এবং তোমার লোকেদের এবং বাবিলের য়ে কোন প্রদেশে বসবাসকারী যাজকগণ ও লেবীয়দের সব উপহারও তোমাকে সংগ্রহ করে নিয়ে য়েতে হবে| 17 এই সমস্ত অর্থ দিয়ে তুমি বৃষ, মেষ ও মেষশাবক এবং শস্য ও পানীয় কিনবে| অতঃপর জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের বেদীতে এই সমস্ত নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে| তুমি এবং অন্যান্য ইহুদীরা বাকী সোনা ও রূপো য়েমন খুশী খরচ করতে পারো, কিন্তু এমনভাবে খরচ করবে যাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন| এ সমস্ত জিনিষ জেরুশালেমে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে যাবে| এগুলো সব প্রভুর উপাসনার জন্য ব্যবহৃত হবে| এছাড়া মন্দিরের প্রয়োজনে আর যা কিছু লাগবে, রাজকোষ থেকে অর্থ চেযে কিনে নেবে| 18 19 20 21 আমি, রাজা অর্তক্ষস্ত, ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের য়েসব ব্যক্তিবর্গের কাছে রাজকোষের অর্থ থাকে, তাদের নির্দেশ দিচ্ছি, ইষ্রার যখন যা অর্থের প্রয়োজন হয় তা য়েন তাঁকে দেওয়া হয় কারণ তিনি যাজক ও স্বর্গের ঈশ্বরের বিধিগুলির একজন শিক্ষক| 22 আপাতত তাঁকে 3 3,4 টন রূপো, 600 বুশেল গম, 600 গ্যালন দ্রাক্ষারস, 600 গ্যালন জলপাই তেল ও পর্য়াপ্ত পরিমাণ লবণ দেওয়া হোক| 23 স্বর্গের ঈশ্বর ইষ্রাকে যা কিছু নিতে আদেশ দিয়েছেন তা য়েন তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া হয়| আমি আমার সন্তান ও রাজত্বের বিরুদ্ধে স্বর্গের ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করতে চাই না, সুতরাং প্রভুর মন্দিরের জন্য এই সব নির্দেশগুলি য়েন পালন করা হয়| 24 হে আমার দেশবাসীগণ, আমি তোমাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই য়ে যাজকগণ, লেবীয়গণ, গায়ক, দ্বাররক্ষী, মন্দিরের সেবাদাস ও ঈশ্বরের মন্দিরের অন্য য়ে কোন কর্মীর কাছ থেকে কর গ্রহণ অবৈধ| রাজাকে সম্মান দেখানোর জন্য প্রভুর দাসদের কোন কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই| 25 হে ইষ্রা, ঈশ্বর ও তাঁর বিধি সম্পর্কে তোমার যথেষ্ট জ্ঞান আছে| সুতরাং ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের লোকদের বিচার ব্যবস্থা ও শাসনকর্ম দেখার জন্য, আমি তোমাকে তোমার পছন্দ অনুযায়ীশাসনকর্তা ও বিচারকবর্গ নিয়োগের ক্ষমতা দিলাম| ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গ তোমার প্রভুর বিধি অনুযায়ীএই অঞ্চলের বিচারবিভাগীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পাদন করবেন| 26 এমন কেউ যদি থাকেন, য়ে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে অবগত নয় তাহলে ঐ বিচারকবর্গ তাকে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে শিক্ষা দান করবে| কোন ব্যক্তি যদি বিধিগুলি লঙঘন করে, তাহলে তাকে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ীমৃত্যুদণ্ড, নির্বাসন বা কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হবে বা জরিমানা করা হবে| 27 প্রভু মহিমাময়, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর! জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের জন্য ঈশ্বর রাজার হৃদয়ে তাঁর অভিলাষ স্থাপন করলেন| 28 রাজা তাঁর মন্ত্রীবর্গ ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রভু আমার প্রতি তাঁর সত্যিকারের ভালবাসা অভিব্যক্ত করেছিলেন| প্রভু আমার সহায় হয়েছিলেন এবং তাই আমি সাহসী হয়ে আমার সঙ্গে জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের একত্রিত করেছিলাম|
1 রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে য়ে সব পরিবারের প্রধানরা আমার সঙ্গে বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন নীচে তাঁদের নামের তালিকা দেওয়া হল: 2 পীনহসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে গের্শোম, ঈথামরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে দানিয়েল, দায়ূদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে হটূশ, 3 শখনিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে পরোশ, সখরিয় ও আরো 150 জন পুরুষ, 4 পহত্ মোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে সখরিয়র পুত্র ইলীযৈনয় ও আরো 200 জন পুরুষ, 5 জট্টর উত্তরপুরুষদের মধ্যে মহসীযেলের সন্তান শখনিয় ও আরো 300 জন পুরুষ, 6 আদীনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়োনাথনের পুত্র এবদ ও আরো 50 জন পুরুষ, 7 এলমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে অথলিয়ের পুত্র যিশায়াহ ও আরো 70 জন পুরুষ, 8 শফটিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মীখায়েলের পুত্র সবদিয় ও আরো 80 জন পুরুষ, 9 য়োয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিহিয়েলের পুত্র ওবদিয় ও আরো 218 জন পুরুষ, 10 বানির উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়োষিফিযের পুত্র শলোমীত ও আরো 160 জন পুরুষ, 11 ব্বেয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ব্বেয়ের পুত্র সখরিয় ও আরো 28 জন পুরুষ, 12 অস্গদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে হকাটনের পুত্র য়োহানন ও আরো 110 জন পুরুষ, 13 অদোনীকামের শেষ উত্তরপুরুষদের মধ্যে ইলীফেলট, য়িযূয়েল, শময়িয় ও আরো 60 জন পুরুষ, 14 এবং বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ঊথয়, সব্বূদ ও তার সঙ্গী 70 জন পুরুষ| 15 আমি এই সমস্ত ব্যক্তিদের অহবা-গামিনী নদীর কাছে জড় হতে বলেছিলাম| সেখানে তাঁবু খাটিয়ে আমরা তিন দিন ছিলাম| আমি কয়েকজন যাজককে সেখানে দেখলাম, কিন্তু কোন লেবীয়কে নয়| তাই আমি 16 ইলীয়েষর, অরীয়েল, শময়িয়, ইল্নাথন, যারিব, ইল্নাথন, নাথন, সখরিয় ও মশুস্কলূ্লম প্রভৃতি নেতৃবৃন্দকে এবং 17 য়োয়ারীব ও ইল্নাথন নামে দুজন শিক্ষককে ডেকে কাসিফিয়া নগরের প্রধান ইদ্দোরের কাছে তাঁকে ও তাঁর লোকদের কি বলতে হবে তার নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলাম যাতে ইদ্দো আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরে কাজ করার মত কিছু সহকারী পাঠাতে পারেন| 18 য়েহেতু ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন ইদ্দো নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের আমাদের কাছে পাঠালেন:মহলির উত্তরপুরুষ শেরেবিয় (মহলি ছিলেন একজন লেবি| লেবি ছিল ইস্রায়েলের সন্তান|) শেরেবিয়র সঙ্গে তার পুত্ররা এবং ভাযেরা মোট 18 জন পুরুষ এসেছিল| 19 হশবিয় ও তার সঙ্গে মরারির সন্তান যিশায়াহ এবং তাদের ভায়েরা ও ছেলেরা, মোট 20 জন পুরুষ| 20 তারা 220 জন মন্দির কর্মীও পাঠিয়েছিল| (তাদের পূর্বপুরুষরা লেবীয়দের সাহায্য করবার জন্য দায়ূদ ও তাঁর কর্মচারীবর্গদ্বারা নিযুক্ত হয়েছিলেন| তাদের নাম তালিকা ভুক্ত ছিল|) 21 অহবা নদীর কাছে আমি ঘোষণা করলাম, ঈশ্বরের কাছে আমাদের বিনীত প্রতিপন্ন করার জন্য আমরা সকলে উপবাস করব| ঈশ্বরের কাছে আমরা আমাদের ও আমাদের সন্ততিদের এবং আমাদের বিষয় সম্পত্তির নিরাপদ যাত্রার জন্য প্রার্থনা করতে চেয়েছিলাম| 22 আমি আমাদের নিরাপত্তার জন্য রাজার কাছ থেকে আমাদের সঙ্গে আসবার জন্য সৈন্য ও অশ্বারোহী চাইতে অত্যন্ত ষ্ঠিধা বোধ করেছিলাম| কারণ আমরা রাজাকে বলেছিলাম, “যারা প্রভুতে বিশ্বাস করে ও তাঁর প্রতি আস্থা রাখে, আমাদের প্রভু সদা তাদের সহায় হন| কিন্তু য়েসব ব্যক্তি তাঁর থেকে দূরে সরে যায় ঈশ্বর তাদের প্রতি রুদ্ধ হন|” 23 আমরা তাই উপবাস করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম এবং তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন| 24 এরপর আমি যাজকদের মধ্যে থেকে শেরেবিয, হশবিয় যারা নেতৃস্থানীয় ছিল ও তাদের 10 জন ভাই প্রমুখ মোট 12 জন যাজককে বেছে নিয়েছিলাম| 25 রাজা অর্তক্ষস্ত, তাঁর উপদেষ্টাগণ, তাঁর প্রধানরা এবং বাবিলের সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা সেই উপহারগুলি ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য দিলেন| এবং বাবিলের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব সোনা এবং রূপো ওজন করে, মন্দিরের কাজের জন্য ঐ বারো জনকে দিলাম| 26 সব মিলিয়ে 25 টন রূপো, 3 3,4 টন রূপোর থালা ও 3 3,4 টন সোনা ছিল| 27 এছাড়াও আমরা প্রায় 19 পাউণ্ড ওজনের 20টি সোনার বাসন ও দুর্মূল্য 2টি পিতলের থালা দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, 28 “তোমরা প্রভুর কাছে পবিত্র| এই সামগ্রীগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র| এই সমস্ত সোনা এবং রূপো লোকরা প্রভুকে দান করেছিল, সেই প্রভু যিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর| 29 যাও এই সমস্ত বস্তু রক্ষা কর| জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের নেতৃবর্গকে দেওয়ার আগে পর্য়ন্ত এইসমস্ত সম্পদের দায়িত্ব তোমাদের| ইস্রায়েলের প্রধান পরিবারবর্গের নেতা ও লেবীয়দের হাতে এই সমস্ত কিছু তুলে দেবে| তারা ওজন করে এই সমস্ত জিনিস জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের ঘরের ভেতরে তুলে রাখবেন|” 30 তখন যাজক ও লেবীয়রা, জেরুশালেমের মন্দিরের জন্য ইষ্রার দেওয়া সামগ্রীগুলি গ্রহণ করল| 31 প্রথম মাসের দ্বাদশ দিনে আমরা অহবা নদীর কাছ থেকে জেরুশালেম অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম| ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন| তিনি আমাদের পথে শএুদের ও দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করলেন| 32 এরপর আমরা জেরুশালেমে পৌঁছলাম| সেখানে তিন দিন বিশ্রাম নিলাম| 33 চতুর্থ দিন আমরা মন্দিরে গেলাম এবং দুর্মূল্য বস্তুগুলি ওজন করে যাজক ঊরীয়ের পুত্র মরেমোতকে দিলাম| মরেমোতের সঙ্গে পীনহসের পুত্র ইলিয়াসর এবং য়েশূয়ের পুত্র য়োষাবদ ও বিন্নূযির পুত্র নোয়দিয় নামে দুই লেবীয় ছিল| 34 আমরা সামগ্রীগুলি ওজন করে মোট ওজনের পরিমাণ নথিভুক্ত করেছিলাম| 35 এরপর, য়ে সব ইহুদীরা নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিল, তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে হোমবলি নিবেদন করল| তারা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য 12টি বৃষ, 96টি মেষ, 77টি মেষশাবক ও পাপমোচনের জন্য 12টি পুরুষ ছাগলও বলিদান করল| 36 এরপর আমরা ফরাত্ নদীর পশ্চিম তীরস্থ প্রাদেশিক নেতাদের ও রাজ্যপালদের হাতে রাজার চিঠিটি তুলে দিলাম| তারপর এই সমস্ত নেতারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা ও মন্দিরের সহায়তা করেন|
1 এসব হয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয় লোকদের নেতারা আমাকে এসে বললেন, “ইষ্রা, ইস্রায়েলের লোকরা এখানে বসবাসকারী অন্যান্য ব্যক্তিদের থেকে নিজেদের পৃথক রেখে বাস করেনি| ইস্রায়েলীযরা কনানীয, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিশরীয় এবং ইমোরীয় প্রভৃতি অন্য জাতির লোকদের অসত্ কার্য়্য়কলাপে প্রভাবিত| এই ভাবে তারা অন্য বংশের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়| ইস্রায়েলীয় বিশেষ জন বলে গণ্য হবার কথা, কিন্তু এখন অন্তর্বিবাহের দরুণ তাদের অন্য জাতির সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে| ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ ও প্রশাসকরাই এই ধরণের বিয়ে করে অপরাপরদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে|” 2 3 আমি যখন একথা জানতে পারলাম, তখন দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য আমি আমার পোশাক, চুল, দাড়ি ছিঁড়ে ফেললাম, এবং বিষণ্ন ও অত্যন্ত স্তম্ভিত হয়ে বসে পড়লাম| 4 তখন ধর্মভীরু সমস্ত ব্যক্তি ভয়ে কাঁপতে শুরু করল| ওরা ভয় পেয়েছিল কারণ বন্দীদশা থেকে মুক্তিলাভ করে য়েসব ইহুদীরা ফিরে এসেছিল, তারা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত ছিল না| ক্ষুদ্ধ ও বিমূঢ় অবস্থায় আমি বৈকালিক উত্সর্গ অনুষ্ঠান পর্য়ন্ত বসে থাকলাম| ওই সমস্ত ব্যক্তিরা আমার চারপাশে জড়ো হল| 5 আমি যতক্ষণ ওখানে বসেছিলাম, নিজেকে যতদূর সম্ভব লজ্জিত দেখাতে চেষ্টা করছিলাম| এরপর বৈকালিক প্রার্থনার সময় আমি উঠে দাঁড়ালাম| নোংরা ও ছেঁড়া পরিধেয় সহ আমি হাঁটু গেড়ে বসে, দুহাত প্রসারিত করে আমার 6 প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বললাম: হে আমার ঈশ্বর, তোমার দিকে ফিরে তাকাতেও আমি লজ্জা বোধ করছি| আমি লজ্জিত কারণ আমাদের পাপকর্ম আমাদের মাথা ছাড়িযে গেছে| আমাদের অপরাধ স্বর্গ পর্য়ন্ত পৌঁছেছে| 7 আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্য়ন্ত আমরা বহু পাপে পাপী| আমাদের পাপের জন্য আমাদের রাজাদের, যাজকদের এবং আমাদের শাস্তিভোগ করতে হয়েছে| বিভিন্ন বিদেশী শাসক আমাদের লুঠ করে আমাদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছে| ঐ বিদেশী আক্রমণকারীরা আমাদের সম্পদ লুঠ করেছে| আজ পর্য়ন্ত সেই একই পুরানো ঘটনা ঘটে চলেছে| 8 কিন্তু এখন অল্প সময়ের জন্য তুমি আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেছ| তুমি আমাদের বন্দী ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে এই পবিত্রস্থানে এসে বাস করার সুযোগ করে দিয়েছ| প্রভু, তুমি আমাদের দাসত্ব থেকে এক নতুন জীবন দান করেছ| 9 হ্যাঁ, আমরা দাস ছিলাম, কিন্তু তুমি আমাদের দাস থাকতে দেবে না বলে পারস্যের রাজাদের দয়ালু করে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ প্রকাশ করেছ| তোমার মন্দিরটি য়েটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেটি গড়বার জন্য তুমি আমাদের নবজীবন দান করেছ| যিহূদা ও জেরুশালেমকে রক্ষার্থে তুমি আমাদের একটি দেওয়াল তুলতে সাহায্য করেছ| 10 হে ঈশ্বর, তোমাকে আমরা আর কি বলতে পারি? আমরা আবার তোমার প্রতি অবাধ্য হয়েছি| 11 হে ঈশ্বর, তুমি তোমার ভাব্বাদীদের মাধ্যমে আমাদের আদেশ করেছ: “য়ে ভূখণ্ডতে তোমরা আপনজ্ঞানে থাকতে চলেছ সেটি ধ্বংসাবশেষ মাত্র| এই ভূখণ্ডটি এখানে বসবাসকারী বাসিন্দাদের অসত্ কর্মের জন্য ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে| এখানকার বাসিন্দারা এই ভূখণ্ডকে অপবিত্র করেছে| 12 অতএব, ইস্রায়েলের লোকরা, তোমরা য়েন তোমাদের সন্তানসন্ততিদের ওই সব লোকদের সন্তানসন্ততিকে বিয়ে করতে দিও না| ওদের সঙ্গে কথাও বলো না| আমার আদেশ শুনলে তোমরা বলিষ্ঠ হয়ে উঠবে এবং এই ভূখণ্ডের যাবতীয় ভালো জিনিষ উপভোগ করতে পারবে এবং তোমাদের সন্তানসন্ততিদের হাতে এই ভূখণ্ডটি তুলে দিতে পারবে|” 13 আমরা নিজেরাই এই অবস্থার জন্য দাযী| আমরা পাপাচরণ করেছি এবং আমরা অপরিসীম দোষী| কিন্তু তুমি আমাদের অনেক কম দণ্ডে দণ্ডিত করেছ| আমাদের অনেক মারাত্মক পাপের জন্য আমাদের খুব কঠিন শাস্তি প্রাপ্য ছিল| তা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বন্দীদশা থেকে মুক্তি দিয়েছ| 14 অতএব তোমার আদেশ আমাদের অমান্য করা উচিত্ নয়| আমাদের ওই সমস্ত লোকদের সঙ্গে অন্তর্বিবাহ করা উচিত্ নয় যারা খারাপ কাজ করে| আমরা জানি য়ে আমরা যদি ওদের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্ক চালিয়ে যাই, তাহলে, হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের ওপর খুব রেগে যাবে এবং যতদিন না সমস্ত ইস্রায়েলীয নির্বংশ হবে তত দিন আমাদের ধ্বংস করবে| 15 হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি এত ভালো য়ে আমরা এত দোষ করা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বেঁচে থাকতে দিয়েছ| আমরা দোষী, তাই সে কারণে আমাদের কারোরই তোমার সামনে দাঁড়াবার কথা নয়|”
1 প্রভুর মন্দিরের সামনে কাঁদতে কাঁদতে ইষ্রা প্রার্থনা করছিলেন ও দোষ স্বীকার করছিলেন| সেই সময়ে বহু ইস্রায়েলীয নারী, পুরুষ ও শিশু তাঁর চারপাশে জড়ো হয়েছিল| তারাও কাঁদছিল| 2 তখন এলামের একজন উত্তরপুরুষ য়িহীযেলের পুত্র শখনিয়, ইষ্রাকে বলল, “আমরা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করেছি এবং আমাদের আশেপাশে বসবাসকারী অন্যান্য জাতির বংশের লোকদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছি, তবুও আমার মনে হয় এখনো ইস্রায়েলের সব আশা হারিযে যায়নি| 3 এখন আমরা ঈশ্বরের সামনে একটি চুক্তি করি য়ে এইসব বিজাতীয় স্ত্রীলোক ও তাদের সন্তানদের আমরা ফেরত্ পাঠিয়ে দেব| ইষ্রার উপদেশ মেনে চলবার জন্য ও য়েসব ব্যক্তি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি আস্থাবান তাঁদের অনুসরণ করবার জন্য আমরা এই কাজ করব এবং আমরা ঈশ্বরের বিধান মেনে চলবো| 4 ইষ্রা, আপনি উঠে দাঁড়ান এবং শক্ত হোন| ঈশ্বরের বিধির প্রতি আমাদের আস্থাবান করে তোলার য়ে ব্রত আপনি নিয়েছেন তা সফল করে তুলতে আমরা আপনাকে সহায়তা করব|” 5 ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং প্রতিজ্ঞা অনুযায়ীপ্রধান যাজকগণ, লেবীয় ও ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের শপথ গ্রহণ করালেন| 6 এরপর ইষ্রা ইলিয়াশীবের পুত্র য়িহোহাননের ঘরে প্রবেশ করলেন| য়েটুকু সময় ইষ্রা ওখানে ছিলেন, উনি কোন খাবার খেলেন না বা কিছু পান করলেন না, কারণ প্রত্যাগত বন্দীদের ঈশ্বরের বিধির প্রতি অনাস্থা বশতঃ তিনি তখনও দুঃখিত ও শোকসন্তপ্ত ছিলেন| 7 অতঃপর তিনি ইহুদী ও জেরুশালেমের সর্বত্র একটি বার্তা পাঠালেন| সেই বার্তায তিনি বন্দীত্ব থেকে মুক্তি লাভ করা সমস্ত ইহুদীদের জেরুশালেমে এসে সমবেত হতে বললেন| 8 য়ে সব ব্যক্তি তিনদিনের মধ্যে এসে উপস্থিত হবে না তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং সেই ব্যক্তিকে সে য়ে দলের সঙ্গে বাস করে তার থেকেও বহিষ্কার করা হবে| প্রধান আধিকারিক ও নেতৃবৃন্দরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন| 9 তিন দিনের মধ্যে ইহুদী ও বিন্যামীনের পরিবারের সমস্ত ব্যক্তি জেরুশালেমে জড়ো হল| এবং নবম মাসের কুড়ি দিনের মাথায় তারা মন্দির প্রাঙ্গণে সমবেত হল| তারা সকলে এই সমাবেশের কারণে ও প্রবল বর্ষণের জন্য কাঁপছিল| 10 তখন ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং সেই সমাবেশকে সম্ভাষণ করলেন, “তোমরা সকলে ঈশ্বরের বিধি অমান্য করে তাঁর প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছিলে এবং তোমরা বিজাতীয নারীদের বিয়ে করে ইস্রায়েলকে আরো দোষী করেছ| 11 এখন তোমরা ঈশ্বরের সামনে তোমাদের পাপ স্বীকার করো| প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তাঁর বিধি তোমাদের অবশ্য পালনীয| এই ভূখণ্ডে তোমাদের আশেপাশের বিজাতীয় ব্যক্তি বর্গের সঙ্গে তোমরা সমস্ত রকম সম্পর্ক ত্যাগ কর এবং তোমাদের বিদেশী স্ত্রীদের থেকে তোমরা নিজেদের আলাদা করে নাও|” 12 তখন ওখানে সমবেত সমস্ত ব্যক্তি সমস্বরে চিত্কার করে ইষ্রাকে বলল: “আপনি ঠিকই বলেছেন| আপনি যা বলছেন তা আমাদের অবশ্যই পালন করা উচিত্| 13 এখানে অনেক ব্যক্তি আছে আর এই বৃষ্টির মধ্যে আমাদের পক্ষে বাইরে থাকা সম্ভব নয়| এই সমস্যাটির সমাধানও দু-একদিনের মধ্যে সম্ভব নয় কারণ আমরা গুরুতর পাপাচরণ করেছি| 14 আমাদের নেতারাই আমাদের পুরো দলের জন্য এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক| তারপর তাদের বিদেশী স্ত্রীলোকদের, যাদের তারা বিয়ে করেছিল, তাদের ফেরত্ পাঠাবে, তারা তাদের জন্য নির্দ্দিষ্ট সময়ে জেরুশালেমে আসবে| প্রতিটি শহর থেকে প্রধান নেতারা এবং বিচারকগণ ঐ লোকদের সঙ্গে আসবেন| তাঁরা এরকম করে যাবেন যতক্ষণ না সবাই এসে যাবে| তাহলে ঈশ্বর আমাদের প্রতি রুদ্ধ হওয়া থেকে বিরত হবেন|” 15 অসাহেলের পুত্র য়োনাথন, তিক্বের পুত্র যহসিয়, মশুল্লম ও লেবীয় শব্বথয এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করল| 16 অতঃপর জেরুশালেমে প্রত্যাবর্তনকারী ইহুদীরা পরিকল্পনাটিকে গ্রহণ করতে সম্মত হল| যাজক ইষ্রা পরিবার নেতাদের বেছে নিলেন, প্রতিটি পরিবারবর্গ থেকে একটি করে মানুষের নাম বাছা হল এবং তাঁরা দশম মাসের প্রথম দিনে একত্র হয়ে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করলেন| 17 দশম মাসের প্রথম দিনে ওই বাছাই করা ব্যক্তিগণ য়ে সব লোকরা অন্তর্বিবাহ করেছে তাদের সম্পর্কে পর্য়ালোচনা করবার জন্য একসঙ্গে বসলেন| 18 নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা য়ে সব যাজক বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল, তাদের উত্তরপুরুষ:যিহোষাদকের পুত্র য়েশূয় ও তার ভাইরা মাসেয়, ইলীয়েষর, যারিব ও গদলিয়| 19 এঁরা সকলে তাঁদের স্ত্রীদের পরিত্যাগ করতে সম্মত হলেন| তারপর তাঁরা পাপস্খালনের বলিদানের জন্য একটি করে মেষও উত্সর্গ করেছিলেন| 20 হনানি ও সবদিয় ছিল ইম্মেরের পুত্র| 21 হারীমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মাসেয়, এলিয়, শময়িয়, যিহীয়েল ও উষিয়; 22 পশহূরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: ইলিযৈনয়, মাসেয়, ইশ্মায়েল, নথনেল, য়োষাবদ ও ইলিয়াসা; 23 লেবীয়দের মধ্যে: য়োষাবদ, শিমিয়ি ও কলায় বা কলীট, পথাহিয়, যিহূদা ও ইলিয়েষর; 24 গায়কদের মধ্যে ইলীয়াশীব; দ্বারপালদের মধ্যে শস্কলূ্লুম, টেলম ও ঊরি; 25 ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে: পরিয়োসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে রমিয়, যিষিয়, মল্কিয়, মিয়ামীন, ইলিয়াসর, মল্কিয় ও বনায়; 26 এলমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনিয়, সখরিয়, যিহীয়েল, অব্দি, যিরেমোত্ ও এলিয়| 27 সত্তূর পুত্রদের মধ্যে ইলিযৈনয়, ইলিয়াশীব, মত্তনিয়, যিরেমোত্, সাবদ ও অসীসা; 28 ব্বেয়ের পুত্রদের মধ্যে যিহোহানন, হনানিয়, সব্বয় ও অত্লয়; 29 বানির পুত্রদের মধ্যে মশুল্লম, মলূ্লূক, অদায়া, যাশূব, শাল ও য়িরমোত্| 30 পহত্- মোয়াবের পুত্রদের মধ্যে অদ্ন, কলাল, বনায়, মাসেয়, মত্তনিয়, বত্সলেল, বিন্নূয়ী ও মনঃশি; 31 হারীমের পুত্রদের মধ্যে ইলিয়েষর, যিশিয়, মল্কিয়, শময়িয়, শিমিয়োন, 32 বিন্যামীন, মলূ্লূক, শমরিয়; 33 হশূমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনয়, মত্তত্ত, সাবদ, ইলীফেলট, যিরেময়, মনঃশি ও শিমিয়ি; 34 বানির পুত্রদের মধ্যে মাদয়, অম্রাম, ঊয়েল, 35 বনায়, বেদিয়া, কলূহূ, 36 বনিয়, মরেমোত্, ইলিয়াশীব, 37 মত্তনিয়, মত্তনয় এবং যাসয়, 38 বিন্নূয়ীর পুত্রদের মধ্যে শিমিয়ি, 39 শেলিমিয়, নাথন, অদায়া, 40 মকদ্বয়, শাশয়, শারয়, 41 অসরেল, শেলিমিয, শমরিয়, 42 শলূ্লুম, অমরিয় এবং য়োষেফ; 43 নবোর উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়িযীযেল, মত্তিথিয়, সাবদ, সবীনঃ, যাদয় য়োযেল ও বনায়| 44 এরা সকলেই বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল এবং এদের মধ্যে অনেকের স্ত্রীই সন্তানদের জন্ম দিয়েছিল| 1 এগুলি হখলিয়ের পুত্র, নহিমিয়ের গল্প: রাজা অর্তক্ষস্তর রাজত্বের 20 বছরের মাথায়, কিশ্লেব মাসে আমি শূশনের রাজধানীতে ছিলাম| 2 এসময়ে হনানি নামে আমার এক ভাই ও আরো কিছু ব্যক্তি যিহূদা থেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল| আমি তখন তাদের জেরুশালেম শহরটি সম্পর্কে ও য়ে সব ইহুদীরা বন্দীদশা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছিল এবং তখনও যিহূদায় ছিল, তাদের সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম| 3 হনানি ও তার সঙ্গে য়ে লোকরা ছিল তারা আমাকে বলল, “য়ে সমস্ত ইহুদী বন্দীদশা এড়াতে পেরেছিল এবং যিহূদায় বাস করছে, তারা সংকট ও লজ্জার মধ্যে দিয়ে বাস করছে| কেন? কারণ জেরুশালেমের প্রাচীর ভেঙে পড়েছে এবং দরজাগুলি আগুনে পুড়ে গেছে|” 4 জেরুশালেম ও সেখানকার বাসিন্দাদের সম্পর্কে একথা শোনার পর আমার খুবই মন খারাপ হয় এবং আমি বসে পড়ে কাঁদতে শুরু করি| ভারাএান্ত মনে, আমি কিছুদিন ধরে উপবাস করতে ও স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে শুরু করলাম| 5 এই বলে আমি প্রার্থনা করেছিলাম:“হে প্রভু, স্বর্গের ঈশ্বর, আপনি মহান ও ক্ষমতাবান| যারা আপনাকে ভালবাসে ও বিশ্বস্ত ভাবে আপনার আজ্ঞা পালন করে তাদের সঙ্গে আপনি আপনার ভালবাসার চুক্তি সব সময়ে বজায় রাখেন| হে প্রভু অনুগ্রহ করে আপনার ভক্তের প্রার্থনা শ্রবণ করন| 6 আমি আপনার সামনে আপনার দাস, ইস্রায়েলের লোকদের জন্য প্রার্থনা করছি| আমরা, ইস্রায়েলের লোকরা, আপনার বিরুদ্ধে য়ে পাপসমূহ করেছি আমি তা স্বীকার করছি| আমি ও আমার পিতৃপুরুষরা য়ে পাপ করেছি তাও স্বীকার করছি| 7 আমরা, ইস্রায়েলীয়রা আপনার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছি| আপনি আপনার দাস মোশিকে য়ে সকল আজ্ঞা শিক্ষামালা ও বিধি দিয়েছিলেন তা আমরা পালন করি নি| 8 হে প্রভু, আপনার দাস মোশিকে আপনি য়ে নির্দেশগুলি দিয়েছিলেন দয়া করে তা স্মরণ করুন| আপনি বলেছিলেন, “তোমরা, ইস্রায়েলের লোকরা যদি আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হও তাহলে আমি তোমাদের বিভিন্ন জাতি সমূহের মধ্যে ছড়িয়ে দেব| 9 কিন্তু তোমরা যদি আমার কাছে ফিরে আস এবং আমার আদেশগুলি মেনে চলো, তাহলে তোমাদের মধ্যে যারা পৃথিবীর প্রান্ত দেশে নির্বাসিত হয়ে রযেছ তাদের আমি জড়ো করব এবং য়ে জায়গাটি আমি আমার নাম স্থাপন করার জন্য মনোনীত করেছি সেই জায়গায তাদের ফিরিযে আনব|” 10 ইস্রায়েলীয়রা আপনার দাস ও আপনার লোক| আপনি আপনার মহান ক্ষমতা প্রয়োগ করে এদের রক্ষা করেছেন| 11 হে প্রভু, আপনাকে আমার বিনীত অনুরোধ আপনি আমার, আপনার দাসের এবং য়েসব দাসেরা আপনার নামের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চায়, তাদের প্রার্থনা শুনুন| হে প্রভু, আপনি জানেন, আমি রাজার পানপাত্রবাহক|আজ আমি যখন কৃপাপ্রার্থী হিসেবে রাজার সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে যাব আপনি আমার সহায় থাকবেন, যাতে রাজা আমাকে অনুগ্রহ করেন|”
1 রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বের 20তম বছরের নীসন মাসে, যখন রাজাকে দ্রাক্ষারস নিবেদন করা হল, আমি দ্রাক্ষারসটি নিলাম এবং রাজাকে দিলাম| এর আগে তার সঙ্গে থাকাকালীন রাজা কখনও আমাকে বিষাদগ্রস্ত দেখেন নি, কিন্তু সেদিন আমি সত্যিই বিষাদগ্রস্ত হয়েছিলাম| 2 রাজা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কি শরীর খারাপ? তোমাকে এতো বিষাদগ্রস্ত লাগছে কেন? মনে হচ্ছে, তোমার হৃদয় বিষাদে পরিপূর্ণ|”তখন আমি খুব ভয় পেলেও রাজাকে বললাম, 3 “মহারাজ দীর্ঘজীবি হোন! আমার মন ভারাএান্ত কারণ য়ে শহরে আমার পূর্বপুরুষরা সমাধিস্থ, সেই শহর আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেই শহরের ফটকগুলি আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়েছে|” 4 তখন রাজা আমাকে রশ্ন করলেন, “তুমি আমাকে দিয়ে কি করাতে চাও?”আমি আমার ঈশ্বরকে প্রার্থনা করে 5 রাজাকে বললাম, “রাজা যদি আমাকে নিয়ে সত্যিই খুশী থাকেন এবং তাঁর যদি ইচ্ছে হয়, তবে দয়া করে আমাকে যিহূদায় জেরুশালেমে পাঠান য়ে শহরে আমার পূর্বপুরুষরা সমাধিস্থ হয়েছিলেন যাতে আমি শহরটি আবার গড়ে তুলতে পারি|” 6 মহারাজের পাশেই রাণী বসেছিলেন| তাঁরা দুজন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার এই সফরের জন্য কত সময় লাগবে? কবে আবার তুমি এখানে এসে পৌঁছতে পারবে?”রাজা য়েহেতু আমায় খুশি মনে বিদায দিলেন, আমি তাঁকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিলাম| 7 আমি রাজাকে এও জিজ্ঞাসা করলাম, “রাজা যদি সন্তুষ্ট থাকেন, দয়া করে আমাকে কয়েকটি চিঠি দিন যাতে যিহূদা যাওয়ার পথে ফরাত্ নদীর পশ্চিম পারের অঞ্চল পার হবার সময় আমি রাজ্যপালদের দেখাতে পারি| 8 এছাড়াও আপনার বনবিভাগের আধিকারিক আসফকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি চিঠিও আমার দরকার, যাতে সে আমাকে শহরের ফটকগুলি, শহরের প্রাচীরসমূহ, মন্দিরের দেওয়ালসমূহ ও আমার নিজের বাসস্থান নির্মাণের জন্য আমাকে কাঠ দেয়|” রাজা আমাকে সব কিছু রয়োজনীয় চিঠি দিয়ে অনুগৃহীত করলেন| ঈশ্বর আমার প্রতি সদয ছিলেন বলেই রাজা আমার জন্য এসব করেছিলেন| 9 তারপর আমি যখন ফরাত্ নদীর পশ্চিমাঞ্চলে এলাম, সেখানকার রাজ্যপালদের আমি পত্রগুলি দেখালাম| রাজা আমার সঙ্গে কয়েক জন সামরিক পদস্থ ব্যক্তি ও অশ্বারোহী সৈন্যও পাঠিয়েছিলেন| 10 আধিকারিকগণ, হোরোণের সন্বল্লট ও অম্মোনের এীতদাস টোবিয যখন আমার আসার খবর পেল এবং শুনল যে ইস্রায়েলীয়দের আমি সাহায্য করতে এসেছি তখন তারা বিরক্ত ও রুদ্ধ হল| 11 জেরুশালেমে তিন দিন থাকার পর আমি এক রাতে কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে বেরোলাম| জেরুশালেমের জন্য কি করার কথা ঈশ্বর আমার হৃদয়ে রেখেছিলেন সে কথা আমি কারো কাছেই প্রকাশ করিনি| যে ঘোড়াটিতে আমি চড়েছিলাম, সেটি ছাড়া আমার কাছে আর কোন ঘোড়া ছিল না| 12 13 যখন রাত হল, আমি উপত্যকার ফটকের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে এসে নাগকূপ ও ছাইগাদার ফটকের দিকে গেলাম| আমি নগরীর ভেঙে যাওয়া প্রাচীর এবং আগুনে ভস্মীভূত প্রাচীরের দরজাগুলি পরিদর্শন করছিলাম| 14 এরপর আমি ঝর্ণার ফটক ও রাজ পুষ্করিণীতে এসে পৌঁছলাম| সেখানে আমার ঘোড়ার যাবার কোন রাস্তা ছিল না| 15 তাই আমি রাতে দেওয়ালগুলো পর্য়বেক্ষণ করতে করতে উপত্যকার ওপর দিক পর্য়ন্ত গেলাম এবং দেওয়ালটি বরাবর এগিয়ে গেলাম যতক্ষণ না উপত্যকার ফটকে এসে পৌঁছলাম| তারপর শহরে ফিরে গেলাম| 16 আমি কোথায কোথায গিয়েছিলাম সেকথা আধিকারিকরা বা ইস্রায়েলের গন্যমাণ্য ব্যক্তিরা জানতেন না| আমি তখনও পর্য়ন্ত ইহুদীদের, যাজকদের, রাজপরিবারদের, আধিকারিকদের বা অন্যদের কাছে যারা কাজটি করবে, আমি কি করতে যাচ্ছি সে সম্পর্কে কিছুই প্রকাশ করিনি| 17 পরে আমি তাদের বললাম, “তোমরা সকলেই দেখতে পাচ্ছ আমরা কি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি| জেরুশালেম শহর আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এর ফটকগুলি আগুনে পুড়ে গেছে| এসো, আমরা আবার জেরুশালেমের দেওয়াল গেঁথে ফেলি তাহলে আর আমাদের লজ্জার কোন কারণ থাকবে না|’ 18 আমি তাদের এও বললাম যে ঈশ্বর আমার মঙ্গল করেছিলেন| রাজা আমায় কি বলেছেন, সে কথাও তাদের জানালাম| তখন লোকরা বলে উঠল, “চলো আমরা পুনর্নিমাণের কাজ শুরু করি!” তাই তারা এই ভাল কাজের প্রস্তুতিতে নিজেদের উত্সাহ দিল| 19 কিন্তু হোরোণের সন্বল্লট, অম্মোনের এীতদাস টোবিয ও আরবীয গেশম আমাদের বিদ্রূপ করে জিজ্ঞেস করল, “তোমরা কি করছো? তোমরা কি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছো?” 20 তখন আমি তাদের বললাম: “আমরা, ঈশ্বরের সেবকরা, এই শহর আবার গড়ে তুলবো| একাজে সফল হতে স্বর্গের ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করবেন| তোমাদের পরিবারের কেউ জেরুশালেমে বাস করেনি| তোমরা কেউ আমাদের একাজে সাহায্য করতে পারবে না| এ ভূখণ্ডের সামান্যতম অংশও তোমাদের নয়| এখানে থাকার তোমাদের কোন অধিকার নেই|”
1 মহাযাজক ইলীয়াশীব ও তাঁর যাজক ভাইরা কাজ শুরু করলেন এবং মেষ-দ্বারটি নির্মাণ করলেন| তারপর তাঁরা ঈশ্বরের কাছে সেটি পবিত্র বস্তু হিসেবে উত্সর্গীকৃত করলেন এবং তাঁরা দরজাগুলি দেওয়ালের গায়ে যথাস্থানে স্থাপন করলেন| তাঁরা একশো স্তম্ভ এবং হননেলের স্তম্ভ পর্য়ন্ত জেরুশালেমের প্রাচীর নির্মাণ করলেন এবং তাঁদের কাজ ঈশ্বরকে উত্সর্গ করলেন| 2 যাজকের পাশের দেওয়ালটি বানালেন য়িরীহোর বাসিন্দারা| আর তার পাশেরটি বানালেন ইম্রির পুত্র সক্কূর| 3 হস্সনাযার পুত্রগণ মত্স্য-দ্বারটি আবার বানাল| তারা বর্গাগুলি যথাস্থানে বসালো, ইমারতটিতে দরজা বসালো এবং তাতে ছিটকিনি ও তালাচাবি লাগালো| 4 দেওয়ালের পরের অংশটি হক্কোসের পৌত্র, ঊরিযের পুত্র মরেমোত্ পুনর্নিমাণ করল|তারপর মশুল্লম, বেরিখিযের পুত্র মশেষবেলের পৌত্র, পরেরটি মেরামত্ করল এবং তারপর দেওয়ালের পরের অংশটি বানার পুত্র সাদোক মেরামত্ করল| 5 দেওয়ালের পরের অংশটি যদিও তকোযার ব্যক্তিরা মেরামত্ করল কিন্তু তাদের নেতৃবর্গ তাদের রাজ্যপাল নহিমিয়র জন্য কোন কাযিক পরিশ্রম করতে অস্বীকার করল| 6 পুরোনো ফটকটি পাসেহের পুত্র যিহোয়াদা ও বসোদিযার পুত্র মশুল্লম মেরামত করল| তারা যথাস্থানে কড়ি-বর্গা বসিযে দরজায কব্জৃা লাগিয়ে তাতে তালা এবং ছিটকিনি সংয়োগ করল| 7 গিবিয়োনীয় মলাটিয ও মেরোণোথীয যাদোন এবং গিবিয়োন ও মিস্পার অন্য লোকরা দেওয়ালের পরের অংশটি মেরামত্ করল| গিবিয়োন ও মেরোণোথ পশ্চিম ফরাত্ জেলার রাজ্যপালের দ্বারা শাসিত হত| 8 এরপরের অংশটি হর্হযের পুত্র উষীযেল মেরামত্ করল| উষীযেল ছিল একজন স্বর্ণকার| হনানিয সুগন্ধ বানাত এবং সে পরের অংশটি মেরামত্ করল| ঐসব লোকরা দেওয়ালটিকে প্রশস্ত প্রাচীর অবধি গাঁথল| 9 পরের অংশটি মেরামত্ করল হূরের পুত্র রফায| রফায জেরুশালেমের অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| 10 এরপর হরূমফের পুত্র য়িদায একেবারে নিজের বাড়ির উলেটাদিক পর্য়ন্ত দেওয়ালটি বানালো| পরের অংশটি বানালো হশব্নিযের পুত্র হটুশ| 11 হারীমের পুত্র মল্কিয ও পহত্- মোয়াবের পুত্র হশূব পরের অংশটি এবং চুল্লী-গম্বুজও মেরামত্ করল| 12 হলোহেশের পুত্র শল্লুম তার কন্যাদের সাহায়্য়ে দেওয়ালের পরের অংশটি তৈরী করল| শল্লুম জেরুশালেমের অপর অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| 13 হানূন নামে এক ব্যক্তি এবং সানোহের লোকরা উপত্যকার ফটকটি মেরামত্ করল| তারা দরজাটি কব্জার ওপর বসিযে তাতে তালা-চাবি দিল এবং ছাইগাদা-ফটক পর্য়ন্ত 500 গজ দেওয়াল মেরামত্ করল| 14 মল্কিয ছিল রেখবের পুত্র এবং বৈত্হক্কেরমের রাজ্যপাল| সে ছাইগাদার ফটকটি মেরামত্ করল এবং ছিটকিনি ও তালাসহ দরজাটি কব্জার ওপর বসাল| 15 কল্হোষির পুত্র শল্লুম ঝর্ণা-ফটকটি মেরামত্ করল| শল্লুম ছিলেন মিস্পা জেলার রাজ্যপাল| তিনি ফটকটি মেরামত্ করলেন এবং তার মাথায় একটি ছাদ বানালেন| তিনি এর দরজাগুলি তালা ও ছিটকিনিসহ বসালেন| এছাড়া, শল্লুম রাজবাগিচার পাশে শীলোহ পুকুরের দেওয়ালও মেরামত্ করলেন| দেওয়ালটি দায়ূদ নগরের যেখান থেকে যে সিঁড়ি নেমে এসেছে সেখান পর্য়ন্ত তিনি মেরামত্ করলেন| 16 দেওয়ালের পরের অংশটি অস্বূকের পুত্র নহিমিয় মেরামত্ করল| নহিমিয় বৈত্সূর জেলার অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| তিনি দায়ূদের পরিবারের সমাধিগুলোর উলেটাদিক পর্য়ন্ত এবং মানুষের দ্বারা তৈরী পুকুর এবং “বীর-গৃহ” পর্য়ন্ত কাজ করলেন| 17 দেওয়ালের পরের অংশ বানির পুত্র রহূমের নির্দেশে লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীরা বানাল| হশবিয দেওয়ালের পরের অংশটি মেরামত্ করল| তিনি কিযীলা প্রদেশের অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| তিনি তার নিজের জেলাতেও মেরামত্ করলেন| 18 দেওয়ালের পরের অংশ তাঁদের ভাইরা মেরামত্ করেছিল| তারা হেনাদদের পুত্র বিন্নুই এর অধীনে কাজ করেছিল| বিন্নুই কিযীলার অপর অর্ধেকের রাজ্যপাল ছিলেন| 19 এর পরের অংশ যেশূযের পুত্র এসর মেরামত্ করলেন| এসর মিস্পার রাজ্যপাল ছিলেন| তিনি অস্ত্রাগার থেকে প্রাচীরের একটি কোণ পর্য়ন্ত দেওয়াল মেরামত্ করেছিল| 20 সব্বয়ের পুত্র বারূক এক কোণ থেকে মহাযাজক ইলিয়াশীবের বাড়ির দরজা পর্য়ন্ত দেওয়ালের অংশটি মেরামত্ করেছিল| 21 ইলিয়াশীবের বাড়ির প্রবেশপথ থেকে বাড়ির অন্য প্রান্ত পর্য়ন্ত দেওয়ালের অংশটি হক্কোসের পৌত্র, ঊরিযের পুত্র মরেমোত্ মেরামত্ করল| 22 পরের কিছুটা অংশ ওই অঞ্চলে বসবাসকারী যাজকরা মেরামত্ করলেন| 23 বিন্যামীন ও হশূব যে যার নিজের বাড়ির সামনের দেওয়ালটুকু ঠিক করার পর অননিয়ের পৌত্র ও মাসেযের পুত্র অসরিয়ও নিজের বাড়ির সামনের দেওয়ালটুকু মেরামত্ করল| 24 হেনাদদের পুত্র বিন্নূযী অসরিয়ের বাড়ি থেকে শুরু করে দেওয়ালের বাঁক হয়ে কোণ পর্য়ন্ত অংশটি তুলে ফেলল| 25 উষযের পুত্র পালল দেওয়ালের বাঁকে স্তম্ভের কাছে যেটি উচ্চ প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে এসেছে, যেটি আবার রাজার প্রহরীর উঠোনের কাছে অবস্থিত সেই খানে দেওয়াল তুলল| পরোশের পুত্র পদায পাললের পরে কাজ করল| 26 মন্দিরের দাসরা ওফল পাহাড়ের ওপর বাস করছিল| তারা স্তম্ভের কাছে জলদ্বারের পূর্বাংশ পর্য়ন্ত মেরামতের কাজগুলি করল| 27 তকোযীর লোকরা বড় স্তম্ভটি থেকে শুরু করে ওফলের দেওয়াল পর্য়ন্ত দেওয়ালের বাদবাকি অংশটি মেরামত্ করল| 28 যাজকরা অশ্ব-দ্বারের ওপরের অংশ বানিয়ে ফেলল| প্রত্যেক যাজক যে যার নিজের বাড়ির দেওয়াল গাঁথল| 29 এরপর ইম্মেরের পুত্র সাদোক নিজের বাড়ির সামনের দেওয়াল ও শখনিয়ের পুত্র শময়িয় দেওয়ালের তারপরের অংশটুকু মেরামত্ করে নিল| সে ছিল পূর্বদ্বারের জনৈক প্রহরী| 30 শেলিমিযের পুত্র হনানিয ও সালফের পুত্র হানূন (হানূন ছিল সালফের য়ষ্ঠ পুত্র) দেওয়ালের পরের অংশ মেরামত্ করল|বেরিখিযের পুত্র মশুল্লম তার নিজের বাড়ির সামনে দেওয়ালের অংশ মেরামত্ করল| 31 মল্কিয নামে এক স্বর্ণকার পর্য়বেক্ষণ দ্বারের বিপরীতে মন্দির দাস ও ব্যবসাযীদের বাড়ি পর্য়ন্ত অংশের দেওয়াল মেরামত্ করল| 32 বাকী অংশ অর্থাত্ কোণের দিকে ওপরের ঘর থেকে মেষদ্বার পর্য়ন্ত অংশ স্বর্ণকাররা ও ব্যবসাযীরা মেরামত্ করল|
1 আমরা দেওয়াল পুননির্মাণ করছি, একথা জানতে পেরে সন্বল্লট খুবই রুদ্ধ হল| সে তখন ইহুদীদের নিয়ে হাসা-হাসি করল| 2 সন্বল্লট তার বন্ধুদের ও শমরীয সেনাদলের সামনেই কথা বলছিল, “এই দুর্বল ইহুদীগুলো কি করছে? ওরা কি ভাবছে যে আমরা ওদের ছেড়ে দেব? ওরা কি বেদীতে বলি চড়াবে? ওরা কি মনে করে যে এক দিনেই ওরা নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারবে? ওরা কি আবর্জনা আর ধূলোর গাদা থেকে এই পোড়া পাথরগুলিকে আবার জীবন্ত করে তুলতে পারবে?” 3 সেই সময়, অম্মোনীয়র টোবিয সন্বল্লটের সঙ্গে ছিল| সে বলল, “যে দেওয়ালটা ওরা বানাচ্ছে ওটার ওপর একটা ছোট শেযালও যদি ওঠে ওটা ভেঙে পড়বে!” 4 নহিমিয় তখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন, “হে ঈশ্বর তুমি দয়া করে আমাদের ডাকে সাড়া দাও| এই সমস্ত ব্যক্তিরা আমাদের ঘৃণা করে| সন্বল্লট ও টোবিয আমাদের অপমান করছে| তুমি তাদের এর যথায়োগ্য শাস্তি দাও| ওদের বন্দী করার ব্যবস্থা করো, যাতে ওরা লজ্জিত হয়| 5 তোমার চোখের সামনে ওরা যে অপরাধ করেছে তা তুমি ক্ষমা কর না| ওরা দেওয়াল নির্মাতাদের অপমান করেছে ও তাদের নিরুত্সাহ করেছে|” 6 যদিও আমরা জেরুশালেমের চারপাশের দেওয়াল বানালাম কিন্তু দেওয়ালের উচ্চতা যা হওয়া উচিত্ ছিল মোটে তার অর্ধেক হল| লোকরা উদ্যম আর ইচ্ছা নিয়ে কাজ করেছে| 7 সন্বল্লট, টোবিয, আরবীয, অম্মোনীয় ও অস্দোদীযরা খুব রেগে গেল কারণ ওরা শুনেছিল যে জেরুশালেমের দেওয়ালের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে এবং গর্ত ভরাট করা হচ্ছে| 8 তারপর তারা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে চএান্ত করার পরিকল্পনা করল| তারা সবাই পরিকল্পনা করল যে তারা আসবে ও জেরুশালেমের বিরুদ্ধে লড়াই করবে এবং তার বিরুদ্ধে গোলমাল করবে| 9 কিন্তু আমরা আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে দিবারাত্র দেওয়ালের চারপাশে কড়া পাহারার ব্যবস্থা করলাম যাতে আমরা এই সব বহিঃশএুদের প্রয়োজনে বাধা দিতে পারি| 10 সে সময় যিহূদার লোকেরা বলল, “কর্মীরা সকলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং ওখানে সরাবার মতো এত নোংরা আছে যে আমরা দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারব না|” 11 আর আমাদের শএুরা বলছে, ‘ইহুদীরা এ সম্বন্ধে অবগত হবার আগে অথবা আমাদের দেখতে পাবার আগে, আমরা তাদের মধ্যে গিয়ে তাদের হত্যা করব, এবং এই ভাবেই তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে|”‘ 12 তারপর যে সব ইহুদী আমাদের শএুদের মধ্যে থাকত তারা এলো এবং আমাদের দশ বার বলল, ‘আমাদের শএুরা আমাদের চারদিকে রযেছে| আমরা যে দিকেই ফিরি না কেন সে দিকেই শএুরা রযেছে|’ 13 আমি তখন কিছু ব্যক্তিকে প্রাচীরের নিম্নতম অংশে রাখার ব্যবস্থা করলাম| আমি পরিবারগুলিকে তলোয়ার, বল্লম ও তীর-ধনুক সহ দেওয়ালের গর্তের কাছে এক সঙ্গে দাঁড় করিযে দিলাম| 14 তারপর সমস্ত ব্যবস্থা ও পরিস্থিতি খতিযে দেখবার পর, আমি গুরুত্বপূর্ণ পরিবারগুলিকে, আধিকারিকদের এবং সমস্ত বাকি লোকদের উত্সাহ দিয়ে বললাম, “আমাদের শএুদের ভয় পেযো না| মনে রেখো আমাদের প্রভু মহান এবং ভয়ঙ্কর!” 15 আমাদের শএুপক্ষ খবর পেল যে আমরা তাদের চএান্তের কথা জেনে ফেলেছি| ঈশ্বর তাদের সমস্ত মতলব বানচাল করে দিয়েছেন| আবার আমাদের লোকরা তাদের নিজেদের জায়গায ফিরে গিয়ে দেওয়ালের কাজ শুরু করল| 16 তখন থেকে আমাদের লোকদের অর্ধেক সংখ্যক দেওয়াল নির্মাণের কাজে নিযুক্ত রইল আর বাকি অর্ধেক বল্লম, বর্ম, তীর এবং বর্ম নিয়ে প্রহরায নিযুক্ত হল| সেনাধ্যক্ষরা যিহূদার লোকদের পেছনে এসে দাঁড়ালেন যেহেতু তারা দেওয়াল নির্মাণ করছিল| 17 মিস্ত্রি ও তাদের য়োগানদাররা এক হাতে তাদের য়ন্ত্রপাতি এবং অন্য হাতে অস্ত্রও ধরেছিল| 18 কাজ করার সময়ও প্রত্যেকটি নির্মাণকারী কোমরবন্ধে তরবারি ঝুলিয়ে রাখতো| লোকদের সতর্ক করে দেবার জন্য যার শিঙা বাজানোর কথা সে আমার পাশে পাশে থাকত| 19 আমি তখন আধিকারিকবর্গ, গুরুত্বপূর্ণ পরিবার ও বাকি লোকদের সঙ্গে কথা বললাম| আমি বললাম, “এই দেওয়াল জুড়ে এখনও অনেক কাজ করা বাকি আছে আর আমরা একে অন্য়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি|” 20 কিন্তু একে অপরের থেকে কাজের সময় যত দূরেই থাকো না কেন, শিঙার আওয়াজ শুনলেই সকলে দ্রুত এক জায়গায জড়ো হবে| ঈশ্বর বয়ং আমাদের য়ুদ্ধে সাহায্য করবেন|” 21 অতএব আমরা সূর্য়াস্ত থেকে সূর্য়োদয পর্য়ন্ত জেরুশালেমের দেওয়াল বানানোর জন্য কঠিন পরিশ্রম করছিলাম যখন কর্মীদের মধ্যে অর্ধেকরা হাতে বল্লম ধরেছিল| 22 আমি নির্মাতাদের এও বলেছিলাম, “প্রত্যেক নির্মাতা এবং তার সাহায্যকারী রাত্রে জেরুশালেমের ভেতরে থাকবে যাতে তারা রাত্রে পাহারাদার এবং দিনের বেলা কর্মী হতে পারে|” 23 অতএব আমি বা আমার ভাইরা, আমার লোকরা এবং প্রহরীরা কেউই স্নান করার জন্য বা কাপড় কাচার জন্য পোষাক খুলতে পারতাম না কারণ আমরা যখন জলের জন্য বেরোতাম তখনও আমাদের হাতে অস্ত্র থাকত|
1 অনেক দরিদ্র ইহুদী তাদের আত্মীযদের বিরুদ্ধে অভিয়োগ করতে শুরু করলো| 2 তাদের মধ্যে কয়েকজন অভিয়োগ করল, “আমাদের এতগুলি ছেলেমেযে; সুতরাং খেযেপরে বাঁচার জন্য আমাদের খাদ্য শস্যের প্রয়োজন!” 3 অন্য লোকরা বলল, “দুর্ভিক্ষের সময় শস্য পাবার জন্য আমরা আমাদের জমিজমা, দ্রাক্ষাক্ষেত এবং বাড়ি বন্ধক রেখেছিলাম|” 4 আবার আরেক দল বলতে শুরু করল, “আমাদের জোত জমি ও দ্রাক্ষাক্ষেতের ওপর ধার্য় রাজকর দেবার জন্য আমাদের অর্থ ধার করতে হয়েছিল| 5 আর এদিকে ঐসব ধনী লোকদের দেখো! আমরাও তো ওদেরই মতো মানুষ, আমাদের ছেলেমেয়েরাই বা ওদের থেকে কম কিসে? কিন্তু শেষ পর্য়ন্ত আমাদের ছেলেমেয়েদের দাসদাসী হিসেবে বিক্রি করে দিতে হবে! ইতিমধ্যেই অনেকে তা করতে শুরু করেছে, অথচ আমরা কিছুই করতে পারছি না| আমাদের ভূমি ও দ্রাক্ষাক্ষেত এখন অন্য লোকদের অধীনে!” 6 আমি যখন ওদের অভিয়োগগুলো শুনলাম তখন মহারুদ্ধ হলাম| 7 তারপর আমি নিজেকে শান্ত করে বিত্তবান পরিবার ও আধিকারিকবর্গের কাছে গিয়ে বললাম, “তোমরা তোমাদের নিজেদের লোকদের টাকা ধার দাও এবং তাদের কাছ থেকে সুদ আদায কর| তোমাদের অতি অবশ্য এ কাজ বন্ধ করতে হবে|” এরপর আমি সমস্ত ব্যক্তিদের এক জায়গায জড়ো করে বললাম, 8 “লোকরা আমাদের ইহুদী ভাইদের এীতদাস হিসেবে অন্য দেশসমূহে বিক্রি করে দিয়েছিল| বহু কষ্টে আমরা তাদের স্বাধীন করে দেশে ফিরিযে এনেছি আর এখন তোমরা নিজেরাই আবার তাদের এীতদাস হিসেবে বিক্রি করছো!”ধনী লোকরা ও আধিকারিকরা এই অভিয়োগ শুনে কিছু বলতে পারল না, চুপ করে থাকল| 9 তখন আমি তাদের বললাম, “তোমরা যা করছ, সেটা সঠিক কাজ নয়| তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভয় থাকা প্রয়োজন| অন্যান্য জাতিরা যে সব লজ্জাজনক কাজ করছে সেসব তোমাদের করা উচিত্ নয়| 10 আমার লোকরা, আমার ভাইরা, এমন কি আমিও, দরিদ্রদের টাকাপয়সা ও খাদ্যশস্য ধার দিচ্ছি| এসো আমরা তাদের যে টাকা ধার দিই তার থেকে সুদ নেওয়া বন্ধ করি| 11 তোমরা অতি অবশ্য দরিদ্র ব্যক্তিদের জমি-জমা, দ্রাক্ষাক্ষেত, বাড়ি ফেরত দিয়ে দেবে| এছাড়াও তোমরা, এদের টাকা-পয়সা, শস্য, দ্রাক্ষারস এবং তেল ধার দিয়ে তার ওপর এক শতাংশ হারে যে সুদ নিয়েছো তাও ফিরিযে দেবে|” 12 তখন ধনী ব্যক্তি সবাই আমাকে বলল, “নহিমিয় তুমি যা বললে তাই হবে| আমরা ওদের সব কিছু ফিরিযে দেব আর কখনও গরীব দুঃখীদের থেকে কিছু নেব না|”তারপর যাজকদের ডেকে ঈশ্বরের সামনে ধনী ও আধিকারিকরা যা বলেছে তা শপথ করালাম| 13 এরপর আমি আমার কাপড়ের ভাঁজ ঝাড়তে ঝাড়তে তাদের বললাম, “এই একই ভাবে তোমরা যারা এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, তাদের প্রত্যেককে ঈশ্বর ধরে ঝাঁকাবেন| ঈশ্বর তাকে গৃহচ্যুত তো করবেনই উপরন্তু তার যা কিছু আছে সবই তাকে হারাতে হবে|”আমি আমার বক্তব্য শেষ করার পর উপস্থিত সকলে “আমেন” বলল| তারপর তারা সকলে প্রভুর প্রশংসা করল এবং এরা সকলেই তাদের কথা রেখেছিল| 14 রাজা অর্তক্ষস্তর রাজত্বের 20তম বছর থেকে 32তম বছর পর্য়ন্ত আমি যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে কাজ করছিলাম| সে সময় আমি বা আমার কোন ভাই রাজ্যপালের জন্য বরা? খাদ্য খাইনি| আমি কখনও দরিদ্র ব্যক্তিদের জোরজবর্দস্তি কর দিতে বাধ্য করে সে পয়সায নিজের খাবার কিনিনি| আমি অর্তক্ষস্তের রাজত্বের কুড়ি বছর থেকে বত্রিশ বছর পর্য়ন্ত অর্থাত্ মোট বারো বছর যিহূদার শাসক হিসেবে কাজ করেছিলাম| 15 যে সব রাজ্যপালরা আমার আগে শাসন করেছিলেন তাঁরা লোকদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিলেন| এঁরা সকলেই প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে এক পাউণ্ড রূপোসহ খাবার ও দ্রাক্ষারস দাবী করতেন| নেতৃবর্গ, যারা ঐ সব রাজ্যপালদের অধীন ছিল তারাও লোকেদের শোষণ করত| কিন্তু যেহেতু আমার ঈশ্বরে ভয়-ভীতি আছে, আমি এই ধরণের কাজ করিনি| 16 আমি জেরুশালেমের দেওয়াল তোলবার জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিলাম| আমার সমস্ত লোকরাও এই কাজের জন্য একত্রে এসেছিল| আমরা কারো কাছ থেকে কোন জমি জমা কেড়ে নিই নি| 17 উপরন্তু আমি নিয়মিত ভাবে আমার টেবিলে 150 জন ইহুদী আধিকারিকদের খাওয়ার য়োগান দিয়েছিলাম| আর আমাদের আশেপাশের দেশ থেকে যে সব লোকরা আমার টেবিলের কাছে এসেছিল আমি তাদেরও খাবার সরবরাহ করতাম| 18 প্রতি দিন লোকদের খাওয়াবার জন্য আমি একটি গরু, ছয়টি মোটা মেষ এবং নানান ধরণের পাখি রান্না করার জন্য দিতাম| প্রতি দশদিন অন্তর আমি প্রভূত পরিমাণে সব রকমের দ্রাক্ষারস দিতাম| কিন্তু আমি কখনই শাসকের জন্য বরা? দামী খাবার-দাবার দাবি করিনি বা আমার খাবার কেনার জন্য প্রজাদের ওই সমস্ত কর দিতে বাধ্য করিনি| আমি জানতাম, দেওয়াল বানানোর জন্য সকলে কঠিন পরিশ্রম করছে| 19 হে ঈশ্বর, আমি এই সব লোকদের জন্য যা করেছি, তা মনে রেখো এবং আমাকে আশীর্বাদ করো|
1 তারপর সন্বল্লট, টোবিয ও গেশম নামে আরব ও আমাদের অন্যান্য শএুরা জানতে পারল যে আমি জেরুশালেমের দেওয়াল নির্মাণ করছিলাম| দেওয়ালের গায়ের গর্তগুলি ভরাট করা হলেও তখনও অবশ্য আমাদের দরজার পাল্লা বসানো বাকি ছিল| 2 অতএব সন্বল্লট ও গেশম তখন আমাকে একটি খবর পাঠাল: “চলো নহিমিয়: ওনো সমভূমির কেফিরিন শহরে আমরা সাক্ষাত্ করি|” কিন্তু ওরা আমার ক্ষতি করার পরিকল্পনা করেছিল| 3 কিন্তু আমি ওদের এই কথা বলে ফেরত পাঠালাম: “আমি খুব জরুরী কাজে ব্যস্ত আছি, তাই তোমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি কাজ বন্ধ করতে পারব না|” 4 সন্বল্লট ও গেশম আমাকে চারবার একই খবর পাঠিয়েছিল, কিন্তু আমি তাদের একই উত্তর দিয়েছিলাম| 5 তারপর পঞ্চমবার সন্বল্লট ওর নিজের এক সাহায্যকারীর মাধ্যমে আমাকে একই আমন্ত্রণ পাঠালো| 6 চিঠিটিতে লেখা ছিল: “চতুর্দিকে একটি গুজব ছড়াচ্ছে এবং এমনকি গেশমও বলেছে যে, তুমি ও ইহুদীরা নাকি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা করছ| যে কারণে নাকি তোমরা জেরুশালেম শহরের চারপাশে দেওয়াল তুলছ| জনসাধারণ বলছে, বিদ্রোহের পর তুমিই নাকি হবে ইহুদীদের নতুন রাজা| 7 গুজবে একথাও বলা হচ্ছে যে তোমার সম্বন্ধে এই কথা জেরুশালেমে ঘোষণা করতে তুমি ভাব্বাদীদের নিযুক্ত করেছ: ‘যিহূদায় এক রাজা আছেন!’“দেখো নহিমিয়, আমি তোমাকে সাবধান করে দিতে চাই যে শীগ্গিরই রাজা শীঘ্রই এসব খবর পেয়ে যাবেন| তাই বলছি, এসো আমরা এক সঙ্গে বসে এ বিষয়ে কথাবার্তা বলি|” 8 আমি তখন সন্বল্লটকে বলে পাঠালাম, “তুমি যা অভিয়োগ করেছ তার কোনটাই সত্যি নয়| তুমি তোমার নিজের মাথা থেকেই এই গল্পটা বানাচ্ছো|” 9 আসলে আমাদের শএুরা আমাদের ভয় দেখাতে চেষ্টা করছিল| ওরা ভাবছিল, “এসব করলে ইহুদীরা ভয় পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেবে আর দেওয়ালের কাজও শেষ হবে না|”কিন্তু আমি প্রার্থনা করেছিলাম, “হে ঈশ্বর, আমাকে শক্তি দাও|” 10 এক দিন আমি শময়িয়র সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে গেলাম| শময়িয় ছিল দলাযের পুত্র| দলায ছিল মহেটবেলের পুত্র| শময়িয় তার বাড়িতে ছিল| সে আমাকে বলল,“নহিমিয়, চল আমরা ঈশ্বরের মন্দিরে দেখা করি| চল আমরা পবিত্র স্থানের ভিতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিই, কারণ শএুরা আজ রাতে তোমাকে হত্যা করতে আসছে|” 11 আমি শময়িয়কে উত্তরে বললাম, “আমার মতো কোন ব্যক্তির কি পালিয়ে যাওয়া উচিত্? আমার মতো এক জন ব্যক্তির কি নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য পবিত্র স্থানের ভেতরে যাওয়া উচিত্? আমি যাব না!” 12 আমি জানতাম যে আমাকে সাবধান করতে ঈশ্বর শময়িয়কে পাঠান নি| আমি বুঝতে পারলাম যে সে আমার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল কারণ টোবিয ও সন্বল্লট তাকে তা করার জন্য টাকা দিয়েছিল| 13 আমাকে ভয় দেখানোর জন্য ও মন্দিরের ভেতরে যেতে প্ররোচিত করবার জন্য শময়িয়কে টাকা দেওয়া হয়েছিল যাতে এই কাজ করে আমি পাপাচরণ করি তাহলে ওরা আমাকে অপদস্থ করবার জন্য বদনাম দিতে পারে| 14 হে ঈশ্বর, সন্বল্লট ও টোবিযকে এবং তারা যে মন্দ কাজগুলি করেছে তা অনুগ্রহ করে মনে রেখ| এমন কি ভাব্বাদিণী নোযদিযার কথা এবং অন্যান্য যে সমস্ত ভাব্বাদীরা আমাকে ভয় দেখাতে চেষ্টা করছে তাদের কথাও তুমি স্মরণে রেখো| 15 ইলূল মাসের 25 দিনের মাথায় জেরুশালেমের দেওয়াল গাঁথার কাজ শেষ হল| দেওয়াল নির্মাণ শেষ করতে 52 দিন লেগেছিল| 16 তখন আমাদের সমস্ত শএু ও আশেপাশের সব জাতিগুলি জানতে পারল যে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে| তাই তারা তাদের সাহস হারিযে ফেলল| কেন? কারণ ওরা বুঝতে পেরেছিল, যে আমাদের ঈশ্বরের সহায়তাতেই একাজ শেষ হয়েছে| 17 এছাড়াও, সে সময়ে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হবার পর, যিহূদার ধনী ব্যক্তিরা টোবিযকে চিঠি লিখত এবং টোবিয সেসব চিঠির জবাব দিত| 18 তারা ঐসব চিঠি লিখেছিল কারণ যিহূদাতে বহু লোক তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল| কারণ টোবিয, আরহের পুত্র শখনিয়ের জামাতা ছিল| উপরন্তু টোবিয়ের পুত্র য়িহোহানন বেরিখিযের পুত্র মশুল্লমের কন্যাকে বিয়ে করেছিল| 19 অতীতে তারা টোবিযর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাই এরা আমার কাছে বলেছিল টোবিয কত ভাল ছিল| আমার কার্য়কলাপ সম্পর্কে তারা টোবিযকে যাবতীয় খবরাখবর দিত| টোবিয আমাকে ভয় দেখানোর জন্য চিঠি পাঠানো অব্যাহত রেখেছিল|
1 আমাদের দেওয়াল বানানোর কাজ শেষ হল| তারপর আমরা দরজায পাল্লা বসালাম ও কারা সেই সব দরজায পাহারা দেবে তার জন্য লোক ঠিক করলাম| আমরা গায়কদের এবং লেবীয়দেরও নিযুক্ত করলাম| 2 এরপর আমি আমার ভাই হনানি ও হনানিয নামে আরেক ব্যক্তিকে যথাএমে জেরুশালেম শহরের দায়িত্ব ও দুর্গের সেনাপতির দায়িত্ব দিলাম| আমি আমার ভাই হনানিকে বেছে নিয়েছিলাম কারণ অন্যান্যদের থেকে সে খুবই সত্ ও তার ঈশ্বরে বেশী ভয় ছিল| 3 আমি তখন তাদের নির্দেশ দিলাম, “প্রতিদিন সূর্য়োদযের কয়েক ঘণ্ট্া পরে জেরুশালেমের ফটকগুলি খুলবে| আর সূর্য়াস্তের পূর্বেই তোমরা ফটক বন্ধ করে তালা লাগাবে| এছাড়াও, রক্ষী হিসেবে যাদের নিয়োগ করবে তারা যেন এ শহরেরই বাসিন্দা হয়| এই সমস্ত রক্ষীদের কয়েক জনকে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায পাহারা দিতে পাঠাবে আর বাদবাকিরা যেন তাদের বাড়ির কাছাকাছি অঞ্চলেই পাহারা দেয়|” 4 জেরুশালেম শহরটি খুবই বড়| শহরে অনেক জায়গা থাকলেও, তুলনায় বাসিন্দার সংখ্যা কম| বাড়ি-ঘরও তখন সমস্ত বানানো হয়নি| 5 এমতাবস্থায ঈশ্বর আমার হৃদয়ে সমস্ত বাসিন্দাদের একত্রিত করার বাসনা প্রবেশ করালেন| আমি তখন সমস্ত গন্যমাণ্য ব্যক্তি, আধিকারিকবর্গ ও সাধারণ লোক দের একসঙ্গে ডেকে পাঠালাম| বসবাসকারী সমস্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা বানানোই আমার মূল উ?শ্য ছিল| ইতিমধ্যে বন্দীদশা থেকে যারা প্রথম এ শহরে ফিরে এসেছিল তার একটি তালিকা আমি পেয়েছিলাম| তাতে লেখা ছিল: 6 এই ইহুদীরা বন্দীদশা থেকে জেরুশালেম এবং যিহূদায় ফিরে এসেছিল| রাজা নবূখদ্নিত্সর এদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলে| এরা হল: যেশূয, নহিমিয়, অসরিয়, রযমিযা, নহমানি, 7 মর্দখয়, বিল্শন, মিস্পরত্, বিগ্বয, নহূম ও বানা| তারা সরুব্বাবিলের সঙ্গে ফিরে এসেছিল| নীচে ইস্রায়েলের য়ে সমস্ত লোক ফিরে এসেছিল তাদের নাম ও সংখ্যা দেওয়া হল: 8 পরোশের উত্তরপুরুষ 2,172 9 শফটিযের উত্তরপুরুষ 372 10 আরহের উত্তরপুরুষ 652 11 য়েশূয় ও য়োয়াবের পরিবারগোষ্ঠীর পহত্-মোয়াবের উত্তরপুরুষ 2,818 12 এলমের উত্তরপুরুষ 1,254 13 সত্তূর উত্তরপুরুষ 845 14 সক্কয়ের উত্তরপুরুষ 760 15 বিন্নূয়ির উত্তরপুরুষ 648 16 ব্বেয়ের উত্তরপুরুষ 628 17 আস্গদের উত্তরপুরুষ 2,322 18 অদোনীকামের উত্তরপুরুষ 667 19 বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষ 2,067 20 আদীনের উত্তরপুরুষ 655 21 যিহিষ্কিয়ের বংশজাত আটেরের উত্তরপুরুষ 98 22 হশুমের উত্তরপুরুষ 328 23 বেত্সযের উত্তরপুরুষ 324 24 হারীফের উত্তরপুরুষ 112 25 গিবিয়োনের উত্তরপুরুষ 95 26 বৈত্লেহম ও নটোফা শহরের লোক 188 27 অনাথোত শহরের 128 28 বৈত্-অস্মাবত্ শহরের 42 29 কিরিযত্-য়িযারীম, কফীরা ও বেরোত শহরের 743 30 রামা ও গেবা শহরের 621 31 মিক্মস শহরের 122 32 বৈথেল ও অয শহরের 123 33 নবো শহরের 52 34 এলম শহরের 1,254 35 হারীম শহরের 320 36 য়িরীহো শহরের 345 37 লোদ, হাদীদ ও ওনো শহরের 721 38 সনায়া শহরের 3,930 39 যাজকগণ হল:য়েশূয়ের বংশজাত যিদয়িয়র উত্তরপুরুষ 973 40 ইম্মেরের উত্তরপুরুষ 1,052 41 পশ্হূরের উত্তরপুরুষ 1,247 42 হারীমের উত্তরপুরুষ 1,017 43 এরা হল লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোক:হোদবিয়র বংশজাত য়েশূয় ও কদ্মীয়েলের উত্তরপুরুষ 74 44 এরা হল গায়ক বৃন্দ:আসফের উত্তরপুরুষ 148 45 এরা হল দ্বার-রক্ষকগণ:শল্লুম, আটের, টল্মোন, অক্কুব, হটীটাও শোবয়ের উত্তরপুরুষ 138 46 এরা হল মন্দিরের বিশেষ দাস:সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের উত্তরপুরুষরা, 47 কেরোস, সীয় ও পাদোনের বংশধরবর্গ, 48 লবানা, হগাব ও শল্ময়ের বংশধরবর্গ, 49 হানন, গিদ্দেল ও গহরের বংশধরবর্গ, 50 রাযা, রত্সীন ও নকোদের বংশধরবর্গ, 51 গসম, ঊষ ও পাসেহের বংশধরবর্গ, 52 বেষয, মিযূনীম ও নফুষয়ীমের বংশধরবর্গ, 53 বকবূক, হকূফা ও হর্হূরের বংশধরবর্গ, 54 বসলীত, মহীদা ও হর্শার বংশধরবর্গ, 55 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের বংশধরবর্গ, 56 নত্সীহ ও হটীফার বংশধরবর্গ| 57 শলোমনের উত্তরপুরুষ দাসদের মধ্যে:সোটয়, সোফেরত্ ও পরীদার বংশধরবর্গ, 58 যালা, দর্কোন ও গিদ্দেলের বংশধরবর্গ, 59 শফটিয়ের, হটীল ও পোখেরত্-হত্সবাযীম ও আমোন; 60 মন্দিরের দাস ও শলোমনের দাসদের উত্তরপুরুষ 392 61 কয়েক জন লোক তেল্মেলহ, তেল্হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের শহর থেকে জেরুশালেমে এসেছিল| তাদের পরিবারগুলি ইস্রায়েল থেকে উদ্ভ্ূত কিনা তা তারা প্রমাণ করতে পারেনি|দলায়, টোবিয় ও নকোদের উত্তরপুরুষ 642 জন 62 63 এরা ছিল যাজক পরিবারের উত্তরপুরুষ:হবায়, হক্কোস ও বর্সিল্লয়ে| গিলিয়দের বর্সিল্লয পরিবারের কন্যাকে যদি একজন পুরুষ বিয়ে করত ওই পুরুষকে বর্সিল্লযদের উত্তরপুরুষ হিসাবে গণ্য করা হতো| 64 য়েহেতু তারা তাদের বংশতালিকা বা তাদের পূর্বপুরুষরা যাজক ছিলেন কিনা তা প্রমাণ করতে পারল না, সেহেতু যাজকদের তালিকায তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হল না| 65 রাজ্যপাল ওই সমস্ত ব্যক্তিদের, পবিত্র খাবার খেতে বারণ করলেন যতক্ষণ পর্য়ন্ত না প্রধান যাজক ঊরীম ও তুম্মীম ব্যবহার করে ঈশ্বরের কাছে জেনে নেন কি করতে হবে| 66 7,337 জন দাসদাসীকে বাদ দিলে, যারা ফিরে এসেছিল তাদের মধ্যে সব মিলিযে ছিল 42,360 জন| এছাড়াও, এদের সঙ্গে ছিল 245 জন গায়ক-গাযিকা, 67 68 তাদের 736 টি ঘোড়া, 245 টি খচচর, 435 টি উট ও 6,720 টি গাধা ছিল| 69 70 বেশ কিছু পরিবার প্রধান কাজ চালিয়ে যাবার জন্য অর্থ দান করেন| রাজ্যপাল বয়ং কোষাগারে 19 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছিলেন| এছাড়াও তিনি 50টি পাত্র ও যাজকদের পোশাকের জন্য 530 পোশাক দান করেন| 71 বিভিন্ন পরিবারের প্রধানরা কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা এবং 1 1/3 টন পরিমাণ রূপো দান করেছিলেন| 72 সব মিলিয়ে অন্যান্য ব্যক্তিরা 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা, 1 1/3 টন রূপা এবং যাজকদের জন্য 67 টি বস্ত্রখণ্ড দিয়েছিলেন| 73 যাজকগণ, লেবীয়রা, দ্বাররক্ষীরা, গায়করা ও মন্দিরের সেবাদাসরা ও অন্যান্য সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা য়ে যার নিজের শহরে বাস করতে লাগল| ওই বছরের সপ্তম মাসের মধ্যেই দেখা গেল ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দারা তাদের নিজেদের বাসভূমিতে বসবাস শুরু করেছে|
1 শেষ পর্য়ন্ত বছরের সপ্তম মাসে ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা এক জায়গায় জড়ো হল| এরা সকলে একই উদ্দেশ্য নিয়ে একত্রে এসেছিল য়েন জলদ্বারের সামনে খোলা চত্বরে তারা ছিল একটি মানুষ| এরা সকলে মিলে শিক্ষক ইষ্রাকে মোশির বিধিপুস্তকটি আনতে অনুরোধ করল| উল্লেখ্য প্রভু ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের জন্য য়ে বিধিনির্দেশগুলি দেন তা এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ ছিল| 2 সকলের অনুরোধে ইষ্রা জনসমক্ষে বিধিপুস্তকটি বের করলেন| এটি ছিল সপ্তম মাসের প্রথম দিন; ঐ জনসমাগমে ছিল পুরুষ, মহিলা এবং ঈশ্বরের বিধি শোনা ও বোঝার মত বযস হয়েছে এমন ব্যক্তিরা| 3 ইষ্রা তখন জলদ্বারের সামনের খোলা চত্বরের দিকে মুখ করে জোর গলায ভোর থেকে শুরু করে দুপুর পর্য়ন্ত বিধিপুস্তকটি পাঠ করে শোনালেন| উপস্থিত সকলেই পূর্ণ মনোযোগ সহকারে তা শুনল| 4 ইষ্রা একটি উঁচু কাঠের মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে এগুলি পাঠ করছিলেন| পাটাতনটি এই উপলক্ষেই বিশেষভাবে বানানো হয়েছিল| ইষ্রার ডানদিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন মত্তিথিয়, শেমা, অনায়, ঊরিয়, হিল্কিয় ও মাসেয় এবং তাঁর বাঁদিকে ছিলেন পদায়, মীশায়েল, মল্কিয়, হশুম, হশবদ্দানা, সখরিয় ও মশুল্লম| 5 য়েহেতু ইষ্রা উঁচু পাটাতনের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন সকলেই তাঁকে দেখতে পাচ্ছিল| তিনি বিধিপুস্তকটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে সমবেত সকলে উঠে দাঁড়াল| 6 প্রথমে ইষ্রা প্রভু, মহান ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন| তখন উপস্থিত সবাই হাত তুলে বলল, “আমেন, আমেন|” তারপর মাথা নীচু করে হাঁটু মুড়ে বসে প্রভুর প্রশংসা করল| 7 ঐসব লেবীয়রা ছিলেন য়েশূয়, বানি, শেরেবিয়, যামীন, অক্কুব, শব্বথয়, হোদিয়, মাসেয়, কলীট, অসরীয, য়োষাবদ, হানন এবং পলায| তাঁরা বিধিপুস্তকটি থেকে পাঠ করলেন এবং সহজ ভাষায় সেটি লোকদের বুঝিয়ে দিলেন যাতে যা পড়া হল তারা তার অর্থ বুঝতে পারে| 8 9 এরপর শাসক নহিমিয়, যাজক ও শিক্ষক ইষ্রা এবং য়ে সব লেবীয়রা শিক্ষাদান করছিলেন তাঁরা সকলে বক্তব্য রাখলেন| তাঁরা বললেন, “আজকের দিনটি তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের পক্ষে একটি বিশেষ দিন|আজ য়েন কেউ মন খারাপ না করে বা চোখের জল না ফেলে|” তাঁদের একথা বলার কারণ হল য়ে: যখন তাঁরা ঈশ্বরের বিধিপুস্তকটি পড়ে শোনাচ্ছিলেন তখন অনেকেই কাঁদছিল| 10 নহিমিয় বললেন, “যাও তোমরা সকলে মশলাদার ভারী খাদ্য ও সুমিষ্ট পানীয়গুলি উপভোগ করো| আজকের দিনটি প্রভুর কাছে একটি বিশেষ দিন বলে যারা রান্না করেনি তাদেরও খাবার দিও| মন খারাপ করো না কারণ প্রভুর আনন্দ তোমাদের মনকে শক্তিশালী করবে|” 11 লেবীয়বর্গরা লোকদের শান্ত হতে সাহায্য করল| তারা বলল, “চুপ কর এবং শান্ত হও| আজ একটি বিশেষ দিন| মন খারাপ কর না|” 12 তখন উপস্থিত সবাই মিলে বিশেষ ভোজসভায় য়োগ দিয়ে খাবার ও পানীয় ভাগ করে খেল| প্রত্যেকেই খুব খুশী ছিল এবং সকলে মিলে এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করল| শেষ পর্য়ন্ত শিক্ষকরা তাদের সকলকে প্রভুর য়ে সমস্ত বিধিগুলি বোঝানোর চেষ্টা করছিল তা বুঝতে পারল| 13 তারপর ঐ একই মাসের দ্বিতীয় দিনে প্রত্যেকটি পরিবার প্রধান ইষ্রা, যাজকবর্গ ও লেবীয়দের সঙ্গে দেখা করতে গেল| সকলেই বিধিগুলি সম্পর্কে পড়াশোনা করার জন্য ইষ্রাকে ঘিরে ধরল| 14 বিধিগুলি পড়াশোনা করার পর তারা, মোশির মাধ্যমে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের, বছরের সপ্তম মাসে কুটির থেকে য়ে একটি উত্সব পালন করবার আজ্ঞা দিয়েছিলেন, তা জানতে পারল| জেরুশালেমে ফেরবার পথে, তারা বিভিন্ন শহরের মধ্যে দিয়ে য়েতে য়েতে, লোকদের বলবে: “পর্বত থেকে জলপাই, গুলমেঁদি ও খর্জুর এবং ছায়া শাখাগুলি কাট| বিধিটিতে য়েমন বলা আছে ঐ শাখাগুলি ব্যবহার করে পর্ব পালন করবার জন্য অস্থায়ী কুটির তৈরী কর|” বিধিতে য়েমন বলা আছে তেমন ভাবে কর| 15 16 একথা শোনার পর লোকরা গিয়ে এই সব গাছের শাখা সংগ্রহ করে নিজেরা নিজেদের জন্য অস্থায়ী কুটির বানালো| তারা তাদের বাড়ির ছাদে, উঠোনে, মন্দির প্রাঙ্গনে, জলদ্বারের কাছে ও ইফ্রয়িম-দ্বারের কাছে উন্মুক্ত স্থানে কুটিরগুলি বানালো| 17 বন্দীদশা থেকে ইস্রায়েলে ফিরে আসা সমস্ত ব্যক্তিরাই এই কুটিরগুলি বানিয়ে তাতে বাস করল| নূনের পুত্র যিহোশূয়ের সময় থেকে সেই দিন পর্য়ন্ত ইস্রায়েলীয়রা এরকম ভাবে ও এত আনন্দ করে কুটির পর্ব পালন করে নি! 18 পর্বের প্রত্যেকদিন, প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্য্য়ন্ত রোজ ইষ্রা এদের কাছে বিধিপুস্তক পাঠ করে শোনালেন| বিধি অনুসারে ইস্রায়েলের বাসিন্দারা সাতদিন ধরে পর্ব পালন করার পর, অষ্টম দিনের দিন একটি বিশেষ সভার জন্য মিলিত হল|
1 ঐ মাসেরই 24 দিনের মাথায় ইস্রায়েলীয়রা উপবাসের জন্য জড়ো হল| সে সময় সকলে দুঃখ প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরা ছাড়াও মাথায় ছাই লাগিয়েছিল| 2 ইস্রায়েলের আদি বাসিন্দারা বিদেশীদের থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছিল| তারা সকলে মন্দিরে দাঁড়িয়ে তাদের ও তাদের পূর্বপুরুষদের পাপ স্বীকার করল| 3 তারা সেখানে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে প্রভু, তাদের ঈশ্বরের বিধিপুস্তক পাঠ করল| তারপর আরো তিন ঘন্টা প্রভু তাদের ঈশ্বরকে প্রার্থনা করবার জন্য এবং পাপ স্বীকার করবার জন্য মাথা নীচু করে রইল| 4 তারপর এই সব লেবীয়রা সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে রইল: য়েশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, শবনিয়, বুন্নি, শেরেবিয়, বানি, কনানী| তারা উচ্চস্বরে তাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল| 5 এরপর য়েশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, বুন্নি, হশব্নির, শেরেবিয়, হোদিয়, শবনিয়, পথাহিয় প্রমুখ লেবীয়রা বলল, ‘উঠে দাঁড়াও এবং তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর!”ঈশ্বর সর্বদা ছিলেন! এবং তিনি চির দিন থাকবেনও! মানবজাতি তোমার মহান নামের প্রশংসা করুক! তোমার নাম সব কিছুর ঊর্দ্ধে উঠুক এবং বন্দিত হোক! 6 হে প্রভু, এক মাত্র তুমিই ঈশ্বর! তুমিই সেই জন, য়ে আকাশ তৈরী করেছে! তুমিই মহান স্বর্গ আর মর্ত্যে যা কিছু আছে সে সব, পৃথিবী আর অভ্য়ন্তরস্থ সব কিছু আর সমুদ্র মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছ| সবেতে তুমিই দিয়েছো জীবনের ছোঁয়া এবং সমস্ত স্বর্গীয় দেবদূতরা নত হয়ে তোমার উপাসনা করে! 7 হে প্রভু, তুমিই আমাদের ঈশ্বর| তুমিই সেই জন য়ে অব্রামকে মনোনীত করে বাবিলের ঊর থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে এবং তার নাম বদলে অব্রাহাম রেখেছিলে| 8 তুমিই তার আনুগত্য এবং সততা লক্ষ্য করেছ| তুমিই সেই জন য়ে তার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে এবং তাকে ও তার উত্তরপুরুষদের কনানীয, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, যিবূষীয় এবং গির্গাশীযদের জমিগুলি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে| তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রেখেছো কারণ তুমি ভাল| 9 তুমি মিশরে আমাদের পূর্বপুরুষদের দুর্গতি দেখেছিলে ও লোহিত সাগর থেকে তাদের এন্দন শুনেছিলে| 10 তুমি ফরৌণে তার আধিকারিকদের ও তার লোকদের কাছে নানা চিহ্ন ও অদ্ভুত কার্য়্য় দেখিয়েছিলে| তুমি জানতে য়ে, মিশরীযরা নিজেদের আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে শ্রেষ্ঠতর ভাবত| কিন্তু তুমি প্রমাণ করলে, তুমি কত মহান! আজ পর্য়ন্ত তারা তা স্মরণ করে| 11 তুমি তাদের চোখের সামনে লোহিত সাগরকে দ্বিখণ্ডিত করলে আর শুকনো জমির ওপর দিয়ে হেঁটে গেলে কিন্তু তুমি তাড়া করে আসা শএুদের সমুদ্র ফেলে দিলে| তারা পাথরের মতো সমুদ্রে ডুবে গেল| 12 একটি উঁচু মেঘ দিয়ে দিনের বেলা তুমি তাদের পথ দেখালে| রাতের বেলা, একটি আলোকস্তম্ভ দিয়ে তুমি তাদের পথ দেখালে| তুমি তাদের দেখালে কোথায য়েতে হবে| 13 এরপর সীনয় পর্বতে স্বর্গের চূড়া থেকে তুমি বয়ং কথা বলে তাদের দিলে প্রকৃত শিক্ষা, যা ভালো; তুমি তাদের বিধিসমূহ ও আজ্ঞা দিলে য়েগুলি ভালো| 14 তুমি তোমার দাস, মোশির মাধ্যমে তোমার পবিত্র বিশ্রামের দিনের কথা তাদের জানালে| তুমি তাদের আজ্ঞা, বিধিসমূহ এবং শিক্ষামালা দিলে| 15 ওরা সকলে ক্ষুধার্ত ছিল, তাই তুমি স্বর্গ থেকে সবাইকে খাবার দিলে| ওরা সকলে তৃষ্ণার্ত ছিল, তাই তুমি পাথর থেকে সবাইকে জল দিলে| তারপর তুমি ওদের য়েতে বললে ও প্রতিশ্রুত ভূমি দখল করতে বললে| তোমার ক্ষমতা দিয়ে তুমি সেই ভূখণ্ড অন্যদের কাছ থেকে নিয়েছিলে| 16 কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা গর্বোদ্ধত ও জেদী হল এবং তোমার আজ্ঞা লঙঘন করল| 17 তারা শুনতে অস্বীকার করল| তুমি য়ে আশ্চর্য়্য় জিনিষগুলি তাদের জন্য করেছিলে তা তারা ভুলে গেল| তাদের জেদের কারণে তারা আবার এীতদাস হয়ে মিশরে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিল| কিন্তু তুমি দয়ালু ঈশ্বর! ক্ষমা, করুণা, ধৈর্য়্য় ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ তোমার হৃদয়| তাই তুমি তাদের পরিত্যাগ করনি| 18 এমনকি যখন তারা সোনার বাছুরের মূর্ত্তি বানিয়ে বলেছে, ‘এই মূর্ত্তিগুলোই আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছে,’ তখনও তুমি তাদের বাতিল কর নি| 19 কিন্তু তোমার মহান করুণার জন্য তুমি ওদের মরুভূমিতে পরিত্যাগ করনি| তুমি দিনের বেলা উঁচু মেঘটিকে সরিয়ে নাওনি, রাতেও আগুনের স্তম্ভটি সরিয়ে নাওনি| তুমি তোমার পবিত্র আলো দিয়ে তাদের পথ আলোকিত করা এবং তাদের পথ দেখিয়ে চলা অব্যাহত রেখেছ| 20 তুমি তাদের বিচক্ষণ করে তোলার জন্য তোমারই ভাল আত্মা দিয়েছ| খাদ্য হিসেবে তুমি ওদের মান্না দিয়েছ এবং জল দিয়েছ তাদের তৃষ্ণা মেটাতে| 21 তুমি 40 বছর ধরে এদের প্রতিপালন করেছো| তুমি মরুভূমিতে যা কিছু প্রয়োজন ছিল তা দিয়েছো| ওদের পোশাকগুলি ছিঁড়ে যায়নি| ওদের পা ফুলে যায়নি| 22 হে প্রভু, তুমি ওদের রাজত্ব, জাতি এবং বহু দূরের জায়গাগুলি যেখানে অল্প কিছু লোক বাস করত, তা দিয়েছ| তুমি ওদের সীহোনের ভূখণ্ড, হিষ্বোণের রাজা, ওগের ভূখণ্ড এবং বাশনের রাজা দিয়েছিলে| 23 তুমি আকাশের নক্ষত্রের মতো ওদের উত্তরপুরুষদের সংখ্যায় বাড়িয়েছো| তুমি তাদের সেই ভুখণ্ডে বাস করতে নিয়ে গিয়েছ যা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুত ছিল| 24 তারা এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করল এবং কনানীয়দের পরাজিত করে সেটি অধিকার করল| তুমি তাদের দিয়ে ঐসব লোকদের পরাজিত করিযেছিলে| ঐসব জাতি, তাদের রাজা এবং ঐসব লোকের প্রতি তারা যা করতে চেযেছিল, তুমিই তাদের দিয়ে তাই করিয়েছিলে| 25 তারা শক্তিশালী নগরগুলি এবং উর্বর জমি দখল করল| তারা ভালো ভালো জিনিষে পরিপূর্ণ বাড়ীগুলি অধিকার করল| ইতিমধ্যেই য়ে সব কূপগুলি খনন হয়েছিল সেগুলি, দ্রাক্ষাক্ষেত, জলপাই গাছ এবং অনেক ফলের গাছসমূহ তারা পেয়েছিল| তারা খেল এবং তৃপ্ত হল| তুমি তাদের য়ে ভাল জিনিসগুলি দিয়েছিলে সেগুলি তারা উপভোগ করেছিল| 26 তারা তোমার বিরুদ্ধে গেল এবং তোমার শিক্ষামালা ছুঁড়ে ফেলে দিল| তারা তোমার ভাব্বাদীদেরও হত্যা করল, যারা তাদের সতর্ক করে তোমার কাছে ফেরাতে চেয়েছিল| কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে বীভত্স সব কাজ করলো| 27 তাই তুমি তাদের শএুদের হাতে ওদের পরাজিত হতে দিলে| শএুরা তাদের নানান সংকটের মধ্যে ফেললো| তাই বিপদের সময়ে তারা তোমার সাহায়্য়ের জন্য কেঁদে পড়ল| স্বর্গে বসে তুমি তাদের আর্ত চিত্কার শুনলে| তুমি করুণাময, তাই লোক পাঠালে তাদের পরিত্রাণের জন্য| তারা এসে শএুদের হাত থেকে ওদের উদ্ধার করলো| 28 কিন্তু য়ে মূহুর্তে আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের শএুদের হাত থেকে মুক্তি পেল, তারা পাপ কার্য়্য় শুরু করলো| তাই তুমি তাদের শএুদের পরাজিত করতে এবং তাদের ওপর নিষ্ঠুর ভাবে শাসন করতে দিলে| তারা তোমার সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করল| স্বর্গে তুমি তাদের কান্না শুনলে এবং তোমার করুণাবশতঃ আবার তাদের উদ্ধার করলে| এ ঘটনা বহুবার ঘটেছে| 29 তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে, যাতে তারা তোমার শিক্ষামালার শরণ নেয়, কিন্তু ওরা উদ্ধত ছিল এবং তোমার আজ্ঞাসমূহ মানতে অস্বীকার করেছিল| তারা তোমার বিধিসমূহ, য়ে সেগুলো পালন করে তাকে সত্য জীবন দেয়, তা ভেঙ্গেছিল| কিন্তু তারা তাদের জেদবশতঃ তোমার বিধিসমূহ ভেঙ্গেছিল| তারা তোমার দিকে পেছন ফিরে ছিল এবং শুনতে অস্বীকার করেছিল| 30 তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি বহু বছর ধরে খুব ধৈর্য়্য়শীল ছিলে, তোমার আত্মায় পূর্ণ তোমার ভাব্বাদীদের মাধ্যমে তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে| কিন্তু তারা শুনতে অস্বীকার করেছিল, তাই তুমি তাদের বিজাতীয়দের হাতে তুলে দিয়েছিলে| 31 কত দরদী এবং করুণাময় ঈশ্বর তুমি| তবুও তুমি তাদের ধ্বংস করোনি, ছেড়েও যাওনি| তুমি দয়াময়, করুণাধর ঈশ্বর! 32 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমি মহান! ভয়ঙ্কর এবং ক্ষমতাশালী ঈশ্বর! তুমি দয়ালু ও বিশ্বস্ত| তুমি সবসময় তোমার চুক্তি বজায় রাখো! আমাদের অনেক সমস্যা ছিল| সে সবই তোমার কাছে জরুরী! আমাদের লোকদের নানান সঙ্কটে পড়তে হয়েছিল| আমাদের যাজকগণ ও ভাব্বাদীগণ সংকটে ছিল| অশূরের রাজাদের রাজত্বের সময় থেকে আজ পর্য়ন্ত বহু ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেছে| 33 কিন্তু হে আমাদের প্রভু, আমাদের প্রতি যা কিছু ঘটছে তাতে তুমি ছিলে ন্যায়সঙ্গত| হ্যাঁ, আমরাই ভুল করেছি! 34 আমাদের রাজারা, নেতারা, যাজকরা ও পূর্বপুরুষরা তোমার আদেশগুলি মানেনি| তারা তোমার সাবধানবাণী অবজ্ঞা করে নির্দেশ অমান্য করেছে| 35 আমাদের পূর্বপুরুষরা, তুমি তাদের য়ে বিশাল উর্বর জমি দিয়েছিলে তা উপভোগ করেছিল| কিন্তু তারা তোমার সেবা করেনি বা তাদের পাপাচরণ থেকে সরে আসেনি| 36 এখন আমরা এই ভূখণ্ডে এীতদাস| য়ে ভূখণ্ড তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, যাতে তারা সেখানকার ফলমূল ও যা কিছু সুন্দর জিনিস ভোগ করতে পারে, সেখানেই আমরা ক্রীতদাস| 37 এই জমিতে বহু ফসল ফলত, কিন্তু সমস্ত ফসল যায় রাজার কাছে| এই জমির মহতী ফসল যায় রাজাদের কাছে যাদের তুমি আমাদের পাপাচরণের জন্য আমাদের ওপর শাসন করতে নিযুক্ত করেছ| ঐসব রাজারা আমাদের শাসন করে, আমাদের গবাদি পশু তারা নিয়ন্ত্রণ করে এবং তারা তাদের যা ইচ্ছে তাই করে| সত্যিই, আমাদের পক্ষে তা একটা দুর্ভোগ| 38 এসব কারণেই, আমাদের নেতারা, লেবীয়রা এবং যাজকগণ তোমার সঙ্গে চুক্তিটি করেছিল য়েটা বদলানো যায় না| আমরা যা প্রতিজ্ঞা করছি লিখে তাতে স্বাক্ষর করছে আমাদের নেতারা, লেবীয়রা ও যাজকরা আর সেই চুক্তিপত্র শীলমোহর করে রাখছি|
1 চুক্তিটি যারা শীলমোহর করেছিলেন তাঁরা হলেন: হখলিয়ের পুত্র রাজ্যপাল নহিমিয়, 2 আর যাজকদের মধ্যে সিদিকিয়, 3 সরায, অসরিয়, যিরমিয়, পশ্হূর, অমরিয়, মল্কিয়, 4 হটূশ, শবনিয়, মল্লূক, 5 হারীম, মরেমোত্, ওবদিয়, 6 দানিয়েল, গিন্নথোন, বারূক, 7 মশুল্লম, অবিয়, মিয়ামীন, 8 মাসিয়, বিল্গয় এবং শময়িয়| এঁরাই হলেন সেই যাজকগণ যাঁরা চুক্তিটি সই করেছিলেন| 9 নিম্নলিখিত লেবীয়রা চুক্তিটি শীলমোহর করেছিলেন: অসনিয়ের পুত্র য়েশূয়, হেনাদদ পরিবারের বিন্নুয়ী, কদ্মীয়েল 10 এবং তাঁর ভাইদের মধ্যে শবনিয়, হোদিয়, কলীট, পলায়, হানন, 11 মীখা, রহোব, হশবিয়, 12 সক্কূর, শেরেবিয়, শবনিয়, 13 হোদীয়, বানি এবং বনীনু| 14 নেতারা যাঁরা সই করেছিলেন তাঁরা হলেন: পরোশ, পহত্-মোয়াব, এলম, সত্তূ, বানি, 15 বুন্নি, অস্গদ, ব্বেয, 16 অদোনিয়, বিগ্বয়, আদীন, 17 আটের, হিষ্কিয়, অসূর, 18 হোদিয়, হশুম, বেত্সয়, 19 হারীফ, অনাথোত্, নবয়, 20 মগ্পীযশ, মশুল্লম, হেষীর, 21 মশেষবেল, সাদোক, য়দ্দুয, 22 পলটিয়, হানন, অনায়, 23 হোশেয়, হনানিয়, হশূব, 24 হলোহেশ, পিল্হ, শোবেক, 25 রহূম, হশব্না, মাসেয, 26 অহিয, হানন, অনান, 27 মল্লূক, হারীম ও বানা| 28 এছাড়াও অবশিষ্ট সমস্ত বাসিন্দা, যাজকগণ, লেবীয়বর্গ, দ্বাররক্ষীরা ও গায়করা সকলে, যারা অন্যান্য ভিন্দেশী জাতিদের থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছিল এবং তাদের স্ত্রী-ছেলেমেয়ে, যেখানে যত জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন লোক আছে তারা সকলে মিলে একসঙ্গে প্রতিশ্রুতি করল য়ে মোশির মাধ্যমে প্রভু, আমাদের ঈশ্বর তাদের জন্য য়ে বিধি পাঠিয়েছেন- সেই সমস্ত শিক্ষা ও নির্দেশ তারা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে এবং তারা ঈশ্বরের বিধিসমূহ পালন না করলে তারা সেই অভিশাপটি গ্রহণ করবে যার থেকে তাদের অমঙ্গল হবে| 29 30 “আমরা প্রতিশ্রুতি করছি, আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের আশেপাশের সমগোত্রীয়দের সঙ্গে বিয়ে হতে দেব না| 31 “আমরা প্রতিশ্রুতি করছি য়ে বিশ্রামের দিন আমরা কোন কাজ করব না| সেই বিশ্রামের দিনে যদি আমাদের আশেপাশের কেউ আমাদের কাছে কিছু বিক্রি করতে আসে, আমরা তাদের কাছ থেকে কোন জিনিস কিনবো না| এছাড়া প্রতি সপ্তম বছরে আমরা জমিতে কোন কাজ করব না, নিস্ফলা রাখব এবং আমাদের কাছে যার যা ধার্য় কর আছে তা আর আদায় করব না| 32 “এছাড়াও, আমরা মন্দিরের দেখাশোনা করব এবং আমাদের ঈশ্বরকে সম্মানিত করবার জন্য, মন্দিরের সেবা কাজে সাহায়্য়ের জন্য প্রতি বছর 1,3 শেকেল রৌপ্য আমরা দেব| 33 এই অর্থ মন্দিরে টেবিলের ওপর যাজকরা য়ে বিশেষ রুটি রাখেন তার জন্য, প্রতিদিনের শস্য নৈবেদ্য ও হোমবলির জন্য, বিশ্রামের দিনের নৈবেদ্যর জন্য, অমাবস্যার উত্সবগুলির জন্য, অন্যান্য বিশেষ সভাসমূহের জন্য, পবিত্র নৈবেদ্যগুলির জন্য, পাপস্খালনের নৈবেদ্যর জন্য যা ইস্রায়েলীয়দের শুদ্ধ করে এবং আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরের অন্য য়ে কোন খরচের জন্য ব্যবহৃত হবে| 34 বিধিপুস্তকের লেখা অনুসারে আমরা যাজকগণ, লেবীয়রা এবং লোকরা ঘুঁটি চেলে ঠিক করেছি বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোন পরিবার আমাদের প্রভু ঈশ্বরের মন্দিরের বেদীর ওপর পোড়ানোর জন্য জ্বালানী কাঠ দান করবে| 35 “এছাড়াও আমরা প্রতি বছর প্রতিটি ক্ষেত থেকে নবান্নের প্রথম ফসল ও গাছের প্রথম ফলটি প্রভুর মন্দিরে আনার দায়িত্ব গ্রহণ করলাম| 36 “বিধিতে য়েমন লেখা আছে, আমরা আমাদের প্রথম জাত পুত্র, আমাদের প্রথম জাত গরু-মেষ এবং ছাগলগুলি ঈশ্বরের মন্দিরে আনব এবং সেখানে সেবায নিযুক্ত যাজকদের সেগুলি দেব| 37 “আমরা এই জিনিষগুলিও প্রভুর মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরে আনব এবং সেগুলি যাজকদের দেব: আমাদের প্রথম ময়দার তাল, আমাদের প্রথম শস্য নৈবেদ্য, আমাদের প্রথম গাছগুলি, নতুন দ্রাক্ষারস এবং তেল| এবং আমরা যেখানে কাজ করি সেই শহরে লেবীয়রা যখন সংগ্রহ করতে আসে তখন আমরা তাদের জন্য আমাদের ফসলের এক দশমাংশ নিয়ে আসব| 38 যখন তারা এই ফসল গ্রহণ করবে তখন হারোণ পরিবারের একজন যাজক লেবীয়দের সঙ্গে থাকবে| লেবীয়রা এইসমস্ত ফসল আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরে এনে মন্দিরের গোলাঘরের মধ্যে রেখে দেবে| 39 তারা তাদের শস্য, দ্রাক্ষারস, তেল প্রভৃতি উপহার সামগ্রী মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরে যেখানে যাজকরা কাজের জন্য থাকেন সেখানে অবশ্যই আনবে| এছাড়াও গায়কবর্গ ও দ্বাররক্ষীরা সেখানে থাকবে|“আমরা সকলে প্রতিজ্ঞা করলাম আমাদের ঈশ্বরের মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ করব!”
1 অতঃপর ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের নেতারা জেরুশালেম শহরে চলে এলেন| ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের এবার ভাবতে হবে আর কারা কারা এ শহরে থাকবে| তাই তারা ঘুঁটি চেলে ঠিক করল প্রতি দশজনে একজন করে ব্যক্তিকে এই পবিত্র শহরে থাকতেই হবে| অপর ন’জন ইচ্ছে করলে তাদের নিজেদের শহরে থাকতে পারে| 2 কিছু ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসে জেরুশালেমে থাকতে রাজী হল| অন্য লোকরা তাদের ধন্যবাদ জানালো এবং আশীর্বাদ করল| 3 প্রাদেশিক শাসনকর্তারা জেরুশালেমে থাকলেন| (ইস্রায়েলের কিছু লোক, যাজকগণ, লেবীয়রা ও শলোমনের ভৃত্যদের বংশধররা যিহূদাতে থাকলেন| এরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন শহরে নিজস্ব জমিতে বাস করতে লাগলেন| 4 যিহূদার অন্যান্য ব্যক্তিরা ও বিন্যামীনের পরিবারের লোকজনরা জেরুশালেম শহরেই বসতি স্থাপন করল|)যিহূদার উত্তরপুরুষদের মধ্যে যাঁরা জেরুশালেমে এলেন তাঁরা হলেন: উষিযের পুত্র অথায় (উষিয় ছিলেন সখরিয়র পুত্র; সখরিয় ছিলেন অমরিযের পুত্র; অমরিয় ছিলেন শফটিয়ের পুত্র; শফটিয় ছিলেন মহললেলের পুত্র; মহললেল ছিলেন পেরসের উত্তরপুরুষ|) 5 এবং বারূকের পুত্র মাসেয়| (বারূক ছিলেন কল্হোষির পুত্র; কল্হোষি ছিলেন হসায়ের পুত্র; হসায় ছিলেন অদায়ার পুত্র; অদাযা ছিলেন য়োযারীবের পুত্র; য়োয়ারীব ছিলেন সখরিয়ের পুত্র; সখরিয় ছিলেন শেলার উত্তরপুরুষ|) 6 সব মিলিয়ে জেরুশালেমে পেরস বংশের 468 জন সাহসী উত্তরপুরুষ বাস করতেন| 7 বিন্যামীনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে য়াঁরা জেরুশা-লেমে এলেন তাঁরা হলেন: মশুল্লমের পুত্র সল্লূ| (মশুল্লম ছিলেন য়োযেদের পুত্র; য়োযেদ ছিলেন পদাযের পুত্র; পদায ছিলেন কোলায়ার পুত্র; কোলায়া ছিলেন মাসেয়ের পুত্র; মাসেয় ছিলেন ঈথীয়েলের পুত্র; ঈথীয়েল ছিলেন য়িশাযাহের পুত্র|) 8 এবং য়িশাযাহকে যারা অনুসরণ করেছিলেন তাঁরা হলেন গব্বয এবং সল্লয| সব মিলিযে সেখানে 928 জন পুরুষ ছিল| 9 এরা শিখ্রির পুত্র য়োয়েলের তত্ত্বাবধানে ছিলেন| আর হস্সনূযার পুত্র যিহূদা, জেরুশালেমের দ্বিতীয় জেলার দায়িত্বে ছিলেন| 10 যাজকদের মধ্যে জেরুশালেমে গেলেন: য়োযারীবের পুত্র য়িদযিয, যাখীন, 11 হিল্কিয়ের পুত্র সরায়| হিল্কিয় ছিলেন মশুল্লমের পুত্র ও সাদোকের পৌত্র, সাদোক আবার ঈশ্বরের মন্দিরের তত্ত্বাবধায়কের পুত্র অহীটুবের সন্তান মরাযোতের নিজের পুত্র| 12 এবং তাদের ভাইদের 822 জন যারা মন্দিরের জন্য কাজ করেছিল, ভাইরা ও য়িরোহমের পুত্র অদায়া| (য়িরোহম ছিলেন পললিযের পুত্র; পললিয ছিলেন অম্সির পুত্র; অম্সি ছিলেন সখরিয়ের পুত্র| সখরিয় ছিলেন পশ্হূরের পুত্র; পশ্হূর ছিলেন মল্কিয়ের পুত্র|) 13 এবং 242 জন পুরুষ যারা মল্কিযের ভাইরা| (এই পুরুষেরা ছিলেন তাঁদের পরিবারের নেতৃগণ| এঁরা ছিলেন: অসরেলের পুত্র অমশয; অসরেল ছিলেন অহসযের পুত্র; অহসয ছিলেন মশিল্লেমোতের পুত্র; মশিল্লেমোত্ ছিলেন ইম্মেরের পুত্র|) 14 এঁদের সঙ্গে গেলেন ইম্মেরের আরো 128 জন ভাই| (যারা সকলেই একেক জন সাহসী সৈনিক| এই দলটির পরিচালনার কর্তৃত্ব ছিল হগ্গদোলীমের পুত্র সব্দীযেল|) 15 লেবীয়দের মধ্যে য়াঁরা জেরুশালেমে গেলেন তাঁরা হলেন: হশূবের পুত্র শিময়িয়| (হশূব ছিলেন অস্রীকামের পুত্র; অস্রীকাম ছিলেন হশবিযর পুত্র; হশবিয ছিলেন বুন্নির পুত্র| 16 লেবীয়দের দুই নেতা শব্বথয় ও য়োষাবাদ; বর্হিবিভাগের উঠোনের কাজের জন্য ভারপ্রাপ্ত ছিলেন; 17 মীখার পুত্র মত্তনিয়, (মীখা ছিলেন সব্দির পুত্র, সব্দি ছিলেন প্রশস্তি ও প্রার্থনা সঙ্গীত দলের পরিচালক আসফের পুত্র|) এবং বক্বুকিয য়ে ছিল তার ভাইদের ভারপ্রাপ্তদের মধ্যে দ্বিতীয় এবং শম্মুয়ের পুত্র অব্দ; শম্মুয ছিলেন গাললের পুত্র| গালল ছিলেন যিদূথূনের পুত্র| 18 সব মিলিয়ে মোট 284 জন লেবীয় পবিত্র শহর জেরুশালেমে গেলেন| 19 দ্বাররক্ষীদের মধ্যে অক্কুব, টল্মোন ও তাদের 172 জন ভাই জেরুশালেমে যান| এঁরা শহরের দরজাগুলির দিকে খেযাল রাখতেন ও পাহারা দিতেন| 20 ইস্রায়েলের অন্য বাসিন্দারা, যাজক ও লেবীয়রা যিহূদাতে, তাঁদের পূর্বপুরুষদের জমিতেই বাস করতেন| 21 সীহ এবং গীষ্প ছিল মন্দিরের দাসদের নেতা যারা ওফল পাহাড়ের ওপর থাকত| 22 আর উষি ছিলেন জেরুশালেমের লেবীয়দের আধিকারিক| (উষি ছিলেন বানির পুত্র| বানি ছিলেন হশবিয়ের পুত্র; হশবিয ছিলেন মত্তনীযর পুত্র; মত্তনীয ছিলেন মীখার পুত্র|) উষি ছিলেন আসফের একজন উত্তরপুরুষ| আসফের উত্তরপুরুষরা ছিলেন ঈশ্বরের মন্দিরের সেবাযেত্ গায়কবর্গ| 23 রাজা দায়ূদ গায়কদের কাজকর্মের আদেশ ও নির্দেশ দিয়েছিলেন| 24 মশেষবেলের পুত্র পথাহিয লোকদের কাছে রাজার কাছ থেকে খবর নিয়ে আসত| (পথাহিয ছিল সেরহের একজন উত্তরপুরুষ| সেরহ ছিল যিহূদার পুত্র|) 25 যিহূদার লোকরা কিরিযত্-অর্ব্ব এবং তার চারপাশের ছোট শহরগুলিতে, দীবোন এবং তার চারপাশের য়েশূয, মোলাদাত, বৈত্পেলটে, হত্সর-শুযালে, বের্-শেবা এবং সিক্লগের ছোট শহরগুলিতে, য়িকব্সেল ও তার চারপাশের ছোট শহরগুলিতে, এবং মকোনা এবং ঐন্-রিম্মোণে, সরায, য়ম্মু এবং সানোহ, অদুল্লম, লাখীশ, অসেকা এবং তার চারপাশের সমস্ত ছোট শহরগুলিতে থাকত| সুতরাং যিহূদার লোকরা বের্-শেবা থেকে হিন্নোম উপত্যকা পর্য়্য়ন্ত সমস্ত পথ জুড়ে বাস করত| 26 27 28 29 30 31 গেবা থেকে বিন্যামীন পরিবারের উত্তরপুরুষরা মিক্মস, অয়াত, বৈথেল এবং তার চারপাশের ছোট শহরগুলিতে থাকতেন| 32 অনাথোত, নোবে, অননিয়া, 33 হাত্সার, রামা, গিত্তয়িম, 34 হাদীদ, সবোয়িম, নবল্লাট, 35 লোদ, ওনো এবং কারিগরদের উপত্যকায় বাস করত| 36 যিহূদায় বসবাসকারী লেবীয় পরিবারের কিছু গোষ্ঠী বিন্যামীনের জমিতে উঠে এসেছিল|
1 সরায়, যিরমিয়, ইষ্রা, অমরিয়, মল্লুক, হটুশ, শখনিয়, রহূম, মরেমোত্, ইদ্দো, গিন্নথোয়, অরিয়, মিযামীন, মোয়াদিয, বিল্গা, শময়িয়, য়োয়ারীব, য়িদযিয, সল্লূ, আমোক, হিল্কিয়, য়িদযিয প্রমুখ যাজকেরা শল্টীয়েল ও য়েশূয়ের পুত্র সরুব্বাবিলের সঙ্গে যিহূদায় ফিরে এসেছিলেন| এঁরা সকলেই য়েশূয়র সময় যাজকদের নেতা ছিলেন বা নেতাদের আত্মীয় ছিলেন| 2 3 4 5 6 7 8 লেবীয়রা হলেন: য়েশূয়, বিন্নূয়ী, কদ্মীয়েল, শেরেবিয়, যিহূদা ও মত্তনিয়| এই পুরুষেরা এবং মত্তনিয়র আত্মীয়রা ঈশ্বরের প্রশংসা গীতের ভারপ্রাপ্ত ছিলেন| 9 লেবীয়দের দুই আত্মীয় বক্বুকিয় ও উন্নো কর্তব্যে থাকার সময় একে অপরের বিপরীত মুখে দাঁড়াতেন| 10 য়েশূয় ছিলেন য়োয়াকীমের পিতা, য়োয়াকীম ইলিয়াশীবের, ইলিয়াশীব য়োযাদার, 11 য়োয়াদা য়োনাথনের ও য়োনাথন য়দ্দূযের পিতা ছিলেন| 12 য়োয়াকীমের সময় যাজক পরিবারের নেতা ছিলেন নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা:সরায় পরিবারের নেতা ছিলেন মরায়| য়িরমিয় পরিবারের নেতা ছিলেন হনানিয়| 13 ইষ্রা পরিবারের প্রধান ছিলেন মশুল্লম, অমরিয় পরিবারের নেতা ছিলেন যিহোহানন| 14 মল্লূকীর পরিবারে নেতা ছিলেন য়োনাথন| শবনিয়ের পরিবারে নেতা ছিলেন য়োষেফ| 15 হারীমের পরিবারের নেতা ছিলেন অদ্ন| মরায়োতের পরিবারের নেতা ছিলেন হিল্কয়| 16 ইদ্দোর পরিবারের নেতা ছিলেন সখরিয়| গিন্নথোনের পরিবারের নেতা ছিলেন মশুল্লম| 17 অবিয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন সিখ্রি| মিনিয়ামীনের ও মোয়দিয়ের পরিবারগুলির নেতা ছিলেন পিলটয়| 18 বিল্গার পরিবারের নেতা ছিলেন সম্মুয়| শময়িয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন যিহোনাথন| 19 য়োয়ারীবের পরিবারের নেতা ছিলেন মত্তনয়| যিদয়িয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন উষি| 20 সল্লয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন কল্লয়| আমোকোর পরিবারের নেতা ছিলেন এবর| 21 হিল্কিয়ের পরিবারের নেতা ছিলেন হশবিয়| নথনেল ছিলেন যিদয়িয় পরিবারের নেতা| 22 ইলিয়াশীব, ষোযাদার, য়োহানন ও য়দ্দূযের সময়ের লেবীয় ও যাজকদের পরিবারের নেতাদের নাম পারস্যরাজ দারিয়াবসের রাজত্বকালে নথিভুক্ত করা হয়েছিল| 23 ইলিয়াশীবের পুত্র য়োহাননের সময় পর্য়ন্ত লেবীয় উত্তরপুরুষদের পরিবার প্রধানের নাম ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে| 24 এরা হলেন হশবিয়, শেরেবিয়, কদ্মীয়েলের পুত্র য়েশূয় এবং তার ভাইরা| এরা সকলে প্রশংসাগীত গাইত এবং ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিত| এক দল অন্য দলের বিপরীত মুখে দাঁড়াত এবং অন্য দলের প্রশ্নের উত্তর দিত রাজা দায়ূদ দ্বারা য়েভাবে ওটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই অনুযায়ী| 25 মত্তনিয়, বক্বুকিয়, ওবদিয়, মশুল্লম, টল্মোন ও অক্কুব দরজার পাশের ভাঁড়ার ঘরগুলি পাহারা দিত| 26 য়েশূয়র পুত্র ও য়োসাদকের পৌত্র য়োয়াকীমের সময় এই সমস্ত দ্বাররক্ষীরা কাজ করেছে| নহিমিয়ের শাসনকালে এবং যাজক শিক্ষক ইষ্রার সময়ে এরা কাজে বহাল ছিল| 27 অতঃপর লোকরা জেরুশালেমের দেওয়ালটি উত্সর্গ করল| লেবীয়রা যেখানে থাকতেন সেখান থেকে দেওয়াল উত্সর্গ অনুষ্ঠানে য়োগ দিতে জেরুশালেমে এলেন| তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসাগান করতে ও তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে এসেছিলেন| তাঁরা এসে খোল, করতাল এবং বীণা প্রভৃতি বাদ্যয়ন্ত্র বাজালেন| 28 গায়করাও সকলে জেরুশালেমের আশেপাশের শহরগুলি থেকে উত্সবে য়োগ দিতে এসেছিলেন| তাঁরা নিজেদের বসবাসের জন্য জেরুশালেমের আশেপাশে ছোট শহর বানিয়ে ছিলেন| তাঁরা নটোফাত, বৈত্-গিল্গল, গেবা এবং অস্মাবত্ থেকে এসেছিলেন| 29 30 যাজকগণ ও লেবীয়রা প্রথমে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজেদের শুদ্ধ করলেন, তারপর লোকরা, ফটকসমূহ ও জেরুশালেমের প্রাচীরটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুদ্ধ করলেন| 31 আমি যিহূদার নেতাদের দেওয়ালের ওপরে উঠে দাঁড়াতে বললাম| এছাড়াও, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জন্য বড় দু’টি গানের দলকে বেছে নিলাম| একটি দল ছিল দেওয়ালের ওপরে ডানদিকে ছাইগাদার ফটকের দিকে| 32 হোশযিয ও যিহূদার অর্ধেক নেতারা সেই গায়কদের অনুসরণ করলেন| 33 এছাড়াও তাঁদের সঙ্গে গেলেন অসরিয়, ইষ্রা, মশুল্লম, 34 যিহূদা, বিন্যামীন, শময়িয় ও যিরমিয়| 35 শিঙা নিয়ে কয়েক জন যাজকও তাদের সঙ্গে গেলেন| আর গেলেন সখরিয়| (সখরিয় ছিলেন য়োনাথনের পুত্র| এই য়োনাথন আবার শময়িয়র পুত্র, য়ে কিনা মত্তনিয়ের পুত্র| আর মত্তনিয হলেন, মীখার পুত্র, সক্কুরের পৌত্র ও আসফের পৌত্র|) 36 এদের মধ্যে ছিলেন আসফের ভাই শময়িয়, অসরেল, মিললয, গিললয, মাযয, নথনেল, যিহূদা এবং হনানি| তাঁদের সঙ্গে ছিল ঈশ্বরের দূত দায়ূদ নির্মিত সব বাদ্যয়ন্ত্র| শিক্ষক ইষ্রা দেওয়াল উত্সর্গীকরণ উত্সবে য়াঁরা জড়ো হয়েছিলেন তাঁদের নেতৃত্ব দিলেন| 37 তাঁরা যখন ঝর্ণা ফটকের কাছে এলেন, তাঁরা সোজা হাঁটলেন এবং দায়ূদ নগরী পর্য়ন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে গেলেন এবং তারপর তাঁরা জলদ্বারের দিকে গেলেন| 38 এদিকে গায়কদের অন্য দলটি বাঁদিকে রওনা হল| আমি ও বাকি অর্ধেক লোক তাদের পেছন পেছন গিয়ে দেওয়ালের চূড়োয পৌঁছলাম| তারা তুন্দুরের দুর্গ ছাড়িযে চওড়া দেওয়ালের দিকে গেল| 39 তারপর তারা এই ফটকগুলি দিয়ে গেল: ইফ্রয়িমের দ্বার, পুরানো দ্বার, মত্স্যদ্বার, হননেলের দুর্গ ও হম্মেযার একশতর দুর্গ| তারপর তারা মেষ দ্বারের কাছে পৌঁছোল| তারা রক্ষীদের দ্বারের কাছে গিয়ে থামল| 40 তারপর এই দুই গায়কের দল ঈশ্বরের মন্দিরে তাদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালো, আমিও নিজের জায়গায় এসে দাঁড়ালাম| তারপর আধিকারিকদের অর্ধেক তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে দাঁড়াল| 41 ইলীয়াকীম, মাসেয়, মিনিয়ামীন, মীখায়, ইলিযৈনয়, সখরিয় এবং হনানিয় ছিলেন যাজকদের নেতা এবং তাঁরা তাঁদের শিঙা নিয়ে য়ে যার জায়গায উঠে দাঁড়ালেন| 42 এরপর এই সব যাজকগণও তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ালেন: মাসেয়, শময়িয়, ইলিয়াসর, উষি, যিহোনাথন, মল্কিয, এলম ও এষর|অতঃপর য়িষ্রহিযর পরিচালনায় এর দুটি দল গান শুরু করল| 43 ওই বিশেষ দিনটিকে উপলক্ষ করে যাজকরা বহু বলি উত্সর্গ করলেন| সকলেই খুশী ছিল কারণ ঈশ্বর সকলকে খুব খুশী করেছিলেন| এমন কি মেয়েদের ও তাদের বাচচাদেরও খুবই উত্তেজিত ও আনন্দিত দেখাচ্ছিল| বহু দূরের লোকরাও জেরুশালেম থেকে ভেসে আসা আনন্দের স্বর শুনতে পাচ্ছিল| 44 ভাঁড়ার ঘরের তত্ত্বাবধানের জন্য লোক ঠিক করার পর প্রতিশ্রুতি মতো লোকরা গাছের প্রথম ফল ও উত্পন্ন শস্যের দশ ভাগের এক ভাগ জমা করল| তত্ত্বাবধায়ক সেসব ফল ও ফসল ভাঁড়ারে তুলে রাখল| ইহুদীরা সকলেই দায়িত্বাধীন যাজক ও লেবীয়দের কাজে খুবই সন্তুষ্ট হয়েছিল| তাই তারা মুক্তহস্তে ভাঁড়ারের জন্য উপহার বয়ে আনছিল| 45 যাজকগণ ও লেবীয়রা তাঁদের ঈশ্বরের সেবা করছিলেন| তাঁরা লোকদের শুচি করার জন্য অনুষ্ঠান সম্পাদন করলেন| গায়ক ও দ্বাররক্ষীরাও দায়ূদ ও শলোমনের নির্দেশ পালন করেছিল| 46 (বহুকাল আগে, দায়ূদ এবং সঙ্গীত দলের পরিচালক আসফের সময় ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে অনেক প্রশস্তি এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপনের গান রচনা করেছিলেন|) 47 সরুব্বাবিল ও নহিমিয়ের রাজত্বের সময়ে, ইস্রায়েলের লোকরা দ্বাররক্ষী ও গায়কদের দৈনিক ব্যযের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন| ইস্রায়েলীয়রা লেবীয়দের জন্য অর্থ সরিয়ে রাখতেন| লেবীয়রা হরোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের জন্য সেই অর্থ রেখে দিয়েছিল|
1 সেদিন সবাই যাতে শুনতে পায়, সে ভাবে মোশির বিধি পুস্তকটি উচ্চস্বরে পাঠ করা হয়েছিল| প্রত্যেকে জানতে পারল য়ে, পুস্তকে অম্মোনীয় ও মোয়াবীয় ব্যক্তিদের ঈশ্বরের লোকদের মণ্ডলীতে য়োগ দেবার অনুমতি ছিল না| 2 এই নিষেধাজ্ঞার কারণ এই সমস্ত লোকরা ইস্রায়েলের লোকদের প্রয়োজনে খাদ্য বা জল তো দেয়ই নি, উপরন্তু ইস্রায়েলীয়দের অভিশাপ দেবার জন্য তারা বিলিয়মকে টাকা দিয়েছিল| কিন্তু আমাদের ঈশ্বর সেই অভিশাপকে আশীর্বাদে পরিণত করলেন| 3 ইস্রায়েলীয়রা যখন বিধি সম্বন্ধে জানতে পারল, তারা সমস্ত বিদেশীদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নিল| 4 কিন্তু এ ঘটনা ঘটার আগে ইলিয়াশীব মন্দিরের একটি ঘর টোবিয়কে দিয়েছিলেন| ইলিয়াশীব ছিলেন মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলির ভারপ্রাপ্ত যাজক আর টোবিয ছিলেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু| য়ে ঘরটি তিনি দিয়েছিলেন সেই ঘরটিতে দান হিসেবে পাওয়া শস্য, ধুপকাঠি সুগন্ধী বস্তু ও ঈশ্বরের মন্দিরের বাসন-কোসন ছাড়াও দ্রাক্ষারস, লেবীয় গায়কদের ও দ্বাররক্ষীদের ব্যবহারের তেল ও যাজকদের পাওয়া উপহার সামগ্রীগুলি থাকত| কিন্তু তা সত্ত্বেও ইলিয়াশীব ওই ঘরটি তাঁর বন্ধুকে দিয়েছিলেন| 5 6 এ ঘটনা যখন ঘটে, আমি তখন জেরুশালেমে ছিলাম না| সে সময় অর্থাত্ রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বের 32 বছরের মাথায়, আমি আবার বাবিলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই ও তাঁর সম্মতি নিয়ে আবার জেরুশালেমে ফিরে আসি| 7 ফিরে আসার পর আমি ইলিয়াশীবের এই দুঃখজনক কাজের কথা জানতে পেরে খুবই রেগে যাই| 8 ইলিয়াশীবের মতো একজন ব্যক্তি কিনা বয়ং ঈশ্বরের মন্দিরের একটি ঘর টোবিয়কে দিয়ে দিয়েছে! 9 আমি ঐ ঘরগুলিকে পরিষ্কার ও শুচি করার আদেশ দিই| তারপর আমি মন্দিরের থালাগুলি, শস্য নৈবেদ্য এবং ধুপধূনো ঐ ঘরগুলোতে রেখে দিই| 10 আমি একবার জানতে পারি, য়ে লোকেরা তাদের প্রতিশ্রুতি মতো লেবীয় ও গায়কদের শস্য ও খরচাপাতি না দেওয়ায তারা নিজেদের ক্ষেতে কাজ করতে য়েতে বাধ্য হয়েছে| 11 আমি দায়িত্বাধীন ব্যক্তিদের ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, “তোমরা কেন ঈশ্বরের মন্দিরের ঠিকমতো দেখাশোনা করো নি?” এরপর আমি সব লেবীয়দের একত্র করলাম এবং তাদের নিজেদের জায়গায় ও মন্দিরের কাজে ফিরে য়েতে আদেশ দিলাম| 12 তখন যিহূদার সকলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীনিজেদের শস্য, দ্রাক্ষারস ও তেলের এক দশমাংশ মন্দিরে নিয়ে এলো এবং সেগুলি ভাঁড়ার ঘরে জড়ো করল| 13 আমি শেলিমিয় নামে এক যাজককে, সাদোক নামে এক জন শিক্ষককে ও পদায় নামে এক লেবীয়কে ভাঁড়ার ঘরের দায়িত্ব দিলাম| মত্তনযের পৌত্র ও সক্কুরের পুত্র হাননকে তাদের সহকারী হিসেবে নিযুক্ত করলাম| আমি জানতাম, আমি এদের ওপর ভরসা করতে পারি| এদের কাজ ছিল ভাঁড়ার ঘরের জিনিসপত্র তাদের আত্মীয়দের মধ্যে বিলিবণ্ট্ন করা| 14 হে ঈশ্বর, এই সমস্ত কাজের জন্য তুমি আমাকে মনে রেখো| আমার ঈশ্বরের মন্দির ও তাঁর কাজ পরিচালনার জন্য আমি ভক্তিভরে যা করেছি তা য়েন তুমি ভুলে য়েও না| 15 সেই সময়, আমি দেখলাম য়ে, বিশ্রামের দিনও যিহূদায় লোকে দ্রাক্ষারস বানানোর জন্য দ্রাক্ষা নিংড়ানোর কাজ করছে| আমি দেখলাম য়ে লোকে শস্য বয়ে এনে গাধার পিঠে তা বোঝাই করছে, তারা দ্রাক্ষা এবং অন্যান্য জিনিষপত্রও বিশ্রামের দিনে জেরুশালেমে নিয়ে আসছে| আমি তখন এই সব লোকদের সতর্ক করে দিয়ে বলি য়ে বিশ্রামের দিন কোন রকম খাবারদাবার বিক্রি করা তাদের উচিত্ নয়| 16 জেরুশালেমে, সোর শহরের কিছু লোক বাস করতো| তারা মাছ ও অন্যান্য অনেক জিনিসপত্র বিশ্রামের দিন জেরুশালেমে নিয়ে এসে বিক্রি করত, আর ইহুদীরাও সেই সব জিনিসপত্র কিনত| 17 আমি যিহূদার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে ডেকে বললাম, তারা ঠিক মতো কাজ করছে না| “তোমরা অত্যন্ত খারাপ কাজ করছো| বিশ্রামের দিনটিকেও তোমরা অন্যান্য য়ে কোন সাধারণ দিনের পর্য়াযে নিয়ে যাচ্ছো| 18 তোমরা অবগত আছো য়ে, আমাদের পূর্বপুরুষরাও ঠিক একই ভুল করেছিল, এবং তার জন্য ঈশ্বর আমাদের ও এই শহরকে দুর্য়োগ ও বিপত্তির মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন| এখন, তোমরা বিশ্রামের দিনটাকে সাধারণ দিনের মতো ব্যবহার করে ইস্রায়েলের ওপর আরও ক্রোধ নিয়ে আসছ|” 19 আমি তখন দ্বাররক্ষীদের প্রতি শুক্রবার, ঠিক অন্ধকার নামার আগে জেরুশালেমের দরজাগুলি বন্ধ করে তালা দেবার নির্দেশ দিয়ে বলি শনিবারের পবিত্র দিনটি না কাটা পর্য়ন্ত য়েন দরজা কোনো মতেই খোলা না হয়| আমি আমার নিজের বিশ্বস্ত লোককে ফটকের কাছে রেখে দিলাম ও তাদের ফটকগুলোর ওপর লক্ষ্য রাখতে নির্দেশ দিই যাতে বিশ্রামের দিন জেরুশালেমে কোন বোঝা না বহন করে আনা হয়| 20 একবার কি দুবার বনিকরা জেরুশালেমের ফটকের বাইরে রাত্রিবাস করেছিল| 21 আমি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলাম য়ে, তারা যদি জেরুশালেমের দেওয়ালের বাইরে রাত্রিবাস করে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে| তারপর থেকে তারা আর কখনও বিশ্রামের দিনে তাদের জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসেনি| 22 এরপর আমি লেবীয়দের নিজেদের শুচি হতে আদেশ দিলাম| তারপর, তাদের ফটকগুলিতে মোতায়েন করা হল, যাতে কেউ বিশ্রামের দিনের পবিত্রতা নষ্ট না করতে পারে|হে ঈশ্বর, দয়া করে এসব কাজগুলি স্মরণে রেখো এবং আমার প্রতি তোমার মহতী করুণা দেখিও| 23 সে সময়ে আমি লক্ষ্য করি, কিছু যিহূদা ব্যক্তি অস্দোদ, অম্মোন ও মোয়াবের মেয়েদের বিয়ে করেছে| 24 এই সব বিবাহগুলির দরুণ, ছেলেমেয়েদের অর্ধেক ইহুদীদের ভাষায় কথা বলতে পারে না| এই সব শিশুরা অস্দোদ, অম্মোন ও মোয়াবের ভাষায় কথা বলতো| 25 আমি এই সব লোকদের তিরস্কার করে বললাম, তারা ভুল করেছে| আমি তাদের কয়েক জনকে আঘাত করে তাদের চুলের মুঠি ধরলাম| আমি তাদের ঈশ্বরের সামনে প্রতিজ্ঞা করতে বাধ্য করলাম| আমি তাদের বললাম, “তোমরা এই সব বিদেশী লোকদের মেয়েদের বিয়েক্টকরবে না| আর তোমাদের ছেলেদেরও এই সব বিদেশীদের মেয়েকে বিয়ে করতে দেবে না| 26 তোমরা তো জানো, এই ধরণের বিয়ের জন্য শলোমনের কি শাস্তি হয়েছিল| আর কোন দেশে শলোমনের মতো মহান রাজা ছিল না| ঈশ্বর শলোমনকে ভালোবাসতেন| তিনি তাঁকে সমগ্র ইস্রায়েলের রাজা করেছিলেন| কিন্তু তার বিদেশী স্ত্রীদের প্রভাবের জন্য শলোমনও পাপাচরণ করেছিল| 27 আর এখন আমরা দেখছি, তোমরাও এই ভয়ানক পাপাচরণ করছো| তোমরা ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছো না| তোমরা বিদেশী নারীদের ব্বিাহ করছো|” 28 ইলিয়াশীবের পুত্র যিহোয়াদা ছিলেন মহাযাজক| যিহোয়াদার এক পুত্র হোরোণের সন্বল্লটের জামাতা ছিল| আমি তাকে এই জায়গা ছেড়ে পালিয়ে য়েতে বাধ্য করি| 29 হে ঈশ্বর, তুমি এই সব লোকদের শাস্তি দাও| এরা যাজকবৃত্তিকে কলুষিত করেছে| তারা তাদের যাজক বৃত্তিকে অপবিত্র করেছিল| তুমি যাজক ও লেবীয়দের সঙ্গে য়ে চুক্তি করেছিলে, এরা তা পালন করেনি| 30 আমি তাই যাজক ও লেবীয়দের পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করেছিলাম| আমি সমস্ত বিদেশীয়দের সরিয়ে দিয়েছিলাম, এবং আমি লেবীয়দের ও যাজকদের তাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব অর্পন করেছিলাম| 31 লোকরা যাতে উপহারস্বরূপ তাদের প্রথম ফল, ফসল এবং কাঠ নির্দ্দেশিত সময় নিয়ে আসে আমি তার ব্যবস্থা করেছিলাম|হে আমার ঈশ্বর, এই সব ভাল কাজ করার জন্য আমাকে তুমি মনে রেখো| |